পরিচ্ছেদঃ ১৫. সূরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরান এর ফযীলত
৩৪৩০. বুরাইদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম, এমতাবস্থায় তাঁকে আমি বলতে শুনেছি যে, “তোমরা সূরা বাক্বারা শিক্ষা কর, কেননা, এ দু’টি মনোহর জ্যোতি; আর তা শিক্ষা করাতে কল্যাণ রয়েছে এবং তা পরিত্যাগ করাতে পরিতাপ রয়েছে। আর বাতিলপন্থীগণ (যাদুকররা) এটি (মোকাবেলা করতে) সক্ষম হবে না।”
এরপর তিনি কিছু সময় চুপ করে থাকলেন। অত:পর তিনি বললেন: “তোমরা সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরাণ শিক্ষা কর, কেননা, সে দুঁটি যেন সমুজ্জল জ্যোতি। কেননা, এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তার পাঠকের জন্য যেন সে দুটি ’গামামা’ তথা দু’ খণ্ড মেঘ- কিংবা (তিনি বলেছিলেন) সে দুটি ’গায়ায়া’- তথা মেঘ বা বাদল; কিংবা যেন সে দুটি ডানা বিস্তারকারী পাখীর দুটি ঝাঁক।
কিয়ামতের দিন যখন কবর ফেটে যাবে তখন কুরআন তার পাঠকের নিকট পর্যুদস্ত লোকের অবয়বে উপস্থিত হয়ে বলবে, তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ? তখন লোকটি বলবে, নাতো, আমি তো তোমাকে চিনি না। তখন কুরআন বলবে, আমিই তোমার সাথী, কুরআন। এই আমিই তোমাকে দিনে পিপাসার্ত-পরিশ্রান্ত করেছি এবং রাতে বিনিদ্র করেছি। আর প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যবসায় মুনাফা লাভ করে, আর আজকে তুমিও তোমার সকল ব্যবসার মুনাফা লাভ করবে। তখন তার ডান হাতে রাজত্ব দান করা হবে, তার বাম হাতে অমরত্ব দান করা হবে, আর তার মাথায় মর্যাদা (এর মুকুট) পরানো হবে। আর তার মাতা-পিতাকে দু’প্রস্থ পোশাক পরিধান করানো হবে, যা দুনিয়াতে তাদের জন্য তৈরী করা হয়নি। তখন তারা উভয়ে বলবে, আমাদেরকে এ পোশাক পরিধান করানো হলো (কেন)? তখন তাদের উভয়কে বলা হবে, তোমাদের উভয়ের সন্তানদের কুরআনকে গ্রহণ করার জন্য। তখন তাকে (কুরআন পাঠককে) বলা হবে: তুমি পাঠ করতে থাকে এবং জান্নাতের সিড়ি ও কামরা বেয়ে উপরে আরোহন করতে থাকো। তার দ্রুত বা ধীর পাঠ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার আরোহন করা চলতেই থাকবে।”[1]
তাখরীজ: আহমাদ, আল মুসনাদ ৫/৩৪৮; ইবনু আবী শাইবা ১০/৪৯২-৪৯৩ নং ১০০৯৪; ইবনু মাজাহ, দু’আ ৩৭৮১; হাকিম নং ২০৫৭; আব্দুর রাযযাক নং ৬০১৪।
(তবে এর শুরু হতে ‘এবং রাতে বিনিদ্র করেছি।’ পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন মুসলিম, সালাতুল মুসাফিরীন নং ৪০৮ তে।–অনুবাদক)
باب فِي فَضْلِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا بَشِيرٌ هُوَ ابْنُ الْمُهَاجِرِ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ تَعَلَّمُوا سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلَا يَسْتَطِيعُهَا الْبَطَلَةُ ثُمَّ سَكَتَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ تَعَلَّمُوا سُورَةَ الْبَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا الزَّهْرَاوَانِ وَإِنَّهُمَا تُظِلَّانِ صَاحِبَهُمَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ غَيَايَتَانِ أَوْ فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ وَإِنَّ الْقُرْآنَ يَلْقَى صَاحِبَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِينَ يَنْشَقُّ عَنْهُ الْقَبْرُ كَالرَّجُلِ الشَّاحِبِ فَيَقُولُ لَهُ هَلْ تَعْرِفُنِي فَيَقُولُ مَا أَعْرِفُكَ فَيَقُولُ أَنَا صَاحِبُكَ الْقُرْآنُ الَّذِي أَظْمَأْتُكَ فِي الْهَوَاجِرِ وَأَسْهَرْتُ لَيْلَكَ وَإِنَّ كُلَّ تَاجِرٍ مِنْ وَرَاءِ تِجَارَتِهِ وَإِنَّكَ الْيَوْمَ مِنْ وَرَاءِ كُلِّ تِجَارَةٍ فَيُعْطَى الْمُلْكَ بِيَمِينِهِ وَالْخُلْدَ بِشِمَالِهِ وَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ تَاجُ الْوَقَارِ وَيُكْسَى وَالِدَاهُ حُلَّتَيْنِ لَا يُقَوَّمُ لَهُمَا الدُّنْيَا فَيَقُولَانِ بِمَ كُسِينَا هَذَا وَيُقَالُ لَهُمَا بِأَخْذِ وَلَدِكُمَا الْقُرْآنَ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ اقْرَأْ وَاصْعَدْ فِي دَرَجِ الْجَنَّةِ وَغُرَفِهَا فَهُوَ فِي صُعُودٍ مَا دَامَ يَقْرَأُ هَذًّا كَانَ أَوْ تَرْتِيلًا
পরিচ্ছেদঃ ১৫. সূরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরান এর ফযীলত
৩৪৩১. সুলাইম ইবনু আমির (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি আবূ উমামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছেন, তোমাদের এক ভাই স্বপ্নে দেখেছে যে, লোকদেরকে একটি পাহাড়ের সরু বিপজ্জনক একটি ফাটলের ভিতর ঢুকানো হচ্ছে। আর পাহাড়ের চুড়ায় রয়েছে দু’টি সবুজ (খেজুর) গাছ যারা ডেকে বলছিল, তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছে যে, সুরাহ বাক্বারা পাঠ করে? তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছে যে, সুরাহ আলে ইমরাণ পাঠ করে? এরপর যখন এক ব্যক্তি বলল, হাঁ। তখন এ দু’টি গাছ তাদের (ফলের) কাঁদিসহ তার নিকটবর্তী হলো, এমনকি এ দু’টি তাদের কাঁদিসহ ঝুলে রইল। অত:পর এ ব্যক্তিকে নিয়ে এ গাছ দু’টি পাহাড়ের নিকট গর্ব করতে লাগল।[1]
তাখরীজ: আবী উবাইদ, ফাযাইলুল কুরআন নং ২৩৬। দেখুন, দুররে মানসুর ১/১৮।
باب فِي فَضْلِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ عَنْ أَبِي يَحْيَى سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا أُمَامَةَ يَقُولُ إِنَّ أَخًا لَكُمْ أُرِيَ فِي الْمَنَامِ أَنَّ النَّاسَ يَسْلُكُونَ فِي صَدْعِ جَبَلٍ وَعْرٍ طَوِيلٍ وَعَلَى رَأْسِ الْجَبَلِ شَجَرَتَانِ خَضْرَاوَانِ تَهْتِفَانِ هَلْ فِيكُمْ مَنْ يَقْرَأُ سُورَةَ الْبَقَرَةِ هَلْ فِيكُمْ مَنْ يَقْرَأُ سُورَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِذَا قَالَ الرَّجُلُ نَعَمْ دَنَتَا بِأَعْذَاقِهِمَا حَتَّى يَتَعَلَّقَ بِهِمَا فَتَخْطِرَانِ بِهِ الْجَبَلَ قَالَ أَبُو مُحَمَّد الْأَعْذَاقُ الْأَغْصَانُ
পরিচ্ছেদঃ ১৫. সূরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরান এর ফযীলত
৩৪৩২. মাসরুক (রহঃ) হতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর নিকট এক ব্যক্তি সুরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরাণ পাঠ করল। তখন তিনি (আব্দুল্লাহ) রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তুমি এমন দু’টি সুরাহ পাঠ করলে, যাতে রয়েছে ’ইসমে আ’যম’ (আল্লাহর মহান নাম), যা দ্বারা দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়, যা দ্বারা কোন কিছু চাইলে প্রদান করা হয়।[1]
তাখরীজ: ফিরইয়াবী, ফাযাইলুল কুরআন নং ৪৪ যয়ীফ সনদে।
তবে এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আসমা বিনতে ইয়াযিদ হতে যা গত হয়েছে নং ৩৪২৪ তে।
এর অপর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবু উমামাহ হতে তাহাবী, মুশকিলীল আছার ১/৬৩; তাবারাণী, কাবীর ৮/২৮২ নং ৮৯২৫; ফিরইয়াবী, ফাযাইলুল কুরআন নং ৪৭; হাকিম নং ১৮৬১ উত্তম সনদে।
باب فِي فَضْلِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الرَّقِّيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ زَيْدٍ عَنْ جَابِرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ قَرَأَ رَجُلٌ عِنْدَ عَبْدِ اللَّهِ الْبَقَرَةَ وَآلَ عِمْرَانَ فَقَالَ قَرَأْتَ سُورَتَيْنِ فِيهِمَا اسْمُ اللَّهِ الْأَعْظَمُ الَّذِي إِذَا دُعِيَ بِهِ أَجَابَ وَإِذَا سُئِلَ بِهِ أَعْطَى
পরিচ্ছেদঃ ১৫. সূরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরান এর ফযীলত
৩৪৩৩. আত্তাফ হতে বর্ণিত, কা’ব (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সুরাহ বাক্বারাহ ও আলে ইমরাণ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিনে এ সুরাহ দু’টি এসে বলবে, হে আমাদের রব্ব, এর কাছে কোনো কৈফিয়ত চাইবেন না।[1]
তাখরীজ: আমি এটি আর কোথাও পাইনি। দেখুন, দুররে মানসুর ১/১৯।
باب فِي فَضْلِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلَامِ بْنُ حَرْبٍ عَنْ الْجُرَيْرِيِّ عَنْ أَبِي عَطَّافٍ عَنْ كَعْبٍ قَالَ مَنْ قَرَأَ الْبَقَرَةَ وَآلَ عِمْرَانَ جَاءَتَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَقُولَانِ رَبَّنَا لَا سَبِيلَ عَلَيْهِ