৫৪৮৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা

৫৪৮৩-[২০] ’আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই বললেন, আমি আজ রাত্রে (স্বপ্নে) দেখেছি যে, আমি কা’বার কাছে উপস্থিত। সেখানে আমি গৌরবর্ণের এক লোককে দেখতে পেলাম। যিনি তোমার দেখা গৌরবর্ণের সর্বাপেক্ষা সুন্দর লোকদের অন্যতম। তার দীর্ঘ চুল ছিল, যা তোমার দেখা সর্বাপেক্ষা সুন্দর বাবরি চুলের অন্যতম ছিল। যেগুলোকে সে আঁচড়িয়ে গোছগাছ করে রেখেছিল উক্ত চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরে পড়ছিল। তিনি দুই ব্যক্তির কাঁধের উপর ভর করে কা’বা ঘরের তাওয়াফ করছিলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, এ লোকটি কে? উত্তরে (ফেরেশতাগণ) বললেন, ইনি মাসীহ ইবনু মারইয়াম। অতঃপর আমি আরেক লোককে দেখলাম, যার কেশ ছিল সম্পূর্ণ কোঁকড়ানো, জটবাঁধা। আর তার ডান চোখ ছিল কানা, দেখতে যেন চক্ষুটি ফোলা আঙ্গুরের মতো। লোকেদের মধ্যে (ইয়াহূদী) ইবনু কতান-এর সাথে যার বাহুলাংশে সাদৃশ্য বা মিল রয়েছে। সেও দুই লোকের কাঁধে ভর করে কা’বা ঘর ত্বাওয়াফ করছে। আমি প্রশ্ন করলাম, এ লোকটি কে? উত্তরে তারা বললেন, এটা মাসীহে দাজ্জাল। (বুখারী ও মুসলিম)

অপর এক বর্ণনাতে তিনি দাজ্জালের বর্ণনায় বলেছেন, সে লাল বর্ণের, মোটা দেহ, মাথার চুল কোঁকড়ানো, ডান চক্ষু কানা, মানুষের মাঝে ইবনু কতানই তার কাছাকাছি সাদৃশ্য। আর আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীস (لَا تَقُومُ السَّاعَةُ) “মহাযুদ্ধ অধ্যায়"-এ বর্ণিত হয়েছে। আর ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর হাদীস (قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّاس) শীঘ্রই (بْن الصياد) -এর ঘটনায় বর্ণনা করব- ইনশা-আল্ল-হ!

الفصل الاول (بَابُ الْعَلَامَاتِ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ وَذِكْرِ الدَّجَّالِ)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: رَأَيْتُنِي اللَّيْلَةَ عِنْدَ الْكَعْبَةِ فَرَأَيْتُ رَجُلًا آدَمَ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنْ أُدْمِ الرِّجَالِ لَهُ لِمَّةٌ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنَ اللِّمَمِ قد رجَّلَها فَهِيَ تقطر مَاء متكأ عَلَى عَوَاتِقِ رَجُلَيْنِ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَسَأَلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالُوا: هَذَا الْمَسِيح بن مَرْيَمَ قَالَ: ثُمَّ إِذَا أَنَا بَرْجُلٍ جَعْدٍ قَطَطٍ أَعْوَرِ الْعَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّ عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ كَأَشْبَهِ مَنْ رَأَيْتُ مِنَ النَّاسِ بِابْنِ قَطَنٍ وَاضِعًا يَدَيْهِ عَلَى مَنْكِبَيْ رَجُلَيْنِ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا؟ فَقَالُوا: هَذَا الْمَسِيحُ الدَّجَّالُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ فِي الدَّجَّالِ: «رَجُلٌ أَحْمَرُ جَسِيمٌ جَعْدُ الرَّأْسِ أَعْوَرُ عَيْنِ الْيُمْنَى أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا ابْنُ قَطَنٍ» وَذَكَرَ حَدِيثَ أَبِي هُرَيْرَةَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا» فِي «بَابِ الْمَلَاحِمِ» وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ ابْنِ عُمَرَ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّاس فِي «بَاب قصَّة ابْن الصياد» إِن شَاءَ الله تَعَالَى

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3440 و الروایۃ الثانیۃ : 2441) و مسلم (274 ، 273 / 169، (425) و الروایۃ الثانیۃ : 277 / 171)، (426) 0 حدیث ابن عمر : قام رسول اللہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم فی الناس یاتی (5494) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن عبد الله بن عمر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: رايتني الليلة عند الكعبة فرايت رجلا ادم كاحسن ما انت راء من ادم الرجال له لمة كاحسن ما انت راء من اللمم قد رجلها فهي تقطر ماء متكا على عواتق رجلين يطوف بالبيت فسالت: من هذا؟ فقالوا: هذا المسيح بن مريم قال: ثم اذا انا برجل جعد قطط اعور العين اليمنى كان عينه عنبة طافية كاشبه من رايت من الناس بابن قطن واضعا يديه على منكبي رجلين يطوف بالبيت فسالت من هذا؟ فقالوا: هذا المسيح الدجال . متفق عليه. وفي رواية: قال في الدجال: «رجل احمر جسيم جعد الراس اعور عين اليمنى اقرب الناس به شبها ابن قطن» وذكر حديث ابي هريرة: «لا تقوم الساعة حتى تطلع الشمس من مغربها» في «باب الملاحم» وسنذكر حديث ابن عمر: قام رسول الله صلى الله عليه وسلم في الناس في «باب قصة ابن الصياد» ان شاء الله تعالى متفق علیہ ، رواہ البخاری (3440 و الروایۃ الثانیۃ : 2441) و مسلم (274 ، 273 / 169، (425) و الروایۃ الثانیۃ : 277 / 171)، (426) 0 حدیث ابن عمر : قام رسول اللہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم فی الناس یاتی (5494) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (رَأَيْتُنِي اللَّيْلَةَ عِنْدَ الْكَعْبَةِ) আমি গতরাতে আমাকে কা'বা ঘরের পার্শ্বে দেখেছি। নবীদের স্বপ্ন সত্য। তাদের স্বপ্নে দেখা বাস্তবে দেখার মতই, আমি বাদামী রঙের সুন্দর গঠনের একজন মানুষকে দেখেছি, যার চুলগুলো কানের লতি অতিক্রম করেছে। তার চুল ছিল পরিপাটি ও ঝলমলে, মনে হয় যেন পানি ঝরে পড়ছে। দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে কা'বা ঘরের ত্বাওয়াফ করছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম ইনি কে? তাওয়াফকারীগণ অথবা ফেরেশতাগণ উত্তর দিল, তিনি হচ্ছেন মারইয়াম আলায়হিস সালাম-এর পুত্র ঈসা মাসীহ।
নবী (সা.) বলেন, এরপর আমি ঘন কোকড়ানো চুলবিশিষ্ট ডান চোখ ত্রুটিযুক্ত, আলোহীন, আঙ্গুরের মত ফোলা উপরে উঠানো লোককে দেখলাম যে, ইবনু কতান নামক ইয়াহুদীর মতো সাদৃশ্য রাখে। সে দু’জন লোকের কাঁধে হাত রেখে বায়তুল্লাহর ত্বাওয়াফ করছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সে কে? মালাক (ফেরেশতা) অথবা তাওরাফকারীগণ উত্তর দিলেন, সে হচ্ছে মাসীহুদ দাজ্জাল।
‘আল্লামাহ্ তুরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, দাজ্জালকে মাসীহ বলার কারণ হলো সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত তাই। আর ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-কে মাসীহ বলা হয় যেহেতু তার হাতের স্পর্শে কুষ্ঠরোগী ভালো হয়ে যেত অথবা তিনি তার মায়ের পেট থেকে তেল মালিশের মাধ্যমে বেরিয়ে আসেন তাই। দাজ্জালকে মাসীহ বলার আরেকটি কারণ হলো তার একচোখ মুছে ফেলা হয়েছিল সে কিছুই দেখতে পেত না অথবা সে অল্প কিছুদিনের মধ্যে পুরো দুনিয়া প্রদক্ষিণ করার ক্ষমতা রাখবে। শুধু মক্কাহ্ ও মদীনাহ্ ছাড়া সেজন্য। আর দাজ্জালকে মাসীহু দাজ্জাল নামকরণের মাধ্যমে ‘ঈসা আলায়হিস সালাম থেকে আলাদা করা হয়েছে। মূলত মাসীহ হলেন ‘ঈসা আলায়হিস্ সালাম। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)