পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭২৯। ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শীতের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে দেখলাম যে, তাঁর সাহাবীগণ সালাতরত অবস্থায় তাদের কাপড়ের ভিতর থেকে নিজ নিজ হাত উত্তোলন করছিলেন।[1]
সহীহ।
মাসআলাহঃ সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করা
(ক) রফ‘উল ইয়াদাইন এর অর্থ, নিয়ম ও সময় এবং তৎসম্পর্কিত প্রসিদ্ধ সহীহ হাদীসসমূহঃ
রফ‘উল ইয়াদাইন এর অর্থ হচ্ছে দু’ হাত উঁচু করা। হাদীসে রফ‘উল ইয়াদাইনের দু’টি নিয়ম বর্ণিত আছে। তা হলো, দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত অথবা কানের লতি বরাবর উঁচু করা। সালাত আদায়কালে চারটি সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করতে হয়। (১) তাকবীরে তাহরীমার সময় (২) রুকু‘তে যাওয়ার সময় (৩) রুকু‘ থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবার সময় (৪) তিন বা চার রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে) প্রথম বৈঠক শেষে তৃতীয় রাক‘আতের জন্য দাঁড়িয়ে বুকে হাত বাঁধার সময়।
এ হিসেবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে তিন বার দু’ রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে পাঁচ বার, তিন রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে আট বার এবং চার রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে মোট দশ বার রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (দেখুন, সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, নাসায়ী আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও অন্যান্য) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুকাল পর্যন্ত আজীবন উল্লিখিত সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করেছেন এবং উক্ত নিয়মেই সালাত আদায় করেছেন।
এ বিষয়ে বর্ণিত অসংখ্য সহীহ হাদীসাবলী থেকে কয়েকটি প্রসিদ্ধতম হাদীস পেশ করা হলোঃ
(১) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন কাঁধ পর্যন্ত দু’ হাত উঠাতেন, এবং যখন তিনি রুকু‘র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন, আবার যখন রুকু‘ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এ রকম করতেন এবং সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন। তবে তিনি সিজদার সময় এমন করতেন না। (দেখুন, সহীহুল বুখারী, ৭৩৪, ৭৩৫, অনুচ্ছেদ-তাকবীরে তাহরীমা, রুকু‘তে যাওয়ার সময় ও রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, আহমাদ, মুয়াত্তা মালিক, মুয়াত্তা মুহাম্মাদ, ত্বাহাভী, দারাকুতনী, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, বায়হাক্বী, মুসান্নাফ ‘আব্দুর রাজ্জাক, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ, নাসবুর রায়াহ, তালখীসুল হাবীব, তিরমিযী, অনুচ্ছেদ- রুকু‘র সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা, ইমাম তিরমিযী বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী উমার ওয়াইল ইবনু হুজর, আনাস আবূ হুরাইরাহ, মালিক ইবনু হুওয়াইবিস, আবূ হুমাইদ, আবূ উসাইদ, সাহল ইবনু সা‘দ, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ, আবূ কাতাদাহ, আবূ মূসা আল আশ‘আরী, জাবির, উমাইর লাইসী (রাঃ) প্রমুখ সাহাবায়ি কিরামের সূত্রেও হাদীস বর্ণিত আছে)।
(২) উপরোক্ত হাদীসটি বায়হাক্বীতে বর্ধিতভাবে বর্ণিত আছে যে, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) বলেন. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ লাভ অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত সর্বদাই উক্ত নিয়মেই সালাত আদায় করতেন (অর্থাৎ তিনি আজীবন উক্ত তিন সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন)। (দেখুন, বায়হাক্বী, হিদায়াহ দিরায়াহ, ১/১১৪, ইমাম বুখারীর উস্তাদ ‘আলী ইবনুল মাদীনী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস আমার নিকটে সমস্ত উম্মাতের উপর হুজ্জাত বা দলীল স্বরূপ)।
(৩) ইবনু উমার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ রাক‘আত শেষে তৃতীয় রাক‘আতে দাঁড়ানোর সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন- (দেখুন, সহীহুল বুখারী)। ‘আলী (রাঃ) ও অন্যদের থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে- (দেখুন, জুযউল ক্বিরাআত)।
(৪) মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতের জন্য তাকবীর দিতেন তখন কান পর্যন্ত দু’ হাত উঠাতেন। একইভাবে তিনি রুকু‘তে যাওয়ার সময় কান পর্যন্ত দু’ হাত উঠাতেন এবং রুকু‘ থেকে উঠার সময়ও কান পর্যন্ত দু’ হাত উঠাতেন ও সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন। (দেখুন, সহীহ মুসলিম, হা/ ৩৯১, সহীহ সুনানে ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, ইরওয়া (২/৬৭, হাদীসটি সহীহ)।
(৫) ‘আলী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাকবীরে তাহরীমাহ সময়, রকু‘র সময় রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় এবং দু’ রাক‘আত শেষে তৃতীয় রাক‘আতে দাঁড়ানোর সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করতে দেখেছেন। (দেখুন, বায়হাক্বী ২/৮০, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত, সহীহ সুনানে ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, হাদীসটি হাসান সহীহ)।
(৬) ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাত আদায় করেছি। তিনি তাকবীর দিয়ে সালাত আরম্ভ করে দু’ হাত উঁচু করলেন। অতঃপর রুকু‘ করার সময় এবং রুকু‘র পরেও দু’ হাত উঁচু করলেন। (দেখুন, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত, আহমাদ, সহীহ সুনানে ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, হাদীসটি সহীহ)।
(৭) আনাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শুরুর সময় রুকু করার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করেছেন। (দেখুন, সহীহ ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত, হাদীসটি সহীহ)।
(৮) মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দশজন সাহাবীর মধ্যে আবূ হুমাইদের নিকট উপস্থিত ছিলাম, তাদের (আবূ হুমাইদ, আবূ উসাইদ, সাহল ইবনু সা‘দ, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ- (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীগণের) মধ্যে একজন আবূ কাতাদাহ ইবনু রব্য়ী (রাঃ)ও ছিলেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে আপনাদের চেয়ে বেশি অবগত। তাঁরা বললেন, তা কিভাবে? আল্লাহর শপথ! আপনি তো আমাদের চেয়ে তাঁর অধিক নিকটবর্তী ও অধিক অনুসরণকারী ছিলেন না। তিনি বললেন, বরং আমি তো তাঁকে পর্যবেক্ষণ করছিলাম। তাঁরা বললেন, এবার তাহলে উল্লেখ করুন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেন তখন দু’ হাত উঁচু করতেন এবং যখন রুকু‘ করতেন, রুকু‘ থেকে মাথা উঠাতেন, এবং দু’ রাক‘আত শেষে তৃতীয় রাক‘আতে দাঁড়াতেন তখনও দু’ হাত উঁচু করতেন। এ বর্ণনা শুনে তাঁরা সকলেই বললেন, আপনি সত্যই বলেছেন। (দেখুন, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত, সহীহ ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, হাদীসটি সহীহ)।
(৯) আবূ মূসা আল আশ‘আরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত দেখাবো? অতঃপর তিনি তাকবীর দিয়ে দু’ হাত উঁচু করলেন। অতঃপর রুকু‘র জন্য তাকবীর দিয়ে দু’ হাত উঁচু করলেন। অতঃপর ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে দু’ হাত উঁচু করলেন। অতঃপর বললেন, এভাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছেন, অতএব তোমরাও করো। আর তিনি দু’ সিজদার মাঝে দু’ হাত উঁচু করেননি। (দেখুন, সহীহ সনদে দারাকুতনী ১/২৯২, বায়হাক্বী, হাদীসটি সহীহ)
(১০) আবূ বাকর সিদ্দিক (রাঃ) বরেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সালাত আদায় করেছি। তিনি যখন সালাত শুরু করতেন, তখন দু’ হাত উত্তোলন করতেন এবং যখন রুকু‘ করতেন ও রুকু‘ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও দু’ হাত উত্তোলন করতেন। (দেখুন, বায়হাক্বী ২/৭৩, ৭৪, এবং ইমাম যাহাবীর শারহু মুহাযযাব ২/৪৯)।
(১১) আবূ যুবায়র সূত্রে বর্ণিত। জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) যখন সালাত আরম্ভ করতেন তখন দু’ হাত উঁচু করতেন এবং যখন রুকু‘ করতেন ও রুকু‘ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ দু’ হাত উঁচু করতেন এবং তিনি বলতেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এভাবেই রফ‘উল ইয়াদাইন করতে দেখেছি। (দেখুন, সহীহ সুনানে ইবনু মাজাহ, হাদীসটি সহীহ)।
(১২) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি তিনি সালাত শুরুর সময় রুকু‘র সময় এবং (রুকু‘ থেকে উঠে) সিজদাতে যাওয়ার সময় কাঁধ বরাবর দু’ হাত উঁচু করেছেন। (সহীহ সুনানে ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, ও অন্যান্য, হাদীসটি সহীহ)।
(১৩) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক তাকবীরে রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন- (সহীহ ইবনু মাজাহ, সহীহ আবূ দাঊদ, হাদীসটি সহীহ) একদা ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে মায়মূন আল-মাক্বী বললেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু জুবায়র (রাঃ)-কে সালাতের শুরুতে, রুকু‘র সময় সিজদার প্রাক্কালে এবং তৃতীয় রাক‘আতের জন্য দাঁড়ানোর সময় দু’ হাতে ইশারা (রফ‘উল ইয়াদাইন) করতে দেখেছি। এ কথা শুনে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তুমি যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত দেখতে পছন্দ করো তাহলে ইবনু জুবায়রের সালাতরে অনুকরণ করো। (হাদীসটি সহীহ, দেখুন, আবূ দাঊদ, ত্বাবারানী কাবীর ১১/১৩৩, ও অন্যান্য)
(খ) রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে বর্ণিত হাদীস ও আসারের সংখ্যা এবং সেসবের মান-
(১) রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে বর্ণিত সর্বমোট সহীহ হাদীস ও আসারের সংখ্যা অন্যুন ৪০০। (দেখুন, সিফরুস সাআদাত, পৃঃ ১৫)।
(২) ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীসসমূহের সনদের চেয়ে বিশুদ্ধতম সনদ আর নেই। (দেখুন, ফাতহুল বারী ২/২৫৭)।
(৩) ইমাম সুয়ূতী (রহঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে বর্ণিত রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস মুতাওয়াতির পর্যায়ের। (দেখুন, তুহফাতুল আহওয়াযী ২/১০০, ১০৬, দিরায়াতুল লাবীব, ১৬৯)।
(৪) হাদীসের অন্যতম ইমাম হাফিয তাকীউদ্দিন সুবকী (রহঃ) বলেন, সালাতের মধ্যে রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীস এতো বেশি যে, রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীসকে মুতাওয়াতির বলা ছাড়া উপায়ই নেই। (দেখুন, সুবকীর জুযউ রফ‘উল ইয়াদাইন)।
(গ) রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীগণের সংখ্যা-
* রুকু‘তে যাওয়া ও রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা সম্পর্কে চার খালীফাহ প্রায় ২৫ জন সাহাবী থেকে বর্ণিত হাদীসসমূহ রয়েছে। (সালাতুল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃঃ ৬৫, হাদীস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রকাশিত)।
* আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম জাওযী (রহঃ) বলেন, তাকবীরে তাহরীমাহ রুকু‘র সময় ও রুকু থেকে উঠে এ তিন সময়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফ‘উল ইয়াদাইন করেছেন এ সম্পর্কে প্রায় ৩০ জন সাহাবী বর্ণনা করেছেন। (দেখুন, যাদুল মা‘আদ)
* হাফিয ইবনু হাজার আসকালানীর উস্তাদ হাফিয আবূল ফাযল (রহঃ) রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীর সংখ্যা তন্ন তন্ন করে খুঁজে মোট ৫০জন পেয়েছেন। (দেখুন, ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৭, ফাতহুল বারী ২/২৫৮)।
* মুহাদ্দিস ইরাক্বী (রহঃ) তাঁর ফাতহুল মুগীস গ্রন্থে বলেন, আমি সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস প্রায় ৫০জন সাহাবা থেকে একত্রিত করেছি। তিনি তাকরীবুল আসানীদ ও তাকরীবুল মাসানীদ গ্রন্থে বলেন, জেনে রাখো! সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস ৫০জন সাহাবায়ি কিরাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। (দেখুন, ফাতহুল মুগীস ৪/৮, কিতাবু তাকরীবুল আসানীদ ও তাকরীবুল মাসানীদ, পৃষ্ঠা ১৮)।
* মূলতঃ অসংখ্য সাহাবায়ি কিরাম রফ‘উল ইয়াদাইনে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে হাদীসের অন্যতম ইমাম হাফিয তাকীউদ্দিন সুবকী (রহঃ) স্বীয় ‘জুযঊ রফ‘উল ইয়াদাইন’ গ্রন্থে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজন সাহাবী সহ এমন ৪৯জন বিশিষ্ট সাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন যাঁরা সকলেই রফ‘উল ইয়াদাইনের হাদীস বর্ণনা করেছেন। নিম্নে তাঁদের নামসমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
(১) আবূ বাকর সিদ্দিক (রাঃ), (২) উমার (রাঃ), (৩) ‘উসমান (রাঃ), (৪) ‘আলী (রাঃ), (৫) তালহা (রাঃ), (৬) যুবায়র (রাঃ), (৭) সা‘দ (রাঃ), (৮) সাঈদ (রাঃ), (৯) ‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ), (১০), আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ (রাঃ), (১১) মালিক ইবনু হুওয়াই রিস (রাঃ), (১২) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ), (১৩) উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ), (১৪) আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ), (১৫) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ), (১৬) ইমাম হাসান (রাঃ), (১৭) ইমাম হুসাইন (রাঃ), (১৮) বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ), (১৯) যিয়াদ ইবনু হারিস (রাঃ), (২০) আবূ কাতাদাহ (রাঃ), (২১) হাসান ইবনু সাআদ (রাঃ), (২২) আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ), (২৩) সুলাইমান ইবনু ইয়াসার (রাঃ), (২৪) ‘আমর ইবনু ‘আস (রাঃ), (২৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ), (২৬) ‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ), (২৭) বারিয়াহ (রাঃ), (২৮) ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ), (২৯) ‘আদী ইবনু ‘আজলান (রাঃ), (৩০) আবূ মাস‘উদ আল-আনসারী (রাঃ), (৩১) ‘উমার লাইসী (রাঃ), (৩২) ‘আয়িশাহ (রাঃ), (৩৩) আবুদ দারদা (রাঃ), (৩৪) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ), (৩৫) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ), (৩৬) আনাস (রাঃ), (৩৭) ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ), (৩৮) জাবির (রাঃ), (৩৯) ‘আবদুল্লাহ ইবনু জুবায়র (রাঃ), (৪০) আবূ হুমাইদ সাঈদী (রাঃ), (৪১) আবূ সাঈদ (রাঃ), (৪২) মুহাম্মাদ ইবনু সালামাহ (রাঃ), (৪৩) উম্মু দারদা (রাঃ), (৪৪) আরাবী (রাঃ), (৪৫) মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ), (৪৬) সালমান ফারিসি (রাঃ), (৪৭) বারিরাহ ইবনু খাদির (রাঃ), (৪৮) হাকিম ইবনু ‘উমাইর (রাঃ), (৪৯) এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাবিন (রাঃ)। উল্লিখিত সমস্ত সাহাবায়ি কিরামই রফ‘ঊল ইয়াদাইনের হাদীস বর্ণনা করেছেন। (দেখুন, জুযয়ি সুবকী, পৃঃ ৭)।
(ঘ) রফ‘উল ইয়াদাইনের উপর সমস্ত সাহাবায়ি কিরামের ‘আমল ও ফাতাওয়াহ-
সাহাবায়ি কিরাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেই ক্ষ্যান্ত হননি বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণে সমস্ত সাহাবীগণও সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। তার প্রমাণঃ
(১) ‘আলী (রাঃ)-এর পুত্র হাসান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণের সকলেই রুকু‘তে যাওয়ার সময়, এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (দেখুন, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত, বায়হাক্বী ২/৭৫)।
(২) সা‘দ ইবনু জুবায়র (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমস্ত সাহাবীই সালাত শুরুর সময়, রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (দেখুন, বায়হাক্বী ২/৭৫)।
(৩) ইমাম বুখারী বলেন, ইমাম হাসান (রাঃ) ও হুমাইদ ইবনু হিলাল বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমস্ত সাহাবীগণ রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। তাঁর কোনো সাহাবী রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন না বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। (দেখুন, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত)।
(৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার সাহাবী ছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে সহীহুল বুখারীর শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, একমাত্র ইবনু মাস‘ঊদ ছাড়া বাকী সমস্ত সাহাবায়ি কিরাম রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (দেখুন, ফাতহুল বারী ২/২১৯)।
(৫) ইমাম হাকিম (রহঃ) বলেন, রফ‘উল ইয়াদইন ছাড়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এমন কোনো সুন্নাতের কথা আমরা জানি না যে ব্যাপারে খুলাফায়ি রাশিদীন, আশারায়ি মুবাশশিরীন এবং বিভিন্ন শহরে অবস্থানকারী বচড় বড় সাহাবীগণ একমত হয়েছেন। (দেখুন, নাসবুর রায়াহ ১/৪১৬-৪১৮, তালখীসুল হাবীর, পৃঃ ৮২, নায়লুল ফারকাদাইন, পৃঃ ২৬, ইমাম যায়লায়ী হানাফী, আবদুল হাই লাখনৌভী হানাফী, আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশমিরী হানাফী (রহঃ) ও অন্যান্যরা একে ইমাম হাকিম সূত্রে বর্ণনা করেছেন)।
(ঙ) সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইনের পক্ষে ৫৩জন বিশিষ্ট তাবিঈ ও তাবে তাবিঈন ইমামগণ-
ইমাম বুখারী, ইমাম বায়হাক্বী ও ইমাম তাক্বীউদ্দীন সুবকী (রহঃ) ৫৩ জন এমন বিশিষ্ট তাবেঈ এবং তাবে তাবেঈনের নাম উল্লেখ করেছেন- যাঁরা সালাত আদায়কালে সর্বদা তিন জায়গায় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। উক্ত ৫৩ জন হলেনঃ
(১) সা‘দ ইবনু জুবায়র (২) ‘আত্বা ইবনু আবূ রিবাহ (৩) মুজাহিদ (৪) কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (৫) সালিম ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (৬) ‘উমার ইবনু ‘আবদুল আযীয (৭) নু‘মান ইবনু আবুল আয়াশ (৮) ইবনু সিরীন (৯) হাসান বাসরী (১০) ‘আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (১১) নাফি‘ (১২) হাসান ইবনু মুসলিম (১৩) ক্বায়িস ইবনু সা‘দ (১৪) মাকহুল (১৫) তাউস (১৬) আবূ নাজরাহ (১৭) আবূ আহমাদ (১৮) ইবনু আবূ নাজীহ (১৯) ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াহ (২০) ইমাম আওযায়ী (২১) ইসমাঈল (২২) ইসহাক্ব ইবনু ইবরাহীম (২৩) ইবনু মুঈন (২৪) আবূ ‘উবাইদাহ (২৫) আবূ সাত্তার (২৬) হুমাইদী (২৭) ইমাম ইবনু জারীর (২৮) হাসান ইবনু জা‘ফর (২৯) সালিম ইবনু ‘আবদুল আযীয (৩০) ‘আলী ইবনু হুসাইন (৩১) ‘আবদ ইবনু ‘উমার (৩২) ঈসা ইবনু মুসা (৩৩) ‘আলী ইবনু হাসান (৩৪) কাতাদাহ (৩৫) ‘আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ (৩৬) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উসমান (৩৭) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (৩৮) ‘আবদুল্লাহ ইবনু জুবায়র (৩৯) ‘আলী ইবনু মাদীনী (৪০) ‘আবদুর রাহমান (৪১) মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (৪২) মু‘তামির (৪৩) কা‘ব ইবনু সা‘দ (৪৪) কা‘ব ইবনু সাঈদ (৪৫) ইয়াহইয়া (৪৬) ইয়াহইয়া ইবনু মুঈন (৪৭) ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (৪৮) ইয়াকূব (৪৯) ইবনু মুবারক (৫০) ইমাম যুহরী (৫১) মালিক ইবনু আনাস (৫২) ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (৫৩) এবং ইমাম শাফিঈ (রহঃ)। উল্লিখিত ৫৩ জন বিশিষ্ট তাবেঈ ও তাবে‘ তাবেঈন রুকু‘তে যাওয়ার সময় ও রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় দু’ হাত উত্তোলন করতেন। (দেখুন, বুখারীর জুযউ রফ‘উল ইয়াদাইন, বায়হাক্বী ২/৭৫, সুবকীর জুযউ রফ‘উল ইয়াদাইন, পৃঃ ২ এবং আয়নী ৩/১০)।
(চ) রফ‘উল ইয়াদাইনের পক্ষে জমহুর মুহাদ্দিস, জমহুর ফাক্বীহ ও মুজতাহিদ ইমামগণের অভিমত-
(১) ইমাম বুখারী ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ)- মক্কাহ, মদীনাহ, হিজাজ, ইয়ামান, সিরিয়া, ইরাক, বাসরাহ, খুরাসান প্রভৃতি দেশের লোকেরা সকলেই রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (দেখুন, বুখারীর জুযউল ক্বিরাআত)।
অসংখ্য সহীহ হাদীস ও আসার বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও যারা রফ‘উল ইয়াদাইন করেন না তাদের বিরুদ্ধে ইমাম বুখারী (রহঃ) ‘জুযউল রফ‘উল ইয়াদাইন’ নামে একটি স্বতন্ত্র কিতাবই রচনা করেছেন এবং সেখানে এর পক্ষে ১৯৮টি দলীল বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে হাদীসে অন্যতম হাফিয তাকিউদ্দিন সুবকী (রহঃ)ও রফ‘উল ইয়াদাইনের পক্ষে ‘জুযউ রফ‘উল ইয়াদাইন’ নামে একখানা স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন। সুতরাং মুহাদ্দিসগণের নিকট রফ‘উল ইয়াদাইন যে কত বড় গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত তা সহজেই অনুমেয়।
(২) ইমাম ইবনু হিব্বান (রহঃ) তার সহীহ ইবনু হিব্বান গ্রন্থে রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে হাদীস উল্লেখ করে বলেন, উল্লিখিত হাদীস এটাই প্রমাণ করে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মাতকে সালাতের রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতঃপর তিনি মালিক ইবনু হুয়াইরিস বর্ণিত হাদীস উল্লেখ করেন- নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা সেভাবে সালাত আদায় করো যেভাবে তোমরা আমাকে আদায় করতে দেখো। (দেখুন, সহীহ ইবনু হিববান, ৫/১৯০)।
(৩) ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম আবদুল্লাহ ইবনু মুবারাক বলেছেন, রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কিত হাদীস সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুপ্রমাণিত। কিন্তু ইবনু মাসঊদ যে বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমবার (তাক্ববীরে তাহরীমা) ছাড়া আর কোথাও রফ‘উল ইয়াদাইন করেননি- এ হাদীসটি প্রমাণিত নয় এবং প্রতিষ্ঠিতও নয়। (দেখুন, জামি‘আত তিরমিযী, অনুঃ রফ‘উল ইয়াদাইন প্রসঙ্গ)। ইবনু মুবারাক আরো বলেন, রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস ও ইসনাদ বিদ্যমান থাকার কারণে আমি যেন দেখতে পাচ্ছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফ‘উল ইয়াদাইন করেছেন। (দেখুন, বায়হাক্বী মা‘রিফাহ ২/১৪২)
(৪) ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু নাসর (মৃতঃ ২৯৪ হিঃ) বলেনঃ রফ‘উল ইয়াদাইন করার পক্ষে প্রায়ই সকল দেশের আলিমগণের অভিমত আছে। একমাত্র কুফার একটি গ্রুপ ছাড়া বাকী সবাই রফ‘উল ইয়াদাইন করেন। (দেখুন, ফাতহুল বারী)
(৫) ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম ইবনুল মাদীনী (রহঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহীহ হাদীসসমূহ মূলে মুসলিমদের উপর ইসলামের হাক্ব হচ্ছে সালাতের রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা।
(৬) ইবনু আবদুল বার (রহঃ) বলেনঃ (সমস্ত সাহাবায়ি কিরামের বিপরীতে) একমাত্র ইবনু মাসঊদই রুকু‘র সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন না করার কথা বর্ণনা করেছেন। (দেখুন, ফাতহুল বারী)।
(৭) শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহঃ) বলেনঃ রফ‘উল ইয়াদাইন এমনই নির্ভরযোগ্য প্রমাণাদি দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ি কিরাম ও পরবর্তী সমস্ত স্তরের শ্রেষ্ঠতম ইমাম ও মুজতাহিদগণ দ্বারা সর্বোতভাবে সাব্যস্ত ও সমর্থিত হয়েছে যে, একে রহিত বা পরস্পর বিরোধ দোষে দুষ্ট বলা অবান্তর ও অবাস্তব। (দেখুন, রওজাতুন নাদিয়া, ১/৯৬)।
(৮) হাফিয ইবনু কাইয়্যিম আল জাওযী (রহঃ) বলেনঃ সালাতের রুকু‘র সময় এবং রুকু‘ থেকে মাঠা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন না করা সম্পর্কে যতগুলো হাদীস রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বলে রয়েছে তার সবই বাতিল। এগুলোর একটি সঠিক নয়। যেমন ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদের হাদীস, যা তিনি শেষ দিকে বলেছেন বরং বায়হাক্বী খিলাফিয়াত গ্রন্থে সনদ সহকারে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে রুকু‘র সময় রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (দেখুন- আল-মানার, পৃষ্ঠা ৪৯)।
তিনি আরো বলেন, তাকবীরে তাহরীমার সময়, রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা সম্পর্কে প্রায় ত্রিশজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এর বিপরীত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। মৃত্যু পর্যন্ত সারা জীবন তিনি এ নিয়মেই সালাত আদায় করেছেন। আর বারাআ ইবনু ‘আযিব থেকে বর্ণিত এ সংক্রান্ত হাদীসটি সহীহ নয়। মূলতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এ নিয়ম পরিত্যাগ করেননি এবং এর থেকে প্রত্যাবর্তনও করেননি। আর ইবনু মাস‘ঊদের রফ‘উল ইয়াদাইন ত্যাগ করাটা এজন্য ছিলো না যে, তিনি তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জানতে পেরেছেন...। অথচ (শেষ বয়সে) ইবনু মাসঊদের রফ‘উল ইয়াদাইন না করার নিয়মের বিপরীতে রয়েছে বিপুল সংখ্যক সহীহ হাদীস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে এতোগুলো সহীহ, অকাট্য ও সুপ্রমাণিত ‘আমলী হাদীস বর্তমান থাকা সত্ত্বেও কী করে তা বর্জন করা যেতে পারে? এমনটি অকল্পনীয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্মনীতি অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন- আমীন। (দেখুন, যাদুল মাআদ)।
(৯) আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেনঃ রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা মুতাওয়াতির সূত্রে সাব্যস্ত। এটাই হচ্ছে ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহগণের অভিমত। ইবনু আসাকীরের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মালিক এর উপরই মারা গেছেন। হানাফীদের অনেকেই এ মত গ্রহণ করেছেন। (দেখুন, সিফাতু সালাতুন নাবী)
(১০) শায়খ সালিহ আল-উসাইমিন (রহঃ) বলেনঃ জেনে নেয়া আবশ্যক যে, সালাতে চারটি স্থানে রফ‘উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত। তা হচ্ছেঃ ১) সালাতের প্রারম্ভে তাকবীর তাহরীমা বলার সময় ২) রুকু‘তে যাওয়ার সময় ৩) রুকু‘ থেকে উঠার সময় ৪) প্রথম তাশাহুদ শেষ করে তৃতীয় রাক‘আতে উঠার সময়। এ চারটি স্থানের বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণনা এসেছে। আর জানাযা ও দু’ ঈদের সালাতে প্রত্যেক তাকবীরে রফ‘উল ইয়াদাইনবা হাত উত্তোলন করা শারী‘আত সম্মত। (দেখুন, ফাতাওয়াহ আরকানুল ইসলাম)।
(১১) স‘উদী আরবের প্রাক্তন গ্রান্ড মুফতী শায়খ আবদুল আযীয বিন বায (রহঃ) বলেনঃ মুসল্লীর জন্য সুন্নাত হচ্ছে, সে তাকবীরে তাহরীমাহ সময়, রুকু‘কালে, রুকু থেকে উঠার সময় এবং প্রথম তাশাহহুদ শেষে তৃতীয় রাক‘আতের জন্য দাঁড়ানোর সময় উভয় কাঁধ বা কান বরাবর ক্বিবলাহর দিকে মুখ করে দু’ হাত উত্তোলন করবে। এটাই সুন্নাত, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে প্রমাণিত। (দেখুন, ফাতাওয়াহ শায়খ বিন বায)।
(চ) রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে হানাফী মাযহাবের শ্রেষ্ঠ আলিমগণের অভিমত-
(১) মোল্লা ‘আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ সালাতে রুকু‘তে যাওয়ার সময় ও রুকু‘ থেকে উঠার সময় দু’ হাত না তোলা সম্পর্কে যেসব হাদীস বর্ণিত হয়েছে সেগুলো সবই বাতিল হাদীস। তন্মধ্যে একটিও সহীহ নয়। (দেখুন, মাওযু‘আতে কাবীর, পৃঃ ১১০)।
(২) হানাফী মুহাদ্দিস আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী হানাফী (রহঃ) রুকু‘তে যাওয়ার পূর্বে রফ‘উল ইয়াদাইন করার ব্যাপারে ইমাম আবূ হানিফা সম্পর্কে লিখেছেনঃ ইমাম আবূ হানিফা সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তা ত্যাগ করলে গুনাহ হবে। (দেখুন, ‘উমদাতুল ক্বারী ৫/২৭২)।
(৩) শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ যে মুসল্লী রফ‘উল ইয়াদাইন করে ঐ মুসল্লী আমার কাছে অধিক প্রিয় সেই মুসল্লীর চেয়ে যে রফ‘উল ইয়াদাইন করে না। কারণ রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীসগুলো সংখ্যায় বেশি এবং অধিকতর মজবুত। (দেখুন, হুজ্জাতুল্লাহলিল বালিগাহ ২/১০)।
শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (রহঃ) আরো বলেন, রফ‘উল ইয়াদাইন হচ্ছে সম্মান সূচক কর্ম। যা মুসল্লীকে আল্লাহর দিকে রুজু হওয়ার ব্যাপারে এবং সালাতে হওয়ার ব্যাপারে হুশিয়ার করে দেয়। (দেখুন, হুজ্জাতুল্লাহহিল বালিগাহ ২/১০)।
(৪) আল্লামা আবুল হাসান সিন্ধী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ যারা এ কথা বলে যে, তাকবীরে তাহরীমাহ ছাড়া রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবঙ রুকু‘ থেকে উঠার সময় দু’ হাত তোলার হাদীস মানসুখ ও রহিত তাদের ঐ দাবী দলীলবিহীন এবং ভিত্তিহীন। (দেখুন, শারহু সুনানে ইবনু মাজাহ, মিসরের ছাপা ১খন্ড ১৪৬ পৃঃ টিকা)।
(৫) আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশমিরী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ এ কথা জানা উচিত যে, সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীস সূত্র ও আমলের দিক দিয়ে মুতাওয়াতির, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এটা মানসুখও নয় এবং এর একটি হরফও নাকচ নয়। (দেখুন, নাইলুল ফারকাদাইন, পৃষ্ঠা ২২, রসূলে আকরাম কী নামায, পৃঃ ৬৯)।
(৬) আল্লামা আবদুল হাই লাখনৌভী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে রফ‘উল ইয়াদাইন করার প্রমাণ বেশি এবং প্রাধান্যযোগ্য। আর এটা মানসূখ বা নাকচ হবার দাবী যা ত্বাহাভী, ইবনুল হারাম ও আইনী প্রমুখ আমাদের দলের মনীষীদের পক্ষ থেকে প্রচারিত হয়েছে, তা এমনই প্রমাণহীন যে তদ্বারা রোগী নিরোগ হয় না এবং পিপাসার্তও তৃপ্ত হয় না। (দেখুন, আত-তা‘লীকুল মুমাজ্জাদ, পৃষ্ঠা ৯১)।
তিনি আরো বলেন, রুকু‘তে যাওয়ার সময় ও রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনেক সাহাবী (রাঃ) থেকে দৃঢ় সূত্রে ও সহীহ হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত ও সাব্যস্ত হয়েছে। (দেখুন, সিফরুস সাআদাত, মালাবুদ্দাহ মিনহু, রওযাতুন নাদিয়্যাহ ও হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ)।
(৭) ইমাম মুহাম্মাদের সাথী ও ইমাম আবূ ইউসুফের শিষ্য ইসাম ইবনু ইউসুফ আল বালাখী (রহঃ)-এর রফ‘উল ইয়াদাইন করা সম্পর্কে আল্লামা আবদুল হাই লাখনৌভী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ ইসাম ইবনু ইউসুফ ছিলেন ইমাম আবূ ইউসুফের সাগরীত এবং হানাফী। তিনি রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রকু‘ থেকে মাথা উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন- (আল-ফাওয়ায়িদুল বাহিয়্যাহ ফী তারাজিমিল হানাফীয়া, পৃঃ ১১৬)। আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারাক (রহঃ) সুফয়ান সওরী এবং শু‘বাহ (রহঃ) বলেন, ইসাম ইবনু ইউসুফ মুহাদ্দিস ছিলেন। সেজন্য তিনি রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। (আল-ফাওয়ায়িদুল বাহিয়্যাহ, পৃঃ ১১৬)।
(৮) শায়খ আবুত ত্বালীব মাক্কী হানাফী (রহঃ) তার ‘কুতুল কুলূব’ গ্রন্থে সালাতের সুন্নাতসমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, রুকু‘তে যাওয়ার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা ও তাকবীর বলা সুন্নাত। তারপর ‘সামিআল্লাহু লিমান হামীদাহ’ বলে রফ‘উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত। (দেখুন কুতুল কুলুব ৩/১৩৯)।
(৯) ক্বাজী সানাউল্লাহ পানিপত্তি হানাফী (রহঃ) বলেনঃ বর্তমান সময়ে অধিকাংশ আলিমের দৃষ্টিতে রফ‘উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত। অধিকাংশ ফাক্বীহ ও মুহাদ্দিসসিনে কিরাম একে প্রমাণ করেছেন। (দেখুন, মালাবুদ্দাহ মিনহু, পৃঃ ৪২, ৪৪)।
(১০) শায়খ আব্দুল ক্বাদীর জ্বিলানী (রহঃ) সালাতের সুন্নাতসমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ সালাত শুরু করার সময়, রুকু‘তে যাওয়ার সময় এবং রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত। (দেখুন, গুনিয়াতুত ত্বালিবীন, পৃঃ ১০)।
(১১) দ্বিতীয় আবূ হানীফা নামে খ্যাত আল্লামা ইবনু নুজাইম (রহঃ) বলেনঃ রুকু‘তে যাওয়ার সময় ও রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করলে সালাত বরবাদ হওয়া কথা যা মাকহুল নাসাফী ইমাম আবূ হানীফা থেকে বর্ণনা করেছেন তা বীরল বর্ণনা, যার রিওয়ায়াত ও দিরায়াত উভয়েরই পরিপন্থি অর্থাৎ বর্ণনা সূত্র তোঃ ও জ্ঞানত্যঃ ঠিক না। (দেখুন, বাহরু রায়িক ১/৩১৫, যাহরাতু রিয়াযুল আবরার, পৃঃ ৮৯)।
(১২) দেওবন্দের শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেনঃ রফ‘উল ইয়াদাইন মানসূখ নয়। আর এর স্থায়িত্ব প্রমাণিত নয়- (দেখুন, ইযাহুল আদিল্লাহ)। ইতোপূর্বে ইমাম যায়লায়ী হানাফীর বরাত দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে যে, এর স্থায়িত প্রমাণিত। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত আজীবন রফ‘উল ইয়াদাইন করেছিলেন। (দেখুন, নাসবুর রায়াহ তাখরীজ আহাদিসিল হিদায়াহ ১/৪১০)।
(১৩) মুফতী আমিমুল ইহসান লিখেছেনঃ যারা বলেন, রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীস মানসূখ- আমি বলি তাদের একটি মাত্র দলীল (অর্থাৎ ইবনু মাসঊদের হাদীস), দ্বিতীয় কোনো দলীল নেই। (দেখুন, ফিক্বহুস সুন্নাহ ওয়াল আসার, পৃঃ ৫৫)।
[উল্লেখ্য, ইবনু মাসঊদের উক্ত হাদীসটি বিশুদ্ধতা নিয়ে মুহাদ্দিসগণ মতভেদ করেছেন। কতক মুহাদ্দিস সেটিকে হাসান বা সহীহ আখ্যায়িত করলেও অধিকাংশ মুহাদ্দিসিনে কিরাম ইবনু মাসঊদের বর্ণনাকে দুর্বল, বাতিল এবং দলীলের অযোগ্য বলেছেন। সামনে ৭৪৮৯নং হাদীসের টিকায় এর আলোচনা আসছে]
(১৪) হানাফী মাযহাবের ফিক্বাহ গ্রন্থাবলীতেও রফ‘উল ইয়াদাইনের পক্ষে বক্তব্য রয়েছে। তন্মধ্যকার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
(ক) রুকু‘র পূর্বে ও পরে রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীস প্রমাণিত আছে। দেখুন, আয়নুল হিদায়া ১/৩৮৪, নুরুল হিদায়া)
(খ) রফ‘উল ইয়াদাইন করার হাদীস রফ‘উল ইয়াদাইন না করার হাদীসের চেয়ে শক্তিশালী ও মজবুত। (দেখুন, আয়নুল হিদায়া ১/৩৮৯)।
(গ) বায়হাক্বীর হাদীসে আছে, ইবনু উমার বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত সালাতের মধ্যে রফ‘উল ইয়াদাইন করেছেন। (দেখুন, আয়নুল হিদায়া ১/৩৮৬)।
(ঘ) রফ‘উল ইয়াদাইন না করার হাদীস দুর্বল। (দেখুন, নুরুল হিদায়া, পৃঃ ১০২)
(ঙ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রফ‘উল ইয়াদাইন প্রমাণিত আছে এবং এটাই হাক্ব। (দেখুন, আয়নুল হিদায়া ১/৩৮৬)।
মূলতঃ হানাফী মাযহাবের বিশিষ্ট ইমাম ও মুহাক্কিক আলিমগণসহ ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল ও তাদের সমস্ত অনুগামী ও আলেমগণ এবং প্রায় সমস্ত ফুকাহায়ি মুহাদ্দিসিন সালাতে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়াও রুকু‘র আগে, রুকু‘র পরে এবং তৃতীয় রাক‘আতের প্রারম্ভে কাঁধ বা কান পর্যন্ত দু’ হাত উঠানোর পক্ষে অভিমত পোষণ করেছেন। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগ থেকে অদ্যাবধি সালাতে চারটি স্থানে রফ‘উল ইয়াদাইন করার পক্ষে এমন একটা সামগ্রিক ও বলিষ্ঠ সমর্থনকে হেয় বা লঘু করে দেখা অবান্তর ও নিন্দনীয় সংকীর্ণতা নয় কি? অতএব এরূপ সুস্পষ্ট বিশুদ্ধ সুন্নাত কি করে বর্জন করা যায়?! এমনটি অকল্পনীয়।
(ছ) রফ‘উল ইয়াদাইন এর গুরুত্ব ও ফাযীলাত-
(১) মালিক বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) কোনো ব্যক্তিকে সালাতে রুকু‘র সময় ও রুকু‘ থেকে উঠার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন না করতে দেখলে তাকে ছোট পাথর ছুড়ে মারতেন, যতক্ষণ না সে রফ‘উল ইয়াদাইন করে। (দেখুন, বুখারীর জুযউ রফ‘উল ইয়াদাইন, আহমাদ, দারাকুতনী-নাফি‘ থেকে সহীহ সনদে)
(২) উক্ববাহ ইবনু আমির (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি রুকু‘র সময় এবং রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করে তার জন্য রয়েছে প্রত্যেক ইশারার বিনিময়ে দশটি করে নেকী। (দেখুন, বায়হাক্বীর মা‘রিফাত ১/২২৫, মাসায়িলে আহমাদ কানজুল উম্মাল)
(৩) ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রফ‘উল ইয়াদাইন হচ্ছে সালাতের সৌন্দর্যের একটি শোভা। প্রত্যেক রফ‘উল ইয়াদাইন এর বদলে দশটি করে নেকী রয়েছে, অর্থাৎ প্রত্যেক আঙ্গুলের বিনিময়ে রয়েছে একটি করে নেকী। (দেখুন, আল্লামা আইনী হানাফীর উমদাতুল ক্বারী ৫/২৭২)। এতে প্রমাণিত হয়, রফ‘উল ইয়াদাইন করার কারণে দু’ রাক‘আত সালাতে পঞ্চাশ ও আর চার রাক‘আত সালাতে ১০০টি নেকী বেশি পাওয়া যায়। এ হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের রাক‘আত ফারয সালাতে ৪৩০টি নেকী, একমাসে বারো ১২,৯০০টি আর এক বছরে ১,৫৪৮০০ (এক লক্ষ চুয়ান্ন হাজার) নেকী শুধু রফ‘উল ইয়াদাইন করার জন্য বাড়তি যোগ হচ্ছে। সুতরাং কোনো ব্যক্তি সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করার কারণে ৩০ বছরে ৪৬,৪৪০০০ নেকী আর ৬৫ বছরে ১০০৬২০০০ (এক কোটি বাষট্টি হাজার নেকী বেশি পাচ্ছেন)। এ হিসাব শুধু পাঁচ ওয়াক্ত ফারয সালাতে। এছাড়া সুন্নাত নাফল বিতর তাহাজ্জুত তারাবী প্রভৃতি সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করার নেকী তো রয়েছেই, যা এই হিসাব অনুপাতেই পাওয়া যাবে। সুতরাং যারা ফারয, সুন্নাত, নাফল প্রভৃতি সালাতে রফ‘উল ইয়াদাইন করেন না তারা কতগুলো নেকী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা কি ভেবে দেখেছেন? অথচ ক্বিয়ামাতের দিন মানুষ হাশরের ময়দানে একটি নেকী কম হওয়ার কারণে জান্নাতে যেতে পারে না!
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم فِي الشِّتَاءِ فَرَأَيْتُ أَصْحَابَهُ يَرْفَعُونَ أَيْدِيَهُمْ فِي ثِيَابِهِمْ فِي الصَّلَاةِ .
- صحيح
Wa’il b. Hujr said:
I came to the Prophet(ﷺ) during winter; I saw his companions raise their hands in their clothes in prayer.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩০। মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুমায়িদ আস-সাঈদী (রাঃ)-কে দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে- যাদের মধ্যে আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) ছিলেন- বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে আমি আপনাদের চেয়ে অধিক অবগত। তাঁরা বললেন, সেটা আবার কিভাবে? আল্লাহর শপথ! আপনি তো তাঁর অনুসরণ ও সাহচর্যের দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামী নন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর তাঁরা বললেন, এখন আপনি আপনার বক্তব্য পেশ করুন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দাঁড়ানোর সময় নিজের দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে পূর্ণরূপে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন।
এরপর কিরাত পড়ে তাকবীর বলে রুকু’তে গমনকালে স্বীয় দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। তারপর রুকু’তে গিয়ে দু’ হাতের তালু দ্বারা হাঁটুদ্বয় দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতেন। রুকু’তে তাঁর মাথা পিঠের সাথে সমান্তরাল থাকত। এরপর রুকু’ হতে মাথা উঠিয়ে ’’সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্’’ বলে তিনি স্বীয় দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তিনি সিজদায় যেতেন, সিজদাতে বাহূদ্বয় স্বীয় পাজরের পাশ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেন। তারপর সিজদা্ হতে মাথা উঠিয়ে বাম পা বিছিয়ে তাতে সোজা হয়ে বসতেন.....। অতঃপর শেষ রাক’আতে স্বীয় বাম পা ডান পাশে বের করে বাম পাশের পাছার উপর ভর করে বসতেন। তখন তাঁরা সকলে বললেন, হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই সালাত আদায় করতেন।[1]
সহীহ।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، - وَهَذَا حَدِيثُ أَحْمَدَ قَالَ - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حُمَيْدٍ السَّاعِدِيَّ، فِي عَشْرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو قَتَادَةَ قَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم . قَالُوا فَلِمَ فَوَاللهِ مَا كُنْتَ بِأَكْثَرِنَا لَهُ تَبَعًا وَلَا أَقْدَمَنَا لَهُ صُحْبَةً . قَالَ بَلَى . قَالُوا فَاعْرِضْ . قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يُكَبِّرُ حَتَّى يَقِرَّ كُلُّ عَظْمٍ فِي مَوْضِعِهِ مُعْتَدِلاً ثُمَّ يَقْرَأُ ثُمَّ يُكَبِّرُ فَيَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يَرْكَعُ وَيَضَعُ رَاحَتَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ يَعْتَدِلُ فَلَا يَصُبُّ رَأْسَهُ وَلَا يُقْنِعُ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَقُولُ " سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ " . ثُمَّ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ مُعْتَدِلاً ثُمَّ يَقُولُ " اللهُ أَكْبَرُ " . ثُمَّ يَهْوِي إِلَى الأَرْضِ فَيُجَافِي يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ وَيَثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا وَيَفْتَحُ أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ إِذَا سَجَدَ وَيَسْجُدُ ثُمَّ يَقُولُ " اللهُ أَكْبَرُ " . وَيَرْفَعُ رَأْسَهُ وَيَثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ عَظْمٍ إِلَى مَوْضِعِهِ ثُمَّ يَصْنَعُ فِي الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ إِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ كَمَا كَبَّرَ عِنْدَ افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ ثُمَّ يَصْنَعُ ذَلِكَ فِي بَقِيَّةِ صَلَاتِهِ حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي فِيهَا التَّسْلِيمُ أَخَّرَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَقَعَدَ مُتَوَرِّكًا عَلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ . قَالُوا صَدَقْتَ هَكَذَا كَانَ يُصَلِّي صلي الله عليه وسلم .
- صحيح
Abu Humaid al-Sa’idi once told a company of ten of the companions of the Messenger of Allah (ﷺ) ; Abu Qatadah was one of them:
I am one among you who is more informed of the way the Messenger of Allah (ﷺ) prayed. They said: Why, By Allah, you did not follow him more than us, nor did you remain in his company longer than us? He said: Yes. They said: Then describe (how the Prophet prayed). He said: When the Messenger of Allah (ﷺ) stood up to pray, he raised his hands so as to bring them opposite his shoulders, and uttered the takbir (Allah is the most great), until every bone rested in its place properly: then re recited (some verses from the Quran); then he uttered the takbir (Allah is most great), raising his hands so as to bring them opposite his shoulders; then he bowed; placing the palms of his hands on his knees and keeping himself straight, neither raising nor lowering his head; then raised his head saying: “Allah listens to him who praise Him”; then raised his hands so as to bring them exactly opposite to his shoulders; then uttered: “Allah is most great”; then lowered himself to the ground (in prostration), keeping his arms away from his sides; then raised his head, bent his left foot and sat on it, and opened the toes when he prostrated: then he uttered: “Allah is most great”; then raised his head, bent his left foot and sat on it so that every bone returned to its place properly; then he did the same in the second (rak’ah). At the end of the two Rak’ahs he stood up and uttered the takbir (Allah is most great), raising his hands so as to bring them opposite to his shoulders; then he bowed, placing the palms of his hands on his knees and keeping himself straight, neither raising or lowering his head: then raised his head saying: “Allah listens to him who praises Him”; then raised his hands so as to bring them exactly opposite his shoulders; then uttered: “Allah is most great”; then lowered himself to the ground (in prostration), keeping his arms away from his sides; then raised his head, bent his left foot and sat on it, and opened the toes when he prostrated himself; then he prostrated; then uttered: “Allah is most great”; then raised his head, bent his left foot and sat on it so that every bone returned to its place properly; then he did the same in the second (rak’ah). At the end of two rak’ahs he stood up and uttered the takbir (Allah is most great), raising his hands so as to bring them opposite to his shoulders in the way he had uttered the Takbir (Allah is most great) at the beginning of the prayer; then he did that in the remainder of his prayer; and after prostration which if followed by the taslim (salutation) he out his left foot and sat on his left hip. They said: You have spoken the truth. This is how he(peace be upon him) used to pray.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩১। মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর আল-’আমিরী সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি সাহাবীগণের মাজলিসে উপস্থিত হই। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিল। তখন আবূ হুমায়িদ (রাঃ) বলেন ..... তারপর বর্ণনাকারী পূর্বোক্ত হাদীসের অংশ বিশেষ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তিনি রুকুতে স্বীয় হাতের তালু দ্বারা হাঁটু মজবুতভাবে ধরতেন, হাতের অঙ্গুলিগুলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন রাখতেন এবং স্বীয় মাথা পিঠের সাথে সমান্তরাল রাখতেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর দুই রাক’আত সালাত শেষে বসার সময় বাম পায়ের উপর বসতেন এবং ডান পায়ের পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতেন। তারপর চতুর্থ রাক’আতে বসার সময় স্বীয় দু’ পা ডান দিকে বের করে দিয়ে বাম পাশের পাছার উপর ভর করে বসে যেতেন।[1]
সহীহ, তবে তার(وَلَا صَافِحٍ بِخَدِّه) কথাটি বাদে।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي حَبِيبٍ - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو الْعَامِرِيِّ، قَالَ كُنْتُ فِي مَجْلِسٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَتَذَاكَرُوا صَلَاةَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ فَذَكَرَ بَعْضَ هَذَا الْحَدِيثِ وَقَالَ فَإِذَا رَكَعَ أَمْكَنَ كَفَّيْهِ مِنْ رُكْبَتَيْهِ وَفَرَّجَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ ثُمَّ هَصَرَ ظَهْرَهُ غَيْرَ مُقْنِعٍ رَأْسَهُ وَلَا صَافِحٍ بِخَدِّهِ وَقَالَ فَإِذَا قَعَدَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ قَعَدَ عَلَى بَطْنِ قَدَمِهِ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْيُمْنَى فَإِذَا كَانَ فِي الرَّابِعَةِ أَفْضَى بِوَرِكِهِ الْيُسْرَى إِلَى الأَرْضِ وَأَخْرَجَ قَدَمَيْهِ مِنْ نَاحِيَةٍ وَاحِدَةٍ .
- صحيح ، دون قوله : (وَلَا صَافِحٍ بِخَدِّه)
‘Amr al-Amiri said:
I (once) attended the meeting of the companions of the Messenger of Allah(ﷺ). They began to discuss his prayer. Abu Humaid then narrated a part of the same tradition and said: When he bowed he clutched his knees with his palms, and he opened his fingers; then he bent his back without raising his upwards, and did not turn his face (on any side). When he sat at the end of two rak’ahs he sat on the sole of his left foot and raised the right, and after the fourth he placed his left hip on the ground and spread out both his feet one side.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩২। মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর ইবনু ’আত্বা সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি সিজদাতে নিজের দু’ হাত একেবারে বিছিয়েও দিতেন না আবার তা শরীরের সাথে মিলিয়েও রাখতেন না। তিনি তাঁর পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে রাখতেন।[1]
সহীহ : বুখারী।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيِّ، وَيَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، نَحْوَ هَذَا قَالَ فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَ يَدَيْهِ غَيْرَ مُفْتَرِشٍ وَلَا قَابِضِهِمَا وَاسْتَقْبَلَ بِأَطْرَافِ أَصَابِعِهِ الْقِبْلَةَ .
- صحيح : خ
The above mentioned tradition has also been reported by Muhammad b. ‘Amr b. ‘Ata’ through a different chain of narrators. This version adds:
“When he prostrated himself he neither placed his arms on the ground nor closed them; putting forward his fingers towards the qiblah.”
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৩। ’আব্বাস অথবা ’আইয়্যাশ ইবনু সাহল আস-সাঈদী (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি সাহাবীগণের একটি মাজলিসে উপস্থিত হন, যেখানে তাঁর পিতা, আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ), আবূ হুমায়িদ আস-সাঈদী এবং আবূ উসায়িদ (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীস কিছুটা হ্রাসবৃদ্ধিসহ বর্ণিত হয়েছে। তাতে বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু’ হতে মাথা উঠিয়ে ’সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্ আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’ বলে নিজের দু’ হাত উত্তোলন করতেন।
তারপর আল্লাহ আকবার বলে সিজদায় যেতেন এবং সিজদাতে হাতের তালু, হাঁটু ও পায়ের পাতার উপর ভর করতেন। তারপর তিনি আল্লাহু আকবার বলে (সিজদা্ হতে উঠে) বাম পার্শ্বের পাছার উপর ভর করে বসতেন আর অন্য পা সোজা করে রাখতেন। তারপর তাকবীর বলে সিজদায় যেতেন এবং পুনরায় তাকবীর বলে সিজদা্ হতে উঠে বাম পার্শ্বের পাছার উপর না বসে দাঁড়িয়ে যেতেন। অতঃপর (পুরো) হাদীস বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি দু’ রাক’আত সালাত শেষে বসার পর (তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাঁড়ানোর ইচ্ছা করলে তাকবীর বলে দাঁড়াতেন এবং (এভাবে) অবশিষ্ট দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। কিন্তু তাতে শেষ বৈঠকে বাম পার্শ্বের পাছার উপর বসার কথা উল্লেখ নেই।[1]
দুর্বল।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَدْرٍ، حَدَّثَنِي زُهَيْرٌ أَبُو خَيْثَمَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الْحُرِّ، حَدَّثَنِي عِيسَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، أَحَدِ بَنِي مَالِكٍ عَنْ عَبَّاسٍ، - أَوْ عَيَّاشِ - بْنِ سَهْلٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهُ كَانَ فِي مَجْلِسٍ فِيهِ أَبُوهُ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم وَفِي الْمَجْلِسِ أَبُو هُرَيْرَةَ وَأَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ وَأَبُو أُسَيْدٍ بِهَذَا الْخَبَرِ يَزِيدُ أَوْ يَنْقُصُ قَالَ فِيهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ - يَعْنِي مِنَ الرُّكُوعِ - فَقَالَ " سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ " . وَرَفَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ قَالَ " اللهُ أَكْبَرُ " . فَسَجَدَ فَانْتَصَبَ عَلَى كَفَّيْهِ وَرُكْبَتَيْهِ وَصُدُورِ قَدَمَيْهِ وَهُوَ سَاجِدٌ ثُمَّ كَبَّرَ فَجَلَسَ فَتَوَرَّكَ وَنَصَبَ قَدَمَهُ الأُخْرَى ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ ثُمَّ كَبَّرَ فَقَامَ وَلَمْ يَتَوَرَّكْ ثُمَّ سَاقَ الْحَدِيثَ قَالَ ثُمَّ جَلَسَ بَعْدَ الرَّكْعَتَيْنِ حَتَّى إِذَا هُوَ أَرَادَ أَنْ يَنْهَضَ لِلْقِيَامِ قَامَ بِتَكْبِيرَةٍ ثُمَّ رَكَعَ الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ وَلَمْ يَذْكُرِ التَّوَرُّكَ فِي التَّشَهُّدِ .
- ضعيف
Abbas or ‘Ayyash b. Sahl as-Sa’idi said that he was present in a meeting which was attended by his father who was one of the companions of the Prophet(ﷺ), Abu Hurairah, Abu Humaid al-Sa’idi and Abu Usaid. He narrated the same tradition with a slight addition or deletion. He said:
He then raised his head after bowing and uttered:”Allah listens to him who praises Him, to Thee, our Lord, be the praise,” and raised his hands. He then uttered: “Allah is most great”; then he prostrated himself and rested on his palms, knees, and the end of his toes while prostrating: then he uttered the Takbir (Allah is most great), and sat down on his hips and raised his other foot; then he uttered the takbir and prostrated himself; then he uttered takbir and stood up, but did not sit on his hips. He (the narrator) then narrated the rest of the tradition. He further said: Then he sat down at the end of two rak’ahs; when he was about to stand after two rak’ahs, he uttered the takbir; then he offered the last two rak’ahs of the prayer. The narrator did not mention about his sitting on the hips spreading out his feet.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৪। ’আব্বাস ইবনু সাহল (রহঃ) বলেন, আবূ হুমায়িদ, আবূ উসায়িদ, সাহল ইবনু সা’দ এবং মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) একটি মাজলিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন। তখন আবূ হুমায়িদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে আমি আপনাদের চাইতে অধিক অবগত ..... অতঃপর তিনি এখানে অংশ বিশেষ বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুতে নিজের দু’ হাতে শক্তভাবে হাঁটুদ্বয় ধরে রাখতেন এবং দু’ হাতকে তাঁর পার্শ্বদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে রাখতেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি সিজদাতে নাক ও কপাল মাটির সাথে মিলিয়ে রাখতেন এবং দু’ হাতকে তাঁর পার্শ্বদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে রাখতেন। .... অতঃপর বসে বাম পা বিছিয়ে দিতেন, ডান পায়ের সম্মুখ ভাগ কিবলামুখী করে রাখতেন, ডান হাতের তালু ডান পায়ের ঊরুর উপর এবং বাম হাতের তালু বাম পায়ের ঊরুর উপর রাখতেন এবং তাঁর (শাহাদাত) আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। [1]
সহীহ।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি ’উত্বাহ ইবনু আবূ হাকীম (রহঃ) ’আব্দুল্লাহ হতে ’আব্বাস ইবনু সাহল সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁরা তাতে বাম পার্শ্বের পাছার উপর বসার কথা উল্লেখ করেননি।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، أَخْبَرَنِي فُلَيْحٌ، حَدَّثَنِي عَبَّاسُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ اجْتَمَعَ أَبُو حُمَيْدٍ وَأَبُو أُسَيْدٍ وَسَهْلُ بْنُ سَعْدٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَذَكَرُوا صَلَاةَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ بَعْضَ هَذَا قَالَ ثُمَّ رَكَعَ فَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ كَأَنَّهُ قَابِضٌ عَلَيْهِمَا وَوَتَّرَ يَدَيْهِ فَتَجَافَى عَنْ جَنْبَيْهِ قَالَ ثُمَّ سَجَدَ فَأَمْكَنَ أَنْفَهُ وَجَبْهَتَهُ وَنَحَّى يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ حَتَّى رَجَعَ كُلُّ عَظْمٍ فِي مَوْضِعِهِ حَتَّى فَرَغَ ثُمَّ جَلَسَ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَأَقْبَلَ بِصَدْرِ الْيُمْنَى عَلَى قِبْلَتِهِ وَوَضَعَ كَفَّهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُمْنَى وَكَفَّهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ
- صحيح
قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عُتْبَةُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عِيسَى عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ سَهْلٍ لَمْ يَذْكُرِ التَّوَرُّكَ وَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ فُلَيْحٍ وَذَكَرَ الْحَسَنُ بْنُ الْحُرِّ نَحْوَ جِلْسَةِ حَدِيثِ فُلَيْحٍ وَعُتْبَةَ
‘Abbas b. Sahl. Said:
Abu Humaid, Abu Usaid, Sahl. B Sa’d and Muhammad b. Maslamah (once) got together and discussed how the Messenger of Allah(ﷺ) used to offer his prayer. Abu Humaid said: I am more informed than any of you regarding the prayer offered by the Messenger of Allah (ﷺ). Then he mentioned a part of it, and said: He then bowed and placed his hands upon his knees as if he caught hold of them; and bent them, keeping (his arms) away from his sides. He them prostrated himself and placed his nose and forehead (on the ground); and kept his arms away from his side, and placed his palms (on the ground opposite his shoulders; he then raised his head that every bone returned to its proper place; (he then prostrated twice) until he finished this prostrations). Then he sat down and spread out his left foot, putting forward the front of his right foot towards the qiblah placing the palm of his right hand on his right knee, and the palm of his left hand on his left knee, and he pointed with his finger.
Abu Dawud said: This tradition has been narrated by Ibn al-Mubarak from Fulaih who heard ‘Abbas . Sahl narrating it; but I do not remember it. I think he made the mention of ‘Isa b. ‘Abd Allah who heard ‘Abbas b. Sahl saying: I accompanied Abu Humaid al-Sa’idi.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৫। আবূ হুমায়িদ (রাঃ) সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি সিজদাতে স্বীয় পেট ঊরু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতেন।[1]
দুর্বল।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি ইবনুল মুবারক ও অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، حَدَّثَنِي عُتْبَةُ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عِيسَى، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ سَهْلٍ السَّاعِدِيِّ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ، بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ وَإِذَا سَجَدَ فَرَّجَ بَيْنَ فَخِذَيْهِ غَيْرَ حَامِلٍ بَطْنَهُ عَلَى شَىْءٍ مِنْ فَخِذَيْهِ .
- ضعيف
قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَاهُ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا فُلَيْحٌ سَمِعْتُ عَبَّاسَ بْنَ سَهْلٍ يُحَدِّثُ فَلَمْ أَحْفَظْهُ فَحَدَّثَنِيهِ أُرَاهُ ذَكَرَ عِيسَى بْنَ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَهُ مِنْ عَبَّاسِ بْنِ سَهْلٍ قَالَ حَضَرْتُ أَبَا حُمَيْدٍ السَّاعِدِيَّ بِهَذَا الْحَدِيثِ
Abu Humaid reported to the same effect. He said:
When he (the Prophet) prostrated he kept his thighs wide and did not let his belly touch the thighs.
Abu Dawud says that Ibn Mubarak narrated this hadith from ‘Abbas b. Sahl, which he did not remember well. It is thought that he has mentioned ‘Isa b. ‘Abd Allah, ‘Abbas b. Sahl and Abu Humaid al-Sa’idi.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৬। ’আবদুল জাববার ইবনু ওয়ায়িল তাঁর পিতা হতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় গমনকালে যমীনে স্বীয় হাত রাখার পূর্বে হাঁটু রাখতেন। বর্ণনাকারী আরো বলেন, সিজদাতে তিনি নিজের দু’ হাতের তালুর মধ্যবর্তী স্থানে কপাল রাখতেন এবং দু’ হাত বগল হতে দূরে সরিয়ে রাখতেন।[1]
দুর্বল।
قَالَ حَجَّاجٌ وَقَالَ هَمَّامٌ وَحَدَّثَنَا شَقِيقٌ حَدَّثَنِي عَاصِمُ بْنُ كُلَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم بِمِثْلِ هَذَا وَفِي حَدِيثِ أَحَدِهِمَا - وَأَكْبَرُ عِلْمِي أَنَّهُ حَدِيثُ مُحَمَّدِ بْنِ جُحَادَةَ - وَإِذَا نَهَضَ نَهَضَ عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَاعْتَمَدَ عَلَى فَخِذَيْهِ .
- ضعيف .
’আসিম ইবনু কুলাইব তাঁর পিতা হতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, যথা সম্ভব মুহাম্মাদ ইবনু জুহাদাহ বর্ণনায় রয়েছেঃ তিনি দাঁড়ানোর সময় ঊরু ও হাঁটুর উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতেন।
দুর্বল।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جُحَادَةَ، عَنْ عَبْدِ الْجَبَّارِ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فِي هَذَا الْحَدِيثِ قَالَ فَلَمَّا سَجَدَ وَقَعَتَا رُكْبَتَاهُ إِلَى الأَرْضِ قَبْلَ أَنْ تَقَعَ كَفَّاهُ - قَالَ - فَلَمَّا سَجَدَ وَضَعَ جَبْهَتَهُ بَيْنَ كَفَّيْهِ وَجَافَى عَنْ إِبْطَيْهِ .
- ضعيف
Wa’il b. Hujr reported in this tradition from the Prophet(ﷺ):
When he prostrated, his knees touched the ground before his palms touched it; when he prostrated himself, he placed his forehead on the ground between his palms, and kept his armpits away from his sides.
Hajjaj reported from Hammam and Shaqiq narrated a similar tradition to us from ‘Asim b. Kulaib on the authority of his father from the Prophet(ﷺ).
And another version narrated by one of them has-and I think in all probability that this version has been narrated by Muhammad b. Juhadah-when he got up (after prostration), he got up with his knees and gave his weight on his thighs.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৭। ’আবদুল জাব্বার ইবনু ওয়ায়িল থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাকবীর বলার সময় তাঁর দু’ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কানের নিম্নভাগ পর্যন্ত উঠাতে দেখেছি।[1]
দুর্বল।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ فِطْرٍ، عَنْ عَبْدِ الْجَبَّارِ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَرْفَعُ إِبْهَامَيْهِ فِي الصَّلَاةِ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ .
- ضعيف
Narrated Wa'il ibn Hujr:
I saw the Messenger of Allah (ﷺ) raising his thumbs in prayer up to the lobes of his ears.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৮। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের জন্য তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় নিজের দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। এমনিভাবে রুকু’তে গমনকালে, রুকু’ হতে সোজা হওয়ার সময় এবং দু’ রাক’আত শেষে (তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাঁড়ানোর সময়ও দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন।[1]
দুর্বল।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَبَّرَ لِلصَّلَاةِ جَعَلَ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا رَفَعَ لِلسُّجُودِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ .
- ضعيف
Narrated AbuHurayrah:
When the Messenger of Allah (ﷺ) uttered the takbir (Allah is most great) for prayer (in the beginning), he raised his hands opposite to his shoulders; and when he bowed, he did like that; and when he raised his head to prostrate, he did like that; and when he got up at the end of two rak'ahs, he did like that.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৩৯। মায়মূন আল-মাক্কী সূত্রে বর্ণিত। তিনি দেখলেন যে, ’আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়ির (রাঃ) লোকদের সালাত আদায়কালে দাঁড়ানোর সময়, রুকু’ হতে সোজা হওয়ার সময়, সিজদা্কালে, এবং (দু’ রাক’আত শেষে তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাঁড়ানোর সময় তাঁর দু’ হাত উঠালেন। অতঃপর আমি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে ইবনুয যুবায়িরের সালাত সম্পর্কে বললাম, কাউকে তো এভাবে হাত উঠিয়ে সালাত আদায় করতে দেখিনি। তিনি বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের পদ্ধতি অবলোকন করতে চাইলে ইবনুয যুবায়িরের সালাতের অনুসরণ কর।[1]
সহীহ।
-
* সিজদার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন প্রসঙ্গে
সিজদায় রফ‘উল ইয়াদাইন করা এবং না করা উভয় বিষয়ই হাদীস রয়েছে। আবূ বাকর ইবনুল মুনযির, আবূ আলী আত-ত্বাবারী ও কতিপয় হাদীস বিশারদ এ সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করা মুস্তাহাব বলেছেন। পক্ষান্তরে অন্যান্যরা এর বিপরীত মত পোষণ করেছেন। হাফিয ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আল্লাহু আকবার’ বলে প্রশান্তির সাথে সিজদায় লুটিয়ে পড়তেন। এ সময়ে তিনি রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন না। তবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি এ সময়ে রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন। ইবনু হাজম প্রমুখ এ বর্ণনাকে সহীহ বলেছেন। আসলে এটা একটা অনুমাত ভিত্তিক বক্তব্য। মূলতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় যাওয়ার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন না। হাদীস বর্ণনাকারীর ভুলের কারণে তিনি এ সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন বলে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহই ভালো জানেন। (দেখুন, যাদুল মাআদ)
‘সালাতুল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রন্থে রয়েছেঃ ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদার সময় রফ‘উল ইয়াদাইন করতেন না- (সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, হাদীস- ৬৯৪)। ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, ইমাম আহমাদ এর অধিকাংশ বর্ণনাও এ কথা প্রমাণ করে যে, তিনি সিজদাকালে রফ‘উল ইয়াদাইন এর সমর্থক ছিলেন না- (মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, মাসআলাহ নং ৩২০)। শায়খ আলবানী (সিফাত, ১২১) সাজাদহয় রফ‘উল ইয়াদাইন সম্পর্কে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তার অর্থ রুকু‘র ন্যায় রফ‘উল ইয়াদাইন নয়। বরং সাধারণভাবে সিজদা থেকে হাত উঠানো বুঝানো হয়েছে বলে অনুমিত হয়।’’ (দেখুন, সালাতুল রাসূল, পৃঃ ৬৮, হাদীস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রকাশিত)।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ أَبِي هُبَيْرَةَ، عَنْ مَيْمُونٍ الْمَكِّيِّ، أَنَّهُ رَأَى عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَصَلَّى بِهِمْ يُشِيرُ بِكَفَّيْهِ حِينَ يَقُومُ وَحِينَ يَرْكَعُ وَحِينَ يَسْجُدُ وَحِينَ يَنْهَضُ لِلْقِيَامِ فَيَقُومُ فَيُشِيرُ بِيَدَيْهِ فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ إِنِّي رَأَيْتُ ابْنَ الزُّبَيْرِ صَلَّى صَلَاةً لَمْ أَرَ أَحَدًا يُصَلِّيهَا فَوَصَفْتُ لَهُ هَذِهِ الإِشَارَةَ فَقَالَ إِنْ أَحْبَبْتَ أَنْ تَنْظُرَ إِلَى صَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَاقْتَدِ بِصَلَاةِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ .
- صحيح
Narrated Abdullah ibn Abbas:
Maymun al-Makki said: that he saw Abdullah ibn az-Zubayr leading in prayer. He pointed with his hands (i.e. raised his hands opposite to the shoulders) when he stood up, when he bowed and when he prostrated, and when he got up after prostration, he pointed with his hands (i.e. raised his hands).
The I went to Ibn Abbas and said (to him) I saw Ibn az-Zubayr praying that I never saw anyone praying. I then told him about the pointing with his hands (raising his hands). He said: If you like to see the prayer of the Messenger of Allah (ﷺ) follower the prayer as offered by Abdullah ibn az-Zubayr.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৪০। নাদর ইবনু কাসীর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ’আবদুল্লাহ ইবনু তাউস (রহঃ) খায়িফের মসজিদে আমার পাশে দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কালে প্রথম সিজদায় যাওয়ার পর সিজদা্ হতে মাথা উঠানোর সময় চেহারা বরাবর দু’ হাত উত্তোলন করলেন। বিষয়টি আমার কাছে অপ্রীতিকর মনে হওয়ায় আমি এ ব্যাপারে উহায়িব ইবনু খালিদকে জিজ্ঞাসা করি। ফলে উহায়িব (রহঃ) ’আবদুল্লাহকে বললেন, তুমি এমন একটি কাজ করেছ, যা আমি ইতিপূর্বে আর কাউকে করতে দেখিনি। ’আবদুল্লাহ ইবনু তাউস (রহঃ) বলেন, আমি আমার পিতাকে এরূপ করতে দেখেছি এবং আমার পিতা বলেছেন, আমি ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-কে এরূপ করতে দেখেছি। আমি নিশ্চিত অবগত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতেন।[1]
দুর্বল।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، - الْمَعْنَى - قَالَا حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ كَثِيرٍ، - يَعْنِي السَّعْدِيَّ - قَالَ صَلَّى إِلَى جَنْبِي عَبْدُ اللهِ بْنُ طَاوُسٍ فِي مَسْجِدِ الْخَيْفِ فَكَانَ إِذَا سَجَدَ السَّجْدَةَ الأُولَى فَرَفَعَ رَأْسَهُ مِنْهَا رَفَعَ يَدَيْهِ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ فَأَنْكَرْتُ ذَلِكَ فَقُلْتُ لِوُهَيْبِ بْنِ خَالِدٍ فَقَالَ لَهُ وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ تَصْنَعُ شَيْئًا لَمْ أَرَ أَحَدًا يَصْنَعُهُ فَقَالَ ابْنُ طَاوُسٍ رَأَيْتُ أَبِي يَصْنَعُهُ وَقَالَ أَبِي رَأَيْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَصْنَعُهُ وَلَا أَعْلَمُ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم يَصْنَعُهُ .
- صحيح
Narrated Abdullah ibn Abbas:
Nadr ibn Kathir as-Sa'di said: Abdullah ibn Tawus prayed at my side in the mosque of al-Khayf. When he made the first prostration, he raised his head after it and raised his hands opposite to his face. This came as something strange for me. I, therefore, said it to Wuhayb ibn Khalid.
Then Wuhayb ibn Khalid said to him: You are doing a thing that I did not see anyone do. Ibn Tawus then replied: I saw my father doing it, and my father said: I saw Ibn Abbas doing it. I do not know but he said: The Prophet (ﷺ) used to do it.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৪১। নাফি’ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু ’উমার (রাঃ) সালাতে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলার সময়, রুকু’তে গমনকালে, রুকু’ হতে মাথা উত্তোলনকালে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্ বলে এবং দুই রাক’আত সালাত আদায়ের পর (তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাড়ানোর সময় উভয় হাত উত্তোলন করতেন। তিনি এর বর্ণনা সূত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন (অর্থাৎ এটি মারফূ হাদীস)। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সঠিক হচ্ছে, এটি ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর বক্তব্য, মারফূ হাদীস নয়। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) আরো বলেন, প্রথম হাদীসের দুই রাক’আত সালাত শেষে দাঁড়ানোর সময় হাত উত্তোলনের কথাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে বর্ণিত নয়। আর সাক্বাফী এটি ’উবাইদুল্লাহ সূত্রে ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর মাওকূফ বর্ণনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাতে উল্লেখ আছেঃ ’’তিনি দু’ রাক’আত সালাত শেষে দাড়ানোর সময় উভয় হাত বক্ষ পর্যন্ত উঠাতেন।’’ এ বর্ণনাটি সহীহ।[1]
সহীহ : বুখারী।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) আরো বলেন, লাইস ইবনু সা’দ, মালিক, আইয়ূব ও ইবনু জুরায়িজ প্রমুখ বর্ণনাকারীগণ এর বর্ণনা সূত্র সাহাবী পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। হাম্মাদই কেবল এককভাবে হাদীসকে মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী ইবনু জুরায়িজ বলেন, আমি নাফি’কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইবনু ’উমার (রাঃ) কি অন্য সময়ের চেয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় তাঁর হাত অধিক উঠাতেন? তিনি বলেন, না; বরং তিনি সব সময়ই একইভাবে হাত উঠাতেন। আমি বললাম, আমাকে ইশারায় দেখিয়ে দিন। তিনি তার বুক বা তার চেয়ে একটু নীচে পর্যন্ত ইশারা করে দেখালেন।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ وَيَرْفَعُ ذَلِكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم .قَالَ أَبُو دَاوُدَ الصَّحِيحُ قَوْلُ ابْنِ عُمَرَ وَلَيْسَ بِمَرْفُوعٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى بَقِيَّةُ أَوَّلَهُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ وَأَسْنَدَهُ وَرَوَاهُ الثَّقَفِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَوْقَفَهُ عَلَى ابْنِ عُمَرَ وَقَالَ فِيهِ وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ يَرْفَعُهُمَا إِلَى ثَدْيَيْهِ وَهَذَا هُوَ الصَّحِيحُ .
- صحيح : خ
قال أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ وَمَالِكٌ وَأَيُّوبُ وَابْنُ جُرَيْجٍ مَوْقُوفًا وَأَسْنَدَهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَحْدَهُ عَنْ أَيُّوبَ وَلَمْ يَذْكُرْ أَيُّوبُ وَمَالِكٌ الرَّفْعَ إِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ وَذَكَرَهُ اللَّيْثُ فِي حَدِيثِهِ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ فِيهِ قُلْتُ لِنَافِعٍ أَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَجْعَلُ الأُولَى أَرْفَعَهُنَّ قَالَ لَا سَوَاءً . قُلْتُ أَشِرْ لِي . فَأَشَارَ إِلَى الثَّدْيَيْنِ أَوْ أَسْفَلَ مِنْ ذَلِكَ
Nafi’ said on the authority of Ibn ‘Umar that when he began prayer, he uttered the takbir( Allah is most great) and raised his hands; and when he bowed( he raised his hands); and when he said:
“Allah listens to him who praises Him,” (he raised his hands); and when he stood up at the end of two rak’ahs, he raised his hands. He (Ibn ‘Umar) traced that back to the Messenger of Allah (ﷺ).
Abu Dawud said: What is correct is that the tradition reported by Ibn ‘Umar does not go back to the Prophet (may peace beupon him). Abu Dawud said: The narrator Baqiyyah reported the first part of this tradition from ‘Ubaid Allah and traced it back to the Prophet (ﷺ); and the narrator al-Thaqafi reported it from ‘Ubaid Allah as a statement of Ibn ‘Umar himself(not from the Porphet). In this version he said: When he stood at the end of two rak’ahs he raised them up to his breasts. And this is the correct version.
Abu Dawud said: This tradition has been transmitted as a statement of Ibn ‘Umar (and not of the Prophet) by al-Laith b. Sa’d, Malik, Ayyub, and Ibn Juraij; and this has been narrated as a statement of the Prophet (ﷺ) by Hammad b. Salamah alone on the authority of Ayyub. Ayyub and Malik did not mention his raising of hands when he stood after two prostrations, but al-Laith mentioned it in his version. Ibn Juraij said in this version: I asked Nafi’: Did Ibn ‘Umar raise (his hands) higher for the first time? He said: No, I said: Point out to me. He then pointed to the breasts or lower than that.
পরিচ্ছেদঃ ১১৭. সালাত শুরু করা সম্পর্কে
৭৪২। নাফি’ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) সালাত আরম্ভের সময় নিজের দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন এবং রুকূ হতে মাথা উঠাবার সময় দু’ হাত একটু কম উপরে উঠাতেন।[1]
সহীহ।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আমার জানা মতে বর্ণনাকারী মালিক ছাড়া কেউ হাত কম উঠানোর কথা উল্লেখ করেননি।
باب افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ، كَانَ إِذَا ابْتَدَأَ الصَّلَاةَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا دُونَ ذَلِكَ .قَالَ أَبُو دَاوُدَ لَمْ يَذْكُرْ رَفْعَهُمَا دُونَ ذَلِكَ . أَحَدٌ غَيْرَ مَالِكٍ فِيمَا أَعْلَمُ .
- صحيح
Nafi’ said:
When ‘Abd Allah b. ‘Umar began his prayer, he raised his hands opposite to his shoulders; and when he raised his head after bowing, he raised them lower than that.
Abu Dawud said: So as far as I know, no one narrated the words “he raised them lower that that” except Malik.