২. ১২. ১০. সাধু মথির মতানুসারে ঈসা মাসীহের পবিত্র ইঞ্জিল

আমরা দেখেছি যে, মথির ইঞ্জিল পুস্তকটার নাম ‘সাধু মথির মত অনুসারে যীশু খ্রিষ্টের পবিত্র ইঞ্জিল’, অথবা সংক্ষেপে ‘মথির মতানুসারে ইঞ্জিল’ (The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. Matthew/ The Gospel According To St. Matthew)। আমরা পূর্বের অনুচ্ছেদে দেখলাম যে, পুস্তকটা সাধু মথি লেখেছেন বলে পুস্তকটার কোথাও সামান্যতম উল্লেখ বা ইঙ্গিত নেই। পুস্তকটা মূলত বেনামি বা লেখকের নামবিহীন। তবে খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা এটাকে মথির লেখা বলে মনে করেছেন। এ প্রসঙ্গে ৪র্থ শতাব্দীর ধর্মগুরু ইউসিবিয়াস (Eusebius of Caesarea: 260-340) তৃতীয় শতকের প্রসিদ্ধ ধর্মগুরু ওরিগন (Origen: circa 185- 254) থেকে নিম্নের বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন:

“The first is written according to Mathew, the same that was once a publican, but afterword an apostle of Jesus Christ, who having published it for the Jewish converts, wrote in in the Hebrew.”

‘‘প্রথম হল মথির মতানুসারে লিখিত, যে মথি প্রথমে কর-সংগ্রাহক ছিলেন এবং পরে যীশু খ্রিষ্টের শিষ্য হন। তিনি এটাকে হিব্রু ভাষায় রচনা করেছিলেন; তিনি এটা রচনা করেছিলেন ইহুদি ধর্ম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া মানুষদের জন্য।’’[1]

এ প্রসঙ্গে গবেষক জীন কারমিগন্যাক (Jean Carmignac) বলেন: "Eight early writers assert that Matthew wrote his Gospel in Hebrew: altogether there are over thirty formal assertions that this was so in the works of Papias, Hegesippus, Irenaeus, Origen, Eusebius of Caesarea, Cyril of Jerusalem, Epiphanius and Jerome"

‘‘মথির ইঞ্জিল হিব্রু ভাষায় রচিত হওয়ার বিষয়ে ত্রিশেরও বেশি আনুষ্ঠানিক ও বিধিবদ্ধ নিশ্চয়তা রয়েছে। এর মধ্যে আটজন প্রাচীন লেখক সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, মথি হিব্রু ভাষায় ইঞ্জিলটা লেখেন। এরা হলেন: প্যাপিয়াস, হেজেসিপাস, ইরানিয়াস, ওরিগন, কাইসারিয়ার ইউসিবিয়াস, জেরুজালেমের সিরিল, এপিফানিয়াস এবং জিরোম।’’[2]

আধুনিক গবেষকরা প্রাচীন সকল ধর্মগুরু ও পণ্ডিতের মত ভিত্তিহীন ও বাতিল বলে গণ্য করেছেন। কারণ, মথির ইঞ্জিল নামে প্রচলিত এ পুস্তকটার চুলচেরা অধ্যয়ন নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে যে, (১) এটার লেখক মথি নন, বরং অজ্ঞাত পরিচয় এবং (২) এটা হিব্রু ভাষায় রচিত নয়, বরং মূলতই গ্রিক ভাষায় রচিত। আধুনিক গবেষকদের মতে প্রাচীন ধর্মগুরুরা দু’টা কারণে এ ভুলটা করেছিলেন:

প্রথমত: দ্বিতীয় শতকের ধর্মগুরু পা্যাপিয়াসের একটা বক্তব্য ভুল বুঝা। প্যাপিয়াস বলেন: “Matthew recorded in the Hebrew language the words [of Jesus], and everyone interpreted them as he is able.”

‘‘মথি হিব্রু ভাষায় (যীশুর) বক্তব্যমালা সংকলন করেন। আর প্রত্যেকে যে যেভাবে পেরেছে তার অনুবাদ করেছে।’’[3]

দ্বিতীয়ত: মথির সুসমাচারের মধ্যে যীশুর লেভি নামক শিষ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘মথি’ নামকরণ করা হয়েছে। এ থেকে প্রাচীনগণ অনুমান করেছেন যে, এটাই বোধহয় প্যাপিয়াস কথিত মথির পুস্তক।

বস্ত্তত, দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরু থেকে অগণিত তথাকথিত ‘ইঞ্জিল’ প্রচারিত হতে থাকে। দ্বিতীয় শতকের শেষ দিক থেকে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা এগুলোর মধ্য থেকে নির্ভরযোগ্য ইঞ্জিল বাছাইয়ের চেষ্টা শুরু করেন। এ সকল ইঞ্জিল মূলত বেনামি। লেখকের কোনো পরিচয় জানা যায় না। বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক সূত্র থেকে তারা এগুলোর লেখকের পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। তাদের সামনে ছিল উপরের দুটো তথ্য। এ দুটো তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা এ বেনামি ‘ইঞ্জিল’টাকে মথির ইঞ্জিল বলে ধারণা করলেন। তারা নিশ্চিত করলেন যে, এটা হিব্রু ভাষায় রচিত। তবে কেউই বলতে পারলেন না যে, তারা মূল হিব্রু পুস্তকটা বা তার সামান্য কোনো অংশ নিজে দেখেছেন। বর্তমান যুগ পর্যন্ত বাইবেলের হাজার হাজার পাণ্ডুলিপির মধ্যে মথি বা নতুন নিয়মের অন্য কোনো পুস্তকের হিব্রু পাণ্ডুলিপির একটা সামান্য টুকরো বা ভগ্নাংশ কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এর পাশাপাশি প্রচলিত ‘মথি’ পুস্তকের বক্তব্য চুলচেরা অধ্যয়ন করে আধুনিক গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, প্রাচীন ধর্মগুরুরা ভুল বুঝেছিলেন। লেভির নাম মথিতে পরিণত করা এ পুস্তকটার মথির রচিত হওয়ার কোনোই প্রমাণ নয়। প্যাপিয়াস মথির নামে প্রচলিত এ ইঞ্জিলটার কথা বলেননি। প্যাপিয়াস নিজে মথির কর্ম দেখেননি। তিনি মথির রচনার কথা শুনে ও বিশ্বাস করে বলেছেন। আর তিনি ‘যীশু খ্রিষ্টের বাণী’ সংকলনের কথা বলেছেন। কিন্তু প্রচলিত ‘মথির ইঞ্জিল’ পুস্তকটা বাণী সংকলন নয়; বরং বিস্তারিত জীবনী সংকলন। কাজেই ‘মথি সংকলিত হিব্রু বাণী সংকলন’ বলতে প্যাপিয়াস মূল হিব্রু ইঞ্জিলের কোনো সংস্করণের কথা বলেছেন। সে পুস্তকটা যে যেভাবে পেরেছে অনুবাদ করেছে। আর প্রচলিত ‘মথির সুসমাচার’ পুস্তকটা এ সময়ের পরে এ সকল বিভিন্ন অনুবাদ, মৌখিক বর্ণনা ও গল্পকাহিনী সংকলন করে লেখা। প্রচলিত এ সুসমাচারটা মূলতই গ্রিক ভাষায় রচিত এবং গ্রিকভাষীদের জন্যই রচিত।

এ প্রসঙ্গে এনকার্টা বিশ্বকোষের বক্তব্য নিম্নরূপ:

Early Christian writers believed this book to be the earliest of the synoptic Gospels (hence its position at the beginning of the New Testament) and attributed it to Saint Matthew, one of the 12 apostles. They believed that he wrote the Gospel in Palestine, just prior to the destruction of Jerusalem in 70. Although this opinion is still held by some, most scholars consider the Gospel According to Mark the earliest Gospel. They believe, on the basis of both external and internal evidence, that the author of Matthew used Mark as one of his two major sources and a hypothetical collection of Jesus' sayings called Q (from Quelle, German for “source”) as the second. They doubt, moreover, that the apostle Matthew wrote the book. ... The commonly accepted time of composition is sometime after 70, perhaps about 80.

‘‘প্রাচীন খ্রিষ্টান লেখকরা বিশ্বাস করতেন যে, এ পুস্তকটা সিনপটিক (প্রথম তিন) গসপেলগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম (এজন্যই তার অবস্থান নতুন নিয়মের শুরুতে) এবং এটা দ্বাদশ প্রেরিতের একজন ‘সাধু মথি’-র নামে আরোপিত হত। তারা বিশ্বাস করতেন যে, এটা ফিলিস্তিনে রচিত এবং ৭০ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম ধ্বংস হওয়ার আগে রচিত। যদিও এখনো কেউ কেউ এরূপ মত লালন করেন, তবে প্রায় সকল গবেষক মার্কের মতানুসারে ইঞ্জিলটাকেই প্রাচীনতম ইঞ্জিল বলে গণ্য করেন। বাহ্যিক-পারিপার্শ্বিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়বিধ প্রমাণের ভিত্তিতে তারা বিশ্বাস করেন যে, মথির ইঞ্জিলের লেখক দু’টা মূল উৎসের উপর নির্ভর করে এ গ্রন্থটা রচনা করেন, একটা মার্কের ইঞ্জিল এবং অন্যটা যীশুর বাণীসংকলন যা ‘কিউ’ (জার্মান কুয়েল ‘উৎস’ থেকে গৃহীত) নামে আখ্যায়িত। উপরন্তু পুস্তকটা শিষ্য মথির লিখিত হওয়ার বিষয়ে তারা সন্দিহান। ... পুস্তকটার রচনাকাল বিষয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সময় হল ৭০ খ্রিষ্টাব্দের পরে, এবং সম্ভবত ৮০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে।’’[4]

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় biblical literature/ new testament canon প্রবন্ধে The Gospel According to Matthew প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:

Although there is a Matthew named among the various lists of Jesus' disciples, more telling is the fact that the name of Levi, the tax collector who in Mark became a follower of Jesus, in Matthew is changed to Matthew. It would appear from this that Matthew was claiming apostolic authority for his Gospel through this device but that the writer of Matthew is probably anonymous.....

Matthew is not only an original Greek document, but its addressees are Greek-speaking Gentile Christians. By the time of the Gospel According to Matthew, there had been a relatively smooth and mild transition into a Gentile Christian milieu. ... For Matthew, there had already been a separation of Christianity from its Jewish matrix. ... The Matthean church is conscious of its Jewish origins but also of a great difference in that it is permeated with an eschatological perspective, seeing itself not only as participating in the suffering of Christ (as in Mark) but also as functioning even in the face of persecution while patiently—but eagerly—awaiting the Parousia.

‘‘যদিও যীশুর শিষ্যদের বিভিন্ন রকমের তালিকার মধ্যে মথি নামের একজনকে পাওয়া যায়, তবে এখানে যে বিষয়টা বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো, মার্ক লিখিত সুসমাচারে লেভি নামের একজন কর-সংগ্রাহক যীশুর অনুসারী হন। কিন্তু মথি লিখিত সুসমাচারে এসে এ কর-সংগ্রাহকের নাম ‘মথি’ হয়ে গেল। এতে মনে হতে পারে যে, এরূপ নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে মথি নিজের সুসমাচারের জন্য শিষ্যত্বের অধিকার দাবি করছেন। তবে সম্ভবত মথি নামের এ পুস্তকটার লেখক অজ্ঞাত পরিচয়। .... মথি মূলতই এক গ্রিক কর্ম। শুধু তাই নয়, উপরন্তু তা লেখা হয়েছে গ্রিকভাষী পরজাতি (অ-ইহুদি) খ্রিষ্টানদের জন্য।

মথির মতানুসারে ইঞ্জিল পুস্তকটা যখন লেখা হয় তখন খ্রিষ্টধর্ম অনেকটা মসৃণভাবে অ-ইহুদি খ্রিষ্টান পরিবেশের মধ্যে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিল। ... মথি রচনার পূর্বেই খ্রিষ্টধর্ম তার ইহুদি ছাঁচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ... মথীয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায় তাদের ইহুদি মূলভিত্তি সম্পর্কে সচেতন ছিল। তবে পাশাপাশি একটা ব্যাপক পার্থক্যও তৈরি হয়েছিল যা এক পরলোকতত্ত্বের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করেছিল। মথির ইঞ্জিলের সম্প্রদায় শুধু খ্রিষ্টের বেদনায় অংশীদারই হচ্ছিল না  (যেমনটা মার্কের ক্ষেত্রে), উপরন্তু নিপীড়ন-অত্যাচারের মুখে ধৈর্যের সাথে কর্ম করছিল আর অত্যন্ত অধীর হয়ে যীশু খ্রিষ্টের পুনরাগমনের অপেক্ষা করছিল।’’[5]

উইকিপিডিয়ার Authorship of the Bible প্রবন্ধের বক্তব্য:

“Early Christian tradition held that the Gospel of Matthew was written in "Hebrew" (Aramaic, the language of Judea) by the apostle Matthew, the tax-collector and disciple of Jesus, but according to the majority of modern scholars it is unlikely that this Gospel was written by an eyewitness. Modern scholars interpret the tradition to mean that Papias, its source, writing about 125–150 CE, believed that Matthew had made a collection of the sayings of Jesus. Papias's description does not correspond well with what is known of the gospel: it was most probably written in Greek, not Aramaic or Hebrew, it depends on the Greek Gospels of Mark and on the hypothetical Q document, and it is not a collection of sayings. Although the identity of the author is unknown, the internal evidence of the Gospel suggests that he was an ethnic Jewish male scribe from a Hellenised city, possibly Antioch in Syria, and that he wrote between 70 and 100 CE using a variety of oral traditions and written sources about Jesus.”

‘‘প্রাচীন খ্রিষ্টান ঐতিহ্য অনুসারে মথির ইঞ্জিলটা যীশুর প্রেরিত শিষ্য কর-সংগ্রাহক মথি কর্তৃক হিব্রু (যুডিয়া রাজ্যের ভাষা আরামাইক) ভাষায় লেখা। তবে বর্তমান যুগের অধিকাংশ গবেষকের মতে এ ইঞ্জিলটা কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর লেখা হতে পারে না। প্যাপিয়াস কর্তৃক ১২৫-১৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে লেখা একটা বক্তব্যের ভিত্তিতেই প্রাচীন ধর্মগুরুরা মনে করতেন যে, পুস্তকটা মথির রচিত। তবে আধুনিক গবেষকরা প্যাপিয়াসের এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন, প্যাপিয়াস বিশ্বাস করতেন যে, মথি যীশুর বাণীর একটা সংকলন তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এ সুসমাচারের বিষয়ে যা জানা যাচ্ছে তার সাথে প্যাপিয়াসের বর্ণনা মিলে না। সর্বোচ্চ সম্ভাবনা যে, এটা গ্রিক ভাষায় লেখা হয়েছিল, আরামাইক বা হিব্রু ভাষায় লেখা হয়নি। এটা গ্রিক ভাষায় লেখা ‘মার্কের সুসমাচারের’ উপরে নির্ভর করে লেখা হয়েছিল এবং অন্য একটা উৎসের উপর নির্ভর করেছিল যাকে ‘কিউ’ বলে নাম দেওয়া হয়। এটা যীশুর বাণী সংকলন নয়। যদিও লেখকের পরিচয় অজ্ঞাত, তবে অভ্যন্তরীণ প্রমাণ থেকে প্রতীয়মান যে, পুস্তকটার লেখক ইহুদি নৃগোষ্ঠীর একজন পুরুষ লিপিকার। তিনি কোনো গ্রিকে রূপান্তরিত শহরের মানুষ ছিলেন। সম্ভবত সিরিয়ার এন্টিয়ক শহরের। তিনি ৭০ থেকে ১০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এটা লেখেছিলেন বিভিন্ন প্রকারের মৌখিক বর্ণনা ও লিখিত সূত্র ব্যবহার করে।’’

এ সকল বক্তব্য থেকে আমরা নিম্নের বিষয়গুলো অনুধাবন করি:

(ক) এ বেনামি পুস্তকটাকে মথির নামে চালানো একান্তই ভিত্তিহীন ও আন্দাজ দাবি মাত্র। এটা একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির লেখা। আর লেখকের পরিচয়ই যেহেতু জানা যায় না সেহেতু তার সততা, বিশ্বস্ততা, যোগ্যতা ইত্যাদি বিষয় জানার প্রশ্নই আসে না।

(খ) এটার রচনাকাল নিশ্চিতভাবে মোটেও জানা যায় না। মূল বা মূলের কাছাকাছি কোনো প্রাচীন পাণ্ডুলিপিও নেই। তবে বিষয়বস্ত্তর আলোকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রথম খ্রিষ্টীয় শতকের শেষ প্রান্তে তা রচিত। অর্থাৎ খ্রিষ্টান গবেষকদের দাবি অনুসারেই যীশুর ঊর্ধ্বারোহণের প্রায় ৫০/৬০ বছর পরে এটা রচিত।

(গ) এ পুস্তকটাকে ঐশী, ঐশ্বরিক, ওহী নির্ভর বলার তথ্যগত ভিত্তি নেই। কারণ, কোনো পুস্তককে ঐশ্বরিক বা ওহী নির্ভর বলে গণ্য করতে অন্তত দুটো বিষয় সুস্পষ্ট হতে হবে: (১) পুস্তকটার লেখক কোনো ওহীপ্রাপ্ত নবী হবেন এবং (২) তিনি সুস্পষ্টত এটাকে ওহীর মাধ্যমে পাওয়া পুস্তক বলে দাবি করবেন। ‘মথি’ নামের এ পুস্তকটার ক্ষেত্রে একটাও পাওয়া যায় না। লেখক অজ্ঞাত পরিচয়। আর এ অজ্ঞাত পরিচয় লেখক পুস্তকটার কোথাও বলেননি যে, পবিত্র আত্মার নির্দেশে বা প্রেরণায় তিনি এ গ্রন্থটা রচনা করেছেন। গ্রন্থের কোথাও কোনোভাবেই এরূপ দাবি তিনি করেননি। এমনকি তার এ গ্রন্থটা যে ‘ইঞ্জিল’ সে দাবিও তিনি করেননি। এটা নিছক একটা জীবনী ও ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবেই তিনি লেখেছেন।

[1] Eusebius Pamphilus, The Ecclesiastic History, page 245.
[2] Which Language Did Jesus Speak – Aramaic or Hebrew? (http://www. godward.org/hebrew%20roots/did%20jesus% 20speak%20hebrew. htm) from (Jean Carmignac, "Studies in the Hebrew Background of the Synoptic Gospels," Annual of the Swedish Theological Institute 7 (1968-69), p. 88
[3] Which Language Did Jesus Speak – Aramaic or Hebrew? (http://www. godward.org/hebrew%20roots/did%20jesus% 20speak%20hebrew. htm). See also: Eusebius, Ecclesiastical History, page 127.
[4] "Gospel According to Matthew." Microsoft® Student 2008 [DVD]. Redmond, WA: Microsoft Corporation, 2007.
[5] "biblical literature." Encyclopædia Britannica. Encyclopædia Britannica 2009 Ultimate Reference Suite. Chicago: Encyclopædia Britannica, 2009.