পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯০. আবূ সা’ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেনঃ “একবার আমি নিদ্রাবস্থায় (স্বপ্নে) দেখলাম যে, লোকদেরকে আমার সামনে আনা হচ্ছে। আর তাদের পরণে রয়েছে জামা। কারো জামা বুক পর্যন্ত আর কারো জামা এর নীচ পর্যন্ত। আর ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযি.)-কে আমার সামনে আনা হল এমন অবস্থায় যে, তিনি তাঁর জামা (অধিক লম্বা হওয়ায়) টেনে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন।” আশপাশের সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এর কী তা’বীর করেছেন? তিনি বললেনঃ (এ জামা অর্থ) দ্বীন।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, ঈমান ২৩; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৩৯০;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১২৯০; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৮৯০ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৪২২ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ هُوَ ابْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ بَيْنَا إِذَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ يُعْرَضُونَ عَلَيَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ مِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثُّدِيَّ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ دُونَ ذَلِكَ وَعُرِضَ عَلَيَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجُرُّهُ فَقَالَ مَنْ حَوْلَهُ فَمَاذَا تَأَوَّلْتَ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ الدِّينَ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯১. ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জীবদ্দশায় আমি নওজোয়ান অবিবাহিত যুবক ছিলাম এবং আমি মসজিদেই নিদ্রা যেতাম। কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখলে সকালে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করতেন। তিনি বলেন, আমি (মনে মনে) বলতাম যে, আমার কী হয়েছে যে, আমি কোনো স্বপ্ন দেখিনা? এরপর (একদিন) আমি স্বপ্ন দেখলাম যেন কিছু লোককে একত্র করে একটি কুপের মধ্যে তাদের পায়ের উপর পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এরপর আমাকে ধরে একটি কুপের নিকট নিয়ে যাওয়া হলো । তখন একজন লোক বলল, এর ডান হাত ধরো। এরপর আমি জেগে উঠলাম। তখন আমার স্বপ্ন আমাকে খুব ভয় ও শংকায় ফেলে দিল।
তারপর আমি এই স্বপ্নের কথা হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা-এর কাছে বর্ণনা করলাম। হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বললেন, তুমি যা দেখেছ, তা কতই না উত্তম! তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ব্যক্ত করুন। তখন তিনি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ব্যক্ত করলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আব্দুল্লাহ কতই না ভাল লোক! যদি সে রাতে (তাহাজ্জুদ) সালাত আদায় করত!”[1]
তাখরীজ: বুখারী, সালাত ৪৪০; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৪৭৯;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৭০৭০। এছাড়াও, আব্দুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ নং ১৬৪৫; বাইহাকী, সালাত ১/৫০১; আবূ নুয়াইম, হিলইয়া ১/৩০৩।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ هُوَ ابْنُ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ كُنْتُ فِي عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا لِي مَبِيتٌ إِلَّا فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَصْبَحَ يَأْتُونَهُ فَيَقُصُّونَ عَلَيْهِ الرُّؤْيَا قَالَ فَقُلْتُ مَا لِي لَا أَرَى شَيْئًا فَرَأَيْتُ كَأَنَّ النَّاسَ يُحْشَرُونَ فَيُرْمَى بِهِمْ عَلَى أَرْجُلِهِمْ فِي رَكِيٍّ فَأُخِذْتُ فَلَمَّا دَنَا إِلَى الْبِئْرِ قَالَ رَجُلٌ خُذُوا بِهِ ذَاتَ الْيَمِينِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظْتُ هَمَّتْنِي رُؤْيَايَ وَأَشْفَقْتُ مِنْهَا فَسَأَلْتُ حَفْصَةَ عَنْهَا فَقَالَتْ نِعْمَ مَا رَأَيْتَ فَقُلْتُ لَهَا سَلِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَتْهُ فَقَالَ نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنْ اللَّيْلِ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯২. (অপর সূত্রে) ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আর তখন আমি ঘুমালে সকাল হওয়ার আগে উঠতাম না।(বর্ণনাকারী) নাফি’ বলেন, (এরপর হতে) ইবনু উমার রাতে সালাত আদায় করতেন।[1]
তাখরীজ: এটি পূর্বের হাদীসের পুনরাবৃত্তি। সেখানে এর তাখরীজ দেখুন।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ خَالِدٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدٍ الْفَزَارِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ ابْنُ عُمَرَ وَكُنْتُ إِذَا نِمْتُ لَمْ أَقُمْ حَتَّى أُصْبِحَ قَالَ نَافِعٌ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُصَلِّي اللَّيْلَ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৩. ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ আমি ঘুমে ছিলাম এমন সময় আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা আনা হল। আমি তা থেকে দুধ পান করলাম এবং এতটাই পরিতৃপ্ত হলাম যে, তৃপ্তির চিহ্ন আমার নখে- কিংবা বলেছেন, আমার নখসমূহে দেখতে পেলাম।এরপর এর অবশিষ্ট অংশ উমার ইবন খাত্তাবকে দিলাম। সাহাবীগণ বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনি এর কী তা’বীর করেন? তিনি বললেনঃ ইলম।[1]
তাখরীজ: বুখারী, ইলম ৮২; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৩৯১;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৮৭৮ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أُتِيتُ بِقَدَحٍ مِنْ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْهُ حَتَّى إِنِّي لَأَرَى الرِّيَّ فِي ظُفْرِي أَوْ قَالَ فِي أَظْفَارِي ثُمَّ نَاوَلْتُ فَضْلَهُ عُمَرَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَوَّلْتَهُ قَالَ الْعِلْمَ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক সাহাবী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: (স্বপ্নের মধ্যে) দুধ (দেখা) হলো ফিতরাত (এর প্রতীক), নৌকা হলো নাজাত (এর প্রতীক), উট দু:খ-কষ্ট (এর প্রতীক), সবুজ গাছপালা- শাকসবজি জান্নাতের প্রতীক এবং স্ত্রীলোক কল্যাণের প্রতিক।[1]
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মাউসিলী, মু’জামুশ শুয়ূখ নং ৩২৪ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ قَيْسٍ حَدَّثَنِي بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللَّبَنُ الْفِطْرَةُ وَالسَّفِينَةُ نَجَاةٌ وَالْجَمَلُ حُزْنٌ وَالْخُضْرَةُ الْجَنَّةُ وَالْمَرْأَةُ خَيْرٌ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৫. ইবনু ’আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে বলতেন: “তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা আমার নিকট বর্ণনা করে যাতে আমি তাকে এর ব্যাখ্যা বলে দিতে পারি।”
তিনি (ইবনু আব্বাস) বলেন, এরপর একজন লোক এসে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি (স্বপ্নে) আসমান ও যমীনের মাঝে একখন্ড মেঘ দেখলাম, যা থেকে মধু ও ঘি ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরছে। আমি আরও দেখলাম, একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে রয়েছে। আমি লোকদেরকে দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে। কেউ অধিক পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমাণ। আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে উঠছেন। আর আল্লাহ আপনাকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। তারপর অন্য এক লোক তা ধরল ও এর সাহায্যে উপরে উঠে গেল। ফলে আল্লাহ তাঁকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। আর এরপর আরেক লোক তা ধরে এর দ্বারা উপরে উঠে গেল। ফলে আল্লাহ তাঁকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। এরপর আরেক লোক তা ধরল। কিন্তু তা ছিঁড়ে গেল। পুনরায় তা জোড়া লাগানো হলে তা জোড়া লেগে গেল। তখন আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি অবশ্যই আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়ার অনুমতি দিবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “তুমি এর ব্যাখ্যা দাও।” আর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে লোকদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতেন।
আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম। আর তার থেকে যে ঘি ও মধু ঝরছে তা হল কুরআন। (তাতে রয়েছে) মধুর মিষ্টতা ও ঘিয়ের কোমলতা। আর যার তা (মধূ ও ঘি) সংগ্রহ করছিল, কেউ বেশি সংগ্রহ করছে, আর কেউ কম- তারা হলো কুরআন বহনকারী। আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত ঝুলন্ত দড়িটি হচ্ছে ঐ হক (মহাসত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ্ আপনাকে এর মাধ্যমে সুউচ্চে উঠাবেন। আপনার পরে আরেকজন তা ধরবে। ফলে এর দ্বারা সেও উচ্চে উঠবে। অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে উচ্চে উঠবে। এরপর আকেরজন তা ধরবে। কিন্তু তা ছিঁড়ে যাবে। পুনরায় তা জোড়া লেগে যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে উঠবে। হে আল্লাহর রাসূল। আমাকে বলুন, আমি ঠিক বলেছি, না ভুল? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “কিছু ঠিক বলেছ। আর কিছু ভুল বলেছ।” তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি। কিন্তু তিনি তা বলতে অস্বীকার করলেন।[1]
তাখরীজ: বুখারী, তা’বীর ৭০০০, ৭০৪৬; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬৯;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৫৬৫; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ১১১ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৫৪৬ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ هُوَ ابْنُ كَثِيرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ مِمَّا يَقُولُ لِأَصْحَابِهِ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ رُؤْيَا فَلْيَقُصَّهَا عَلَيَّ فَأَعْبُرَهَا لَهُ قَالَ فَجَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَأَيْتُ ظُلَّةً بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ تَنْطِفُ عَسَلًا وَسَمْنًا وَرَأَيْتُ أُنَاسًا يَتَكَفَّفُونَ مِنْهَا فَمُسْتَكْثِرٌ وَمُسْتَقِلٌّ وَرَأَيْتُ سَبَبًا وَاصِلًا مِنْ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ فَأَخَذْتَ بِهِ فَعَلَوْتَ فَأَعْلَاكَ اللَّهُ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ الَّذِي بَعْدَكَ فَعَلَا فَأَعْلَاهُ اللَّهُ ثُمَّ أَخَذَهُ الَّذِي بَعْدَهُ فَعَلَا فَأَعْلَاهُ اللَّهُ ثُمَّ أَخَذَهُ الَّذِي بَعْدَهُ فَقُطِعَ بِهِ ثُمَّ وُصِلَ فَاتَّصَلَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ ائْذَنْ لِي فَأَعْبُرَهَا فَقَالَ اعْبُرْهَا وَكَانَ أَعْبَرَ النَّاسِ لِلرُّؤْيَا بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَمَّا الظُّلَّةُ فَالْإِسْلَامُ وَأَمَّا الْعَسَلُ وَالسَّمْنُ فَالْقُرْآنُ حَلَاوَةُ الْعَسَلِ وَلِينُ السَّمْنِ وَأَمَّا الَّذِينَ يَتَكَفَّفُونَ مِنْهُ فَمُسْتَكْثِرٌ وَمُسْتَقِلٌّ فَهُمْ حَمَلَةُ الْقُرْآنِ فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَبْتَ وَأَخْطَأْتَ فَقَالَ فَمَا الَّذِي أَصَبْتُ وَمَا الَّذِي أَخْطَأْتُ فَأَبَى أَنْ يُخْبِرَهُ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৬. আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি একদিন স্বপ্নে দেখলাম যেন সূর্য- অথবা চন্দ্র- রাবী আবু জা’ফরের সংশয়- ভূ-পৃষ্ঠে নেমে এসেছে। আবার তাকে আসমানের দিকে একটি বিশাল লম্বা রশি দিয়ে টেনে তোলা হচ্ছে। এরপর তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বললেনঃ তা হচ্ছে আপনার ভাতিজার মৃত্যু– অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দ্বারা নিজেকেই বুঝিয়েছন।[1]
তাখরীজ: বাযযার, কাশফুল আসতার ১/৩৯৭ নং ৮৪৪ উত্তম সনদে; দেখুন, মাজমাউয যাওয়াইদ ৯/২৩-২৪।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ حَدَّثَنَا مِسْكِينٌ الْحَرَّانِيُّ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ بُرْقَانَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ الْأَصَمِّ عَنْ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ شَمْسًا أَوْ قَمَرًا شَكَّ أَبُو جَعْفَرٍ فِي الْأَرْضِ تُرْفَعُ إِلَى السَّمَاءِ بِأَشْطَانٍ شِدَادٍ فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ ذَاكَ ابْنُ أَخِيكَ يَعْنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَفْسَهُ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৭. আবূ মূসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি একটি তলোয়ার হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। হঠাৎ তার মাঝখানে ভেঙ্গে গেল। উহুদ যুদ্ধের দিন মুসলিমদের যে বিপদ ঘটেছিল এটা তা-ই। অতঃপর দ্বিতীয় বার তলোয়ারটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করলাম তখন সেটি আগের চেয়েও আরো উত্তম হয়ে গেল। এটা হল এই যে, আল্লাহ্ বিজয় দান করলেন এবং মুসলিমগণকে একত্রিত করে দিলেন। আমি স্বপ্নে আরো দেখতে পেলাম, একটি গরু (যবহ হচ্ছে) এবং শুনতে পেলাম আল্লাহ্ যা করেন সবই ভাল। এটাই হল উহুদ যুদ্ধের দিন একদল মু’মিনের (শাহাদাত বরণ)। আর ’খয়ের’ বা কল্যাণ হল- আল্লাহর পক্ষ হতে ঐ সকল কল্যাণই কল্যাণ এবং সত্যবাদিতার পুরস্কার যা আল্লাহ্ আমাদেরকে ’বাদার’ যুদ্ধের পর দান করেছেন।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, মানাকিব ৩৬২২; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৭২;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৭২৯৮; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬২৭৫, ৬২৭৬ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بَرِيدَ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَأَيْتُ فِي رُؤْيَايَ هَذِهِ أَنِّي هَزَزْتُ سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيبَ مِنْ الْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ أُخْرَى فَعَادَ كَأَحْسَنِ مَا كَانَ فَإِذَا هُوَ مَا جَاءَ اللَّهُ بِهِ مِنْ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِينَ وَرَأَيْتُ فِيهَا أَيْضًا بَقَرًا وَاللَّهِ خَيْرٌ فَإِذَا هُوَ النَّفَرُ مِنْ الْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ أُحُدٍ وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللَّهُ بِهِ مِنْ الْخَيْرِ وَثَوَابِ الصِّدْقِ الَّذِي آتَانَا بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৮. জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি যেন একটি সুরক্ষিত দুর্গে অবস্থান করছি। আমি আরও দেখছি একটি গরু যবেহ করা হয়েছে। আর আমি সেই দুর্গের অর্থ করলাম মদীনা। আর গরুর অর্থ (মুসলিমগণের) একটি দল। আর আল্লাহই সকল কল্যাণের মালিক। আমরা যদি মদীনায় অবস্থায় করি আর তারা (কাফিরগণ) সেখানে আমাদের নিকট চড়াও হয়, তবে আমরা তাদেরকে হত্যা করব।
তারা বললেন, আল্লাহর কসম! জাহিলী যুগে আমরা যেসবের সাক্ষাত লাভ করেছি, ইসলামেও কি আমরা সেসবের সাক্ষাত লাভ করব?
তিনি বললেন: “সেক্ষেত্রে তোমাদের অবস্থা (সম্পর্কে তোমরাই ভাল জান)।”আনসারদের একজন অপরজনকে বলতে লাগলেন, চলো, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাঁর মতামত পূণরায় জানতে চাই। এরপর তারা এসে বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার ব্যাপার কী? তখন তিনি বললেন, “এখন? কোনো নবীর জন্য এটি শোভনীয় নয় যে, তিনি যখন বর্ম পরিধান করেন, তখন যুদ্ধ না করা পর্যন্ত তা খুলে ফেলবেন।”[1]
তাখরীজ: আহমাদ ৩/৩৫১; ইবনু সা’দ, তাবাকাত ২/১/৩১-৩২; নাসাঈ, আল কুবরা নং৭৬৪৭। আগের হাদীসটি এর শাহিদও বটে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَأَيْتُ كَأَنِّي فِي دِرْعٍ حَصِينَةٍ وَرَأَيْتُ بَقَرًا يُنْحَرُ فَأَوَّلْتُ أَنَّ الدِّرْعَ الْمَدِينَةُ وَأَنَّ الْبَقَرَ نَفَرٌ وَاللَّهِ خَيْرٌ وَلَوْ أَقَمْنَا بِالْمَدِينَةِ فَإِذَا دَخَلُوا عَلَيْنَا قَاتَلْنَاهُمْ فَقَالُوا وَاللَّهِ مَا دُخِلَتْ عَلَيْنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ أَفَتُدْخَلُ عَلَيْنَا فِي الْإِسْلَامِ قَالَ فَشَأْنَكُمْ إِذًا وَقَالَتْ الْأَنْصَارُ لِبَعْضٍ رَدَدْنَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأْيَهُ فَجَاءُوا فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ شَأْنُكَ فَقَالَ الْآنَ إِنَّهُ لَيْسَ لِنَبِيٍّ إِذَا لَبِسَ لَأْمَتَهُ أَنْ يَضَعَهُ حَتَّى يُقَاتِلَ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৯. আবী হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, “স্বপ্নে হাতকড়া দেখাকে আমি অপছন্দ করি এবং পায়ে বেড়ি দেখাকে আমি পছন্দ করি। পায়ে বেড়ি দেখার ব্যাখ্যা হলো দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, তা’বীর ৭০১৭; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬৩;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৪০ তে। আর এটি গত হয়েছে আগের হাদীস ২১৮৯, ২১৯০ তে। এছাড়াও, খতীব, ফাসল ওয়াল ওয়াসল ১/২১১-২১২; ইবনু আবী শাইবা ১১/৭৭ নং ১৮৪৪।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ أَكْرَهُ الْغُلَّ وَأُحِبُّ الْقَيْدَ الْقَيْدُ ثَبَاتٌ فِي الدِّينِ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২২০০. ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আমি স্বপ্নে দেখলাম, এলোমেলো কালো চুল বিশিষ্ট পুতিগন্ধময় এক মহিলা যাকে মদীনা হতে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে মাহইয়াহ (জুহফা নামক স্থানে) তে বাসস্থান দেয়া হয়েছে। আমি এ মহিলার অর্থ করলাম মদীনার প্লেগ বা মহামারি যাকে মাহইয়াহর দিকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”[1]
তাখরীজ: আহমাদ ২/১৩৭; বুখারী, তা’বীর ৭০৩৮, ৭০৩৯, ৭০৪০। আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মাজমাউয যাওয়াইদ নং ৫৮৮৭ তে।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْهَاشِمِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ امْرَأَةً سَوْدَاءَ ثَائِرَةَ الشَّعْرِ تَفِلَةً أُخْرِجَتْ مِنْ الْمَدِينَةِ فَأُسْكِنَتْ مَهْيَعَةَ فَأَوَّلْتُهَا وَبَاءَ الْمَدِينَةِ يَنْقُلُهَا اللَّهُ إِلَى مَهْيَعَةَ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২২০১. জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, এক ব্যক্তি আমার নিকট এক টুকরা খেজুর নিয়ে এলো এবং আমি তা খেতে লাগলাম। আর আমি তাতে একটি আঁটি পেলাম, যা আমাকে ব্যথা দিল। এরপর লোকটি আমাকে আরেকটি খেজুরের টুকরা দিল। তখন আমি তাকে বললাম, “তুমি যেটি আমাকে দিয়েছিলে, আমি তাতে একটি আঁটি পেয়েছিলাম যা আমাকে ব্যথা দিয়েছিল। এরপর আমি সেটি খেয়ে ফেললাম।”
তখন আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনারতো চোখ ঘুমিয়েছিল (আপনি স্বপ্নে দেখেছেন)। এ হলো সেই সেনাদল যা আপনি পাঠিয়েছিলেন। তারা দু’ দু’বার সাফল্য লাভ করেছে। এ দু’বারেই তারা এমন এক লোককে পেলো যে আপনার ’যিম্মা’ (আশ্রয়/নিরাপত্তা) তালাশ করছে।’তখন (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি মুজালিদ (উর্ধ্বতন বর্ণনাকারী) কে বললাম, ’সে আপনার আশ্রয় তালাশ করছে’ –এর অর্থ কী? তিনি বলেন, সে বলছিল: ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’[1]
তাখরীজ: আহমাদ ৩/৩৯৯।
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا عَبِيدَةُ بْنُ الْأَسْوَدِ عَنْ مُجَالِدٍ عَنْ عَامِرٍ عَنْ جَابِرٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ يَوْمًا مِنْ الْأَيَّامِ إِنِّي رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ أَنَّ رَجُلًا أَتَانِي بِكُتْلَةٍ مِنْ تَمْرٍ فَأَكَلْتُهَا فَوَجَدْتُ فِيهَا نَوَاةً فَآذَتْنِي حِينَ مَضَغْتُهَا ثُمَّ أَعْطَانِي كُتْلَةً أُخْرَى فَقُلْتُ إِنَّ الَّذِي أَعْطَيْتَنِي وَجَدْتُ فِيهَا نَوَاةً آذَتْنِي فَأَكَلْتُهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ نَامَتْ عَيْنُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذِهِ السَّرِيَّةُ الَّتِي بَعَثْتَ بِهَا غَنِمُوا مَرَّتَيْنِ كِلْتَاهُمَا وَجَدُوا رَجُلًا يَنْشُدُ ذِمَّتَكَ فَقُلْتُ لِمُجَالِدٍ مَا يَنْشُدُ ذِمَّتَكَ قَالَ يَقُولُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২২০২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদীনাবাসী এক মহিলা ছিল যার স্বামী ছিল একজন ব্যবসায়ী। সে (ব্যবসায় লাভের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানে) বারবার যাতায়াত করতো। আর যখনই তার স্বামী তার কাছ থেকে অনুপস্থিত থাকতো, তখনই সে স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু তার গর্ভাবস্থায় তাকে রেখে তার স্বামী খুব কমই বাইরে যেতো। এমতাবস্থায় সে মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বললো: আমার স্বামী ব্যবসা উপলক্ষ্যে বাইরে যাতায়াত করেন। যখন তিনি আমাকে গর্ভাবস্থায় রেখে বাইরে গেলেন, তখন ঘুমন্ত ব্যক্তি যেরূপ (স্বপ্ন) দেখে, আমি তদ্রুপ (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমার ঘরের একটি খুঁটি ভেঙ্গে গিয়েছে এবং আমি একটি কানা সন্তান প্রসব করেছি।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “ভাল। ইন্শা আল্লাহু তা’আলা তোমার স্বামী তোমার নিকট ভালভাবেই ফিরে আসবে এবং তুমি একটি নেককার সন্তান প্রসব করবে।”
এরপর সে এ স্বপ্নটি আরো দু’বার বা তিনবার দেখলো। আর প্রত্যেক বারই সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলতো এবং তিনি তাকে (একথাই) বলতেন এবং তার স্বামীও ফিরে আসতো। আর সে একটি করে সন্তান প্রসব করতো। এরপর সে পূর্বে যেভাবে আসতো, সেভাবেই একদিন সে মহিলা এলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুপস্থিত ছিলেন। আর সে ঐ স্বপ্নই দেখেছিল। তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর দাসী! তুমি কী ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করবে?
সে বললো, আমি যে স্বপ্ন দেখেছি, তা। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসেন, তখন আমি তাঁকে সেই (স্বপ্নের) ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তম কথা বলেন এবং তিনি যেমন বলেন, তেমনই হয়।
তখন আমি তাকে বললাম, তুমি আমাকে তোমার স্বপ্নে কথা বলো দেখি। সে বললো, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসবেন, তখন আমি তাঁকে আমার স্বপ্নের কথা বলবো, যেমন আগে বলতাম।
কিন্তু আল্লাহর কসম! সে আমাকে তা না বলা পর্যন্ত আমি তাকে ছাড়লাম না। (এরপর যখন সে তার স্বপ্নের কথা বললো) তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! তোমার স্বপ্ন সত্য হলে, (এর অর্থ) অবশ্যই তোমার স্বামী মারা যাবে এবং তুমি একটি পাপাচারী সন্তান জন্ম দেবে। তখন সে কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো। সে বলতে লাগলো, আমি তোমার কাছে কেন আমার স্বপ্ন বলতে গেলাম?
তার কান্নারত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে আয়িশা! এর কি হয়েছে?”
আমি তাঁকে তার এ (স্বপ্নের) ঘটনাটি জানালাম এবং আমি এর যে ব্যাখ্যা দিয়েছি তাও বললাম।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “হে আয়িশা! থামো। তুমি কোনো মুসলিমের স্বপ্নের তা’বীর (ব্যাখ্যা) করলে, তার কল্যাণকর ব্যাখ্যা দেবে। কেননা, ব্যাখ্যা দাতা যেখাবে ব্যাখ্যা দেবে, স্বপ্ন সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে।”আল্লাহর কসম! এরপর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করলো এবং আমি তাকে একটি পাপাচারী সন্তান জন্ম দিতে দেখলাম।[1]
তাখরীজ: ((মুহাক্বিক্ব এর কোনো তাখরীজ দেননি।–অনুবাদক))
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ بْنُ يَعِيشَ حَدَّثَنَا يُونُسُ هُوَ ابْنُ بُكَيْرٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ إِسْحَقَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ كَانَتْ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَهَا زَوْجٌ تَاجِرٌ يَخْتَلِفُ فَكَانَتْ تَرَى رُؤْيَا كُلَّمَا غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا وَقَلَّمَا يَغِيبُ إِلَّا تَرَكَهَا حَامِلًا فَتَأْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَقُولُ إِنَّ زَوْجِي خَرَجَ تَاجِرًا فَتَرَكَنِي حَامِلًا فَرَأَيْتُ فِيمَا يَرَى النَّائِمُ أَنَّ سَارِيَةَ بَيْتِي انْكَسَرَتْ وَأَنِّي وَلَدْتُ غُلَامًا أَعْوَرَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرٌ يَرْجِعُ زَوْجُكِ عَلَيْكِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى صَالِحًا وَتَلِدِينَ غُلَامًا بَرًّا فَكَانَتْ تَرَاهَا مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ تَأْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُولُ ذَلِكَ لَهَا فَيَرْجِعُ زَوْجُهَا وَتَلِدُ غُلَامًا فَجَاءَتْ يَوْمًا كَمَا كَانَتْ تَأْتِيهِ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَائِبٌ وَقَدْ رَأَتْ تِلْكَ الرُّؤْيَا فَقُلْتُ لَهَا عَمَّ تَسْأَلِينَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا أَمَةَ اللَّهِ فَقَالَتْ رُؤْيَا كُنْتُ أُرَاهَا فَآتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْأَلُهُ عَنْهَا فَيَقُولُ خَيْرًا فَيَكُونُ كَمَا قَالَ فَقُلْتُ فَأَخْبِرِينِي مَا هِيَ قَالَتْ حَتَّى يَأْتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَعْرِضَهَا عَلَيْهِ كَمَا كُنْتُ أَعْرِضُ فَوَاللَّهِ مَا تَرَكْتُهَا حَتَّى أَخْبَرَتْنِي فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَئِنْ صَدَقَتْ رُؤْيَاكِ لَيَمُوتَنَّ زَوْجُكِ وَتَلِدِينَ غُلَامًا فَاجِرًا فَقَعَدَتْ تَبْكِي وَقَالَتْ مَا لِي حِينَ عَرَضْتُ عَلَيْكِ رُؤْيَايَ فَدَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ تَبْكِي فَقَالَ لَهَا مَا لَهَا يَا عَائِشَةُ فَأَخْبَرْتُهُ الْخَبَرَ وَمَا تَأَوَّلْتُ لَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَهْ يَا عَائِشَةُ إِذَا عَبَرْتُمْ لِلْمُسْلِمِ الرُّؤْيَا فَاعْبُرُوهَا عَلَى الْخَيْرِ فَإِنَّ الرُّؤْيَا تَكُونُ عَلَى مَا يَعْبُرُهَا صَاحِبُهَا فَمَاتَ وَاللَّهِ زَوْجُهَا وَلَا أُرَاهَا إِلَّا وَلَدَتْ غُلَامًا فَاجِرًا