৮৫ সূরাঃ আল-বুরুজ | Al-Buruj | سورة البروج - আয়াতঃ ১৬
৮৫:১৬ فَعَّالٌ لِّمَا یُرِیۡدُ ﴿ؕ۱۶﴾
فعال لما یرید ﴿۱۶﴾

তিনি তা-ই করেন যা চান । আল-বায়ান

যা করতে চান তাই করেন। তাইসিরুল

তিনি যা ইচ্ছা করেন তা’ই করে থাকেন, মুজিবুর রহমান

Effecter of what He intends. Sahih International

১৬. তিনি যা ইচ্ছে তা-ই করেন।(১)

(১) “তিনি ক্ষমাশীল” বলে এই মর্মে আশান্বিত করা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি গোনাহ করা থেকে বিরত হয়ে যদি তাওবা করে তাহলে সে আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে। তিনি গোনাহগারদের প্রতি এতই ক্ষমাশীল যে, তাদেরকে লজ্জা দেন না। আর তাঁর আনুগত্যকারী বন্ধুদেরকে অতিশয় ভালবাসেন। [ফাতহুল কাদীর] “অতিস্নেহময়” বলে الْوَدُود শব্দের পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না। কারণ, স্নেহ ও ভালবাসার মধ্যে খাঁটি হলেই তবে তাকে “ওয়াদূদ” বলা যাবে। তিনি নিজের সৃষ্টিকে অত্যধিক ভালোবাসেন। তাকে তিনি কেবল তখনই শাস্তি দেন যখন সে বিদ্রোহাত্মক আচরণ করা থেকে বিরত হয় না। এখানে غَفُور বা ক্ষমাকারী বলার পরে وَدُود বা অতি স্নেহময় বলে এটাই বুঝাচ্ছেন যে, যারা অন্যায় করে তারপর তাওবাহ করবে, তাদেরকে তিনি শুধু ক্ষমাই করবেন না। বরং নিখাদভাবে ভালও বাসবেন। [সা’দী] “আরশের মালিক” বলে মানুষের মধ্যে এ অনুভূতি জাগানো হয়েছে যে তিনি যেহেতু আরশের মালিক। আর আরশ সবকিছুর উপরে। তাই তিনিও সবকিছুর উপরে। [ইবন কাসীর]

সবকিছু মহান আল্লাহর আরশের সামনে অতি নগন্য। বরং সমস্ত আসমান, যমীন ও কুরসী সবগুলোকেই আরশ শামিল করে। [সা’দী] কাজেই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কেউ তার হাত থেকে নিস্তার পেতে পারে না। “শ্রেষ্ঠ সম্মানিত” বলে এ ধরনের বিপুল মর্যাদাসম্পন্ন সত্তার প্রতি অশোভন আচরণ করার হীন মনোবৃত্তির বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া এটি আরশের গুণও হতে পারে। [ইবন কাসীর] তার শেষ গুণটি বর্ণনা করে বলা হয়েছে, “তিনি যা চান তাই করেন” অর্থাৎ আল্লাহ যে কাজটি করতে চান তাতে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এ সমগ্র সৃষ্টিকুলের কারো নেই। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে মৃত্যু শয্যায় কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনাকে কি কোন ডাক্তার দেখেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা বললেন, ডাক্তার কী বলেছেন? তিনি বললেন, ডাক্তার আমাকে বলেছেন, আমি যা ইচ্ছা তাই করি। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

১৬। তিনি যা ইচ্ছা, তাই করে থাকেন। [1]

[1] অর্থাৎ, তিনি যা চান তা বাস্তবে করে থাকেন। তাঁর আদেশ ও চাহিদাকে রুখার সাধ্য কারো নেই। আর না কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করার ক্ষমতা রাখে। আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর মৃত্যু রোগের সময় তাঁকে কেউ জিজ্ঞাসা করল যে, আপনাকে কি কোন ডাক্তার দেখেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সে বলল, তিনি কি বলেছেন? আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, তিনি বলেছেন, إني فعَّال لما أريد অর্থাৎ, আমি যা চাই, তাই করি। আমার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার মত কেউ নেই। (ইবনে কাসীর) উদ্দেশ্য এই ছিল যে, এ ব্যাপারটা এখন আর কোন ডাক্তারের হাতে নেই। এখন আল্লাহই হলেন আমার ডাক্তার। যাঁর ইচ্ছাকে কেউ টলাতে পারে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান