পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪২. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি নামাযরত আছে বলে গণ্য হবে যতক্ষন নামায তাকে আটকিয়ে রাখে; শুধুমাত্র নামাযই তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখে।’’
(একটি হাদীছের মধ্যে বুখারী ইহা বর্ণনা করেছেন ৬৫৯ এবং মুসলিমও হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৬৪৯)
বুখারীর বর্ণনায় রয়েছে:
إِنَّ أَحَدَكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا دَامَتْ الصَّلَاةُ تَحْبِسُهُ وَالْمَلاَئِكَةُ تَقُولُ : اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ مَا لَمْ يَقُمْ مِنْ مُصَلاَّه ، أو يُحْدِثْ
’’যতক্ষন কোন ব্যক্তিকে নামায ফেরত যেতে বাধা দিবে ততক্ষন পর্যন্ত সে নামাযরত অবস্থায় আছে বলে গণ্য হবে। আর ফেরেশতারা তার জন্য দু’আ করে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা কর, তুমি তাকে করুণা কর- যতক্ষন সে মুসল্লা থেকে না উঠে অথবা তার ওযু ভঙ্গ না হয়।’’
মুসলিম এবং আবু দাউদের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
لَا يَزَالُ الْعَبْدُ فِي صَلَاةٍ مَا كَانَ فِي مُصَلَّاهُ يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ وَتَقُولُ الْمَلَائِكَةُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ حَتَّى يَنْصَرِفَ أَوْ يُحْدِثَ قيل ومَا يُحْدِثُ قَالَ يَفْسُو أَوْ يَضْرِطُ
’’কোন বান্দা ততক্ষন পর্যন্ত নামায অবস্থাতেই আছে বলে গণ্য হবে যতক্ষন সে মুসল্লাতে বসে নামাযের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবে। আর ফেরেশতারা তার জন্য দু’আ করবে, হে আল্লাহ তুমি তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ তুমি তাকে রহম কর। যতক্ষন সে ওখান থেকে ফিরে না যায় অথবা ওযু ভঙ্গ না হয়।
প্রশ্ন করা হল: ওযু ভঙ্গ হওয়ার অর্থ কি?
তিনি বললেনঃ ’’বায়ূ নির্গত হওয়া।’’
এই হাদীছটি ইমাম মালেকও মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন, নাঈম বিন আবদুল্লাহ মুজমির থেকে বর্ণিত। তিনি আবু হুরায়রা (রাঃ) কে একথা বলতে শুনেছেনঃ
يَقُولُ إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ ثُمَّ جَلَسَ فِي مُصَلَّاهُ لَمْ تَزَلْ الْمَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَيْهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ فَإِنْ قَامَ مِنْ مُصَلَّاهُ فَجَلَسَ فِي الْمَسْجِدِ يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ لَمْ يَزَلْ فِي صَلَاةٍ حَتَّى يُصَلِّيَ
’’তোমাদের কোন ব্যক্তি যদি নামায আদায় করে অতঃপর জায়নামাযে বসে থাকে তাহলে ফেরেশতারা তার জন্য দু’আ করতেই থাকে, হে আল্লাহ্! তুমি তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্! তুমি তাকে দয়া কর। যদি সে নিজ জায়নামায থেকে উঠে যায় এবং মসজিদের কোন এক জায়গায় বসে নামাযের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে তাহলে সে নামায পড়ে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত নামাযরত অবস্থায় আছে বলেই গণ্য হবে।’’
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) عن أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال لَا يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا دَامَتْ الصَّلَاةُ تَحْبِسُهُ لَا يَمْنَعُهُ أَنْ يَنْقَلِبَ إِلَى أَهْلِهِ إِلَّا الصَّلَاةُ (رواه البخاري في أثناء حديث ومسلم)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৩. (সহীহ্) আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এশার নামাযে আসতে দেরী করলেন, এমনকি অর্ধ রাত্রি হয়ে গেল। তারপর নামায শেষ করার পর লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেনঃ ’’লোকেরা নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, আর তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষায় বসেছিলে ততক্ষণ নামাযরত অবস্থাতেই ছিলে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ৫৭২)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) وَعَنْ أنس رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَّرَ لَيْلَةً صَلَاةَ الْعِشَاءِ إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ ثُمَّ أَقْبَلَ بِوَجْهِهِ بَعْدَمَا صَلَّى فَقَالَ صَلَّى النَّاسُ وَرَقَدُوا وَلَمْ تَزَالُوا فِي صَلَاةٍ مُنْذُ انْتَظَرْتُمُوهَا . رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৪. (সহীহ্) আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’’বিছানা থেকে তাদের পার্শ্বদেশগুলো আলাদা হয়ে যায়।’’ (সূরা সিজদাঃ ৬১) এশার নামাযের অপেক্ষার জন্যেই এই আয়াতটি নাযিল করা হয়েছে।
(তিরমিযী বর্ণনা করে বলেন হাদীছটি হাসান সহীহ্ গরীব ৩১৯৬)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) وَعَنْ أنَسِ بْنِ ماَلِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ هَذِهِ الْآيَةَ [تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنْ الْمَضَاجِعِ] نَزَلَتْ فِي انْتِظَارِ الصَّلَاةِ الَّتِي تُدْعَى الْعَتَمَةَ. رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح غريب
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৫. (সহীহ্) আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে মাগরিবের নামায আদায় করলাম। তারপর যাদের কাজ ছিলো তারা ফিরে গেল এবং যারা বসে থাকার তারা বসে থাকলো। এমন সময় রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৌড়িয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন। সে সময় তিনি দ্রুত নিঃশ্বাস ছাড়ছিলেন এবং তার হাঁটু থেকে কাপড় উঠিয়ে নিয়েছিলেন। এসে তিনি বললেনঃ
’’তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। তা এই যে তোমাদের পালনকর্তা এখনি আসমানের একটি দরজা খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করছেন। তিনি বলছেন: দেখ আমার বান্দাদেরকে তারা একটি ফরয নামায শেষ করেছে এবং আরেকটি নামাযের অপেক্ষা করছে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনে মাজাহ ৮০১)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) و عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ صَلَّيْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَغْرِبَ فَرَجَعَ مَنْ رَجَعَ وَعَقَّبَ مَنْ عَقَّبَ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْرِعًا قَدْ حَفَزَهُ النَّفَسُ وَقَدْ حَسَرَ عَنْ رُكْبَتَيْهِ فَقَالَ أَبْشِرُوا هَذَا رَبُّكُمْ قَدْ فَتَحَ بَابًا مِنْ أَبْوَابِ السَّمَاءِ يُبَاهِي بِكُمْ الْمَلَائِكَةَ يَقُولُ انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي قَدْ قَضَوْا فَرِيضَةً وَهُمْ يَنْتَظِرُونَ أُخْرَى. (رواه ابن ماجه)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৬. (হাসান) আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’এক নামাযের পরে আরেক নামায যার মধ্যবর্তী সময়ে কোন অনর্থক-বাজে কাজ করা হয়নি। তাহলে তার ঐ নামায ঈল্লীনের মধ্যে লেখা হয়ে যায়।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ৫৫৮)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(حسن ) و عَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَصَلَاةٌ عَلَى أَثَرِ صَلَاةٍ لَا لَغْوَ بَيْنَهُمَا كِتَابٌ فِي عِلِّيِّينَ. رواه أبو داود
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৭. (সহীহ্ লি গাইরিহী) জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি বলে দিব না আল্লাহ তা’আলা কোন্ আমল দ্বারা তোমাদের গুনাহগুলো মিটিয়ে দেন এবং পাপ সমূহ মোচন করে দেন?
তাঁরা বললেনঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল!
তিনি বললেনঃ ’’কষ্টের সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, বেশী বেশী মসজিদে গমণ করা এবং এক নামায শেষ করে আরেক নামাযের অপেক্ষা করা। ইহা তোমাদের জন্যে সীমান্ত পাহারা দেয়ার ছোয়াবের বরাবর।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনে হিব্বান ১০৩৬)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح لغيره) عن جابر بن عبد الله رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قال: قال رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يمحو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا ويكفر به الذنوب، قَالُوا بَلَى يا رسول الله قَالَ إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكْرُوهَاتِ وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصَّلَاةِ فذلكم الرباط.
رواه ابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৮. (সহীহ্) মালেক, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ উক্ত হাদীছটি আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) ورواه مالك ومسلم والترمذي والنسائي من حديث أبِيْ هُرَيْرَةَ وتقدم هناك
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৪৯. (সহীহ্) আলী বিন আবি তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’কষ্টের সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, মসজিদে যাওয়ার জন্য পা ফেলা এবং এক নামায শেষে আরেক নামাযের জন্য অপেক্ষায় বসে থাকা গুনাহগুলোকে সম্পূর্ণরূপে ধুয়ে দেয়।’’
(আবু ইয়া’লা ৪৮৮, বাযযার ৪৪৭, হাকেম ১/১৩২ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাকেম বলেনঃ হাদীছটি মুসলিমের শর্তানুযায়ী ছহীহ্)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) وَعَنْ علي بن أبي طالب رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ ، وَإِعْمَالُ الأَقْدَامِ إِلَى الْمَسَاجِدِ ، وَانْتِظَارُ الصَّلاةِ بَعْدَ الصَّلاةِ ، تَغْسِلُ الْخَطَايَا غَسْلا (رواه أبو يعلى والبزار بإسناد صحيح والحاكم وقال صحيح على شرط مسلم.)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫০. (হাসান) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’এক নামায আদায় করার পর আরেক নামাযের জন্য অপেক্ষমান ব্যক্তি ঐ অশ্বারোহী ব্যক্তির মত যে আল্লাহর পথে জিহাদে তার শত্রুর বিরুদ্ধে নিজের অশ্বকে কঠিনভাবে ধাবিত করেছে। আর ইহা হচ্ছে সবচেয়ে বড় সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মতো ছোয়াবের কাজ।’’[1]
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ ২/৩৫২ ও ত্বাবরানী [আওসাত গ্রন্থে])
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
) (حسن )وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:"مُنْتَظِرُ الصَّلاةِ بَعْدَ الصَّلاةِ كَفَارِسٍ اشْتَدُّ بِهِ فَرَسُهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ على كَشْحِهِ، وَهُوَ فِي الرِّبَاطِ الأَكْبَرِ (رواه أحمد والطبراني في الأوسط)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫১. (সহীহ্ লি গাইরিহী) আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’স্বপ্নযোগে আজ রাতে আমার প্রভু আমার সামনে এসেছিলেন।’’
অপর বর্ণনায়ঃ
’’আমি স্বপ্নে আমার পালনকর্তাকে সর্বোত্তম আকৃতিতে দেখেছি। তিনি আমাকে বললেন হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম: লাববাইকা ওয়া সাআ’দাইকা হে আমার প্রভু! (আমি আপনার সামনে হাজির এবং আপনার সৌভাগ্য নিতে প্রস্ত্তত।) তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগন কোন বিষয় নিয়ে পরস্পর বির্তক করছে? আমি বললামঃ আমি জানি না। তখন তিনি আমার দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে স্বীয় হাত রাখলেন এমনকি আমি তার ঠান্ডা অনুভব করলাম আমার দুই স্তনের মধ্যবর্তী স্থানে অথবা বলেছেন- বুকের মধ্যে। অতঃপর আমি আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানের যা কিছু আছে তা জানতে পারলাম অথবা তিনি বলেছেন পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যখানে যা আছে তা আমি জানতে পারলাম।[1]
তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ কি বিষয় নিয়ে পরস্পর বির্তক করছে? আমি বললাম হ্যাঁ। তা হচ্ছে মর্যাদা উন্নীত করণ, পাপ মোচন, জামাআতে নামায আদায় করার জন্য পা উঠিয়ে মসজিদে যাওয়া, কঠিন ঠান্ডার সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, এক নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করা। যে ব্যক্তি এগুলোর প্রতি যত্নবান হবে সে কল্যাণের সাথে জীবন-যাপন করবে এবং কল্যাণের মাঝে তার মৃত্যু হবে। আর সে তার পাপ থেকে এমনভাবে মুক্ত হবে যেমন তার মাতা তাকে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ট করেছিল।’’
(ইমাম তিরমিযী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেনঃ হাদীছটি হাসান গারীব ৩২৩১)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح لغيره) وَعَنْ ابن عباس رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي
وفي رواية رأيت ربي فِي أَحَسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ لِي : يَا مُحَمَّدُ قلت لبيك ربي وسعديك قال ، هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى : قُلْتُ : لا أعلم فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَيْ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ أَوْ قال في نَحْرِي فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ أو قَالَ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ أَتَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى قُلْتُ نعم في الدَّرَجَاتِ والْكَفَّارَاتِ وَنَقْلُ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي السَّبَراتِ وَانْتِظَارُ الصَّلاةِ بَعْدَ الصَّلاةِ وَمَنْ حَافَظَ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ ". رواه الترمذي وقال حديث حسن غريب
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫২. (হাসান সহীহ্) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না কোন কাজ দ্বারা আল্লাহ্ পাপ মোচন করেন এবং নেকী বাড়িয়ে দেন?’’
তাঁরা বললেনঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল!
তিনি বললেনঃ কষ্টের সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা বা পবিত্রতা অর্জন করা, এই মসজিদের দিকে বেশী বেশী গমণ করা। এক নামায আদায় করা পর আরেক নামাযের জন্য অপেক্ষায় বসে থাকা। কোন ব্যক্তি নিজ গৃহে পবিত্রতা অর্জন করে যখন মসজিদে গমণ করে অতঃপর মুসলমানদের সাথে বা ইমামের সাথে নামায আদায় করে। অতঃপর সে পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করে, তাহলে ফেরেশতারা তার জন্য দু’আ করেঃ হে আল্লাহ্! তুমি তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্ তাকে করুণা কর।’’
(ইবনে মাজাহ ৪২৭, ইবনে খুযায়মা ১৭৭, ইবনে হিব্বান ৪০২, দারেমী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(حسن صحيح ) وَعَنْ أبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدِرِيْ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَلا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يُكَفِّرُ الله بِهِ الْخَطَايَا ، وَيَزِيدُ بِهِ فِي الْحَسَنَاتِ ؟ قَالُوا : بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ:" إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ أو الطهور في الْمَكَارِهِ ، وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ، وَالصَّلَاةُ بَعْدَ الصَّلَاةِ، ومَا مِنْ أحَدٍ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهِ مُتَطَهِّرًا حتى يأتي المسجد فَيُصَلِّي مَعَ الْمُسْلِمِينَ ، ثُمَّ يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ التي بعدها، إلا قالت الْمَلَائِكَةُ: اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللهُمَّ ارْحَمْهُ
(رواه ابن ماجه وابن خزيمة وابن حبان في صحيحه واللفظ له والدارمي في مسنده)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৩. (হাসান লি গাইরিহী) আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’তিনটি কাজ গুনাহ মোচন করে, তিনটি কাজ মর্যাদা বৃদ্ধি করে, তিনটি কাজ মুক্তি দানকরে এবং তিনটি কাজ ধ্বংস করে।
গুনাহ মোচনকারী বিষয়গুলো হচ্ছেঃ (১) কঠিন ঠান্ডার সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা (২) এক নামায পড়ে পরবর্তী নামাযের অপেক্ষা করা (৩) জামাআতে নামায আদায় করার জন্য পা বাড়িয়ে মসজিদে আসা।
মর্যাদা বৃদ্ধিকারী বিষয় হচ্ছেঃ (১) মানুষকে খাদ্য খাওয়ানো (২) সালাম প্রচার করা (৩) মানুষ যখন নিদ্রায় থাকে তখন উঠে নফল নামায আদায় করা।
মুক্তিদানকারী বিষয়গুলো হলঃ (১) সন্তুষ্টি এবং ক্রোধ উভয় অবস্থায় ন্যায় বিচার করা (২) অভাব এবং সম্পদের মাঝে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা (৩) প্রকাশ্য ও গোপন উভয় অবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা।
আর ধ্বংসকারী বিষয়গুলো হলঃ (১) অনুগত কৃপণতা (২) প্রবৃত্তির অনুসরণ করা (৩) নিজেকে নিয়ে আত্মগর্ব করা।’’
(বাযযার ৮০, বায়হাকী প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(حسن لغيره) وَعَنْ أنس رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنه قال ثَلاثٌ كَفَّارَاتٌ ، وَثَلاثٌ دَرَجَاتٌ وَثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ و ثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ ، فَأَمَّا الْكَفَّارَاتُ: فَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي السَّبَرَاتِ، وَانْتِظَارُ الصَّلاةِ بَعْدَ الصَّلاةِ ، وَنَقْلُ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَأَمَّا الدَّرَجَاتُ : فَإِطْعَامُ الطَّعَامِ ، وَإِفْشَاءُ السَّلامِ ، وَصَلاةٌ بِاللَّيْلِ ، وَالنَّاسُ نِيَامٌ، وَأَمَّا الْمُنَجِّيَاتُ : فَالْعَدْلُ فِي الْغَضَبِ، وَالرِّضَى، وَالْقَصْدُ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى ، وَخَشْيَةُ اللَّهِ فِي السِّرِّ وَالْعَلانِيَةِ وأَمَّا الْمُهْلِكَاتُ فشُحٌّ مُطَاعٌ ، وَهَوًى مُتَّبَعٌ ، وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ. (رواه البزار واللفظ له والبيهقي وغيرهما)
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৪. (সহীহ্) উকবা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’নামাযের জন্য অপেক্ষায় বসে থাকা ব্যক্তি নামাযরত ব্যক্তির মতো ছোয়াবের অধিকারী।[1] সে যখন বাড়ী থেকে বের হয় তখন থেকে নিয়ে বাড়ী ফিরে আসা পর্যন্ত (পুরাটা সময়) তার নাম মুছল্লীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে লিখা হয়।’’
(ইবনে হিব্বান ২০৩৬ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, আহমাদ ৪/১৫৭)
তবে আহমাদ প্রমূখ হাদীছটি আরো দীর্ঘভাবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর বর্ণনায় এসেছেঃ
والقاعد يرعى الصلاة كالقانت
’’নামাযের উদ্দেশ্যে উপবিষ্ট ব্যক্তি নফল নামায আদায়কারী ব্যক্তির বরাবর ছোয়াবের অধিকারী।’’
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(صحيح) وَعَنْ عقبة بن عامر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنه قال القاعد على الصلاة كالقانت ويكتب من المصلين من حين يخرج من بيته حتى يرجع إليه.
رواه ابن حبان في صحيحه
পরিচ্ছেদঃ ২২) নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৫. (হাসান লি গাইরিহী) রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিকট যে সমস্ত নারী বায়আত করেছেন তন্মধ্যে জনৈক নারী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে আসলেন। তাঁর সাথে ছিলেন বনু সালেমা গোত্রের কতিপয় সাহাবী। আমরা তাঁর সামনে কিছু খাদ্য উপস্থিত করলাম। তিনি খেলেন। অতঃপর আমরা তাকে ওযুর পানি দিলাম, তিনি ওযু করলেন। এরপর সাহাবীদের সম্মুখবর্তী হয়ে বললেনঃ
’’আমি কি তোমাদের গুনাহ মোচনকারী বিষয়গুলো সম্পর্কে সংবাদ দিব না?’’
তাঁরা বললেনঃ হ্যাঁ,
তিনি বললেনঃ ’’কষ্টের সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, বেশী বেশী মসজিদের দিকে পা ফেলা এবং এক নামায আদায় করে পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করা।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ ৫/২৭১)
الترغيب في انتظار الصلاة بعد الصلاة
(حسن لغيره) وَعَنْ الْمَرْأَةِ مِنَ الْمُبَايِعَاتِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُا أَنَّهَا قَالَتْ: جَاءَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهُ أَصْحَابُهُ فِي بَنِي سَلِمَةَ فَقَرَّبْنَا إِلَيْهِ طَعَامًا فَأَكَلَ وَمَعَهُ أَصْحَابُهُ، ثُمَّ قَرَّبْنَا إِلَيْهِ وَضُوءًا فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى أَصْحَابِهِ: فَقَالَ:
" أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِمُكَفِّرَاتِ الْخَطَايَا ؟ " قَالُوا: بَلَى. قَالَ: " إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ، وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ، وَانْتِظَارُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصَّلَاةِ (رواه أحمد)