পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৩. আব্দুল ওয়াহেদ বিন আইমান আল মাক্কী তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা-কে বললাম, আমার নিকট আপনি এমন একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যা আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছেন। আমি আপনার সূত্রে তা বর্ণনা করব। তখন জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খনন করছিলাম। আমরা তিনদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, আর আমরা ছিলাম অভুক্ত। আর খাওয়ার কোন অবকাশও আমাদের ছিল না। (হঠাৎ) পরিখার ভেতরে একটি শক্ত পাথর দেখা দিল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! পরিখার ভেতর একটি শক্ত পাথর দেখা দিয়েছে, আমরা সেটির উপর পানি ছিটিয়ে দিয়েছি। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন। তখন তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। তিনি কোদাল কিংবা বেলচা তুলে নিলেন, তারপর তিনবার ’বিসমিল্লাহ’ বলে সেটিকে আঘাত করলেন। ফলে পাথরটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালুকণায় পরিণত হয়ে গেল।
আমি রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (ক্ষুধার্ত) অবস্থা লক্ষ্য করে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে একটু (বাড়িতে যাওয়ার) অনুমতি দিন। তিনি অনুমতি দিলেন। বাড়ি এসে স্ত্রীকে বললাম, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে অবস্থায় দেখে এলাম তাতে মোটেও ধৈর্য্য ধারণ করতে পারছি না। তোমার কাছে কি কিছু আছে? সে বলল, আমার কাছে মাত্র এক সা’ যব এবং একটি ছাগলের বাচ্চা রয়েছে। তিনি বলেন, অতঃপর আমরা যব পিষলাম ও ছাগলের বাচ্চাটি যবেহ করলাম। এবং আমি সেটির চামড়া ছিলে তা হাঁড়িতে চড়ালাম এবং যবের আটার খামির তৈরী করলাম। তারপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ফিরে এলাম। কিছুক্ষণ তাঁর সাথে থাকার পর পূনরায় বাড়ি যাবার জন্য তাঁর অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি বাড়িতে ফিরে দেখলাম আটার খামির (রুটি) বানানোর উপযোগী হয়েছে, তখন আমি আমার স্ত্রীকে রুটি বানাবার নির্দেশ দিয়ে হাঁড়ি চুলায় চড়ালাম।’
(আবী আব্দুর রহমান বলেন: শব্দটি ছিল ’الأثافي’ কিন্তু সেটি এরূপই (আমি পেয়েছি)।
তিনি বলেন: তারপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে তাঁকে বললাম, আমাদের নিকট সামান্য কিছু খাদ্য রয়েছে, যদি আপনি ও আপনার সঙ্গে আরও একজন কিংবা দু’জন লোক নিয়ে আমার সাথে যেতেন! তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ’কী পরিমাণ খাবার আছে?’ আমি বললাম, এক সা’ যব ও একটি ছাগলের বাচ্চা। তিনি বললেন: ’তুমি বাড়ি যাও, তোমার স্ত্রীকে বল, আমি না আসা পর্যন্ত সে যেন চুলা থেকে মাংসের হাঁড়ি না নামায় এবং তন্দুর থেকে রুটি বের না করে।’ তারপর লোকদেরকে লক্ষ্য করে বললেন: ’তোমরা জাবিরের বাড়িতে চলো।’ একথা শুনে ভীষণভাবে লজ্জিত হলাম, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। স্ত্রীকে বললাম, তোমার সর্বনাশ হোক! রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সকল সঙ্গী-সাথীসহ আসছেন। স্ত্রী জিজ্ঞেস করল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি তোমাকে খাদ্যের পরিমাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন? আমি বললাম, হাঁ। তখন সে বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। আমাদের কাছে যা আছে তা তো তাঁকে জানিয়েই দিয়েছ।
(তার কথা শুনে) আমার মনের দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে গেল। বললাম, তুমি ঠিকই বলেছ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলেন এবং ভেতরে প্রবেশ করলেন। তারপর সাথীদের বললেন: ’তোমরা ভীড় করো না।’ তারপর তিনি হাড়িতে রাখা মাংস ও তন্দুরে রাখা রুটির বরকতের জন্য দু’আ করলেন। তারপর আমরা তন্দুর থেকে রুটি নিয়ে টুকরা করে এবং হাঁড়ি থেকে মাংস নিয়ে তাদেরকে দিতে থাকলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’প্রত্যেক পাত্রে যেন সাত কিংবা আটজন করে বসে।’ তারা যখন খেতে থাকল, তখন আমরা তন্দুর ও হাঁড়ির ঢাকনা খুলে দেখলাম, সে দু’টি পূর্বে যেমন পূর্ণ ছিল, তেমনই রয়েছে। আমরা এরূপ করতে থাকলাম অর্থাৎ আমরা তন্দুর ও হাঁড়ির ঢাকনা খুলে দেখতাম দু’টিই পূর্বের মত পরিপূর্ণ রয়েছে, এমনকি সকল মুসলিম তৃপ্তির সাথে খাওয়ার পরও আরো কিছু খাদ্য উদ্বৃত্ত রইল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বললেন: ’অনেক লোক ক্ষুধার্ত রয়েছে, অতএব, তোমরা নিজেরা খাও এবং অন্যদেরকেও খাওয়াও।’ আমরা সেদিন সারাদিন খেয়েছি ও খাইয়েছি।
বর্ণনাকারী বলেন, তারা ছিলেন আটশ’ জনের মত, অথবা বলেছেন, তিনশ’ জনের মত। আইমান বলেন, আমি জানি না তিনি কোনটি বলেছিলেন।[1]
তাখরীজ: ইবনু আবী শাইবা, ১১/৪৬৬-৪৬৯; বাইহাকী, দালাইল ৩/৪২২-৪২৪; আহমাদ ৩/৩০০, ৩০১ সংক্ষেপে; অনুরূপ রিওয়ায়াত রয়েছে, বুখারী ২১৪২; মুসলিম ২০৩৯।
بَاب مَا أُكْرِمَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَرَكَةِ طَعَامِهِ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ أَبَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ عَبْدِ الْوَاحِدِ بْنِ أَيْمَنَ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْتُ لِجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ حَدِّثْنِي بِحَدِيثٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَمِعْتَهُ مِنْهُ أَرْوِيهِ عَنْكَ، فَقَالَ جَابِرٌ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْفُرُهُ، فَلَبِثْنَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ لَا نَطْعَمُ طَعَامًا، وَلَا نَقْدِرُ عَلَيْهِ، فَعَرَضَتْ فِي الْخَنْدَقِ كُدْيَةٌ فَجِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذِهِ كُدْيَةٌ قَدْ عَرَضَتْ، فِي الْخَنْدَقِ فَرَشَشْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَطْنُهُ مَعْصُوبٌ بِحَجَرٍ، فَأَخَذَ الْمِعْوَلَ، أَوْ الْمِسْحَاةَ، ثُمَّ سَمَّى ثَلَاثًا، ثُمَّ ضَرَبَ فَعَادَتْ كَثِيبًا أَهْيَلَ، فَلَمَّا رَأَيْتُ ذَلِكَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ائْذَنْ لِي، قَالَ: فَأَذِنَ لِي، فَجِئْتُ امْرَأَتِي، فَقُلْتُ: ثَكِلَتْكِ أُمُّكِ قَدْ رَأَيْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا لَا صَبْرَ لِي عَلَيْهِ، فَهَلْ عِنْدَكِ مِنْ شَيْءٍ؟، فَقَالَتْ: عِنْدِي صَاعٌ مِنْ شَعِيرٍ، وَعَنَاقٌ، قَالَ: فَطَحَنَّا الشَّعِيرَ، وَذَبَحْنَا الْعَنَاقَ، وَسَلَخْتُهَا، وَجَعَلْتُهَا، فِي الْبُرْمَةِ وَعَجَنْتُ الشَّعِيرَ، قَالَ: ثُمَّ قَالَ: رَجَعْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَبِثْتُ سَاعَةً، ثُمَّ اسْتَأْذَنْتُهُ الثَّانِيَةَ فَأَذِنَ لِي، فَجِئْتُ، فَإِذَا الْعَجِينُ قَدْ أَمْكَنَ، فَأَمَرْتُهَا بِالْخَبْزِ وَجَعَلْتُ الْقِدْرَ عَلَى الْأَثَاثِي، قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ: إِنَّمَا هِيَ الْأَثَافِيُّ وَلَكِنْ هَكَذَا، قَالَ: ثُمَّ جِئْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: إِنَّ عِنْدَنَا طُعَيِّمًا لَنَا، فَإِنْ رَأَيْتَ أَنْ تَقُومَ مَعِي أَنْتَ وَرَجُلٌ أَوْ رَجُلَانِ مَعَكَ، فَقَالَ: " وَكَمْ هُوَ؟ "، قُلْتُ: صَاعٌ مِنْ شَعِيرٍ، وَعَنَاقٌ، فَقَالَ: " ارْجِعْ إِلَى أَهْلِكَ وَقُلْ لَهَا لَا تَنْزِعْ الْقِدْرَ مِنْ الْأَثَافِيِّ، وَلَا تُخْرِجْ الْخُبْزَ مِنْ التَّنُّورِ حَتَّى آتِيَ "، ثُمَّ قَالَ لِلنَّاسِ: " قُومُوا إِلَى بَيْتِ جَابِرٍ "، قَالَ: فَاسْتَحْيَيْتُ حَيَاءً لَا يَعْلَمُهُ إِلَّا اللَّهُ، فَقُلْتُ لِامْرَأَتِي: ثَكِلَتْكِ أُمُّكِ، قَدْ جَاءَكِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَصْحَابِهِ أَجْمَعِينَ، فَقَالَتْ: أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلَكَ: كَمْ الطَّعَامُ؟، فَقُلْتُ: نَعَمْ، فَقَالَتْ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَدْ أَخْبَرْتَهُ بِمَا كَانَ عِنْدَنَا، قَالَ: فَذَهَبَ عَنِّي بَعْضُ مَا كُنْتُ أَجِدُ، وَقُلْتُ: لَقَدْ صَدَقْتِ، فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَخَلَ، ثُمَّ قَالَ لِأَصْحَابِهِ: " لَا تَضَاغَطُوا "، " ثُمَّ بَرَّكَ عَلَى التَّنُّورِ وَعَلَى الْبُرْمَةِ "، قَالَ: فَجَعَلْنَا نَأْخُذُ مِنْ التَّنُّورِ الْخُبْزَ، وَنَأْخُذُ اللَّحْمَ مِنْ الْبُرْمَةِ، فَنُثَرِّدُ وَنَغْرِفُ لَهُمْ، وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " لِيَجْلِسْ عَلَى الصَّحْفَةِ سَبْعَةٌ أَوْ ثَمَانِيَةٌ "، فَإِذَا أَكَلُوا كَشَفْنَا عَنْ التَّنُّورِ، وَكَشَفْنَا عَنْ الْبُرْمَةِ، فَإِذَا هُمَا أَمْلَأُ مِمَّا كَانَا، فَلَمْ نَزَلْ نَفْعَلُ ذَلِكَ كُلَّمَا فَتَحْنَا التَّنُّورَ وَكَشَفْنَا عَنْ الْبُرْمَةِ، وَجَدْنَاهُمَا أَمْلَأَ مَا كَانَا حَتَّى شَبِعَ الْمُسْلِمُونَ كُلُّهُمْ، وَبَقِيَ طَائِفَةٌ مِنْ الطَّعَامِ، فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِنَّ النَّاسَ قَدْ أَصَابَتْهُمْ مَخْمَصَةٌ، فَكُلُوا وَأَطْعِمُوا ، فَلَمْ نَزَلْ يَوْمَنَا ذَلِكَ نَأْكُلُ وَنُطْعِمُ، قَالَ: وَأَخْبَرَنِي أَنَّهُمْ كَانُوا ثَمَانَ مِئَةٍ، أَوْ قَالَ: ثَلَاثَ مِئَةٍ، قَالَ أَيْمَنُ: لَا أَدْرِي أَيُّهُمَا
إسناده ضعيف عبد الرحمن بن محمد المحاربي موصوف بالتدليس وقد عنعن
পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৪. আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আবু তালহা উম্মু সুলাইমকে নির্দেশ দিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য খাবার তৈরি করতে। তারপর আবু তালহা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট পাঠালেন। আমি এসে তাঁকে বললাম, আবু তালহা আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। তিনি লোকদেরকে বললেন: ’তোমরা চলো।’ একথা বলে তিনি চলতে লাগলেন, লোকজনও তাঁর সাথে চলতে লাগলো। আবু তালহা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো শুধু আপনার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বললেন, তুমি ভেবো না, চলো।’
তিনি বলেন, একথা বলে তিনি চলতে লাগলেন, লোকজনও তাঁর সাথে চলতে লাগলো। খাবার উপস্থিত করা হলে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাবারের উপর হাত রাখলেন এবং ’বিসমিল্লাহ’ পড়ে বললেন: ’দশজনকে আসতে বল।” তাদেরকে আসতে বলা হল। তিনি বললেন: ’তোমরা বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু কর।’ তারা সকলেই পরিতৃপ্তির সাথে খেয়ে উঠে চলে গেল। তারপর তিনি প্রথমবারের মত আবারও বিসমিল্লাহ বলে খাবারের উপর হাত রাখলেন এবং বললেন: ’দশজনকে আসতে বল।’ তাদেরকে আনা হলে তিনি বললেন: ’বিসমিল্লাহ বলে খেতে থাক।’ তারাও পরিতৃপ্তির সাথে খেয়ে চলে গেল। এমনকি এভাবে তিনি আশি জনকে খাওয়ালেন।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে খেলেন, তার পরিবার-পরিজন খেলেন এবং তারপরও খাবার অবশিষ্ট রইল।[1]
তাখরীজ: মালিক, ১৯; বুখারী ৪২২; ৩৫৭৮; মুসলিম ২০৪০; তিরমিযী ৩৬৩৪।
بَاب مَا أُكْرِمَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَرَكَةِ طَعَامِهِ
أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ هُوَ ابْنُ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: أَمَرَ أَبُو طَلْحَةَ أُمَّ سُلَيْمٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، أَنْ تَجْعَلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا يَأْكُلُ مِنْهُ، قَالَ: ثُمَّ بَعَثَنِي أَبُو طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَيْتُهُ، فَقُلْتُ: بَعَثَنِي إِلَيْكَ أَبُو طَلْحَةَ، فَقَالَ لِلْقَوْمِ: " قُومُوا "، فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقَ الْقَوْمُ مَعَهُ، فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّمَا صَنَعْتُ طَعَامًا لِنَفْسِكَ خَاصَّةً؟، فَقَالَ: " لَا عَلَيْكَ انْطَلِقْ "، قَالَ: فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقَ الْقَوْمُ، قَالَ: فَجِيءَ بِالطَّعَامِ، " فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ وَسَمَّى عَلَيْهِ "، ثُمَّ قَالَ: " ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ "، قَالَ: فَأَذِنَ لَهُمْ، فَقَالَ: " كُلُوا بِاسْمِ اللَّهِ "، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا، ثُمَّ قَامُوا، " ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ كَمَا صَنَعَ فِي الْمَرَّةِ الْأُولَى وَسَمَّى عَلَيْهِ "، ثُمَّ قَالَ: " ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ "، فَأَذِنَ لَهُمْ، فَقَالَ: " كُلُوا، بِاسْمِ اللَّهِ " فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا، ثُمَّ قَامُوا حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ بِثَمَانِينَ رَجُلًا، قَالَ: وَأَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَهْلُ الْبَيْتِ وَتَرَكُوا سُؤْرًا
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৫. শাহর ইবনু হাওশাব, আবু উবাইদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য এক হাঁড়ি (মাংস) রান্না করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: ’আমাকে সামনের একটি রান দাও।’ তিনি সামনের রানের মাংস পছন্দ করতেন। সে তাঁকে সামনের রান দিল। তিনি আবার বললেন: ’আমাকে সামনের রান দাও।’ তখন সে তাঁকে সামনের রান দিল। তিনি আবারও বললেন: ’আমাকে সামনের রান দাও।’ তখন আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! একটি ছাগলের সামনের রান কয়টি হয়? তিনি উত্তরে বললেন: ’যার হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্তার কসম! তুমি যদি চুপ থাকতে তাহলে যতক্ষণ আমি চাইতাম ততক্ষণ তুমি আমাকে সামনের রান দিতেই থাকতে।’[1]
তাখরীজ: তাবারানী, কাবীর ২২/৩৩৫ নং ৮৪২; তিরমিযী, শামাইল ১৭০।
بَاب مَا أُكْرِمَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَرَكَةِ طَعَامِهِ
أَخْبَرَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبَانُ هُوَ الْعَطَّارُ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ طَبَخَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِدْرًا، فَقَالَ لَهُ: " نَاوِلْنِي الْذِّرَاعَ "، وَكَانَ يُعْجِبُهُ الذِّرَاعُ، فَنَاوَلَهُ الذِّرَاعَ، ثُمَّ قَالَ: "نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ "، فَنَاوَلَهُ ذِرَاعًا، ثُمَّ قَالَ: "نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ "، فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ، وَكَمْ لِلشَّاةِ مِنْ ذِرَاعٍ؟ فَقَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ أَنْ لَوْ سَكَتَّ لَأُعْطَيْتَ أَذْرُعًا مَا دَعَوْتُ بِهِ
إسناده حسن من أجل شهر بن حوشب
পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৬. জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুশরিকদের বিরুদ্ধে এক যুদ্ধে বেরিয়েছিলেন। আমার পিতা আব্দুল্লাহ আমাকে বললেন, হে জাবির, তোমার জন্য জরুরী যে, তুমি যুদ্ধে না গিয়ে মদীনাবাসীর দেখাশুনা করবে। এভাবে তুমি আমাদের পরিণতি কী হয় তা জানতে পারবে। আল্লাহর কসম! যদি আমার এ আশংকা না থাকত যে, আমার মৃত্যুর পর এতগুলো মেয়েকে (অভিভাবকবিহীন) রেখে যেতে হবে, তবে অবশ্যই আমি পছন্দ করতাম যে, তুমি যুদ্ধে গিয়ে সামনে থেকে জিহাদ করে শহীদ হয়ে যাও। জাবির বলেন, আমি মদীনা দেখাশুনাকারীদের মাঝে রয়ে গেলাম। (পরে) দেখলাম আমার ফুফু আমার আব্বা ও মামার লাশ নিয়ে এলেন আমাদের কবরস্থানে তাদেরকে দাফন করার জন্য। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন নিহতদের লাশ ফেরত দিতে এবং তারা যেখানে নিহত হয়েছেন সেখানেই তাদেরকে দাফন করতে। আমরা তাদের দু’জনের লাশ ফেরত দিলাম এবং তাদের নিহত হওয়ার স্থানে তাদেরকে দাফন করলাম।
এরপর মু’আবিয়া ইবনু আবী সুফিয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর শাসনামলে এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বললেন, হে জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ, আপনার আব্বার কবর মু’আবিয়ার লোকজন খুঁড়ে ফেলেছে, তার লাশের কিছু অংশ বের হয়ে পড়েছে। কতিপয় লোক সেখানে গেল। আমিও সেখানে গেলাম। আমি আমার আব্বাকে ঠিক তেমনি পেলাম যেমন আমরা দাফন করেছিলাম। শাহাদাতের ক্ষত ছাড়া লাশের আর কোন বিকৃতি ঘটেনি।
জাবির বলেন, অতঃপর আব্বার লাশ পুনঃদাফন করে ফিরে এলাম। আব্বা জীবদ্দশায় কিছু খেজুর ঋণ নিয়েছিলেন। কিছু ঋণদাতা সেই ঋণ পরিশোধের জন্য আমাকে চাপ দিতে লাগলো। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমার আব্বা অমুক দিন শহীদ হয়েছেন। তিনি কিছু খেজুর ঋণ করে গেছেন। কতিপয় পাওনাদার আমাকে ঋণ পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি চাই আপনি এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করুন যেন সামনের ফসল তোলার পূর্ব পর্যন্ত আমাকে তারা অবকাশ দেয়। তিনি বলেন: ’ঠিক আছে, দুপুরের কাছাকাছি সময়ে আল্লাহ চান তো আমি তোমার কাছে যাবে।’ জাবির বলেন, তিনি আসলেন, তাঁর সাথে কয়েকজন সঙ্গীও ছিল। তারা সবাই ছায়ায় বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে সালাম দিলেন এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইলেন। তারপর তিনি আমাদের নিকট এলেন। আমি আমার স্ত্রীকে বলে রেখেছিলাম, আজ দুপুরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট আসবেন। তিনি যেন তোমাকে কিছুতেই না দেখতে পান। তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমার বাড়িতে কোন কারণেই কষ্ট দিবে না। আর তুমি তাঁর সাথে কথাও বলবে না।
তারপর আমি চাদর বিছিয়ে দিলাম এবং সেখানে একটি বালিশ রাখলাম। তিনি তাঁর উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। আমার কাছে একটি ছাগল ছানা ছিল, সেটি ছিল আমার পোষা ও বেশ মোটাতাজা। আমার গোলামকে বললাম, এই ছাগলটি যবেহ করো এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠার আগেই তাড়াতাড়ি বানিয়ে ফেল। আমি তোমার সাথে আছি। আমরা কাজ শেষ না করে আর বিশ্রাম নিলাম না। তখনও তিনি ঘুমে ছিলেন। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জেগে ওযুর পানি চাইবেন। আমার ভয় হচ্ছে, তিনি ওযু করেই যদি চলে যান। ওযু শেষ করার সাথে সাথেই যদি তাঁর সামনে ছাগলের মাংস পেশ করা না যায়! তখন তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠে বললেন: ’হে জাবির, আমাকে ওযুর পানি দাও।’ আমি বললাম, জ্বি, দিচ্ছি। তিনি ওযু শেষ করার আগেই তাঁর সামনে মাংস রাখা হল। তিনি আমার দিকে চাইলেন। তারপর বললেন, আবু বকরকে ডাকো। অতঃপর তিনি তাঁর সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন।
জাবির বলেন, খানা এনে সামনে রাখা হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেগুলোর ওপর হাত রেখে বললেন: বিসমিল্লাহ, তোমরা খাও। তারা সকলেই পরিতৃপ্তির সাথে খেলেন। তারপরও অনেক মাংস বেঁচে গেল। আল্লাহর কসম! বনী সালামার লোকজন তাদেরকে দেখছিলেন। তিনি তাদের কাছে তাদের জীবনের চেয়েও বেশি প্রিয় ছিলেন। তারা কাছে আসতে পারছিলেন না, তাদের ভয় ছিল, তারা না আবার (তাদের কোন কথা বা কাজের দ্বারা) তাঁকে কষ্ট দিয়ে ফেলেন! তারপর তিনি উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর সাথীরাও উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর সামনে সামনে চলতে লাগলেন। আর তিনি বলতেন: ’আমার পেছনের দিকটা ফেরেশতাদের জন্য ছেড়ে দাও।’
আমি তাঁর সাথে দরজার চৌকাঠ পর্যন্ত যেতেই আমার স্ত্রী মাথা বের করে দিল। সে বেশ পর্দানশীন ছিল। সে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমার ও আমার স্বামীর জন্য দু’আ করুন। তিনি বললেন: ’আল্লাহ তোমার ও তোমার স্বামীর উপর রহমত করুন।’
তারপর বললেন: ’অমুককে আমার নিকট ডেকে নিয়ে আস।’ অর্থাৎ যিনি ঋণ পরিশোধের জন্য আমাকে চাপাচাপি করছিল। (ডেকে আনা হলে) তিনি তাকে বললেন: ’জাবিরের পিতার উপর যে ঋণ ছিলো, তা পরিশোধের জন্য জাবিরকে আগামী ফসল তোলা পর্যন্ত অবকাশ দাও।’ সে বললো, আমি তা পারব না। সে কারণ দর্শাতে লাগলো, বললো, তা ইয়াতীমের সম্পদ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’জাবির কোথায়?’ বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই যে আমি। তিনি বললেন: ’তুমি তাকে মেপে দাও। আর শীঘ্রই আল্লাহ তা পরিশোধ করে দেবেন।’ তারপর তিনি আকাশের দিকে মাথা উঠিয়ে তাকালেন। সূর্য্য তখন মাত্র হেলে পড়েছিল। তিনি বললেন: ’হে আবু বকর! সালাত।’ বর্ণনাকারী বলেন, একথা বলেই তারা মসজিদের দিকে ধাবিত হলেন। আমি ঋণদাতাকে বললাম, তোমার পাত্র কাছে আন এবং আমি তাকে আজওয়া খেজুর মেপে দিতে লাগলাম। দেখা গেল, আল্লাহ তা পরিশোধ করে দিলেন এবং অনেক পরিমাণে খেজুর অতিরিক্ত থাকলো। আমি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত দ্রুত দৌড়ে মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট গেলাম। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমন অবস্থায় পেলাম যে, তিনি মাত্র সালাত আদায় শেষ করেছেন।
অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার কাছে পাওনাদারকে তার প্রাপ্য খেজুর মেপে দিয়ে দিয়েছি। আল্লাহ তাঁকে তা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। এমনকি তারপরও এই এই পরিমাণে খেজুর আমাদের জন্য উদ্বৃত্ত থাকলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’উমার ইবনুল খাত্তাব কোথায়? (ডাক শুনে) তিনি দৌড়ে কাছে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: ’জাবির ইবনু আব্দুল্লাহকে তার ঋণ ও খেজুর সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর।’ তিনি বললেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করব না। কেননা, আমি জানি যে, আল্লাহ অচিরেই তাকে পরিশোধ করে দিবেন,যখন আপনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অচিরে তাকে পরিশোধ করে দিবেন। এভাবে তিনি তিনবার এ কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। প্রত্যেকবারই তিনি বললেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করব না। তৃতীয়বারের পর আর এর পুনরাবৃত্তি হয় নি। এবারে জিজ্ঞাসা করলেন: ’তোমার ঋণদাতা আর খেজুরের কী হল?’ আমি বললাম, আল্লাহই তা পরিপূর্ণরূপে পরিশোধ করে দিয়েছেন এবং আমাদের নিকট এত এত পরিমাণে উদ্বৃত্ত রয়ে গেছে। তারপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট ফিরে এলাম। তাকে বললাম, আমি কি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আমার বাড়িতে কথা বলতে নিষেধ করিনি? সে বললো, তোমার কি ধারণা, আল্লাহ তাঁর নবীকে আমাদের বাড়িতে পাঠাবেন এরপর তিনি চলেও যাবেন, অথচ আমি তাঁর নিকট আমার জন্য ও আমার স্বামীর জন্য রহমতের দু’আ চাইব না?[1]
তাখরীজ: আহমদ ৩/৩৯৭-৩৯৮; হাকিম ৪/১১০-১১১; বুখারী ২৬০১।
بَاب مَا أُكْرِمَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَرَكَةِ طَعَامِهِ
أَخْبَرَنَا أَبُو النُّعْمَان، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ الْأَسْوَدِ، عَنْ نُبَيْحٍ الْعَنَزِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْمُشْرِكِينَ لِيُقَاتِلَهُمْ، فَقَالَ أَبِي عَبْدُ اللَّهِ: يَا جَابِرُ، لَا عَلَيْكَ أَنْ تَكُونَ، فِي نَظَّارِي أَهْلِ الْمَدِينَةِ حَتَّى تَعْلَمَ إِلَى مَا يَصِيرُ أَمْرُنَا، فَإِنِّي وَاللَّهِ لَوْلَا أَنِّي أَتْرُكُ بَنَاتٍ لِي بَعْدِي، لَأَحْبَبْتُ أَنْ تُقْتَلَ بَيْنَ يَدَيَّ، قَالَ: فَبَيْنَمَا أَنَا فِي النَّظَّارِينَ إِذْ جَاءَتْ عَمَّتِي بِأَبِي وَخَالِي لِتَدْفُنَهُمَا فِي مَقَابِرِنَا، فَلَحِقَ رَجُلٌ يُنَادِي، إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَرُدُّوا الْقَتْلَى فَتَدْفُنُوهَا فِي مَضَاجِعَهَا حَيْثُ قُتِلَتْ، فَرَدَدْنَاهُمَا، فَدَفَنَّاهُمَا فِي مَضْجَعِهِمَا حَيْثُ قُتِلَا: فَبَيْنَا أَنَا فِي خِلَافَةِ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، إِذْ جَاءَنِي رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، لَقَدْ أَثَارَ أَبَاكَ عُمَّالُ مُعَاوِيَةَ، فَبَدَا، فَخَرَجَ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ، فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهِ فَوَجَدْتُهُ عَلَى النَّحْوِ الَّذِي دَفَنْتُهُ لَمْ يَتَغَيَّرْ إِلَّا مَا لَمْ يَدَعِ الْقَتِيلَ، قَالَ: فَوَارَيْتُهُ، وَتَرَكَ أَبِي عَلَيْهِ دَيْنًا مِنْ التَّمْرِ فَاشْتَدَّ عَلَيَّ بَعْضُ غُرَمَائِهِ، فِي التَّقَاضِي، فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي أُصِيبَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا، وَإِنَّهُ تَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا مِنَ التَّمْرِ، وَإِنَّهُ قَدْ اشْتَدَّ عَلَيَّ بَعْضُ غُرَمَائِهِ فِي الطَّلَبِ، فَأُحِبُّ أَنْ تُعِينَنِي عَلَيْهِ لَعَلَّهُ أَنْ يُنْظِرَنِي طَائِفَةً مِنْ تَمْرِهِ إِلَى هَذَا الصِّرَامِ الْمُقْبِلِ، قَالَ: " نَعَمْ آتِيكَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ قَرِيبًا مِنْ وَسَطِ النَّهَارِ "، قَالَ: فَجَاءَ وَمَعَهُ حَوَارِيُّوهُ، قَالَ: فَجَلَسُوا فِي الظِّلِّ وَسَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاسْتَأْذَنَ ثُمَّ دَخَلَ عَلَيْنَا، قَالَ: وَقَدْ قُلْتُ لِامْرَأَتِي: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَنِي الْيَوْمَ وَسَطَ النَّهَارِ، فَلَا يَرَيَنَّكِ وَلَا تُؤْذِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِي بِشَيْءٍ وَلَا تُكَلِّمِيهِ، فَفَرَشَتْ فِرَاشًا وَوِسَادَةً فَوَضَعَ رَأْسَهُ، فَنَامَ، فَقُلْتُ لِمَوْلًى لِي: اذْبَحْ هَذِهِ الْعَنَاقَ، وَهِيَ دَاجِنٌ سَمِينَة، فَالْوَحَا وَالْعَجْلَ افْرَغْ مِنْهَا قَبْلَ أَنْ يَسْتَيْقِظَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا مَعَكَ، فَلَمْ نَزَلْ فِيهَا حَتَّى فَرَغْنَا مِنْهَا، وَهُوَ نَائِمٌ، فَقُلْتُ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ يَسْتَيْقِظُ يَدْعُو بِطَهُورِ، وَأَنَا أَخَافُ إِذَا فَرَغَ أَنْ يَقُومَ، فَلَا يَفْرَغْ مِنْ طُهُورِهِ حَتَّى يُوضَعَ الْعَنَاقُ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ، قَالَ: " يَا جَابِرُ ائْتِنِي بِطَهُورٍ "، قَالَ: نَعَمْ، فَلَمْ يَفْرَغْ مِنْ وُضُوئِهِ حَتَّى وُضِعَتِ الْعَنَاقُ بَيْنَ يَدَيْهِ، قَالَ: فَنَظَرَ إِلَيَّ، فَقَالَ: " كَأَنَّكَ قَدْ عَلِمْتَ حُبَّنَا اللَّحْمَ، ادْعُ أَبَا بَكْر "، ثُمَّ دَعَا حَوَارِيِّيهِ، قَالَ: فَجِيءَ بِالطَّعَامِ فَوُضِعَ، قَالَ: فَوَضَعَ يَدَهُ، وَقَالَ: " بِسْمِ اللَّهِ كُلُوا "، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا وَفَضَلَ مِنْهَا لَحْمٌ كَثِيرٌ، وَقَالَ: وَاللَّهِ إِنَّ مَجْلِسَ بَنِي سَلِمَةَ لَيَنْظُرُونَ إِلَيْهِمْ، هُوَ أَحَبُّ إِلَيْهِمْ مِنْ أَعْيُنِهِمْ، مَا يَقْرَبُونَهُ مَخَافَةَ أَنْ يُؤْذُوهُ، ثُمَّ قَامَ، وَقَامَ أَصْحَابُهُ، فَخَرَجُوا بَيْنَ يَدَيْهِ، وَكَانَ يَقُولُ: " خَلُّوا ظَهْرِي لِلْمَلَائِكَةِ "، قَالَ: فَاتَّبَعْتُهُمْ حَتَّى بَلَغْتُ سَقُفَّةَ الْبَابِ، فَأَخْرَجَتِ امْرَأَتِي صَدْرَهَا وَكَانَتْ سَتِّيرَةً، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، صَلِّ عَلَيَّ وَعَلَى زَوْجِي، قَالَ: " صَلَّى اللَّهُ عَلَيْكِ وَعَلَى زَوْجِكِ "، ثُمَّ قَالَ: " ادْعُوا لِي فُلَانًا لِلْغَرِيمِ الَّذِي اشْتَدَّ عَلَيَّ فِي الطَّلَبِ، فَقَالَ: " أَنْسِ جَابِرًا طَائِفَةً مِنْ دَيْنِكَ الَّذِي عَلَى أَبِيهِ إِلَى هَذَا الصِّرَامِ الْمُقْبِلِ "، قَالَ: مَا أَنَا بِفَاعِلٍ، قَالَ: وَاعْتَلَّ وَقَالَ: إِنَّمَا هُوَ مَالُ يَتَامَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيْنَ جَابِرٌ؟ " قَالَ: قُلْتُ: أَنَا ذَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: " كِلْ لَهُ، فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى سَوْفَ يُوَفِّيهِ "، فَرَفَعَ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ، فَإِذَا الشَّمْسُ قَدْ دَلَكَتْ، قَالَ: " الصَّلَاةُ يَا أَبَا بَكْرٍ "، فَانْدَفَعُوا إِلَى الْمَسْجِدِ، فَقُلْتُ لِغَرِيمِي: قَرِّبْ أَوْعِيَتَكَ، فَكِلْتُ لَهُ مِنْ الْعَجْوَةِ فَوَفَّاهُ اللَّهُ وَفَضُلَ لَنَا مِنْ التَّمْرِ كَذَا وَكَذَا، قَالَ: فَجِئْتُ أَسْعَى إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَسْجِدِهِ كَأَنِّي شَرَارَةٌ، فَوَجَدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ صَلَّى، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي قَدْ كِلْتُ لِغَرِيمِي تَمْرَهُ فَوَفَّاهُ اللَّهُ وَفَضُلَ لَنَا مِنْ التَّمْرِ كَذَا وَكَذَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيْنَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ؟ "، قَالَ: فَجَاءَ يُهَرْوِلُ، قَالَ: " سَلْ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ غَرِيمِهِ وَتَمْرِهِ "، قَالَ: مَا أَنَا بِسَائِلِهِ، قَدْ عَلِمْتُ أَنَّ اللَّهَ سَوْفَ يُوَفِّيهِ إِذْ أَخْبَرْتَ أَنَّ اللَّهَ سَوْفَ يُوَفِّيهِ فَرَدَّدَ عَلَيْهِ، وَرَدَّدَ عَلَيْهِ هَذِهِ الْكَلِمَةَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ: مَا أَنَا بِسَائِلِهِ، وَكَانَ لَا يُرَاجَعُ بَعْدَ الْمَرَّةِ الثَّالِثَةِ، فَقَالَ: مَا فَعَلَ غَرِيمُكَ وَتَمْرُكَ؟، قَالَ: قُلْتُ: وَفَّاهُ اللَّهُ وَفَضُلَ لَنَا مِنْ التَّمْرِ كَذَا وَكَذَا، قالَ: فَرَجَعْتُ إِلَى امْرَأَتِي، فَقُلْتُ: أَلَمْ أَكُنْ نَهَيْتُكِ أَنْ تُكَلِّمِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِي؟، فَقَالَتْ: تَظُنُّ أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُورِدُ نَبِيَّهُ فِي بَيْتِي ثُمَّ يَخْرُجُ وَلَا أَسْأَلُهُ الصَّلَاةَ عَلَيَّ وَعَلَى زَوْجِي
إسناده صحيح
পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৭. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম)-এর উপর এবং আসমানবাসী (ফিরিশতা) গণের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তারা জিজ্ঞেস করল, হে ইবনু আব্বাস! তিনি কিসের দ্বারা আসমানবাসীর ওপর তাঁকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন? তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ আসমানবাসীদের লক্ষ্য করে বলেছেন: তাদের মধ্যে যে বলবে, আল্লাহ ছাড়া আমিও একজন ইলাহ, তাকে আমি জাহান্নামে শাস্তি দেব। এভাবে আমি যালিমদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি। (সূরা আল-আম্বিয়া: ২৯)
আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আমি নিশ্চয়ই আপনাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি, যাতে আল্লাহ আপনার পূর্বাপর সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আল-ফাতহ: ১-২)
তারা বলল: তাহলে নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম)-এর উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কী? তিনি বললেন, আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা বলেন: আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বগোত্রের ভাষায় প্রেরণ করেছি। যাতে তিনি তাদের কাছে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে পারেন। (সূরা ইবরাহীম: ৪)
আর আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে বলেন: আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যই পাঠিয়েছি।” (সূরা সাবা: ২৮)
সুতরাং তিনি তাঁকে জিন ও মানব উভয় জাতির জন্যই রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছেন।[1]
তাখরীজ: হাকিম ২/৩৫০; বাইহাকী, দালাইল ৫/৪৮৬-৪৮৭; তাবারানী, কাবীর ১১/২৩৯-২৪০ নং ১১৬১০।
بَاب مَا أُكْرِمَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَرَكَةِ طَعَامِهِ
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ، حَدَّثَنِي الْحَكَمُ بْنُ أَبَانَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: إِنَّ اللَّهَ فَضَّلَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمْ السَّلامُ وَعَلَى أَهْلِ السَّمَاءِ، فَقَالُوا: يَا ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، بِمَ فَضَّلَهُ عَلَى أَهْلِ السَّمَاءِ؟، قَالَ: إِنَّ اللَّهَ قَالَ لِأَهْلِ السَّمَاءِ [وَمَنْ يَقُلْ مِنْهُمْ إِنِّي إِلَهٌ مِنْ دُونِهِ فَذَلِكَ نَجْزِيهِ جَهَنَّمَ كَذَلِكَ نَجْزِي الظَّالِمِينَ]، وَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَق، قَالُوا: فَمَا فَضْلُهُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمْ السَّلامُ؟ قَالَ: قَالَ اللَّهُ تَعَالى: [وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ]، وَقَالَ اللَّهُ تَعَالى لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: [وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلا كَافَّةً لِلنَّاسِ]، فَأَرْسَلَهُ إِلَى الْجِنِّ وَالْإِنْسِ
إسناده صحيح