সফর একটি কঠিন জিনিস। সফর ভীতি, কষ্ট ও উদ্বেগপূর্ণ সময়, ব্যস্ততা ও শঙ্কাময় কাল। তাই এই সময়কালে দয়াময় মহান আল্লাহ দয়াপূর্বক বান্দার উপর কিছু নামায হাল্কা করেছেন এবং এ মর্মে আরো অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দান করেছেন। তন্মধ্যে কসর ও জমা করে নামায পড়া অন্যতম।
সফরে ৪ রাকআত বিশিষ্ট ফরয নামাযকে ২ রাকআত কসর (সংক্ষেপ) করে পড়া সুন্নত ও আফযল। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,
(وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوْا مِنَ الصَّلاَةِ إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَّفْتِنَكُمُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا)
অর্থাৎ, যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে সফর কর, তখন তোমরা নামায সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই; যদি তোমরা এই আশংকা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে বিব্রত করবে। (কুরআন মাজীদ ৪/১০১)
বাহ্যত: উক্ত আয়াত থেকে যদিও এই কথা বুঝা যায় যে, কেবল ভয়ের সময় নামায কসর করা বৈধ, তবুও ভয় ছাড়া নিরাপদ সময়েও কসর করা যায়। মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-গণ ভয়-অভয় উভয় অবস্থাতেই কসর করেছেন বলে প্রমাণিত।
একদা হযরত য়্যা’লা বিন উমাইয়া (রাঃ) হযরত উমার (রাঃ)-কে বলেন, কি ব্যাপার যে, লোকেরা এখনো পর্যন্ত নামায কসর পড়েই যাচ্ছে, অথচ মহান আল্লাহ তো কেবল বলেছেন যে, “যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে সফর কর, তখন তোমরা নামায সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই; যদি তোমরা এই আশংকা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে বিব্রত করবে।” আর বর্তমানে তো ভীতির সে অবস্থা অবশিষ্ট নেই?
হযরত উমার (রাঃ) উত্তরে বললেন, যে ব্যাপারে তুমি আশ্চর্যবোধ করছ, আমিও সেই ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করে নবী (ﷺ)-এর নিকট এ কথার উল্লেখ করলে তিনি বললেন, “এটা তোমাদেরকে দেওয়া আল্লাহর একটি সদকাহ্। সুতরাং তোমরা তাঁর সদকাহ্ গ্রহণ কর।” (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্), মিশকাত ১৩৩৫নং)
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘মক্কাতে প্রথমে ২ রাকআত করে নামায ফরয করা হয়। অতঃপর নবী (ﷺ) যখন মদ্বীনায় হিজরত করে আসেন, তখন আরো ২ রাকআত করে নামায বৃদ্ধি করা হল। কেবল মাগরেবের নামায (৩ রাকআত) করা হল। কারণ, তা দিনের বিত্র। আর ফজরের নামাযও ২ রাকআত রাখা হল। কারণ, তার ক্বিরাআত লম্বা। কিন্তু নবী (ﷺ) যখন সফরে যেতেন, তখন তিনি ঐ প্রথমকার সংখ্যাই (মক্কায় ফরযকৃত ২ রাকআত নামাযই) পড়তেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, বায়হাকী, ইবনে মাজাহ্, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ)
মহানবী (ﷺ) প্রত্যেক সফরেই কসর করে নামায পড়েছেন এবং কোন নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়াত দ্বারা এ কথা প্রমাণিত নেই যে, তিনি কোন সফরে নামায পূর্ণ করে পড়েছেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমি নবী (ﷺ), আবূ বাক্র, উমার ও উসমান (রাঃ)-এর সাথে সফরে থেকেছি। কিন্তু কখনো দেখি নি যে, তাঁরা ২ রাকআতের বেশী নামায পড়েছেন।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১৩৩৮নং)
অবশ্য হযরত উসমান (রাঃ) তাঁর খেলাফতের শেষ দিকে মিনায় পূর্ণ (৪ রাকআত) নামায পড়েছেন। (বুখারী ১০৮২, মুসলিম, মিশকাত ১৩৪৭নং) তদনুরুপ মা আয়েশাও সফরে পূর্ণ নামায পড়তেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১৩৪৮নং) অবশ্য তাঁদের এ কাজের ব্যাখ্যা এই ছিল যে, প্রথমত: তাঁরা জানতেন, কসর করা সুন্নত; ওয়াজেব নয়। আর দ্বিতীয়ত: যাতে অজ্ঞ লোকেরা তাঁদের কসর করা দেখে মনে না করে বসে যে, যোহ্র, আসর ও এশার নামায মাত্র ২ রাকআত। (ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ২/৬৬৪-৬৫)
পক্ষান্তরে ফজর ও মাগরেবের নামাযে কসর নেই।
কুরআন মাজীদের উপর্যুক্ত আয়াতে বা কোন হাদীসে সেই সফরের কোন নির্দিষ্ট পরিমাপ বা দূরত্ব উল্লেখ হয়নি, যতটা দূরত্ব যাওয়ার পর নামায কসর করে পড়া বিধেয়। এই জন্য সঠিক এই যে, পরিভাষায় বা প্রচলিত অর্থে যাকে সফর বলা হয়, সেই সফরে নামায কসর করা চলবে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৪৯৭-৪৯৮)
সাহাবাদের মধ্যে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়। হযরত ইবনে আব্বাস ও ইবনে উমার (রাঃ) ৪৮ মাইল দূরে গিয়ে কসর করতেন এবং রোযা রাখতেন না। (বুখারী)
প্রকাশ থাকে যে, এই সফর পায়ে হেঁটে হোক অথবা উটের পিঠে, সাইকেলে হোক বা বাসে-ট্রেনে, পানি-জাহাজে হোক অথবা এরোপ্লেনে, কষ্টের হোক অথবা আরামের, বৈধ কোন কাজের জন্য হলে তাতে কসর বিধেয়। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ২০/১৫৭)
দূরবর্তী সফর থেকে যদি একদিনের ভিতরেই ফিরে আসে অথবা নিকটবর্তী সফরে ২/৩ দিন অবস্থান করে তবুও তাতে কসর-জমা চলবে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৪৯৯)
মহানবী (ﷺ) শহর বা জনপদ ছেড়ে বের হয়ে গেলেই কসর শুরু করতেন। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, ‘আমি নবী (ﷺ)-এর সাথে (মক্কা যাওয়ার পথে) মদ্বীনায় যোহরের ৪ রাকআত এবং (মদ্বীনা থেকে ৬ মাইল দূরে) যুল-হুলাইফায় গিয়ে আসরের ২ রাকআত পড়তাম।’ (বুখারী ১০৮৯নং, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান)
বলা বাহুল্য, সফর করতে শহর বা গ্রাম ত্যাগ করার পূর্ব থেকেই নামায কসর বা জমা করা চলবে না।
নামাযের সময় আসার পরেও সফর করলে পথে কসর করা বৈধ। অনুরুপ সফরে নামাযের সময় হওয়ার পরেও বাসায় ফিরে এলে পূর্ণ নামায পড়তে হবে। (লিকাউবাবিল মাফতূহ্, ইবনে উষাইমীন ৭৯পৃ:, আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫২৩)
সফরে বের হয়ে শহর ছেড়ে (শহরের বাইরে) বিমান-বন্দর, স্টেশন বা বাস-স্ট্যান্ডে কসর চলবে। সেখানে কসর করে নামায পড়ার পর যদি কোন কারণবশত: প্লেন বা গাড়ি না আসার ফলে বাড়ি ফিরতে হয়, তবুও ঐ কসর করা নামায আর ফিরিয়ে পড়তে হবে না। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫১৪)
সফরে বের হয়ে প্লেন বা গাড়ি যদিও মুসাফিরের গ্রাম বা শহরের উপর বা ভিতর দিয়ে যায়, তাহলেও তার ঐ বিমান-বন্দরে বা স্টেশনে বা বাস-স্ট্যান্ডে কসর করা চলবে। (ঐ ৪/৫৬৯)
সফরে গিয়ে নির্দিষ্ট দিন থাকার সংকল্প না হলে, বরং কাজ হাসিল হলেই ফিরে আসার নিয়ত হলে অথবা পথে কোন বাধা পড়লে যতদিন ঐ কাজ না হবে অথবা বাধা দূর না হবে ততদিন সফরে কসর করা চলবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪০৬-৪০৭)
মহানবী (ﷺ) এক সফরে ১৯ দিন ছিলেন এবং তাতে নামায কসর করেছেন। (বুখারী ১০৮০নং) হযরত আনাস (রাঃ) শাম দেশে ২ বছর ছিলেন এবং ২ বছরই নামায কসর করে পড়েছেন। (মালেক, মুঅত্তা ৩/৪৮৮, ফিকহুস সুন্নাহ্ ১/২৮৬)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ইবনে উমার (রাঃ) পথে বরফ থাকার ফলে আযারবাইজানে ৬ মাস আটক ছিলেন এবং তাতে কসর করে নামায পড়েছিলেন। (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ ২/৪৩৩৯, বায়হাকী ৩/১৫২)
কিছু সাহাবা রামাহুরমুযে ৭ মাস অবস্থান কালে কসর করে নামায পড়েছিলেন। (বায়হাকী ৫২৬৭নং) পক্ষান্তরে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে; ব্যবসা, চাকুরী, অধ্যয়ন প্রভৃতির জন্য বিদেশে থাকতে হলে তখন আর কসর চলবে না।
বাকী থাকল এত দিন সফরে থাকার নিয়ত করলে কসর চলবে এবং এত দিন করলে চলবে না, তো সে কথার উপযুক্ত দলীল নেই। ৪ কিংবা তার থেকে বেশী দিনের অবস্থান নিয়তে থাকলেও যতদিন তার কাজ শেষ না হয়েছে ততদিন মুসাফির মুসাফিরই; যতক্ষণ না সে স্থায়ীভাবে বসবাসের নিয়ত করেছে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫৩২-৫৩৯)
প্রকাশ থাকে যে, যারা ভাড়া গাড়ি চালায়, প্রত্যহ্ বাস, ট্রেন বা প্লেন চালায় তারাও মুসাফির। তাদের জন্যও নামায কসর করা বিধেয়। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ২২/১০৩)
মহানবী (ﷺ) সফরে সাধারণত: ফরয নামাযের আগে বা পরে সুন্নত নামায পড়তেন না। তবে বিত্র ও ফজরের সুন্নত তিনি সফরেও নিয়মিত পড়তেন। যেমন এর পূর্বেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বলা বাহুল্য, সফরে (বিত্র ও ফজরের আগে ২ রাকআত ছাড়া) সুন্নত (মুআক্কাদাহ) না পড়াই সুন্নত। হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) এক সফরে লোকেদেরকে ফরয নামাযের পর সুন্নত পড়তে দেখে বললেন, ‘যদি আমাকে সুন্নতই পড়তে হত, তাহলে ফরয নামায পুরা করেই পড়তাম। আমি নবী (ﷺ)-এর সাথে সফরে থেকেছি। আমি তাঁকে সুন্নত পড়তে দেখিনি।’ অতঃপর তিনি বললেন,
(لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ)
অর্থাৎ, নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (কুরআন মাজীদ ৩৩/২১) (বুখারী ১১০১নং, মুসলিম, সহীহ)
আমি নবী (ﷺ)-এর সাথে সফরে থেকেছি। তিনি ২ রাকআতের বেশী নামায পড়তেন না। অনুরুপ আবূ বাক্র, উমার ও উসমান (রাঃ)-ও করতেন।’ (বুখারী ১১০২নং, মুসলিম, মিশকাত ১৩৩৮নং)
তবে সফরে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ পড়া যাবে না এমন কথা নয়। যেহেতু মহানবী (ﷺ) কখনো কখনো কিছু কিছু সুন্নাতে মুআক্কাদাহ পড়তেন। (মিশকাত আলবানীর টীকা ১/৪২৩)অবশ্য সাধারণ নফল, তাহাজ্জুদ, চাশত, তাহিয়্যাতুল মাসজিদ প্রভৃতি নামায সফরে পড়া চলে। যেমন ফরয নামাযের আগে-পরেও নফলের নিয়তে নামায পড়া দূষণীয় নয়।
মক্কা বিজয়ের দিন উম্মেহানীর ঘরে তিনি চাশতের নামায পড়েছেন। (বুখারী) এ ছাড়া তিনি সফরে উটের পিঠে নফল ও বিত্র নামায পড়তেন। (বুখারী, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান)
মুসাফির ইমামতি করতে পারে এবং এ অবস্থাতেও সে কসর করে নামায পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে গৃহ্বাসী অমুসাফির মুক্তাদীরা মুসাফির ইমামের সালাম ফিরার পর সালাম না ফিরে উঠে বাকী নামায পূরণ করতে বাধ্য হবে। (লিকাউবাবিল মাফতূহ্, ইবনে উষাইমীন ৭/১৮)
অনুরুপ মুসাফির অমুসাফির ইমামের পিছনে নামায পড়তে পারে। আর এ ক্ষেত্রে সে ঐ ইমামের মতই পূর্ণ নামায পড়তে বাধ্য হবে। এমন কি ইমামের শেষের ২ রাকআতে জামাআতে শামিল হলেও মুসাফির বাকী ২ রাকআত একাকী আদায় করতে বাধ্য। এখানে ঐ ২ রাকআতকে কসর ধরে নিলে হবে না।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, মুসাফির একাকী নামায পড়লে ২ রাকআত, আর অমুসাফির ইমামের পশ্চাতে পড়লে ৪ রাকআত নামায পড়ে, তার কারণ কি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘এটাই হল আবুল কাসেম (ﷺ)-এর সুন্নত।’ (আহমাদ, মুসনাদ ১৮৬২, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম ১২৮৯৫নং)
তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘মক্কায় থেকে ইমামের সাথে জামাআতে নামায না পেলে কিভাবে নামায পড়ব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘দুই রাকআত আবুল কাসেম (ﷺ)-এর সুন্নত।’ (মুসলিম, সহীহ ৬৮৮নং, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ)
যদি কোন মুসাফির পথের কোন মসজিদে জামাআত চলতে দেখে এবং সে বুঝতে না পারে যে, ইমাম স্থানীয় বসবাসকারী, বিধায় পূর্ণ নামায পড়ার নিয়ত করে জামাআতে শামিল হবে, নাকি মুসাফির, বিধায় কসর করার নিয়তে শামিল হবে?
এমত অবস্থায় মুসাফির ইমামের আকার-আকৃতি ও সফরের চিহ্ন দেখে মোটামুটি আন্দাজ লাগাবে, ইমাম কি? এরপর যদি প্রবল ধারণা হয় যে, সে স্থায়ী বসবাসকারী, তাহলে পূর্ণ নামায পড়ার নিয়তে জামাআতে শামিল হবে।
পক্ষান্তরে যদি তার প্রবল ধারণা এই হয় যে, সে মুসাফির, তাহলে কসরের নিয়তে জামাআতে শামিল হবে।
কিন্তু সালাম ফিরার পর যদি বুঝতে পারে যে, ইমাম স্থানীয় বাসিন্দা এবং তার পিছনে যে ২ রাকআত নামায সে পড়েছে তা ইমামের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআত, তাহলে সে উঠে আরো ২ রাকআত পড়ে নিয়ে নামায পূর্ণ করবে। আর এর জন্য তাকে সিজদা-এ সাহও করতে হবে। এতে যদি সে মাঝে প্রকৃত জানার জন্য কথাও বলে থাকে তাতে কোন ক্ষতি হবে না। (মা-যা তাফআলু ফিলহা-লা-তিল আ-তিয়াহ্, মুহাম্মাদ সালেহ্ আল-মুনাজ্বিদ ১৬পৃ:)
পরন্তু যদি প্রবল ধারণায় কোন এক দিক বুঝা না যায়, তাহলে মুসাফির সম্ভাবনাময় নিয়ত করতে পারে। যেমন মনে এই সংকল্প করতে পারে, যদি ইমাম পূর্ণ নামায পড়ে তাহলে আমিও পূর্ণ পড়ব। নচেৎ, কসর পড়লে আমিও কসর পড়ব। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫২১)
জ্ঞাতব্য যে, মুসাফির নামাযে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহ্রীমা দেওয়ার পর যদি কসরের নিয়ত করে তাহলেও চলবে। পূর্ব থেকেই কসরের নিয়ত জরুরী নয়। (ঐ ৪/৫২৫)
প্রকাশ থাকে যে, মুসাফিরের জন্যও স্থানীয় জামাআতে শরীক হয়ে নামায পড়া উত্তম। অবশ্য সফরের পথে কোন ক্ষতির আশঙ্কা হলে ভিন্ন কথা। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ১২/৮৯)
মহানবী (ﷺ) বলেন, “যখন তুমি তোমার ঘর থেকে বের হওয়ার সংকল্প করবে, তখন দুই রাকআত নামায পড়; তোমাকে বাহির পথের সকল মন্দ থেকে রক্ষা করবে। আবার যখন তুমি তোমার ঘরে প্রবেশ করবে তখনও দুই রাকআত নামায পড়; তোমাকে প্রবেশ পথের সকল মন্দ থেকে রক্ষা করবে।” (বাযযার, বায়হাকী শুআবুল ঈমান, জামে ৫০৫নং)