ব্যভিচার একটি মারাত্মক অপরাধ। হত্যার পরই যার অবস্থান। কারণ, তাতে বংশ পরিচয় সঠিক থাকে না। লজ্জাস্থানের হিফাযত হয় না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সামাজিক সম্মান রক্ষা পায় না। মানুষে মানুষে কঠিন শত্রুতার জন্ম নেয়। দুনিয়ার সুস্থ পারিবারিক ব্যবস্থা এতটুকুও অবশিষ্ট থাকে না। একে অন্যের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাকে সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করে দেয়। এ কারণেই তো আল্লাহ্ তা‘আলা এবং তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্যার পরই এর উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إِلَـهًا آخَرَ، وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْـحَقِّ، وَلَا يَزْنُوْنَ، وَمَنْ يَّفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا، يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيْهِ مُهَانًا، إِلاَّ مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِـحًا، فَأُوْلَآئِكَ يُبَدِّلُ اللهُ سَيِّآتِهِمْ حَسَنَاتٍ، وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا»
‘‘আর যারা আল্লাহ্ তা‘আলার পাশাপাশি অন্য কোন উপাস্যকে ডাকে না। আল্লাহ্ তা‘আলা যাকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন যথার্থ (শরীয়ত সম্মত) কারণ ছাড়া তাকে হত্যা এবং ব্যভিচার করে না। যারা এগুলো করবে তারা অবশ্যই কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। কিয়ামতের দিন তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে এবং তারা ওখানে চিরস্থায়ীভাবে লাঞ্ছিতাবস্থায় থাকবে। তবে যারা তাওবা করে নেয়, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে; আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের পাপগুলো পুণ্য দিয়ে পরিবর্তন করে দিবেন। আল্লাহ্ তা‘আলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
(ফুর্কান : ৬৮-৭০)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أَيُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ؟ قَالَ: أَنْ تَدْعُوَ لِلهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ، قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَّطْعَمَ مَعَكَ، قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيْلَةِ جَارِكَ.
‘‘জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! কোন পাপটি আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বললো: অতঃপর কি? তিনি বললেন: নিজ সন্তানকে হত্যা করা ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। সে বললো: অতঃপর কি? তিনি বললেন: নিজ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা’’। (বুখারী ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; মুসলিম ৮৬)
আল্লাহ্ তা‘আলা কুর‘আন মাজীদে ব্যভিচারের কঠিন নিন্দা করেন। তিনি বলেন:
«وَلَا تَقْرَبُوْا الزِّنَا، إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَّسَآءَ سَبِيْلًا»
‘‘তোমরা যেনা তথা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না। কারণ, তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ’’। (ইস্রা’/বানী ইস্রা’ঈল্ : ৩২)
তবে এ ব্যভিচার মুহ্রিমা (যে মহিলাকে বিবাহ্ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম) এর সাথে হলে তা আরো জঘন্য। এ কারণেই আল্লাহ্ তা‘আলা বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ্ করা সম্পর্কে বলেন:
«وَلَا تَنْكِحُوْا مَا نَكَحَ أَبَآؤُكُمْ مِّنَ النِّسَآءِ إِلاَّ مَا قَدْ سَلَفَ، إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَّمَقْتًا، وَسَآءَ سَبِيْلًا»
‘‘তোমরা নিজেদের বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ্ করো না। তবে যা গত হয়ে গেছে তা আল্লাহ্ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয়ই তা অশ্লীল, অরুচিকর ও নিকৃষ্টতম পন্থা’’। (নিসা’ : ২২)
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা আমার চাচার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। তার হাতে ছিলো একখানা ঝান্ডা। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম: আপনি কোথায় যাচ্ছেন? তিনি বললেন:
بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ إِلَى رَجُلٍ نَكَحَ اِمْرَأَةَ أَبِيْهِ ؛ فَأَمَرَنِيْ أَنْ أَضْرِبَ عُنُقَهُ، وَآخُذَ مَالَهُ.
‘‘আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন এক ব্যক্তির নিকট পাঠিয়েছেন যে নিজ পিতার স্ত্রী তথা তার সৎ মায়ের সঙ্গে বিবাহ্ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন তার গর্দান কেটে দিতে এবং তার সম্পদ হরণ করতে’’। (আবূ দাউদ ৪৪৫৭; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৫৬)
মুহ্রিমাকে বিবাহ্ করা যদি এতো বড় অপরাধ হয়ে থাকে তা হলে তাদের সাথে ব্যভিচার করা যে কতো বড়ো অপরাধ হবে তা সহজেই বুঝা যায়।
আল্লাহ্ তা‘আলা লজ্জাস্থান হিফাযতকারীকে সফলকাম বলেছেন। এর বিপরীতে অবৈধ যৌন সংযোগকারীকে ব্যর্থ, নিন্দিত ও সীমালঙ্ঘনকারী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«قَدْ أَفْلَحَ الْـمُؤْمِنُوْنَ، الَّذِيْنَ هُمْ فِيْ صَلَاتِهِمْ خَاشِعُوْنَ، وَالَّذِيْنَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُوْنَ، وَالَّذِيْنَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُوْنَ، وَالَّذِيْنَ هُمْ لِفُرُوْجِهِمْ حَافِظُوْنَ، إِلاَّ عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُوْمِيْنَ، فَمَنِ ابْتَغَى وَرَآءَ ذَلِكَ فَأُوْلَآئِكَ هُمُ الْعَادُوْنَ»
‘‘মু’মিনরা অবশ্যই সফলকাম। যারা নামাযে অত্যন্ত মনোযোগী। যারা অযথা ক্রিয়া-কলাপ থেকে বিরত। যারা যাকাত দানে অত্যন্ত সক্রিয়। যারা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী। তবে যারা নিজ স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসীদের সঙ্গে যৌনকর্ম সম্পাদন করে তারা অবশ্যই নিন্দিত নয়। এ ছাড়া অন্য পন্থায় যৌনক্রিয়া সম্পাদনকারী অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী’’।
(মু’মিনূন : ১-৭)
আল্লাহ্ তা‘আলা কুর‘আন মাজীদে ব্যাপকভাবে মানব জাতির নিন্দা করেছেন। তবে যারা নিন্দিত নয় তাদের মধ্যে যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী অন্যতম।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَالَّذِيْنَ هُمْ لِفُرُوْجِهِمْ حَافِظُوْنَ، إِلاَّ عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُوْمِيْنَ، فَمَنِ ابْتَغَى وَرَآءَ ذَلِكَ فَأُوْلَآئِكَ هُمُ الْعَادُوْنَ»
‘‘আর যারা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী। তবে যারা নিজ স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসীদের সঙ্গে যৌনকর্ম সম্পাদন করে তারা অবশ্যই নিন্দিত নয়। এ ছাড়া অন্যান্য পন্থায় যৌনক্রিয়া সম্পাদনকারীরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী’’। (মা‘আরিজ : ২৯-৩১)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যৌনাঙ্গ হিফাযতকারীকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন।
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
يَا شَبَابَ قُرَيْشٍ! احْفَظُوْا فُرُوْجَكُمْ، لَا تَزْنُوْا، أَلَا مَنْ حَفِظَ فَرْجَهُ فَلَهُ الْـجَنَّةُ.
‘‘হে কুরাইশ যুবকরা! তোমরা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযত করো। কখনো ব্যভিচার করো না। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযত করতে পেরেছে তার জন্যই তো জান্নাত’’।
(সা’হীহুত্ তারগীবি ওয়াত্ তারহীবি, হাদীস ২৪১০)
সাহ্ল্ বিন্ সা‘আদ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ يَّضْمَنْ لِيْ مَا بَيْنَ لَـحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْـجَنَّةَ.
‘‘যে ব্যক্তি উভয় চোয়ালের মধ্যভাগ তথা জিহবা এবং উভয় পায়ের মধ্যভাগ তথা লজ্জাস্থান হিফাযত করার দায়িত্ব গ্রহণ করবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করবো’’। (বুখারী ৬৪৭৪)
আল্লাহ্ তা‘আলা শুধু যৌনকর্মকেই হারাম করেননি। বরং তিনি এরই পাশাপাশি সব ধরনের অশ্লীলতাকেও হারাম করেছেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ، وَالإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْـحَقِّ، وَأَنْ تُشْرِكُوْا بِاللهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا، وَأَنْ تَقُوْلُوْا عَلَى اللهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ»
‘‘(হে মুহাম্মাদ) তুমি ঘোষণা করে দাও: নিশ্চয়ই আমার প্রভু হারাম করে দিয়েছেন প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল ধরনের অশ্লীলতা, পাপকর্ম, অন্যায় বিদ্রোহ, আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা; যে ব্যাপারে তিনি কোন দলীল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহ্ তা‘আলা সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত কিছু বলা’’। (আ’রাফ্ : ৩৩)
আল্লাহ্ তা‘আলা যখন ব্যভিচারকর্মকে নিষেধ করে দিয়েছেন তখন তিনি সে সকল পথকেও নীতিগতভাবে রোধ করে দিয়েছেন যেগুলোর মাধ্যমে স্বভাবত: ব্যভিচারকর্ম সংঘটিত হয়ে থাকে। এ জন্যই আল্লাহ্ তা‘আলা পুরুষ ও মহিলা উভয় জাতিকে লজ্জাস্থান হিফাযতের পূর্বে সর্বপ্রথম নিজ দৃষ্টিকে সংযত করতে আদেশ করেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«قُلْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوْا مِنْ أَبْصَارِهِمْ، وَيَحْفَظُوْا فُرُوْجَهُمْ، ذَلِكَ أَزْكَى لَـهُمْ، إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ بِمَا يَصْنَعُوْنَ، وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ، وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ»
‘‘(হে মুহাম্মাদ) তুমি মু’মিনদেরকে বলে দাও: যেন তারা নিজ দৃষ্টিকে সংযত করে এবং নিজ লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্য প্রবিত্র থাকার সর্বোত্তম মাধ্যম। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের কর্ম সম্পর্কে অধিক অবগত। তেমনিভাবে তুমি মু’মিন মহিলাদেরকেও বলে দাও: যেন তারা নিজ দৃষ্টিকে সংযত করে এবং নিজ লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে’’। (নূর : ৩০-৩১)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:
«يَعْلَمُ خَآئِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِيْ الصُّدُوْرُ»
‘‘তিনিই চক্ষুর অপব্যবহার এবং অন্তরের গোপন বস্ত্ত সম্পর্কেও অবগত’’। (গাফির/মু’মিন : ১৯)
আল্লাহ্ তা‘আলা কাউকে অন্য কারোর ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। যাতে চক্ষুর অপব্যবহার না হয় এবং তা সম্পূর্ণরূপে রক্ষা পায়।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتًا غَيْرَ بُيُوْتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوْا وَتُسَلِّمُوْا عَلَى أَهْلِهَا، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ، فَإِنْ لَّمْ تَجِدُوْا فِيْهَآ أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوْهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ، وَإِنْ قِيْلَ لَكُمُ ارْجِعُوْا فَارْجِعُوْا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ، وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ»
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য কারো গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে প্রবেশ করো না। এটাই তো তোমাদের জন্য অনেক শ্রেয়। আশাতো তোমরা উক্ত উপদেশ গ্রহণ করবে। আর যদি তোমরা উক্ত গৃহে কাউকে না পাও তা হলে তোমরা তাতে একেবারেই প্রবেশ করো না যতক্ষণ না তোমাদেরকে তাতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। যদি তোমাদেরকে বলা হয়: ফিরে যাও, তা হলে তোমরা ফিরে যাবে। এটাই তো তোমাদের জন্য পবিত্র থাকার সর্বোত্তম মাধ্যম। আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের কর্ম সম্পর্কে বিশেষভাবে অবগত’’। (নূর : ২৭-২৮)
আল্লাহ্ তা‘আলা বিশেষভাবে মহিলাদেরকে অপর পুরুষ থেকে পর্দা করতে আদেশ করেছেন। যাতে পুরুষের লোভাতুর দৃষ্টি তার অপূর্ব সৌন্দর্যের উগ্র আকর্ষণ থেকে রক্ষা পায় এবং ক্রমান্বয়ে সে ব্যভিচারের দিকে ধাবিত না হয়।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ إِلاَّ مَا ظَهَرَ مِنْهَا، وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوْبِهِنَّ، وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ إِلاَّ لِبُعُوْلَتِهِنَّ أَوْ أَبَآئِهِنَّ أَوْ أَبَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَآئِهِنَّ أَوْ أَبْنَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِيْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِيْ أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَآئِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِيْنَ غَيْرِ أُوْلِيْ الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَـالِ، أَوِ الطِّفْلِ الَّذِيْنَ لَمْ يَظْهَرُوْا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَآءِ، وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّ، وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعًا أَيُّهَا الْـمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ»
‘‘মহিলারা যেন তাদের সৌন্দর্য (শরীরের সাথে এঁটে থাকা অলংকার বা আকর্ষণীয় পোষাক) প্রকাশ না করে। তবে যা স্বভাবতই প্রকাশ পেয়ে যায় (বোরকা, চাদর, মোজা ইত্যাদি) তা প্রকাশ পেলে কোন অসুবিধে নেই। তাদের ঘাড়, গলা ও বক্ষদেশ (চেহারা সহ) যেন মাথার ওড়না দিয়ে আবৃত রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইপো, বোনপো, স্বজাতীয় মহিলা, মালিকানাধীন দাস, যৌন কামনা রহিত অধীন পুরুষ, নারীদের গোপনাঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্য কারো নিকট নিজ সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তেমনিভাবে তারা যেন সজোরে ভূমিতে নিজ পদযুগল ক্ষেপণ না করে। কারণ, তাতে করে তাদের আভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য প্রকাশ পাবে। বরং হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহ্ তা‘আলার দিকে প্রত্যাবর্তন করো। তখনই তোমরা সফলকাম হতে পারবে’’। (নূর : ৩১)