পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৬৭. (সহীহ) মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেনঃ
’’আল্লাহ যার কল্যান চান, তাকে দ্বীনের গভীর জ্ঞান দান করেন।’’[1]
(বুখারী ৯১, মুসলিম ১০৩৭ ও ইবনু মাজাহ ২২১ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)
(হাসান লি গাইরিহী) হাদীছটি ত্বাবরানীও [কাবীর গ্রন্থে] বর্ণনা করেছেন। তাঁর বর্ণনার বাক্য এরকমঃ
আমি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّمَا الْعِلْمُ بِالتَّعَلُّمِ، وَالْفِقْهُ بِالتَّفَقُّهِ، وَمَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ، وَإِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ"
’’হে লোক সকল! শিক্ষার্জনের মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়, গবেষণার মাধ্যমেই ফিক্বাহ অর্জন করা যায়। আর আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের ফিক্বহ (গভীর জ্ঞান) দান করেন। إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ [আল্লাহকে তো তাঁর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই ভয় করে চলে।](সূরা ফাতেরঃ ২৮)
[1] . ফিকাহ্ শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে বুঝা। বলা হয় فَقِهَ الرجلُ লোকটি বুঝেছে ও জেনেছে। আর فَقُهَ ক্বাফ অক্ষরে পেশ দিয়ে অর্থ হবে ফিকাহবিদ ও আলেম। পরিভাষায় শরীয়তের বিদ্যাকেই ফিকাহ বলা হয়। বিশেষ করে শরীয়তের শাখা-প্রশাখাগত জ্ঞানকে ফিকাহ্ বলা হয়। আবুস্ সাআদাত একথাটি বলেছেন।
শায়খ আলবানী বলেন, কিন্তু তাঁর এই কথার পক্ষে কোন দলীল নেই। কেননা দারেমী বর্ণনা করেন ইমরান মিনকারী থেকে। তিনি বলেন, আমি কোন একটি বিষয়ে হাসান বাসরীকে বললাম ফিকাহবিদগণ তো এরূপ বলেননি। তিনি বললেন, তোমার ধ্বংস হোক! তুমি প্রকৃত ফিকাহবিদ দেখেছো? প্রকৃত ফিকাহবিদ হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি দুনিয়া বিমুখ, আখেরাত মুখী, ধর্মের যাবতীয় বিষয়ে পন্ডিত এবং সর্বদা পালনকর্তার ইবাদতে লিপ্ত।
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) عَنْ مُعَاوِيَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :"مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ". رواه البخاري ومسلم وابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৬৮. (সহীহ্ লি গাইরিহী) হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’ইবাদতের মর্যাদার চেয়ে বিদ্যার মর্যাদা অনেক বেশী। তোমাদের দ্বীনের মাঝে সর্বোত্তম বিষয় হল পরহেযগারিতা।’’
(ত্বাবরানী আওসাত গ্রন্থে ও উত্তম সনদে বায্যার ১৩৯, মাজমাউল যাওয়ায়েদ ২৮/১২০পৃষ্ঠা হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح لغيره) وَعَنْ حذيفَةَ بْنَ الْيَمَانِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : فَضْلُ الْعِلْمِ خَيْرٌمِنْ فَضْلِ الْعِبَادَةِ، وخَيْرُ دِينِكُمُ الْوَرَعُ . رواه الطبراني في الأوسط والبزار بإسناد حسن
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৬৯. (সহীহ) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে ব্যাক্তি কোন মুমিনের দুনিয়ার বিপদ সমূহ[1] থেকে একটি বিপদ দূরীভূত করবে[2], আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসের বিপদ সমূহ থেকে তার একটি বিপদ দূরীভূত করবেন। যে ব্যাক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন[3] রাখবে। আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। যে ব্যাক্তি ঋণগ্রস্থ বা অভাবী ব্যাক্তিকে[4] সহযোগিতা করবে, আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তাকে সহযোগিতা দান করবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করবে, আল্লাহ ততক্ষণ তাকে সাহায্য করবেন।
যে ব্যাক্তি বিদ্যার্জনের জন্য রাস্তা চলবে, বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি পথ সহজ করে দিবেন। যখনই কিছু সংখ্যক মানুষ আল্লাহর কোন ঘরে[5] একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, তার পঠন-পাঠন ও গবেষণায়[6] লিপ্ত হয় তখনই ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন। নাযিল হয় তাদের প্রতি প্রশান্তি ও দৃঢ়তা, তাদেরকে আচ্ছাদিত করে (আল্লাহর) রহমত এবং আল্লাহ্ তাঁর নিকটের ফেরেশতাদের মাঝে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন। যার (মন্দ) কর্ম তাকে পিছে ফেলেছে[7], তার বংশ মর্যাদা তাকে (জান্নাতের পথে) অগ্রবর্তী করতে পারবে না।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন মুসলিম ২৬৯৯, আবু দাউদ ৪৯৪৬, তিরমিযী ১৯৩০, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ ২২৫, ইবনু হিব্বান ৫৩৪ ও হাকেম ৪/৩৮৩ পৃষ্ঠা। হাকেম বলেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীছটি সহীহ্)[8]
[2] . অর্থাৎ তার সম্পদ বা সম্মান বা ইঙ্গিত বা মুখের কথা বা মধ্যস্থতা বা দু’আ বা সুপারিশ ইত্যাদি দ্বারা মুমিনের বিপদ দূর করবে।
[3] . গোপন করার অর্থ হল, বস্ত্র দ্বারা শারীরিক ত্রুটি ঢেকে দিবে অথবা চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি গোপন করবে। কিন্তু লোকটি যদি দুশ্চরিত্র হিসেবে পরিচিত থাকে, তবে তার অন্যায় গোপন করা জায়েয নয়। আর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও উত্তম চরিত্রের লোক হলে তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবে। নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন উত্তম চরিত্রের লোকদের দন্ডবিধি সংক্রান্ত অপরাধ ব্যতীত অন্যান্য ত্রুটি মার্জনা করে দিও।’’ (আবু দাউদ) অর্থাৎ আল্লাহর অধিকার সম্পর্কিত অপরাধ যেমন ব্যভিচার, মদ্যপান ইত্যাদি গোপন করবে। কিন্তু মানুষের অধিকার সম্পর্কিত হলে যেমন খুন, চুরি ইত্যাদি তবে তা গোপন করা হারাম; বরং এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো ওয়াজিব।
[4] . অর্থাৎ- ঋণে জর্জরিত ব্যক্তি। তাকে সহযোগিতা করার অর্থ হচ্ছে ঋণ মওকুফ করে দেয়া বা পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করে দেয়া। অথবা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে কোন অভাবী মানুষকে উপহার দিয়ে বা সাদকা প্রদান করে বা কর্য দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা।
[5] . এখানে ঘর বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, মসজিদ বা মাদ্রাসা বা মক্তব ইত্যাদি যা দ্বীনী কাজের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
[6] . অর্থাৎ- কুরআন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়া, একজন অপরজনকে পড়ানো, তাফসীর করা, তার শাব্দিক অর্থ ও ব্যাখ্যা করা, গবেষণা করে মাসআলা-মাসায়েল বের করা ইত্যাদি।
[7] . অর্থাৎ- অসৎ কর্মের কারণে এবং নেক কর্মে উদাসীনতার কারণে যে লোক পিছনে পড়ে যাবে তার বংশ মর্যাদা ও বাপ-দাদার দোহাই কোন উপকারে আসবে না, তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে না। বান্দা যদি হাবশী গোলামও হয় তবু তার আনুগত্যশীল কর্ম তাকে অগ্রগামী করবে সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের উদাসীন লোকের উপর। আল্লাহ বলেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট অতি সম্মানিত সেই লোক যে তোমাদের মধ্যে আল্লাহকে অধিক ভয় করে।’’
[8] . শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটির উলেখিত বাক্যগুলা ইবনে মাজাহ্ থেকে নেয়া। হুবহু এই বাক্যগুলো অন্যান্য গ্রন্থগুলোতে নেই।
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ، وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ، وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ، وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ
رواه مسلم وأبو داود والترمذي والنسائي وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال صحيح على شرطهما
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭০. (হাসান লি গাইরিহী) আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে একথা বলতে শুনেছি
’’যে ব্যাক্তি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে রাস্তা চলবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের একটি পথ সহজ করে দিবেন। আর নিঃসন্দেহে তালেবে ইলমের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ফেরেশতাগণ ডানাগুলো তাদের জন্যে বিছিয়ে দেন। আসমান সমূহ ও যমীনের মধ্যে যা কিছু আছে সবই আলেম ব্যাক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে, এমনকি পানির মাছও তার জন্য ইস্তেগফার করে। সাধারণ আবেদ (ইবাদত গুজার) ব্যাক্তির উপর একজন আলেম (জ্ঞানী) ব্যাক্তির মর্যাদা ঠিক সেরুপ, যেরুপ সমস্ত নক্ষত্ররাজীর উপর চন্দ্রের মর্যাদা। নিঃসন্দেহে ওলামাগণ নবীদের উত্তরসূরী। নিশ্চয় নবীগণ কোন দীনার বা দিরহামের মীরাছ ছেড়ে যান না, বরং তারা ইলম বা জ্ঞানের উত্তরাধিকার ছেড়ে যান। সুতরাং যে ব্যাক্তি উহা গ্রহণ করল সে পরিপূর্ণ অংশ গ্রহণ করল।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ৩৬৪১, ৩৬৪২, তিরমিযী ২৬৮২, ইবনু মাজাহ্ ২২৩, ইবনু হিব্বান ৮৮, বায়হাকী ১৬৯৬)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن لغيره) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَطْلُبُ فِيهِ عِلْمًا سَلَكَ اللَّهُ بِهِ طَرِيقًا مِنْ طُرُقِ الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا لِطَالِبِ الْعِلْمِ رِضًا بِمَا يَصْنَعُ وَإِنَّ الْعَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَالْحِيتَانُ فِي الْمَاءِ وَإِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ وَإِنَّ الْأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ
رواه أبو داود والترمذي وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والبيهقي
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭১. (হাসান) ছাফওয়ান বিন আস্সাল আল্ মুরাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিকট এলাম। তখন তিনি একটি লাল চাদরে হেলান দেয়া অবস্থায় মসজিদে নববীতে বসে ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার নিকট এসেছি, উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন করব।
তিনি বললেনঃ ’’তালেবে ইলমকে স্বাগতম। নিশ্চয় ফেরেশতাগণ জ্ঞানাম্বেষণকারীকে ঘিরে রাখেন এবং ডানাগুলো দ্বারা তাকে ছায়া দান করেন। অতঃপর সে যা অম্বেষণ করে তার ভালবাসায় তাঁরা একে অপরের উপর সওয়ার হয়ে দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত পৌঁছে যায়।’’
(আহমাদ ৪/২৩৯, ত্বাবরানী উত্তম সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৮/৬৩। হাদীছের উপরোক্ত বাক্যগুলো ত্ববরানী থেকে গৃহিত। হাদীছটি আরো বর্ণনা করেছেন ইবনু হিব্বান ও হাকেম। হাকেম বলেন, তার সনদ সহীহ। হাদীছটি অনুরূপভাবে ইবনে মাজাহ্ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছন।)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن) وَعَنْ صَفْوَانُ بن عَسَّالٍ الْمُرَادِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ مُتَّكِئٌ عَلَى بُرْدٍ لَهُ أحْمَرَ، فَقُلْتُ لَهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي جِئْتُ أَطْلُبُ الْعِلْمَ، فَقَالَ:"مَرْحَبًا بطالبِ الْعِلْمِ، إنَّ طَالِبَ الْعِلْمِ تَحُفُّهُ الْمَلائِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا، ثُمَّ يَرْكَبُ بَعْضُهُم بَعْضًا حَتَّى يَبْلُغُوا السَّمَاءَ الدُّنْيَا مِنْ مُحَبَّتِهِمْ لِمَا يَطْلُبُ.
رواه أحمد والطبراني بإسناد جيد واللفظ له وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال صحيح الإسناد وروى ابن ماجه نحوه باختصار
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭২. (সহীহ) আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
’’জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম ব্যাক্তির উপর ফরয।’’
(ইবনু মাজাহ ২২৪ প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) وروي عَنْ أنَسِ بْنِ ماَلِكٍقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ. رواه ابن ماجه وغيره
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৩. (হাসান লি গাইরিহী) আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বার্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’সাতটি আমলের ছোয়াব বান্দার মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় তার জন্য জারি থাকে। যে ব্যক্তি কাউকে বিদ্যা শিক্ষা দিবে, অথবা নদী খনন করবে, অথবা কুপ খনন করবে, অথবা খেজুর গাছ লাগিয়ে যাবে, অথবা মসজিদ তৈরী করবে, অথবা পবিত্র কুরআনের উত্তরাধিকার রেখে যাবে অথবা এমন সন্তান রেখে যাবে যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।’’ (এসকল নেক কাজের ছোয়াব মৃত্যুর পরও লাভ করতে থাকবে।)
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায্যার ১৩৯ ও আবু নাঈম [হিল্ইয়া গ্রন্থে, আরো বর্ণনা করেছেন বায়হাকী ৩৪৪৯]
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن لغيره) وَعَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " سَبْعٌ يَجْرِي لِلْعَبْدِ أَجْرُهُنَّ وَهُوَ فِي قَبْرِهِ بَعْدَ مَوْتِهِ: مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا، أَوْ كَرَى نَهَرًا، أَوْ حَفَرَ بِئْرًا، أَوْ غَرَسَ نَخْلًا، أَوْ بَنَى مَسْجِدًا، أَوْ وَرَّثَ مُصْحَفًا، أَوْ تَرَكَ وَلَدًا يَسْتَغْفِرُ لَهُ بَعْدَ مَوْتِهِ ". رواه البزار وأبو نعيم في الحلية والبيهقي
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৪. (হাসান) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
’’দুনিয়াটা অভিশপ্ত এবং এর মধ্যস্তিত সব কিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির, যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়, আলেম (জ্ঞানী) ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)।[1]’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী ২৩২২, ইবনু মাজাহ্ ৪১১২ ও বায়হাকী ১৭০৮। তিরমিযী বলেনঃ হাদীছটি হাসান)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن ) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلَّا ذِكْرُ اللَّهِ وَمَا وَالَاهُ وَعَالِمًا وَمُتَعَلِّمًا. رواه الترمذي وابن ماجه والبيهقي وقال الترمذي حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৫. (সহীহ) ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’দুটি কাজ ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে হিংসা[1] করা বৈধ নয়। (১) এক ব্যাক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন এবং তাকে শক্তি দিয়েছেন সৎপথে উহা ব্যয় করতে। (২) আর এক ব্যাক্তি আল্লাহ তাকে হিকমত তথা প্রজ্ঞা দিয়েছেন, সে তা দ্বারা বিচার ফায়সালা করে বা সিদ্ধান্ত নেয় এবং অন্যকে উহা শিক্ষা দান করে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ৭৩ ও মুসলিম ৮১৫)
[1] . আরবীতে الحسد শব্দটি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়ঃ (১) হিংসা- অর্থাৎ কারো ভাল দেখে তার ধ্বংস কামনা করা। এটা হারাম। (২) গিবতা অর্থাৎ অন্যের ভালো দেখে তা নিজের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা, এটি বৈধ। উল্লেখিত হাদীছে দ্বিতীয় অর্থটি উদ্দেশ্য করা হয়েছে।
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) وَعَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا حَسَدَ إِلَّا فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الْحَقِّ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الحِكْمَةَ فَهُوَ يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا. رواه البخاري ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৬. (সহীহ) আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে ইলম ও হেদায়াত দিয়ে আল্লাহ্ তা’আলা আমাকে প্রেরণ করেছে তার উদাহরণ হল যমীনে বৃষ্টিপাতের মত। কোন কোন জায়গার মাটি ভাল, পানি ধারণ করে এবং তাতে প্রচুর উদ্ভিদ ও ঘাষ-পাতা উৎপন্ন হয়। আবার কোন জায়গার মাটি শক্ত, সেখানে উদ্ভিদ হয় না তবে সে পানি ধরে রাখে। অতঃপর আল্লাহ তা দ্বারা মানুষের উপকার করেন। তারা সে পানি পান করে, সেচের কাজে ব্যবহার করে ও চাষাবাদ করে। আর এক ধরণের মাটি রয়েছে যা শক্ত ও খারাপ, পানিও ধরে রাখে না উদ্ভিদও উৎপন্ন করেন না।
প্রথম দুপ্রকার মাটির উদাহরণ ঐ ব্যাক্তির সাথে যে আল্লাহ তা’আলার দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জন করেছে, আর আল্লাহ যা দিয়ে আমাকে প্রেরণ করেছেন তা দ্বারা তাকে উপকৃত করেছেন অতঃপর সে নিজে উহা শিখেছে ও অন্যকে শিক্ষা দিয়েছে।
আর তৃতীয় প্রকার মাটির উদাহরণ ঐ ব্যাক্তির সাথে, যে আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে মাথা উঠায়নি এবং আল্লাহর হেদায়াত কবূল করেনি, যা দিয়ে আমি প্রেরীত হয়েছি।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ৭৯ ও মুসলিম ২২৮২)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) وَعَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مَثَلَ مَا بَعَثَنِيَ اللَّهُ بِهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ الْهُدَى وَالْعِلْمِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَصَابَ أَرْضًا فَكَانَتْ مِنْهَا طَائِفَةٌ طَيِّبَةٌ قَبِلَتْ الْمَاءَ فَأَنْبَتَتْ الْكَلَأَ وَالْعُشْبَ الْكَثِيرَ فَكَانَ مِنْهَا أَجَادِبُ أَمْسَكَتْ الْمَاءَ فَنَفَعَ اللَّهُ بِهَا النَّاسَ فَشَرِبُوا مِنْهَا وَسَقَوْا وَزَرَعَوْا وَأَصَابَ طَائِفَةً أُخْرَى إِنَّمَا هِيَ قِيعَانٌ لَا تُمْسِكُ مَاءً وَلَا تُنْبِتُ كَلَأً فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ فَقُهَ فِي دِينِ اللَّهِ وَنَفَعَهُ بِمَا بَعَثَنِيَ اللَّهُ بِهِ فَعَلِمَ وَعَلَّمَ وَمَثَلُ مَنْ لَمْ يَرْفَعْ بِذَلِكَ رَأْسًا وَلَمْ يَقْبَلْ هُدَى اللَّهِ الَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ. رواه البخاري ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৭. (হাসান) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’মুমিন ব্যাক্তির মৃত্যুর পর তার আমল ও নেকীর কাজ থেকে যা তার নিকট পৌঁছবে, তা হল ইলম যা সে শিক্ষা দান করেছে ও প্রচার করেছে। রেখে যাওয়া সৎ সন্তান (তার দু’আ)। অথবা একটি কুরআন যা সে উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গিয়েছে। অথবা একটি মসজিদ তৈরী করেছে বা মুসাফিরদের জন্য একটি ঘর তৈরী করে গিয়েছে। অথবা একটি নদী প্রবাহিত করেছে বা তার জীবদ্দশায় সুস্থ থাকাকালে নিজ সম্পদ থেকে কিছু সাদকা বের করেছে। এগুলোর ছোয়াব মৃত্যুর পর তার কাছে পৌঁছতে থাকবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মাজাহ হাসান সনদে ২৪২, বায়হাকী ৩৪৩ ও ইবনু খুযায়মা অনুরূপ ভাবে) তবে তার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ অথবা একটি নদী খনন করে, তিনি কুরআনের কথা উল্লেখ করেন নি।
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مِمَّا يَلْحَقُ الْمُؤْمِنَ مِنْ عَمَلِهِ وَحَسَنَاتِهِ بَعْدَ مَوْتِهِ عِلْمًا عَلَّمَهُ وَنَشَرَهُ وَوَلَدًا صَالِحًا تَرَكَهُ أوْمُصْحَفًا وَرَّثَهُ أَوْ مَسْجِدًا بَنَاهُ أَوْ بَيْتًا لِابْنِ السَّبِيلِ بَنَاهُ أَوْ نَهْرًا أَجْرَاهُ أَوْ صَدَقَةً أَخْرَجَهَا مِنْ مَالِهِ فِي صِحَّتِهِ وَحَيَاتِهِ تَلْحَقُهُ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهِ. رواه ابن ماجه بإسناد حسن والبيهقي ورواه ابن خزيمة
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৮. (সহীহ) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’আদম সন্তান যখন মৃত্যু বরণ করে, তখন তিনটি আমল ব্যতীত সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। (১) সাদকায়ে জারিয়া বা প্রবাহমান সাদকা (২) উপকারী বিদ্যা (৩) সৎ সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে।
(মুসলিম ১৬৩১ প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ.
رواه مسلم وغيره
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৭৯. (সহীহ) আবু কাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেনঃ
’’কোন ব্যাক্তি তার (মৃত্যুর) পর যা ছেড়ে যায় তম্মধ্যে সর্বোত্তম হল তিনটি বিষয়ঃ (১) নেক সন্তান যে তার জন্য দু’আ করবে। (২) সাদকা, মানুষ যা দ্বারা উপকৃত হতে থাকে, এর প্রতিদান তার নিকট পৌঁছতে থাকবে। (৩) ইলম, তার মৃত্যুর পর সে অনুযায়ী আমল করা হবে।’’
(ইবনু মাজাহ সহীহ সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ২৪১)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح) وَعَنْ أبي قتادة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ مَا يُخَلِّفُ الرَّجُلُ مِنْ بَعْدِهِ ثَلَاثٌ وَلَدٌ صَالِحٌ يَدْعُو لَهُ وَصَدَقَةٌ تَجْرِي يَبْلُغُهُ أَجْرُهَا وَعِلْمٌ يُعْمَلُ بِهِ مِنْ بَعْدِهِ. رواه ابن ماجه بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৮০. (হাসান লি গাইরিহী) সাহল বিন মুআয বিন আনাস স্বীয় পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
’’যে ব্যাক্তি ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা দিবে, সে তদানুযায়ী আমলকারীর অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। এতে আমলকারীর প্রতিদান কোন অংশে কম হবে না।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মাজাহ্ ২৪০)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن لغيره) وَعَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُم أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ شيء. رواه ابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৮১. (হাসান লি গাইরিহী) আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিকট দু’ব্যাক্তির কথা উল্লেখ করা হল, একজন আবেদ (সাধারণ ইবাদত গুজার) অন্যজন আলেম (ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী) তিনি বললেন (তাঁর উপর সর্বোত্তম রহমত ও সালাম নাযিল হোক)
’’আবেদের উপর আলেমের মর্যাদা ঠিক তেমন, যেমন তোমাদের সাধারণ ব্যাক্তির উপর আমার মর্যাদা।’’
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
’’নিশ্চয় আল্লাহ[1], ফেরেশতাকুল, আসমান সমূহ ও যমীনের অধিবাসীগণ এমনকি পিপিলিকা তার গর্ত থেকে- এমনকি পানির মাছও মানুষকে কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য দু’আ করতে থাকে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী ২৬৮৫, তিনি বলেন, হাদীছটি হাসান সহীহ্)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن لغيره) وَعَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ الْبَاهِلِيِّ قَالَ ذُكِرَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلَانِ أَحَدُهُمَا عَابِدٌ وَالْآخَرُ عَالِمٌ فَقَالَ عليه أفضل الصلاة والسلام فَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُمْ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ وَأَهْلَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرَضِينَ حَتَّى النَّمْلَةَ فِي جُحْرِهَا وَحَتَّى الْحُوتَ لَيُصَلُّونَ عَلَى مُعَلِّمِ النَّاسِ الْخَيْرَ. رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৮২. (সহীহ্ লি গাইরিহী) উল্লেখিত হাদীছটি বাযযার আয়েশা (রাঃ) থেকে সংক্ষেপে উল্লেখ করেন। তিনি বলেনঃ
’’কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য প্রত্যেক বস্তু ক্ষমা প্রার্থনা করে এমনকি সমুদ্রের মৎস্যকুলও।’’
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(صحيح لغيره) ورواه البزار من حديث عائشة مختصرا قال: مُعَلِّمُ الْخَيْرِ يَسْتَغْفِرُ لَهُ كُلُّ شَيْءٍ حَتَّى الْحِيْتاَنُ فِيْ الْبَحْرِ.
পরিচ্ছেদঃ ১) ইলম (বিদ্যা), উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ফযিলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।
৮৩. (হাসান মাওকূফ) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা মদীনার বাজার অতিক্রম করছিলেন। তখন বাজারে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে বাজারের লোক সকল! কিসে তোমাদেরকে অপারগ করল? তারা বলল, উহা কি হে আবু হুরায়রা? তিনি বললেনঃ ওখানে রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর মীরাছ বন্টন হচ্ছে আর তোমরা এখানে? তোমরা সেখানে গিয়ে কিছু অংশ নাও না কেন?
তারা বললঃ উহা কোথায়?
তিনি বললেনঃ মসজিদে। একথা শুনে তারা সেখানে ছুটে গেল। আর আবু হুরায়রা দাঁড়িয়ে থাকলেন, শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে এল। তারপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমরা কি করলে?
তারা বললঃ হে আবু হুরায়রা! আমরা গিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলাম। কিন্তু কোন কিছু বন্টন হচ্ছে তা তো দেখলাম না?
আবু হুরায়রা তাদেরকে বললেনঃ তোমরা মসজিদে কাউকে দেখতে পাওনি?
তারা বললঃ হ্যাঁ, আমরা দেখেছি কিছু লোক নামায আদায় করছে, কিছু লোক কুরআন পাঠ করছে, কিছু লোক হালাল-হারামের বিষয়ে পরস্পরে আলোচনা করছে।
তখন আবু হুরায়রা তাদেরকে বললেনঃ আফসোস তোমাদের জন্যে! ওটাই তো মুহাম্মাদ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মীরাছ (উত্তরাধিকার)।
(ত্বাবরানী উত্তম সনদে [আওসাত্ব গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ২/১১৪।)
الترغيب في العلم وطلبه وتعلمه وتعليمه وما جاء في فضل العلماء والمتعلمين
(حسن موقوف) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ مَرَّ بِسُوقِ الْمَدِينَةِ، فَوَقَفَ عَلَيْهَا، فَقَالَ:"يَا أَهْلَ السُّوقِ، مَا أَعْجَزَكُمْ !"قَالُوا: وَمَا ذَاكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟ قَالَ:"ذَاكَ مِيرَاثُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْسَمُ، وَأَنْتُمْ هَاهُنَا ألاَ تَذْهَبُونَ فَتَأَخُذُونَ نَصِيبَكُمْ مِنْهُ !"قَالُوا: وَأَيْنَ هُوَ؟ قَالَ:"فِي الْمَسْجِدِ" فَخَرَجُوا سِرَاعًا إِلَى الْمَسْجِدِ، وَوَقَفَ أَبُوهُرَيْرَةَ لَهُمْ حَتَّى رَجَعُوا، فَقَالَ لَهُمْ:"مَا لَكُمْ؟"قَالُوا: يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقَدْ أَتَيْنَا الْمَسْجِدَ، فَدَخَلْنَا، فَلَمْ نَرَ فِيهِ شَيْئًا يُقْسَمُ، فَقَالَ لَهُمْ أَبُو هُرَيْرَةَ:"أَمَا رَأَيْتُمْ فِي الْمَسْجِدِ أَحَدًا؟"قَالُوا: بَلَى، رَأَيْنَا قَوْمًا يُصَلُّونَ، وَقَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ، وَقَوْمًا يَتَذَاكَرُونَ الْحَلالَ وَالْحَرَامَ، فَقَالَ لَهُمْ أَبُو هُرَيْرَةَ:"وَيْحَكُمْ، فَذَاكَ مِيرَاثُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ". رواه الطبراني في الأوسط بإسناد حسن