পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৩. (সহীহ্) আবু মালেক আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। ’আলহামদুলিল্লাহ’ নেকীর পাল্লাকে পরিপূর্ণ করে। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এই শব্দ দুটির নেকী আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দেয়। নামায হচ্ছে নূর বা জ্যোতি। আর যাকাত হচ্ছে দলীল। ধৈর্য হচ্ছে চেরাগ। আর কোরআন হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলীল।[1]’’
(ইমাম মুসলিম প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেন ২২৩)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح) عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآَنِ أَوْ تَمْلَأُ مَا بَيْنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالصَّلَاةُ نُورٌ وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَايِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا. رواه مسلم وغيره
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৪. (হাছান লি গাইরিহী) আবু যার্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শীতকালে বের হলেন। সে সময় গাছের পাতা ঝরে ঝরে পড়ছিল। তিনি একটি গাছের ডাল ধরলেন তখন গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়তে থাকলো। তিনি বললেনঃ ’’হে আবু যার্!’’
বললাম: আমি হাজির, হে আল্লাহর রাসূল!
তিনি বললেনঃ ’’নিশ্চয় কোন মুসলিম বান্দা যখন নামায আদায় করে তা দ্বারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য করে, তখন তার গুনাহ্গুলো ঝরে পড়ে যায় যেমন করে এই গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়ে।’’
(এ হাদীছটি ইমাম আহমদ ৫/১৭৯ উত্তম সনদে বর্ণনা করেন)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن لغيره) و عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ زَمَنَ الشِّتَاءِ وَالْوَرَقُ يَتَهَافَتُ فَأَخَذَ بِغُصْنِ مِنْ شَجَرَةٍ، قَالَ: فَجَعَلَ ذَلِكَ الْوَرَقُ يَتَهَافَتُ، قَالَ: فَقَالَ: "يَا أَبَا ذَرٍّ " قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ. قَالَ: "إِنَّ الْعَبْدَ الْمُسْلِمَ لَيُصَلِّي الصَّلَاةَ يُرِيدُ بِهَا وَجْهَ اللهِ، فَتَهَافَتُ عَنْهُ ذُنُوبُهُ كَمَا يَتَهَافَتُ هَذَا الْوَرَقُ عَنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ. رواه أحمد بإسناد حسن
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৫. (সহীহ্) মা’দান বিন আবু তালহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহর (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আযাদকৃত কৃতদাস ছাওবান (রাঃ)এর সাথে দেখা করলাম। আমি তাঁকে বললাম, আপনি আমাকে এমন একটি আমলের সংবাদ দিন যা করলে আল্লাহ তা’আলা বিনিময়ে আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অথবা তিনি এমন প্রশ্ন করলেন: আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল কোনটি? ছাওবান (রাঃ) নীরব থাকলেন, আমি আবার তাকে এই প্রশ্ন করলাম তিনি নীরব থাকলেন, তারপর আমি আবারও তাকে এই প্রশ্নটি করলাম, তখন তিনি বললেন ঠিক এরকম প্রশ্ন আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেনঃ
’’তুমি অধিকহারে আল্লাহকে সিজদা করবে। কেননা যখনই তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করবে তখন আল্লাহ তা’আলা তোমার একটি মর্যাদা উন্নীত করবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দিবেন।’’
(ইমাম মুসলিম ৪৭৭ তিরমিযী ৩৮৮, নাসাঈ ২/২২৮, ইবনে মাজাহ্ ১৪২৩ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح) وَعَنْ مَعْدَانِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ لَقِيتُ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ أَعْمَلُهُ يُدْخِلُنِي اللَّهُ بِهِ الْجَنَّةَ أَوْ قَالَ قُلْتُ بِأَحَبِّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ فَسَكَتَ ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَسَكَتَ ثُمَّ سَأَلْتُهُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ سَأَلْتُ عَنْ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ عَلَيْكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ لِلَّهِ فَإِنَّكَ لَا تَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلَّا رَفَعَكَ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْكَ بِهَا خَطِيئَةً. رواه مسلم والترمذي والنسائي وابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৬. (সহীহ্ লি গাইরিহী) উবাদা বিন সামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে একথা বলতে শুনেছেন যে, ’’কোন বান্দা যখন আল্লাহর জন্য একটি সেজদা করবে, তখন আল্লাহ বিনিময়ে তাকে একটি নেকী প্রদান করবেন, তার একটি গুনাহ মুছে দিবেন এবং তার একটি মর্যাদা উন্নীত করবেন।’’
(ইবনে মাজাহ ১৪২৪ সনদ সহীহ্ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح لغيره) و عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلَّا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِهَا حَسَنَةً وَمَحَا عَنْهُ بِهَا سَيِّئَةً وَرَفَعَ لَهُ بِهَا دَرَجَةً فَاسْتَكْثِرُوا مِنْ السُّجُودِ. رواه ابن ماجه بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৭. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’বান্দা তার পালনকর্তার সর্বাধিক নিকটবর্তী হয় যখন সে সেজদা অবস্থায় থাকে। সুতরাং তোমরা সে সময় বেশী করে দু’আ কর।’’
(ইমাম মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৪৮২)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح) و عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ عز وجل وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ. رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৮. (সহীহ্ লি গাইরিহী) রাবিআ’ ইবনে কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সারাদিন রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর খেদমত করতাম এবং রাতে তার দরজার কাছে ঘুমাতাম। তখন আমি শুনতে পেতাম তিনি এই তসবীহগুলো পাঠ করছেন: সুবহানাল্লাহ্, সুবহানাল্লাহ্, সুবহানা রাববী। এটা শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত হয়ে যেতাম এবং আমার চোখ আমাকে পরাজিত করত তখন আমি ঘুমিয়ে পড়তাম।
একদা তিনি (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রাবিআ’! আমার কাছে কিছু চাও আমি তোমাকে দিব।’’
আমি বললামঃ আমাকে একটু সময় দিন আমি চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। একথা বলে আমি দুনিয়ার ক্ষনস্থায়িত্ব এবং তা বিনাশ হয়ে যাবার কথা স্মরণ করলাম। তারপর আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি চাই আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন তিনি যেন আমাকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান।
রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন তারপর বললেনঃ ’’এ প্রশ্ন করতে তোমাকে কে আদেশ করেছে?’’
আমি বললাম: কেউ আমাকে একথা বলতে বলেনি। কিন্তু আমি এটা জানি যে দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী এবং ধ্বংসশীল এবং আপনি আল্লাহ রাববুল আ’লামীনের কাছে মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি। সুতরাং আমি চাই আপনি আমার জন্যে আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন।
তিনি বললেন আমি করবো। সুতরাং বেশী বেশী সেজদার মাধ্যমে তোমার জন্যে আমাকে সহযোগিতা করো।’’
(ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
এবং ইমাম মুসলিম ও আবু দাউদ সংক্ষিপ্তভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।
মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ রাবিআ’ বলেছেনঃ
كُنْتُ أَبِيتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فأَتِيهِ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ ، فَقَالَ لِيْ : سَلْنِيْ فَقُلْتُ أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ قَالَ أَوَغَيْرَ ذَلِكَ قُلْتُ هُوَ ذَاكَ قَالَ فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ
আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে রাত কাটাতাম এবং তাকে প্রয়োজনীয় জিনিস অথবা ওযুর পানি এনে দিতাম।
একদা তিনি আমাকে বললেনঃ ’’তুমি আমার কাছে কিছু চাও।’’ আমি বললামঃ আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই।
তিনি বললেনঃ ’’এটা ছাড়া অন্য কিছু?’’
আমি বললামঃ এটাই।
তিনি বললেনঃ ’’অতএব বেশী বেশী করে সেজদা করে তোমার জন্য আমাকে সহযোগিতা কর।’’ (মুসলিম ৪৮৯, আবূ দাউদ ১৩২০)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح لغيره) و عَنْ رَبِيعَةَ بن كَعْبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : كُنْتُ أَخْدُمُ أَخْدُمُ النبيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَارِي ، فَإِذَا كَانَ اللَّيْلُ آوَيْتُ إِلَى بَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبِتُّ عِنْدَهُ ، فَلا أَزَالُ أَسْمَعُهُ ، يَقُولُ : سُبْحَانَ اللَّهِ سُبْحَانَ اللَّهِ سُبْحَانَ رَبِّي حَتَّى أَمَلُّ أَوْ تَغْلِبَنِي عَيْنِي فَأَنَامُ ، فَقَالَ يَوْماً : يَا رَبِيعَةُ سَلْنِي فَأُعْطِيَكَ ، قُلْتُ : أَنْظِرْنِي حَتَّى أَنْظُرَ ، وتَذَكَرْتُ أَنَّ الدُّنْيَا فَانِيَةٌ مُنْقَطِعَةٌ فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَسْأَلُكَ أنْ تَدْعُوَ اللَّهَ أَنْ يُنْجِيَنِيْ مِنَ النَّارِ وَيُدْخِلَنِي الْجَنَّةَ،
فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، ثُمَّ قَالَ : مَنْ أَمَرَكَ بِهَذَا ؟ قُلْتُ : مَا أَمَرَنِي بِهِ أَحَدٌ ، وَلَكِنِّي عَلِمْتُ أَنَّ الدُّنْيَا مُنْقَطِعَةٌ فَانِيَةٌ وَأَنْتَ مِنَ اللَّهِ بِالْمَكَانِ الَّذِي أَنْتَ مِنْهُ فأَحْبَبْتُ أنْ تَدْعُوَ اللَّهَ ، قَالَ : إِنِّي فَاعِلٌ ، فَأَعِنِّي على نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ.
رواه الطبراني في الكبير ورواه مسلم وأبو داود مختصرا
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৮৯. (হাসান সহীহ্) আবু ফাতেমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ’’হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে এমন একটি আমলের সংবাদ দিন যা আমি বাস্তবায়ন করবো এবং তার উপর অবিচল থাকব।
তিনি বললেনঃ ’’তুমি বেশী করে সেজদা করবে। কেননা যখনই তুমি আল্লাহর জন্য সেজদা করবে তার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার মর্যাদা উন্নীত করবেন এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’’
(ইবনে মাজাহ্ ১৪২২ হাদীছটি উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন)
হাদীছটি ইমাম আহমাদ সংক্ষিপ্ত ভাবে বর্ণনা করেন। তার বর্ণনায় এরকম বলা হয়েছেঃ
قَالَ لِي نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " يَا أَبَا فَاطِمَةَ، إِنْ أَرَدْتَ أَنْ تَلْقَانِي فَأَكْثِرِ السُّجُودَ
তখন আল্লাহর নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ
’’হে আবু ফাতেমা! যদি তুমি জান্নাতে আমার সাক্ষাত পেতে চাও তবে বেশী করে সেজদা কর।’’ (আহমাদ ১৫৫২৬)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن صحيح ) وَعَنْ أبي فاطمة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ أَسْتَقِيمُ عَلَيْهِ وَأَعْمَلُهُ قَالَ عَلَيْكَ بِالسُّجُودِ فَإِنَّكَ لَا تَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلَّا رَفَعَكَ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ بِهَا عَنْكَ خَطِيئَةً. رواه ابن ماجه بإسناد جيد ورواه أحمد مختصرا
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯০. (হাছান লি গাইরিহী) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’সালাত হচ্ছে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়। অতএব কেউ যদি পারে তবে যেন বেশী করে সালাত আদায় করে।’’
(ত্বাবরানী আওসাত গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, মাযমাউল যাওয়ায়েদ ৩৫০৫)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن لغيره) وروي عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :"الصَّلاةُ خَيْرُ مَوْضُوعٍ، فَمَنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَسْتَكْثِرَ فَلْيَسْتَكْثِرَ. رواه الطبراني في الأوسط
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯১. (হাসান সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা এক কবরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। জিজ্ঞেস করলেনঃ
’’এই কবরের অধিবাসী কে?’’ তারা বললেন, অমুক ব্যক্তি।
তিনি বললেন, ’’বর্তমানে তোমাদের দুনিয়ার সমস্ত ধন সম্পদ থেকে এই লোকটির কাছে অধিক প্রিয় হচ্ছে দু’রাকাআত নামায।’’
(ত্বাবরানী [আওসাত গ্রন্থে] ১/৪৩৪ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن صحيح ) وَ عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِقَبْرٍ، فَقَالَ:"مَنْ صَاحِبُ هَذَا الْقَبْرِ؟"فَقَالُوا: فُلانٌ، فَقَالَ:"رَكْعَتَانِ أَحَبُّ إِلَى هَذَا مِنْ بَقِيَّةِ دُنْيَاكُمْ".رواه الطبراني بإسناد حسن
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯২. (সহীহ্ লি গাইরিহী) মুতার্রেফ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কুরাইশ গোত্রের একদল লোকের কাছে আমি বসে ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে নামায পড়তে লাগলেন। তিনি রুকূ’ করছেন আর সিজদা করছেন, বিশ্রাম নিচ্ছেন না। আমি বললাম, আল্লাহর শপথ লোকটি বলতে পারবে না, সে বেজোড় নামায পড়ছে না জোড় নামায পড়ছে। আমার সাথীরা বলল, আপনি তার কাছে গিয়ে কথাটি বলুন না? আমি উঠে গিয়ে তাকে বললাম, আল্লাহর বান্দা আমার তো মনে হচ্ছে, আপনি বলতে পারবেন না যে, আপনি জোড় না বেজোড় নামায আদায় করে ফিরবেন? তিনি বললেন, কিন্তু আল্লাহ্ জানেন! আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ্ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
’’যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, তা দ্বারা আল্লাহ তার জন্য একটি নেকী লিখে দিবেন, একটি গুনাহ মোচন করবেন এবং একটি মর্যাদা উন্নীত করবেন।’’
আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি আবু যার। আমি সাথীদের নিকট ফিরে গিয়ে বললাম, তোমরা কতই না খারাপ সঙ্গী! আল্লাহ্ তোমাদের সেইরূপ প্রতিদান দিন। তোমরা আমাকে নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর একজন সাহাবীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য আমাকে আদেশ করেছো!
(সহীহ লিগাইরিহী) অপর বর্ণনায়ঃ
আমি দেখলাম উনি দীর্ঘক্ষণ ক্বিয়াম করছেন আর বেশী বেশী রুকূ’-সিজদা করছেন। আমি তাকে গিয়ে কথাটি বললে, তিনি বললেন, নামায সুন্দর করতে তো আমি কোন ত্রুটি করিনি! আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ্ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি একটি রুকূ করে বা একটি সিজদা করে, বিনিময়ে তার একটি মর্যাদা উন্নীত করা হয় এবং একটি গুনাহ মোচন করা হয়।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ ২১৩০৮ ও বাযযার)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح لغيره) وَ عَنْ مُطَرِّفٍ، قَالَ: قَعَدْتُ إِلَى نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ، فَجَاءَ رَجُلٌ فَجَعَلَ يُصَلِّي: يَرْكَعُ وَيَسْجُدُ وَلَا يَقْعُدُ، فَقُلْتُ: وَاللهِ مَا أَرَى هَذَا يَدْرِي يَنْصَرِفُ عَلَى شَفْعٍ أَوْ وِتْرٍ، فَقَالُوا: أَلَا تَقُومُ إِلَيْهِ فَتَقُولَ لَهُ؟ قَالَ: فَقُمْتُ فَقُلْتُ: يَا عَبْدَ اللهِ، مَا أَرَاكَ تَدْرِي تَنْصَرِفُ عَلَى شَفْعٍ أَوْ عَلَى وَتْرٍ؟ قَالَ: وَلَكِنَّ اللهَ يَدْرِي، سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: "مَنْ سَجَدَ لِلَّهِ سَجْدَةً، كَتَبَ اللهُ لَهُ بِهَا حَسَنَةً، وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً، وَرَفَعَ لَهُ بِهَا دَرَجَةً " فَقُلْتُ: مَنْ أَنْتَ؟ فَقَالَ: أَبُو ذَرٍّ. فَرَجَعْتُ إِلَى أَصْحَابِي، فَقُلْتُ: جَزَاكُمُ اللهُ مِنْ جُلَسَاءَ شَرًّا، أَمَرْتُمُونِي أَنْ أُعَلِّمَ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
(صحيح لغيره) وفي رواية فَرَأَيْتُهُ يُطِيلُ الْقِيَامَ، وَيُكْثِرُ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: مَا أَلَوْتُ أَنْ أُحْسِنَ، إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: "مَنْ رَكَعَ رَكْعَةً أَوْ سَجَدَ سَجْدَةً رُفِعَ بِهَا دَرَجَةً، وَحُطَّتْ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ " (رواه أحمد والبزار بنحوه)
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯৩. (হাসান) ইউসুফ বিন আবদুস্ সালাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবু দারদা (রাঃ) যে অসুস্থতায় মৃত্যু বরণ করেন সে সময় আমি তা সুশ্রূষা করার জন্য তাঁর কাছে আগমণ করলে তিনি বলেনঃ ওহে ভ্রাতুষ্পুত্র! কি কাজে তুমি এ শহরে এসেছো? অথবা কোন্ কাজ তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে? তিনি বললেনঃ কোন কাজে নয়; বরং আপনার সাথে আমার পিতা আবদুস্ সালামের যে সম্পর্ক ছিল সে কারণেই আমি আপনার নিকট আগমণ করেছি।
তিনি বললেনঃ মিথ্যা কথা বলার জন্য এটা খুবই খারাপ সময়। আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ
’’যে ব্যক্তি ওযু করে এবং ওযুকে সুন্দরভাবে সম্পাদন করে। অতঃপর দন্ডায়মান হয়ে দু’রাকাআত অথবা চার রাকাআত (বর্ণনাকারী সাহলের সন্দেহ) নামায আদায় করে, তাতে সুন্দরভাবে যিকির ও দু’আ সমূহ পাঠ করে বিনয়ের সাথে নামায আদায় করে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে তাকে ক্ষমা করা হয়।’’
(ইমাম আহমাদ হাসান সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ২৭৫৪৬)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن ) وَعَنْ يوسف بن عبد الله بن سَلَامٍ، قَالَ: أَتَيْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ فِي مَرَضِهِ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ فَقَالَ لِي: يَا ابْنَ أَخِي مَا أَعْمَلَكَ الى هَذِه الْبَلَدِ - أَوْ مَا جَاءَ بِكَ ؟ قَالَ: قُلْتُ: لَا إِلَّا صِلَةُ مَا كَانَ بَيْنَكَ وَبَيْنَ وَالِدِي عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ فَقَالَ: بِئْسَ سَاعَةُ الْكَذِبِ هَذِهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، أَوْ أَرْبَعًا - يشكَّ سَهْلٌ - يُحْسِنُ فِيهِمَا الذِّكْرَ ، وَالْخُشُوعَ ثُمَّ يسْتَغْفِرُ اللهَ غَفَرَ لَهُ ". رواه أحمد بإسناد حسن
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯৪. (হাসান ছহীহ্) যায়দ বিন খালেদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি ওযু করবে এবং ওযুকে সুন্দররূপে সম্পাদন করবে। তারপর দু’রাকাআত নামায আদায় করবে, তাতে কোন ভুল করবে না, তবে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ৯০৫) তাঁর আরেক বর্ণনায়ঃ[1]
مَا مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ الْوُضُوءَ وَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ يُقْبِلُ بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ عَلَيْهِمَا إِلَّا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ
’’যে কেউ ওযু করবে- তার ওযুকে সুন্দরূপে সম্পাদন করবে এবং দু’রাকাআত নামায আদায় করবে, তাতে নিজের অন্তর ও মুখমণ্ডল কে নামাযের প্রতি নিবিষ্ট রাখবে (অর্থাৎ- অন্তরের একাগ্রতা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্থীরতা সহকারে নামায পড়বে), তার জন্যে জান্নাত আবশ্যক হয়ে যাবে।’’ (আবূ দাউদ ৯০৬)
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
) (حسن صحيح ) وَ عَنْ زَيْدِ بن خَالِدٍ الجهني رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لا يَسْهُوَ فِيهِمَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ. رواه أبو داود
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯৫. (সহীহ্) উক্ববা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে নিজেরা নিজেদের খিদমত করতাম। আমরা পরস্পর পালা করে উট চরাতাম। আমার উট চরানোর পালা এলে আমি তা বিকালের দিকে মাঠে নিয়ে যেতাম। একদিন রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের সামনে বক্তৃতা করছিলেন। তখন আমি শুনলাম তিনি একথা বলছেনঃ
’’তোমাদের কোন ব্যক্তি যদি ওযু করে, অতঃপর ওযুকে সুন্দররূপে সম্পাদন করে, তারপর হৃদয়-শরীরকে নিবিষ্ট করে দু’রাকাআত নামায আদায় করে, তবে সে (এমন আমল করল যা জান্নাতকে) আবশ্যক করে দিবে।’’ আমি বললাম, বাহ্ বাহ্ কতই না সুন্দর কথা!
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ২৩৪, আবু দাউদ ১৬৯, নাসাঈ ১/১৪, ইবনে মাজাহ ৪৭০, ইবনে খুযায়মা ও হাকেম, হাদীছের বাক্য আবু দাউদের)
তবে হাকেমের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
ما من مسلم يتوضأ فيسبغ الوضوء ثم يقوم في صلاته فيعلم ما يقول إلا انفتل وهو كيوم ولدته أمه الحديث وقال صحيح الإسناد أوجب أي أتى بما يوجب له الجنة
’’যে কোন মুসলমান যদি ওযু করে, অতঃপর ওযুকে পূর্ণরূপে সম্পাদন করে, তারপর নামাযে দন্ডায়মান হয়, সে জানে যে নামাযে কি বলছে, তবে সে নামায থেকে সেই দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে ফিরে যাবে, যে দিন তার মাতা তাকে ভূমিষ্ট করেছিল।’’
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(صحيح) وَ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُدَّامَ أَنْفُسِنَا نَتَنَاوَبُ الرِّعَايَةَ رِعَايَةَ إِبِلِنَا فَكَانَتْ عَلَيَّ رِعَايَةُ الْإِبِلِ فَرَوَّحْتُهَا بِالْعَشِيِّ فإذا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ الْوُضُوءَ ثُمَّ يَقُومُ فَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ يُقْبِلُ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلَّا قَدْ أَوْجَبَ فَقُلْتُ بَخٍ بَخٍ مَا أَجْوَدَ هَذِهِ . رواه مسلم وأبو داود واللفظ له والنسائي وابن ماجه وابن خزيمة ورواه الحاكم
পরিচ্ছেদঃ ১৪) সাধারণ ভাবে নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ, রুকু, সেজদা এবং বিনয় নম্রতার ফযীলত
৩৯৬. (হাসান সহীহ) আসেম বিন সুফিয়ান ছাক্বাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তারা ’যাতু সালাসিল’ নামক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তাতে যুদ্ধ হয়নি তখন তারা সে এলাকায় সীমান্ত পাহারার জন্য কিছু দিন অবস্থান করেন। অতঃপর তারা ফিরে আসেন মুআ’বিয়ার কাছে। সে সময় মুআ’বিয়ার (রাঃ) কাছে ছিলেন আবু আইয়্যুব আনসারী (রাঃ) এবং উকবা বিন আমের (রাঃ)। তখন আসেম (রাঃ) বললেন, হে আবু আইয়্যুব! বিগত বছর আমরা যুদ্ধ করতে পারিনি। আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে, যে ব্যক্তি চারটি মসজিদে[1] নামায আদায় করবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। তখন আবু আইয়্যুব (রাঃ) বললেন, ভাতিজা! আমি কি তোমাকে এর চেয়ে সহজ কোন আমলের সংবাদ দিব না? আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে ব্যক্তি ওযু করে যেভাবে তাকে আদেশ করা হয়েছে সেভাবে। অতঃপর নামায আদায় করে যেভাবে নির্দেশ হয়েছে সেভাবে। তাহলে সে পূর্বে যে আমলই করে থাকুক না কেন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।’’ হে উকবা কথাটি কি ঠিক নয়? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন নাসাঈ ১/৯০, ইবনে মাজাহ ১৩৯৬ ও ইবনে হিব্বান ১০৩৯)
ওযুর অধ্যায়ে আমর বিন আব্সা (রাঃ) বর্ণিত হাদীছের শেষাংশে বলা হয়েছেঃ
فإن هو قام فحمد الله وأثنى عليه ومجده بالذي هو له أهل وفرغ قلبه لله تعالى إلا انصرف من خطيئته كيوم ولدته أمه.
(সহীহ্) ’’অতঃপর সে যদি দন্ডায়মান হয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তণ করে, তিনি যে সকল গুণের অধিকারী তা দ্বারা তাঁর মহাত্ম্য বর্ণনা করে এবং আল্লাহ তা’আলার জন্যে অন্তরকে একনিষ্ঠ করে, তবে সে তার গুনাহ থেকে এমন দিনের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে যেদিন তার মাতা তাকে ভূমিষ্ট করেছিল।’’[2]
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ২২৮)
ইতোপূর্বে উছমান (রাঃ)এর হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ্ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা বলেছেন:
مَا مِنَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ تَحْضُرُهُ صَلاةٌ مَكْتُوبَةٌ ، فَيُحْسِنُ وُضُوءَهَا ، وَخُشُوعَهَا ، وَرُكُوعَهَا إِلا كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهَا مِنَ الذُّنُوبِ ، مَا لَمْ تُؤْتَ كَبِيرَةٌ ، وَذَلِكَ الدَّهْرَ كُلَّهُ. رواه مسلم
(সহীহ্) ’’কোন মুসলিম ব্যক্তির নিকট যখন ফরয ছালাতের সময় উপস্থিত হয়, তখন সে সুন্দরভাবে ওযু করে এবং রুকু-সিজদাগুলো বিনয়-নম্রতার সাথে সম্পাদন করে। তাহলে তা পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহের জন্য কাফ্ফারা স্বরূপ হয়ে যায়- যতক্ষণ সে কাবীরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। আর তা বছরে সব সময়ের জন্য।’’[3]
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ২২৮)
এছাড়া উবাদা (রাঃ) বর্ণিত হাদীছও পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেনঃ আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
خَمْسُ صَلَوَاتٍ افْتَرَضَهُنَّ اللَّهُ مَنْ أَحْسَنَ وُضُوءَهُنَّ وَصَلَّاهُنَّ لِوَقْتِهِنَّ وَأَتَمَّ رُكُوعَهُنَّ وَخُشُوعَهُنَّ كَانَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ.
(সহীহ্ লি গাইরিহী) ’’আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন, যে ব্যক্তি সময়মত সুন্দররূপে ওযু করবে পরিপূর্ণরূপে রুকূ’-সিজদা ও একাগ্রতাসহ নামায আদায় করবে, তাহলে তার জন্য আল্লাহ তা’আলার অঙ্গিকার রয়েছে যে তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন।’’ (আবূ দাউদ ৪২৫) [4]
[2] . দ্রঃ ১৮৬ নং হাদীছ।
[3] . দ্রঃ ৩৬৪ নং হাদীছ।
[4] . দ্রঃ ৩৭০ নং হাদীছ।
الترغيب في الصلاة مطلقا وفضل الركوع والسجود والخشوع
(حسن صحيح) وَ عَنْ عَاصِمِ بْنِ سُفْيَانَ الثقفي رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّهُمْ غَزَوْا غَزْوَةَ السَّلاسِلِ ، فَفَاتَهُمُ الْغَزْوُ ، فَرَابَطُوا ، ثُمَّ رَجَعُوا إِلَى مُعَاوِيَةَ وَعَنْدَهُ أَبُو أَيُّوبَ ، وَعُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ ، فَقَالَ عَاصِمٌ : يَا أَبَا أَيُّوبَ ، فَاتَنَا الْغَزْوُ الْعَامَ ، وَقَدْ أُخْبِرْنَا أَنَّهُ مَنْ صَلَّى فِي الْمَسَاجِدِ الأَرْبَعَةِ غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ ، فَقَالَ : يَا ابْنَ أَخِي ، أَدُلُّكَ عَلَى أَيْسَرَ مِنْ ذَلِكَ ، إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ( يَقُولُ : مَنْ تَوَضَّأَ كَمَا أُمِرَ ، وَصَلَّى كَمَا أُمِرَ ، غُفِرَ لَهُ مَا قَدَّمَ مِنْ عَمَلٍ ، أَكَذَلِكَ يَا عُقْبَةُ ؟ قَالَ : نَعَمْ . رواه النسائي وابن ماجه وابن حبان في صحيحه