মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৭৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৭৯-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: এ (দীন-শারী’আতের) ব্যাপারে লোকজন কুরায়শদের অনুসারী। তাদের মুসলিমরা তাদের মুসলিমদেরই অনুসারী এবং তাদের কাফির তাদের কাফিরদেরই অনুকরণকারী। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «النَّاسُ تَبَعٌ لِقُرَيْشٍ فِي هَذَا الشَّأْن مسلمهم تبع مسلمهم وكافرهم تبع لكافرهم» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3495) و مسلم (2 / 1818)، (4702) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

عن ابي هريرة ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الناس تبع لقريش في هذا الشان مسلمهم تبع مسلمهم وكافرهم تبع لكافرهم» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3495) و مسلم (2 / 1818)، (4702) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (النَّاسُ تَبَعٌ لِقُرَيْشٍ) অর্থাৎ নেতৃত্ব কুরায়শদের মধ্যে চলে আসছে। অতএব তা তাদের মধ্য হতে বের হয়ে অন্যত্র যাওয়া উচিত বা কল্যাণকর হবে না। আল্লামাহ তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অবশেষে কুরায়শদের একজনও কুফরের মধ্যে থেকে যায়নি। ফলে জাহিলী যুগে তারা যেভাবে নেতৃত্বে ছিলেন, ইসলামী যুগেও তা বহাল ছিল। তাদের মুসলিমগণ তাদের মুসলিমদেরই অনুসারী’- এ কথাটির তাৎপর্য সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার আল আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন ‘আরবের বুকে ইসলামের ডাক দিয়েছিলেন, তখন অধিকাংশ গোত্রের লোকেরা এই বলে ইসলাম গ্রহণ হতে বিরত থাকে, দেখা যাক, কুরায়শরা কি বলে? অতঃপর যখন মক্কাহ্ বিজয় হলো, আর কুরায়শরা ইসলাম গ্রহণ করল, তখন সমস্ত গোত্র দলে দলে তাদের অনুসরণ করল।
(فِي هَذَا الشَّأْن) এ (দীন-শারী'আতের) ব্যাপারে। হাদীসের বাহ্যিক বর্ণনা প্রসঙ্গ দ্বারা বুঝা যায় যে, ‘এ ব্যাপার' দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দীন ও শারী'আত চাই তার অস্তিত্বের বিশ্বাস হোক বা অনস্তিত্বের বিশ্বাস হোক। অর্থাৎ দীন গ্রহণ করা বা গ্রহণ না করা তথা ঈমান ও কুফরের ব্যাপারে সকল লোক কুরায়শদের অনুসারী এবং তারা কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বের আসনে সমাসীন। তা এভাবে যে, একদিকে দীনের আবির্ভাব সর্বপ্রথম করায়শদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয় এবং সর্বপ্রথম কুরায়শরা ঈমান এনেছে, অতঃপর তাদের অনুসরণ করে অন্যান্য লোকেরাও ঈমান আনতে শুরু করে। অন্যদিকে ঐ কুরায়শের লোকেরাই সর্বপ্রথম দীনের বিরোধিতা করে এবং মুসলিমদেরকে বাধা দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিল আর এভাবেই কাফিররা কুরায়শদের অনুসারী হলো।
অতএব ইসলামের ইতিহাসবিদরা ভালো করেই জানেন যে, মক্কা বিজয়ের পূর্বে সকল ‘আরবের লোকেরা মক্কার কুরায়শদের ইসলাম গ্রহণের অপেক্ষায় ছিল। যখন মুসলিমদের হাতে মক্কা বিজয় হলো এবং মক্কার কুরায়শরা মুসলিম হয়ে গেল তখন সকল ‘আরবের লোকেরাও দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করল তথা ইসলাম গ্রহণ করল যেমন সূরাহ্ নাসর-এ এসেছে। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮০-[২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: লোকজন ভালো এবং মন্দে (উভয় অবস্থায়) কুরায়শদের অনুসারী। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «النَّاسُ تَبَعٌ لِقُرَيْشٍ فِي الْخَيْرِ وَالشَّر» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (3 / 1819)، (4703) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الناس تبع لقريش في الخير والشر» . رواه مسلم رواہ مسلم (3 / 1819)، (4703) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: লোকজন ভালো ও মন্দে কুরায়শদের অনুসারী অর্থাৎ ইসলামে ও কুফরীতে। যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তারা কুরায়শ মুসলিমদের অনুসারী। আর যারা ঈমান আনেনি বরং কুফরী অবস্থায় থেকে গেছে তারা কুরায়শ কাফিরদের কুফরীর অনুগামী হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮১-[৩] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: এ দায়িত্ব (শাসন-কর্তৃত্ব) কুরায়শদের মাঝে থাকবে, যতদিন (দুনিয়াতে) তাদের দু’জন লোকও অবশিষ্ট থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَزَالُ هَذَا الْأَمْرُ فِي قُرَيْشٍ مَا بَقِيَ مِنْهُمُ اثْنَان» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3501) و مسلم (4 / 1820)، (4704) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابن عمر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لا يزال هذا الامر في قريش ما بقي منهم اثنان» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3501) و مسلم (4 / 1820)، (4704) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: সর্বদা এই বিষয় তথা খিলাফাতের বিষয়টি মানুষের মধ্যে বাকী থাকবে। যদি তাদের মাঝে দু’জন বাকী থাকে তবে একজন খলীফাহ্ হবে আর একজন তার অনুসারী হবে। ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ হাদীস ছাড়াও এই জাতীয় যত হাদীস আছে তা স্পষ্টভাবে দলীল যে, খিলাফাত কুরায়শদের সাথে নির্দিষ্ট। অতএব তা অন্যদের জন্য গ্রহণ করা জায়িয হবে না। আর এ বিষয়টির উপর সাহাবীদের এবং তাদের পরবর্তীদের মাঝে ইজমা হয়েছিল। আর যারা এ মতের বিরোধিতা করেছিল তারা হলো বিদআতপন্থী। তারা সাহাবীদের ইজমা'-এর বিরোধী কাজ সম্পন্নকারী। আর নবী (সা.) বলেছেন, এ বিষয়টি চলতে থাকবে শেষ যুগ পর্যন্ত যতদিন দু’জন লোকও বাকী থাকবে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ হুকুম বর্তমানেও বলবৎ আছে। আর এটা এমন সংবাদ যা আদেশের অর্থে। অর্থাৎ যারা মুসলিম তারা তাদের অনুসরণ করবে তাদের অনুসরণ থেকে বের হবে না। আর তারা তাদের অনুসরণ না করলে এ আদেশ থেকে বের হয়ে যাবে। ইমাম সুয়ূত্নী (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন, যতদিন দীন প্রতিষ্ঠিত থাকে ততদিন এ হুকুম জারি থাকবে। কথিত আছে যে, এ হাদীসের অর্থ বাহ্যিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। আর এখানে নাস তথা মানুষ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কতিপয় মানুষ। অর্থাৎ সকল আরব। এটা ইবনু হাজার আল আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮২-[৪] মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, এ বিষয়টি (অর্থাৎ শাসন-কর্তৃত্ব) কুরায়শদের হাতেই থাকবে। যতদিন তারা দীন-ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে লিপ্ত থাকবে, যে কেউ তাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে তার মুখের উপর উপুড় করে নিক্ষেপ করবেন। (অর্থাৎ লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন) (বুখারী)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ مُعَاوِيَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ هَذَا الْأَمْرَ فِي قُرَيْشٍ لَا يُعَادِيهِمْ أَحَدٌ إِلَّا كَبَّهُ اللَّهُ عَلَى وَجهه مَا أَقَامُوا الدّين» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3500) ۔
(صَحِيح)

وعن معاوية قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «ان هذا الامر في قريش لا يعاديهم احد الا كبه الله على وجهه ما اقاموا الدين» . رواه البخاري رواہ البخاری (3500) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: খিলাফতের আসল উদ্দেশ্য যেহেতু দীনকে প্রতিষ্ঠা করা এবং ইসলামের পতাকা সমুন্নত করা, এজন্য কুরায়শগণ যে পর্যন্ত দীন ও শারী'আতের প্রচার ও প্রসারে লেগে থাকবে এবং ইসলামের পতাকা সমুন্নত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাবে, তারা খিলাফাতের পদমর্যাদার অধিকারী হবে এবং মহান আল্লাহও তাদের শাসন ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। কিন্তু যখন তারা তাদের মূল দায়িত্ব অর্থাৎ দীন ও ইসলাম প্রতিষ্ঠা হতে গাফিল হয়ে যাবে এবং খিলাফতের মূল চাহিদাগুলো পূরণ করা হতে পিছপা হবে তখন তারা উপেক্ষিত হবে এবং খিলাফত ও কর্তৃত্বের লাগাম তাদের থেকে ছিনিয়ে নেয়া হবে।
কতক ব্যাখ্যাকার লিখেছেন যে, দীন প্রতিষ্ঠা করার দ্বারা উদ্দেশ্য সালাত প্রতিষ্ঠা করা। যেমনিভাবে এক বর্ণনায় এসেছে, “যতদিন তারা সালাত প্রতিষ্ঠিত রাখবে"। তদ্রুপ কতক স্থানে দীন ও ঈমানের প্রয়োগ সালাতের উপর হয়েছে। এ কথার উপর ভিত্তি করে কতক ‘আলিমের বক্তব্য হলো, উক্ত মূল্যবান ঘোষণার আসল উদ্দেশ্য কুরায়শগণকে সালাত প্রতিষ্ঠার নির্দেশ ও উৎসাহ দান এবং এ কথা থেকে ভয় দেখানো যে, যদি তারা সালাত প্রতিষ্ঠিত না রাখে তাহলে সম্ভাবনা আছে যে, খিলাফাত ও কর্তৃত্বের পদমর্যাদা তাদের আয়ত্ব বর্হিভূত হবে এবং অন্য লোকেরা তাদের ওপর কর্তৃত্বেও ছড়ি ঘুরাবে। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২২৭-২২৮ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৩-[৫] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, বারোজন খলীফাহ্ অতিবাহিত হওয়া অবধি ইসলাম শক্তিশালী থাকবে। তারা সকলই হবেন কুরায়শ বংশোদ্ভূত। অপর এক বর্ণনাতে আছে, মানুষের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সঠিকভাবে চলতে থাকবে বারোজন খলীফাহ অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত। তারা সকলেই হবে কুরায়শ বংশের।
অপর আরেক বর্ণনাতে আছে, [নবী (সা.) বলেছেন:] দীন-ইসলাম প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যে অবধি না কিয়ামত আসে এবং তাদের ওপর বারোজন খলীফার শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। যারা সকলেই হবেন কুরায়শী। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَزَالُ الْإِسْلَامُ عَزِيزًا إِلَى اثْنَيْ عَشَرَ خَلِيفَةً كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «لَا يَزَالُ أَمْرُ النَّاسِ مَاضِيًا مَا وَلِيَهُمُ اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «لَا يَزَالُ الدِّينُ قَائِمًا حَتَّى تَقُومَ السَّاعَة أَو يَكُونُ عَلَيْهِمُ اثْنَا عَشَرَ خَلِيفَةً كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْش» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7222) و مسلم (7 / 1821 و الروایۃ الثانیۃ : 6 / 1821 و الروایۃ الثالثۃ : 10 / 1822)، (4708 و 4706 و 4711) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن جابر بن سمرة قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «لا يزال الاسلام عزيزا الى اثني عشر خليفة كلهم من قريش» . وفي رواية: «لا يزال امر الناس ماضيا ما وليهم اثنا عشر رجلا كلهم من قريش» . وفي رواية: «لا يزال الدين قاىما حتى تقوم الساعة او يكون عليهم اثنا عشر خليفة كلهم من قريش» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (7222) و مسلم (7 / 1821 و الروایۃ الثانیۃ : 6 / 1821 و الروایۃ الثالثۃ : 10 / 1822)، (4708 و 4706 و 4711) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (لَا يَزَالُ الْإِسْلَامُ عَزِيزًا) অর্থাৎ ইসলাম সর্বদা খুবই শক্তিশালী অথবা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে যতদিন বার জন খলীফাহ্ থাকবে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই বর্ণনা ও অন্য বর্ণনা দ্বারা জানা যায় যে, দীন সর্বদা প্রতিষ্ঠিত থাকবে এমনকি তাদের নিকট বার জন খলীফাহ্ আগমন করবে।
(كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ) কতিপয় মুহাক্কিক বলেন, এদের মধ্যে চার খলীফাহ্ অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর বাকীগুলো কিয়ামতের আগে পূর্ণ হবেন। কেউ কেউ বলেন, তারা সবাই একই যুগে হবেন আর মানুষ তাদেরকে আলাদা করবে। ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর শারহে মুসলিমে কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে একটি প্রশ্ন আছে, তা হলো- হাদীসে এসেছে, আমার পরে খিলাফত হবে ত্রিশ বছর। এর পর হবে রাজত্ব। এটা তো এ হাদীসের বিপরীত। এর উত্তরে বলা হয়েছে, ত্রিশ বছর দ্বারা উদ্দেশ্য নুবুওয়্যাতের খিলাফাত। এ কথা বিস্তারিতভাবে কতিপয় বর্ণনায় এসেছে। আমার পরে নুবুওয়্যাতের খিলাফাত হবে ত্রিশ বছর। এর পরে হবে মুলক বা রাজত্ব। আর রাজত্বের ক্ষেত্রে তিনি বারো জনকে শর্ত করেননি। কথিত আছে যে, বারো জন দ্বারা উদ্দেশ্য হলো খিলাফাতের যোগ্য হবেন যারা ন্যয়পরায়ণ তারা। এদের মধ্যে অনেকে অতিক্রম করেছেন বলে জানা গেছে। আর বাকীগুলো কিয়ামাতের পূর্বে পূর্ণ হবেন।
শী'আরা মনে করেন যে, বারোজন খলীফাহ ধারাবাহিকভাবে আহলে বায়তদের মধ্যে থেকে হবে। তাদের প্রথমজন হলেন ‘আলী (রাঃ), হাসান, হুসায়ন, যায়নুল আবিদীন, মুহাম্মাদ বাকির, জাফার সাদিক, মূসা কাযিম, ‘আলী রিযা, মুহাম্মাদ আত্ তাক্বী, ‘আলী আত্ তাক্বী, হাসান আসকারী, মুহাম্মাদ মাহদী (আঃ) এটা উল্লেখ করেছেন খাজা মুহাম্মাদ ইয়ারসা ফাসলুল খিত্বাব গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৪-[৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: গিফার গোত্র আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে মার্জনা করুন, আসলাম গোত্র- আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে নিরাপদে রাখুন আর ’উসাইয়্যাহ্ গোত্র তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অবাধ্য হয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «غِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا وَأَسْلَمُ سَالَمَهَا اللَّهُ وَعُصَيَّةُ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3513) و مسلم (187 / 2518)، (6435) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «غفار غفر الله لها واسلم سالمها الله وعصية عصت الله ورسوله» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3513) و مسلم (187 / 2518)، (6435) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থে এসেছে, রাসূল (সা.) গিফার গোত্রের লোকেদের জন্য ক্ষমার দু'আ করার কারণ হলো তারা ইসলাম কবুল করেছিলেন। আর তাদের ইসলামে প্রবেশ করাটা কোন যুদ্ধ বা রক্তপাত করা ছাড়াই হয়েছিল। আর ইতোপূর্বে এ গিফার গোত্রের লোকজন হাজীদের মালামাল চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল। তাই রাসূল (সা.) তাদের জন্য দু'আ করলেন যেন তারা এ অপরাধের গুনাহ থেকে পরিত্রাণ লাভ করে। আর ‘উসাইয়্যাহ্ গোত্রের লোক তারা বি’রে মা'ঊনাতে কুরআনের কারীদেরকে হত্যা করেছিল। ফলে নবী (সা.) তাদের বিরুদ্ধে কুনূতে নাযিলাহ্ পড়েছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৫-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কুরায়শ, আনসার, জুহায়নাহ্, মুযায়নাহ্, আসলাম, গিফার ও আশজা গোত্রসমূহ আমার বন্ধু। বস্তুত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাড়া তাদের আর কোন বন্ধু নেই। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قُرَيْشٌ وَالْأَنْصَارُ وَجُهَيْنَةُ وَمُزَيْنَةُ وَأَسْلَمُ وَغِفَارُ وَأَشْجَعُ مَوَالِيَّ لَيْسَ لَهُمْ مَوْلًى دُونَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3512) و مسلم (189 / 2520)، (6439) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «قريش والانصار وجهينة ومزينة واسلم وغفار واشجع موالي ليس لهم مولى دون الله ورسوله» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3512) و مسلم (189 / 2520)، (6439) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (موالِىَّ) শব্দটি ‘ইয়া মুতাকাল্লিম’-এর দিকে মুযাফ হয়েছে, যা ‘মাওলা-এর বহুবচন।
অন্য এক বর্ণনায় এ শব্দটি “ইয়া মুতাকাল্লিম ছাড়া মাওয়াল বর্ণিত হয়েছে। এ অবস্থায় অনুবাদ হবে উক্ত গোত্ৰসমূহের মুসলিমগণ পরস্পর একে অন্যের সাহায্য-সহযোগিতাকারী ও বন্ধু।  (মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২৩১ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৬-[৮] আবূ বকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আসলাম, গিফার, মুযায়নাহ্ ও জুহায়নাহ্ গোত্রসমূহ বানূ তামীম ও বানূ ’আমির এবং উভয় সহযোগী তথা বানূ আসাদ ও গাত্বফান হতেও শ্রেয়। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَسْلَمُ وَغِفَارُ وَمُزَيْنَةُ وَجُهَيْنَةُ خَيْرٌ مِنْ بني تَمِيم وَبني عَامِرٍ وَالْحَلِيفَيْنِ بَنِي أَسْدٍ وَغَطَفَانَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3523) و مسلم (190 / 2521)، (6441) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي بكرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اسلم وغفار ومزينة وجهينة خير من بني تميم وبني عامر والحليفين بني اسد وغطفان» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3523) و مسلم (190 / 2521)، (6441) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (وَالْحَلِيفَيْنِ) ‘উভয় সহযোগী গোত্র’ বানূ আসাদ ও বানূ গাত্বফান দুটি গোত্রের নাম। এ দুটি গোত্র পরস্পর একটি অন্যটির সহযোগী ছিল। যেরূপ সে যুগের 'আরবদের সাধারণ নিয়ম ছিল- ঐ গোত্রদ্বয় একে অন্যের সম্মুখে শপথ ও অঙ্গীকার করেছিল যে, পরস্পর একে অন্যের সাহায্য-সহযোগিতা করবে।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসে উল্লেখিত গোত্রসমূহকে এজন্য উত্তম বলা হয়েছে যে, এ সকল গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রগামিতার সৌভাগ্য অর্জন করেছে এবং নিজেদের ভালো অবস্থা ও আচার-আচরণে প্রশংসার যোগ্য হওয়া প্রমাণ করতে পেরেছে।
(মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বাকরা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৭-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সর্বদা তখন হতে বানূ তামীম-কে ভালোবেসে আসছি, যখন হতে তাদের তিনটি গুণের কথা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ হতে শুনেছি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, ১. আমার উম্মতের মধ্যে বানূ তামীমই দাজ্জালের বিরোধিতায় অধিক কঠোর প্রমাণিত হবে। ২. একবার তাদের সাদাকা্ এসে পৌছলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এটা আমার গোত্রের সাদাকা্। ৩. ’আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর কাছে বানূ তামীমের একটি দাসী ছিল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বললেন, তুমি তাকে মুক্ত করে দাও। কেননা সে ইসমাঈল আলায়হিস সালাম-এর বংশধর। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن أبي هُرَيْرَة قَالَ: مَا زِلْتُ أُحِبُّ بَنِي تَمِيمٍ مُنْذُ ثلاثٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِيهِمْ سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «هُمْ أَشَدُّ أُمَّتِي عَلَى الدَّجَّالِ» قَالَ: وَجَاءَتْ صَدَقَاتُهُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذِهِ صَدَقَاتُ قَوْمِنَا» وَكَانَتْ سَبِيَّةٌ مِنْهُمْ عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَ: «اعْتِقِيهَا فَإِنَّهَا مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (2543) و مسلم (198 / 2525)، (6451) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال: ما زلت احب بني تميم منذ ثلاث سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول فيهم سمعته يقول: «هم اشد امتي على الدجال» قال: وجاءت صدقاتهم فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «هذه صدقات قومنا» وكانت سبية منهم عند عاىشة فقال: «اعتقيها فانها من ولد اسماعيل» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (2543) و مسلم (198 / 2525)، (6451) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (هُمْ أَشَدُّ أُمَّتِي عَلَى الدَّجَّالِ) “আমার উম্মতের মধ্যে বানূ তামীমই দাজ্জালের মোকাবেলায় অধিক কঠোর প্রমাণিত হবে।” অর্থাৎ অভিশপ্ত দাজ্জাল যখন প্রকাশ পাবে তখন বানূ তামীমের লোকেরাই সবচেয়ে বেশি তার মোকাবেলা করবে এবং তাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালাবে এবং তাকে প্রত্যাখান ও মিথ্যা সাব্যস্ত করার ব্যাপারে সবচেয়ে অগ্রগামী হবে। এ জাতীয় ঘোষণার মধ্যেই বানূ তামীমের বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব পরিদৃষ্ট হয়। সাথে সাথে তাদের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণীও আছে যে, বানূ তামীম-এর সন্তান-সন্ততি দাজ্জাল প্রকাশিত হওয়ার সময়ও অত্যধিক থাকবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৮-[১০] সা’দ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: যে লোক কুরায়শকে অপমানিত করার ইচ্ছা পোষণ করবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে অপমানিত করবেন। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

عَنْ سَعْدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ يُرِدْ هَوَانَ قُرَيْشٍ أَهَانَهُ الله» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

حسن ، رواہ الترمذی (3905 وقال : غریب) ۔
(صَحِيح)

عن سعد عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من يرد هوان قريش اهانه الله» رواه الترمذي حسن ، رواہ الترمذی (3905 وقال : غریب) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: সর্বক্ষেত্রে কুরায়শদেরকে সম্মান-মর্যাদা দেয়া আবশ্যক। কুরায়শদেরকে অসম্মান করা ও তাদের অপমানের ইচ্ছা পোষণ করা প্রকারান্তরে আল্লাহর অসন্তুষ্টি ক্রয় করা। এমতাবস্থায় তারা ইমামতে কুবরা তথা খিলাফাত অধিষ্ঠিত থাকুক বা না থাকুক। তারা খলীফাহ্ ও আমীর পদে অধিষ্ঠিত থাকা অবস্থায় তাদের অসম্মান ও অপমানের নিষেধাজ্ঞা ও ভৎসনার কারণ তো সুস্পষ্ট। তবে যে অবস্থায় তারা খিলাফাত ও ইমামতের পদে অধিষ্ঠিত থাকবে না সেক্ষেত্রেও তাদের অসম্মান ও অপমানের নিষেধাজ্ঞা এ হিসেবে মনে করা হবে যে, রাসূল (সা.) -এর সাথে বংশীয় দিক দিয়ে তাঁদের সম্পৃক্ততার সৌভাগ্য রয়েছে, আর তাদের এ বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা এ কথারই দাবি করে যে, তাদেরকে অসম্মান ও অপমান করা যাবে না।)।  (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২৩৩ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সা'দ ইবন উবাদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৮৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৮৯-[১১] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: হে আল্লাহ! তুমি কুরায়শদের প্রথম শ্রেণিকে প্রথমে দুঃখের স্বাদ আস্বাদন করিয়েছ, এখন তাদের পরবর্তী শ্রেণিকে সুখ ভোগের সুযোগ দান কর। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ أَذَقْتَ أَوَّلَ قُرَيْشٍ نَكَالًا فَأَذِقْ آخِرَهُمْ نَوَالًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

حسن ، رواہ الترمذی (3908 وقال : حسن صحیح غریب) ۔
(حسن صَحِيحٌ)

عن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اللهم اذقت اول قريش نكالا فاذق اخرهم نوالا» . رواه الترمذي حسن ، رواہ الترمذی (3908 وقال : حسن صحیح غریب) ۔ (حسن صحيح)

ব্যাখ্যা: কুরায়শদের প্রথম শ্রেণির লোকেরা নবী (সা.) -এর সাথে বিরোধিতার কারণে তার সাথে লড়াই করে বদর, উহুদ ও খন্দক যুদ্ধে নিহত হয়ে দুনিয়াতে ও আখিরাতে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। আর তাদের পরবর্তীগণকে তোমার সম্মান ও মর্যাদা হতে দান কর। কারণ মক্কা বিজয়ের পর তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। ফলে নবী (সা.) তাদের সুখ আনন্দের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯০-[১২] আবূ ’আমির আল আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আসদ ও আশ’আর গোত্রদ্বয় খুবই ভালো। তারা লড়াইয়ের ময়দান হতে পলায়ন করে না এবং আমানত বা গনীমতের সম্পদের খিয়ানত করে না। অতএব তারা আমার দলের অন্তর্ভুক্ত আর আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন এবং তিনি বলেছেন হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن أبي عَامر الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَعْمَ الْحَيُّ الْأَسْدُ وَالْأَشْعَرُونَ لَا يَفِرُّونَ فِي الْقِتَالِ وَلَا يَغُلُّونَ هُمْ مِنِّي وَأَنَا مِنْهُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3947) و اخطا من ضعفہ ۔
(ضَعِيف)

وعن ابي عامر الاشعري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «نعم الحي الاسد والاشعرون لا يفرون في القتال ولا يغلون هم مني وانا منهم» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3947) و اخطا من ضعفہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আসদ হলো ইয়ামানের এক গোত্রের প্রধান পুরুষের নাম। আর গোত্রটি এ নামের সাথেই বেশি পরিচিত ও সুপ্রসিদ্ধ ছিল। এ গোত্রকে আযদ ও আযদ শানূআহ্-ও বলা হত। মদীনার সকল আনসার এ গোত্রের সাথে বংশীয় দিক দিয়ে সম্পৃক্ত ছিল।
আশ'আর মূলত ‘আমর ইবনু হারিসাহ আল আসাদী-এর উপাধি ছিল। যিনি স্বীয় যুগে ইয়ামানের বিশেষ সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। তিনিও তাঁর গোত্রের প্রধান পুরুষ ছিলেন। তার উপাধির সাথে সম্পৃক্ত করে তার গোত্রকে আশআরী নামকরণ করা হয়েছিল। এ গোত্রের লোকেদেরকে আশ'আরীয়ুন ও আশ’আরূনও বলা হত। প্রখ্যাত সাহাবী আবূ মূসা আশ'আরী (রাঃ) এবং তার বংশের লোক এ গোত্রের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
‘তারা আমার দলের অন্তর্ভুক্ত’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, তারা আমার অনুসারী এবং আমার সুন্নাত ও তরীকার অনুসারী। অথবা এ গোত্রের লোক আমার বন্ধু ও সাহায্য সহযোগিতাকারী। এমনিভাবে ‘আমি তাদের বন্ধু দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আমিও তাদের বন্ধু ও সাহায্য-সহযোগিতাকারী- এ কথা দ্বারা যেন এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এ গোত্রের মুমিন ও মুসলিমরা তাকওয়া ও পরহেযগারী অবলম্বনকারী। আর এ কথা কুরআনের ভাষ্য দ্বারাও প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ তার সকল বন্ধু মুত্তাক্বী ও পরহেযগার। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২৩৪ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯১-[১৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আদ গোত্র জমিনের উপর আল্লাহর (দীনের সাহায্যকারী) আযদ। লোকেরা তাদেরকে খাটো করে রাখতে চায়, অথচ আল্লাহ’ তা’আলা তার বিপরীত তাদেরকে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করতে চান। মানুষের ওপর এমন এক সময় আসবে, কোন লোক আক্ষেপের সাথে বলবে, হায়! আমার পিতা কিংবা বলবে, আমার মতো যদি আযদ বংশীয় হতেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْأَزْدُ أَزْدُ اللَّهِ فِي الْأَرْضِ يُرِيدُ النَّاسُ أَنْ يَضَعُوهُمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلَّا أَنْ يَرْفَعَهُمْ وَلَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَقُولُ الرَّجُلُ: يَا لَيْتَ أَبِي كَانَ أَزْدِيًا وَيَا لَيْتَ أُمِّي كَانَتْ أَزْدِيَّةً رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3937) ۔
(ضَعِيفٌ)

وعن انس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الازد ازد الله في الارض يريد الناس ان يضعوهم ويابى الله الا ان يرفعهم ولياتين على الناس زمان يقول الرجل: يا ليت ابي كان ازديا ويا ليت امي كانت ازدية رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3937) ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আযদ বলতে আযদে শানূয়াহ্ উদ্দেশ্য। আর এটা হলো ইয়ামানের একটি গোত্র। তারা আযদ ইবনুল গাওস ইবনি লায়স ইবনু মালিক ইবনু কাহলান ইবনু সাবা-এর সন্তানাদি। আর আল্লাহ তাদেরকে নিজের সাথে সম্পর্কিত করার কারণ হলো তারা হলো আল্লাহর দল। আর তারা রসূলের সাহায্যকারী। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আবদুল্লাহ বলার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে প্রথমত- তাদের এ নামে প্রসিদ্ধতার কারণে, তারা যুদ্ধের ময়দানে প্রতিষ্ঠিত থাকত তারা পলায়ন করত না। যা ইতোপূর্বে হাদীসে গত হয়েছে। তার উপর ভিত্তি করেই কাযী (রহিমাহুল্লাহ)ও অনুরূপ মন্তব্য করেছিলেন। দ্বিতীয়ত- এই সম্পর্কিত বিষয়টি হলো নির্দিষ্ট ও সম্মানের জন্য। যেমন বায়তুল্লাহ ও নাকাতুল্লাহ, যা তার কথার দ্বারা বুঝা যায়। মানুষ তাদেরকে হেয় করতে চায়..”। তৃতীয়ত- এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য হলো বীর পুরুষ। আর কথাটি তাসবীহ বা সাদৃশ্যের মতো। যেমন- আসাদ বা সিংহ, আসাদুল্লাহ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯২-[১৪] “ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) (’আরবের) তিনটি গোত্রের ওপর অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। গোত্রত্রয় হলো সাকীফ, বানূ হানীফাহ্ ও বানূ উমাইয়্যাহ্। ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن عمرَان بن حُصَيْن قَالَ: مَاتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَكْرَهُ ثَلَاثَةَ أَحْيَاءٍ: ثَقِيفٌ وَبَنِي حَنِيفَةَ وَبَنِي أُمَيَّةَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3943) * فیہ ھشام بن حسان و الحسن البصری مدلسان و عنعنا ۔
(ضَعِيف)

وعن عمران بن حصين قال: مات النبي صلى الله عليه وسلم وهو يكره ثلاثة احياء: ثقيف وبني حنيفة وبني امية. رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3943) * فیہ ھشام بن حسان و الحسن البصری مدلسان و عنعنا ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: সাকীফ হলো হাওয়াযিন গোত্রের গোত্র প্রধান। তাঁর নাম কুসায় ইবনু মুনাব্বিহ ইবনু বাকর ইবনু হাওয়াযিন যেমনটি কামূসে আছে। আর বানূ হানীফাহ্ হলো আসাল ইবনু লুজায়ম-এর উপাধি। তাদের গোত্র প্রধান হলো খাওলাহ্ ইবনু জা'ফার আল হানাফিয়াহ্। তিনি মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু আবূ ত্বালিব এর মা। আর বানূ উমাইয়্যাহ্ হলো কুরায়শদের একটি গোত্র। “উলামাগণ বলেছেন, নবী (সা.) এক সাকীফ সম্প্রদায়কে অপছন্দ করতেন হাজ্জাজের কারণে, আর বানী হানীফাকে অপছন্দ করতেন মুসায়লামাহ্ এর কারণে, আর বানূ উমায়্যাহ্ কে অপছন্দ করতেন ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ-এর কারণে।
ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনু সীরীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ যখন হুসায়ন (রাঃ)-এর মাথা নিয়ে আসলো, আর একটি গামলায় রেখে সেটিকে ডাণ্ডা দিয়ে গুতা দিচ্ছিল।
তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) জামি আত্ তিরমিযীতে বলেন, “উমারাহ্ ইবনু উমায়র বলেন, যখন ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ ও তার সাথিদের কর্তিত মাথা নিয়ে এসে মসজিদের খোলা জায়গায় রাখা হয়েছিল, তখন আমি সে অবস্থা দেখছিলাম। তারপর তারা বলল, তার কর্তিত মাথাটা রাখা হলে একটা সাপ এসে ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ-এর নাকে ঢুকে যায়, তারপর কিছু সময় থেকে আবার বের হয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে উধাও হয়ে যায়। এভাবে দু’বার বা তিনবার করেছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৩-[১৫] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সাকীফ গোত্রে এক চরম মিথ্যাবাদী এবং আর এক ধ্বংসকারীর জন্ম হবে। অধঃস্তন রাবী ’আবদুল্লাহ ইবনু ইসমাহ্ বলেন, মানুষের কাছে স্পষ্ট - সেই মিথ্যাবাদী হলো, মুখতার ইবনু আবূ উবায়দ। আর ধ্বংসকারী হলো হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ। হিশাম ইবনু হাসসান বলেছেন, লোকেরা গণনা করে দেখেছে, হাজ্জাজ যে সমস্ত লোকদেরকে (যুদ্ধের ময়দান ব্যতীত) শুধু বন্দি করে হত্যা করেছে, তার সংখ্যা এক লক্ষ বিশ হাজার। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فِي ثَقِيفٍ كَذَّابٌ وَمُبِيرٌ» قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِصْمَةَ يُقَالُ: الْكَذَّابُ هُوَ الْمُخْتَارُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ وَالْمُبِيرُ هُوَ الْحَجَّاجُ بْنُ يُوسُفَ وَقَالَ هِشَامُ بْنُ حَسَّانَ: أَحْصَوْا مَا قَتَلَ الْحَجَّاجُ صَبْرًا فَبَلَغَ مِائَةَ ألفٍ وَعشْرين ألفا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

صحیح ، رواہ الترمذی (2220) ۔
(صَحِيح)

وعن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «في ثقيف كذاب ومبير» قال عبد الله بن عصمة يقال: الكذاب هو المختار بن ابي عبيد والمبير هو الحجاج بن يوسف وقال هشام بن حسان: احصوا ما قتل الحجاج صبرا فبلغ ماىة الف وعشرين الفا. رواه الترمذي صحیح ، رواہ الترمذی (2220) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: মুখতার ইবনু আবূ উবায়দ আস্ সাকাফী। তিনি মুখতার ইবনু আবূ ‘উবায়দ ইবনু মাসউদ আস সাকাফী। হুসায়ন (রাঃ)-এর শাহাদাত বরণের পর তাঁর অভ্যুত্থান হয়। সে মানুষকে তার প্রভাবপ্রতিপত্তির প্রতি আহ্বান জানায়। আর এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য ছিল সে তার দিকে মানুষের মনোযোগ স্থাপন করবে। আর তার রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করবে জনগণের ওপর। সে তা দ্বারা দুনিয়া অর্জন করতে চেয়েছিল। কাযী (রহিমাহুল্লাহ) এমনটাই জানিয়েছেন। কথিত আছে যে, সে ‘আলী (রাঃ) -কে ঘৃণা করত, এও কথিত আছে যে, সে কূফাতে নুবুওয়্যাতের দাবী করেছিল। অতএব তাকে কায্যাব বা অধিক মিথ্যুক নামকরণ করা হয়। তাঁর মিথ্যার সর্বশেষ নমুনা হলো সে বলেছিল জিবরীল আলায়হিস সালাম তাঁর কাছে ওয়াহী নিয়ে আসে। ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) তা উল্লেখ করেছেন।
ইবনু আবদুল বার (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন, তাঁর পিতা ছিলেন একজন সাহাবী। মুখতার হিজরতের বছরে জন্মগ্রহণ করে। তবে সে কোন সাহাবী না। সে নবী (সা.) -কে দেখেনি, বা তার থেকে কোন হাদীসও বর্ণনা করেনি। তার সংবাদ সন্তোষজনক নয়। হিজরী ৭২ সনে মুসআব ইবনু উমায়র-এর নিহত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সে সামনে আসে। এর আগে সে সাহাবী ও তাবিঈদেরকে শত্রু মনে করত। আর তার এ সকল গুমরাহী প্রকাশ পায় ইবনুয যুবায়র-এর মৃত্যুর পরে। তখন তাঁর একমাত্র চাওয়া-পাওয়া হয়ে যায় শাসন ক্ষমতায় যাওয়া। তখন এ উদ্দেশ্য নিয়ে মুখতার হুসায়ন (রাঃ)-কে যারা শহীদ করেছিল তাদের অনেককে হত্যা করে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। তবে এর পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিল কেবলমাত্র দুনিয়া অর্জন। দুনিয়ার ক্ষমতা লাভ করা। তারপর তার থেকে মিথ্যা ও পাগলামী সব কার্যকলাপ প্রকাশ পায়। তাঁর রাজত্ব ছিল মাত্র ১৭ মাস। কথিত আছে যে, সে প্রথমে খারিজী ছিল। এরপরে সে যুবায়রী হয়ে যায়। তারপর সে রাফিযী হয়ে যায়। সে ভিতরে ভিতরে ‘আলী (রাঃ)-কে শত্রু মনে করত। তাঁর নির্বুদ্ধিতার কারণে এটা মাঝে মাঝে প্রকাশ পেত। মীরাক সহীহ সূত্রে এমনটাই বর্ণনা করেছেন।

হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ: হাজ্জাজ অর্থ অধিক দলীল পেশকারী। ইরাক ও খুরাসানে সে বাদশা আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান-এর গভর্নর ছিল। তারপর তার ছেলে ওয়ালীদেরও গভর্নর ছিল। সে হিজরী ৭৫ সনে শাওয়াল মাসে ওয়াসিতে মারা যায়। তখন তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৪-[১৬] আর সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, হাজ্জাজ যখন ’আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে শহীদ করল, তখন তার মাতা আসমা (রাঃ) বললেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, সাকীফ গোত্র হতে এক চরম মিথ্যাবাদী এবং এক রক্তপিপাসুর আবির্ভাব ঘটবে। অতএব সে জঘন্য মিথ্যাবাদী-কে আমরা দেখেছি। আর (হে হাজ্জাজ!) আমার দৃঢ় বিশ্বাস তুমিই সেই রক্তপিপাসু লোকে। পূর্ণ হাদীস তৃতীয় অনুচ্ছেদে বর্ণিত হবে।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَرَوَى مُسْلِمٌ فِي «الصَّحِيحِ» حِينَ قَتَلَ الْحَجَّاجُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ قَالَتْ أَسْمَاءَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدَّثَنَا «أَن فِي ثَقِيف كذابا ومبيرا» فَأَما الْكذَّاب فَرَأَيْنَاهُ وَأَمَّا الْمُبِيرُ فَلَا إِخَالُكَ إِلَّا إِيَّاهُ. وَسَيَجِيءُ تَمام الحَدِيث فِي الْفَصْل الثَّالِث

رواہ مسلم (229 / 2545 و سیاتی : 6003) ۔
(صَحِيح)

وروى مسلم في «الصحيح» حين قتل الحجاج عبد الله بن الزبير قالت اسماء: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم حدثنا «ان في ثقيف كذابا ومبيرا» فاما الكذاب فرايناه واما المبير فلا اخالك الا اياه. وسيجيء تمام الحديث في الفصل الثالث رواہ مسلم (229 / 2545 و سیاتی : 6003) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: কাযযাব তথা মিথ্যুক ব্যক্তি হলো মুখতার ইবনু আবূ ‘উবায়দ। আর মুবীর বা রক্তপিপাসু হলো হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ। যেমনটি পূর্বের হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৫-[১৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! সাকীফ গোত্রের তীর আমাদেরকে জ্বালাতন করে রেখেছে। অতএব তাদের জন্য আল্লাহর কাছে বদদু’আ করুন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! সাকীফ গোত্রকে হিদায়াত দান কর। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن جَابر قَالَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَحْرَقَتْنَا نِبَالُ ثَقِيفٍ فَادْعُ اللَّهَ عَلَيْهِمْ. قَالَ: «اللَّهُمَّ اهْدِ ثقيفا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3942 وقال : صحیح غریب) ابو زبیر عنعن و رواہ عبد الرحمن بن سابط عن جابر بہ مختصرًا (مسند احمد : 3 / 343) و عبد الرحمن لم یسمع من جابر رضی اللہ عنہ ۔
(ضَعِيف)

وعن جابر قال: قالوا: يا رسول الله احرقتنا نبال ثقيف فادع الله عليهم. قال: «اللهم اهد ثقيفا» . رواه الترمذي سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3942 وقال : صحیح غریب) ابو زبیر عنعن و رواہ عبد الرحمن بن سابط عن جابر بہ مختصرا (مسند احمد : 3 / 343) و عبد الرحمن لم یسمع من جابر رضی اللہ عنہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: সম্ভবত এটা ছিল ত্বায়িফ যুদ্ধের পরের ঘটনা। ত্বায়িফের যুদ্ধে সাকীফ গোত্রের তীর নিক্ষেপ সহ্য না করতে পেরে কতিপয় সাহাবী পিছনে সরে গিয়েছিল। তাই তারা রাসূল (সা.) -এর কাছে পরবর্তীতে এ আবেদন জানায়। ফলে রাসূল (সা.) তাদের ধ্বংসের পরিবর্তে তাদের হিদায়াতের জন্য আল্লাহর কাছে দু'আ করেন। যাতে তারা ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৬-[১৮] ’আবদুর রযযাক (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতার মাধ্যমে মীনা’ হতে, আর তিনি আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন আমরা নবী (সা.) -এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক লোক আসলো। আমার ধারণা লোকটি কায়স গোত্রীয়। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ’হিমইয়ার’ গোত্রের ওপর অভিসম্পাত করুন। এ কথা শুনে নবী (সা.) মুখখানি অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলেন। সে আবার সেদিকে হয়ে তার সম্মুখে দাঁড়াল। তিনি (সা.) আবার মুখখানি ঘুরিয়ে নিলেন। এবারও সেদিকে হতে সামনে এসে দাঁড়াল। সেবারও তিনি (সা.) মুখখানি ফিরিয়ে নিলেন। অতঃপর নবী (সা.) বললেন, আল্লাহ তা’আলা হিমইয়ার গোত্রের প্রতি রহমত নাযিল করুন। তাদের মুখে রয়েছে সালাম এবং হাতে আছে খাদ্য। আর তারা শান্তি ও ঈমানের অধিকারী। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন হাদীসটি গরীব। আমরা ’আবদুর রযযাক ছাড়া আর কারো কাছ হতে এ হাদীস শুনতে পাইনি এবং এই মীনা’ হতে বহু মুনকার হাদীস বর্ণিত রয়েছে]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن عَبْدِ الرَّزَّاقِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ مِينَاءَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فجَاء رَجُلٌ أَحْسَبُهُ مِنْ قَيْسٍ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ الْعَنْ حِمْيَرًا فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ جَاءَهُ من الشقّ الآخر فَأَعْرض عَنهُ ثمَّ جَاءَهُ مِنَ الشِّقِّ الْآخَرِ فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَحِمَ اللَّهُ حِمْيَرًا أَفْوَاهُهُمْ سَلَامٌ وَأَيْدِيهِمْ طَعَامٌ وَهُمْ أَهْلُ أَمْنٍ وَإِيمَانٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّزَّاقِ ويُروى عَن ميناءَ هَذَا أَحَادِيث مَنَاكِير

اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الترمذی (3939) * میناء : متروک و رمی بالرفض و کذبہ ابو حاتم ۔
(ضَعِيف)

وعن عبد الرزاق عن ابيه عن ميناء عن ابي هريرة قال: كنا عند النبي صلى الله عليه وسلم فجاء رجل احسبه من قيس فقال: يا رسول الله العن حميرا فاعرض عنه ثم جاءه من الشق الاخر فاعرض عنه ثم جاءه من الشق الاخر فاعرض عنه فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «رحم الله حميرا افواههم سلام وايديهم طعام وهم اهل امن وايمان» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب لا نعرفه الا من حديث عبد الرزاق ويروى عن ميناء هذا احاديث مناكير اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الترمذی (3939) * میناء : متروک و رمی بالرفض و کذبہ ابو حاتم ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটিতে হিম্‌ইয়ার গোত্রের লোকেদের চারটি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তা হলো- মানুষকে বেশি বেশি করে সালাম করা, অভুক্ত মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে খবর দান করা, অন্যকে ক্ষতি হতে নিরাপদে রাখ এবং ঈমানের দৃঢ়তা। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৭-[১৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী (সা.) আমাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কোন বংশের লোক? বললাম, আমি দাওস গোত্রের। তখন নবী (সা.) বললেন, দাওসের কোন লোকের মাঝেও কল্যাণ আছে বলে ইতোপূর্বে আমি ধারণা করতাম না। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مِمَّنْ أَنْتَ؟ قُلْتُ: مِنْ دَوْسٍ. قَالَ: «مَا كُنْتُ أَرَى أَنَّ فِي دَوْسٍ أحدا فِيهِ خير» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3838 وقال : غریب صحیح) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال لي النبي صلى الله عليه وسلم: ممن انت؟ قلت: من دوس. قال: «ما كنت ارى ان في دوس احدا فيه خير» . رواه الترمذي اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3838 وقال : غریب صحیح) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটিতে আবূ হুরায়াহ্ (রাঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। তার কারণে দাস বংশের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। আর হাদীসটিতে দাওস সম্প্রদায়কে নিন্দা করা হয়েছে। তবে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) তাঁর সম্প্রদায়ের মান-মর্যাদার কারণ হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
৫৯৯৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৮-[২০] সালমান (ফারসী) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, তুমি আমার সাথে বিদ্বেষ রেখ না, তাহলে দীন ইসলাম হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। উত্তরে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কিরূপে আপনার সাথে বিদ্বেষ পোষণ করতে পারি? অথচ আপনার মাধ্যমেই আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ’আরবদের প্রতি হিংসা পোষণ করাই আমার সাথে বিদ্বেষ পোষণ করার নামান্তর। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَن سلمَان قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُبْغِضُنِي فَتُفَارِقَ دِينَكَ» قَلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ أُبْغِضُكَ وَبِكَ هَدَانَا اللَّهُ؟ قَالَ: «تُبْغِضُ الْعَرَبَ فَتُبْغِضُنِي» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3927) * قابوس : فیہ لین ۔
(ضَعِيف)

وعن سلمان قال: قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تبغضني فتفارق دينك» قلت: يا رسول الله كيف ابغضك وبك هدانا الله؟ قال: «تبغض العرب فتبغضني» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3927) * قابوس : فیہ لین ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: “যদি তুমি আরবদের সাথে শত্রুতা কর তবে আমার সাথে শত্রুতা করা হবে।” অর্থাৎ যখন তুমি আমভাবে 'আরবদের সাথে শত্রুতা রাখবে তখন তাদের সাথে আমাকেও শামিল করে ফেলবে। আর যদি নির্দিষ্টভাবে তুমি আরব জাতিকে ঘৃণা কর তবে আমাকেও তো তুমি ঘৃণা করলে। নাঊযুবিল্লাহ। মোটকথা হলো ‘আরবদের ঘৃণা করা মানে সৃষ্টির সেরা মানুষকে ঘৃণা করা। অতএব খুবই সাবধানতা অবলম্বন কর যাতে তুমি ক্ষতির সম্মুখীন না হয়ে পড়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ সালমান ফারসী (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩১৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 6 · · · 13 14 15 16 পরের পাতা »