পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬৩৬. (হাসান সহীহ) ইয়াযীদ বিন আখনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
’’তোমাদের পরস্পরের মাঝে দু’টি বিষয় ব্যতীত অন্য কিছুতে প্রতিযোগিতা নেই। এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ কুরআন (কুরআনের জ্ঞান) দান করেছেন, তাই সে রাত-দিন তা দ্বারা নামায পড়ে থাকে এবং তার মধ্যে যে নির্দেশ আছে তার অনুসরণ করে থাকে। তখন আরেক ব্যক্তি বলেঃ আল্লাহ্ যেমন এই ব্যক্তিকে দিয়েছেন, যদি আমাকে সেরূপ দিতেন তবে সে যেমন নামায পড়ে আমিও তেমন নামায পড়তাম। দ্বিতীয় ব্যক্তিকে আল্লাহ্ সম্পদ দিয়েছেন, সে তা ব্যয় করে ও সাদকা করে। তখন আরেক ব্যক্তি পূর্বের জনের মত কমনা করে (বলেঃ আমাকে যদি আল্লাহ্ সম্পদ দিতেন তবে আমিও ঐ ব্যক্তির মত খরচ করতাম ও সাদকা করতাম)
(ত্বাবরানী, আলবানী বলেন, হাদীছটি ইমাম আহমাদও স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন ৪/১০৪।)
الترغيب في قيام الليل
(حسن ) وَعَنْ يزيد بن الأخنس وكانت له صحبة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال : لَا تَنَافُسَ بَيْنَكُمْ إِلَّا فِي اثْنتَيْنِ: رَجُلٍ أعطاه اللهُ قرآنا فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَيَتَّبِعُ مَا فِيهِ، فَيَقُولُ رَجُلٌ: لَوْ أَنَّ اللهَ أَعْطَانِي مَا أَعْطَى فلَاناً فَأَقُومُ بِهِ كما يَقُومُ ، وَرَجُلٍ أَعْطَاهُ اللهُ مَالًا فَهُوَ يُنْفِقُ منه وَيَتَصَدَّقُ فيقول رجل مثل ذلك. رواه الطبراني في الكبير
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৩. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’তোমাদের কোন ব্যক্তি রাত্রে নিদ্রা গেলে শয়তান তার কাঁধে তিনটি গিরা দেয়। প্রতিটি গিরা দেয়ার সময় ফুঁ দিয়ে বলে, এখনো দীর্ঘ রাত অবশিষ্ট। সুতরাং ঘুমিয়ে থাকো। সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে, তবে একটি গিরা খুলে যায়, ওযু করলে দ্বিতীয় গিরা খুলে যায়। আর নামায আদায় করলে সবগুলো গিরা খুলে যায়। তখন প্রফুল্ল ও পবিত্র মন নিয়ে তার ভোর হয়, অন্যথা অলস ও অপবিত্র মন নিয়ে তার ভোর হয়।’’
(মালেক ১/১৭৬, বুখারী ১১৪২, মুসলিম ৭৭৬, আবু দাউদ ১৩৬০, নাসাঈ ৩/২০৩ ও ইবনে মাজাহ্ ১৩২৯ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
(সহীহ্) ইবনে মাজাহর বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
فَيُصْبِحُ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ قَدْ أَصَابَ خَيْرًا وَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ أَصْبَحَ كَسِلًا خَبِيثَ النَّفْسِ لَمْ يُصِبْ خَيْرًا
’’প্রফুল্ল ও পবিত্র মন নিয়ে তার সকাল হয় এবং সে প্রভূত কল্যাণ লাভ করে। আর এরূপ না করলে অলস ও অপবিত্র মন নিয়ে তার সকাল হয় আর কোন কল্যাণই সে লাভ করতে পারে না।’’
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ عَلَى كُلِّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ فَإِنْ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقَدُهُ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلَّا أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلَانَ.رواه مالك والبخاري ومسلم وأبو داود والنسائي وابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৪. (সহীহ্) জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে কোন পুরুষ বা নারী রাত্রে যখন নিদ্রা যায় তখন তার মাথায় রশিতে গিরা বেঁধে দেয়া হয়। যখন সে জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন একটি গিরা খুলে যায়। বিছানা থেকে উঠে যদি ওযু করে সালাত আদায় করে, তবে সবগুলো গিরা খুলে যায়। তখন হালকা ও পবিত্র মন নিয়ে তার ভোর হয় এবং কল্যাণ লাভ করে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনে খুযায়মা ২/১৭৫ ও ইবনে হিব্বান ২৫৪৫)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ جابر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قَالَ : رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَا مِنْ ذَكَرٍ وَلاَ أُنْثَى إِلاَّ عَلَى رَأْسِهِ جَرِيرٌ مَعْقُودٌ حِينَ يَرْقُدُ ، فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ ، وَإِذَا قَامَ فَتَوَضَّأَ وَصَلَّى انْحَلَّتِ الْعُقَدُ
وَأَصْبَحَ خَفِيفًا طَيِّبَ النَّفْسِ ، قَدْ أَصَابَ خَيْرًا.رواه ابن خزيمة و ابن حبان
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৫. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’রমাযানের পর সর্বোত্তম ছিয়াম হচ্ছে আল্লাহর সম্মানিত মাস মুহাররমের ছিয়াম। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের (নফল) নামায।’’
(মুসলিম ১১৬৩, আবু দাউদ, তিরমিযী ৪৩৮, নাসাঈ ১৬১৩ ও ইবনে খুযায়মাহ্ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ : شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ ، وَأفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الفَرِيضَةِ : صَلاَةُ اللَّيْلِ.رواه مسلم وأبو داود والترمذي والنسائي وابن خزيمة
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৬. (সহীহ্) আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন প্রথমবার মদীনায় আগমণ করেন, তখন সমস্ত মানুষ দ্রুত তাঁর কাছে উপস্থিত হয়। আমিও ছিলাম তাদের মধ্যে একজন। আমি যখন তাঁর মুখমণ্ডল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করলাম, তখন নিশ্চিত হলাম যে, এ মুখমণ্ডল কোন মিথ্যুকের হতে পারে না। তাঁর মুখ থেকে প্রথম যে বাণী আমি শুনেছিলাম তা হচ্ছেঃ
’’হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রচার কর, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, রাতে যখন লোকেরা ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায আদায় কর, তবে নিরাপদে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী ২৮৮৫, ইবনে মাজাহ ৩২৫১ ও হাকেম ৩/১৩। হাকেম বলেনঃ বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীছটি সহীহ)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ عبد الله بن سلام رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: أول ما قدم رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ انْجَفَلَ النَّاسُ إليه فكنت فيمن جاءه فلما تأملت وجهه واستبنته عَرَفْتُ أَنَّ وَجْهَهُ لَيْسَ بِوَجْهِ كَذَّابٍ قَالَ: فَكَانَ أَوَّلَ ما سمعت من كلامه أن قال :
أَيُّهَا النَّاسُ ، أَفْشُوا السَّلامَ ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ ، وَصَلُّوا الأرْحاَمَ وَصَلُّوا بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ، تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ بِسَلامٍ
رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح وابن ماجه والحاكم وقال: صحيح على شرط الشيخين
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৭. (হাসান সহীহ) আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ’’জান্নাতের মধ্যে এমন ঘর আছে যার ভিতর থেকে বাইরে দেখা যায়। আর বাইরে থেকে ভিতরে দেখা যায়।’’
আবু মালেক আশআরী (রাঃ) বললেন, ওটা কার জন্য হে আল্লাহর রাসূল?
তিনি বললেনঃ ’’যে ব্যক্তি পবিত্র কথা বলে, মানুষকে খাদ্য দান করে আর মানুষ যখন ঘুমন্ত থাকে তখন নামায অবস্থায় রাত কাটায়।’’
(ত্ববারানী [কাবীর গ্রন্থে] হাসান সনদেও হাকেম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাকেম বলেনঃ বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীছটি সহীহ)
الترغيب في قيام الليل
(حسن صحيح) وَعَنْ عبد الله بن عمرو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: فِي الْجَنَّةِ غُرْفَةً يُرَى ظَاهِرُهَا مِنْ بَاطِنِهَا وَبَاطِنُهَا مِنْ ظَاهِرِهَا.
فقال أبو مالك الأشعري لِمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ لِمَنْ أَطَابَ الْكَلَامَ، وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ، وَبَاتَ قَائِمًا وَالنَّاسُ نِيَامٌ.رواه الطبراني في الكبير بإسناد حسن والحاكم وقال صحيح على شرطهما
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৮. (সহীহ লি গাইরিহী) আবু মালেক আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ’’নিশ্চয় জান্নাতে কিছু ঘর আছে যার ভিতর থেকে বাইরে দেখা যায়। আর বাইরে থেকে ভিতরে দেখা যায়। আল্লাহ্ উহা প্রস্ত্তত করেছেন এমন লোকের জন্য যে (অভূক্ত) মানুষকে খাদ্য দান করে, সালামের প্রচার করে এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায আদায় করে।’’
(ইবনে হিব্বান [ছহীহ্] গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৫০৯, তিরমিযি ৫৭৯)
(সহীহ লি গাইরিহী) জামাআতে নামায অধ্যায়ে ইবনে আব্বাসের হাদীছ উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছেঃ
وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلَامِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ
’’উচ্চ মর্যাদা সমূহ হচ্ছেঃ সালামের প্রচার করা, খাদ্য দান করা এবং রাতে মানুষ যখন নিদ্রায় থাকে তখন নামায আদায় করা।’’
(হাদীছটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং তাকে হাসান বলেছেন)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح لغيره) وَعَنْ أبي مالك الأشعري رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: إِنَّ فِي الْجَنَّةِ غُرَفًا يَرَى ظَاهِرُهَا مِنْ بَاطِنِهَا , وَبَاطِنُهَا مِنْ ظَاهِرِهَا ، أَعَدَّهَا اللَّهُ لِمَنْ أَطْعَمَ الطَّعَامَ وأفشى السلام ، ، وَصَلَّى بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ". رواه ابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬১৯. (সহীহ্) মুগীরা বিন শো’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এত অধিক নামায আদায় করতেন যে, দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। তাঁকে বলা হলঃ আল্লাহ্ তো আপনার পূর্বের ও পরের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন?
তিনি বললেনঃ ’’আমি কি একজন শোকর গুজার বান্দা হব না!?’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ১১৩, মুসলিম ২৮১৯, তিরমিযী ৪১২, নাসাঈ ৩/২১৯) বুখারীর আরেক বর্ণনায় এসেছেঃ
إن كأنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَقُومَ أوْ لِيُصَلِّيَ حَتَّى تَرِمُ قَدَمَاهُ أَوْ سَاقَاهُ فَيُقَالُ لَهُ فَيَقُولُ أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا
’নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতেন এমনকি তাঁর পদযুগল বা দু’পায়ের নলা ফুলে যেতো। তাঁকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলতেনঃ
’’আমি কি একজন কৃতজ্ঞ পরায়ন বান্দা হব না!?’’
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ المغيرة بن شعبة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قام النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى تَوَرَّمَتْ قَدَمَاهُ فَقِيلَ لَهُ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا. رواه البخاري ومسلم والنسائي
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২০. (হাসান সহীহ) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এত বেশী দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতেন যে, তাঁর পদযুগল ফুলে যেতো। তাঁকে বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এরূপ করছেন; অথচ আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার কাছে এ কথা এসেছে যে, তিনি আপনার পূর্বের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন?
তিনি বললেনঃ ’’আমি কি একজন শোকর গুজার বান্দা হব না!?’’
(ইবনে খুযায়মা হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ২/২০১)
শায়খ আলবানী বলেনঃ হাদীছটি তিরমিযী শামায়েল গ্রন্থে এবং ইবনে মাজাহ ও নাসাঈ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন।
الترغيب في قيام الليل
(حسن صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: كاَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُومُ حَتَّى تَرِمَ قَدَمَاهُ ، فَقِيلَ لَهُ : أَيْ رَسُولُ اللهِ أَتَصْنَعُ هَذَا وَقَدْ جَاءَكَ مِنَ اللهِ أَنْ قَدْ غَفَرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ؟ قَالَ : أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا. رواه ابن خزيمة في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২১. (সহীহ্) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে দাঁড়িয়ে নামায পড়তেন এমনকি তাঁর পদযুগল ফুলে যেতো। আমি তাঁকে বললামঃ কেন আপনি এরূপ করছেন? অথচ আপনার তো পূর্বের পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ ’’আমি কি একজন কৃতজ্ঞ পরায়ন বান্দা হতে পছন্দ করব না!?’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ১১৩ ও মুসলিম ১৮১৯)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ عائشة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُا أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كاَنَ يَقُومُ مِنْ اللَّيْلِ حَتَّى تَتَفَطَّرَ قَدَمَاهُ فَقُلْتُ لَهُ لِمَ تَصْنَعُ هَذَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَفَلَا أُحِبُّ أَنْ أَكُونَ عَبْدًا شَكُورًا. رواه البخاري ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২২. (সহীহ্) আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় নামায হচ্ছে দাউদ (আঃ) এর নামায। আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় সিয়াম হচ্ছে দাউদ (আঃ) এর সিয়াম। তিনি রাতের অর্ধেক সময় নিদ্রায় থাকতেন এবং এক তৃতীয়াংশ নামাযে রত থাকতেন এবং এক ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। একদিন সিয়াম পালন করতেন একদিন সিয়াম ভঙ্গ করতেন।’’
(বুখারী ১৩৩১, মুসলিম ১১৫৯, আবু দাউদ ২৪৪৮, তিরমিযী ৭৭০, নাসাঈ ৩/২১৪ ও ইবনে মাজাহ্ ১৭০৭ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ عبد الله بن عمرو بن العاص رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَحَبُّ الصَّلَاةِ إِلَى اللَّهِ صَلَاةُ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَام وَأَحَبُّ الصِّيَامِ إِلَى اللَّهِ صِيَامُ دَاوُدَ وَكَانَ يَنَامُ نِصْفَ اللَّيْلِ وَيَقُومُ ثُلُثَهُ وَيَنَامُ سُدُسَهُ وَيَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا.
رواه البخاري ومسلم وأبو داود والنسائي وابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৩. (সহীহ্) জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ ’’নিশ্চয় রাতে এমন একটি সময় আছে কোন মুসলিম যদি সে সময়টি লাভ করে এবং তখন দুনিয়া ও আখেরাতের কোন কল্যাণ আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, তবে তিনি তাকে উহা প্রদান করে থাকেন। আর ইহা প্রত্যেক রাতেই আছে।’’ (ইমাম মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৭৫৭)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ جابر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول:
إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ. رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৪. (হাসান লি গাইরিহী) আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ’’তোমরা কিয়ামুল্লায়ল কর। কেননা উহা তোমাদের পূর্ববর্তী যুগের নেক লোকদের অভ্যাস। তোমাদের পালনকর্তার নৈকট্য দানকারী। পাপ সমূহ মোচনকারী এবং গুনাহর কাজ থেকে বাধা দানকারী।’’
(তিরমিযী ৩৫৪৯, ইবনে আবী দুনিয়া, ইবনে খুযায়মা ২/১৭৭ ও হাকেম ১/৩০৮) হাকেম বলেন হাদীছটি বুখারীর শর্তের ভিত্তিতে সহীহ।
الترغيب في قيام الليل
(حسن لغيره) وَعَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ الباهلي رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهُ دَأَبُ الصَّالِحِينَ قَبْلَكُمْ وَقُرْبَةٌ إِلَى رَبِّكُمْ وَمَكْفَرَةٌ لِلسَّيِّئَاتِ وَمَنْهَاةٌ عن الْإِثْمِ. رواه الترمذي وابن أبي الدنيا وابن خزيمة والحاكم وقال صحيح على شرط البخاري
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৫. (হাসান) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’আল্লাহ্ দয়া করুন সেই পুরুষকে যে রাতে উঠে নামায পড়ে এবং তার স্ত্রীকে ঘুম হতে জাগ্রত করে। সে উঠতে না চাইলে তার মুখে পানির ছিটা মারে। আর দয়া করুন সেই নারীকে যে রাতে উঠে নামায পড়ে এবং তার স্বামীকে ঘুম থেকে জাগ্রত করে। সে উঠতে না চাইলে তার মুখে পানির ছিটা দেয়।’’
(আবু দাউদ ১৩০৮, নাসাঈ ৩/২০৫, ইবনে মাজাহ ১৩৩৬, ইবনে খুযায়মা ২/১৮৩, ইবনে হিব্বান ২৫৫৭ ও হাকেম ৩০৯। হাদীছের বাক্য আবু দাউদের। হাকেম বলেন হাদীছটি মুসলিমের শর্তের ভিত্তিতে সহীহ)
الترغيب في قيام الليل
(حسن ) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : رَحِمَ اللَّهُ رَجُلًا قَامَ مِنْ اللَّيْلِ فَصَلَّى وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ ورَحِمَ اللَّهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنْ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ الْمَاءَ. رواه أبو داود وهذا لفظه والنسائي وابن ماجه وابن خزيمة وابن حبان والحاكم وقال صحيح على شرط مسلم
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৬. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) ও আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যদি কোন মানুষ নিজের পরিবারকে নিদ্রা হতে জাগ্রত করে উভয়ে নামায আদায় করে অথবা উভয়ে দু’রাকাআত নামায আদায় করে, তবে তাদেরকে যিকিরকারী পুরুষ ও যিকিরকারীনী নারীদের মধ্যে শামিল করা হবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ১১৮১)
হাদীছটি নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান ও হাকেম প্রায় কাছাকাছি শব্দ প্রয়োগে বর্ণনা করেন।
مَنْ اسْتَيْقَظَ مِنْ اللَّيْلِ وَأَيْقَظَ أهْلَهُ فَصَلَّيَا رَكْعَتَيْنِ زاد النسائي جَمِيعًا كُتِبَا مِنْ الذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ
’’যে ব্যক্তি রাতে জাগ্রত হবে এবং তার স্ত্রীকে জাগ্রত করবে। অতঃপর দু’রাকাআত নামায আদায় করবে।’’
নাসাঈ এই শব্দটি বেশী উল্লেখ করেছেনঃ ’’উভয়ে মিলে, তবে তাদের নাম অধিকহারে আল্লাহকে যিকিরকারী পুরুষ ও নারীদের মধ্যে লিখে নেয়া হবে।’’
(হাকেম বলেন, হাদীছটি বুখারী ও মুসলিমের শর্তের ভিত্তিতে সহীহ)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ و أبي سعيد رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قالا قال رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِذَا أَيْقَظَ الرَّجُلُ أَهْلَهُ مِنْ اللَّيْلِ فَصَلَّيَا أَوْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ جَمِيعًا كُتِبَا فِي الذَّاكِرِينَ وَالذَّاكِرَاتِ. رواه أبو داود
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৭. (হাসান লি গাইরিহী) সাহল বিন সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা জিবরীল (আঃ) নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আগমণ করে বললেনঃ ’’হে মুহাম্মাদ! (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যতদিন ইচ্ছা আপনি জীবন-যাপন করুন, অবশ্যই আপনি মৃত্যু বরণ করবেন। যা ইচ্ছা আমল করুন, আপনাকে তার প্রতিদান দেয়া হবে। যাকে ইচ্ছা ভালোবাসুন তাকে একদিন ছেড়ে যেতে হবে। জেনে রাখুন! মু’মিনের মর্যাদা হচ্ছে ক্বিয়ামুল্লায়ল করার মধ্যে এবং সম্মান হচ্ছে মানুষের থেকে অমুখাপেক্ষী থাকাতে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী [আওসাত গ্রন্থে] ২/২৫৩)
الترغيب في قيام الليل
(حسن لغيره) وَعَنْ سهل بن سعد رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قال جاء جبريل إلى النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فقال يا محمد عش ما شئت فإنك ميت واعمل ما شئت فإنك مجزي به وأحبب من شئت فإنك مفارقه واعلم أن شرف المؤمن قيام الليل وعزه استغناؤه عن الناس.
رواه الطبراني في الأوسط
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৮. (সহীহ্) আমর বিন আবসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছেনঃ ’’পালনকর্তা বান্দার সর্বাধিক নিকটবর্তী হন মধ্য রাত্রের শেষাংশে। যদি সম্ভব হয় সে সময় তুমি আল্লাহর যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে, তবে হয়ে যাও।’’
(তিরমিযী ৩৫৭৯ ও ইবনে খুযায়মা ২/১৮২ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাদীছের বাক্য তিরমিযীর, তিনি বলেনঃ হাদীছটি হাসান ছহীহ্ গরীব)
الترغيب في قيام الليل
(صحيح) عن عمرو بن عبسة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنه سمع النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الرَّبُّ مِنْ الْعَبْدِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ الْآخِرِ فَإِنْ اسْتَطَعْتَ أَنْ تَكُونَ مِمَّنْ يَذْكُرُ اللَّهَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَكُنْ. رواه الترمذي واللفظ له وابن خزيمة.
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬২৯. (হাসান) আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ’’তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ভালবাসেন, তাদের কাজে হাসেন এবং তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করেনঃ
১) এক ব্যক্তি, যখন যুদ্ধের জন্য সৈনিকদল বের হয়, তখন সে তাদের সাথে থেকে নিজের জান বাজী রেখে আল্লাহর পথে লড়াই করে। হয় সে নিহত হয় অথবা আল্লাহ তাকে বিজয় দান করেন এবং তাকে বাঁচিয়ে দেন। আল্লাহ্ বলেন, দেখো আমার এই বান্দাকে কিভাবে নিজের জান বাজী রেখে আমার পথে ধৈর্য ধারণ করেছে?!
২) দ্বিতীয় ব্যক্তি, যার ঘরে আছে সুন্দরী স্ত্রী, আছে নরম ও সুন্দর বিছানা। সে রাত্রে উঠে নামায আদায় করে। আল্লাহ্ বলেন, সে নিজের খাহেশাতকে দমন করে আমাকে স্মরণ করছে। চাইলে সে শুয়ে থাকতে পারতো।
৩) তৃতীয় ব্যক্তি, যখন সে সফরে থাকে। তার সাথে সফর সঙ্গী আছে। তারা রাত জেগেছে এরপর শুয়ে পড়েছে। তখন সে শেষ রাতে উঠে আরামে থাকুক বা কষ্টে থাকুক নামায আদায় করেছে।’’
(ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في قيام الليل
(حسن ) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: ثلاثة يحبهم الله ويضحك إليهم ويستبشر بهم الذي إذا انكشفت فئة قاتل وراءها بنفسه لله عز وجل فإما أن يقتل وإما أن ينصره الله عز وجل ويكفيه فيقول انظروا إلى عبدي هذا كيف صبر لي بنفسه؟ والذي له امرأة حسنة وفراش لين حسن فيقوم من الليل فيقول يذر شهوته ويذكرني ولو شاء رقد، والذي إذا كان في سفر وكان معه ركب فسهروا ثم هجعوا فقام من السحر في ضراء وسراء. رواه الطبراني في الكبير
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬৩০. (হাসান লি গাইরিহী) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’দু’জন মানুষের কাজে আমাদের পালনকর্তা আশ্চর্য হন। এক ব্যক্তি নরম বিছানা ছেড়ে লেপের নীচে থেকে লাফ দিয়ে বের হয়, নিজের স্ত্রী ও প্রিয়তম ব্যক্তিদের ছেড়ে নামাযের দিকে অগ্রসর হয়। তখন মহিমান্বিত সুমহান আল্লাহ্ বলেনঃ হে আমার ফেরেশতাকুল! দেখো আমার বান্দাকে, নরম বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছে, স্ত্রী ও প্রিয়জন ছেড়ে নামাযের প্রতি অগ্রসর হয়েছে- আমার কাছে যা আছে তা পাওয়ার আগ্রহে, আমার কাছে যে শাস্তি আছে তার ভয়ে। আরেক ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেছে। তার সাথীরা পরাজিত হয়েছে। সে জেনেছে যে পরাজিত হলে কি বিপদ আসতে পারে এবং যুদ্ধে ফেরত গেলে কি পুরস্কার পাবে, তখন সে যুদ্ধে ফেরত আসে এমনকি (সে নিহত হয়) তার রক্ত প্রবাহিত করা হয়। তখন আল্লাহ্ ফেরেশতাদেরকে বলেন, দেখো আমার বান্দাকে সে যুদ্ধের ময়দানে ফেরত এসেছে- আমার কাছে যে পুরস্কার আছে তা পাওয়ার আশায় এবং আমার কাছে যে শাস্তি আছে তার ভয়ে- শেষ পর্যন্ত নিজের রক্ত প্রবাহিত করে দিয়েছে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ ১/৪১৬, আবু ইয়া’লা, ত্বাবরানী ও ইবনে হিব্বান ২৫৪৮)
(সহীহ লি গাইরিহী মাওকূফ) ত্বাবরানী মাওকূফ সূত্রে হাসান সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেন। তার বাক্য এরূপঃ
إِنَّ اللَّهَ يَضْحَكُ إِلَى رَجُلَيْنِ، رَجُلٍ قَامَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ مِنْ فِرَاشِهِ وَلِحَافِهِ وَدِثَارِهِ فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ قَامَ إِلَى صَلاةٍ، فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِمَلائِكَتِهِ مَا حَمَلَ عَبْدِي هَذَا عَلَى مَا صَنَعَ؟ فَيَقُولُونَ: رَبَّنَا رَجَاءَ مَا عِنْدَكَ، وَشَفَقَةً مِمَّا عِنْدَكَ، فَيَقُولُ: فَإِنَّي قَدْ أَعْطَيْتُهُ مَا رَجَا وَأَمَّنْتُهُ مِمَّا يَخَافَ،
’’দু’জন লোকের কাজে আল্লাহ্ হাসেন। একজন লোক ঠান্ডার রাতে নিজের বিছানা, লেপ ও গাত্রাবরণ ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়, ওযু করে তারপর নামাযে দন্ডায়মান হয়। তখন মহাসম্মানিত আল্লাহ্ ফেরেশতাদেরকে বলেনঃ আমার বান্দা যা করেছে তাতে তাকে কিসে উদ্বুদ্ধ করল? তাঁরা বলেন, হে আমাদের পালনকর্তা! আপনার কাছে যে পুরস্কার আছে তা পাওয়ার আশায় এবং আপনার কাছে যে অনুগ্রহ ও দান আছে তা লাভের আকাংখায়। তখন তিনি বলেনঃ অতএব সে যা আশা করেছে আমি তাকে তা দিয়ে দিলাম। যাকে সে ভয় করে তা থেকে তাকে নিরাপদ করলাম।’’ এরপর তিনি হাদীছের অবশিষ্টাংশ উল্লেখ করেছেন।
الترغيب في قيام الليل
(حسن لغيره) وَعَنْ ابن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: عجب ربنا تعالى من رجلين رجل ثار عن وطائه ولحافه من بين أهله وحبه إلى صلاته فيقول الله جل وعلا انظروا إلى عبدي ثار عن فراشه ووطائه من بين حبه وأهله إلى صلاته رغبة فيما عندي وشفقة مما عندي، ورجل غزا في سبيل الله وانهزم أصحابه وعلم ما عليه في الانهزام وما له في الرجوع فرجع حتى يهريق دمه فيقول الله انظروا إلى عبدي رجع رجاء فيما عندي وشفقة مما عندي حتى يهريق دمه. رواه أحمد وأبو يعلى والطبراني وابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ১১) ক্বিয়ামুল্লায়ল (রাতে নফল নামায পড়া) করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৬৩১. (হাসান লি গাইরিহী) উক্ববা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ ’’আমার উম্মতের মধ্যে একজন লোক রাতে নিদ্রা থেকে উঠে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে নিজের চিকিৎসা করে। কেননা তার উপর অনেকগুলো গিরা দেয়া থাকে। যখন সে দু’হাত ধৌত করে একটি গিরা খুলে যায়। যখন মুখ ধৌত করে আরেকটি গিরা খুলে যায়। যখন মাথা মাসেহ করে আরেকটি গিরা খুলে যায়। যখন দু’পা ধৌত করে আরেকটি গিরা খুলে যায়। তখন যারা পর্দার অন্তরালে আছে তাদেরকে (ফেরেশতাদেরকে) ডেকে মহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ আমার এই বান্দাকে দেখো কিভাবে নিজের চিকিৎসা করছে। আমার কাছে প্রার্থনা করছে। এ বান্দা আমার কাছে যা চাইবে সেটাই তার জন্য করে দিব।’’
(আহমাদ ৪/১৫৬ ও ইবনে হিব্বান ২৫৪৬। হাদীছের বাক্য ইবনে হিব্বানের)
الترغيب في قيام الليل
(حسن لغيره) وَعَنْ عقبة بن عامر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: رَجُلاَنِ مِنْ أُمَّتِي ، يَقُومُ مِنَ اللَّيْلَ ، يُعَالِجُ نَفْسَهُ إِلَى الطَّهُورِ ، وَعَلَيْهِ عُقَدٌ ، ُ ، فَإِذَا وَضَّأَ يَدَيْهِ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ ، وَإِذَا وَضَّأَ وَجْهَهُ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ ، وَإِذَا مَسَحَ رَأْسِهِ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ ، وَإِذَا وَضَّأَ رِجْلَيْهِ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ ، فَيَقُولُ اللَّهُ ، عَزَّ وَجَلَّ ، لِلَّذِينَ وَرَاءَ الْحِجَابِ : انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُعَالِجُ نَفْسَهُ ، يَسْأَلُنِي ، مَاسَأَلَنِي عَبْدِي هَذَا ، فَهُوَ لَهُ. رواه أحمد وابن حبان في صحيحه واللفظ له