পরিচ্ছেদঃ ১. আল্লাহ তা’আলার বাণী: “তাদের জন্য দুনিয়ার জীবনে রয়েছে সুসংবাদ।” (ইউনূস: ৬৪)
২১৭৫. উবাদাহ ইবনু ছামিত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া নবীয়াল্লাহ! আল্লাহ তা’আলার বাণীর (অর্থ কি?): “তাদের জন্য দুনিয়ার জীবনে রয়েছে সুসংবাদ।” (ইউনূস: ৬৪) তিনি বললেন, “তুমি আমাকে এমন একটি বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে, যা তোমার পূর্বে কেউ কিংবা আমার উম্মাতের কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেনি।” তিনি বলেন, “এটি হলো সুস্বপ্ন যা কোনো মুসলিম দেখে থাকে, কিংবা তার সম্পর্কে (অন্যকে) দেখানো হয়।”[1]
بَاب فِي قَوْلِهِ تَعَالَى لَهُمْ الْبُشْرَى فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا
أَخْبَرَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا أَبَانُ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَوْلُ اللَّهِ لَهُمْ الْبُشْرَى فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَقَالَ سَأَلْتَنِي عَنْ شَيْءٍ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَحَدٌ قَبْلَكَ أَوْ أَحَدٌ مِنْ أُمَّتِي قَالَ هِيَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ يَرَاهَا الْمُسْلِمُ أَوْ تُرَى لَهُ
তাখরীজ: তাবারী, তাফসীর ১১/ ১৩৩, ১৩৪,১৩৫, ১৩৬; আহমাদ ৫/৩১৫; ইবনু মাজাহ, তা’বীরুর রু’ইয়া ৩৮৯৮; তিরমিযী, রু’ইয়া ২২৭৬; হাকিম ৪/৩৯১ মুনকাতি বা বিচ্ছন্ন সনদে।
এর শাহিদ রয়েছে ইবনু আব্বাসের হাদীস সহীহ মুসলিম, সালাত ৪৭৯ তে।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪১৭, ২৩৮৭ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ১৮৯৬ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৪৯৫। তে।
পরিচ্ছেদঃ ২. মুসলিমের স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ
২১৭৬. উবাদাহ ইবনু ছামিত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মুসলিমের স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।”[1]
بَاب فِي رُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنْ النُّبُوَّةِ
أَخْبَرَنَا الْأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنْ النُّبُوَّةِ
তাখরীজ: বুখারী, তা’বীর ৬৯৮৭; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬৪;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৩২৩৭ তে। এছাড়াও, ইবনু আবী শাইবা ১১/৫১-৫২ নং ১০৫০২; তায়ালিসী ১/৩৪৯ নং ১৭৮৮; হাইছাম ইবনু কুলাইব, আল মুসনাদ নং ১১৬৭, ১১৬৮।
আর আনাসের হাদীসের আমরা তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৩৪৩০ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৪৩ তে। সনদ সহীহ, আর এটি আগের হাদীসটির পূনরাবৃত্তি।
পরিচ্ছেদঃ ৩. নবুওয়াত সমাপ্ত হয়ে গেছে, তবে মুবাশশিরাত বা সুসংবাদ অবশিষ্ট রয়ে গেছে
২১৭৭. উম্মু কুরয আল কা’বিয়াহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “নবুওয়াত সমাপ্ত হয়ে গেছে, তবে মুবাশশিরাত বা সুসংবাদ অবশিষ্ট রয়ে গেছে।”[1]
بَاب ذَهَبَتْ النُّبُوَّةُ وَبَقِيَتْ الْمُبَشِّرَاتُ
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ سِبَاعِ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أُمِّ كُرْزٍ الْكَعْبِيَّةِ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ذَهَبَتْ النُّبُوَّةُ وَبَقِيَتْ الْمُبَشِّرَاتُ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৪৭ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৩৫১ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৪. নাবী (ﷺ)-কে স্বপ্নে দেখা প্রসঙ্গে
২১৭৮. আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, সে যেন (সত্যই) আমাকেই দেখল। কেননা, শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।”[1]
بَاب فِي رُؤْيَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَنَامِ
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ مِثْلِي
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৫২৫০ তে। এছাড়াও, ইবনু আবী শাইবা ১১/৫৫ নং ১০৫১৬।
এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবী হুরাইরা ও আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে যা বুখারী বর্ণনা করেছেন। এর তাখরীজ আমরা দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬৪৮৮ ও ৩২৮৫ তে। এছাড়া আবী দারদার হাদীসের আমরা তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল হুমাইদী নং ৩৯৫ তে। যেমন জাবিরের হাদীস আমরা তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২২৬২ তে ও আবী জুহাইফাহর হাদীস ৮৮১ নং এ। দেখুন, ইবনু আবী, শাইবা, ১১/৫৫-৫৬।
পরিচ্ছেদঃ ৪. নাবী (ﷺ)-কে স্বপ্নে দেখা প্রসঙ্গে
২১৭৯. আবী কাতাদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, সে যেন প্রকৃতপক্ষে (আমাকে) দেখল।”[1]
بَاب فِي رُؤْيَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَنَامِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ عَنْ الزُّبَيْدِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ
তাখরীজ: আহমাদ ৫/৩০৬; বুখারী, তা’বীর ৬৯৯৬; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬৭।
পরিচ্ছেদঃ ৫. যে ব্যক্তি অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখল
২১৮০. আবী কাতাদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কেউ যখন ভয়ানক মন্দ স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন তার বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলে আর শয়তানের ক্ষতি হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায়। তা হলে এমন স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।[1]
بَاب فِيمَنْ يَرَى رُؤْيَا يَكْرَهُها
أَخْبَرَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ عَنْ يَحْيَى عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ مِنْ اللَّهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا حَلَمَ أَحَدُكُمْ حُلْمًا يَخَافُهُ فَلْيَبْصُقْ عَنْ شِمَالِهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهَا لَا تَضُرُّهُ
তাখরীজ: বুখারী, বাদাউল খালক ৩২৯২; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬১;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৫৯ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৪২৩ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৫. যে ব্যক্তি অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখল
২১৮১. আবূ সালামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত। অবশেষে আমি আবূ ক্বাতাদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকট তা বর্ণনা করলে তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে দিত। অবশেষে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “পছন্দনীয় স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং এমন লোকের কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে। আর যখন অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন যেন সে এর ক্ষতি ও শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায় এবং তিনবার থু থু ফেলে আর সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না।”[1]
بَاب فِيمَنْ يَرَى رُؤْيَا يَكْرَهُها
أَخْبَرَنَا أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ يَقُولُ إِنْ كُنْتُ لَأَرَى الرُّؤْيَا تُمْرِضُنِي فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِأَبِي قَتَادَةَ قَالَ وَأَنَا إِنْ كُنْتُ لَأَرَى الرُّؤْيَا تُمْرِضُنِي حَتَّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ مِنْ اللَّهِ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلْيَحْمَدْ اللَّهَ وَلَا يُحَدِّثْ بِهَا إِلَّا مَنْ يُحِبُّ وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتْفُلْ عَنْ يَسَارِهِ ثَلَاثًا وَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّهَا وَلَا يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ
তাখরীজ: বুখারী, তা’বীর ৭০৪৪; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬১;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৫৮ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৪২২ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৬. স্বপ্ন তিন প্রকার
২১৮২. আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “স্বপ্ন তিন প্রকার: সুস্বপ্ন যা আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ, শয়তানের তরফ থেকে ভয় দেখানো এবং মানুষ মনে মনে যে কল্পনা করে। তাই যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে তবে সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। বরং উঠে যেন (নফল) সালাত আদায় করে নেয়।”[1]
بَاب الرُّؤْيَا ثَلَاثٌ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ عَنْ مَخْلَدِ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرُّؤْيَا ثَلَاثٌ فَالرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ بُشْرَى مِنْ اللَّهِ وَالرُّؤْيَا تَحْزِينٌ مِنْ الشَّيْطَانِ وَالرُّؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ بِهِ الْإِنْسَانُ نَفْسَهُ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُهُ فَلَا يُحَدِّثْ بِهِ وَلْيَقُمْ وَلْيُصَلِّ
তাখরীজ: বুখারী, তা’বীর ৭০১৭; মুসলিম, রু’ইয়া ২২৬৩;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৪০। পরবর্তী হাদীসটিও দেখুন।
পরিচ্ছেদঃ ৭. যে ব্যক্তি যত সত্যবাদী তার স্বপ্ন ততো অধিক সত্য হয়ে হয়ে থাকে
২১৮৩. আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) নিকটবর্তী হবে তখন মু’মিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত থাকবে। যে ব্যক্তি যত সত্যবাদী তার স্বপ্ন ততো অধিক সত্যে পরিণত হবে।[1]
بَاب أَصْدَقُ النَّاسِ رُؤْيَا أَصْدَقُهُمْ حَدِيثًا
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ عَنْ مَخْلَدِ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُهُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُهُمْ حَدِيثًا
তাখরীজ: এটি আগের হাদীসটির অংশবিশেষ। সুতরাং পূর্ণ তাখরীজের জন্য সেটি দেখুন। এছাড়াও, হাকিম ৪/৩৯০।
পরিচ্ছেদঃ ৮. কোনো লোকের জন্য স্বপ্ন বানিয়ে বলা নিষেধ
২১৮৪. আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি মনগড়া (মিথ্যা) স্বপ্ন বর্ণনা করে, কিয়ামতের দিন তাকে (শাস্তি হিসাবে) যবের দানায় গিট লাগাতে বাধ্য করা হবে।”[1]
بَاب النَّهْيِ عَنْ أَنْ يَحْتَلِمَ الرَّجُلُ رُؤْيَا لَمْ يَرَهَا
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ عَنْ عَبْدِ الْأَعْلَى عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ يَرْفَعُ الْحَدِيثَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ كَذَبَ فِي حُلْمِهِ كُلِّفَ عَقْدَ شَعِيرَتَيْنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
তাখরীজ: আহমাদ ১/৭৬, ৯০, ৯১, ১৩১; তিরমিযী, রু’ইয়া ২২৮২, ২২৮৩; হাকিম ৪/৩৯২; খতীব, তারীখ বাগদাদ ১১/৯৩ হাসান সনদে; আর এর শাহিদ হাদীস রয়েছ্ ইবনু আব্বাস হতে যা বুখারী মুসলিম সম্মিলিতভাবে বর্ণনা করেছেন। আমরা যার পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৫৭৭; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৬৮৫, ৫৬৮৬ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৫৪১ তে।
তিরমিযী বলেন: এ হাদীসটি হাসান।’ হাকিম বলেন: ‘এ হাদীসের সনদ সহীহ; যদিও তারা উভয়ে বর্ণনা করেননি।’ আর যাহাবী তাঁর বক্তব্যকে খণ্ডন করে বলেন: বরং আব্দুল আ’লাকে আবূ যুর’আ যয়ীফ বলেছেন।’
হাফিজ তার ফাতহুল বারী ১২/৪২৮ তে তিরমিযীর রিওয়ায়াত উল্লেখ করে বলে, এর সনদ হাসান।’
পরিচ্ছেদঃ ৯. ভোরের স্বপ্ন অধিক সত্যে পরিণত হয়
২১৮৫. আবী সাঈদ আল খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ভোর বেলার স্বপ্ন সর্বাধিক সত্য হয়।”[1]
بَاب أَصْدَقُ الرُّؤْيَا بِالْأَسْحَارِ
أَخْبَرَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ دَرَّاجٍ أَبِي السَّمْحِ عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْدَقُ الرُّؤْيَا بِالْأَسْحَارِ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৩৫৭; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬০৪১ তে।
পরিচ্ছেদঃ ১০. আলিম কিংবা শুভাকাঙ্খী ব্যতীত অন্য কারো নিকট স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়া অপছন্দনীয়
২১৮৬. আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা আলিম কিংবা শুভাকাঙ্খী ব্যতীত অন্য কারো নিকট স্বপ্ন বর্ণনা করো না।”[1]
بَاب كَرَاهِيَةِ أَنْ يَعْبُرَ الرُّؤْيَا إِلَّا عَلَى عَالِمٍ أَوْ نَاصِحٍ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لَا تَقُصُّوا الرُّؤْيَا إِلَّا عَلَى عَالِمٍ أَوْ نَاصِحٍ
তাখরীজ: তিরমিযী, রু’ইয়া ২২৮১; তিনি বলেন, এ হাদীস হাসান সহীহ; আবুশ শাইখ, তাবাকাতুল মুহাদ্দিসীন বিআসবাহান নং ৮৪৫; আবু নুয়াইম, যিকরু আখবারু আসবাহান ২/২৪১; তাবারাণী, সাগীর ২/৪৯ যয়ীফ সনদে। পরবর্তী হাদীসটিও দেখুন।
পরিচ্ছেদঃ ১১. স্বপ্ন বর্ণনা না করা হলে তা কার্যকর হয় না
২১৮৭. আবী রাযীন আল উকাইলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি: “স্বপ্নের ব্যাখ্যা না করা পর্যন্ত তা উড়ন্ত পাখির পায়ে ঝুলন্ত জিনিস সদৃশ। তার ব্যাখ্যা করা হলে তা ছিটকে পড়ে যায় (বাস্তবায়িত হয়)।[1]
بَاب الرُّؤْيَا لَا تَقَعُ مَا لَمْ تُعَبَّرْ
أَخْبَرَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ قَالَ سَمِعْتُ وَكِيعَ بْنَ عُدُسٍ يُحَدِّثُ عَنْ عَمِّهِ أَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الرُّؤْيَا هِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يُحَدَّثْ بِهَا فَإِذَا حُدِّثَ بِهَا وَقَعَتْ
পরিচ্ছেদঃ ১২. স্বপ্নে মহান আল্লাহ কে দেখা সম্পর্কে
২১৮৮. আব্দুর রহমান ইবনু আয়িশ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি: “আমি আমার রবকে সর্বোত্তম সূরতে (স্বপ্নে) দেখেছি।” তিনি (মহান আল্লাহ) বললেন: ’মালাউল আ’লা’ (সর্বোচ্চ পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করছে?’ তখন আমি বললাম, “হে রব! আপনিই ভাল জানেন।”তিনি বলেন: “অত:পর তিনি তাঁর হাতের তালু[1] আমার উভয় কাঁধের উপর রাখলেন; এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের শীতলতা অনূভব করলাম। এভাবে আমি আসমান ও যমীনসমূহে যা রয়েছে তা জানতে পারলাম। একথা বলে তিনি তিলাওয়াত করলেন: “এভাবে আমরা ইবরহীমকে আসমান ও যমিনসমূহের মুলুকিয়াত বা রাজত্ব দর্শন করালাম, যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে।[2] সূরা আন’আম ৫৭।”
بَاب فِي رُؤْيَةِ الرَّبِّ تَعَالَى فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُبَارَكِ حَدَّثَنِي الْوَلِيدُ حَدَّثَنِي ابْنُ جَابِرٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ اللَّجْلَاجِ وَسَأَلَهُ مَكْحُولٌ أَنْ يُحَدِّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَائِشٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ رَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى فَقُلْتُ أَنْتَ أَعْلَمُ يَا رَبِّ قَالَ فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَتَلَا وَكَذَلِكَ نُرِي إِبْرَاهِيمَ مَلَكُوتَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلِيَكُونَ مِنْ الْمُوقِنِينَ
((এরপর মুহাক্বিক্ব এবং সাহাবী ও তাবি’ঈগণের এবং সালাফদের মধ্যে বিশেষভাবে ইমাম আহমাদ, ইমাম জুওয়াইনী ইমামুল হারামাঈন-এর মতামত উল্লেখ করেছেন।–অনুবাদক))
[2] তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ, যদি আব্দুর রহমান ইবনু আয়িশ এর সাহাবী হওয়া সাব্যস্ত হয়।
তাখরীজ: আবী আসিম, আস সুন্নাহ নং ৩৮৮, ৪৬৭, আহাদ ওয়াল মাছানী নং ২৫৮৫; ইবনুল জাওযী, আল ইলালুল্ মুতানাহিয়্যাহ ১/৩১ নং ১১; আজুরী, আশ শরীয়াহ পৃ: ৪৩৩; বাইহাকী, আসমা ওয়াস সিফাত পৃ: ২৯৮; হাকিম ১/৫২০; তাবারী, তাফসীর ৭/২৪৭; আহমাদ ১/৩৬৮, ৪/৬৬, ৫/৩৭৮; ইবনু খুযাইমা, আত তাওহীদ নং ৫৫; তিরমিযী, তাফসীর ৩২৩১, ৩২৩২, ৩২৩৩ একটি কে তিরযিমী হাসান সহীহ বলেছেন; তিনি আরও বলেন, ‘আমি এ হাদীস সম্পর্কে মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল (বুখারী) কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি বলেন, এ হাদীস হাসান সহীহ’।; আবূ ইয়ালা, আল মুসনাদ নং ২৬০৮; তাবারাণী, কাবীর ২০/১০৯ নং ২১৬; হাইছাম ইবনু কুলাইব, আল মুসনাদ নং ১৩৪৪; ইবনু আদী, আল কামিল ৬/২৩৪৪;
দারু কুতনী আল ইলাল ৬/৫৭ এ বলেন, এ হাদীসের সনদের বিভিন্নতা আলোচনা করে বলেন, এ ব্যাপারে কোনো সহীহ হাদীস নেই, এর প্রত্যেকটি মুযতারিব (বিক্ষিপ্ত)।’
বাইহাকী আসমা ওয়াস সিফাত পৃ: ৩০১ এ বলেন, এ হাদীস সাব্যস্ত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে।’
এ ব্যাপারে সনদের দিক দিয়ে সর্বার্ধিক বিশুদ্ধ হলো মুয়ায রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে, ১. নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বানী: “এরপর আমার নিকট সকল বিষয় উদ্ভাষিত হয়ে উঠল এবং আমি জেনে নিলাম।”
২. “এরপর আমার নিকট সকল বিষয় উদ্ভাষিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জেনে নিলাম।”
৩. “এরপর আমার নিকট আসমান যমীনের সকল বিষয় উদ্ভাষিত হয়ে উঠল।”
৪. “এরপর আমি আসমান যমীনের সকল বিষয় জেনে নিলাম।”
৫. “এরপর আমি পুর্ব ও পশ্চিমের মধ্যকার সকল বিষয় জেনে নিলাম।”
(অনুবাদকের টীকা: সম্মানিত পাঠক! এখানে মহামতি মুহাক্বিক্ব লম্বা টীকা দিয়েছেন, যার বিষয় বস্তু হলো, কিছু লোক এ হাদীস মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘বাশারিয়াত’ তথা ‘মানুষ’-এর শ্রেণি থেকে বের করে দেয়। কেননা, তাদের নিকট ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ব ও পরের সকল জ্ঞান পরিবেষ্টন করে আছেন।’ যা ছিল তা তিনি জানেন, যা হবে তাও তিনি জানেন, যা অচিরেই হবে তা তিনি জানেন, ফলে তিনি লাওহ ও কলমের জ্ঞানকেও পরিবেষ্টন করে আছেন।’
এ সকল আকীদা পোষণকারীদের খণ্ডণে মুহাক্বিক্ব ইমাম বুসীরী (রহঃ) এর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন। এরপর আল কুরআন কারীমের অনেক গুলি আয়াত উদ্ধৃত করেছেন, যেখানে মহান আল্লাহ সকল রাসূলকে মানুষ হিসেবে প্রেরণ করার কথা উল্লেখ করেছন। এছাড়া আরও অনেক আয়াত উল্লেখ করেছেন যেখানে ইলমুল গায়িব মহান আল্লাহ নিজের জন্য খাস করেছেন, আসমান ও যমীনের আর কেউ জানেনা, বলে উল্লেখ করেছেন। এসকল আয়াতের মাধ্যমে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মানবত্ব এবং সকল জ্ঞান পরিবেষ্টন করে থাকার অসম্ভবতা প্রমাণ করেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে দেখুন, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লার ইসলামী আকীদা পৃ: ১৯৬-২০৭। এছাড়াও দেখুন, শাইখ ইহসান ইলাহী যহীর রাহিমাহুল্লাহ রচিত আমাদের কর্তৃক অনুদিত ‘আল বেরেলভীয়্যাহ’ বা বেরেলভী মতবাদ’, পৃ; ১৪৩-২০৫।)
আর এ হাদীসে যে জ্ঞান দানের কথা বলা হয়েছে: তা কী সম্পর্কিত, এ হাদীসেই তার জবাব রয়েছে, যাতে মহান আল্লাহ’র প্রশ্ন: মালাউল আ’লা কি নিয়ে বিতর্ক করছে? তিনবার এর উত্তরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবারই বলেছেন: ‘আমি জানিনা।’ এরপর যখন মহান আল্লাহ তাঁর হাত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁধের মাঝে রাখলেন, তখন তিনি কী জানতে পারলেন? তা হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার প্রশ্নের উত্তরে বললেন: ‘পাপের কাফ্ফারা, .....।’
ফলে এর মাধ্যমে সকল জ্ঞান অবগত হওয়ার আকীদা বাতিল। তবে নাবীদের স্বপ্ন যেহেতু ওহী তাই এ ওহী বর্ণনা করতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ ১২. স্বপ্নে মহান আল্লাহ কে দেখা সম্পর্কে
২১৮৯. ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি স্বপ্নে তার রবকে দেখল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”[1]
بَاب فِي رُؤْيَةِ الرَّبِّ تَعَالَى فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ قُطْبَةَ عَنْ يُوسُفَ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ مَنْ رَأَى رَبَّهُ فِي الْمَنَامِ دَخَلَ الْجَنَّةَ
তাখরীজ: ইবনু আদী, কামিল ৭/২৬২২; দেখুন, মীযানুল ই’তিদাল ৪/৪৭৫।
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯০. আবূ সা’ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেনঃ “একবার আমি নিদ্রাবস্থায় (স্বপ্নে) দেখলাম যে, লোকদেরকে আমার সামনে আনা হচ্ছে। আর তাদের পরণে রয়েছে জামা। কারো জামা বুক পর্যন্ত আর কারো জামা এর নীচ পর্যন্ত। আর ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযি.)-কে আমার সামনে আনা হল এমন অবস্থায় যে, তিনি তাঁর জামা (অধিক লম্বা হওয়ায়) টেনে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন।” আশপাশের সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এর কী তা’বীর করেছেন? তিনি বললেনঃ (এ জামা অর্থ) দ্বীন।”[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ هُوَ ابْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ بَيْنَا إِذَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ يُعْرَضُونَ عَلَيَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ مِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثُّدِيَّ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ دُونَ ذَلِكَ وَعُرِضَ عَلَيَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجُرُّهُ فَقَالَ مَنْ حَوْلَهُ فَمَاذَا تَأَوَّلْتَ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ الدِّينَ
তাখরীজ: বুখারী, ঈমান ২৩; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৩৯০;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১২৯০; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৮৯০ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৪২২ তে।
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯১. ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জীবদ্দশায় আমি নওজোয়ান অবিবাহিত যুবক ছিলাম এবং আমি মসজিদেই নিদ্রা যেতাম। কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখলে সকালে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করতেন। তিনি বলেন, আমি (মনে মনে) বলতাম যে, আমার কী হয়েছে যে, আমি কোনো স্বপ্ন দেখিনা? এরপর (একদিন) আমি স্বপ্ন দেখলাম যেন কিছু লোককে একত্র করে একটি কুপের মধ্যে তাদের পায়ের উপর পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এরপর আমাকে ধরে একটি কুপের নিকট নিয়ে যাওয়া হলো । তখন একজন লোক বলল, এর ডান হাত ধরো। এরপর আমি জেগে উঠলাম। তখন আমার স্বপ্ন আমাকে খুব ভয় ও শংকায় ফেলে দিল।
তারপর আমি এই স্বপ্নের কথা হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা-এর কাছে বর্ণনা করলাম। হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বললেন, তুমি যা দেখেছ, তা কতই না উত্তম! তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ব্যক্ত করুন। তখন তিনি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ব্যক্ত করলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আব্দুল্লাহ কতই না ভাল লোক! যদি সে রাতে (তাহাজ্জুদ) সালাত আদায় করত!”[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ هُوَ ابْنُ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ كُنْتُ فِي عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا لِي مَبِيتٌ إِلَّا فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَصْبَحَ يَأْتُونَهُ فَيَقُصُّونَ عَلَيْهِ الرُّؤْيَا قَالَ فَقُلْتُ مَا لِي لَا أَرَى شَيْئًا فَرَأَيْتُ كَأَنَّ النَّاسَ يُحْشَرُونَ فَيُرْمَى بِهِمْ عَلَى أَرْجُلِهِمْ فِي رَكِيٍّ فَأُخِذْتُ فَلَمَّا دَنَا إِلَى الْبِئْرِ قَالَ رَجُلٌ خُذُوا بِهِ ذَاتَ الْيَمِينِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظْتُ هَمَّتْنِي رُؤْيَايَ وَأَشْفَقْتُ مِنْهَا فَسَأَلْتُ حَفْصَةَ عَنْهَا فَقَالَتْ نِعْمَ مَا رَأَيْتَ فَقُلْتُ لَهَا سَلِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَتْهُ فَقَالَ نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنْ اللَّيْلِ
তাখরীজ: বুখারী, সালাত ৪৪০; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৪৭৯;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৭০৭০। এছাড়াও, আব্দুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ নং ১৬৪৫; বাইহাকী, সালাত ১/৫০১; আবূ নুয়াইম, হিলইয়া ১/৩০৩।
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯২. (অপর সূত্রে) ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আর তখন আমি ঘুমালে সকাল হওয়ার আগে উঠতাম না।(বর্ণনাকারী) নাফি’ বলেন, (এরপর হতে) ইবনু উমার রাতে সালাত আদায় করতেন।[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ خَالِدٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدٍ الْفَزَارِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ ابْنُ عُمَرَ وَكُنْتُ إِذَا نِمْتُ لَمْ أَقُمْ حَتَّى أُصْبِحَ قَالَ نَافِعٌ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُصَلِّي اللَّيْلَ
তাখরীজ: এটি পূর্বের হাদীসের পুনরাবৃত্তি। সেখানে এর তাখরীজ দেখুন।
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৩. ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ আমি ঘুমে ছিলাম এমন সময় আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা আনা হল। আমি তা থেকে দুধ পান করলাম এবং এতটাই পরিতৃপ্ত হলাম যে, তৃপ্তির চিহ্ন আমার নখে- কিংবা বলেছেন, আমার নখসমূহে দেখতে পেলাম।এরপর এর অবশিষ্ট অংশ উমার ইবন খাত্তাবকে দিলাম। সাহাবীগণ বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনি এর কী তা’বীর করেন? তিনি বললেনঃ ইলম।[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أُتِيتُ بِقَدَحٍ مِنْ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْهُ حَتَّى إِنِّي لَأَرَى الرِّيَّ فِي ظُفْرِي أَوْ قَالَ فِي أَظْفَارِي ثُمَّ نَاوَلْتُ فَضْلَهُ عُمَرَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَوَّلْتَهُ قَالَ الْعِلْمَ
তাখরীজ: বুখারী, ইলম ৮২; মুসলিম, ফাযাইলুস সাহাবাহ ২৩৯১;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৮৭৮ তে।
পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২১৯৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক সাহাবী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: (স্বপ্নের মধ্যে) দুধ (দেখা) হলো ফিতরাত (এর প্রতীক), নৌকা হলো নাজাত (এর প্রতীক), উট দু:খ-কষ্ট (এর প্রতীক), সবুজ গাছপালা- শাকসবজি জান্নাতের প্রতীক এবং স্ত্রীলোক কল্যাণের প্রতিক।[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ قَيْسٍ حَدَّثَنِي بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللَّبَنُ الْفِطْرَةُ وَالسَّفِينَةُ نَجَاةٌ وَالْجَمَلُ حُزْنٌ وَالْخُضْرَةُ الْجَنَّةُ وَالْمَرْأَةُ خَيْرٌ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মাউসিলী, মু’জামুশ শুয়ূখ নং ৩২৪ তে।