পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৪৮. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কিছু সাহাবী বসে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বের হয়ে যখন তাদের কাছাকাছি এলেন, তিনি তাদেরকে পরস্পর কিছু আলাপ-আলোচনা করতে শুনতে পেলেন। অতঃপর তিনি তাদের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। তাদের কেউ বলছিল, কী আশ্চর্য্যের কথা! আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে একজনকে খলীল রূপে গ্রহণ করেছেন। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম হচ্ছেন তাঁর সেই খলীল। আরেকজন বলল, এরচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় কী হতে পারে: “ আল্লাহ মুসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে কথা বলেছেন।”- (সূরা নিসা: ১৬৪) অপর একজন বলল, ঈসা আলাইহিস সালাম তো আল্লাহর কালিমা এবং তাঁর (প্রদত্ত) রূহ। আরেকজন বলল, আদম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ বিশেষভাবে মনোনীত করেছেন। (তাদের আলোচনা চলছিলো) এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের কাছে এসে সালাম দিলেন এবং বললেন: ’আমি তোমাদের কথা-বার্তা ও বিস্মিত হওয়ার বিষয়গুলি শুনেছি।
নিশ্চয় ইবরাহীম আল্লাহর খলীল, এটা ঠিকই। আল্লাহ মুসা’র সাথে গোপনে কথা বলেছেন, সেটাও ঠিক। ঈসা আল্লাহর কালিমা ও তাঁর রূহ, সেটিও ঠিক। আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহ’র মনোনীত, একথাও ঠিক। তবে তোমরা শুনে রাখ, আমি আল্লাহর হাবীব, এতে আমার কোন অহংকার নেই। কিয়ামতের দিন আমিই প্রশংসার পতাকা বহন করবো, তাতে কোন অহংকার নেই। কিয়ামতের দিন আমিই সর্বপ্রথম শাফা’আত করবো এবং আমার শাফা’আতই সর্বপ্রথম গ্রহণ করা হবে, তাতে কোন অহংকার নেই। আমিই সর্বপ্রথম জান্নাতের কড়া নাড়াব এবং এতেও কোন অহংকার নেই। আর আমার জন্যই আল্লাহ সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজা খুলে দেবেন এবং আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং আমার সাথে থাকবে দরিদ্র মুমিনগণ, এতেও কোন অহংকার নেই। আর আমি হলাম আল্লাহর নিকট পূর্বাপর সকলের চেয়ে মর্যাদাবান, এতেও কোন অহংকার নেই।”[1]
তাখরীজ: তিরমিযী ৩৬২০; ইবনু কাছীর তাফসীর ২/৩৭৫।
দেখুন, আনাস রা: এর হাদীস, আমার তাহক্বীক্বকৃত মুসনাদে আবী ইয়ালা ৩৯৫৯, ৩৯৬৪, ৩৯৬৭, ৩৯৮৯; ওয়াসিলাহ রা: এর হাদীস সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬২৪২, ৬৩৩৩, ৬৪৭৫, মুসনাদে আবী ইয়ালা নং ৭৪৮৫, ৭৪৮৭ তে। সেখানকার টীকায় বিস্তারিত দেখুন।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، حَدَّثَنَا زَمْعَةُ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: جَلَسَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْتَظِرُونَهُ فَخَرَجَ حَتَّى إِذَا دَنَا مِنْهُمْ، سَمِعَهُمْ يَتَذَاكَرُونَ، فَتَسَمَّعَ حَدِيثَهُمْ، فَإِذَا بَعْضُهُمْ، يَقُولُ: عَجَبًا إِنَّ اللَّهَ اتَّخَذَ مِنْ خَلْقِهِ خَلِيلًا، فَإِبْرَاهِيمُ خَلِيلُهُ، وَقَالَ آخَرُ: مَاذَا بِأَعْجَبَ مِنْ: [وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى تَكْلِيمًا]، وَقَالَ آخَرُ: فَعِيسَى كَلِمَةُ اللَّهِ وَرُوحُهُ، وَقَالَ آخَرُ: وَآدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّه، فَخَرَجَ عَلَيْهِمْ فَسَلَّمَ، وَقَالَ: "قَدْ سَمِعْتُ كَلَامَكُمْ وَعَجَبَكُمْ، إِنَّ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلُ اللَّهِ، وَهُوَ كَذَلِكَ، وَمُوسَى نَجِيُّهُ، وَهُوَ كَذَلِكَ، وَعِيسَى رُوحُهُ وَكَلِمَتُهُ، وَهُوَ كَذَلِكَ، وَآدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّهُ تَعَالَى، وَهُوَ كَذَلِكَ، أَلَا وَأَنَا حَبِيبُ اللَّهِ، وَلَا فَخْرَ، وَأَنَا حَامِلُ لِوَاءِ الْحَمْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا فَخْرُ وَأَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ، وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يُحَرِّكُ بِحَلَقِ الْجَنَّةِ وَلَا فَخْرُ، فَيَفْتَحُ اللَّهُ فَيُدْخِلُنِيهَا وَمَعِي فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا أَكْرَمُ الْأَوَّلِينَ وَالْآخِرِينَ عَلَى اللَّهِ، وَلَا فَخْرُ
إسناده ضعيف لضعف زمعه
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৪৯. আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: (কিয়ামতের দিন) সর্বপ্রথম আমিই বের হব। আল্লাহর সামনে লোকেরা যখন উপস্থিত হবে আমিই হব, তাদের পরিচালক বা নেতা। তারা সকলেই যখন চুপ থাকবে, আমিই তখন তাদের হয়ে কথা বলব। যখন তাদেরকে আটকে দেয়া হবে, তখন আমিই হব তাদের জন্য সুপারিশকারী। তারা যখন নিরাশ হয়ে যাবে, তখন আমিই তাদের সুসংবাদ দেব। সকল সম্মাননা ও চাবিগুচ্ছ সেদিন আমারই হাতে থাকবে। সকল আদম সন্তানের মধ্যে আমিই আমার রবের নিকট সবচেয়ে সম্মানিত। আমার চতুর্দিকে ঘুরতে থাকবে হাজারো সেবক, তারা যেন সুরক্ষিত ডিমের মত কিংবা বিক্ষিপ্ত মুক্তার মতো।”[1]
তাখরীজ: তিরমিযী, ৩৬১৪; বাইহাকী দালাইল ৫/৪৮৪; খিলাল, আস সুন্নাহ ২৩৫;
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ أَبِي الْأَسْوَدِ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "أَنَا أَوَّلُهُمْ خُرُوجًا، وَأَنَا قَائِدُهُمْ إِذَا وَفَدُوا، وَأَنَا خَطِيبُهُمْ إِذَا أَنْصَتُوا، وَأَنَا مُسْتَشْفِعُهُمْ إِذَا حُبِسُوا، وَأَنَا مُبَشِّرُهُمْ إِذَا أَيِسُوا، الْكَرَامَةُ وَالْمَفَاتِيحُ يَوْمَئِذٍ بِيَدِي، وَأَنَا أَكْرَمُ وَلَدِ آدَمَ عَلَى رَبِّي، يَطُوفُ عَلَيَّ أَلْفُ خَادِمٍ كَأَنَّهُمْ بَيْضٌ مَكْنُونٌ، أَوْ لُؤْلُؤٌ مَنْثُورٌ
إسناده ضعيف لضعف ليث بن أبي سليم
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫০. জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমিই রাসূলদের পরিচালক আর এতে কোন অহংকার নেই। আর আমিই ’খাতামুন নাবিয়্যীন’ বা নবীদের ধারাবাহিকতা সমাপ্তকারী, এতে আমার কোন অহংকার নেই। আমিই সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং সর্বপ্রথম আমারই সুপারিশ কবুল করা হবে, এতে আমার কোন অহংকার নেই।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, আল-কাবীর ৪/২৮৬; তাবারানী, আল-আওসাত ১/১৪২ নং ১৭২; বাইহাকী, দালাইল ৫/৪৮০।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ صَالِحٍ هُوَ ابْنُ عَطَاءِ بْنِ خَبَّابٍ مَوْلَى بَنِي الدُّئِلِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَنَا قَائِدُ الْمُرْسَلِينَ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ وَلَا فَخْرُ
إسناده جيد
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫১. আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমিই সর্বপ্রথম জান্নাতের কড়া ধরে নাড়াবো। আনাস বলেন: আমি যেন দেখতে পাচ্ছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত নাড়াচ্ছেন। (পরবর্তী বর্ণনাকারী বলেন) সুফিইয়ান আমাদেরকে এরূপই বর্ণনা করেছেন। আর আবু আব্দুল্লাহ হাতের আঙ্গুলসমূহ একত্রিত করলেন এবং নাড়ালেন। তিনি বলেন: ছাবিত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তোমার হাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাত স্পর্শ করেছিলে? তিনি বলেন, হাঁ । তিনি বলেন, তাহলে আমার দিকে আপনার হাতটা একটু বাড়িয়ে দিন, আমি তাতে চুম্বন করবো।’[1]
তাখরীজ: তিরযিমী ৩১৪৭; হুমাইদী ১২৩৮।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ هُوَ ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ ابْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " أَنَا أَوَّلُ مَنْ يَأْخُذُ بِحَلْقَةِ بَابِ الْجَنَّةِ فَأُقَعْقِعُهَا "، قَالَ أَنَسٌ: كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى يَدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحَرِّكُهَا، وَصَفَ لَنَا سُفْيَانُ كَذَا، وَجَمَعَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ أَصَابِعَهُ وَحَرَّكَهَا، قَالَ: وَقَالَ لَهُ ثَابِتٌ: مَسَسْتَ يَدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِكَ؟، قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَأَعْطِنِيهَا أُقَبِّلْهَا
إسناده ضعيف لضعف علي بن زيد بن جدعان
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫২. আনাস রাদ্বিযাল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ’আমিই হব জান্নাতের ব্যাপারে সর্বপ্রথম শাফা’আতকারী।’[1]
তাখরীজ: সহীহ মুসলিম ১৯৬ (৩৩২); ইবনু আবী শাইবা, আল মুছান্নাফ ১১/৪৩৬ নং ১১৬৯৭ ও ১৪/৮৭, ৯৫ নং ১৭৬৫৮, ১৭৬৯৫; বাইহাকী, দালাইল ৫/৪৭৯; আবী আওয়ানাহ ১/১১০, ১৫৮।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ فِي الْجَنَّةِ
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫৩. আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: ’আমিই হলাম সর্বপ্রথম ব্যক্তি কিয়ামতের দিন যার মাথার উপর থেকে মাটি ফেটে যাবে, কিন্তু এতে কোন অহংকার নেই। আর আমাকে প্রশংসার পতাকা দেয়া হবে, তাতেও কোন অহংকার নেই। কিয়ামতের দিন আমিই হব মানবজাতির নেতা, এতেও আমার কোন অহংকার নেই। কিয়ামতের দিন আমিই হব জান্নাতে প্রবেশকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি, এতেও কোন অহংকার নেই। আর আমি জান্নাতের দরজায় এসে কড়া নাড়বো, তখন তারা (জান্নাতের প্রহরীরা) বলবে: এ ব্যক্তি কে? তখন আমি বলব: ’আমি মুহাম্মদ’। ফলে আমার জন্য তারা জান্নাতের দরজা খুলে দিবে আর আমি তাতে প্রবেশ করেই ’আল-জাব্বার’ (মহাপ্রতাপশালী) আল্লাহ’কে আমার সম্মুখেই পাব, ফলে আমি তাঁকে সাজদা করব, তখন তিনি বলবেন: ইয়া মুহাম্মদ, তোমার মাথা উঠাও, তুমি কথা বল, তোমার কথা শোনা হবে; তুমি বল, তোমার বক্তব্য কবুল করা হবে; তুমি শাফা’আত কর, তোমার শাফা’আত গৃহীত হবে।’ তখন আমি মাথা উঠাব এবং বলব: ’হে রব! আমার উম্মাত, আমার উম্মাত। তখন তিনি বলবেন: তুমি তোমার উম্মতের নিকট যাও, (তাদের মধ্য থেকে) যার অন্তরে যবের দানা পরিমাণ ঈমান পাবে, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ তারপর আমি (তাদের নিকট) যাব, (তাদের মধ্য থেকে) যাদের অন্তরে যবের দানা পরিমাণ ঈমান পাব, তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব।’
তারপর আমি (আবার) ’আল-জাব্বার’ (মহাপ্রতাপশালী) আল্লাহ’কে আমার সম্মুখে পাব, ফলে আমি তাঁকে সাজদা করব, তখন তিনি বলবেন: হে মুহাম্মদ, তোমার মাথা উঠাও, তুমি কথা বল, তোমার কথা শোনা হবে; তুমি বল, তোমার বক্তব্য কবুল করা হবে; তুমি শাফা’আত কর, তোমার শাফা’আত গৃহীত হবে।’ তখন আমি মাথা উঠাব এবং বলব: ’হে রব! আমার উম্মাত, আমার উম্মাত। তখন তিনি বলবেন: তুমি তোমার উম্মতের নিকট যাও, (তাদের মধ্য থেকে) যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান পাবে, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ তারপর আমি (তাদের নিকট) যাব, (তাদের মধ্য থেকে) যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান পাব, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব।’ যখন লোকদের হিসাব-নিকাশ শেষ হবে এবং আমার উম্মতের মধ্যকার যারা অবশিষ্ট রইল তাদেরকে জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে, তখন জাহান্নামের অধিবাসীরা তাদেরকে বলবে, তোমরা তো আল্লাহর ইবাদত করতে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করতে না, কিন্তু আজকে তা (তোমাদের এ কাজ) তোমাদের কোনই উপকারে আসল না।
তখন মহাপ্রতাপশালী (আল্লাহ) বলবেন, ’আমার ইযযতের কসম! আমি অবশ্যই তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিব।’ এরপর তাদের নিকট (দূত) পাঠানো হবে, অতঃপর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে, তারপর তাদেরকে ’সঞ্জীবনী নহর’-এ প্রবেশ করানো হবে। তখন তারা সেখানে এমনভাবে পুনর্জীবন লাভ করবে, যেভাবে আবর্জনা স্তুপের সিক্ততায় শস্য দানা গজিয়ে উঠে। তাদের দু’চোখের মাঝে (কপালে) লেখা থাকবে ’এরা আল্লাহ’র (দয়ায়) মুক্তি প্রাপ্ত।’ তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তখন জান্নাতের অধিবাসীরা এদেরকে বলবে, ’এরা (ছিল) জাহান্নামী’। তখন মহাপ্রতাপশালী (আল্লাহ) বলবেন: ’না, বরং ’এরা আল্লাহ’র (দয়ায়) মুক্তি প্রাপ্ত।’[1]
তাখরীজ: আহমদ ৩/১৪৪; ইবনু মানদাহ, আত তাওহীদ ৮৭৭; বাইহাকী, দালাইল ৫/৪৭৯-৪৮০। এর শেষাংশ তথা শাফা’আতের অংশ বর্ণনা করেছেন আনাস হতে মুসলিম তার সহীহ নং ১৯৩ তে।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ هُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْهَادِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " إِنِّي لَأَوَّلُ النَّاسِ تَنْشَقُّ الْأَرْضُ عَنْ جُمْجُمَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرُ، وَأُعْطَى لِوَاءَ الْحَمْدِ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرُ، وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرُ، وَآتِي بَابَ الْجَنَّةِ فَآخُذُ بِحَلْقَتِهَا فَيَقُولُونَ: مَنْ هَذَا؟، فَأَقُولُ أَنَا مُحَمَّدٌ، فَيَفْتَحُونَ لِي فَأَدْخُلُ فَأَجِدُ الْجَبَّارَ مُسْتَقْبِلِي، فَأَسْجُدُ لَهُ، فَيَقُولُ: ارْفَعْ رَأْسَكَ يَا مُحَمَّدُ وَتَكَلَّمْ، يُسْمَعْ مِنْكَ، وَقُلْ، يُقْبَلْ مِنْكَ، وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ، فَأَرْفَعُ رَأْسِي، فَأَقُولُ: أُمَّتِي أُمَّتِي يَا رَبّ، فَيَقُولُ: اذْهَبْ إِلَى أُمَّتِكَ، فَمَنْ وَجَدْتَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ شَعِيرٍ مِنْ الْإِيمَانِ، فَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، فَأَذْهَبُ، فَمَنْ وَجَدْتُ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَلِكَ أَدْخَلْتُهُمْ الْجَنَّةَ، فَأَجِدُ الْجَبَّارَ مُسْتَقْبِلِي فَأَسْجُدُ لَهُ، فَيَقُولُ: ارْفَعْ رَأْسَكَ يَا مُحَمَّدُ وَتَكَلَّمْ، يُسْمَعْ مِنْكَ، وَقُلْ: يُقْبَلْ مِنْكَ، وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ، فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَقُولُ: أُمَّتِي أُمَّتِي يَا رَبِّ، فَيَقُولُ: اذْهَبْ إِلَى أُمَّتِكَ، فَمَنْ وَجَدْتَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ الْإِيمَانِ فَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، فَأَذْهَبُ، فَمَنْ وَجَدْتُ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَلِكَ أَدْخَلْتُهُمْ الْجَنَّةَ، وَفُرِغَ مِنْ حِسَابِ النَّاسِ وَأُدْخِلَ مَنْ بَقِيَ مِنْ أُمَّتِي فِي النَّارِ مَعَ أَهْلِ النَّارِ، فَيَقُولُ أَهْلُ النَّارِ: مَا أَغْنَى عَنْكُمْ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُونَ بِهِ شَيْئًا، فَيَقُولُ الْجَبَّارُ: فَبِعِزَّتِي لَأَعْتِقَنَّهُمْ مِنْ النَّارِ، فَيُرْسِلُ إِلَيْهِمْ، فَيَخْرُجُونَ مِنْ النَّارِ وَقَدْ امْتُحِشُوا، فَيُدْخَلُونَ فِي نَهَرِ الْحَيَاةِ، فَيَنْبُتُونَ فِيهِ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي غُثَاءِ السَّيْلِ وَيُكْتَبُ بَيْنَ أَعْيُنِهِمْ هَؤُلَاءِ عُتَقَاءُ اللَّهِ، فَيُذْهَبُ بِهِمْ فَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ، فَيَقُولُ لَهُمْ أَهْلُ الْجَنَّةِ: هَؤُلَاءِ الْجَهَنَّمِيُّونَ، فَيَقُولُ الْجَبَّار: بَلْ هَؤُلَاءِ عُتَقَاءُ الْجَبَّارِ
إسناده ضعيف لضعف عبد الله بن صالح فهو صدوق ولكنه كثير الخطأ وكانت فيه غفلة
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫৪. ইবনু গানাম হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জীবরীল আলাইহিস সালাম একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট অবতরণ করলেন এবং তাঁর পেট চিরে ফেললেন। অতঃপর জীবরীল বললেন: অত্যন্ত মজবুত অন্তর, তাতে শ্রবণশক্তিসম্পন্ন দু’টি কান রয়েছে এবং দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন দু’টি চোখ রয়েছে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর সর্বশেষ (সবার পশ্চাতে আগমনকারী) রাসূল, ’আলহাশির’ (একত্রকারী), আপনার চরিত্র সুপ্রতিষ্ঠিত, আপনার জিহবা সত্যভাষী, আপনার হৃদয় (নফস্) প্রশান্ত।’
আবু মুহাম্মাদ বলেন: وكيع মানে شديدا (কঠোর, মজবুত)[1]
তাখরীজ: ইবনু আসাকীর, আত তারীখ (/৩৮৯); আবী নুয়াইম, দালাইল, সূয়ূতী, খাসাইসুল কুবরা, ১/১৬১-১৬২।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ، عَنْ يُونُسَ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلَانِيِّ، عَنْ ابْنِ غَنْمٍ، قَالَ: " نَزَلَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشَقَّ بَطْنَهُ، ثُمَّ قَالَ جِبْرِيلُ: قَلْبٌ وَكِيعٌ فِيهِ أُذُنَانِ سَمِيعَتَانِ وَعَيْنَانِ بَصِيرَتَانِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ الْمُقَفِّي، الْحَاشِرُ، خُلُقُكَ قَيِّمٌ، وَلِسَانُكَ صَادِقٌ، وَنَفْسُكَ مُطْمَئِنَّةٌ "، قَالَ أَبُو مُحَمَّد: وَكِيعٌ يَعْنِي: شَدِيدًا
في إسناده ثلاث علل : عبد الله بن صالح ومعاوية بن يحيى ضعيفان وهو مرسل أيضا عبد الرحمن بن غنم تابعي وليس صحابيا
পরিচ্ছেদঃ ৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সকল মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার বর্ণনা
৫৫. আমর ইবনু কায়েস রাদ্বিযাল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ’আল্লাহ আমাকে রহমত লাভের সময় (তথা মৃত্যুর সময়) সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন। আর আমার (আয়ুষ্কাল) অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত করেছেন। (দুনিয়াতে) আমরা পরে আগমনকারী হলেও আখিরাতে আমরা অগ্রগামী। আমি কোন অহংকার ব্যতীতই একটি কথা বলছি: ইবরাহীম খলীলুল্লাহ, মুসা সফীউল্লাহ (খাঁটি বন্ধু), আর আমি হাবীবুল্লাহ। আর কিয়ামতের দিন আমার সাথেই থাকবে প্রশংসার পতাকা। এবং নিশ্চয় আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা আমার উম্মতের ব্যাপারে আমার সাথে ওয়াদা করেছেন এবং তাদের তিনটি বিষয় থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন: ব্যাপকভাবে তাদের উপর দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিবেন না, শত্রু তাদেরকে সমূলে উৎপাটন করতে পারবে না এবং তাদেরকে বিভ্রান্তির উপরে একত্রিত করবেন না।”[1]
তাখরীজ: কানযুল উম্মাল, ৩২০৮০; ইবনু আসাকীর ।
بَاب مَا أُعْطِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْفَضْلِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ رُوَيْمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ أَدْرَكَ بِيَ الْأَجَلَ الْمَرْحُومَ وَاخْتَصَرَ لِيَ اخْتِصَارًا فَنَحْنُ الْآخِرُونَ، وَنَحْنُ السَّابِقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَإِنِّي قَائِلٌ قَوْلًا غَيْرَ فَخْرٍ: إِبْرَاهِيمُ خَلِيلُ اللَّهِ، وَمُوسَى صَفِيُّ اللَّهِ، وَأَنَا حَبِيبُ اللَّهِ، وَمَعِي لِوَاءُ الْحَمْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالى وَعَدَنِي فِي أُمَّتِي وَأَجَارَهُمْ مِنْ ثَلَاثٍ: لَا يَعُمُّهُمْ بِسَنَةٍ، وَلَا يَسْتَأْصِلُهُمْ عَدُوٌّ، وَلَا يَجْمَعُهُمْ عَلَى ضَلَالَةٍ
في إسناده علتان : عبد الله بن صالح والانقطاع