পরিচ্ছেদঃ ইমাম এবং মুক্তাদীর উপর সকল নামাযেই কিরাআত পাঠ করা ওয়াজিব
৪২৮) জাবের বিন সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ কূফাবাসীগণ উমার (রাঃ)এর নিকট সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। উমার (রাঃ) সা’দকে অপসারণ করে তাঁর স্থলে আম্মার বিন ইয়াসিরকে শাসনকর্তা নিয়োগ করলেন। তারা সা'দের বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ করেছিল তার মধ্যে এও ছিল যে, তিনি সুন্দরভাবে নামায আদায় করেন না। উমার (রাঃ) তাঁকে ডেকে পাঠালেন। তিনি উপস্থিত হলে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আবু ইসহাক! আপনার ব্যাপারে তাদের অভিযোগ হল আপনি ভালভাবে নামায আদায় করেন না। এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি তাদেরকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে নামায পড়তেন সেভাবেই নামায পড়তাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামায থেকে কোন কিছুই বাদ দিতাম না। ইশার নামাযের প্রথম দু’রাকআতে আমি কিরাআত লম্বা করতাম এবং শেষ দু’রাকআতে সংক্ষেপ করতাম। উমার (রাঃ) তখন বললেনঃ হে আবু ইসহাক! তোমার ব্যাপারে আমাদের ধারণা এটিই। (যাই হোক) অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উমার (রাঃ) সা'দের সাথে কূফায় একজন কিংবা কয়েকজন লোক পাঠালেন। প্রেরিত লোক কূফাবাসীদের নিকট জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। কূফার প্রতিটি মসজিদেই সা’দ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সকলেই সা'দের প্রশংসা করল। অবশেষে প্রেরিত দূত বনী আব্বাসের মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে উপস্থিত হলে বনী আবাসের এক লোক দাঁড়াল। তার নাম ছিল উসামা বিন কাতাদাহ। কুনিয়ত (উপনাম) ছিল আবু সা’দাহ। সে বললঃ আপনি যেহেতু আমাদেরকে তাঁর ব্যাপারে শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করছেন তাহলে শুনুন! সা’দ সেনাবাহিনীর সাথে জেহাদে অংশ গ্রহণ করতেন না, গণীমতের মাল ইনসাফের সাথে বন্টন করতেন না এবং ন্যায়ভাবে বিচার-ফয়সালা করতেন না।
কথা শেষ হলে সা’দ বললেনঃ (এত অভিযোগের পর আমার কিছু বলার নেই) তবে আল্লাহর শপথ! আমি তার বিরুদ্ধে তিনটি বদ্দু’আ করছি। হে আল্লাহ! আপনার এই বান্দা যদি মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে এবং শুধু মাত্র মানুষকে দেখানোর জন্য এবং শুনানোর জন্য দাঁড়িয়ে অভিযোগ করে থাকে তাহলে তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুণ, তার দারিদ্র ও অভাব বৃদ্ধি করুন এবং তাকে ফিতনায় নিমজ্জিত করুন। (আল্লাহ তাআলা সা'দের দু’আ কবুল করলেন। লোকটি সেরকমই হয়ে গেল)
পরবর্তীতে যখন তাকে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হত তখন সে বলত, আমি দীর্ঘ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত এবং ফিতনায় নিপতিত এক বৃদ্ধ। আমার উপর সা'দের বদ্দু’আ লেগে গেছে। জাবের (রাঃ) হতে বর্ণনাকারী বলেনঃ পরবর্তীতে আমি সে লোকটিকে দেখলাম যে, অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে তার চোখের উপরের ভ্রু দু’টি চোখের উপরে ঝুলে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে চলার পথে যুবতী মেয়েদেরকে উত্যক্ত করত এবং তাদের প্রতি কটাক্ষ (খোঁচা মারত)।
باب وُجُوبِ الْقِرَاءَةِ لِلإِمَامِ وَالْمَأْمُومِ فِي الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ وَمَا يُجْهَرُ فِيهَا وَمَا يُخَافَتُ
৪২৮ـ عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: شَكَا أَهْلُ الْكُوفَةِ سَعْدًا إِلَى عُمَرَ ، فَعَزَلَهُ وَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِمْ عَمَّارًا، فَشَكَوْا حَتَّى ذَكَرُوا أَنَّهُ لا يُحْسِنُ يُصَلِّي، فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ، فَقَالَ: يَا أَبَا إِسْحَاقَ، إِنَّ هَؤُلاءِ يَزْعُمُونَ أَنَّكَ لا تُحْسِنُ تُصَلِّي؟ قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ: أَمَّا أَنَا، وَاللَّهِ فَإِنِّي كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ صَلاةَ رَسُولِ اللَّهِ مَا أَخْرِمُ عَنْهَا، أُصَلِّي صَلاةَ الْعِشَاءِ، فَأَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ، وَأُخِفُّ فِي الأُخْرَيَيْنِ. قَالَ: ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ، فَأَرْسَلَ مَعَهُ رَجُلا أَوْ رِجَالا إِلَى الْكُوفَةِ، فَسَأَلَ عَنْهُ أَهْلَ الْكُوفَةِ، وَلَمْ يَدَعْ مَسْجِدًا إِلا سَأَلَ عَنْهُ، وَيُثْنُونَ مَعْرُوفًا، حَتَّى دَخَلَ مَسْجِدًا لِبَنِي عَبْسٍ، فَقَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ، يُقَالُ لَهُ: أُسَامَةُ بْنُ قَتَادَةَ، يُكْنَى أَبَا سَعْدَةَ، قَالَ: أَمَّا إِذْ نَشَدْتَنَا، فَإِنَّ سَعْدًا كَانَ لا يَسِيرُ بِالسَّرِيَّةِ، وَلا يَقْسِمُ بِالسَّوِيَّةِ، وَلا يَعْدِلُ فِي الْقَضِيَّةِ. قَالَ سَعْدٌ: أَمَا وَاللَّهِ لأَدْعُوَنَّ بِثَلاثٍ: اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ عَبْدُكَ هَذَا كَاذِبًا، قَامَ رِيَاءً وَسُمْعَةً، فَأَطِلْ عُمْرَهُ، وَأَطِلْ فَقْرَهُ، وَعَرِّضْهُ بِالْفِتَنِ. وَكَانَ بَعْدُ إِذَا سُئِلَ يَقُولُ: شَيْخٌ كَبِيرٌ مَفْتُونٌ، أَصَابَتْنِي دَعْوَةُ سَعْدٍ. قَالَ الراوي عن جابر : فَأَنَا رَأَيْتُهُ بَعْدُ، قَدْ سَقَطَ حَاجِبَاهُ عَلَى عَيْنَيْهِ مِنَ الْكِبَرِ وَإِنَّهُ لَيَتَعَرَّضُ لِلْجَوَارِي فِي الطُّرُقِ يَغْمِزُهُنَّ.
Recitation of the Qur'an (Surat Al-Fatiha) is compulsory for the Imam and the followers, at the home and on journey, in all As-Salat (the prayers) whether the recitation is done silently or aloud.
Narrated Jabir bin Samura:
The People of Kufa complained against Sa`d to `Umar and the latter dismissed him and appointed `Ammar as their chief . They lodged many complaints against Sa`d and even they alleged that he did not pray properly. `Umar sent for him and said, "O Aba 'Is-haq! These people claim that you do not pray properly." Abu 'Is-haq said, "By Allah, I used to pray with them a prayer similar to that of Allah's Apostle and I never reduced anything of it. I used to prolong the first two rak`at of `Isha prayer and shorten the last two rak`at."
`Umar said, "O Aba 'Is-haq, this was what I thought about you." And then he sent one or more persons with him to Kufa so as to ask the people about him. So they went there and did not leave any mosque without asking about him. All the people praised him till they came to the mosque of the tribe of Bani `Abs; one of the men called Usama bin Qatada with a surname of Aba Sa`da stood up and said, "As you have put us under an oath; I am bound to tell you that Sa`d never went himself with the army and never distributed (the war booty) equally and never did justice in legal verdicts." (On hearing it) Sa`d said, "I pray to Allah for three things: O Allah! If this slave of yours is a liar and got up for showing off, give him a long life, increase his poverty and put him to trials." (And so it happened).
Later on when that person was asked how he was, he used to reply that he was an old man in trial as the result of Sa`d's curse. `Abdul Malik, the sub narrator, said that he had seen him afterwards and his eyebrows were overhanging his eyes owing to old age and he used to tease and assault the small girls in the way.
পরিচ্ছেদঃ ইমাম এবং মুক্তাদীর উপর সকল নামাযেই কিরাআত পাঠ করা ওয়াজিব
৪২৯) উবাদাহ ইবনে সামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি নামাযে সূরা ফাতেহা পড়বেনা তার নামায হবেনা।
টিকাঃ এ হাদীছ থেকে সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, ইমাম, মুক্তাদী এবং একাকী নামায আদায়কারী সকলের উপর সূরা ফাতেহা পাঠ করা ওয়াজিব। সূরা ফাতেহা পাঠ না করলে নামায বাতিল বলে গণ্য হবে। এ মর্মে আরো অনেক সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। চাই সে নামাযে কিরাআত স্বরবে পড়া হোক বা নিরবে পড়া হোক।
باب وُجُوبِ الْقِرَاءَةِ لِلإِمَامِ وَالْمَأْمُومِ فِي الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ وَمَا يُجْهَرُ فِيهَا وَمَا يُخَافَتُ
৪২৯ـ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ قَالَ لا صَلاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ.
Recitation of the Qur'an (Surat Al-Fatiha) is compulsory for the Imam and the followers, at the home and on journey, in all As-Salat (the prayers) whether the recitation is done silently or aloud.
Narrated 'Ubada bin As-Samit:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "Whoever does not recite Al-Fatiha in his prayer, his prayer is invalid."
পরিচ্ছেদঃ ইমাম এবং মুক্তাদীর উপর সকল নামাযেই কিরাআত পাঠ করা ওয়াজিব
৪৩০) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন একজন লোক মসজিদে প্রবেশ করে নামায আদায় করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে সালাম দিল। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ তুমি ফেরত যাও এবং পুনরায় নামায আদায় কর। কারণ তুমি নামায আদায় করনি। সে ফিরে গিয়ে পূর্বের ন্যায় নামায পড়তে লাগল। নামায শেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে পুনরায় সালাম দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবারও বললেনঃ তুমি ফেরত গিয়ে আবার নামায পড়। কারণ তোমার নামায আদায় হয়নি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার এরূপ বললেন। লোকটি তখন বললঃ ঐ সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহ প্রেরণ করেছেন। আমি এর চেয়ে ভাল করে নামায পড়তে জানি না। সুতরাং আপনি আমাকে শিক্ষা দিন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যখন তুমি নামাযে দাঁড়াবে তখন আল্লাহু আকবার বলবে। অতঃপর কুরআন থেকে তোমার জন্য যা সহজ হয় তাই পড়বে। তারপর শান্তভাবে রুকূ করবে। অতঃপর রুকূ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর সেজদায় গিয়ে শান্তভাবে সেজদা করবে। তারপর সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে শান্তভাবে বসবে। তোমার সকল নামায এভাবেই আদায় করবে।
باب وُجُوبِ الْقِرَاءَةِ لِلإِمَامِ وَالْمَأْمُومِ فِي الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ وَمَا يُجْهَرُ فِيهَا وَمَا يُخَافَتُ
৪৩০ـ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى، فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ فَرَدَّ، وَقَالَ ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ. فَرَجَعَ يُصَلِّي كَمَا صَلَّى، ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ فَقَالَ ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ. ثَلاثًا، فَقَالَ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ فَعَلِّمْنِي، فَقَالَ إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاتِكَ كُلِّهَا
Recitation of the Qur'an (Surat Al-Fatiha) is compulsory for the Imam and the followers, at the home and on journey, in all As-Salat (the prayers) whether the recitation is done silently or aloud.
Narrated Abu Huraira:
Allah's Messenger (ﷺ) entered the mosque and a person followed him. The man prayed and went to the Prophet and greeted him. The Prophet (ﷺ) returned the greeting and said to him, "Go back and pray, for you have not prayed." The man went back prayed in the same way as before, returned and greeted the Prophet who said, "Go back and pray, for you have not prayed." This happened thrice. The man said, "By Him Who sent you with the Truth, I cannot offer the prayer in a better way than this. Please, teach me how to pray." The Prophet (ﷺ) said, "When you stand for Prayer say Takbir and then recite from the Holy Qur'an (of what you know by heart) and then bow till you feel at ease. Then raise your head and stand up straight, then prostrate till you feel at ease during your prostration, then sit with calmness till you feel at ease (do not hurry) and do the same in all your prayers.