পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৬৫. যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বের হলাম। সফরে এক কঠিন অবস্থা লোকদেরকে গ্রাস করে নিল। তখন ’আবদুল্লাহ্ ইবনু উবাই তার সাথী-সঙ্গীদেরকে বলল, “আল্লাহর রাসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না যতক্ষণ তারা সরে পড়ে যারা তার আশে পাশে আছে।” সে এও বলল, “আমরা মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলে তথা হতে প্রবল লোকরা দুর্বল লোকদের বহিষ্কৃত করবেই।” (এ কথা শুনে) আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম এবং তাকে এ সম্পর্কে জানালাম। তখন তিনি ’আবদুল্লাহ ইবনু উবাইকে ডেকে পাঠালেন। সে অতি জোর দিয়ে কসম খেয়ে বলল, এ কথা সে বলেনি।
তখন লোকরা বলল, যায়দ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে। তাদের এ কথায় আমার খুব দুঃখ হল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা’আলা আমার সত্যতার পক্ষে আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ডাকলেন, যাতে তিনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, কিন্তু তারা তাদের মাথা ফিরিয়ে নিল।" আল্লাহর বাণীঃ “দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ”- (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৪)। রাবী বলেন, লোকগুলো দেখতে খুব সুন্দর ছিল।
حديث زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي سَفَرٍ أَصَابَ النَّاسَ فِيهِ شِدَّةٌ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ لأَصْحَابِهِ: لاَ تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى يَنْفَضُّوا مِنْ حَوْلِهِ وَقَالَ: لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ، لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخْبَرْتُهُ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ، فَسَأَلَهُ، فَاجْتَهَدَ يَمِينَهُ مَا فَعَلَ قَالُوا: كَذَبَ زَيْدٌ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَقَعَ فِي نَفْسِي مِمَّا قَالُوا شِدَّةٌ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقِي فِي (إِذَا جَاءَكَ الْمُنَافِقُونَ) فَدَعَاهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، لِيَسْتَغْفِرَ لَهُمْ فَلَوَّوْا رُءُوسَهُمْ وَقَوْلُهُ (خُشُبٌ مُسَنَّدَةٌ) قَالَ: كَانُوا رِجَالاً، أَجْمَلَ شَيْءٍ
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৬৬. জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আবদুল্লাহ্ ইবনু উবাইকে দাফন করার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার (কবরের) নিকট এলেন এবং তাকে বের করলেন। অতঃপর তার উপর স্বীয় থুথু প্রক্ষেপ করলেন, আর নিজের জামাটি তাকে পরিয়ে দিলেন।
حديث جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ، بَعْدَ مَا دُفِنَ فَأَخْرَجَهُ، فَنَفَثَ فِيهِ مِنْ رِيقِهِ، وَأَلْبَسَهُ قَمِيصَهُ
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১২৬৯. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, ’আবদুল্লাহ্ ইবনু উবাই (মুনাফিক সর্দার)-এর মৃত্যু হলে তার পুত্র (যিনি সাহাবী ছিলেন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললেন, আপনার জামাটি আমাকে দান করুন। আমি সেটা দিয়ে আমার পিতার কাফন পরাতে ইচ্ছা করি। আর আপনি তার জানাযা পড়বেন এবং তার জন্য মাগফিরাত কামনা করবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জামাটি তাঁকে দিয়ে দিলেন এবং বললেনঃ আমাকে খবর দিও, আমি তার জানাযা আদায় করব। তিনি তাঁকে খবর দিলেন।
যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযা আদায়ের ইচ্ছা করলেন, তখন ’উমার (রাঃ) তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন, আল্লাহ্ কি আপনাকে মুনাফিকদের জানাযা আদায় করতে নিষেধ করেননি? তিনি বললেনঃ আমাকে তো দু’টির মধ্যে কোন একটি করার ইখ্তিয়ার দেয়া হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ (যার অর্থ) ’’আপনি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য মাগফিরাত কামনা করুন বা মাগফিরাত কামনা না-ই করুন (একই কথা) আপনি যদি সত্তর বারও তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন; কখনো আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন না-’’ (আত্তওবাঃ ৮০)। কাজেই তিনি তার জানাযা পড়লেন, অতঃপর নাযিল হলঃ (যার অর্থ) ’’তাদের কেউ মৃত্যুবরণ করলে আপনি তাদের জানাযা কক্ষণও আদায় করবেন না।’’(আত-তওবাঃ ৮৪)
حديث ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنهما أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ، لَمَّا تُوُفِّيَ، جَاءَ ابْنُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ أَعْطِنِي قَمِيصَكَ أُكَفِّنْهُ فِيهِ، وَصلِّ عَلَيْهِ، وَاسْتَغْفِرْ لَهُ فَأَعْطَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَمِيصَهُ فَقَالَ: آذِنِّي أُصَلِّي عَلَيْهِ فَآذَنَه فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَيْهِ، جَذَبَهُ عُمَرُ رضي الله عنه فَقَالَ: أَلَيْسَ اللهُ نَهَاكَ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَى الْمُنَافِقِينَ فَقَالَ: أَنَا بَيْنَ خِيْرَتَيْنِ قَالَ (اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّة، فَلَنْ يَغْفِرَ اللهُ لَهُمْ) فَصَلَّى عَلَيْهِ فَنَزَلَتْ (وَلاَ تصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا)
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৬৮. ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা’বার কাছে দু’জন কুরাইশী এবং একজন সাকাফী অথবা দু’জন সাকাফী ও একজন কুরাইশী একত্রিত হয়। তাদের পেটের মেদ ছিল অধিক; কিন্তু অন্তরে বুদ্ধি ছিল কম। তাদের একজন বলল, তোমাদের কী ধারণা, আমরা যা বলছি তা কি আল্লাহ্ শুনছেন? উত্তরে অপর এক ব্যক্তি বলল, আমরা যদি জোরে বলি, তাহলে তিনি শুনতে পান। আর যদি চুপে চুপে বলি, তাহলে তিনি শুনতে পান না। তৃতীয় ব্যক্তি বলল, আমরা জোরে বললে যদি তিনি শুনতে পান, তাহলে চুপে চুপে বললেও তিনি শুনতে পাবেন। তখন আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন, ’তোমাদের চোখ, কান এবং তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, এ থেকে তোমরা কখনো নিজেদের লুকাতে পারবে না..... (আয়াতের শেষ পর্যন্ত)।
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: اجْتَمَعَ عِنْدَ الْبَيْتِ قُرَشِيَّانِ وَثَقَفِيٌّ، أَوْ ثَقَفِيَّانِ وَقُرَشِيٌّ كَثِيرَةٌ شَحْمُ بُطُونِهِمْ قَلَيلَةٌ فِقْهُ قُلُوبِهِمْ فَقَالَ أَحَدُهُمْ: أَتُرَوْنَ أَنَّ اللهَ يَسْمَعُ مَا نَقُولُ قَالَ الآخَرُ: يَسْمَعُ إِنْ جَهَرْنَا، وَلاَ يَسْمَعُ إِنْ أَخْفَيْنَا وَقَالَ الآخَرُ: إِنْ كَانَ يَسْمَعُ إِذَا جَهَرْنَا، فَإِنَّهُ يَسْمَعُ إِذَا أَخْفَيْنَا فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلاَ أَبْصَارُكُمْ وَلاَ جُلُودُكُمْ) الآيةَ
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৬৯. যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে উহুদ যুদ্ধে যাত্রা করে তাঁর কতিপয় সাথী ফিরে আসলে একদল লোক বলতে লাগল, আমরা তাদেরকে হত্যা করব, আর অন্য দলটি বলতে লাগলো, না, আমরা তাদেরকে হত্যা করব না। এ সময়ই (তোমাদের হল কী, তোমরা মুনাফিকদের ব্যাপারে দু’দল হয়ে গেলে?) (সূরাহ আন-নিসা ৪/৮৮) আয়াতটি নাযিল হয়।
حديث زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أُحُدٍ، رَجَعَ ناسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَتْ فِرْقَةٌ: نَقْتُلُهُمْ وَقَالَتْ فِرْقَةٌ: لاَ نَقْتُلُهُمْ فَنَزَلَتْ (فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ)
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৭০. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে তিনি যখন যুদ্ধে বের হতেন তখন কিছু সংখ্যক মুনাফিক ঘরে বসে থাকত এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে যাওয়ার পর বসে থাকতে পারায় আনন্দ প্ৰকাশ করত। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসলে তাঁর কাছে শপথ করে ওজর পেশ করত, এবং যে কাজ করেনি সে কাজের জন্য প্রশংসিত হতে পছন্দ করত। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ (لاَ يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَفْرَحُونَ) “তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে”- (সূরাহ আলে ইমরান ৩/১৮৮)।
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه، أَنَّ رِجَالاً مِنَ الْمُنَافِقِينَ، عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْغَزْوِ، تَخَلَّفُوا عَنْهُ، وَفَرِحُوا بِمَقْعَدِهِمْ خِلاَفَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، اعْتَذَرُوا إِلَيْهِ، وَحَلَفُوا، وَأَحَبُّوا أَنْ يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوا فَنَزَلَتْ (لاَ يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَفْرَحُونَ) الآية
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৭১. ’আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস অবহিত করেছেন যে, মারওয়ান (রহঃ) তাঁর দারোয়ানকে বললেন, হে নাফি’! তুমি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বল, যদি প্রাপ্ত বস্তুতে আনন্দিত এবং করেনি এমন কাজ সম্পর্কে প্রশংসিত হতে আশাবাদী প্রত্যেক ব্যক্তিরই শাস্তি প্রাপ্য হয় তাহলে সকল মানুষই শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা তোমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় নয়। একদা নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহূদীদেরকে ডেকে একটা বিষয় জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাতে তারা সত্য গোপন করে বিপরীত তথ্য দিয়েছিল। এতদসত্ত্বেও তারা তাদের দেয়া উত্তরের বিনিময়ে প্রশংসা অর্জনের আশা করেছিল এবং তাদের সত্য গোপনের জন্যে আনন্দিত হয়েছিল।
তারপর ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) পাঠ করলেন- يَفْرَحُوْنَ بِمَآ أَتَوْا وَّيُحِبُّوْنَ أَنْ يُّحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا وَإِذْ أَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ ’’স্মরণ কর, যখন আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন আহলে কিতাবের, তোমরা মানুষের কাছে কিতাব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না। কিন্তু তারা সে প্রতিশ্রুতি নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল এবং তার পরিবর্তে নগণ্য বিনিময় গ্রহণ করল। সুতরাং তারা যা বিনিময় গ্রহণ করল কত নিকৃষ্ট তা! তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব থেকে পরিত্রাণ পাবে। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’’- (সূরা আলে ইমরান ৩/১৮৭-১৮৮)।
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ، أَنَّ مَرْوَانَ قَالَ لِبَوَّابِهِ: اذْهَبْ يَا رَافِعُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، فَقُلْ: لَئِنْ كَانَ كُلُّ امْرٍىءٍ فَرِحَ بِمَا أُوتِيَ، وَأَحَبَّ أَنْ يُحْمَدَ بِمَا لَمْ يَفْعَلْ مُعَذَّبًا، لَنُعَذَّبَنَّ أَجْمعُونَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاس: وَمَا لَكُمْ وَلِهذِهِ إِنَّمَا دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَهُودَ، فَسَأَلَهُمْ عَنْ شَيْءٍ، فَكَتَمُوهُ إِيَّاهُ، وَأَخْبَرُوهُ بِغَيْرِهِ فَأَرَوْهُ أَنْ قَدِ اسْتَحْمَدُوا إِلَيْهِ بِمَا أَخْبَرُوهُ عَنْهُ فِيمَا سَأَلَهُمْ وَفَرِحُوا بِمَا أُوتُوا مِنْ كِتْمَانِهِمْ ثُمَّ قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ (وَإِذْ أَخَذَ اللهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ) كَذلِكَ، حَتَّى قَوْلِهِ (يَفْرَحُونَ بِمَا أَتَوْا وَيُحِبُّونَ أَنْ يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلوا)
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৭২. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলিম হল এবং সূরাহ বাকারাহ ও সূরাহ আলে-ইমরান শিখে নিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সে ওহী লিখত। অতঃপর সে আবার খ্রিস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মাদ-কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ্ তাকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিস্টানরা তাকে দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এটা দেখে খ্রিস্টানরা বলতে লাগল- এটা মুহাম্মাদ এবং তার সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের হতে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদূর পারা যায় গভীর করে কবর খুঁড়ে তাকে আবার দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে আবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল, এটা মুহাম্মাদ ও তাঁর সাহাবীদের কাণ্ড। তাদের নিকট হতে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরো গভীর করে কবর খনন করে দাফন করল। পরদিন ভােরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে। তখন তারাও বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা লাশটি ফেলে রাখল।
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَجُلٌ نَصْرَانِيًّا فَأَسْلَمَ، وَقَرَأَ الْبَقَرَةَ، وَآلَ عِمْرَانَ فَكَانَ يَكْتُبُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَادَ نَصْرَانِيًّا فَكَانَ يَقُولُ: مَا يَدْرِي مُحَمَّدٌ إِلاَّ مَا كَتَبْتُ لَهُ فَأَمَاتَهُ اللهُ، فَدَفَنُوهُ، فَأَصْبَحَ وَقَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَقَالُوا: هذَا فِعْلُ مُحَمَّدٍ وَأَصْحَابِهِ لَمَّا هَرَبَ مِنْهُمْ، نَبَشُوا عَنْ صَاحِبنَا فَأَلْقَوْهُ فَحَفَرُوا لَهُ، فَأَعْمَقُوا فَأَصْبَحَ وَقَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَقَالُوا: هذَا فِعْلُ مُحَمَّدٍ وَأَصْحَابِهِ نَبَشُوا عَنْ صَاحِبِنَا لَمَّا هَرَبَ مِنْهُمْ فَأَلْقَوْهُ فَحَفَرُوا لَهُ، وَأَعْمَقُوا لَهُ فِي الأَرْضِ، مَا اسْتَطَاعُوا فَأَصْبَحَ قَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَعَلِمُوا أَنَّهُ لَيْسَ مِنَ النَّاسِ، فَأَلْقَوْهُ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/১. কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।
১৭৭৩. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন একজন খুব মোটা ব্যক্তি আসবে; কিন্তু সে আল্লাহর কাছে মশার পাশার চেয়ে ক্ষুদ্র হবে। তারপর তিনি বলেন, পাঠ করো, “কিয়ামত দিবসে তাদের কাজের কোন গুরুত্ব দিব না।
صفة القيامة والجنة والنار
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّهُ لَيَأْتِي الرَّجُلُ الْعَظِيمُ السَّمِينُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَزِنُ عِنْدَ اللهِ جَنَاحَ بَعُوضَةٍ وَقَالَ: اقْرَءُوا (فَلاَ نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا)
পরিচ্ছেদঃ ৫০/১. কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।
১৭৭৪. আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদী আলিমদের থেকে এক আলিম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরা (তাওরাতে দেখতে পাই যে, আল্লাহ্ তা’আলা আকাশসমূহকে এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন, যমীনকে এক আঙ্গুলের উপর, বৃক্ষসমূহকে এক আঙ্গুলের উপর, পানি ও কাঁদামাটি এক আঙ্গুলের উপর এবং অন্যান্য সৃষ্টি জগত এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন। তারপর বলবেন, আমিই বাদশাহ। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থনে হেসে ফেললেন; এমনকি তার সামনের দাঁত প্রকাশ হয়ে পড়ে। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেনঃ তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা দেয় না। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুষ্ঠিতে থাকবে, আর আকাশমণ্ডলী থাকবে ভাজ করা অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। মাহাত্ম তাঁরই, তারা যাদেরকে তাঁর শারীক করে তিনি তাদের বহু ঊর্ধ্বে। (সূরাহ যুমার: ৬৭)।
صفة القيامة والجنة والنار
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: جَاءَ حَبْرٌ مِنَ الأَحْبَارِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّا نَجِدُ أَنَّ اللهَ يَجْعَلُ السَّموَاتِ عَلَى إِصْبَعٍ، وَالأَرَضِينَ عَلَى إِصْبَعٍ، وَالشَّجَرَ عَلَى إِصْبَعٍ، وَالْمَاءَ وَالثَرَى عَلَى إِصْبَعٍ، وَسَائِرَ الْخَلاَئِقِ عَلَى إِصْبَعٍ فَيَقُولُ: أَنَا الْمَلِكُ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ، تَصْدِيقًا لِقَوْلِ الْحَبْرِ ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ، وَالأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَالسَّموَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ، سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/১. কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।
১৭৭৫. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ্ তা’আলা যমীনকে আপন মুঠোয় আবদ্ধ করবেন আর আকাশকে ডান হাত দিয়ে লেপটে দিবেন। এরপর তিনি বলবেনঃ “আমি বাদশাহ্, দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়?”
صفة القيامة والجنة والنار
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَقْبِضُ اللهُ الأَرْضَ، وَيَطْوِي السَّمَاءَ بَيَمِينِهِ، ثُمَّ يَقُولُ: أَنَا الْمَلِكُ، أَيْنَ مُلُوكُ الأَرْضِ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/১. কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।
১৭৭৬. ইবনু ’উমার (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন পৃথিবীটা তার মুঠোতে নিয়ে নেবেন। আসমানকে তাঁর ডান হাতে জড়িয়ে বলবেন; বাদশাহ্ একমাত্র আমিই।
صفة القيامة والجنة والنار
حديث ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنهما، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ اللهَ يَقْبِضُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الأَرْضَ، وَتَكُونُ السَّموَاتُ بِيَمِينِهِ، ثُمَّ يَقُولُ: أَنَا الْمَلِكُ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/২. পুনরুত্থান ও পুনর্জীবন এবং কিয়ামতের দিন যমীনের বর্ণনা।
১৭৭৭. সাহ্ল ইবনু সা’দ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মানুষকে এমন স্বচ্ছ শুভ্র সমতল যমীনের ওপর একত্রিত করা হবে সাদা গমের রুটি যেমন স্বচ্ছ-শুভ্র হয়ে থাকে। সাহ্ল বা অন্য কেউ বলেছেন, তার মাঝে কারও কোন কিছুর চিহ্ন বিদ্যমান থাকবে না।
في البعث والنشور وصفة الأرض يوم القيامة
حديث سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى أَرْضٍ بَيْضَاءَ عَفْرَاءَ كَقُرْصَةِ نَقِيٍّ لَيْسَ فِيهَا مَعْلَمٌ لأَحَدٍ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৩. জান্নাতীদের আপ্যায়ন।
১৭৭৮. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন একটি রুটি হয়ে যাবে। আর আল্লাহ্ তা’আলা বেহেশতীদের মেহমানদারীর জন্য তাকে স্বহস্তে তুলে নেবেন। যেমন আমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় তার রুটি হতে তুলে নেয়। এমন সময় একজন ইয়াহুদী এলো এবং বলল, হে আবুল কাসিম! দয়াময় আপনাকে বারাকাত প্রদান করুন। কিমতের দিন বেহেশতবাসীদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে কি জানাব না? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। লোকটি বলল, (সেই দিন) সমস্ত ভূ-মণ্ডল একটি রুটি হয়ে যাবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন (লোকটিও সেরূপই বলল)। এবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকালেন এবং হাসলেন। এমনকি তাঁর চোয়ালের দাঁতসমূহ প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেনঃ তবে কি আমি তোমাদেরকে (সেই রুটির) তরকারী সম্পর্কে বলব না? তিনি বললেনঃ তাদের তরকারী হবে বালাম এবং নুন। সাহাবাগণ বললেন, সে আবার কি? তিনি বললেনঃ ষাঁড় এবং মাছ। এদের কলিজার গুরদা থেকে সত্তর হাজার লোক খেতে পারবে।
نزل أهل الجنة
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَكُونُ الأَرْضُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ خُبْزَةً وَاحِدَةً يَتَكَفَّؤُهَا الْجَبَّارُ بِيَدِهِ، كَمَا يَكْفَأُ أَحَدُكُمْ خُبْزَتَهُ فِي السَّفَرِ، نُزُلاً لأَهْلِ الْجَنَّةِ فَأَتَى رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ، فَقَالَ: بَارَكَ الرَّحْمنُ عَلَيْكَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ أَلاَ أُخْبِرُكَ بِنُزُلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ: بَلَى قَالَ: تَكُونُ الأَرْضُ خُبْزَةً وَاحِدَةً كَمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَظَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْنَا، ثُمَّ ضَحِكَ، حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ ثُمَّ قَالَ: أَلاَ أُخْبِرُكَ بِإِدَامِهِمْ قَالَ: إِدَامُهُمْ بَالاَمٌ وَنُونٌ قَالُوا: وَمَا هذَا قَالَ: ثَوْرٌ وَنُونٌ، يَأْكُلُ مِنْ زَائِدَةِ كَبدِهِمَا سَبْعُونَ أَلْفًا
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৩. জান্নাতীদের আপ্যায়ন।
১৭৭৯. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যদি আমার উপর দশজন ইয়াহুদী ঈমান আনত তবে গোটা ইয়াহুদী সম্প্রদায়ই ঈমান আনত।
نزل أهل الجنة
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَوْ آمَنَ بِي عَشَرَةٌ مِنَ الْيَهُودِ لآمَنَ بِي الْيَهُودُ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৪. নাবী (ﷺ)-কে ‘রূহ’ সম্পর্কে ইয়াহুদীদের জিজ্ঞাসা ও আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ “তারা তোমাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।” (সূরাহ বানী ইসরাঈল ১৭/৮৫)।
১৭৮০. আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মদীনার বসতিহীন এলাকা দিয়ে চলছিলাম। তিনি একখানি খেজুরের ডালে ভর দিয়ে একদল ইয়াহুদীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা একজন অন্যজনকে বলতে লাগল, ’তাঁকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর। আর একজন বলল, তাকে কোন প্রশ্ন করো না, হয়ত এমন কোন জবাব দিবেন যা তোমরা পছন্দ করোনা। আবার কেউ কেউ বলল, ’তাকে আমরা প্রশ্ন করবই। অতঃপর তাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আবুল কাসিম! রূহ কী? আল্লাহর রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ করে রইলেন, আমি মনে মনে বললাম, তাঁর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। তাই আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। অতঃপর যখন সে অবস্থা কেটে গেল তখন তিনি বললেনঃ তারা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, রূহ আমার প্রতিপালকের আদেশের অন্তর্ভুক্ত। এবং তাদেরকে সামান্যই জ্ঞান দেয়া হয়েছে। (সূরাহ আল-ইসরা ১৭/৮৫)।
سؤال اليهود النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عن الروح وقوله تعالى يسئلونك عن الروح الآية
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: بَيْنَا أَنَا أَمْشِي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي خَرِبِ الْمَدِينَةِ، وَهُوَ يَتَوكَّأُ عَلَى عَسِيبٍ مَعَهُ فَمَرَّ بِنَفَرٍ مِنَ الْيَهُودِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: سَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ تَسْأَلُوهُ، لاَ يَجِيءُ فِيهِ بِشَيْءٍ تَكْرَهُونَهُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لَنَسْأَلَنَّهُ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَالَ: يَا أَبَا الْقَاسِمِ مَا الرُّوحُ فَسكَتَ فَقُلْتُ إِنَّهُ يُوحى إِلَيْهِ، فَقُمْتُ فَلَمَّا انْجَلَى عَنْهُ، فَقَالَ: وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৪. নাবী (ﷺ)-কে ‘রূহ’ সম্পর্কে ইয়াহুদীদের জিজ্ঞাসা ও আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ “তারা তোমাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।” (সূরাহ বানী ইসরাঈল ১৭/৮৫)।
১৭৮১. খাব্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহিলীয়াতের যুগে আমি কর্মকারের পেশায় ছিলাম। আস ইবনু ওয়াইলের কাছে কিছু পাওনা ছিল। আমি তার কাছে তাগাদা করতে গেলে সে বলল, যতক্ষণ তুমি মুহাম্মাদ-কে অস্বীকার না করবে ততক্ষণ আমি তোমাকে তোমার পাওনা দিব না। আমি বললাম, আল্লাহ তোমাকে মৃত্যু দিয়ে তারপর তোমাকে পুনরুত্থিত করা পর্যন্ত আমি তাঁকে অস্বীকার করব না। সে বলল, আমি মরে পুনরুত্থিত হওয়া পর্যন্ত আমাকে অব্যাহতি দাও। শীগগীরই আমাকে সম্পদ ও সন্তান দেয়া হবে, তখন আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করব। এ প্রসঙ্গে এ আয়াত নাযিল হলঃ “তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে আমাকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেয়া হবেই”- (সূরা মারইয়াম ১৯/৭৭–৭৮)।
سؤال اليهود النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عن الروح وقوله تعالى يسئلونك عن الروح الآية
حديث خَبَّابٍ قَالَ: كُنْتُ قَيْنًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ لِي عَلَى الْعَاصِ بْنِ وَائِلَ دَيْنٌ فَأَتَيْتُهُ أَتَقَاضَاهُ قَالَ لاَ أُعْطِيكَ حَتَّى تَكْفُرَ بِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: لاَ أَكْفُرُ حَتَّى يُمِيتَكَ اللهُ، ثُمَّ تُبْعَثَ قَالَ: دَعْنِي حَتَّى أَمُوتَ وَأُبْعَثَ، فَسَأُوتَى مَالاً وَوَلَدًا، فَأَقْضِيَكَ، فَنَزَلَتْ (أَفَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا، وَقَالَ لأُوتَيَنَّ مَالاً وَوَلَدًا أَطَّلَعَ الْغَيْبَ أَمِ اتَّخَذَ عِنْدَ الرَّحْمنِ عَهْدًا)
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৫. আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেন না যখন আপনি তাদের মধ্যে আছেন। (সূরা আনফাল ৮/৩৩)
১৭৮২. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেছেন, আবু জাহিল বলেছিল “হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” এরপর অবতীর্ণ হল- আর আল্লাহ্ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন। এমন অবস্থায় যে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে?” (সূরাহ আনফাল ৮/৩২–৩৪)।
في قوله تعالى وما كان الله ليعذبهم وأنت فيهم الآية
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ أَبُو جَهْلٍ: اللهُمَّ إِنْ كَانَ هذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِنَ السَّمَاءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ فَنَزَلَتْ (وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمُ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ) الآية
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৭. ধোঁয়া
১৭৮৩. মাসরূক (রহঃ) হতে বর্ণিত। ’আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, অবস্থা এ জন্য যে, কুরাইশরা যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাফরমানী করল, তখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে এমন দুর্ভিক্ষের দু’আ করলেন, যেমন দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ইউসুফ (আঃ)-এর সময়ে। তারপর তাদের উপর দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধার কষ্ট এমনভাবে আপতিত হ’ল যে, তারা হাড্ডি খেতে আরম্ভ করল। তখন মানুষ আকাশের দিকে তাকালে ক্ষুধার তাড়নায় তারা আকাশ ও তাদের মধ্যে শুধু ধোঁয়ার মত দেখতে পেত। এ সম্পর্কেই আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন, “অতএব তুমি অপেক্ষা কর সেদিনের, যেদিন স্পষ্ট ধূম্রাচ্ছন্ন হবে আকাশ এবং তা ছেয়ে ফেলবে মানব জাতিকে। এ হবে মর্মন্তদ মাস্তি।”
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট (কাফিরদের পক্ষ থেকে) এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! মুদার গোত্রের জন্য বৃষ্টির দুআ করুন। তারা তো ধ্বংস হয়ে গেল। তিনি রাসূল (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মুদার গোত্রের জন্য দুআ করতে বলছ। তুমি তো খুব সাহসী। তারপর তিনি বৃষ্টির জন্য দুআ করলেন এবং বৃষ্টি হল। তখন অবতীর্ণ হল, তোমরা তো তোমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। যখন তাদের সচ্ছলতা ফিরে এলো, তখন আবার নিজেদের আগের অবস্থায় ফিরে গেল। তারপর আল্লাহ্ নাযিল করলেন, "যেদিন আমি তোমাদের প্রবলভাবে পাকড়াও করব, সেদিন আমি আমাদের প্রতিশোধ নেই।" বর্ণনাকারী বলেন, অর্থাৎ বদর যুদ্ধের দিন।
الدخان
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: إِنَّمَا كَانَ هذَا، لأَنَّ قرَيْشًا لَمَّا اسْتَعْصَوْا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، دَعَا عَلَيْهِمْ بِسِنينَ كَسِنِي يُوسُفَ فَأَصَابَهَمْ قَحْطٌ وَجَهْدٌ حَتَّى أَكَلُوا الْعِظَامَ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَنْظُرُ إِلَى السَّمَاءِ، فَيَرَى مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا كَهَيْئَةِ الدُّخَانِ مِنَ الْجَهْدِ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى (فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ يَغْشى النَّاسَ هذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ) قَالَ: فَأُتِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ اسْتَسْقِ اللهَ لِمُضَرَ، فَإِنَّهَا قَدْ هَلَكَتْ قَالَ: لِمُضَرَ إِنَّكَ لَجَرِيءٌ فَاسْتَسْقَى، فَسُقُوا، فَنَزَلَتْ (إِنَّكُمْ عَائِدُونَ) فَلَمَّا أَصَابَتْهُمُ الرَّفَاهِيَةُ، عَادُوا إِلَى حَالِهِمْ، حِينَ أَصَابَتْهُمُ الرَّفَاهِيَةُ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَة الْكُبْرَى إِنَّا مُنْتَقِمُونَ) قَالَ: يَعْنِي يَوْمَ بَدْرٍ
পরিচ্ছেদঃ ৫০/৮. চন্দ্ৰ খণ্ডন।
১৭৮৪. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক।
انشقاق القمر
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: انْشَقَّ الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شِقَّتَيْنِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اشْهَدُوا