ব্যবস্থাপনার ভাষায়, বিশেষ কোনও লক্ষ্য অর্জনের জন্য যখন কিছু ব্যক্তি একত্রিত হয় এবং ধারাবাহিকভাবে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থাকে তাকে সংগঠন (organisation) বলে।”
সংগঠনের উদ্দেশ্য হল, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা। সংগঠনের ফলে অনেক বড় বড় জটিল ও ব্যয়বহুল কাজ খুব সহজে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। কারণ এখানে দক্ষ ও উপযুক্ত জনশক্তির মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয় এবং উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সম্মিলিত শ্রম, দক্ষতা, জ্ঞান-বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা, কলাকৌশল, অর্থ ইত্যাদি কাজে লাগানো হয়।
সুতরাং পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দাওয়াতি কাজের ক্ষেত্রে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করা জায়েজ। বিজ্ঞ আলেমদের মতে, আল্লাহ ভীতি ও সৎ কর্মে পারস্পারিক সাহায্য-সহযোগিতা, মানুষের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে সংগঠন করা কল্যাণকর এবং এর পর্যাপ্ত উপকারিতা রয়েছে।
কিন্তু যারা সংগঠন করাকে ‘ফরজ’ বলেছেন তারা ভুলের উপরে প্রতিষ্ঠিত। তারা মুসলিমদের জামাআত এবং আমিরের আনুগত্য সংক্রান্ত হাদিসগুলোকে স্পষ্টই অপব্যাখ্যা করছে। কেননা হাদিসে বর্ণিত জামাআত দ্বারা উদ্দেশ্য, আল্লাহর কিতাব ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণকারী এবং শরিয়তের পাবন্দ মুসলিমগণ। তারা পৃথিবীর যে প্রান্তেই অবস্থান করুক না কেন। তাদের সংখ্যা কম বা বেশি যাই হোক না কেন। এমনকি চতুর্দিকে ফিতনা-ফ্যাসাদের সময় একজন ব্যক্তিও যদি আল্লাহর দীনকে আঁকড়ে থাকে তাকেও ‘জামাআত’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আর আমির দ্বারা উদ্দেশ্য মুসলিম শাসক এবং তার প্রতিনিধি; তথাকথিত সংগঠনের আমির নয়।
"যারা সংগঠন করবে না তারা মসজিদে যেন না আসে" এমন বক্তব্য মানুষকে আল্লাহর ঘর থেকে বাধা দেওয়ার নামান্তর-যা স্পষ্টতই জুলুম এবং হারাম। আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللَّهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ وَسَعَىٰ فِي خَرَابِهَا
“আর তার চাইতে কে বড় জালিম (অত্যাচারী) আর কে আছে যে, আল্লাহর মসজিদ সমূহে আল্লাহর নামের জিকির করতে বাধা প্রদান করে আর সেগুলোর ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে?” [সূরা: বাকারা: ১১৪]
আল্লাহ তাআলা মুসলিম সমাজে জাহেলদেরকে 'সাংগঠনিক জাহেলিয়াত' থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
কোনও কথিত ইসলামি সংগঠন (চাই সুন্নাহ পন্থী হোক বা বিদআত পন্থী হোক) অথবা পীরের হাতে বাইয়াত করা বিদআত। বিশেষ কোনও তরিকার পীরের নিকট বাইয়াত গ্রহণ হল, ভ্রান্ত সুফিবাদি বিদআতি বাইয়াত আর কথিত ইসলামি সংগঠনের আমির বা সংগঠনের কোনও দায়িত্বশীলের নিকট বাইয়াত নেওয়া হল, আধুনিক বিদআত।
কেউ অজ্ঞতা বশত তা করে থাকলে তার জন্য তা প্রত্যাখ্যান করা/ভঙ্গ করা জরুরি। কারণ বিদআতি কাজের উপরে স্থির থাকা জায়েজ নাই। কেননা ইসলামি শরিয়তে বাইয়াতের একমাত্র হকদার হচ্ছে, ওলিউল আমর তথা মুসলিম শাসক বা তার পক্ষ থেকে তার নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি আল্লামা আব্দুল আজিজ বিন বায রহ. বলেন, ওলিউল আমর (মুসলিম শাসক) ছাড়া আর কারও নিকট বাইয়াত নেওয়ার কোনও ভিত্তি আছে বলে আমাদের জানা নেই।
فلا نعلم أصلًا لهذه البيعة، إلا ما يحصل لولاة الأمور، فإن الله شرع سبحانه أن يبايع ولي الأمر على السمع والطاعة في المنشط والمكره والعسر واليسر، وفي الأثرة على المبايع، كما بايع الصحابة وأرضاهم نبينا -عليه الصلاة والسلام- فالبيعة تكون لولاة الأمور على مقتضى كتاب الله وسنة رسوله -عليه الصلاة والسلام- وأن يقولوا بالحق أينما كانوا، وألا ينازعوا الأمر أهله، إلا أن يروا كفرًا بواحًا عندهم من الله فيه برهان.
أما بيعة الصوفية بعضهم لبعض فلا أعلم لها أصلًا، وهذا قد يسبب مشاكل، فإن البيعة قد يظن المبايع أنه يلزم المبايع طاعته في كل شيء، حتى ولو قال بالخروج على ولاة الأمور، وهذا شيء، شيء منكر لا يجوز.
তবে যদি আল্লাহর নামে কসম করা হয়ে থাকে তাহলে কসম ভঙ্গ করার জন্য কাফফারা দেওয়া জরুরি। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।
এ বাক্যটি মারাত্মক ভ্রান্ত ও ইমান বিধ্বংসী কুফরি কথা।
নিম্নে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো: و بالله التوفيق
প্রথমত: তকদিরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা হলো, ঈমানের ছয়টি রোকনের একটি। এ ছাড়া ইমানের দাবী করার সুযোগ নাই। এ ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে পর্যাপ্ত দলিল এসেছে। আর তকদিরের উপর ইমানের অন্তর্গত হলো এ কথায় বিশ্বাস স্থাপন করা যে, আল্লাহ রব্বুল আলামিন আসমান-জমিন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বেই সবকিছুর তকদির লিপিবদ্ধ করেছেন।
যেমন: হাদিসে এসেছে,
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
إنَّ اللَّهَ قدَّرَ مقاديرَ الخلائقِ قبلَ أن يخلقَ السَّمواتِ والأرضَ بخمسينَ ألفَ سنةٍ
‘‘আল্লাহ তা‘আলা আসমান-জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সমস্ত সৃষ্টির তকদির লিপিবদ্ধ করেছেন।” [সহীহ বুখারী, হা/৩১৯১]
সুতরাং বান্দার তকদির লেখার আগে মহান আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন-এটা মারাত্মক ভ্রান্ত ও ইমন বিধ্বংসী কথা। কারণ মহান আল্লাহ তার সকল কর্মে স্বাধীন। তিনি যা ইচ্ছে তাই করেন। তিনি কাউকে জিজ্ঞাসা করে তকদির লিখেন না। এটা তার বড়ত্ব, মর্যাদা ও শানের খেলাফ। বরং সবকিছুই সেভাবেই সংঘটিত হয় যেভাবে তিনি তকদিরে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং যখন যেভাবে চান। এর ব্যতিক্রম হওয়া সম্ভব নয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَعَّالٌ لِمَا يُرِيدُ
“তিনি যা চান তাই করেন’’ [সূরা বুরুজ: ১৫]
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ত্বহাবি বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা যখন যা ইচ্ছা তাই করেন। فعال لما يريد এর মধ্যে ما শব্দটি সাধারণ মাওসুলা। এর অর্থ হলো, আল্লাহ তাআলা যা করার ইচ্ছা করেন তা সবই করেন। তার কাজের সাথে সম্পৃক্ত ইচ্ছার ব্যাপারে এ কথা। তার যে ইচ্ছা বান্দার কাজের সাথে সম্পৃক্ত, তার জন্য রয়েছে আরেক অবস্থা। বান্দা থেকে তিনি যে কাজ সম্পাদিত হওয়ার ইচ্ছা করেন, কিন্তু নিজের পক্ষ হতে বান্দাকে যদি উক্ত কাজ করতে সাহায্য না করেন এবং বান্দাকে কর্ম বাস্তবায়ন কারী না বানান তাহলে সে কাজ সংঘটিত হয় না। যদিও তিনি শরিয়ত গত দিক থেকে তার ইচ্ছা করেন। কিন্তু বান্দাকে কর্ম সম্পাদনকারী না বানানো পর্যন্ত সে কাজ সংঘটিত হয় না।” [শারহুল আক্বীদা আত্-ত্বহাবীয়া, অধ্যায়: ১৪. সৃষ্টি করার পর তার গুণবাচক নাম খালিক (সৃষ্টিকর্তা) হয়নি এবং সৃষ্টি জগৎ উদ্ভাবন করার কারণে তার গুণবাচক নাম উদ্ভাবক হয়নি (لَيْسَ بَعْدَ خَلْقِ الْخَلْقِ اسْتَفَادَ اسم الْخَالِق وَلَا بِإِحْدَاثِهِ الْبَرِيَّةَ اسْتَفَادَ اسم الْبَارِي)- ইমাম ইবনে আবিল ইয আল হানাফি রাহ.]
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ
“তিনি যা করেন সে সম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে।” [সূরা আম্বিয়া: ২৩]
হাদিসে এসেছে, আবুল আসওয়াদ দুআলী রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রখ্যাত সাহাবি ইমরান ইবনে হুসাইন রা. আমাকে বললেন,
أَرَأَيْتَ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ الْيَوْمَ وَيَكْدَحُونَ فِيهِ أَشَىْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضَى عَلَيْهِمْ مِنْ قَدَرِ مَا سَبَقَ أَوْ فِيمَا يُسْتَقْبَلُونَ بِهِ مِمَّا أَتَاهُمْ بِهِ نَبِيُّهُمْ وَثَبَتَتِ الْحُجَّةُ عَلَيْهِمْ فَقُلْتُ بَلْ شَىْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضَى عَلَيْهِمْ قَالَ فَقَالَ أَفَلاَ يَكُونُ ظُلْمًا قَالَ فَفَزِعْتُ مِنْ ذَلِكَ فَزَعًا شَدِيدًا وَقُلْتُ كُلُّ شَىْءٍ خَلْقُ اللَّهِ وَمِلْكُ يَدِهِ فَلاَ يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ . فَقَالَ لِي يَرْحَمُكَ اللَّهُ إِنِّي لَمْ أُرِدْ بِمَا سَأَلْتُكَ إِلاَّ لأَحْزُرَ عَقْلَكَ إِنَّ رَجُلَيْنِ مِنْ مُزَيْنَةَ أَتَيَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ الْيَوْمَ وَيَكْدَحُونَ فِيهِ أَشَىْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضَى فِيهِمْ مِنْ قَدَرٍ قَدْ سَبَقَ أَوْ فِيمَا يُسْتَقْبَلُونَ بِهِ مِمَّا أَتَاهُمْ بِهِ نَبِيُّهُمْ وَثَبَتَتِ الْحُجَّةُ عَلَيْهِمْ فَقَالَ " لاَ بَلْ شَىْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضَى فِيهِمْ وَتَصْدِيقُ ذَلِكَ فِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ :( وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا - فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا) "
“আজকাল লোকেরা যে সব আমল করে এবং যে কষ্ট করে, সে সম্পর্কে তোমার বক্তব্য কী? তা কি এমন কিছু যা তাদের উপর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং ভাগ্যলিপি দ্বারা তাদের উপর পূর্ব নির্ধারিত? নাকি ভবিষ্যতে তারা করবে যা তাদের কাছে তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেন এবং যাদের উপর দলিল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
তখন আমি বললাম, “বরং ব্যাপারটি তো তাদের উপর অতীতে নির্ধারিত হয়ে গেছে।”
বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি (ইমরান রা.) বললেন, তাহলে তা কি জুলুম হবে না?
তিনি বললেন, এতে আমি খুবই ঘাবড়ে গেলাম এবং বললাম, প্রতিটি বস্তুই আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর ক্ষমতার অধীন। সুতরাং তিনি যা করেন, সে বিষয়ে কেউ তাকে প্রশ্ন করতে পারবে না বরং তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে।
এরপর তিনি (ইমরান রা.) আমাকে বললেন, আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন। আমি তোমাকে প্রশ্ন করে তোমার জ্ঞানের (ইলমের যথার্থতা) উপলব্ধি অনুমান করতে চেয়েছিলাম।
মুযায়না গোত্রের দুজন লোক রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রসুলাল্লাহ! লোকেরা বর্তমানে যে সব আমল করে এবং কষ্ট-পরিশ্রম করে, সেগুলো কি তাদের জন্য ফয়সালা হয়ে গিয়েছে, আগেই তকদির দ্বারা নির্ধারিত নাকি ভবিষ্যতে তারা সে সব আমল করবে, যা তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে নিয়ে এসেছে এবং তাদের উপর দলিল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
তখন তিনি বললেন, না বরং বিষয়টি তাদের জন্য আগেই ফয়সালা হয়ে গেছে এবং সু সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আল্লাহর কিতাবে তার প্রমাণ। (আল্লাহ বলেন,)
وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا
"আর কসম মানুষের এবং তার, তিনি তাকে সুঠাম করেছেন, এরপর তাকে তিনি পাপ-পুণ্যের জ্ঞান দান করেছেন।" [সূরা শামস: ৭ ও ৮]
[সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৪৮/ তকদির, পরিচ্ছেদ: ১. মাতৃ উদরে মানুষ সৃষ্টির অবস্থা (ক্রমধারা), তার রিজিক, মৃত্যু, আমল এবং তার দুর্ভাগ্য ও তার সৌভাগ্য লিপিবদ্ধকরণ]
দ্বিতীয়ত: বান্দা কি নিজে নিজে আত্মসম্মান নিয়ে আসতে পারে আল্লাহ যদি তা তার আগে থেকেই তার তকদির লিপিবদ্ধ করে না রাখেন? তাহলে এমন কথা কি তকদিরের পূর্বে বান্দার কাজ করার ক্ষমতা প্রমাণিত হয় না? সুতরাং নিঃসন্দেহে এ কথা তকদিরের প্রতি ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক। মোটকথা উক্ত কথাটি ঈমান পরিপন্থী ও কুফরি মূলক কথা। এতে কোন সন্দেহ নেই।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদেরকে গোমরাহি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।