পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১০৫. (সহীহ্ লি গাইরিহী) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ
’’আল্লাহর সন্তোষটির উদ্দেশ্যে যে ইলম অর্জন করতে হয়, তা যদি কোন মানুষ দুনিয়ার উদ্দেশ্য হাসিলের নিমিত্তে অর্জন করে, তবে সে কিয়ামত দিবসে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ৩৬৬৪, ইবনে মাজাহ্ ২৫২ ইবনে হিব্বান ৭৮ ও হাকেম ১/৮৫। হাকেম বলেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ)
ইতিপূর্বে আবু হুরায়রা (রাঃ)এর হাদীছ রিয়া অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে (হাদীছ নং ২২), তাতে বলা হয়ঃ
رجل تعلم العلم وعلمه وقرأ القرآن فأتي به فعرفه نعمه فعرفها قال فما عملت فيها قال تعلمت العلم وعلمته وقرأت فيك القرآن، قال كذبت ولكنك تعلمت ليقال عالم وقرأت القرآن ليقال هو قارىء فقد قيل ثم أمر به فسحب على وجهه حتى ألقي في النار، الحديث رواه مسلم وغيره
’’(কিয়ামত দিবসে সর্বপ্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যাক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষা দিয়েছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নেয়ামত দ্বারা। সে বলবে, জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সন্তোষটির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে ক্বারী বা পাঠক। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’’
(হাদীছটি মুসলিম ৫০৩২ প্রমূখ বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
(صحيح لغيره) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَعَلَّمَ عِلْمًا مِمَّا يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ لَا يَتَعَلَّمُهُ إِلَّا لِيُصِيبَ بِهِ عَرَضًا مِنْ الدُّنْيَا لَمْ يَجِدْ عَرْفَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَعْنِي رِيحَهَا. رواه أبو داود وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال صحيح على شرط البخاري ومسلم
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১০৬. (সহীহ্ লি গাইরিহী) কা’ব বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে একথা বলতে শুনেছিঃ
’’যে ব্যাক্তি বিদ্যাম্বেষন করবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা ওলামাদের কাতারে শামিল হবে। অথবা দূর্বল বিবেক সম্পন্ন লোকদের সাথে বিতর্ক করবে, এবং মানুষের দৃষ্টি তার দিকে ফিরাবে তবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী, ইবনু আবী দুনিয়া [কিতাবুছ্ ছমত] গ্রন্থে ১৪০ ও বায়হাকী ৭৭২। হাকেম ১/৮৫ অন্য হাদীছের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী বলেনঃ হাদীছটি গরীব। এ হাদীসের শব্দরুপ তাঁর কিতাব থেকেই গৃহীত হয়েছে)
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
(صحيح لغيره) وروي عن كعب بن مالك قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِيُجَارِيَ بِهِ الْعُلَمَاءَ أَوْ لِيُمَارِيَ بِهِ السُّفَهَاءَ أَوْ يَصْرِفَ بِهِ وُجُوهَ النَّاسِ إِلَيْهِ أَدْخَلَهُ اللَّهُ النَّارَ. رواه الترمذي واللفظ له وابن أبي الدنيا في كتاب الصمت وغيره والحاكم شاهدا والبيهقي، وقال الترمذي حديث غريب
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১০৭. (সহীহ্ লি গাইরিহী) জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’তোমরা এই উদ্দেশ্যে জ্ঞান শিক্ষা করো না যে, তা দ্বারা আলেমদের মাঝে গর্ব করবে, নির্বোধদের সাথে ঝগড়া করবে, মজলিস বা মাহফিলের উত্তম স্থানে বসবে। যে এরূপ করবে তার জন্যে রয়েছে আগুন, আগুন।
(ইবনে মাজাহ ২৫৪, ইবনে হিব্বান ৭৭ ও বায়হাক্বী ১৭৭১ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)[1]
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
(صحيح لغيره) وَعَنْ جاَبِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَا تَعَلَّمُوا الْعِلْمَ لِتُبَاهُوا بِهِ الْعُلَمَاءَ وَلَا لِتُمَارُوا بِهِ السُّفَهَاءَ وَلَا تَخَيَّرُوا بِهِ الْمَجَالِسَ فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَالنَّارُ النَّارُ.
رواه ابن ماجه وابن حبان والبيهقي
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১০৮. (সহীহ্ লি গাইরিহী) হাদীছটি অনুরূভাবে ইবনে মাজাহ হুযায়ফা (রাঃ)এর বরাতে বর্ণনা করেছেন।
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
-
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১০৯. (সহীহ্ লি গাইরিহী) ইবনে ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে ব্যক্তি বিদ্যাম্বেষণ করবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা আলেমদের মাঝে গর্ব করবে, মূর্খ লোকদের সাথে ঝগড়া করবে অথবা তার দিকে মানুষের দৃষ্টি ফিরাবে, তবে সে জাহান্নামে যাবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনে মাজাহ ২৫৩)
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
(صحيح لغيره) وروي عن ابن عمر عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِيُبَاهِيَ بِهِ الْعُلَمَاءَ أَوْ لِيُمَارِيَ بِهِ السُّفَهَاءَ أَوْ لِيَصْرِفَ وُجُوهَ النَّاسِ إِلَيْهِ فَهُوَ فِي النَّارِ. رواه ابن ماجه
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১১০. (সহীহ্ লি গাইরিহী) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’যে ব্যক্তি বিদ্যা শিক্ষা করবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা আলেম সমাজে গর্ব-অহংকার করবে, মূর্খ লোকদের সাথে বিতর্ক করবে অথবা তার দিকে মানুষের দৃষ্টি ফিরাবে, তবে আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামে দাখিল করবেন।’’
(এ হাদীছটিও বর্ণনা করেছেন ইবনে মাজাহ ২৬০)
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
) (صحيح لغيره) وروي عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ لِيُبَاهِيَ بِهِ الْعُلَمَاءَ وَلِيُمَارِيَ بِهِ السُّفَهَاءَ وَيَصْرِفَ بِهِ وُجُوهَ النَّاسِ إِلَيْهِ أَدْخَلَهُ اللَّهُ جَهَنَّمَ.
رواه ابن ماجه أيضا
পরিচ্ছেদঃ ৫) আল্লাহ তা'আলার সন্তোষটি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১১১. (সহীহ্ লি গাইরিহী মাওকূফ) ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
’’তখন তোমাদের অবস্থা কেমন হবে যখন ফিতনা তোমাদেরকে ঘিরে ধরবে। ওর মধ্যেই ছোটরা লালিত-পালিত হবে, বড়রা বৃদ্ধ হবে। আর ওটাকেই (ঐ ফিতনাকেই) সুন্নাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। কোন দিন যদি তা পরিবর্তন (ঐ ফিতনাকে উৎখাত) করা হয়, তখন বলা হবে এটা গর্হিত কাজ।
তাঁকে প্রশ্ন করা হল, কখন এরূপ হবে?
তিনি বললেনঃ যখন তোমাদের মাঝে বিশ্বস্থ (আমনতদার) লোকের সংখ্যা কম হবে, নেতৃবৃন্দের সংখ্যা বেশী হবে। ফিকাহবীদের সংখ্যা কম হবে এবং ক্বারীদের সংখ্যা বেশী হবে। আর দ্বীনের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করা হবে। আখেরাতের আমল দ্বারা দুনিয়ার (সম্পদ) অনুসন্ধান করা হবে।’’
(আবদুর্ রাজ্জাক [মুসান্নাফ গ্রন্থে] মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন ১১/৩৫৯)[1]
الترهيب من تعلم العلم لغير وجه الله تعالى
) (صحيح لغيره موقوف) وَعَنْ ابن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: كَيْفَ بِكُمْ إِذَا لَبِسَتْكُمْ فِتْنَةٌ يَرْبُو فِيهَا الصَّغِيرُ وَيَهْرَمُ فِيهَا الْكَبِيرُ، وتُتَّخَذُ سُنَّةُ فَإنْ غَيَّرْتَ يَوْماً قِيْلَ هَذاَ مُنْكَرٌ قِيْلَ: وَمَتَى ذَاكَ؟ قَالَ: إِذَا وَقَلَّتْ أُمَنَاؤُكُمْ وَكَثُرَتْ أُمَرَاؤُكُمْ وَقَلَّتْ فُقَهَاؤُكُمْ وَكَثُرَتْ قُرَّاؤُكُمْ وَتُفُقِّهَ لِغَيْرِ الدِّينِ وَالْتُمِسَتِ الدُّنْيَا بِعَمَلِ الآخِرَةِ. رواه عبد الرزاق في كتابه موقوفا