পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
والَّذِينَ يُؤْذُونَ المُؤْمِنِينَ والْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتاناً وإثْماً مُبِيناً
অর্থাৎ, যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব ৫৮)
(২২২১) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রকৃত মুসলিম সেই, যার মুখ ও হাত হতে মুসলিমগণ নিরাপদে থাকে। আর প্রকৃত মুহাজির (দ্বীন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে স্বদেশ ত্যাগকারী) সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর নিষিদ্ধ কর্মসমূহ ত্যাগ করে।
وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمْرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ المُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ وَالمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২২) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে পছন্দ করে যে, তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হোক এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক, তার মরণ যেন এমন অবস্থায় হয় যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান রাখে এবং অন্যের প্রতি এমন ব্যবহার দেখায়, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُزَحْزَحَ عَنِ النَّارِ وَيُدْخَلَ الجَنَّةَ فَلْتَأْتِهِ مَنِيَّتُهُ وَهُوَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ الآخِرِ وَلْيَأْتِ إِلَى النَّاسِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يُؤْتَى إِلَيْهِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৩) আবূ বারযাহ আসলামী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে সেই মানুষের দল; যারা মুখে ঈমান এনেছে এবং যাদের হৃদয়ে ঈমান স্থান পায়নি (তারা শোন)! তোমরা মুসলিমদের গীবত করো না এবং তাদের দোষ খুঁজে বেড়ায়ো না। কারণ, যে ব্যক্তি তাদের দোষ খুঁজবে, আল্লাহ তার দোষ ধরবেন। আর আল্লাহ যার দোষ ধরবেন তাকে তার ঘরের ভিতরেও লাঞ্ছিত করবেন।
عَنْ أَبِى بَرْزَةَ الأَسْلَمِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يَدْخُلِ الإِيمَانُ قَلْبَهُ لاَ تَغْتَابُوا الْمُسْلِمِينَ وَلاَ تَتَّبِعُوا عَوْرَاتِهِمْ فَإِنَّهُ مَنِ اتَّبَعَ عَوْرَاتِهِمْ يَتَّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ وَمَنْ يَتَّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ فِى بَيْتِهِ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৪) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কারো জন্য অপরের কোন প্রকার ক্ষতি করা বৈধ নয়। কোন দু’জনের জন্য পদ্ধতিশোধমূলক পরস্পরকে ক্ষতিগ্রস্ত করাও বৈধ নয়।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لاَ ضَرَرَ وَلاَ ضِرَارَ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৫) হুযাইফাহ বিন আসীদ (বা উসাইদ) (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদেরকে তাদের রাস্তার ব্যাপারে কষ্ট দেবে, সে ব্যক্তির উপর তাদের অভিশাপ অনিবার্য হয়ে যাবে।
عَنْ حُذَيْفَةَ بن أُسَيْدٍ أَنّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ مَنْ آذَى الْمُسْلِمِينَ فِي طُرُقِهِمْ وَجَبَتْ عَلَيْهِ لَعْنَتُهُمْ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৬) আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ই’তিকাফে ছিলেন। তিনি শুনলেন লোকেরা জোরেশোরে ক্বিরাআত পড়ছে। সুতরাং তিনি পর্দা সরিয়ে বললেন, শোনো! তোমাদের প্রত্যেকেই আল্লাহর সাথে মুনাজাত করছ। অতএব তোমরা একে অপরকে কষ্ট দিয়ো না এবং একে অপরের উপর ক্বিরাআতে (অথবা নামাযে) শব্দ উঁচু করো না।
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ قَالَ : اعْتَكَفَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِى الْمَسْجِدِ فَسَمِعَهُمْ يَجْهَرُونَ بِالْقِرَاءَةِ فَكَشَفَ السِّتْرَ وَقَالَ أَلاَ إِنَّ كُلَّكُمْ مُنَاجٍ رَبَّهُ فَلاَ يُؤْذِيَنَّ بَعْضُكُمْ بَعْضًا وَلاَ يَرْفَعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِى الْقِرَاءَةِ أَوْ قَالَ فِى الصَّلاَةِ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৭) আবূ যার্র (রাঃ) বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, সবচেয়ে ভালো কাজ কী? উত্তরে তিনি বললেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা। আমি বললাম, কোন্ শ্রেণীর ক্রীতদাস মুক্ত করা সবচেয়ে ভালো? তিনি বললেন, যা মূল্যে সবচেয়ে বেশী এবং তার পরিবারের নিকট উত্তম। আমি বললাম, ’’আমি যদি তা না পারি? তিনি বললেন, তবে কোন কারিগরের সহযোগিতা কর অথবা যে কারিগর নয় তার কাজ করে দাও। আমি বললাম, তাও যদি না পারি? তিনি বললেন, তাহলে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকবে। আর সেটা হবে তোমার পক্ষ থেকে কৃত সদকাহ।
عَنْ أَبِـى ذَرٍّ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَىُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ الإِيمَانُ بِاللهِ وَالْجِهَادُ فِى سَبِيلِهِ قَالَ قُلْتُ أَىُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ قَالَ أَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا وَأَكْثَرُهَا ثَمَنًا قَالَ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ أَفْعَلْ قَالَ تُعِينُ صَانِعًا أَوْ تَصْنَعُ لأَخْرَقَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِنْ ضَعُفْتُ عَنْ بَعْضِ الْعَمَلِ قَالَ تَكُفُّ شَرَّكَ عَنِ النَّاسِ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ مِنْكَ عَلَى نَفْسِكَ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৮) খালেদ বিন অলীদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মানুষকে সবচেয়ে বেশি শাস্তি বা কষ্ট দেয়, কিয়ামতের দিন সে সবচেয়ে বেশি আযাব ভোগ করবে।
عَنْ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيْدٍ قَالَ : قَالَ النَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا لِلنَّاسِ فِي الدُّنْيَا