৫৯৯৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রসমূহের গুণাবলি

৫৯৯৩-[১৫] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সাকীফ গোত্রে এক চরম মিথ্যাবাদী এবং আর এক ধ্বংসকারীর জন্ম হবে। অধঃস্তন রাবী ’আবদুল্লাহ ইবনু ইসমাহ্ বলেন, মানুষের কাছে স্পষ্ট - সেই মিথ্যাবাদী হলো, মুখতার ইবনু আবূ উবায়দ। আর ধ্বংসকারী হলো হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ। হিশাম ইবনু হাসসান বলেছেন, লোকেরা গণনা করে দেখেছে, হাজ্জাজ যে সমস্ত লোকদেরকে (যুদ্ধের ময়দান ব্যতীত) শুধু বন্দি করে হত্যা করেছে, তার সংখ্যা এক লক্ষ বিশ হাজার। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ وَذِكْرِ الْقَبَائِلِ)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فِي ثَقِيفٍ كَذَّابٌ وَمُبِيرٌ» قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِصْمَةَ يُقَالُ: الْكَذَّابُ هُوَ الْمُخْتَارُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ وَالْمُبِيرُ هُوَ الْحَجَّاجُ بْنُ يُوسُفَ وَقَالَ هِشَامُ بْنُ حَسَّانَ: أَحْصَوْا مَا قَتَلَ الْحَجَّاجُ صَبْرًا فَبَلَغَ مِائَةَ ألفٍ وَعشْرين ألفا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ صحیح ، رواہ الترمذی (2220) ۔ (صَحِيح)

ব্যাখ্যা: মুখতার ইবনু আবূ উবায়দ আস্ সাকাফী। তিনি মুখতার ইবনু আবূ ‘উবায়দ ইবনু মাসউদ আস সাকাফী। হুসায়ন (রাঃ)-এর শাহাদাত বরণের পর তাঁর অভ্যুত্থান হয়। সে মানুষকে তার প্রভাবপ্রতিপত্তির প্রতি আহ্বান জানায়। আর এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য ছিল সে তার দিকে মানুষের মনোযোগ স্থাপন করবে। আর তার রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করবে জনগণের ওপর। সে তা দ্বারা দুনিয়া অর্জন করতে চেয়েছিল। কাযী (রহিমাহুল্লাহ) এমনটাই জানিয়েছেন। কথিত আছে যে, সে ‘আলী (রাঃ) -কে ঘৃণা করত, এও কথিত আছে যে, সে কূফাতে নুবুওয়্যাতের দাবী করেছিল। অতএব তাকে কায্যাব বা অধিক মিথ্যুক নামকরণ করা হয়। তাঁর মিথ্যার সর্বশেষ নমুনা হলো সে বলেছিল জিবরীল আলায়হিস সালাম তাঁর কাছে ওয়াহী নিয়ে আসে। ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) তা উল্লেখ করেছেন।
ইবনু আবদুল বার (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন, তাঁর পিতা ছিলেন একজন সাহাবী। মুখতার হিজরতের বছরে জন্মগ্রহণ করে। তবে সে কোন সাহাবী না। সে নবী (সা.) -কে দেখেনি, বা তার থেকে কোন হাদীসও বর্ণনা করেনি। তার সংবাদ সন্তোষজনক নয়। হিজরী ৭২ সনে মুসআব ইবনু উমায়র-এর নিহত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সে সামনে আসে। এর আগে সে সাহাবী ও তাবিঈদেরকে শত্রু মনে করত। আর তার এ সকল গুমরাহী প্রকাশ পায় ইবনুয যুবায়র-এর মৃত্যুর পরে। তখন তাঁর একমাত্র চাওয়া-পাওয়া হয়ে যায় শাসন ক্ষমতায় যাওয়া। তখন এ উদ্দেশ্য নিয়ে মুখতার হুসায়ন (রাঃ)-কে যারা শহীদ করেছিল তাদের অনেককে হত্যা করে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। তবে এর পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিল কেবলমাত্র দুনিয়া অর্জন। দুনিয়ার ক্ষমতা লাভ করা। তারপর তার থেকে মিথ্যা ও পাগলামী সব কার্যকলাপ প্রকাশ পায়। তাঁর রাজত্ব ছিল মাত্র ১৭ মাস। কথিত আছে যে, সে প্রথমে খারিজী ছিল। এরপরে সে যুবায়রী হয়ে যায়। তারপর সে রাফিযী হয়ে যায়। সে ভিতরে ভিতরে ‘আলী (রাঃ)-কে শত্রু মনে করত। তাঁর নির্বুদ্ধিতার কারণে এটা মাঝে মাঝে প্রকাশ পেত। মীরাক সহীহ সূত্রে এমনটাই বর্ণনা করেছেন।

হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ: হাজ্জাজ অর্থ অধিক দলীল পেশকারী। ইরাক ও খুরাসানে সে বাদশা আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান-এর গভর্নর ছিল। তারপর তার ছেলে ওয়ালীদেরও গভর্নর ছিল। সে হিজরী ৭৫ সনে শাওয়াল মাসে ওয়াসিতে মারা যায়। তখন তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। (মিরকাতুল মাফাতীহ)