পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৩. (সহীহ্) জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’একজন মানুষ ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল নামায পরিত্যাগ করা।’’ (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ ৩/৩৭০ ও মুসলিম ৮২, আবূ দাউদ ৪৬৭৮, নাসাঈ ১/২৩২, তিরমিযী ২৬১৮, ইবনে মাজাহ ১০৭৮)
মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
بين الرجل وَبَيْنَ الشِّرْكِ َوَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ.
’’মুসলিম ব্যক্তি ও শির্ক ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হচ্ছে নামায পরিত্যাগ করা।’’
(আবু দাউদ ৪৬৭৮ ও নাসাঈ ১/২৩২ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন) তবে নাসাঈর বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
لَيْسَ بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ إِلاَّ تَرْكُ الصَّلاَةِ
’’বান্দা ও কুফরীর মাঝে নামায পরিত্যাগ করা ব্যতীত কোন পার্থক্য নেই।’’ (নাসাঈ ১/২৩২)
তিরমিযীর বর্ণনায় এসেছেঃ
بَيْنَ الْكُفْرِ وَالْإِيمَانِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
’’কুফরী ও ঈমানের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে নামায পরিত্যাগ করা।’’ (তিরমিযী ২৬১৮)
ইবনে মাজাহর রেওয়ায়াতে এসেছেঃ
بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
’’বান্দা ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হচ্ছে নামায পরিত্যাগ করা।’’ (ইবনে মাজাহ ১০৭৮)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) عن جابر بن عبد الله رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : بَيْنَ الرَّجُل وَبَيْنَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ. رواه أحمد ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৪. (সহীহ্) বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ ’’তাদের মাঝে এবং আমাদের মাঝে চুক্তি হচ্ছে নামাযের, যে ব্যক্তি উহা পরিত্যাগ করবে সে কুফরী করবে।’’
(ইমাম আহমাদ ৫/৩৪৬, আবু দাউদ, তিরমিযী ২৬২১ ও নাসাঈ ১/২৩১, ইবনে মাজাহ ১০৭৯ এবং হাকেম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী হাদীছটিকে হাসান সহীহ বলেন। হাকেম বলেন, সহীহ তার মধ্যে কোন ত্রুটি নেই।)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) وَعَنْ بريدة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول. الْعَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ الصَّلَاةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ.
رواه أحمد وأبو داود والنسائي والترمذي وقال: حديث حسن صحيح وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال: صحيح ولا نعرف له علة
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৫. (সহীহ মাওকূফ) আবদুল্লাহ বিন শাকীক আল উকাইলী (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ ’মুহাম্মাদ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ছাহাবায়ে কেরাম নামায ব্যতীত কোন আমল পরিত্যাগ করাকে কুফরী মনে করতেন না।’ (হাদীছটি বর্ণনা করেন ইমাম তিরমিযী ২৬২২)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح موقوف) وَعَنْ عبد الله بن شقيق العقيلي رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنْ الْأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلَاةِ. رواه الترمذي
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৬. (সহীহ্) ছাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ ’’বান্দার মাঝে এবং কুফরী ও ঈমানের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে নামায। যখন উহা পরিত্যাগ করবে তখন সে শির্ক করবে।’’
(হিবাতুল্লাহ্ তাবারী সহীহ সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেন ৩/৮২২)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) وَعَنْ ثوبان رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الكفر وَالْإِيَمان الصَّلَاةِ فَإِذَا تَرَكَهَا فَقَدْ أَشْرَكَ. رواه هبة الله الطبري بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৭. (হাসান লি গাইরিহী) আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বন্ধু (মুহাম্মাদ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ওসীয়ত করেছেনঃ ’’তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না- যদিও তোমাকে কেটে টুকরো করে দেয়া হয় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয নামায পরিত্যাগ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি উহা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ করে, সে (আল্লাহর) জিম্মা মুক্ত হয়ে যায়। মদ্যপান করবে না, কেননা উহা সকল অশ্লীলতার চাবি।’’ (ইবনে মাজাহ ৩০৩৪ ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৭/৩০৪)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن لغيره) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال أوصاني خليلي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أن لا تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا وَإِنْ قُطِّعْتَ وَإِنْ وَحُرِّقْتَ وَلَا تَتْرُكْ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ وَلَا تَشْرَبْ الْخَمْرَ فَإِنَّهُ مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ. رواه ابن ماجه والبيهقي
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৮. (হাসান লি গাইরিহী) আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে মুহাম্মাদ বিন নসর স্বীয় [কিতাবুস্ সালাত] গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেন। সেখানে বলা হয়েছেঃ আনাস বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ ’’বান্দার মাঝে এবং কুফরী অথবা শির্কের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে নামায। যখন নামায ছেড়ে দিবে তখন সে কুফরী করবে।’’
ورواه ابن ماجه عَنْ يَزِيدَ الرَّقَاشِيِّ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالشِّرْكِ إِلَّا تَرْكُ الصَّلَاةِ فَإِذَا تَرَكَهَا فَقَدْ أَشْرَكَ
(সহীহ লি গাইরিহী) হাদীছটি ইবনে মাজাহ্ ইয়াযীদ রাক্কাশী থেকে, তিনি আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ’’বান্দার মাঝে ও শির্কের মাঝে নামায পরিত্যাগ করা ব্যতীত কোন পার্থক্য নেই। যখন সে উহা ছেড়ে দিবে তখন শির্ক করবে।’’
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن لغيره) ورواه [يعني حديث أنس الذي في الضعيف ] محمد بن نصر في كتاب الصلاة ولفظه سمعت رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: بين العبد والكفر أو الشرك ترك الصلاة فإذا ترك الصلاة فقد كفر.
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৬৯. (হাসান লি গাইরিহী) মুআ’য বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিকট জনৈক লোক আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কিছু আমল শিখিয়ে দিন, উহা বাস্তবায়ন করলে যেন আমি জান্নাতে প্রবেশ করি।
তিনি বললেনঃ ’’তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না- যদিও তোমাকে শাস্তি দেয়া হয় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পিতা-মাতার আনুগত্য করবে- যদিও তারা তোমাকে তোমার সম্পদ ও তোমার মালিকানাধীন সকল বস্ত্ত থেকে বহিস্কার করে দেয়। ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করবে, তার থেকে আল্লাহর জিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যাবে।’’ (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن لغيره) وَعَنْ معاذ بن جبل رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: أتى رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلا، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، عَلِّمْنِي عَمَلا إِذَا أنَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ، قَالَ لا تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا وَإِنْ عذبت حُرِّقْتَ وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ وَإِنْ أَخْرَجَاكَ مِنْ مَالِكَ وَمِنْ كُلِّ شَيْءٍ هُوَ لَكَ وَلَا تَتْرُكَ الصَّلاةَ مُتَعَمِّدًا، فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاةَ مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللَّهِ، . الحديث رواه الطبراني في الأوسط
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭০. (হাসান লি গাইরিহী) মুআ’য বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দশটি বিষয়ে নসীহত করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
’’(১) তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না- যদিও তোমাকে হত্যা করে ফেলা হয় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। (২) পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না- যদিও তারা তোমাকে তোমার পরিবার ও সম্পদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। (৩) ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ফরয নামায পরিত্যাগ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয নামায পরিত্যাগ করবে, তার থেকে আল্লাহর জিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যাবে। (৪) মদ্যপান করবে না। কেননা উহা সকল অশ্লীলতার মূল। (৫) সাবধান গুনাহের কাজে লিপ্ত হবে না। কেননা নাফরমানীর কাজে লিপ্ত হলে আল্লাহর ক্রোধ নেমে আসে। (৬) সাবধান যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করবে না- যদিও সমস্ত মানুষ ধ্বংস হয়ে যায়। (৭) মানুষ যদি মহামারিতে পতিত হয়, তুমি দৃঢ়পদ থাকবে। (৮) বদান্যতার সাথে পরিবারের জন্য খরচ করবে। (৯) তাদেরকে আদব ও শিষ্টাচার শিক্ষার জন্য লাঠি নামিয়ে রাখবে না। (১০) তাদেরকে আল্লাহকে ভয় করতে শিখাবে।’’
(ইমাম আহমাদ ৫/২৩৮ ও ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن لغيره) وَعَنْهُ قَالَ: أَوْصَانِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشْرِ كَلِمَاتٍ قَالَ: " لَا تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتَ، وَلَا تَعُقَّنَّ وَالِدَيْكَ، وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ، وَلَا تَتْرُكَنَّ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا ؛ فَإِنَّ مَنْ تَرَكَ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ، وَلَا تَشْرَبَنَّ خَمْرًا ؛ فَإِنَّهُ رَأْسُ كُلِّ فَاحِشَةٍ، وَإِيَّاكَ وَالْمَعْصِيَةَ ؛
فَإِنَّ بِالْمَعْصِيَةِ حَلَّ سَخَطُ اللهِ ، وَإِيَّاكَ وَالْفِرَارَ مِنَ الزَّحْفِ وَإِنْ هَلَكَ النَّاسُ، وَإِذَا أَصَابَ النَّاسَ مُوتَ فَاثْبُتْ وَأَنْفِقْ عَلَى أَهْلِكَ مِنْ طَوْلِكَ، وَلا تَرْفَعْ عَنْهُمْ عَصَاكَ أدبا ، وَأَخِفْهُمْ فِي اللَّهِ. رواه أحمد والطبراني في الكبير
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭১. (হাসান লি গাইরিহী) রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আযাদকৃত দাসী উমাইমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ওযুর পানি ঢেলে দিচ্ছিলাম। এমন সময় একজন লোক প্রবেশ করল। বলল আমাকে কিছু নসীহত করুন।
তিনি বললেনঃ ’’তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না- যদিও তোমাকে কেটে টুকরো করে দেয়া হয় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না- যদিও তারা তোমাকে তোমার পরিবার ও দুনিয়ার ধন-সম্পদ পরিত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। মদ্যপান করবে না। কেননা উহা সকল খারাপ কাজের চাবি। ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করবে না। কেননা যে এরূপ করবে, তার থেকে আল্লাহ্ ও রাসূলের জিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যাবে।’’ (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن لغيره) و عَنْ أُمَيْمَةَ، مَوْلاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَتْ: كُنْتُ أَصُبُّ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وُضُوءَهُ فَدَخَلَ رَجُلٌ، فَقَالَ: أَوْصِنِي، فَقَالَ:لا تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا، وَإِنْ قُطِّعْتَ وَحُرِّقْتَ بِالنَّارِ، وَلا تَعْصِ وَالِدَيْكَ وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تُخَلِّي عَنْ أَهْلِكَ وَدُنْيَاكَ فَتُخَلِّهِ، وَلا تَشْرَبَنَّ خَمْرًا، فَإِنَّهَا مفتاح كُلِّ شَرٍّ، وَلا تَتْرُكَنَّ صَلاةً مُتَعَمِّدًا، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللَّهِ وَذِمَّةُ رَسُولِهِ. رواه الطبراني
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭২. (সহীহ্) আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’ইসলামের সকল হাতল (শরীয়তের বিধি-বিধান) একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে। যখন একটি হাতল ভাঙ্গবে মানুষ তার পরেরটি আঁকড়ে ধরবে। সর্বপ্রথম যেটি ভেঙ্গে যাবে তা হচ্ছে (আল্লাহর বিধান অনুযায়ী) বিচার-ফায়সালা করা। আর সর্বশেষে যেটি ভেঙ্গে যাবে তা হচ্ছে নামায।’’
(ইবনে হিব্বান ৬৬৮০ [সহীহ গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, আহমাদ ৫/২৫১)[1]
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) و عَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قال رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :"لَيَنْتَقِضَنَّ عُرَى الإِسْلامِ عُرْوَةٌ عُرْوَةٌ، فَكُلَّمَا انْتَقَضَتْ عُرْوَةٌ تَشَبَّثَ النَّاسُ بِالَّتِي تَلِيهَا، فَأَوَّلُهُنَّ نَقْضًا الْحُكْمُ، وَآخِرُهُنَّ الصَّلاةُ". رواه ابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৩. (সহীহ লি গাইরিহী) উম্মে আয়মান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো নামায ছেড়ে দিবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দেয়, তার থেকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যায়।’’ (আহমাদ ৬/৪২১ ও বায়হাক্বী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح لغيره) وَعَنْ أمِّ أيْمَنَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُا أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال لا تَتْرُكِ الصَّلاةَ مُتَعَمِّدًا ، فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاةَ مُتَعَمِّدًا ، فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ الله وَرَسُولِه . رواه أحمد والبيهقي
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৪. (হাসান মাওকূফ) ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ ’যে ব্যক্তি নামায ছেড়ে দিবে তার কোন ধর্ম নেই।’’ (মুহাম্মাদ বিন নসর স্বীয় [কিতাবুস্ সালাত] গ্রন্থে হাদীছটি মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন।)[1]
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن موقوف) وَعَنْ ابن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: مَنْ تَرَكَ الصَّلَاةَ فَلاَ دِيْنَ لَهُ. رواه محمد بن نصر أيضا موقوفا.
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৫. (সহীহ মাওকূফ) আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ’যে ব্যক্তি নামায পড়ে না তার ঈমান নেই। আর যে ব্যক্তি ওযু করেনি তার নামায হবে না।’ (ইবনে আবদুল বার মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেন।)
ইবনে আবী শায়বার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ فَقَدْ كَفَرَ
’’যে ব্যক্তি নামায পরিত্যাগ করবে, সে কুফরী করবে।’’
মুহাম্মাদ বিন নসর মারওয়াযী বলেনঃ আমি ইসহাককে বলতে শুনেছিঃ নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সহীহ্ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, নামায পরিত্যাগকারী কাফের।[1] অনুরূপভাবে নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে নিয়ে সকল বিদ্বানের মত হচ্ছে বিনা ওযরে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগকারী কাফের।[2]
হাম্মাদ বিন যায়দ থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি আইয়্যুব থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ নামায পরিত্যাগ করা কুফরী, এতে কোন মতভেদ নেই।
[1] . শায়খ আলবানী বলেনঃ ছহীহ্ কোন বর্ণনায় كافر শব্দ আমি পাই নি। বরং যা প্রমাণিত হয়েছে তা হচ্ছেঃ فقد كفر । এই উভয় শব্দের মধ্যে বিশাল ব্যবধান আছে বিদ্বানদের নিকট।
[2] . শায়খ আলবানী বলেনঃ ইবনে আবদুল বার্ [তামহীদ গ্রন্থে] ইমাম ইসহাক থেকে একথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেনঃ ’’যদি নামায পরিত্যাগকারী কাযা আদায় করতেও অস্বীকার করে এবং বলে আমি নামাযই পড়ব না তখন সে কাফের হবে।’’ ইসহাকের এ কথা থেকে বুঝা যায় যে নামায পরিত্যাগকারী সীমালঙ্ঘন করে ও আল্লাহর কাছে বিনয়ী হতে অহংকার প্রদর্শন করেই নামাযকে পরিত্যাগ করেছে। এই অবস্থায় সে কাফের।
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح موقوف) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: لاَ إيْماَنَ لِمَنْ لاَ صَلَاةَ لَهُ وَلَا صَلَاةَ لِمَنْ لَا وُضُوْءَ لَهُ. رواه ابن عبد البر وغيره موقوفا
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৬. (হাসান মাওকূফ) মুসআব বিন সা’দ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ’আমি আমার পিতাকে বললাম, আব্বাজান! আল্লাহ বলেনঃ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (যারা নিজেদের নামাযে উদাসীন তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ) এই আয়াত সম্পর্কে আপনি কি বলেন? আমাদের মধ্যে কে এমন আছে যার নামাযে উদাসীনতা আসে না? কে এমন আছে নামায পড়তে গিয়ে যার মনে বিভিন্ন কথা স্মরণ হয় না?
তিনি বললেন, বিষয়টা এরকম নয়। এ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে নামায নষ্ট করা। যারা আজে-বাজে (দুনিয়াবী) কাজে লিপ্ত থেকে নামাযের সময়কে নষ্ট করে দিবে, (তাদেরকে উদ্দেশ্য করে একথা বলা হয়েছে)।’ (হাসান সনদে আবু ইয়া’লা মুসনাদে বর্ণনা করেছেন ৮০৪)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(حسن موقوف) وَعَنْ مصعب بن سعد قال قلت لابي يا أيُّنَا أرأيت قوله تبارك وتعالى (الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ) أينا لا يسهو أينا لا يحدث نفسه قال ليس ذاك إنما هو إضاعة الوقت يلهو حتى يضيع الوقت. رواه أبو يعلى بإسناد حسن
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৭. (সহীহ্) নওফল বিন মুআ’বিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ’’যে ব্যক্তির একটি নামায ছুটে গেল, সে যেন নিজ পরিবার ও সম্পদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।’’ (ইবনে হিব্বান ১৪৬৬ হাদীছটি [সহীহ্ গ্রন্থে] বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) وَعَنْ نَوْفَلَ بْنَ مُعَاوِيَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ النَّبِيَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " مَنْ فَاتَتْهُ صَلَاةٌ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ ". رواه ابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ৪০) ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগ করা ও অলসতা বশতঃ নামাযের সময় পার করে দেয়ার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৫৭৮. (সহীহ্) সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ অধিকাংশ সময় রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করতেন তোমাদের মধ্যে কেউ কি কোন স্বপ্ন দেখেছে? তখন যিনি দেখেছেন তিনি -আল্লাহ্ যা চান তা- তাঁর নিকট বর্ণনা করতেন। একদিন প্রভাতে তিনি আমাদেরকে বললেনঃ
’’আজ রাতে আমার নিকট দু’জন ফেরেশতা আগমণ করে আমাকে নিয়ে চললেন। তারা আমাকে বললেন, চলুন। আমি তাঁদের সাথে চলতে লাগলাম। চলতে চলতে আমরা এমন একজন লোকের নিকট পৌঁছলাম, যে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। আরেকজন লোক পার্শ্বে একটি পাথর হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সে পাথরটি তার মাথায় নিক্ষেপ করছে, ফলে মাথাটি পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর পাথরটি দূরে ছিটকে পড়ছে। সে ওটিকে কুড়িয়ে নিয়ে আসছে। কিন্তু ফিরে আসার আগেই মাথাটি পূর্বের মত ঠিক হয়ে যাচ্ছে। তখন প্রথমবার যেভাবে তাকে আঘাত করছিল সেভাবে আঘাত করছে। তিনি বলেন, আমি বললামঃ সুবহানাল্লাহ্! এরা দু’জন কারা? তাঁরা দু’জন আমাকে বললেনঃ আগে চলুন, আগে চলুন।
আমরা এমন একজন লোকের কাছে আসলাম যে লোকটি চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। আর তার পাশে একজন লোহার কাঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে শুয়ে থাকা মানুষটির একদিকের চোয়ালে ঢুকিয়ে দিচ্ছে এবং তা চিরে ঘাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আবার নাকের ছিদ্রের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তা চিরে ঘাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। চোখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তা চিরে ঘাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। (আওফ বলেন, বর্ণনাকারী আবু রাজা সম্ভবতঃ চিরে ফেলতো শব্দের পরিবর্তে কেটে ফেলতো শব্দ ব্যবহার করেছেন) এরপর আরেক পার্শ্বে গিয়ে অনুরূপভাবে চিরে ফেলছে যেভাবে আগের পার্শ্ব চিরে ফেলছিল। তিনি বললেন, এক পার্শ্বের কাজ শেষ করে আরেক পার্শ্বে যেতেই আগেরটি পূর্বের মত সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বারবার করছে যেরূপ প্রথম করেছিল। তিনি বলেন, আমি বললামঃ সুবহানাল্লাহ্ এরা দু’জন কে? তাঁরা আমাকে বললেনঃ সামনে চলুন, সামনে চলুন।
আমরা চলতে থাকলাম এবং তন্দুরের মত একটি গর্তের কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। বর্ণনাকারী বলেন আমার মনে হয় তিনি বলছিলেনঃ ওর মধ্যে থেকে শোরগোলের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তিনি বলেন, আমরা উঁকি দিয়ে দেখলাম ভিতরে একদল উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। হঠাৎ নীচের দিক থেকে লেলিহান আগুন তাদের দিকে ধাবিত হয়ে আসছে। যখন আগুনের শিখা আসছে তখন তারা ভয়ংকরভাবে চিৎকার করে উঠছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা। তাঁরা দু’জন আমাকে বললেনঃ সামনে চলুন, সামনে চলুন।
আমরা অগ্রসর হলাম এবং একটি নদীর কিনারে উপনীত হলাম। আমার যদ্দুর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, নদীর পানি ছিল রক্তের মত লাল। দেখলাম নদীর মধ্যে একজন মানুষ সাঁতার কাটছে। আরো দেখলাম নদীর কিনারে একজন লোক নিজের কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে। নদীর মাঝের ঐ লোকটি সাঁতার কাটতে কাটতে যখন কিনারের লোকটির নিকট আসছে যে নিজের কাছে পাথর একত্রিত করে রেখেছে। তার কাছে এসে মুখ খুলে দিচ্ছে। আর ঐ লোকটি একটি পাথর তার মুখে নিক্ষেপ করছে। তখন সে আবার সাঁতার কাটতে কাটতে চলে যাচ্ছে। এভাবে বারবার সে ফেরত এসে মুখ ফাঁক করছে। আর ঐ লোকটি তার মুখে একটি পাথর নিক্ষেপ করছে। আমি সেই দু’জনকে বললামঃ এরা দু’জন কারা? তাঁরা বললেন, এগিয়ে চলুন, এগিয়ে চলুন।
আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম এবং এমন একজন বিভৎস চেহারার লোক দেখতে পেলাম। যেরূপ বিভৎস চোহারার কোন লোক তুমি দেখে থাক। তার নিকট ছিল আগুন। সে আগুন প্রজ্জলিত করছে এবং তার চতুর্দিকে দৌড়াচ্ছে। আমি বললামঃ কে এ লোক? তাঁরা দু’জন বললেনঃ সামনে চলুন, সামনে চলুন।
আমরা চলতে চলতে একটি উদ্যানের মধ্যে এসে পড়লাম। যাতে ছিল লম্বা লম্বা গাছ-গাছালী। বসন্তের সবধরণের ফুলের সমাহার তাতে শোভা পাচ্ছিল। আর উদ্যানের মধ্যে একজন দীর্ঘকায় লোককে দেখলাম। তিনি এত উঁচু যে তাঁর মাথা প্রায় দেখতে পাচ্ছিলাম না। লোকটির চতুর্পার্শ্বে এত বালক ছিল যে এতগুলো বালক একসাথে আমি কখনো দেখিনি। তিনি বলেন, আমি বললামঃ এ লোকটি কে এবং এরা কারা? তাঁরা দু’জন বললেনঃ এগিয়ে যান, এগিয়ে যান।
আমরা এগিয়ে গেলাম এবং একটি বিশাল বৃক্ষের নিকট এসে পৌঁছলাম। এত বিশাল ও এরকম সুন্দর বৃক্ষ আমি কখনো দেখিনি। তিনি বলেন, তাঁরা আমাকে বললেন, এর উপর আরোহণ করুন। আমরা আরোহণ করে একটি শহরে প্রবেশ করলাম। যা ছিল সোনা-রূপার ইট দিয়ে তৈরী। আমরা শহরের দরজায় পৌঁছলাম। দরজা খোলার অনুমতি চাইলাম। আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল। ভিতরে প্রবেশ করলাম। সেখানে আমরা কিছু লোককে দেখলাম। যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সৌন্দর্যমন্ডিত ছিল। যেরূপ তোমরা খুব সুন্দর কাউকে দেখে থাক। আর অর্ধেক ছিল খুবই কুৎসিত। যেরূপ খুব কুৎসিত তোমরা কাউকে দেখে থাক। তিনি বলেন, আমার সাথীদ্বয় তাদেরকে বললেন, তোমরা গিয়ে ঐ নদীতে নেমে পড়। তিনি বলেন, নদীটি প্রশস্ত দিকে বইছে। তার পানি যেন খাঁটি দুধের মত শুভ্র-সাদা। তারা নদীর মধ্যে গিয়ে সেখানে গোসল করলো। তারপর তারা আমাদের কাছে ফিরে এলে দেখলাম তাদের কুৎসতি অংশটি মিটে গিয়ে তারা অতিব সুন্দরে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা দু’জন আমাকে বললেন, এটা (এই শহরটি হচ্ছে) ’আ’দন’ নামক জান্নাত। এটা আপনার বাসস্থান। তিনি বলেন, আমি উপরের দিকে দৃষ্টিপাত করলাম। দেখলাম মেঘমালার ন্যায় শুভ্র একটি প্রাসাদ। তিনি বলেন, তাঁরা দু’জন আমাকে বললেন, এটাই আপনার বাসগৃহ। আমি তাঁদেরকে বললামঃ আল্লাহ্ তোমাদেরকে বরকত দিন। আমাকে ছেড়ে দাও আমি তাতে প্রবেশ করি। তাঁরা বললেন, এখন নয়; তবে আপনি অবশ্যই তাতে প্রবেশ করবেন। তিনি বলেন, আমি তাঁদেরকে বললাম, সারারাত ধরে আমি অনেক আশ্চর্য বিষয় দেখেছি। এগুলোর তাৎপর্য কি?
তাঁরা দু’জন বললেনঃ অবশ্যই আমরা সে সম্পর্কে আপনাকে জানাব।
প্রথম যে ব্যক্তির নিকট আপনি এসেছিলেন যার মাথা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া হচ্ছিল সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে কুরআন মুখস্ত করেছিল, অতঃপর (তার উপর আমল না করে) তা প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ফরয নামায না পড়ে ঘুমিয়ে থাকতো।
আর যে লোকটির চোয়াল কাঁধ পর্যন্ত, নাককে কাঁধ পর্যন্ত এবং চোখকে কাঁধ পর্যন্ত ফেড়ে ফেলা হচ্ছিল, সে হচ্ছে এমন লোক যে সকাল সকাল নিজ গৃহ থেকে বের হত এবং চতুর্দিকে মিথ্যার বেশাতী করে বেড়াতো।
আর যে সমস্ত উলঙ্গ নারী-পুরুষকে তন্দুরের মধ্যে দেখেছেন তারা হচ্ছে যেনাকারী পুরুষ ও নারী।
যে লোকটিকে নদীতে সাঁতারাতে দেখেছেন এবং তাকে পাথরের লোকমা খাইয়ে দেয়া হচ্ছে, সে হচ্ছে সুদখোর।
কুৎসিত আকৃতির যে মানুষটিকে আগুন জ্বালাতে এবং তার চারদিকে দৌড়াতে দেখেছেন, তিনি হচ্ছেন মালেক ফেরেশতা জাহান্নামের দারোগা।
আর উদ্যানের মধ্যে যে দীর্ঘকায় লোকটিকে দেখেছেন তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম (আঃ)। তাঁর চতুর্পার্শ্বে যে বালকদের দেখেছেন তারা হচ্ছে প্রত্যেক সেই বালক যারা ফিৎরাতের (স্বভাব ধর্ম ইসলামের) উপর মৃত্যু বরণ করেছে।
মুসলমানদের মধ্যে কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করলঃ হে আল্লাহর রাসূল! মুশরিকদের বাচ্চাদের কি পরিণতি হবে? রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এবং মুশরিকদের বাচ্চারাও সেখানে।
আর যে সমস্ত মানুষের অর্ধেকাংশ অত্যন্ত সুন্দর ও অন্য অর্ধেক অত্যন্ত কুৎসিত তারা এমন লোক যারা সৎ আমলের সাথে অসৎ আমল মিশ্রিত করেছিল। আল্লাহ্ তাদের ত্রুটি সমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ১৩৮৬)
আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযম [মুহাল্লা] গ্রন্থে বলেনঃ ওমার, আবদুর রহমান বিন আওফ, মুআ’য বিন জাবাল, আবু হুরায়রা প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) থেকে প্রমাণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি ফরয নামায পরিত্যাগ করবে এমনকি তার সময়ও পার হয়ে যাবে, তবে সে কাফের মুরতাদ।
হাফেয আবুদল আযীম বলেনঃ ’একদল সাহাবী এবং তাঁদের পর একদল বিদ্বান মত প্রকাশ করেছেন যে, ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগকারী কাফের- এমনকি নামাযের সকল সময় শেষ হয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ওমার বিন খাত্তাব, আবদুল্লাহ বিন মাসউদ, আবদুল্লাহ বিন আব্বাস, মুআ’য বিন জাবাল, জাবের বিন আবদুল্লাহ ও আবু দারদা (রাঃ)। সাহাবী ছাড়া অন্যদের মধ্যে হচ্ছেনঃ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল, ইসহাক বিন রাহুওয়াই, আবদুল্লাহ বিন মুবারক, নাখাঈ, হাকাম বিন উতাইবা, আইয়্যুব সুখতিয়াণী, আবু দাউদ তায়ালেসী, আবু বকর ইবনে আবী শায়বা, যুহাইর বিন হারব প্রমূখ (রহঃ)।[1]
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বালের কথা যদিও পরবর্তী যুগের হাম্বলীগণ উল্লেখ করে থাকেন কিন্তু তাদের মধ্যে মুহাক্কেকদের নিকটে তা ছহীহ হিসেবে প্রমাণিত নয়। তাদের মধ্যে অনেকেই নামাযকে অস্বীকার না করলে তাকে কাফের বলেননি। ইবনে বাত্তা তাদের মধ্যে অন্যতম। অনুরূপ মত পোষণ করেছেন শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়া ও তাঁর ছাত্র ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসারীগণ যেমন শায়খ মুহাম্মাদ বিন আবদুল আবদুল ওয়াহ্বাব (রহঃ)। কেনই বা হবে না আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইমাম ইমাম আহমাদকে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায পরিত্যাগকারী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলঃ তখন তিনি বললেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি নামায পরিত্যাগ করে উহা আদায় করে না এবং যে ব্যক্তি সময় অতিক্রম করার পর নামায আদায় করে, তাকে আমি তিন দিন নামাযী হওয়ার জন্যে দাওয়াত দিব। যদি নামায পড়ে তো ভাল কথা, অন্যথা আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিব কেননা সে আমার নিকট মুরতাদের মত।’’
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে শায়খ আলবানী প্রণীত পুস্তক [নামায পরিত্যাগকারীর বিধান] দেখুন।
الترهيب من ترك الصلاة تعمدا وإخراجها عن وقتها تهاونا
(صحيح) وَعَنْ سَمُرَةُ بْنُ جُنْدُبٍ ، قَالَ : كَأنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يَقُولُ لأَصْحَابِهِ : هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمْ رُؤْيَا ، فَيَقُصُّ عَلَيْهِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُصَّ ، وإنه قَالَ لَنَا ذَاتَ غَدَاةٍ : إنَّهُ أَتَانِي اللَّيْلَةَ اثْنَانِ، وَإِنَّهُمَا ابْتَعَثَانِي ، وَإِنَّهُمَا قَالَا لِيَ: انْطَلِقْ، وَإِنِّي انْطَلَقْت مَعَهُمَا ، وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ ، وَإِذَا هُوَ يَهْوِي بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ ، فَيَثْلَغُ رَأْسَهُ فَيَتَدَهْدَهُ الْحَجَرُ فَيَأْخُذُهُ ، فَلَا يَرْجِعُ إلَيْهِ حَتَّى يَصِحَّ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ ، ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ الْمَرَّةِ الأُولَى ، قَالَ : قُلْتُ: سُبْحَانَ اللهِ مَا هَذَا فَقَالاَ لِي : انْطَلِقْ. انْطَلِقْ
فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُسْتَلْقٍ قَفَاهُ، وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِكَلُّوبٍ مِنْ حَدِيدٍ، وَإِذَا هُوَ يَأْتِي أَحَدُ شِقَّيْ وَجْهِهِ، فَيُشَرْشِرُ شِدْقَهُ إِلَى قَفَاهُ، وَمَنْخِرَهُ إِلَى قَفَاهُ، وَعَيْنَهُ إِلَى قَفَاهُ، قَالَ: ثُمَّ يَتَحَوَّلُ إِلَى الْجَانِبِ الْآخَرِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ بِالْجَانِبِ الْأَوَّلِ، فَمَا يَفْرَغُ مِنْ ذَلِكَ الْجَانِبِ حَتَّى يَصِحَّ ذلك الجانب كَمَا كَانَ، ثُمَّ يَعُودُ عليه فَيَفْعَلُ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الْأُولَى "، قَالَ: قُلْتُ: " سُبْحَانَ اللهِ مَا هَذَانِ ؟ قَالَا لِي: انْطَلِقْ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى مِثْلِ التَّنُّورِ قَالَ: فَأَحْسَبُ أَنَّهُ كان يقول : فَإِذَا فِيهِ لَغَطٌ وَأَصْوَاتٌ، قَالَ: " فَاطَّلَعْناَ
فيه فَإِذَا فِيهِ رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ، فَإِذَا هُمْ يَأْتِيهِمْ لَهِيبٌ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ، فَإِذَا أَتَاهُمْ ذَلِكَ اللهَبُ ضَوْضَوْا "، قَالَ: قُلْتُ: " مَا هَؤُلَاءِ ؟ قَالَا لِي: انْطَلِقْ انْطَلِقْ، قال فَانْطَلَقْتُ فَأَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ، حَسِبْتُ أَنَّهُ كان يقول أَحْمَرَ مِثْلِ الدَّمِ، وَإِذَا فِي النَّهَرِ رَجُلٌ سَابح، يَسْبَحُ وَإِذَا عَلَى شَاطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ حِجَارَةً كَثِيرَةً ، وَإِذَا ذَلِكَ السَّابِحُ يَسْبَحُ مَا سَبَحَ ، ثُمَّ يَأْتِي ذَلِكَ الَّذِي قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ الْحِجَارَةَ فَيَفْغَرُ فَاهُ فَيُلْقِمُهُ حَجَرًا فينطلق فيسبح ثم يرجع إليه كلما رجع إليه فغر فاه فألقمه حجرا قلت لهما مَا هَذَا أن؟ قَالاَ لِي : انْطَلِقَ انْطَلِقْ. فَانْطَلَقْنَا ، فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ كَرِيهِ الْمَرْآةِ كَأَكْرَهِ مَا أَنْتَ رَاءٍ رَجُلاً مَرْآةً ، وَإِذَا عِنْدَ نَارٍ يَحشُهَا وَيَسْعَى حَوْلَهَا ، قَالَ : قُلْتُ لَهُمَا : مَا هَذَا ؟قاَلَ: قَالاَ لِي : انْطَلِقَ انْطَلِقْ. فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى رَوْضَةٍ مُعْتَمَّةٍ، فِيهَا مِنْ كُلِّ نَوْرِ الرَّبِيعِ، وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَيِ الرَّوْضَةِ رَجُلٌ طُوِيلٌ لاَ أَكَادُ أَرَى رَأْسَهُ طُولاً فِي السَّمَاءِ، وَإِذَا حَوْلَ الرَّجُلِ مِنْ أَكْثَرِ وِلْدَانٍ رَأَيْتُهُمْ [قَطُّ] قَالَ: قُلْتُ: مَا هذَا مَا هؤُلاَءِ قَالاَ لِي: انْطَلِقْ، انْطَلِقْ .
فَانْطَلَقْنَا فأتينا على دوحة عظيمة لم أر دوحة قط أعظم ولا أحسن منها، قال قَالاَ لِي: ارْقَ فِيهَا فَارْتَقَيْنَا إِلَى مَدِينَةٍ مَبْنِيَّةٍ، بِلَبِنِ ذَهَبٍ وَلَبِنِ فِضَّةٍ، فَأَتَيْنَا بَابَ الْمَدِينَةِ، فَاسْتَفْتَحْنَا، فَفُتِحَ لَنَا، فَدَخَلْنَاهَا، فَتَلَقَّانَا رِجَالٌ، شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ، وَشَطْرٌ كَأَقْبَحِ مَا أَنْتَ رَاءٍ، قَالَ: قَالاَ لَهُمُ: اذهَبُوا فَقَعُوا فِي ذلِكَ النَّهَرِ، قَالَ: وَإِذَا نَهَرٌ مُعْتَرِضٌ يَجْرِي كَأَنَّ مَاءَهُ الْمَحْضُ فِي الْبَيَاضِ فَذَهَبُوا فَوَقَعُوا فِيهِ ثُمَّ رَجَعُوا إِلَيْنَا، قَد ذَهَبَ ذَلِكَ السُّوءُ عَنْهُمْ فَصَارُوا فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ:
قَالاَ لِي: هذِهِ جَنَّةُ عَدْنٍ، وَهذَا مَنْزِلكَ قَالَ: فسَمَا بَصَرِي صُعُدًا، فَإِذَا قَصْرٌ مِثْلُ الرَّبَابَةِ الْبَيْضَاءِ قَالَ: قَالاَ لِي: هذَا مَنْزِلُكَ، قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: بَارَكَ اللهُ فِيكُمَا، ذَرَانِي فَأَدْخلَهُ قَالاَ: أَمَّا الآنَ فَلاَ وَأَنْتَ دَاخِلُهُ قَالَ:
قُلْتُ لَهُمَا: فَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ مَنْذُ اللَّيْلَةِ عَجَبًا فَمَا هذَا الَّذِي رَأَيْتُ قَالَ: قَالاَ لِي: أَمَا إِنّا سَنُخْبِرُكَ:
أَمَّا الرَّجُلُ الأَوَّلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُثْلَغُ رَأْسُهُ بِالْحَجَرِ، فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَأْخُذُ الْقُرْآنَ فَيَرْفِضُهُ، وَيَنَامُ عَنِ الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ
وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُشَرْشَرُ شِدْقُهُ إِلَى قَفَاهُ، وَمَنْخِرُهُ إِلَى قَفَاهُ، وَعَيْنُهُ إِلَى قَفَاهُ، فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَغْدُو مِنْ بَيْتِهِ فَيَكْذِبُ الْكَذْبَةَ تَبْلُغُ الآفَاقَ
وَأَمَّا الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ الْعُرَاةُ، الَّذِينَ فِي مِثْلِ بِنَاءِ التَّنُّورِ، فَإِنَّهُمُ الزُّنَاةُ وَالزَّوَانِي.
وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يَسْبَحُ فِي النَّهَرِ وَيُلْقَمُ الْحَجَرَ، فَإِنَّهُ آكِلُ الرِّبَا.
وَأَمَّا الرَّجُلُ الْكَرِيهُ الْمَرْآةِ، الَّذِي عِنْدَ النَّارِ، يَحُشُّهَا وَيَسْعى حَوْلَهَا، فَإِنَّهُ مَالِكٌ، خَازِنُ جَهَنَّمَ .
وَأَمَّا الرَّجُلُ الطَّوِيلُ الَّذِي فِي الرَّوْضَةِ فَإِنَّهُ إِبْرَاهِيمُ .
وَأَمَّا الْوِلْدَانُ الَّذِينَ حَوْلَهُ فَكُلُّ مَوْلُودٍ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ"
قَالَ: فَقَالَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ: يَا رَسُولَ اللهِ وَأَوْلاَدُ الْمُشْرِكِينَ فَقاَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
"وَأَوْلاَدُ الْمُشْرِكِينَ".
وَأَمَّا الْقَوْمُ الَّذِينَ كَانُوا، شَطْرٌ مِنْهُمْ حَسَنًا وَشَطْرٌ مِنْهُمْ قَبِيحًا، فَإِنَّهُمْ قَوْمٌ خَلَطُوا عَمَلاً صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا، تَجَاوَزَ اللهُ عَنْهُمْ".
. رواه البخاري