৫৫৯১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৫৯১-[২৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন মৃত্যুকে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি স্থানে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে যাবাহ করে দেয়া হবে। অতঃপর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে, হে জান্নাতবাসীগণ! (এখানে কোন) মৃত্যু আর নেই। হে জাহান্নামীরা! মৃত্যু আর নেই। তাতে জান্নাতীদের আনন্দের উপর আনন্দ আরো অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে, অপরদিকে জাহান্নামীদের দুশ্চিন্তার উপর আরো দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পাবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَارَ أَهْلُ الْجَنَّةِ إِلَى الْجَنَّةِ وَأَهْلُ النَّارِ إِلَى النَّارِ جِيءَ بِالْمَوْتِ حَتَّى يُجْعَلَ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُذْبَحَ ثُمَّ يُنَادِي مُنَادٍ: يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ لَا مَوْتَ وَيَا أَهْلَ النَّارِ لَا مَوْتَ. فَيَزْدَادُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَرَحًا إِلَى فَرَحِهِمْ وَيَزْدَادُ أَهْلُ النَّارِ حُزْنًا إِلَى حزنهمْ . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6548) و مسلم (2850)، (7184) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا صار اهل الجنة الى الجنة واهل النار الى النار جيء بالموت حتى يجعل بين الجنة والنار ثم يذبح ثم ينادي مناد: يا اهل الجنة لا موت ويا اهل النار لا موت. فيزداد اهل الجنة فرحا الى فرحهم ويزداد اهل النار حزنا الى حزنهم . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (6548) و مسلم (2850)، (7184) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: জান্নাতীগণ জান্নাতে এবং জাহান্নামীগণ জাহান্নামে যাওয়া শেষ হলে জাহান্নামের মাঝখানে একটি উঁচু জায়গায় (সম্ভবত আ'রাফ নামক স্থানে, তিরমিযীতে আবূ হুরায়রার বর্ণনায় জান্নাত এবং জাহান্নামের মাঝের উঁচু দেয়ালের উপর) মৃত্যুকে একটি সাদা-কালো দুম্বার আকৃতিতে উপস্থিত করে যাবাহ করা হবে। কে এই যাবাহ করবে হাদীসের তার নাম উল্লেখ নেই। ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) কতিপয় সূফী থেকে নকল করেছেন যে, নবী মুহম্মদ (সা.) -এর উপস্থিতিতে ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়্যা আলায়হিস সালাম মৃত্যু নামক দুম্বাটি যাবাহ করবেন। কোন কোন লেখনীতে জিবরীল (আঃ)-এর নাম উল্লেখ আছে।

যাবাহর পর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিবেন, হে জান্নাতবাসী! আর মৃত্যু নেই, হে জাহান্নামবাসী! আর মৃত্যু নেই। এ ঘোষণাকারী কে হবে তার নাম উল্লেখ নেই।
অত্র হাদীস থেকে জানা যায় যে, যাবাহের পর ঘোষণা হবে, কিন্তু আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর হাদীসের দ্বারা বুঝা যায় যাবাহের পূর্বেই একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিবেন। আল্লামাহ্ ইবনু হাজার আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, দ্বিবিধ বর্ণনায় কোন বৈপরীত্য নেই। কেননা ঘোষণা দুটিই হবে, প্রথম ঘোষণা যাবাহের পূর্বে যেন সকলে যাবাহ পরিদর্শন করে তারই সতর্কীকরণ আর দ্বিতীয় ঘোষণা হলো ‘মৃত্যু আর ফিরে আসবে না’ তারই অবহিতি ও সতর্কীকরণ।
মৃত্যুকে প্রাণীর আকৃতি দান করে সকলের সামনে যাবাহ করা এজন্য যে, জান্নাতীদের আনন্দ ও খুশির সাথে যেন খুশি আরো বেড়ে যায় আর জাহান্নামীদের দুঃখ, দুশ্চিন্তা এবং হতাশা যেন আরো বেড়ে যায়। জামি আত্ তিরমিযীতে আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, কেউ যদি আনন্দের কারণে মারা যেত তাহলে জান্নাতীগণ এই ঘোষণা শুনে আনন্দে মারা যেত, আর কেউ যদি দুঃখ-দুশ্চিন্তায় মারা যেত তাহলে জাহান্নামীরা এই ঘোষণা শুনে দুঃখে-দুশ্চিন্তায় মারা যেত।
ইবনু মাজাহ ও সহীহ ইবনু হিব্বান গ্রন্থে আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, মৃত্যুকে পুলসিরাতের উপর উপস্থিত করে জান্নাতীদের ডাক দিয়ে যখন বলা হবে, হে জান্নাতীগণ! তখন জান্নাতীরা সেদিকে মাথা তুলে তাকাবে এবং ভীত হয়ে পড়বে যে তাদের মনে হয় এই চির সুখের আশ্রয় জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হবে! অতঃপর যখন বলা হবে হে জাহান্নামীরা! তখন জাহান্নামবাসীরা আনন্দিত হয়ে যাবে যে, তাদের বুঝি এই জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। কিন্তু তাদের উভয়কে বলা হবে তোমরা উভয় দলই যেখানে রয়েছ তা চিরস্থায়ী এখানে তোমাদের আর কখনো মৃত্যু হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১১শ খণ্ড, ৪৭১ পৃ., হা. ৬৫৪৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)