ইজমা সংঘটিত হওয়ার কিছু শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো :
১. বিশুদ্ধ পন্থায় ইজমা সাব্যস্ত হওয়া। এটি হতে পারে এভাবে যে, ইজমার বিষয়টি আলেমদের মাঝে সুপ্রসিদ্ধ থাকবে অথবা গভির জ্ঞানের অধিকারী কোন নির্ভরযোগ্য বিদ্বান ইজমার বিষয়টি বর্ণনা করবেন।
২. তার পূর্বে স্থায়ী কোন মতভেদ থাকবে না। যদি তার পূর্বে এরূপ মতভেদ থাকে, তাহলে সে বিষয়ে ইজমা সংঘটিত হবে না। কেননা, বিদ্বানদের মৃত্যুর কারণে তাঁদের অভিমত গুলো বাতিল হয়ে যায় না। সুতরাং ইজমা পূর্বের মতভেদকে উঠিয়ে দেয় না। তবে এটি নতুন করে মতভেদ সৃষ্টি করতে বাধা দেয়। উৎস শক্তিশালী হওয়ার কারণে এ মতটিই অগ্রগণ্য অভিমত।
এ ব্যাপারে এটিও বলা হয় যে, ইজমার ক্ষেত্রে এটি শর্ত নয়। (ইজমা সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বের মতভেদ না থাকা শর্ত নয়) কাজেই একাধিক অভিমত সমূহের মাঝে দ্বিতীয় যুগে এসে যে কোন একটি মতের উপর ইজমা সংঘটিত হতে পারে। ফলে ইজমা পরবর্তীদের উপর দলীল হিসেবে গণ্য হবে।
অধিকাংশ বিদ্বানদের মতানুসারে ইজমা সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে ইজমাকারীদের যুগের পরিসমাপ্তি ঘটা শর্ত নয়। কাজেই কোন যুগের অধিবাসীদের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র তাদের ঐক্যমত পোষণের মাধ্যমে ইজমা সংঘটিত হবে। পরবর্তিতে তাদের জন্য অথবা অন্যদের জন্য তার বিরুদ্ধাচারণ করা জায়েয নেই। কেননা, যেসব দীলল সমূহ ইজমার হুজ্জিয়্যাত বা প্রামাণ্যতার উপর প্রমাণ করে, তাতে যুগের পরিসমাপ্তির শর্তের উল্লেখ নেই। উপরন্তু এটি এ কারণে যে, ইজমা তাদের একমত হওয়ার সময়ই সংঘটিত হয়ে যায়। কাজেই পরবর্তীতে কোন জিনিস তাকে উঠিয়ে দিবে? যখন কোন মুজতাহিদ কোন কথা বলেন অথবা কোন কর্ম করেন এবং তা অন্যান্য মুজতাহিদগনের মাঝে প্রসিদ্ধ লাভ করে। তাঁরা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান বা প্রতিবাদ করেন না। এ ব্যাপারে বলা হয় যে, এটি ইজমা হিসাবে গণ্য হবে। আবার এটাও বলা হয় যে, এটি ‘হুজ্জত বা প্রামাণ্য’ হিসাবে গণ্য হবে; ইজমা হিসাবে নয়। এটাও বলা হয় যে, এটি প্রত্যাখ্যান করার আগেই তাদের জীবন কালের পরিসমাপ্তি ঘটলে তা ইজমা হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাদের যুগের পরিসমাপ্তি পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান না করে অব্যাহত ভাবে চুপ থাকা বিষয়টিতে তাদের সহমত পোষণ করার উপর প্রমাণ বহন করে। সুতরাং এ মতটি সত্যের অধিকতর নিকটবর্তী অভিমত।