৫৭২২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা

৫৭২২-[২৫] উক্ত রাবী [আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমি দুনিয়া এবং আখিরাতে ’ঈসা ইবনু মারইয়াম আলায়হিস সালাম -এর সবচেয়ে বেশি কাছাকাছি। নবীগণ পরস্পরে ’আল্লাতী ভাই’, তাঁদের মা ভিন্ন ভিন্ন এবং তাঁদের দীন অভিন্ন। আর আমার ও তাঁর মাঝখানে কোন নবী নেই। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِعِيسَى بن مَرْيَمَ فِي الْأُولَى وَالْآخِرَةِ الْأَنْبِيَاءُ أُخْوَةٌ مِنْ عَلَّاتٍ وَأُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ وَلَيْسَ بَيْنَنَا نَبِي» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3442 ۔ 3443) و مسلم (145 / 2365)، (6130) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «انا اولى الناس بعيسى بن مريم في الاولى والاخرة الانبياء اخوة من علات وامهاتهم شتى ودينهم واحد وليس بيننا نبي» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3442 ۔ 3443) و مسلم (145 / 2365)، (6130) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِعِيسَى بن مَرْيَمَ فِي الْأُولَى وَالْآخِرَةِ) অর্থাৎ আমি দুনিয়া ও আখিরাতে ‘ঈসার অধিক নিকটবর্তী। ইবনু হাজার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কেননা ‘ঈসা আলায়হিস সালাম তাঁর আগমনের সুসংবাদ দিয়েছেন। এই হাদীস এবং কুরআনের আয়াত- (اِنَّ اَوۡلَی النَّاسِ بِاِبۡرٰهِیۡمَ لَلَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡهُ وَ هٰذَا النَّبِیُّ) “নিশ্চয় মানুষদের মধ্যে ইবরাহীমের সর্বাধিক ঘনিষ্ঠতম তারা যারা তার অনুসরণ করেছে, আর এই নবী”- (সূরাহ আলি ‘ইমরান ৩ : ৬৮)। উভয়ের মাঝে কোন বিরোধ নেই। কেননা কুরআনের আয়াতে রাসূল (সা.) ইবরাহীম আলায়হিস সালাম এর অনুসারী হিসেবে অধিক ঘনিষ্ঠ বলা হয়েছে। আর হাদীসে রাসূল (সা.) -এর অনুসৃত হিসেবে 'ঈসা আলায়হিস সালাম এর অধিক নিকটতম বলা হয়েছে। সঠিক কথা, উভয়ের মাঝে কোন বৈপরীত্য নেই; তাই আয়াত ও হাদীসের মাঝে সমন্বয়ের প্রয়োজন নেই। রাসূল (সা.) ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর যেমন সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ, তেমনিভাবে “ঈসা আলায়হিস সালাম-এরও সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ। মানুষের মাঝে কেউই ইবরাহীম আলায়হিস সালাম ও ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সাথে রাসূল (সা.)
-এর চেয়ে ঘনিষ্ঠ নয়। আবার ইবরাহীম অনুসৃত হওয়ার দিক থেকে রাসূল (সা.) -এর অধিক ঘনিষ্ঠ এবং সময়ের দিক থেকে ‘ঈসা আলায়হিস সালাম রাসূল (সা.) -এরও অধিক ঘনিষ্ঠ। (ফাতহুল বারী হা. ৬/৪৯৮)।

(الْأَنْبِيَاءُ أُخْوَةٌ مِنْ عَلَّاتٍ وَأُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى) বা ‘আল্লাতি ভাই’ বলা হয় পিতৃ-সম্পর্কের ভাইয়ের। একই পিতা ও ভিন্ন মাতা তথা বৈমাত্রেয় ভাইদেরকে আল্লাতি ভাই বলা হয়। এখানে নবীদেরকে একই পিতা ও ভিন্ন মাতার ছেলে বলার অর্থ হলো, সব নবীকে পাঠানোর চূড়ান্ত লক্ষ্য একটা। আর তা হলো, সৃষ্টিকে স্রষ্টার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া, তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেয়া, তাদের জীবন ও আখিরাত সুন্দর করা; এসব মৌলিক বিষয়ে সকল নবীর দাওয়াত এক। যদিও শরী'আতের শাখা-প্রশাখার দিক থেকে একজন অপরজন থেকে ভিন্ন। তাই নবী (সা.) সকল নবীর মৌলিক ও সবার মাঝে বিদ্যমান বিষয়কে পিতার সাথে তুলনা করে সেদিকে সম্পৃক্ত করেছেন। আর যুগ ও কালের চাহিদা মোতাবেক তাদের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন। বিধানাবলীকে মায়ের সাথে তুলনা করেছেন। এটাই হলো রাসূল (সা.) -এর উক্তি তাদের মাতা ভিন্ন ভিন্ন” এর মর্ম। কেননা তাদের যুগ ও কালের ভিন্নতার আলোকে অনেক বিধান ভিন্ন। তবে তাদেরকে পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য সর্বযুগে এক। এদিকে ইঙ্গিত করে রাসূল (সা.) বলেন, “তাদের দীন এক”। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)