পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৭৬. আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমি জানতে পেরেছিলাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে কতদিন থাকবেন। তাই তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি দেখছি, তারা (লোকেরা) আপনাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে, আর তাদের ধূলিবালির কারণেও আপনার কষ্ট হচ্ছে। (কতই না ভাল হত) যদি আপনি একটি মাচা (বানিয়ে) নিতেন, যার উপর থেকে আপনি তাদের সাথে কথা বলতে পারতেন। তখন তিনি বললেন: ’আমি তাদের থেকে ক্ষান্ত হব না , তারাও আমার (পায়ের গোড়ালি মাড়াতে থাকবে) পেছনে লেগে থাকবে, আমার চাদর ধরে টানাটানি করবে- আর এ অবস্থায় আল্লাহই আমাকে তাদের থেকে মুক্তি দিবেন।’
তিনি (আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ফলে আমি জানতে পারলাম যে, তিনি আর আমাদের মাঝে সামান্য ক’টা দিনই অবস্থান করবেন।[1]
তাখরীজ: ইবনু আবী শাইবা, আল মুছান্নাফ ১৩/২৫৬-২৫৭ নং ১৬২৭৩; আব্দুর রাযযাক, আল মুছান্নাফ ৫/৪৩৪; বাযযার, আল মুসনাদ (কাশফুল আসতার অনুযায়ী) ৩/১৫৬ নং ২৪৬৬ ও ২৪৬৭; হাহছামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ৯/২১ ও মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৫/৪৩৪ দেখুন।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، أَنبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ قَالَ الْعَبَّاسُ رِضْوَانُ اللَّهِ عَلَيْهِ، لَأَعْلَمَنَّ مَا بَقَاءُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عليْهِ وَسَلَّمَ فِينَا؟ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي أَرَاهُمْ قَدْ آذَوْكَ وَآذَاكَ غُبَارُهُمْ، فَلَوِ اتَّخَذْتَ عَرِيشًا تُكَلِّمُهُمْ مِنْهُ؟ فَقَالَ: لَا أَزَالُ بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ يَطَؤُونَ عقِبِي، وَيُنَازِعُونِي رِدَائِي حَتَّى يَكُونَ اللَّهُ هُوَ الَّذِي يُرِيحُنِي مِنْهُمْ قَالَ: فَعَلِمْتُ أَنَّ بَقَاءَهُ فِينَا قَلِيلٌ
إسناده ضعيف لانقطاعه عكرمة لم يدرك العباس
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৭৭. দাউদ ইবনু আলী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁকে বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আপনাকে লুকিয়ে রাখবো না (কিংবা একজন দারোয়ানের ব্যবস্থা করবো না)? তিনি উত্তরে বলেন: ’না, তাদের ছেড়ে দাও। তারা আমার পেছনে লেগে থাকুক এবং আমিও এদের পেছনে লেগে থাকি আর এভাবে চলতে চলতে আল্লাহ আমাকে তাদের থেকে মুক্তি দিবেন।’[1]
তাখরীজ: এ ছাড়া অন্য কোথাও হাদীসটি আমি পাইনি।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ عَنْ دَاوُدَ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَا نَحْجُبُكَ؟ فَقَالَ: لَا دَعُوهُمْ يَطَؤُونَ عَقِبِي وَأَطَأُ أَعْقَابَهُمْ حَتَّى يُرِيحَنِي اللَّهُ مِنْهُمْ
إسناده معضل
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৭৮. আবু সাঈদ আল খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে অসুখে মৃত্যুবরণ করেন, সেই অসুস্থ্যতাকালীন সময়ে আমরা মসজিদে থাকা অবস্থায় একদিন তিনি আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন। তখন তাঁর মাথায় কাপড় দিয়ে পট্টি বাঁধা ছিল। এসেই তিনি মিম্বারে উঠার ইচ্ছা করলেন। তারপর তিনি মিম্বারে আরোহণ করলেন। আমরা তাঁকে অনুসরণ করে বসে গেলাম। তিনি বলতে লাগলেন: ’যার হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্ত্বার কসম! আমি এ অবস্থান থেকেই আমার হাউয (কাওছার) দেখতে পাচ্ছি।’ তারপর তিনি বললেন: ’এক বান্দার সামনে দুনিয়া ও তার যাবতীয় সৌন্দর্য্যের উপকরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল কিন্তু সে আখিরাতকে (দুনিয়া ও এর সামগ্রী থেকে) অগ্রাধিকার দিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছাড়া আর কেউই তা বুঝতে পারে নি। ফলে তাঁর চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। আর তিনি কাঁদতে লাগলেন। তারপর তিনি বললেন, আপনার জন্য আমাদের পিতা-মাতা, আমাদের জীবন ও ধন-সম্পদ কুরবান হোক, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি (বর্ণনাকারী-আবু সাঈদ) বলেন, এরপর তিনি মিম্বার থেকে নেমে পড়লেন এবং এখন পর্যন্ত আর কোনদিন তিনি মিম্বারে আরোহণ করেন নি।[1]
তাখরীজ: বুখারী, সহীহ ৪৬৬, ৩৬৫৪, ৩৯০৩; মুসলিম, সহীহ ২৩৮২; তিরমিযী ৩৬৬১; আহমদ, আল মুসনাদ ৩/৯১।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أُنَيْسِ بْنِ أَبِي يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ وَنَحْنُ فِي الْمَسْجِدِ عَاصِبًا رَأْسَهُ بِخِرْقَةٍ حَتَّى أَهْوَى نَحْوَ الْمِنْبَرِ فَاسْتَوَى عَلَيْهِ وَاتَّبَعْنَاهُ، قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنِّي لَأَنْظُرُ إِلَى الْحَوْضِ مِنْ مَقَامِي هَذَا»، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ عَبْدًا عُرِضَتْ عَلَيْهِ الدُّنْيَا وَزِينَتُهَا، فَاخْتَارَ الْآخِرَةَ»، قَالَ: فَلَمْ يَفْطِنْ لَهَا أَحَدٌ غَيْرُ أَبِي بَكْرٍ رِضْوَانُ اللَّهِ عَلَيْهِ فَذَرَفَتْ عَيْنَاهُ، فَبَكَى، ثُمَّ قَالَ: بَلْ نَفْدِيكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا وَأَنْفُسِنَا وَأَمْوَالِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: ثُمَّ هَبَطَ فَمَا قَامَ عَلَيْهِ حَتَّى السَّاعَةِ
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৭৯. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুক্ত দাস আবু মুয়াইহিবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেন: ’আমাকে বাকী’ কবরস্থানের (মৃত) অধিবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং তুমি আমার সাথে চল।’ মধ্যরাতে আমি তাঁর সাথে সেখানে গেলাম। যখন তিনি তাদের (কবরবাসীদের) নিকটে গিয়ে দাঁড়ালেন, তখন বললেন: ’হে কবরবাসীগণ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। লোকেরা যে অবস্থায় সকালে উপনীত হচ্ছে তার চেয়ে ভাল অবস্থায় সকাল করার জন্য তোমাদেরকে অভিনন্দন। (মহান আল্লাহ যা থেকে তোমাদের কে মুক্তি দিয়েছেন, তা যদি তোমরা জানতে!) অন্ধকার রাতের টুকরার মতো ফিতনা ছুটে আসছে। একটির পেছনেই আরেকটি আসছে। পরবর্তীটি পূর্ববর্তীটির চেয়ে নিকৃষ্টতর।’ তারপর আমার দিকে ফিরে তিনি বললেন: ’হে আবু মুয়াইহিবা! আমাকে দুনিয়ার খাযানা’র (ধনভাণ্ডারের) চাবিগুচ্ছ এবং দুনিয়াতে চিরস্থায়িত্ব , অতঃপর জান্নাত দেওয়া হয়েছিল। এরপর আমাকে এগুলি (নেয়া’মত) ও আমার রবের সাক্ষাৎ- এ দু’টির মাঝে একটিকে বেছে নিতে বলা হয়েছে।’ আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দুনিয়ার খাযানা’র (ধনভাণ্ডারের) চাবিগুচ্ছ এবং দুনিয়াতে চিরদিন থাকার সুযোগ, অতঃপর জান্নাত গ্রহণ করুন। তিনি বললেন: ’আল্লাহর কসম, না, হে আবু মুয়াইহিবা! বরং আমি আমার রবের সাক্ষাতকেই বেছে নিয়েছি।’ এরপর তিনি বাকী’র কবরবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন, অতঃপর ফিরে এলেন। এরপরই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সেই (অসুখের) ব্যথা শুরু হল, যাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [1]
তাখরীজ: আহমদ, আল মুসনাদ ৩/৪৮৯; তাবারাণী, মু’জামুল কাবীর ২২/৩৪৭ নং ৮৭১; হাকিম, আল মুসতাদরাক ৩/৫৬; বাইহাকী, দালাইল ৬/১৬৩।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا خَلِيفَةُ بْنُ خَيَّاطٍ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَلِيِّ بْنِ عَدِيٍّ، عَنْ عُبَيْدٍ مَوْلَى الْحَكَمِ بْنِ أَبِي الْعَاصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، [ص: 216] عَنْ أَبِي مُوَيْهِبَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي قَدْ أُمِرْتُ أَنْ أَسْتَغْفِرَ لِأَهْلِ الْبَقِيعِ فَانْطَلِقْ مَعِي» فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ فَلَمَّا وَقَفَ عَلَيْهِمْ، قَالَ: " السَّلَامُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْمَقَابِرِ، لِيُهْنِكُمْ مَا أَصْبَحْتُمْ فِيهِ مِمَّا أَصْبَحَ فِيهِ النَّاسُ، لَوْ تَعْلَمُونَ مَا نَجَّاكُمُ اللَّهُ مِنْهُ أَقْبَلَتِ الْفِتَنُ كَقِطْعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يَتْبَعُ آخِرُهَا أَوَّلَهَا: الْآخِرَةُ أَشَرُّ مِنَ الْأُولَى "، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيَّ، فَقَالَ: «يَا أَبَا مُوَيْهِبَةَ إِنِّي قَدْ أُوتِيتُ بِمَفَاتِيحِ خَزَائِنِ الدُّنْيَا وَالْخُلْدِ فِيهَا، ثُمَّ الْجَنَّةُ، فَخُيِّرْتُ بَيْنَ ذَلِكَ وَبَيْنَ لِقَاءِ رَبِّي» قُلْتُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي، خُذْ مَفَاتِيحَ خَزَائِنِ الدُّنْيَا وَالْخُلْدَ فِيهَا، ثُمَّ الْجَنَّةَ قَالَ: «لَا وَاللَّهِ يَا أَبَا مُوَيْهِبَةَ، لَقَدِ اخْتَرْتُ لِقَاءَ رَبِّي» ثُمَّ اسْتَغْفَرَ لِأَهْلِ الْبَقِيعِ ثُمَّ انْصَرَفَ، فَبُدِئَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِوَجَعِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ
إسناده جيد
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮০. ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন إذا جاء نصر الله والفتح (সূরা নাছর) নাযিল হল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফাতিমাকে ডেকে বললেন: ’আমাকে আমার মৃত্যুর (নিকটবর্তীতার[1]) কথা জানানো হয়েছে।’ একথা শুনে তিনি কাঁদতে লাগলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: ’কেঁদোনা, আমার পরিবারের মধ্যে তুমিই সর্বাগ্রে আমার সাথে মিলিত হবে।’ একথা শুনে তিনি হাঁসতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কয়েকজন স্ত্রী এ ঘটনা দেখে বললেন: হে ফাতিমা, একবার তোমাকে আমরা কাঁদতে দেখলাম, এরপরই আবার হাঁসতে দেখলাম, (ব্যাপারটা কী)? তখন ফাতিমা বললেন, তিনি আমাকে বললেন যে, তাঁকে তাঁর মৃত্যুর (নিকটবর্তীতার) খবর জানানো হয়েছে, তা শুনে আমি কাঁদতে লাগলাম। এরপর তিনি আমাকে বললেন: ’কেঁদোনা, কেননা, তুমিই সর্বপ্রথম আমার পরিবারের মধ্য হতে আমার সাথে মিলিত হবে।’ তখন আমি হাঁসলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন: ’আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় এসে গেছে। আর ইয়ামানবাসীরাও এসে গেছে।’ [তখন একজন লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইয়ামানের অধিবাসী কারা? তখন তিনি বললেন]: ’তারা হল নরম হৃদয়ের অধিকারী। ইয়ামানেই রয়েছে ঈমান আর ইয়ামানীদের জন্যই রয়েছে হিকমাহ বা প্রজ্ঞা।”[2]
[2] তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ। এ হাদীসটি সহীহ । এর মূল (১ম অংশ) রয়েছে সহীহ বুখারীতে (৩৭১৫-৩৭১৬)
তাখরীজ: তাবারানী, আল কাবীর ১১/৩২৯ নং ১১৯০৩-১১৯০৪, ১১৯০৭; মু’জামুল আউসাত ১/৪৮৬ নং ৮৮৭ ও ৩/১৫ নং ২০১৭; বাইহাকী দালাইল, ৭/১৬৭। দেখুন, সহীহ বুখারীতে (৩৬২৩-৩৬২৪, ৩৭১৫-৩৭১৬)।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ الْعَوَّامِ، عَنْ هِلَالِ بْنِ خَبَّابٍ عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ (إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ) [النصر: 1] دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ فَقَالَ: «قَدْ نُعِيَتْ إِلَيَّ نَفْسِي» فَبَكَتْ، فَقَالَ: «لَا تَبْكِي فَإِنَّكِ أَوَّلُ أَهْلِي لِحَاقًا بِي»، فَضَحِكَتْ، فَرَآهَا بَعْضُ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْنَ: يَا فَاطِمَةُ، رَأَيْنَاكِ بَكَيْتِ ثُمَّ ضَحِكْتِ؟ قَالَتْ: إِنَّهُ أَخْبَرَنِي أَنَّهُ قَدْ نُعِيَتْ إِلَيْهِ نَفْسُهُ فَبَكَيْتُ، فَقَالَ لِي لَا تَبْكِي فَإِنَّكِ أَوَّلُ أَهْلِي لَاحِقٌ بِي فَضَحِكْتُ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليْهِ وَسَلَّمَ: «جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ، وَجَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ» فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَمَا أَهْلُ الْيَمَنِ؟ فَقَالَ: هُمْ أَرَقُّ أفْئدةً، وَالْإِيمَانُ يَمَانٍ، وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَّةٌ
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮১. আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন বাকী’ কবরস্থানের একটি জানাযা থেকে আমার নিকট ফিরে আসলেন। তিনি এসে আমাকে মাথাব্যথায় কাতর অবস্থায় পেলেন, আর আমি বলছিলাম, হে আমার মাথা! তিনি (তা শুনে) বললেন: ’হে আয়েশা, আমিও (মাথাব্যথায় আক্রান্ত)। হে আমার মাথা।’ তারপর তিনি বললেন: ’তুমি যদি আমার আগে মৃত্যুবরণ কর, তাহলে তোমার ক্ষতি কী? আমি তোমাকে গোসল দেব, কাফন পরাব, তোমার জন্য জানাযার সালাত আদায় করব এবং তোমাকে দাফন করব।’ তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম, আমি যেন আপনাকে দেখতে পাচ্ছি, আপনি এসব কাজ সম্পন্ন করে আমার ঘরে ফিরে এসে আপনার কোন স্ত্রীর সাথে বাসর যাপন করছেন। তিনি বলেন: একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি হাসলেন। তারপরই তার সেই (অসুখের) যন্ত্রণা শুরু হল, যে অসুখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[1]
তাখরীজ: আহমদ ৬/২২৮; ইবনু মাজাহ ১৪৬৫; দারুকুত্বনী২/৭৪ নং ১১, ১২, ১৩; বাইহাকী ৩/৩৯৬; আবু ইয়ালা, আল মুসনাদ ৪৫৭৯; ইবনু হিব্বান ৬৫৮৬; আরও দেখুন, সহীহ বুখারী (৫৬৬৬, ৭২১৭)।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ الْمُبَارَكِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: رَجَعَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ مِنْ جِنَازَةٍ مِنَ الْبَقِيعِ، فَوَجَدَنِي وَأَنَا أَجِدُ صُدَاعًا وَأَنَا أَقُولُ: وَا رَأْسَاهُ، قَالَ: «بَلْ أَنَا يَا عَائِشَةُ وَا رَأْسَاهُ»، قَالَ: «وَمَا ضَرَّكِ لَوْ مُتِّ قَبْلِي فَغَسَّلْتُكِ وَكَفَّنْتُكِ وَصَلَّيْتُ عَلَيْكِ وَدَفَنْتُكِ؟»، فَقُلْتُ: لَكَأَنِّي بِكَ وَاللَّهِ لَوْ فَعَلْتَ ذَلِكَ لَرَجَعْتَ إِلَى بَيْتِي فَأَعْرَسْتَ فِيهِ بِبَعْضِ نِسَائِكَ، قَالَتْ: فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ بُدِئَ فِي وَجَعِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ
رجاله ثقات غير أن ابن إسحاق مدلس وقد عنعن ولكنه صرح بالتحديث في رواية البيهقي فانتفت شبه التدليس
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮২. আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর অসুস্থতার সময়ে বলেন: ’পৃথক পৃথক সাতটি কূপ থেকে সাত মশক পানি এনে আমার উপর ঢালো, যেন আমি লোকদের নিকট বের হয়ে তাদের অঙ্গীকার দিতে পারি। আমরা তাঁকে হাফসার বড় একটি গামলার মধ্যে বসালাম এবং তাঁর উপর প্রচুর পানি ঢাললাম, অথবা, (একজন বর্ণনাকারী) মুহাম্মদ বিন ইসহাকের সন্দেহ, (তিনি বলেছেন) প্রচুর পরিমাণে পানি ঢেলে দিলাম। এতে তিনি কিছুটা আরাম পেলেন। তারপর তিনি বের হয়ে গেলেন এবং মিম্বারে আরোহণ করলেন। অতঃপর মহান আল্লাহর প্রশংসা ও তা’রীফ করলেন এবং ওহুদের যুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সাহাবীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং তাদের জন্য দু’আ করলেন। তারপর বললেন: ’আম্মা বা’দ। নিশ্চয় আনসারগণ আমার আশ্রয়স্থল যেখানে আমি আশ্রয় নিয়েছি। তাই তাদের সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে তোমরা সম্মান করবে; আর তাদের অপরাধসমূহ উপেক্ষা করবে, তবে হাদ্দ’ ব্যতীত। জেনে রাখ, আল্লাহর এক বান্দাকে দুনিয়া ও আল্লাহর নিকট যা রয়েছে, এতদুভয়ের মাঝে একটি বেছে নিতে বলা হয়েছিল, তিনি আল্লাহর নিকট যা রয়েছে, তা বেছে নিয়েছেন।’ তখন আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কাঁদতে লাগলেন। তিনি ধারণা করলেন যে, এর দ্বারা তিনি নিজেকেই বুঝাচ্ছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’শান্ত হও, হে আবু বাকর!’ (অন্যদেরকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন:) ’আবু বকরের দরজা ব্যতীত মসজিদে আগমনের এই সকল পথ বন্ধ করে দাও। কারণ, আমি সম্পর্কের ক্ষেত্রে আবু বকরের চেয়ে আমার উত্তম সহযোগী আর কাউকে জানি না।’[1]
তাখরীজ: (মুহাক্কিক্ব এ হাদীসের কোন তাখরীজ দেননি । আর ফাতহুল মান্নানে বলা হয়েছে, “এ হাদীস (এর ১ম অংশ) বর্ণনা করেছেন আবু ইয়ালা (৪৭৭০) (সহীহ বুখারী নং ১৯৮ তেও রয়েছে) আর এর সনদ অধিক সহীহ। আর (২য় অংশ) ‘আবু বাকরের দরজা বাদে সকল দরজা বন্ধ করা’র হাদীস বর্ণনা করেছেন, ইবনু সা’দ তার তাবাকাতে (২/২২৮); বুখারীতে (৪৬৬, ৪৬৭, ৩৬৫৪)।”) - অনুবাদক)।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُخْتَارٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهَ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ: «صُبُّوا عَلَيَّ سَبْعَ قِرَبٍ مِنْ سَبْعِ آبَارٍ شَتَّى حَتَّى أَخْرُجَ إِلَى النَّاسِ فَأَعْهَدَ إِلَيْهِمْ»، قَالَ: فَأَقْعَدْنَاهُ فِي مِخْضَبٍ لِحَفْصَةَ، فَصَبَبْنَا عَلَيْهِ الْمَاءَ صَبًّا - أَوْ شَنَنَّا عَلَيْهِ شَنًّا، الشَّكُّ مِنْ قِبَلِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ - فَوَجَدَ رَاحَةً، فَخَرَجَ فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ، فَحَمِدَ اللَّهِ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَاسْتَغْفَرَ لِلشُّهَدَاءِ مِنْ أَصْحَابِ أُحُدٍ وَدَعَا لَهُمْ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ الْأَنْصَارَ عَيْبَتِي الَّتِي أَوَيْتُ إِلَيْهَا، فَأَكْرِمُوا كَرِيمَهُمْ، وَتَجَاوَزُوا عَنْ مُسِيئِهِمْ إِلَّا فِي حَدٍّ. أَلَا إِنَّ عَبْدًا مِنْ عِبَادِ اللَّهِ قَدْ خُيِّرَ بَيْنَ الدُّنْيَا وَبَيْنَ مَا عِنْدَ اللَّهِ. فَاخْتَارَ مَا عِنْدَ اللَّهِ» فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ وَظَنَّ أَنَّهُ يَعْنِي نَفْسَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلَّمَ: عَلَى رِسْلِكَ يَا أَبَا بَكْرٍ سُدُّوا هَذِهِ الْأَبْوَابَ الشَّوَارِعَ إِلَى الْمَسْجِدِ إِلَّا بَابَ أَبِي بَكْرٍ فَإِنِّي لَا أَعْلَمُ امْرَأً أَفْضَلَ عِنْدِي يَدًا فِي الصُّحْبةِ مِنْ أَبِي بَكْرٍ
رجاله ثقات غير أن محمد بن إسحاق مدلس وقد عنعن
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৩. আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, অসুস্থ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সালাতের সংবাদ দেওয়া হলে তিনি বললেন: ’আবু বাকরকে বল লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে।’ তারপর তিনি বেহুঁশ হয়ে গেলেন। এ অবস্থা দূরীভূত হওয়ার পর তিনি বললেন: ’তোমরা কি আবু বাকরকে লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করতে বলেছ?’ আমি বললাম, আবু বাকর খুব নরম হৃদয়ের মানুষ। আপনি যদি উমারকে আদেশ করতেন! তখন তিনি বললেন: ’তোমরা তো দেখছি ইউসুফের সাথীদের মতই। আবু বাকরকে বল লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে।’ কতিপয় (খিলাফাত লাভের ব্যাপারে) আকাংখী উক্তিকারী (থাকবে), কিন্তু আল্লাহ ও মুমিনগণ এটা (আবু বাকরকে বাদ দিয়ে অন্যের নেতৃত্ব) মানতে নারায।[1]
তাখরীজ: আমরা এর তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৪৭৮, ৪৫৭৯ তে। ( এটি সহীহ বুখারী (৬৭৮-৬৭৯, ৬৮২, ৬৮৭, সহীহ মুসলিমে ৪/২১ (৪২০); আহমদ ১৯৭২০ বর্ণিত হয়েছে।- অনুবাদক)।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: أُوذِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالصَّلَاةِ فِي مَرَضِهِ فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ». ثُمَّ أُغْمِيَ عَلَيْهِ، فَلَمَّا سُرِّيَ عَنْهُ، قَالَ: «هَلْ أَمَرْتُنَّ أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ؟». فَقُلْتُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ. فَقَالَ: «أَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ، فَرُبَّ قَائِلٍ مُتَمَنٍّ وَيَأْبَى اللَّهُ وَالْمُؤْمِنُونَ
إسناده حسن من أجل فليح بن سليمان
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৪. ইকরামা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে সে দিনের বাকী সময় ও সেই রাত এবং তার পরের দিন ঐ অবস্থায় রেখে বুধবার রাতে (মঙ্গলবার দিবাগত রাতে) দাফন করা হয়। লোকজন বলাবলি করছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেন নি। মূসা আলাইহিস সালামের রূহ যেভাবে উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল, তেমনিভাবে তাঁর রূহকেও উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেন নি। মূসা আলাইহিস সালামের রূহ যেভাবে উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল, তেমনিভাবে তাঁর রূহকেও উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করতে পারেন না, যতক্ষণ তিনি লোকদের হাতসমূহ ও জিহবাসমূহ না কেটে ফেলবেন (যারা বলছে, তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন)। উমার এভাবে বলতেই থাকলেন এমনকি এভাবে ভয় প্রদর্শন করে কথা বলতে বলতে তাঁর মুখে ফেনা উঠে গেল।
অতঃপর আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন: ’নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেছেন। কেননা, তিনি একজন মানুষ, আর তিনিও পরিবর্তিত হবেন, যেভাবে মানুষ (মৃত্যুর পরে) পরিবর্তিত হয়ে যায়। হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের সাথী (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দাফন কর। তিনি আল্লাহর নিকট এতবেশি সম্মানিত যে, তিনি তাঁকে দু’বার মৃত্যু দিবেন না। তোমাদেরকে আল্লাহ একবার মৃত্যু দেবেন, আর তাঁকে কি আল্লাহ দু’বার মৃত্যু দেবেন, যেখানে তিনি আল্লাহর নিকট ওর চেয়েও অধিক সম্মানিত? কাজেই, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের সাথী (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দাফন কর। আর তোমরা যেমন বলছ, ব্যাপারটি যদি সেরকম হয়, তাহলে তাঁকে মাটি খুঁড়ে বের করে আনা আল্লাহর পক্ষে মোটেও কঠিন কিছু নয়। আল্লাহর কসম! নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেননি, যতক্ষণ না তিনি (মুক্তির) পথকে স্পষ্ট ও উজ্জ্বল অবস্থায় রেখে গেছেন, হালালকে হালাল করেছেন, হারামকে হারাম ঘোষণা করেছেন, বিয়ে করেছেন আবার তালাক্ব দিয়েছেন, যুদ্ধ ও সন্ধি করেছেন, এমন কোন ছাগলের রাখাল ছিল না, যে তাঁর অনুসরন করে পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে সক্ষম হতো, আর তিনি সেখানে নিজ হাতের লাঠি দিয়ে গাছের পাতা পেড়েছেন এবং (পানির) চৌবাচ্চার ছিদ্র পথ নিজের হাতে বন্ধ করেছেন। তোমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে অধিক সাহসী ও পরিশ্রমী কেউ নেই! হে লোকসকল, তোমরা তোমাদের সাথী (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাফন কর।
তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন: উম্মু আয়মান কাঁদতে লাগলেন। তখন তাকে বলা হল, হে উম্মু আয়মান! আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য কাঁদছেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য কাঁদছি না, কেননা, আমি জানি যে, তিনি এমন স্থানে পৌঁছে গেছেন যা তাঁর জন্য দুনিয়ার চেয়ে উত্তম। বরং আমি এজন্য কাঁদছি যে, আসমান হতে খবর আসা বন্ধ হয়ে গেল।
হাম্মাদ বলেন: আয়্যুব যখন এ স্থানে পৌঁছেন, তখন অশ্রুতে তাঁর বাকরূদ্ধ হয়ে আসল।[1]
তাখরীজ: ইবনু সা’দ, আত তাবাকাত ২/২/৫৩, ৫৪, ৫৮, ৮৩।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ: «تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ فَحُبِسَ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ وَلَيْلَتَهُ وَالْغَدَ حَتَّى دُفِنَ لَيْلَةَ الْأَرْبِعَاءِ» وَقَالُوا: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَمُتْ، وَلَكِنْ عُرِجَ بِرُوحِهِ كَمَا عُرِجَ بِرُوحِ مُوسَى فَقَامَ عُمَرُ فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَمُتْ وَلَكِنْ عُرِجَ بِرُوحِهِ كَمَا عُرِجَ بِرُوحِ مُوسَى، وَاللَّهِ لَا يَمُوتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى يَقْطَعَ أَيْدِيَ أَقْوَامٍ وَأَلْسِنَتَهُمْ، فَلَمْ يَزَلْ عُمَرُ يَتَكَلَّمُ حَتَّى أَزْبَدَ شِدْقَاهُ مِمَّا يُوعِدُ وَيَقُولُ. فَقَامَ الْعَبَّاسُ فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ مَاتَ، وَإِنَّهُ لَبَشَرٌ وَإِنَّهُ يَأْسُنُ كَمَا يَأْسُنُ الْبَشَرُ، أَيْ قَوْمِ فَادْفِنُوا صَاحِبَكُمْ. فَإِنَّهُ أَكْرَمُ عَلَى اللَّهِ مِنْ أَنْ يُمِيتَهُ إِمَاتَتَيْنِ. أَيُمِيتُ أَحَدَكُمْ إِمَاتَةً وَيُمِيتُهُ إِمَاتَتَيْنِ وَهُوَ أَكْرَمُ عَلَى اللَّهِ مِنْ ذَلِكَ؟. أَيْ قَوْمِ، فَادْفِنُوا صَاحِبَكُمْ، فَإِنْ يَكُ كَمَا تَقُولُونَ فَلَيْسَ بِعَزِيزٍ عَلَى اللَّهِ أَنْ يَبْحَثَ عَنْهُ التُّرَابَ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاللَّهِ مَا مَاتَ حَتَّى تَرَكَ السَّبِيلَ نَهْجًا وَاضِحًا، فَأَحَلَّ الْحَلَالَ، وَحَرَّمَ الْحَرَامَ، وَنَكَحَ وَطَلَّقَ، وَحَارَبَ وَسَالَمَ، مَا كَانَ رَاعِي غَنَمٍ يَتَّبِعُ بِهَا صَاحِبُهَا رُءُوسَ الْجِبَالِ يَخْبِطُ عَلَيْهَا الْعِضَاةَ بِمِخْبَطِهِ وَيَمْدُرُ حَوْضَهَا بِيَدِهِ بِأَنْصَبَ وَلَا أَدْأَبَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. كَانَ فِيكُمْ. أَيْ قَوْمِ، فَادْفِنُوا صَاحِبَكُمْ. قَالَ: وَجَعَلَتْ أُمُّ أَيْمَنَ تَبْكِي، فَقِيلَ لَهَا: يَا أُمَّ أَيْمَنَ تبْكِينَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: إِنِّي وَاللَّهِ مَا أَبْكِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ لَا أَكُونَ أَعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ ذَهَبَ إِلَى مَا هُوَ خَيْرٌ لَهُ مِنَ الدُّنْيَا، وَلَكِنِّي أَبْكِي عَلَى خَبَرِ السَّمَاءِ انْقَطَعَ قَالَ حَمَّادٌ: خَنَقَتْ الْعَبْرَةُ أَيُّوبَ حِينَ بَلَغَ هَاهُنَا
رجاله ثقات غير أنه مرسل
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৫. মাকহুল রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ’যখন তোমাদের কারো উপর মুসীবত আপতিত হয়, তখন সে যেন আমার (মৃত্যুর) দ্বারা তার উপর আগত মুসীবতের কথা স্মরণ করে। কেননা, তা হল সবচেয়ে বড় মুসীবতসমূহের অন্যতম।[1]
তাখরীজ: একই সনদে আমি এটি অন্যত্র পাইনি তবে মতনের দিক থেকে এর শাহীদ রয়েছে ইবনু সাবিতের হাদীসে যা হাইছামীর মাজমাউয যাওয়াইদে (নং ৪০০৫) এ বর্ণিত হয়েছ।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ سَعِيدٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ هُوَ ابْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ، وحدَّثني يَعِيشُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنِي مَكْحُولٌ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا أَصَابَ أَحَدَكُمْ مُصِيبَةٌ، فَلْيَذْكُرْ مُصِيبَتَهُ بِي، فَإِنَّهَا مِنْ أَعْظَمِ الْمَصَائِبِ
إسناده صحيح وهو مرسل
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৬. আতা রাহিমাহুল্লাহ বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ’’যখন তোমাদের কারো উপর মুসীবত আপতিত হয়, তখন সে যেন আমার (মৃত্যুর) দ্বারা তার উপর আগত মুসীবতের কথা স্মরণ করে। কেননা, তা হল সবচেয়ে বড় মুসীবতসমূহের অন্যতম।[1]
তাখরীজ: ইবনু সা’দ, আত তাবাকাত ২/২/৫৯।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا فِطْرٌ، عَنْ عَطَاءٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا أَصَابَ أَحَدَكُمْ مُصِيبَةٌ، فَلْيَذْكُرْ مُصَابَهُ بِي، فَإِنَّهَا مِنْ أَعْظَمِ الْمَصَائِبِ
إسناده صحيح وهو مرسل
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৭. উমার ইবনু মুহাম্মদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, আমি ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে দেখেছি, তিনি যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা উল্লেখ করতেন, তখন কেঁদে ফেলতেন। [1]
তাখরীজ: ইবনু সা’দ, আত তাবাকাত ২/২/৮৪।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: «مَا سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَذْكُرُ النَّبِيَّ قَطُّ إِلَّا بَكَى
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৮. আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, ফাতিমা বলেন, হে আনাস! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর মাটি চাপা দেওয়া তোমাদের মন কিভাবে বরদাশত করল? তিনি আরও বলেন: হায়! আমার পিতা! তিনি তাঁর রবের কত নিকটবর্তী হয়েছেন! হায়! আমার পিতা! জান্নাতুল ফিরদাউস হয়েছে তাঁর বাসস্থান। হায়! আমার পিতা! জিবরীল আলাইহিস সালামকে তাঁর ইন্তিকালের খবর শুনালাম। হায়! আমার পিতা! তাঁর রবের ডাকে সাড়া দিলেন।’
হাম্মাদ বলেন: ছাবিত এ হাদীস বর্ণনা করার সময় কাঁদতেন। ছাবিত বলেন: আনাস এ হাদীস বর্ণনা করার সময় কাঁদতেন।[1]
তাখরীজ: সহীহ বুখারী ৪৪৬২; আহমদ, আল মুসনাদ ৩/২০৪ নং ১৩১৪০; ইবনু মাজাহ ১/৫২২ নং ১৬৩০; ইবনু হিব্বান ১৪/৫৯২ নং ৬৬২২।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ،: " أَنَّ فَاطِمَةَ قَالَتْ: يَا أَنَسُ، كَيْفَ طَابَتْ أَنْفُسُكُمْ أَنْ تَحْثُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التُّرَابَ؟ وَقَالَتْ: يَا أَبَتَاهْ مِنْ رَبِّهِ مَا أَدْنَاهْ وَا أَبَتَاهْ جَنَّةُ الْفِرْدَوْسِ مَأْوَاهْ وَا أَبَتَاهْ إِلَى جِبْرِيلَ نَنْعَاهْ وَا أَبَتَاهْ أَجَابَ رَبًّا دَعَاهْ " قَالَ حَمَّادٌ: حِينَ حَدَّثَ ثَابِتٌ بَكَى، وقالَ ثَابِتٌ حِينَ حَدَّثَ بِهِ أَنَسٌ بَكَى
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৮৯. আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা উল্লেখপূর্বক বলেন, আমি তাঁর মদীনায় আগমনের দিন তাঁর নিকট উপস্থিত ছিলাম। যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে আগমন করেছেন, আমি সেই দিনটির (যে দিন তিনি মদীনায় আগমন করেছেন) চেয়ে উত্তম ও উজ্জ্বলতম দিন আর কখনো দেখিনি। আবার আমি তাঁর মৃত্যুবরণ করার দিনও তাঁর নিকট উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু যেদিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন সেদিনের মত এমন খারাপ ও অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন আমি আর কখনো দেখিনি।[1]
তাখরীজ: আহমদ, আল মুসনাদ ৩/১২২ নং ১২২৫৬; ইবনু আবী শাইবা, আল মুছান্নাফ ১১/৫১৬ নং ১১৮৬১; বাইহাকী দালাইল ৭/২৬৫-২৬৬; তিরমিযী, কিতাবুল মানাকিব; ইবনু মাজাহ, কিতাবুল জানাইয। এর তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী ৩২৯৬, ৩৩৭৮ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ২১৬২, সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৬৩৪ তে।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ وَذَكَرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «شَهِدْتُهُ يَوْمَ دَخَلَ الْمَدِينَةَ فَمَا رَأَيْتُ يَوْمًا قَطُّ، كَانَ أَحْسَنَ وَلَا أَضْوَأَ مِنْ يَوْمٍ دَخَلَ عَلَيْنَا فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَشَهِدْتُهُ يَوْمَ مَوْتِهِ، فَمَا رَأَيْتُ يَوْمًا كَانَ أَقْبَحَ، وَلَا أَظْلَمَ مِنْ يَوْمٍ مَاتَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৯০. আবুল হারীয আল-আযদী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু সালাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কিয়ামতের দিন তো আমরা আপনাকে আপনার প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় পাবো। আপনার (ইন্তিকালের) পরে আপনার উম্মাতের বিদআতী আমলের কারণে (সেদিন) আপনার প্রতিপালকের সামনে লজ্জায় আপনার গালদু’টি লাল হয়ে যাবে।[1]
তাখরীজ: (মুহাক্কিক্ব কোন তাখরীজ উল্লেখ করেননি।)
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُطِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الْجَلِيلِ، عَنْ أَبِي حَرِيزٍ الْأَزْدِيِّ، قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَجِدُكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَائِمًا عِنْدَ رَبِّكَ وَأَنْتَ مُحْمَارَّةٌ وَجْنَتَاكَ، مُسْتَحْيٍ مِنْ رَبِّكَ مِمَّا أَحْدَثَتْ أُمَّتُكَ مِنْ بَعْدِكَ
إسناده ضعيف لضعف عبد الله بن ميسرة أبي عبد الجليل وهو موقوف على عبد الله بن سلام وباقي رجاله ثقات
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৯১. আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর (إذا جاء نصر الله والفتح ورأيت الناس يدخلون في دين الله أفواجا) (সুরা নাসর: ১-২) এই সূরাটি নাযিল হল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’তারা যেভাবে দলে দলে তাতে (দ্বীনে) প্রবেশ করল, সেভাবেই দলেদলে তারা তা থেকে বের হয়ে যাবে।’[1]
তাখরীজ: হাকিম ৪/৪৯৬; সূয়ুতী, দুররে মানসূর ৬/৪০৮; মুত্তাকী আল হিনদ, কানযুল উম্মাল: ৩১১০৭।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنَا الْقَاسِمُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ شُرَيْحٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ الْقُرَشِيِّ، عَنْ أَبِي قُرَّةَ، مَوْلَى أَبِي جَهْلٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ هَذِهِ السُّورَةَ لَمَّا أُنْزِلَتْ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا) [النصر: 2] قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيَخْرُجُنَّ مِنْهُ أَفْوَاجًا كَمَا دَخَلُوهُ أَفْوَاجًا
لم يحكم عليه المحقق
পরিচ্ছেদঃ ১৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাত সম্পর্কে
৯২. খালিদ ইবনু মা’দান রাহিমাহুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু আল আহতাম সাধারণ লোকদের সঙ্গে উমার ইবনু আব্দুল আযীয রাহিমাহুল্লাহ’র নিকট প্রবেশ করলেন। তিনি আকস্মিকভাবে উমার-এর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা আরম্ভ করে দিলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও তা’রীফ করার পর বললেন: আম্মা বা’দ (অতঃপর), আল্লাহ মাখলুক সৃষ্টি করলেন। কিন্তু, তিনি মাখলুকের ইবাদতের মুখাপেক্ষী নন এবং এদের নাফরমানীর কারণে (তাঁর কোন ক্ষতির হওয়ার) আশংকা তাঁর মোটেই নেই। সে সময় (জাহিলী যুগে) অবস্থা ও চিন্তাধারার দিক থেকে মানুষ ছিল বিভিন্ন ধরণের। এই অবস্থানে তাদের মধ্যে আরবরা ছিল বেশি খারাপ। তারা কেউ ছিল পাথরপূজারী, কেউ আরোহী এবং কেউ পশমের ঘরে (তাঁবুতে) বসবাসকারী। পৃথিবীর উত্তম বস্তুসমূহ, সুখ-শান্তি ও আরাম-আয়েশ তাদের উপর দিয়ে অতিক্রান্ত হচ্ছিল (এতে তাদের কোন আকর্ষণ ছিল না)। তারা আল্লাহর নিকট জামা’আতবদ্ধ জীবন চাইত না। তারা আল্লাহর কোন কিতাবও পড়ত না। তাদের মৃতব্যক্তি ছিল জাহান্নামী এবং জীবিতগণ ছিল অন্ধ, অপবিত্র। অসংখ্য (মন্দ) কাজের প্রতি তারা ছিল আগ্রহী, সেই সাথে উদাসীনতার বিষয়ও ছিল অসংখ্য। আল্লাহ যখন তাদেরকে তাঁর রহমতে সিক্ত করতে চাইলেন তখন তাঁর পক্ষ থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল পাঠালেন- তোমাদের ক্ষতি যার নিকট অত্যন্ত পীড়াদায়ক। তিনি মু’মিনদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ও করুণাসিক্ত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহিস সাল্লাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। (আল্লাহ তা’আলা তার উপরে তাঁর রহমত, শান্তি ও বরকত নাযিল করুন।) সেটিও তাদেরকে তাঁর দেহ ক্ষতবিক্ষত করা থেকে এবং তাঁকে বিভিন্ন লকব বা মন্দ উপাধি প্রদান থেকে বিরত রাখতে পারে নি। যদিও তাঁর সাথে তখনও আল্লাহর মুখপাত্র হিসেবে কিতাব ছিল। কেবল তাঁর নির্দেশ অনুসারেই তিনি উঠে দাঁড়ান এবং তাঁর অনুমতিতেই তিনি আগে বাড়ান।
যখন তাকে কঠোর হবার নির্দেশ দেয়া হলো এবং জিহাদের অনুমতি দেয়া হল, তখন আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর শক্তি প্রকাশিত হতে লাগল। আল্লাহ তাঁর ’হুজ্জাত’ তথা দলীল-প্রমাণকে আরও সুসংহত করলেন। তাঁর কালিমাকে বলিষ্ঠ করলেন। তাঁর দাওয়াতকে ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত করলেন। আর এভাবে মুত্তাকী ও পাক-পবিত্র অবস্থায় তিনি দুনিয়া ছেড়ে গেলেন। তাঁর পরে আবু বকর উঠে দাঁড়ালেন (ক্ষমতা বা দায়িত্ব লাভ করলেন), তিনি তাঁর সুন্নাত অনুযায়ী তাঁর পন্থা অনুসরণ করলেন। কিছু বেদুইন তখন (যাকাত দিতে অস্বীকার করার মাধ্যমে) মুরতাদ বা দীনত্যাগী হয়ে গেল। ফলে যারা এরূপ করল, তাদের থেকে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা গ্রহণ করেছেন, তিনি তা ব্যতীত অন্য কিছু (তথা কম-বেশি) গ্রহণ করতে অস্বীকার করলেন। ফলে তরবারী খাপমুক্ত হয়ে পড়ল এবং তা থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হতে লাগল। হকপন্থীগণ বাতিলপন্থীদের উপর চড়াও হল। তাদের অঙ্গকর্তন এবং মাটিকে তাদের রক্ত পান করানো অব্যাহত রইলো, যতক্ষণ তারা আগের অবস্থানে (দীন ইসলামে) ফিরে না আসল; যা অস্বীকার করেছিল তা স্বীকার না করল। আল্লাহর সম্পদ থেকে আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একটি বাচ্চা উট নিয়েছিলেন যা দিয়ে পানি বহন করানো হত এবং একটি হাবশী দাসী যে তাঁর এক ছেলেকে দুধ পান করাতো। মৃত্যুর সময় এগুলো তাঁর গলগ্রহে পরিণত হল। ফলে তিনি তা পরবর্তী খলিফার নিকট পৌঁছে দিয়ে তিনি মুত্তাকী ও পাক-পবিত্র অবস্থায় তাঁর সাথী (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পন্থার উপর দুনিয়া পরিত্যাগ করলেন।
অতঃপর উমার ইবনুল খাত্ত্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়ালেন এবং শহরের পর শহর প্রতিষ্ঠিত করলেন, কাঠিন্য ও কোমলতার মিশ্রণ ঘটালেন এবং জামার হাতা গুটিয়ে নিলেন এবং পরনের কাপড় পায়ের নলার উপর উঠিয়ে নিলেন (কোমর বেঁধে লাগলেন)। কাজের জন্য লোকজন এবং যুদ্ধের জন্য অস্ত্র-শস্ত্র প্রস্তুত করলেন। এরপর যখন মুগীরা ইবনু শু’বার কৃতদাস তাঁকে আহত করল, তখন তিনি ইবনু আব্বাসকে নির্দেশ দিলেন, লোকদেরকে যেন জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর হত্যাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে কি-না। যখন তাঁকে বলা হল, সে মুগীরা ইবনু শু’বার কৃতদাস, তখন তিনি ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ’আলহামদুলিল্লাহ’ বলে উঠলেন যে, গণিমাতের হকদার (কোন মুসলিম) তাঁকে আহত করেনি। যদি এমন হত, তবে হয়তো সে তাঁর বিপক্ষে যুক্তি দিতে পারত যে, যেহেতু তিনি তাঁর (গণিমাতের) মাল (ঠিকমত বণ্টন না করে) আত্মসাত করাকে হালাল করে নিয়েছিলেন, তাই তাঁকে হত্যা করাও তার জন্য হালাল ছিল।
আল্লাহর সম্পদ (বায়তুল মা’ল) থেকে তিনি আশি হাজারের কিছু বেশী অর্থ গ্রহণ করেছিলেন। সেজন্য তিনি নেতৃত্বের অবসান ঘটালেন এবং তা তাঁর ছেলেদের জামানতে রাখতে তিনি অপছন্দ করলেন। সেই অর্থ তিনি পরবর্তী খলিফার নিকট পৌঁছে দিয়েছেন এবং এভাবেই তিনি তাঁর পূর্ববর্তী দু’সাথীর মত মুত্ত্বাকী ও পাক-পবিত্র অবস্থায় দুনিয়া ত্যাগ করলেন।
অতঃপর তোমাকে, হে উমার, দুনিয়ার (দুনিয়াদার) ছেলে, দুনিয়া তোমাকে এর রাজ্যের শাসক বানিয়েছে। তোমাকে সে একটু একটু করে দুধ পান করিয়েছে এবং এর মধ্যে প্রত্যাশিত (সম্মানীয়) স্থান অন্বেষণের জন্য (তোমার মধ্যে) আকাঙ্ক্ষা জন্মিয়েছে। তারপর যখন তুমি এর শাসক হলে, তখন তুমি তাকে সেইখানে নিক্ষেপ করলে, যেখানে আল্লাহ তা’আলা একে নিক্ষেপ করেছেন। অর্থাৎ তুমি দুনিয়াকে বর্জন করেছো এবং একে দূরে সরিয়ে দিয়েছ এবং একে ঘৃণা করেছ, কেবল পথ চলার জন্য যে পাথেয়/সম্বলটুকু প্রয়োজন তা ব্যতীত (আর কিছুই তুমি গ্রহণ করছ না)। তাই সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি তোমার মাধ্যমে আমাদের দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদ দূর করে দিয়েছেন। অতএব তুমি (তোমার কর্তব্য) সম্পাদন করে যাও এবং অন্য কোন দিকে ভ্রক্ষেপ করো না।’ হকের (সত্যের) চেয়ে সম্মানীয় আর কিছুই নেই এবং বাতিলের চেয়ে অসম্মানীয় আর কিছুই নেই।
আমার এ কথা আমি বলে গেলাম এবং আমার জন্য ও সমস্ত মু’মিন পুরুষ ও নারীর জন্য আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
আইয়্যূব বলেন: উমার ইবনু আব্দুল আযীয কোন কিছু ঘটলে বলতেন: ’আমাকে ইবনুল আহতাম বলতেন: তুমি (তোমার কর্তব্য) সম্পাদন করে যাও এবং অন্য কোন দিকে ভ্রক্ষেপ করো না।’[1]
তাখরীজ: হাফিজ ইবনু হাজার, আল বায়ান ওয়াত তাবয়ীন’ ২/১১৭-১২০।
باب في وفاة النبي صلى الله عليه وسلم
أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرٍ الْمِصْرِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ أَبِي أَيُّوبَ الْخُزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْأُمَوِيِّ، عَنْ مَعْرُوفِ بْنِ خَرَّبُوذَ الْمَكِّيِّ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ قَالَ: دَخَلَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْأَهْتَمِ عَلَى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ مَعَ الْعَامَّةِ فَلَمْ يَفْجَأْ عُمَرَ إِلَّا وَهُوَ بَيْنَ يَدَيْهِ يَتَكَلَّمُ، " فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ غَنِيًّا عَنْ طَاعَتِهِمْ، آمِنًا لِمَعْصِيَتِهِمْ، وَالنَّاسُ يَوْمَئِذٍ فِي الْمَنَازِلِ وَالرَّأْيِ مُخْتَلِفُونَ، فَالْعَرَبُ بِشَرِّ تِلْكَ الْمَنَازِلِ: أَهْلُ الْحَجَرِ وَأَهْلُ الْوَبَرِ، وَأَهْلُ الدَّبَرِ، تَجْتَازَ دُونَهُمْ طَيِّبَاتُ الدُّنْيَا وَرَخَاءُ عَيْشِهَا، لَا يَسْأَلُونَ اللَّهَ جَمَاعَةً، وَلَا يَتْلُونَ لَهُ كِتَابًا، مَيِّتُهُمْ فِي النَّارِ، وَحَيُّهُمْ أَعْمَى نَجِسٌ مَعَ مَا لَا يُحْصَى مِنَ الْمَرْغُوبِ عَنْهُ، وَالْمَزْهُودِ فِيهِ. فَلَمَّا أَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَنْشُرَ عَلَيْهِمْ رَحْمَتَهُ، بَعَثَ إِلَيْهِمْ رَسُولًا مِنْ أَنْفُسِهِمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ، صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ، وَعَلَيْهِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ فَلَمْ يَمْنَعْهُمْ ذَلِكَ أَنْ جَرَحُوهُ فِي جِسْمِهِ وَلَقَّبُوهُ فِي اسْمِهِ، وَمَعَهُ كِتَابٌ مِنَ اللَّهِ نَاطِقٌ، لَا يُقَوَّمُ إِلَّا بِأَمْرِهِ، وَلَا يُرْحَلُ إِلَّا بِإِذْنِهِ، فَلَمَّا أُمِرَ بِالْعَزْمَةِ، وَحُمِلَ عَلَى الْجِهَادِ، انْبَسَطَ لِأَمْرِ اللَّهِ لَوْثُهُ، فَأَفْلَجَ اللَّهُ حُجَّتَهُ، وَأَجَازَ كَلِمَتَهُ، وَأَظْهَرَ دَعْوَتَهُ، وَفَارَقَ الدُّنْيَا تَقِيًّا نَقِيًّا، ثُمَّ قَامَ بَعْدَهُ أَبُو بَكْرٍ فَسَلَكَ سُنَّتَهُ، وَأَخَذَ سَبِيلَهُ، وَارْتَدَّتْ الْعَرَبُ - أَوْ مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مِنْهُمْ - فَأَبَى أَنْ يَقْبَلَ مِنْهُمْ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا الَّذِي كَانَ قَابِلًا، انْتَزَعَ السُّيُوفَ مِنْ أَغْمَادِهَا، وَأَوْقَدَ النِّيرَانَ فِي شُعُلِهَا، ثُمَّ نُكِبَ بِأَهْلِ الْحَقِّ أَهْلُ الْبَاطِلِ، فَلَمْ يَبْرَحْ يُقَطِّعُ أَوْصَالَهُمْ، وَيَسْقِي الْأَرْضَ دِمَاءَهُمْ، حَتَّى أَدْخَلَهُمْ فِي الَّذِي خَرَجُوا مِنْهُ، وَقَرَّرَهُمْ بِالَّذِي نَفَرُوا عَنْهُ، وَقَدْ كَانَ أَصَابَ مِنْ مَالِ اللَّهِ بَكْرًا [ص: 226] يَرْتَوِي عَلَيْهِ، وَحَبَشِيَّةً أَرْضَعَتْ وَلَدًا لَهُ، فَرَأَى ذَلِكَ عِنْدَ مَوْتِهِ غُصَّةً فِي حَلْقِهِ فَأَدَّى ذَلِكَ إِلَى الْخَلِيفَةِ مِنْ بَعْدِهِ وَفَارَقَ الدُّنْيَا تَقِيًّا نَقِيًّا عَلَى مِنْهَاجِ صَاحِبِهِ. ثُمَّ قَامَ بَعْدَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَمَصَّرَ الْأَمْصَارَ، وَخَلَطَ الشِّدَّةَ بِاللِّينِ، وَحَسَرَ عَنْ ذِرَاعَيْهِ، وَشَمَّرَ عَنْ سَاقَيْهِ وعدَّ لِلْأُمُورِ أَقْرَانَهَا، وَلِلْحَرْبِ آلَتَهَا، فَلَمَّا أَصَابَهُ فَتَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، أَمَرَ ابْنَ عَبَّاسٍ يَسْأَلُ النَّاسَ: هَلْ يُثْبِتُونَ قَاتِلَهُ. فَلَمَّا قِيلَ: فَتَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، اسْتَهَلَّ يَحْمَدُ رَبَّهُ أَنْ لَا يَكُونَ أَصَابَهُ ذُو حَقٍّ فِي الْفَيْءِ فَيَحْتَجَّ عَلَيْهِ بِأَنَّهُ إِنَّمَا اسْتَحَلَّ دَمَهُ بِمَا اسْتَحَلَّ مِنْ حَقِّهِ، وَقَدْ كَانَ أَصَابَ مِنْ مَالِ اللَّهِ بِضْعَةً وَثَمَانِينَ أَلْفًا، فَكَسَرَ لَهَا رِبَاعَهُ وَكَرِهَ بِهَا كَفَالَةَ أَوْلَادِهِ، فَأَدَّاهَا إِلَى الْخَلِيفَةِ مِنْ بَعْدِهِ، وَفَارَقَ الدُّنْيَا تَقِيًّا نَقِيًّا عَلَى مِنْهَاجِ صَاحِبَيْهِ. ثُمَّ إِنَّكَ يَا عُمَرُ بُنَيُّ الدُّنْيَا وَلَّدَتْكَ مُلُوكُهَا، وَأَلْقَمَتْكَ ثَدْيَيْهَا، وَنَبَتَّ فِيهَا تَلْتَمِسُهَا مَظَانَّهَا، فَلَمَّا وُلِّيتَهَا أَلْقَيْتَهَا حَيْثُ أَلْقَاهَا اللَّهُ، هَجَرْتَهَا وَجَفَوْتَهَا، وَقَذِرْتَهَا إِلَّا مَا تَزَوَّدْتَ مِنْهَا، فَالْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي جَلَا بِكَ حَوْبَتَنَا، وَكَشَفَ بِكَ كُرْبَتَنَا، فَامْضِ وَلَا تَلْتَفِتْ، فَإِنَّهُ لَا يَعِزُّ عَلَى الْحَقِّ شَيْءٌ، وَلَا يَذِلُّ عَلَى الْبَاطِلِ شَيْءٌ. أَقُولُ قَوْلِي هذا وَأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ لِي وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ " [ص: 227] قَالَ أَبُو أَيُّوبَ: فَكَانَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ يَقُولُ فِي الشَّيْءِ قَالَ لِيَ ابْنُ الْأَهْتَمِ: امْضِ وَلَا تَلْتَفِتْ
إسناده فيه مجهولان. وهو موقوف على ابن الأهتم