পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَاعْبُدُوا اللهَ وَلا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ
অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও কোন কিছুকে তাঁর অংশী করো না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার কর। (সূরা নিসা ৩৬)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,
وَوَصَّيْنَا الأِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْناً
অর্থাৎ, আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছি। (সূরা আনকাবূত ৮)
তিনি আরো বলেন,
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوا إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاهُمَا فَلا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلاً كَرِيماً وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيراً
অর্থাৎ, তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারো উপাসনা করবে না এবং পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে; তাদের এক জন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে বিরক্তিসূচক কিছু বলো না এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করো না; বরং তাদের সাথে বলো সম্মানসূচক নম্র কথা। অনুকম্পায় তাদের প্রতি বিনয়াবনত থেকো এবং বলো, ’হে আমার প্রতিপালক! তাদের উভয়ের প্রতি দয়া কর; যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছে।’ (সূরা বানী ইস্রাঈল ২৩-২৪) তিনি অন্যত্র বলেন,
وَوَصَّيْنَا الأِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْناً عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْك
অর্থাৎ, আমি তো মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। জননী কষ্টের পর কষ্ট বরণ ক’রে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে এবং তার স্তন্যপান ছাড়াতে দু’বছর অতিবাহিত হয়। সুতরাং তুমি আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (সূরা লুকমান ১৪)
(১৭০৮) আবূ আব্দুর রাহমান আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, ’কোন্ আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়?’ তিনি বললেন, ’’যথা সময়ে নামায আদায় করা।’’ আমি বললাম, ’তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ’পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা।’ আমি বললাম, ’তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ’’আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’’
وَعَن أَبي عَبدِ الرَّحمَانِ عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ قَالَ : سَأَلتُ النَّبيَّ ﷺ أيُّ العَمَلِ أحَبُّ إِلَى اللهِ تَعَالَى ؟ قَالَ الصَّلاةُ عَلَى وَقْتِهَا قُلْتُ : ثُمَّ أيٌّ ؟ قَالَبِرُّ الوَالِدَيْنِ قُلْتُ : ثُمَّ أيٌّ ؟ قَالَ الجِهَادُ في سبيلِ الله متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭০৯) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন সন্তান (তার) পিতার ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। কিন্তু সে যদি তার পিতাকে ক্রীতদাসরূপে পায় এবং তাকে কিনে মুক্ত করে দেয়। (তাহলে তা পরিশোধ হতে পারে।)
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لا يَجْزِي وَلَدٌ وَالِداً إلاَّ أنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكاً فَيَشْتَرِيهُ فَيُعْتِقَهُ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১০) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, একটি লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমার কাছ থেকে সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশী হকদার কে?’ তিনি বললেন, ’’তোমার মা।’’ সে বলল, ’তারপর কে?’ তিনি বললেন, ’’তোমার মা।’’ সে বলল, ’তারপর কে?’ তিনি বললেন, ’’তোমার মা।’’ সে বলল, ’তারপর কে?’ তিনি বললেন, ’’তোমার বাপ।’’ (বুখারী ৫৯৭১, মুসলিম ৬৬৬৪)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’হে আল্লাহর রসূল! সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশী হকদার কে?’ তিনি বললেন, ’’তোমার মা, তারপর তোমার মা, তারপর তোমার মা, তারপর তোমার বাপ, তারপর যে তোমার সবচেয়ে নিকটবর্তী।’’ (মুসলিম ৬৬৬৫)
وَعَنهُ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ مَنْ أحَقُّ النَّاسِ بِحُسْنِ صَحَابَتِي ؟ قَالَ أُمُّكَ قَالَ : ثُمَّ مَنْ ؟ قَالَأُمُّكَ قَالَ : ثُمَّ مَنْ ؟ قَالَ أُمُّكَ قَالَ : ثُمَّ مَنْ ؟ قَالَأبُوكَ متفقٌ عليه وَفِيْ رِوَايَةٍ : يَا رَسُولَ اللهِ مَنْ أَحَقُّ بحُسْنِ الصُّحْبَةِ ؟ قَالَأُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أَبَاكَ ثُمَّ أدْنَاكَ أدْنَاكَ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১১) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার নাক ধূলিধূসরিত হোক, অতঃপর তার নাক ধূলিধূসরিত হোক, অতঃপর তার নাক ধূলিধূসরিত হোক, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেল; একজনকে অথবা দু’জনকেই। অতঃপর সে (তাদের খিদমত ক’রে) জান্নাত যেতে পারল না।
وَعَنهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَرَغِمَ أَنفُ ثُمَّ رَغِمَ أنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أنْفُ مَنْ أدْرَكَ أبَويهِ عِنْدَ الكِبَرِ أَحَدهُما أَوْ كِليهمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الجَنَّةَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১২) মালিক বিন হাসান বিন মালিক বিন হুয়াইরিস তাঁর পিতা হতে, তিনি (হাসান) তাঁর (মালেকের) পিতামহ (মালিক বিন হুয়াইরিস) হতে বর্ণনা করে বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে চড়েন। প্রথম ধাপে চড়েই বললেন, ’’আমীন।’’ অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে চড়ে বললেন, ’’আমীন’’ অনুরূপ তৃতীয় ধাপেও চড়ে বললেন, ’’আ-মীন।’’ অতঃপর তিনি (এর রহস্য ব্যক্ত করে) বললেন, ’’আমার নিকট জিবরীল উপস্থিত হয়ে বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! যে ব্যক্তি রমযান পেল অথচ পাপমুক্ত হতে পারল না আল্লাহ তাকে দূর করেন।’ তখন আমি (প্রথম) ’আ-মীন’ বললাম। তিনি আবার বললেন, ’যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অথবা তাদের একজনকে জীবিতাবস্থায় পেল অথচ তাকে দোযখে যেতে হবে, আল্লাহ তাকেও দূর করুন।’ এতে আমি (দ্বিতীয়) ’আ-মীন’ বললাম। অতঃপর তিনি বললেন, ’যার নিকট আপনার (নাম) উল্লেখ করা হয় অথচ সে আপনার উপর দরূদ পাঠ করে না, আল্লাহ তাকেও দূর করুন।’ এতে আমি (তৃতীয়) ’আমীন’ বললাম।’’
عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ صَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمِنْبَرَ فَلَمَّا رَقِيَ عَتَبَةً قَالَ: "آمِينَ": ثمَّ رقى أُخْرَى فقَالَ: "آمِينَ" ثُمَّ رَقِيَ عَتَبَةً ثَالِثَةً فَقَالَ: "آمين" ثمَّ قَالَ: "أَتَانِي جِبْرِيلُ صَلَّى الله عَلَيْهِمَا فقَالَ يَا مُحَمَّدُ مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يغْفر لَهُ فَأَبْعَده الله فَقلت آمِينَ قَالَ وَمَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا فَدخل النَّار فَأَبْعَده الله فَقلت آمين قَالَ وَمَنْ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ فَأَبْعَدَهُ الله قُلْ آمِيْن فَقُلْتُ آمِين"
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৩) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকিয়ে দেখবেন না; পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, পুরুষবেশিনী বা পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিণী মহিলা এবং মেড়া পুরুষ; (যে তার স্ত্রী, কন্যা ও বোনের চরিত্রহীনতা ও নোংরামিতে চুপ থাকে এবং বাধা দেয় না।)
আর তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না; পিতা-মাতার নাফরমান ছেলে, মদপানে অভ্যাসী মাতাল এবং দান করার পর যে বলে ও গর্ব করে বেড়ায় এমন খোঁটাদানকারী ব্যক্তি।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ ثَلَاثةٌ لاَ يَنْظُرُ الله إليْهِمْ يَوْمَ القِيامَةِ العَاقُّ والمَرْأةُ المُتَرَجِّلَةِ المُتَشَبِّهَةُ بالرِّجالِ والدَّيُّوثُ وثَلاثَةٌ لَا يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ العَاقُّ لِوَالِدَيْهِ والمُدْمِنُ الخَمْرَ والمَنَّانُ بِمَا أعْطَى
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৪) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর নবীর নিকট এসে বলল, ’আমি আপনার সঙ্গে আল্লাহ তাআলার কাছে নেকী পাওয়ার উদ্দেশ্যে হিজরত এবং জিহাদের বায়আত করছি।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তোমার পিতা-মাতার মধ্যে কি কেউ জীবিত আছে?’’ সে বলল, ’জী হ্যাঁ; বরং দু’জনই জীবিত রয়েছে।’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তুমি আল্লাহ তাআলার কাছে নেকী পেতে চাও?’’ সে বলল, ’জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’’তাহলে তুমি তোমার পিতা-মাতার নিকট ফিরে যাও এবং উত্তমরূপে তাদের খিদমত কর।’’ (বুখারী ৫৯৭২, মুসলিম ৬৬৭১, আর শব্দগুলি মুসলিমের)
উভয়ের অন্য এক বর্ণনায় আছে, এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে জিহাদ করার অনুমতি চাইল। তিনি বললেন, ’’তোমার পিতা-মাতা কি জীবিত আছে?’’ সে বলল, ’জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’’অতএব তুমি তাদের (সেবা করার) মাধ্যমে জিহাদ কর।’’ (বুখারী ৩০০৪, মুসলিম ৬৬৬৮)
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : أقبلَ رَجُلٌ إِلَى نَبيِّ الله ﷺ فَقَالَ : أُبَايِعُكَ عَلَى الهِجْرَةِ وَالجِهَادِ أَبْتَغي الأَجْرَ مِنَ الله تَعَالَى قَالَفَهَلْ لَكَ مِنْ وَالِدَيْكَ أحَدٌ حَيٌّ؟ قَالَ : نَعَمْ بَلْ كِلاهُمَا قَالَفَتَبْتَغي الأجْرَ مِنَ الله تَعَالَى ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَفارْجِعْ إِلَى وَالِدَيْكَ فَأحْسِنْ صُحْبَتَهُمَا متفقٌ عليه وهذا لَفْظُ مسلِم
وَفِيْ رِوَايَةٍ لَهُمَا : جَاءَ رَجُلٌ فَاسْتَأذَنَهُ في الجِهَادِ فقَالَأحَيٌّ وَالِداكَ ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَ فَفيهِمَا فَجَاهِدْ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৫) মুআবিয়া বিন জাহেমাহ সুলামী বলেন, একদা জাহেমাহ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি জিহাদ করব মনস্থ করেছি, তাই আপনার নিকট পরামর্শ নিতে এসেছি।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, তোমার মা আছে কি? জাহেমাহ (রাঃ) বললেন, ’হ্যাঁ’। তিনি বললেন, তাহলে তুমি তার খিদমতে অবিচল থাক। কারণ, তার পদতলে তোমার জান্নাত রয়েছে।
عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৬) আসমা বিনতে আবূ বকর সিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এল। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম; বললাম, ’আমার মা (ইসলাম) অপছন্দ করা অবস্থায় (আমার সম্পদের লোভ রেখে) আমার নিকট এসেছে, আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব কি?’ তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ।
وَعَن أَسْمَاءَ بِنتِ أَبي بَكرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ : قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ مُشرِكَةٌ في عَهْدِ رسولِ الله ﷺ فاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ الله ﷺ قُلْتُ : قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ رَاغِبَةٌ أفَأصِلُ أُمِّي ؟ قَالَ نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৭) ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ’আমার বিবাহ বন্ধনে এক স্ত্রী ছিল, যাকে আমি ভালবাসতাম। কিন্তু (আমার পিতা) উমার তাকে অপছন্দ করতেন। সুতরাং তিনি আমাকে বললেন, ’’তুমি ওকে ত্বালাক দাও।’’ কিন্তু আমি (তা) অস্বীকার করলাম। অতঃপর উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলেন এবং এ কথা উল্লেখ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমাকে) বললেন, ’’তুমি ওকে ত্বালাক দিয়ে দাও।’’ (সুতরাং আমি তাকে ত্বালাক দিয়ে দিলাম।) (আবূ দাঊদ ৫১৪০, তিরমিযী ১১৮৯, হাসান সহীহ সূত্রে)
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : كَانَتْ تَحْتِي امْرَأةٌ وَكُنْتُ أحِبُّهَا وَكَانَ عُمَرُ يَكْرَهُهَا فَقَالَ لي : طَلِّقْهَا فَأبَيْتُ فَأتَى عُمَرُ النَّبيَّ ﷺ فَذَكَرَ ذلِكَ لَهُ فَقَالَ النَّبيّ ﷺ طَلِّقْهَارواه أَبُو داود والترمذي وَقالَ حديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৮) আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বলল, ’আমার এক স্ত্রী আছে। আমার মা তাকে ত্বালাক দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন।’ আবূ দারদা বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, পিতা-মাতা জান্নাতের দুয়ারসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দুয়ার। সুতরাং তুমি যদি চাও, তাহলে এ দুয়ারকে নষ্ট কর অথবা তার রক্ষণাবেক্ষণ কর।
وَعَن أَبي الدَّردَاءِ أَنَّ رَجُلاً أَتَاهُ قَالَ : إنّ لِي امرَأةً وإنّ أُمِّي تَأمُرُنِي بِطَلاقِهَا، فَقَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُالوَالِدُ أوْسَطُ أبْوَابِ الجَنَّةِ فَإنْ شِئْتَ فَأضِعْ ذلِكَ البَابَ أَو احْفَظْهُ رواه الترمذي وَقالَ حديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭১৯) মুআয বিন জাবাল (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন আমল শিখিয়ে দেন; যা করলে আমি জান্নাত প্রবেশ করতে পারব।’ তিনি বললেন, ’’তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক (অংশী) করো না; যদিও তোমাকে সে ব্যাপারে শাস্তি দেওয়া হয় এবং পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। তোমার মাতা-পিতার আনুগত্য কর; যদিও তারা তোমাকে তোমার ধন-সম্পদ এবং সমস্ত কিছু থেকে দূর করতে চায়। আর ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করো না; কারণ, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করে তার উপর থেকে আল্লাহর দায়িত্ব উঠে যায়।
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: أَتَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ عَلِّمْنِيْ عَمَلًا إِذَا أَناَ عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ قَالَ لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ شيئاً وَإِنْ عُذِّبْتَ وَحُرِّقْتَ وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ وَإِنَّ أخرجاك مِنْ مَالِكٍ وَمِنْ كُلِّ شَيٍّء هُوَ لَكَ وَلاَ تَتْرُكِ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২০) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন জনের দু’আ সন্দেহাতীতভাবে গৃহীত হয়ঃ (১) নির্যাতিত ব্যক্তির দু’আ, (২) মুসাফিরের দু’আ এবং (৩) ছেলের জন্য মাতা-পিতার (দু’আ বা) বদ্দুআ।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ثَلاَثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَات لاَ شَكَّ فِيهِنَّ : دَعْوَةُ المَظْلُومِ وَدَعْوَةُ المُسَافِرِ وَدَعْوَةُ الوَالِدِ عَلَى وَلَدِهِرواه أَبُو داود والترمذي
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২১) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে রয়েছে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলার সন্তুষ্টি, আর তাদের অসন্তুষ্টিতে রয়েছে তাঁর অসন্তুষ্টি।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رِضَى الرَّبِّ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي رِضَى الْوَالِدِ وَسَخَطُ الرَّبِّ فِي سَخَطِ الْوَالِدِ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২২) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে আরজ করল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি অনেক (বড়) গোনাহ করে ফেলেছি। আমার কি কোন তওবাহ (প্রায়শ্চিত্ত) আছে?’ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মা-বাপ আছে কি? লোকটি বলল, ’জী না।’ তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ’’তাহলে তোমার খালা আছে কি?’’ লোকটি বলল, ’জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, তাহলে তুমি তার সেবাযত্ন কর।
عَنِ ابنِ عُمَرَ قَالَ أَتَى رَسُولَ اللهِ ﷺ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَذْنَبْتُ ذَنْبًا كَبِيرًا فَهَلْ لِي تَوْبَةٌ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَلَكَ وَالِدَانِ قَالَ لَا قَالَ فَلَكَ خَالَةٌ قَالَ نَعَمْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَبِرَّهَا إِذًا
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২৩) বারা ইবনে আযেব (রাঃ) কৃর্তক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, খালা মায়ের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত।
وَعَنِ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الخَالةُ بِمَنْزِلَةِ الأُمِّ رواه الترمذي وَقالَ حديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২৪) আবূ বকরাহ নুফাই ইবনে হারেস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বললেন, ’’আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কাবীরাহ গোনাহগুলো সম্পর্কে জ্ঞাত করবো না?’’ সবাই বললেন, ’অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ’’(সেগুলো হচ্ছে) আল্লাহর সাথে শির্ক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া।’’ এতক্ষণ তিনি হেলান দিয়ে বসেছিলেন, এবার সোজা হয়ে বসে বললেন, ’’শুনে রাখ, আর মিথ্যা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।’’ এ কথাটি তিনি পুনঃ পুনঃ বলতে থাকলেন। এমনকি আমরা বলতে লাগলাম, ’এবার যদি তিনি চুপ হতেন!’
وَعَن أَبي بَكرَةَ نُفَيعِ بنِ الحَارِثِ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ألا أُنَبِّئُكُمْ بأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟ ثلاثاً قُلْنَا: بَلَى، يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ الإشْرَاكُ بالله وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ وكان مُتَّكِئاً فَجَلَسَ فَقَالَ ألاَ وَقَوْلُ الزُّورِ وَشَهَادَةُ الزُّورِ فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى قُلْنَا: لَيْتَهُ سَكَتَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২৫) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, কাবীরাহ গুনাহসমূহ হচ্ছে, আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, প্রাণ হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম খাওয়া।
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الكَبَائِرُ : الإشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْس وَاليَمِينُ الغَمُوسُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২৬) উক্ত সাহাবী (রাঃ) হতেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’কাবীরাহ গুনাহসমূহের একটি হল আপন পিতা-মাতাকে গালি দেওয়া।’’ জিজ্ঞেস করা হল, ’হে আল্লাহর রসূল! আপন পিতা-মাতাকে কি কোন ব্যক্তি গালি দেয়?’ তিনি বললেন, হ্যাঁ, সে লোকের পিতাকে গালি-গালাজ করে, তখন সেও তার পিতাকে গালি-গালাজ করে থাকে এবং সে অন্যের মা-কে গালি দেয়, সুতরাং সেও তার মা-কে গালি দেয়। (বুখারী ৫৯৭৩, মুসলিম ২৭৩)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, কাবীরাহ গুনাহসমূহের একটি হল নিজের পিতা-মাতাকে অভিশাপ করা।’’ জিজ্ঞেস করা হল, ’হে আল্লাহর রসূল! মানুষ নিজের পিতা-মাতাকে কিভাবে অভিশাপ করে?’ তিনি বললেন, ’’সে অপরের পিতাকে গালি-গালাজ করে, তখন সেও তার পিতাকে গালি-গালাজ ক’রে থাকে। আর সে অন্যের মা-কে গালি দেয়, বিনিময়ে সেও তার মা-কে গালি দেয়।
وَعَنهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ مِنَ الكَبَائِر شَتْمُ الرَّجُل وَالِدَيهِ قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ وَهَلْ يَشْتُمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ قَالَ نَعَمْ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أبَاه وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ متفقٌ عليه
وَفِيْ رِوَايَةٍ إنَّ مِنْ أكْبَرِ الكَبَائِرِ أنْ يَلْعَنَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ قِيلَ :يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ يَلْعَنُ الرَّجُلُ وَالِدَيهِ قَالَ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أباهُ وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ
পরিচ্ছেদঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
(১৭২৭) আবূ ঈসা মুগীরা বিন শু’বাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্য (তিনটি কর্মকে) হারাম করেছেন; মায়ের অবাধ্যাচরণ করা, অধিকার প্রদানে বিরত থাকা ও অনধিকার কিছু প্রার্থনা করা এবং কন্যা জীবন্ত প্রোথিত করা। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন (তিনটি কর্ম); ভিত্তিহীন বাজে কথা বলা (বা জনরবে থাকা), অধিক (অনাবশ্যক) প্রশ্ন করা (অথবা প্রয়োজনের অধিক চাওয়া) এবং ধন-মাল বিনষ্ট (অপচয়) করা।
وَعَن أَبي عِيسَى المُغِيرَةِ بنِ شُعبَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إنَّ اللهَ تَعَالَى حَرَّمَ عَلَيْكُمْ : عُقُوقَ الأمَّهَاتِ وَمَنْعاً وَهَاتِ وَوَأْدَ البَنَاتِ وكَرِهَ لَكُمْ : قِيلَ وَقالَ وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ وَإضَاعَةَ المَالِ متفقٌ عليه