হাদীস সম্ভার ২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০২৯

পরিচ্ছেদঃ যাদু-বিদ্যা কঠোরভাবে হারাম, এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, অপবাদ দেওয়া সর্বনাশী কর্ম

(২০২৯) আবূ হুরাইরা কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’সাতটি ধ্বংসকারী কর্ম হতে দূরে থাক।’’ সকলে বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! তা কী কী?’ তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শির্ক করা, যাদু করা, ন্যায় সঙ্গত অধিকার ছাড়া আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা করা হারাম করেছেন তা হত্যা করা, সূদ খাওয়া, এতীমের মাল ভক্ষণ করা, (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) যুদ্ধের দিন পলায়ন করা এবং সতী উদাসীনা মুমিনা নারীর চরিত্রে মিথ্যা কলঙ্ক দেওয়া।’

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ قِيلَ يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِى حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ وَأَكْلُ الرِّبَا وَالتَّوَلِّى يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلاَتِ الْمُؤْمِنَاتِ

عن ابى هريرة ان رسول الله ﷺ قال اجتنبوا السبع الموبقات قيل يا رسول الله وما هن قال الشرك بالله والسحر وقتل النفس التى حرم الله الا بالحق واكل مال اليتيم واكل الربا والتولى يوم الزحف وقذف المحصنات الغافلات المومنات

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩০

পরিচ্ছেদঃ যাদু-বিদ্যা কঠোরভাবে হারাম, এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, অপবাদ দেওয়া সর্বনাশী কর্ম

(২০৩০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার অধিকৃত দাসের উপর ব্যভিচারের মিথ্যা কলঙ্ক দেবে, কিয়ামতের দিন তার উপর ’হদ্দ্’ (দণ্ডবিধি) কায়েম করা হবে। তবে তা যদি সত্য হয়, তবে ভিন্ন কথা।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ ﷺ مَنْ قَذَفَ مَمْلُوكَهُ بِالزِّنَا يُقَامُ عَلَيْهِ الْحَدُّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ

عن ابى هريرة قال قال ابو القاسم ﷺ من قذف مملوكه بالزنا يقام عليه الحد يوم القيامة الا ان يكون كما قال

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩১

পরিচ্ছেদঃ যাদু-বিদ্যা কঠোরভাবে হারাম, এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, অপবাদ দেওয়া সর্বনাশী কর্ম

(২০৩১) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আর যে ব্যক্তি কোন মুমিন সম্পর্কে এমন কথা বলে, যা তার মধ্যে নেই, সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জাহান্নামের নর্দমায় বাস করতে দেবেন; যতক্ষণ পর্যন্ত সে যা বলেছে তা হতে বের হয়ে না আসে। (কিন্তু তখন আর সে বের হতে পারবে না।)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَمَنْ قَالَ فِى مُؤْمِنٍ مَا لَيْسَ فِيهِ حُبِسَ فِىْ رَدْغَةِ الْـخَبَالِ حَتّٰـى يَخْرُجَ مِمَّا قَالَ

عن ابن عمر قال قال رسول الله ﷺ ومن قال فى مومن ما ليس فيه حبس فى ردغة الـخبال حتـى يخرج مما قال

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩২

পরিচ্ছেদঃ যাদু-বিদ্যা কঠোরভাবে হারাম, এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, অপবাদ দেওয়া সর্বনাশী কর্ম

(২০৩২) একদিন আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) কা’বার প্রতি দৃষ্টিপাত করে বললেন, ’কি মহান তুমি! তোমার মর্যাদা কত মহান! কিন্তু মুমিন তোমার চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ।’

نَظَرَ ابْنُ عُمَرَ يَوْمًا إِلَى البَيْتِ أَوْ إِلَى الكَعْبَةِ فَقَالَ: «مَا أَعْظَمَكِ وَأَعْظَمَ حُرْمَتَكِ، وَالمُؤْمِنُ أَعْظَمُ حُرْمَةً عِنْدَ اللَّهِ مِنْكِ

نظر ابن عمر يوما الى البيت او الى الكعبة فقال: «ما اعظمك واعظم حرمتك، والمومن اعظم حرمة عند الله منك

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৩

পরিচ্ছেদঃ মুসলিমকে তুচ্ছজ্ঞান করা হারাম

আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَىٰ أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَىٰ أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসীগণ! একদল পুরুষ যেন অপর একদল পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয় তারা উপহাসকারী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং একদল নারী যেন অপর একদল নারীকেও উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয় তারা উপহাসকারিণী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না; কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা (এ ধরনের আচরণ হতে) নিবৃত্ত না হয়, তারাই সীমালংঘনকারী। (সূরা হুজুরাত ১১) তিনি অন্য জায়গায় বলেন,

وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ

অর্থাৎ, দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে। (সূরা হুমাযাহ১)

(২০৩৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ ভাবে।

وَعَنْ أَبي هُرَيرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ المُسْلِمَ رواه مسلم

وعن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال بحسب امرى من الشر ان يحقر اخاه المسلم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৪

পরিচ্ছেদঃ মুসলিমকে তুচ্ছজ্ঞান করা হারাম

(২০৩৪) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (এ কথা শুনে) এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ’মানুষ তো পছন্দ করে যে, তার কাপড়-চোপড় সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, (তাহলে সেটাও কি অহংকারের মধ্যে গণ্য হবে?)’ তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্য ভালবাসেন। অহংকার হচ্ছে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা ও মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান করা।

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ فَقَالَ رَجُلٌ : إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَناً وَنَعْلُهُ حَسَنةً فَقَالَ إِنَّ اللهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الجَمَالَ الكِبْرُ : بَطَرُ الحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ رواه مسلم

وعن ابن مسعود عن النبي ﷺ قال لا يدخل الجنة من كان في قلبه مثقال ذرة من كبر فقال رجل : ان الرجل يحب ان يكون ثوبه حسنا ونعله حسنة فقال ان الله جميل يحب الجمال الكبر : بطر الحق وغمط الناس رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৫

পরিচ্ছেদঃ মুসলিমকে তুচ্ছজ্ঞান করা হারাম

(২০৩৫) জুন্দুব ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন বলল, ’আল্লাহর কসম! আল্লাহ অমুককে ক্ষমা করবেন না।’ আল্লাহ আযযা অজাল্ল বললেন, ’কে সে আমার উপর কসম খায় এ মর্মে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না। আমি তাকেই ক্ষমা করলাম এবং তোমার (শপথকারীর) ভার কৃতকর্ম নষ্ট করে দিলাম!

وَعَنْ جُندُبِ بنِ عَبدِ الله قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ قَالَ رَجُلٌ : وَاللهِ لاَ يَغْفِرُ اللهُ لِفُلاَنٍ، فَقَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : مَنْ ذَا الَّذِي يَتَأَلَّى عَلَيَّ أَنْ لاَ أَغْفِرَ لِفُلاَنٍ فَإِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُ وَأَحْبَطْتُ عَمَلَكَ رواه مسلم

وعن جندب بن عبد الله قال : قال رسول الله ﷺ قال رجل : والله لا يغفر الله لفلان، فقال الله عز وجل : من ذا الذي يتالى علي ان لا اغفر لفلان فاني قد غفرت له واحبطت عملك رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৬

পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব

(২০৩৬) আবূ মালেক আশআরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’আমার উম্মতের মাঝে চারটি কাজ হল জাহেলিয়াতের প্রথা, যা তারা ত্যাগ করবে না; বংশ নিয়ে গর্ব করা, (কারো) বংশ-সূত্রে খোঁটা দেওয়া, তারা (ও নক্ষত্রের) মাধ্যমে বৃষ্টির আশা করা এবং (মুর্দার জন্য) মাতম করা।

عن أبي مَالِكٍ الأَشْعَرِىَّ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ أَرْبَعٌ فِى أُمَّتِى مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لاَ يَتْرُكُونَهُنَّ الْفَخْرُ فِى الأَحْسَابِ وَالطَّعْنُ فِى الأَنْسَابِ وَالاِسْتِسْقَاءُ بِالنُّجُومِ وَالنِّيَاحَةُ

عن ابي مالك الاشعرى ان النبى ﷺ قال اربع فى امتى من امر الجاهلية لا يتركونهن الفخر فى الاحساب والطعن فى الانساب والاستسقاء بالنجوم والنياحة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৭

পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব

(২০৩৭) উবাই বিন কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন লোককে দেখো যে, সে জাহেলিয়াতের বংশ-সম্পর্ক উত্থাপন করছে, তাহলে তোমরা তাকে তার বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলো এবং ­ইঙ্গিত করো না। (বরং স্পষ্ট বলো)।’

عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ يَتَعَزَّى بِعَزَاءِ الْجَاهِلِيَّةِ فَأَعِضُّوهُ بِهَنِ أبِيهِ وَلَا تُكَنُّوا

عن ابي بن كعب رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا رايتم الرجل يتعزى بعزاء الجاهلية فاعضوه بهن ابيه ولا تكنوا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৮

পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব

(২০৩৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লোকেরা যেন মৃত বাপ-দাদাদের নিয়ে ফখর করা অবশ্যই ত্যাগ করে। তারা তো জাহান্নামের কয়লা মাত্র। তা ত্যাগ না করলে তারা সেই গোবুরে পোকার চেয়েও নিকৃষ্ট হবে যে নিজ নাক দ্বারা মল ঠেলে নিয়ে যায়। অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের থেকে জাহেলিয়াতের গর্ব ও ফখর দূর করে দিয়েছেন। মানুষ হয়তো মুত্তাকী (সংযমশীল), মুমিন অথবা পাপাচারী বদমায়েশ। সকল মানুষই আদমের সন্তান এবং আদম মাটি হতে সৃষ্ট।

عَن أَبِي عَن أَبِي هُرَيْرَةَ عَن النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ يَفْتَخِرُونَ بِآبَائِهِمْ الَّذِينَ مَاتُوا إِنَّمَا هُمْ فَحْمُ جَهَنَّمَ أَوْ لَيَكُونُنَّ أَهْوَنَ عَلَى اللَّهِ مِنْ الْجُعَلِ الَّذِي يُدَهْدِهُ الْخِرَاءَ بِأَنْفِهِ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَذْهَبَ عَنْكُمْ عُبِّيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ وَفَخْرَهَا بِالْآبَاءِ إِنَّمَا هُوَ مُؤْمِنٌ تَقِيٌّ وَفَاجِرٌ شَقِيٌّ النَّاسُ كُلُّهُمْ بَنُو آدَمَ وَآدَمُ خُلِقَ مِنْ تُرَابٍ

عن ابي عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لينتهين اقوام يفتخرون باباىهم الذين ماتوا انما هم فحم جهنم او ليكونن اهون على الله من الجعل الذي يدهده الخراء بانفه ان الله قد اذهب عنكم عبية الجاهلية وفخرها بالاباء انما هو مومن تقي وفاجر شقي الناس كلهم بنو ادم وادم خلق من تراب

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৩৯

পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব

(২০৩৯) তাশরীকের দিনসমূহের মধ্যভাগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খুতবা যিনি শুনেছেন, তাঁর থেকে বর্ণনা করে আবূ নাযরাহ বলেন, তিনি বলেছেন, হে লোক সকল! তোমাদের প্রতিপালক এক, তোমাদের পিতা এক। শোনো! আরবীর উপর অনারবীর এবং অনারবীর উপর আরবীর, কৃষ্ণকায়ের উপর শ্বেতকায়ের এবং শ্বেতকায়ের উপর কৃষ্ণকায়ের কোন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নেই। শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা আছে তো কেবল ’তাক্বওয়া’র ভিত্তিতেই।

عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عن مَنْ سَمِعَ خُطْبَةَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فِي وَسَطِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَلَا إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ، وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ، أَلَا لَا فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ، وَلَا لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ، وَلَا لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ، وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ، إِلَّا بِالتَّقْوَى

عن ابي نضرة عن من سمع خطبة رسول الله ﷺ في وسط ايام التشريق فقال " يا ايها الناس، الا ان ربكم واحد، وان اباكم واحد، الا لا فضل لعربي على عجمي، ولا لعجمي على عربي، ولا لاحمر على اسود، ولا اسود على احمر، الا بالتقوى

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪০

পরিচ্ছেদঃ শারয়ীভাবে প্রমাণিত কারো বংশে খোঁটা দেওয়া হারাম

মহান আল্লাহ বলেছেন,

وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا

অর্থাৎ, যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব ৫৮)

(২০৪০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের মধ্যে দু’টি এমন দোষ রয়েছে, যা আসলে কাফেরদের (আচরণ), বংশে খোঁটা দেওয়া এবং মৃত ব্যক্তির জন্য মাতম করা।

وَعَنْ أَبي هُرَيرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اثْنَتَان فِي النَّاسِ هُمَا بِهِمْ كُفْرٌ : الطَّعْنُ فِي النَّسَبِ وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْمَيِّتِ رواه مسلم

وعن ابي هريرة قال : قال رسول الله ﷺ اثنتان في الناس هما بهم كفر : الطعن في النسب والنياحة على الميت رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪১

পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যা মহাপাপ

(২০৪১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন পাহাড় হতে নিজেকে ফেলে আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি জাহান্নামেও সর্বদা ও চিরকালের জন্য নিজেকে ফেলে অনুরূপ শাস্তিভোগ করবে। যে ব্যক্তি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি জাহান্নামেও সর্বদা চিরকালের জন্য বিষ পান করে যাতনা ভোগ করবে। আর যে ব্যক্তি কোন লৌহখণ্ড (ছুরি ইত্যাদি) দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি জাহান্নামেও ঐ লৌহখণ্ড দ্বারা সর্বদা ও চিরকালের জন্য নিজেকে আঘাত করে যাতনা ভোগ করতে থাকবে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَهُوَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ يَتَرَدَّى فِيهِ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ تَحَسَّى سُمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَسُمُّهُ فِي يَدِهِ يَتَحَسَّاهُ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ فَحَدِيدَتُهُ فِي يَدِهِ يَجَأُ بِهَا فِي بَطْنِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا

عن ابي هريرة رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال من تردى من جبل فقتل نفسه فهو في نار جهنم يتردى فيه خالدا مخلدا فيها ابدا ومن تحسى سما فقتل نفسه فسمه في يده يتحساه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها ابدا ومن قتل نفسه بحديدة فحديدته في يده يجا بها في بطنه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها ابدا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪২

পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যা মহাপাপ

(২০৪২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করবে সে ব্যক্তি দোযখেও অনুরূপ ফাঁসি নিয়ে আযাব ভোগ করবে। আর যে ব্যক্তি বর্শা বা ছুরিকাঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি দোযখেও অনুরূপ বর্শা বা ছুরিকাঘাত দ্বারা (নিজে নিজে) আযাব ভোগ করবে।

وعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ الَّذِي يَخْنُقُ نَفْسَهُ يَخْنُقُهَا فِي النَّارِ وَالَّذِي يَطْعُنُهَا يَطْعُنُهَا فِي النَّارِ

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال النبي ﷺ الذي يخنق نفسه يخنقها في النار والذي يطعنها يطعنها في النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৩

পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যা মহাপাপ

(২০৪৩) সাবেত বিন যাহহাক (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মিথ্যা বিষয়ের উপর বিধর্মী হওয়ার কসম করবে (অর্থাৎ বলবে যে, ’এরূপ যদি না হয়, তাহলে আমি মুসলিম নই, ইয়াহুদী’ ইত্যাদি), তাহলে সে যা বলবে তাই (অর্থাৎ বিধর্মী বা ইয়াহুদী ইত্যাদিই) হয়ে যাবে। যে ব্যক্তি যে জিনিস দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তিকে সেই জিনিস দ্বারাই কিয়ামতের দিন আযাব ভোগ করানো হবে।

وعَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ حَلَفَ بِمِلَّةٍ غَيْرِ الْإِسْلَامِ كَاذِبًا فَهُوَ كَمَا قَالَ وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَيْءٍ عُذِّبَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ

وعن ثابت بن الضحاك عن النبي ﷺ قال من حلف بملة غير الاسلام كاذبا فهو كما قال ومن قتل نفسه بشيء عذب به في نار جهنم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৪

পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যা মহাপাপ

(২০৪৪) সাহল বিন সা’দ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক যুদ্ধে এক ব্যক্তি বড় বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করছিল। সকলে তার প্রশংসা করতে লাগল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’কিন্তু ও জাহান্নামী।’’ কী ব্যাপার! সকলে অবাক হল। এক সাহাবী এর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তার পিছে-পিছে ঘুরতে লাগলেন। তিনি দেখলেন, লোকটি এক সময় খুবই ক্ষত-বিক্ষত হল। অতঃপর ক্ষতেরর যন্ত্রণা যেন অসহনীয় হলে সে নিজের তরবারিকে খাড়া ক’রে তার ধারালো ডগা নিজের বুকের মাঝে রেখে সওয়ার হয়ে গেল এবং মারা গেল।

সাহাবী এসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, ’আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রসূল।’ তিনি বললেন, ’’কী ব্যাপার?’’ সাহাবী ঘটনা খুলে বললে তিনি বললেন, ’’কোন কোন ব্যক্তি বাহ্যতঃ লোকের দৃষ্টিতে জান্নাতীর কাজ করে, অথচ সে আসলে জাহান্নামী। আর কোন কোন ব্যক্তি বাহ্যতঃ লোকের দৃষ্টিতে জাহান্নামীর কাজ করে, অথচ সে আসলে জান্নাতী।

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ الْتَقَى هُوَ وَالْمُشْرِكُونَ فَاقْتَتَلُوا فَلَمَّا مَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِلَى عَسْكَرِهِ وَمَالَ الْآخَرُونَ إِلَى عَسْكَرِهِمْ وَفِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ ﷺ رَجُلٌ لَا يَدَعُ لَهُمْ شَاذَّةً وَلَا فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا يَضْرِبُهَا بِسَيْفِهِ فَقَالَ مَا أَجْزَأَ مِنَّا الْيَوْمَ أَحَدٌ كَمَا أَجْزَأَ فُلَانٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ أَنَا صَاحِبُهُ قَالَ فَخَرَجَ مَعَهُ كُلَّمَا وَقَفَ وَقَفَ مَعَهُ وَإِذَا أَسْرَعَ أَسْرَعَ مَعَهُ قَالَ فَجُرِحَ الرَّجُلُ جُرْحًا شَدِيدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ بِالْأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَى سَيْفِهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَخَرَجَ الرَّجُلُ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللهِ قَالَ وَمَا ذَاكَ قَالَ الرَّجُلُ الَّذِي ذَكَرْتَ آنِفًا أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَأَعْظَمَ النَّاسُ ذٰلِكَ فَقُلْتُ أَنَا لَكُمْ بِهِ فَخَرَجْتُ فِي طَلَبِهِ ثُمَّ جُرِحَ جُرْحًا شَدِيدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ فِي الْأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عِنْدَ ذٰلِكَ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ

عن سهل بن سعد الساعدي رضي الله عنه ان رسول الله ﷺ التقى هو والمشركون فاقتتلوا فلما مال رسول الله ﷺ الى عسكره ومال الاخرون الى عسكرهم وفي اصحاب رسول الله ﷺ رجل لا يدع لهم شاذة ولا فاذة الا اتبعها يضربها بسيفه فقال ما اجزا منا اليوم احد كما اجزا فلان فقال رسول الله ﷺ اما انه من اهل النار فقال رجل من القوم انا صاحبه قال فخرج معه كلما وقف وقف معه واذا اسرع اسرع معه قال فجرح الرجل جرحا شديدا فاستعجل الموت فوضع نصل سيفه بالارض وذبابه بين ثدييه ثم تحامل على سيفه فقتل نفسه فخرج الرجل الى رسول الله ﷺ فقال اشهد انك رسول الله قال وما ذاك قال الرجل الذي ذكرت انفا انه من اهل النار فاعظم الناس ذلك فقلت انا لكم به فخرجت في طلبه ثم جرح جرحا شديدا فاستعجل الموت فوضع نصل سيفه في الارض وذبابه بين ثدييه ثم تحامل عليه فقتل نفسه فقال رسول الله ﷺ عند ذلك ان الرجل ليعمل عمل اهل الجنة فيما يبدو للناس وهو من اهل النار وان الرجل ليعمل عمل اهل النار فيما يبدو للناس وهو من اهل الجنة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা'দ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৫

পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যা মহাপাপ

(২০৪৫) দাওস গোত্রের তুফাইল বিন আমর (রাঃ) হিজরত করলে তাঁর গোত্রের এক ব্যক্তি তাঁর সাথে হিজরত করে। মদীনার আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ার ফলে সে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে অধৈর্য হয়ে তীরের ফলা দিয়ে নিজের হাতের আঙ্গুলের জোড় কেটে ফেলে। এর ফলে তার দুটি হাত হতে সজোরে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকে এবং পরিশেষে সে মারা যায়। তুফাইল বিন আমর তাকে স্বপ্নে দেখেন, তার আকার-আকৃতি সুন্দর। কিন্তু দেখলেন, সে তার হাত দুটিকে ঢেকে আছে। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার প্রতিপালক তোমার সাথে কী আচরণ করেছেন? সে বলল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে হিজরত করার কারণে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বললেন, তোমার হাত দুটি ঢাকা কেন? সে বলল, আমাকে বলা হয়েছে, তুমি নিজে যা নষ্ট করেছ, তা কখনই ঠিক করব না। তুফাইল আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ ঘটনা খুলে বললে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’হে আল্লাহ! আর তার হাত দুটিকেও ক্ষমা ক’রে দাও।

لَمَّا هَاجَرَ النَّبِىُّ ﷺ إِلَى الْمَدِينَةِ هَاجَرَ إِلَيْهِ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو وَهَاجَرَ مَعَهُ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ فَاجْتَوَوُا الْمَدِينَةَ فَمَرِضَ فَجَزِعَ فَأَخَذَ مَشَاقِصَ لَهُ فَقَطَعَ بِهَا بَرَاجِمَهُ فَشَخَبَتْ يَدَاهُ حَتّٰـى مَاتَ فَرَآهُ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فِى مَنَامِهِ فَرَآهُ وَهَيْئَتُهُ حَسَنَةٌ وَرَآهُ مُغَطِّيًا يَدَيْهِ فَقَالَ لَهُ مَا صَنَعَ بِكَ رَبُّكَ فَقَالَ غَفَرَ لِى بِهِجْرَتِى إِلَى نَبِيِّهِ ﷺ فَقَالَ مَا لِى أَرَاكَ مُغَطِّيًا يَدَيْكَ قَالَ قِيلَ لِى لَنْ نُصْلِحَ مِنْكَ مَا أَفْسَدْتَ فَقَصَّهَا الطُّفَيْلُ عَلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اللَّهُمَّ وَلِيَدَيْهِ فَاغْفِرْ

لما هاجر النبى ﷺ الى المدينة هاجر اليه الطفيل بن عمرو وهاجر معه رجل من قومه فاجتووا المدينة فمرض فجزع فاخذ مشاقص له فقطع بها براجمه فشخبت يداه حتـى مات فراه الطفيل بن عمرو فى منامه فراه وهيىته حسنة وراه مغطيا يديه فقال له ما صنع بك ربك فقال غفر لى بهجرتى الى نبيه ﷺ فقال ما لى اراك مغطيا يديك قال قيل لى لن نصلح منك ما افسدت فقصها الطفيل على رسول الله ﷺ فقال رسول الله ﷺ اللهم وليديه فاغفر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ তুফাইল বিন আমর (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৬

পরিচ্ছেদঃ অপরের গোপনীয় দোষ সন্ধান করা, অপরের অপছন্দ সত্ত্বেও তার কথা কানাচি পেতে শোনা নিষেধ

আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَلاَ تَجَسَّسُوا

অর্থাৎ, তোমরা অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না। (সূরা হুজুরাত ১২)

والَّذِينَ يُؤْذُونَ المُؤْمِنِينَ والْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتاناً وإثْماً مُبِيناً

অর্থাৎ, যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব ৫৮)


(২০৪৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’তোমরা কুধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাক। কারণ কুধারণা সব চাইতে বড় মিথ্যা কথা। অপরের গোপনীয় দোষ খুঁজে বেড়ায়ো না, অপরের জাসূসী করো না, একে অপরের সাথে (অসৎ কাজে) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করো না, পরস্পরে হিংসা করো না, পরস্পরে বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়ো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও; যেমন তিনি তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন।

এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করবে না, তাকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেবে না এবং তাকে তুচ্ছ ভাববে না। আল্লাহভীতি এখানে রয়েছে। আল্লাহভীতি এখানে রয়েছে। (তিনি নিজ বুকের দিকে ইঙ্গিত করলেন।) কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ ভাবা একটি মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, সম্ভ্রম ও সম্পদ অপর মুসলিমের উপর হারাম। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের দেহ ও আকার-আকৃতি দেখেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল দেখেন।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’তোমরা পরস্পর হিংসা করো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, অপরের জাসূসী করো না, অপরের গোপনীয় দোষ খুঁজে বেড়ায়ো না, পরস্পরের পণ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়ো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও।’’

আর এক বর্ণনায় আছে, ’’তোমরা পরস্পর সম্পর্ক-ছেদ করো না, একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়ো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর হিংসা করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও।’’

অন্য আরো এক বর্ণনায় আছে, ’’তোমরা একে অন্যের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না এবং অপরের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় করো না।’’ (এ সবগুলি মুসলিম বর্ণনা করেছেন ৬৭০১-৬৭০৫ এবং এর অধিকাংশ বর্ণনা করেছেন বুখারী ৫১৪৩, ৬০৬৪, ৬০৬৬, ৬৭২৪)

وَعَنْ أَبي هُرَيرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الحَدِيثِ وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَنَافَسُوا، وَلاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَاناً كَمَا أَمَرَكُمْ المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ التَّقْوَى هاهُنَا التَّقْوَى هاهُنَا وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ بِحَسْبِ امْرِىءٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ المُسْلِمَ كُلُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِمِ حَرَامٌ : دَمُهُ وَعِرْضُهُ وَمَالُهُ إِنَّ اللهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَادِكُمْ وَلاَ إِلَى صُوَرِكُمْ وَلكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ
وَفِي رواية لاَ تَحَاسَدُوا، وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْواناً
وفي رواية لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْواناً
وَفِي رِواية وَلاَ تَهَاجَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ رواه مسلم بكلّ هذِهِ الروايات، وروى البخاريُّ أَكْثَرَهَا

وعن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال اياكم والظن فان الظن اكذب الحديث ولا تحسسوا ولا تجسسوا ولا تنافسوا، ولا تحاسدوا ولا تباغضوا ولا تدابروا وكونوا عباد الله اخوانا كما امركم المسلم اخو المسلم لا يظلمه ولا يخذله ولا يحقره التقوى هاهنا التقوى هاهنا ويشير الى صدره بحسب امرىء من الشر ان يحقر اخاه المسلم كل المسلم على المسلم حرام : دمه وعرضه وماله ان الله لا ينظر الى اجسادكم ولا الى صوركم ولكن ينظر الى قلوبكم واعمالكم وفي رواية لا تحاسدوا، ولا تباغضوا ولا تجسسوا ولا تحسسوا ولا تناجشوا وكونوا عباد الله اخوانا وفي رواية لا تقاطعوا ولا تدابروا ولا تباغضوا ولا تحاسدوا وكونوا عباد الله اخوانا وفي رواية ولا تهاجروا ولا يبع بعضكم على بيع بعض رواه مسلم بكل هذه الروايات، وروى البخاري اكثرها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৭

পরিচ্ছেদঃ অপরের গোপনীয় দোষ সন্ধান করা, অপরের অপছন্দ সত্ত্বেও তার কথা কানাচি পেতে শোনা নিষেধ

(২০৪৭) মুআবিয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ’’যদি তুমি মুসলিমদের গুপ্ত দোষগুলি খুঁজে বেড়াও, তাহলে তুমি তাদের মাঝে ফাসাদ সৃষ্টি ক’রে দেবে অথবা তাদের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি করার উপক্রম হবে।’’ (আবূ দাঊদ হা/৪৮৯০, বিশুদ্ধ সানাদ)

وَعَنْ مُعَاوِيَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إِنَّكَ إِنِ اتَّبَعْتَ عَوْرَاتِ المُسْلِمينَ أَفْسَدْتَهُمْ أَوْ كِدْتَ أَنْ تُفْسِدَهُمْ حديث صحيح رواه أَبُو داود بإسناد صحيح

وعن معاوية قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول انك ان اتبعت عورات المسلمين افسدتهم او كدت ان تفسدهم حديث صحيح رواه ابو داود باسناد صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
২০৪৮

পরিচ্ছেদঃ অপরের গোপনীয় দোষ সন্ধান করা, অপরের অপছন্দ সত্ত্বেও তার কথা কানাচি পেতে শোনা নিষেধ

(২০৪৮) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তাঁর নিকট একটি লোককে নিয়ে আসা হল এবং তার সম্পর্কে বলা হল যে, ’এ লোকটি অমুক, এর দাড়ি থেকে মদ ঝরছে।’ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বললেন, ’আমাদেরকে জাসূসী করতে (গুপ্ত দোষ খুঁজে বেড়াতে) নিষেধ করা হয়েছে। তবে যদি কোন (প্রমাণ) আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আমরা তা দিয়ে তাকে পাকড়াও করব।’

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ أَنَّهُ أُتِيَ بِرَجُلٍ فَقِيلَ لَهُ : هَذَا فُلاَنٌ تَقْطُرُ لِحْيَتُهُ خَمْراً فَقَالَ : إنَّا قَدْ نُهِيْنَا عَنِ التَّجَسُّسِ، وَلَكِنْ إِنْ يَظْهَرْ لَنَا شَيْءٌ، نَأخُذْ بِهِ حديث حسن صحيح رواه أَبُو داود بإسنادٍ عَلَى شَرْطِ البخاري ومسلم

وعن ابن مسعود انه اتي برجل فقيل له : هذا فلان تقطر لحيته خمرا فقال : انا قد نهينا عن التجسس، ولكن ان يظهر لنا شيء، ناخذ به حديث حسن صحيح رواه ابو داود باسناد على شرط البخاري ومسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩৬৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 6 · · · 16 17 18 19 পরের পাতা »