পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৬. (সহীহ্) আবু মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি দু’টি ঠান্ডার সময়ের (আসর ও ফজর) নামায আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ৫৫৪ ও মুসলিম ৬৩৫)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح) عن أبي موسى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ صَلَّى الْبَرْدَيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ. رواه البخاري ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৭. (সহীহ্) আবু যুহাইর আম্মারা বিন রুওয়াইবা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ ’’কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে নামায আদায় করবে। অর্থাৎ ফজর ও আসর নামায।’’
(ইমাম মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৬৩৪)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح) وَعَنْ أبي زهيرة عُمَارَةَ بْنِ رُؤَيْبَةَ عَنْ أَبِيهِ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَنْ يَلِجَ النَّارَ أَحَدٌ صَلَّى قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا يَعْنِي الْفَجْرَ وَالْعَصْرَ. رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৮. (হাসান) আবু মালেক আশজাঈ থেকে বর্ণিত। তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি সকালের (ফজর) নামায আদায় করবে, সে আল্লাহর যিম্মাদারীর মধ্যে থাকবে। তার (আভ্যন্তরীণ বিষয়ের) হিসাব আল্লাহর কাছে।’’
(ত্বাবরানী [কাবীর ও আওসাত গ্রন্থদ্বয়ে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(حسن ) وَعَنْ أبي مالك الأشجعي عن أبيه رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ. رواه الطبراني في الكبير والأوسط
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৫৯. (সহীহ্) জুনদুব বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করে সে আল্লাহর জিম্মাদারীর (নিরাপত্তার) মধ্যে এসে যায়। সুতরাং আল্লাহ যেন তার জিম্মাদারীর মধ্যে থেকে কোন কিছু তোমাদের কাছে চেয়ে না বসেন। কেননা তিনি যদি তার জিম্মাদারীর ভিতর কিছু চেয়ে বসেন তাহলে তাকে পাকড়াও করবেন, অতঃপর তাকে মুখের উপর ভর দিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’’
( মুসলিম ৬৫৭, আবু দাউদ, তিরমিযী ২২২ প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাদীছের বাক্য মুসলিমের)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح) وَعَنْ جُنْدَبَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ فَلَا يَطْلُبَنَّكُمْ اللَّهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ فَإِنَّهُ مَنْ يَطْلُبْهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ يُدْرِكَهُ ثُمَّ يَكُبَّهُ عَلَى وَجْهِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ. رواه مسلم وغيره
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৬০. (সহীহ্) আবু বুসরা গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ’মুখাম্মাস’[1] নামক এলাকায় আমাদেরকে আসরের নামায পড়ালেন তারপর বললেনঃ ’’নিশ্চয় এই নামায তোমাদের পূর্ববর্তীদের কাছে পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা বিনষ্ট করেছে। অতএব যে ব্যক্তি এ নামাযের প্রতি যত্নবান হবে তাকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে।’’
(ইমাম মুসলিম ৮৩০ ও নাসাঈ ১/২৫৯ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح) و عَنْ أَبِي بَصْرَةَ الْغِفَارِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَصْرَ بِالْمُخَمَّصِ قَالَ إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ عُرِضَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَضَيَّعُوهَا وَمَنْ حَافَظَ عَلَيْهَا كَانَ لَهُ أَجْرُهُ مَرَّتَيْنِ. رواه مسلم والنسائي
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৬১. (ছহীহ্ লি গাইরিহী) আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত জামাআতের সাথে আদায় করবে সে আল্লাহর জিম্মাদারীতে এসে যাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মাদারীকে ভঙ্গ করবে আল্লাহ্ তাকে মুখের উপর উল্টো করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’’
(ইবনে মাজাহ্ ৩৯৪৫ ও ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, হাদীছের বাক্য ত্বাবরানী থেকে নেয়া)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح لغيره) وَعَنْ أبي بكر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ في جماعة فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ فمن أخفر ذمة الله كبه الله في النار لوجهه
رواه ابن ماجه والطبراني في الكبير واللفظ له
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৬২. (ছহীহ্ লি গাইরিহী) ইবনে ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত আদায় করবে সে আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলার জিম্মাদারীতে এসে যাবে। অতএব তোমরা আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলার জিম্মাদারীকে ভঙ্গ করো না। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মাদারীকে ভঙ্গ করবে আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা তাকে পাকড়াও করবেন। শেষ পর্যন্ত তাকে মুখের উপর উল্টো করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ ২/১১১, বাযযার ৩৩৪২। ত্বাবরানী [কাবীর ও আওসাত গ্রন্থদ্বয়ে অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন ২/১৬৬। এ হাদীছের শুরুতে একটি ঘটনা আছেঃ
হাজ্জাজ বিন ইউসুফ সালেম বিন আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দিয়েছিল জনৈক লোককে হত্যা করার জন্যে। তখন সালেম তাকে জিজ্ঞেস করল: তুমি ফজরের নামায পড়েছো? লোকটি বলল: হ্যাঁ। তখন তাকে বলল: তাহলে তুমি চলে যাও। হাজ্জাজ তাকে প্রশ্ন করল: লোকটিকে হত্যা করলে না কেন?
সালেম বলল: আমার পিতা আমার কাছে হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছেন যে, ’’যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করবে সেদিন সে আল্লাহর আশ্রয়ে এসে যাবে।’’
এজন্যে আমি এমন একটি লোককে হত্যা করা অপছন্দ করলাম যাকে আল্লাহ্ আশ্রয় দিয়েছেন। তখন হাজ্জাজ ইবনে ওমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করল: আপনি একথাটি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছেন? ইবনে ওমার বললেনঃ হ্যাঁ।
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح لغيره) وَعَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " مَنْ صَلَّى صَلَاةَ الصُّبْحِ فَهُوَ فِي ذِمَّةُ اللهِ، فَلَا تُخْفِرُوا اللهَ تبارك وتعالى فِي ذِمَّتِهُ، فَإِنَّهُ مَنْ أَخْفَرَ ذِمَّتَهُ طَلَبَهُ اللهُ تبارك وتعالى حَتَّى يُكِبَّهُ عَلَى وَجْهِهِ.رواه أحمد والبزار والطبراني في الكبير والأوسط بنحوه
পরিচ্ছেদঃ ২৩) ফজর ও আসর নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
৪৬৩. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’তোমাদের নিকট রাতের ফেরেশতা এবং দিনের ফেরেশতা পরস্পর আগমণ করেন। তারা ফজর এবং আসর নামাযের সময় মিলিত হন।
অতঃপর যে ফেরেশতারা রাতে তোমাদের সাথে ছিলেন, তারা আল্লাহর কাছে চলে যান। তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের জিজ্ঞেস করেন অথচ আল্লাহ তাদের সম্পর্কে বেশী জ্ঞান রাখেন। তোমরা আমার বান্দাদের কি অবস্থায় রেখে এসেছো? ফেরেশতারা জবাবে বলেন, আমরা তাদেরকে এ অবস্থায় রেখে এসেছি যে তারা সালাত আদায় করছে এবং আমরা তাদের কাছে গেছি এমন অবস্থায় যে তারা সালাত আদায় করছে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ৫৫৫, মুসলিম ৬৩২, নাসাঈ ১/২৪০ ও ইবনে খুযায়মা।) ইবনে খুযায়মার আরেক বর্ণনায় আছেঃ
تَجْتَمِعُ مَلَائِكَةُ اللَّيْلِ وَمَلَائِكَةُ النَّهَارِ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ وَصَلَاةِ الْعَصْرِ فَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ، فَتَصْعَدُ مَلَائِكَةُ اللَّيْلِ، وَتَثْبُتُ مَلَائِكَةُ النَّهَارِ وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الْعَصْرِ فَيَصْعَدُ مَلَائِكَةُ النَّهَارِ، وَتَثْبُتُ مَلَائِكَةُ اللَّيْلِ فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ: كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي؟ فَيَقُولُونَ: أَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ، وَتَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ فَاغْفِرْ لَهُمْ يَوْمَ الدِّينِ
’’রাতের ফেরেশতাগণ ও দিনের ফেরেশতাগণ ফজর এবং আসর নামাযের সময় মিলিত হন। যখন তারা ফজরের সময় মিলিত হন তখন রাতের ফেরেশতাগণ উপরে চলে যান আর দিনের ফেরেশতাগণ থেকে যান। তারা আবার আসর নামাযের সময় মিলিত হন। তখন দিনের ফেরেশতাগণ উপরে চলে যান এবং রাতের ফেরেশতাগণ থেকে যান। তখন তাদের পালনকর্তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা আমার বান্দাদের কি অবস্থায় রেখে এসেছো? তারা বলেন, আমরা তাদের কাছে গেছি এমন অবস্থায় যে তারা সালাত আদায় করছে এবং আমরা তাদেরকে এ অবস্থায় ছেড়ে এসেছি যে তারা সালাত আদায় করছে। অতএব তাদেরকে বিচার দিবসে ক্ষমা করে দিন।’’
(শায়খ আলবানী বলেন: হাদীছটি ইমাম আহমাদও বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في المحافظة على الصبح والعصر
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلَائِكَةٌ بِاللَّيْلِ وَمَلَائِكَةٌ بِالنَّهَارِ وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ وَصَلَاةِ الْعَصْرِ ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ فَيَسْأَلُهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي فَيَقُولُونَ تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ. رواه البخاري ومسلم والنسائي وابن خزيمة في صحيحه