পরিচ্ছেদঃ ১. যুদ্ধ শুরু করার পূর্বে (শত্রুদেরকে) ইসলামের দাওয়াত দেয়া

১৫৪৮। আবূল বাখতারী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, মুসলিমদের কোন এক সেনাবাহিনী পারস্যের একটি দুর্গ অবরোধ করে। সালমান ফারসী (রাঃ) এই বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। সেনাবাহিনীর মুজাহিদগণ বললেন, হে আবদুল্লাহর পিতা! আমরা কি তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ব না? তিনি বললেন, আমি যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাদের (ইসলাম গ্রহণের) দাওয়াত দিতে শুনেছি, তোমরা আমাকেও সেভাবে দাওয়াত দিতে দাও। সালমান (রাঃ) তাদের নিকটে এসে বললেন, আমি তোমাদের মাঝেরই একজন পারস্যবাসী। তোমরা দেখতে পাচ্ছ, আরবরা আমার আনুগত্য করছে। তোমরা যদি ইসলাম গ্রহণ কর তবে তোমরাও আমাদের মতই অধিকার পাবে এবং আমাদের উপর যে দায় আসে তোমাদের উপরও সেরকম দায় আসবে। তোমরা যদি এ দাওয়াত কুবুল করতে অসম্মত হও এবং তোমাদের ধর্মের উপর অবিচল থাকতে চাও, তবে আমরা তোমাদেরকে তোমাদের ধর্মের উপর ছেড়ে দিব। কিন্তু এক্ষেত্রে তোমরা আমাদের অনুগত্য স্বীকার করে আমাদেরকে জিযইয়া দিবে।

রাবী বলেন, তিনি তাদেরকে এ কথাগুলো ফারসী ভাষায় বলেন। (তিনি আরো বলেন) এই অবস্থায় তোমরা প্রশংসিত হবে না। তোমরা যদি এটাও (জিযইয়া প্রদান) অস্বীকার কর তবে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমানভাবে লড়বো। তারা বলল, আমরাজিযইয়া প্রদানে সম্মত নই, বরং আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। মুসলিম সেনানীগণ বললেন, হে আবদুল্লাহর পিতা! আমরা কি তাদেরকে আক্রমণ করব না? তিনি বললেন, না। রাবী বলেন, তিনি এভাবে তাদেরকে তিন দিন যাবত আহবান করতে থাকেন। তারপর তিনি মুসলিম বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন, প্রস্তুত হও এবং তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়। রাবী বলেন, আমরা তাদেরকে আক্রমণ করে সেই দুর্গ দখল করলাম।

যঈফ, ইরওয়া (৫৮৭)

এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা, নুমান ইবনু মুকাররিন, ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সালমান (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। আমরা শুধু আতা ইবনুস সায়িবের সূত্রেই এ হাদীসটি জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে বলতে শুনেছি, আবূল বাখতার সালমান (রাঃ)-এর দেখা পাননি। কেননা তিনি আলী (রাঃ)-এর দেখা পাননি। আর সালমান (রাঃ) আলী (রাঃ)-এর পূর্বে মারা যান।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তার পরবর্তীগণ এ হাদীসের মতই মত দিয়েছেন। তাদের মতে, যুদ্ধ শুরু করার পূর্বে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে। ইসহাক ইবনু ইবরাহীমেরও এই মত। তিনি বলেন, যদি আক্রমণ করার পূর্বে শত্রুবাহিনীকে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয় তবে তা উত্তম এবং তা তাদের মনে প্রভাব ও ভীতির সঞ্চার করবে।

কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, আজকাল আর এরূপ দাওয়াত দেয়ার প্রয়োজন নেই। ইমাম আহমাদ বলেন, বর্তমানে এ ধরনের আহবান করার কোন প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।

ইমাম শাফিঈ বলেন, শত্রুকে ইসলামের দাওয়াত না দেয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শুরু করা যাবে না। কিন্তু তাদেরকে তাড়াতাড়ি দাওয়াত গ্রহণ করার জন্য বলতে হবে। অবশ্য দাওয়াত না দিলেও কোন সমস্যা নেই। কেননা তাদের কাছে ইতিপূর্বেই ইসলামের দাওয়াত পৌছেছে।

باب مَا جَاءَ فِي الدَّعْوَةِ قَبْلَ الْقِتَالِ

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، أَنَّ جَيْشًا، مِنْ جُيُوشِ الْمُسْلِمِينَ كَانَ أَمِيرَهُمْ سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ حَاصَرُوا قَصْرًا مِنْ قُصُورِ فَارِسَ فَقَالُوا يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ أَلاَ نَنْهَدُ إِلَيْهِمْ قَالَ دَعُونِي أَدْعُهُمْ كَمَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوهُمْ ‏.‏ فَأَتَاهُمْ سَلْمَانُ فَقَالَ لَهُمْ إِنَّمَا أَنَا رَجُلٌ مِنْكُمْ فَارِسِيٌّ تَرَوْنَ الْعَرَبَ يُطِيعُونَنِي فَإِنْ أَسْلَمْتُمْ فَلَكُمْ مِثْلُ الَّذِي لَنَا وَعَلَيْكُمْ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْنَا وَإِنْ أَبَيْتُمْ إِلاَّ دِينَكُمْ تَرَكْنَاكُمْ عَلَيْهِ وَأَعْطُونَا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَأَنْتُمْ صَاغِرُونَ ‏.‏ قَالَ وَرَطَنَ إِلَيْهِمْ بِالْفَارِسِيَّةِ وَأَنْتُمْ غَيْرُ مَحْمُودِينَ ‏.‏ وَإِنْ أَبَيْتُمْ نَابَذْنَاكُمْ عَلَى سَوَاءٍ ‏.‏ قَالُوا مَا نَحْنُ بِالَّذِي نُعْطِي الْجِزْيَةَ وَلَكِنَّا نُقَاتِلُكُمْ ‏.‏ فَقَالُوا يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ أَلاَ نَنْهَدُ إِلَيْهِمْ قَالَ لاَ ‏.‏ فَدَعَاهُمْ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ إِلَى مِثْلِ هَذَا ثُمَّ قَالَ انْهَدُوا إِلَيْهِمْ ‏.‏ قَالَ فَنَهَدْنَا إِلَيْهِمْ فَفَتَحْنَا ذَلِكَ الْقَصْرَ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ بُرَيْدَةَ وَالنُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ ‏.‏ وَحَدِيثُ سَلْمَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ ‏.‏ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ أَبُو الْبَخْتَرِيِّ لَمْ يُدْرِكْ سَلْمَانَ لأَنَّهُ لَمْ يُدْرِكْ عَلِيًّا وَسَلْمَانُ مَاتَ قَبْلَ عَلِيٍّ ‏.‏ وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى هَذَا وَرَأَوْا أَنْ يُدْعَوْا قَبْلَ الْقِتَالِ وَهُوَ قَوْلُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ قَالَ إِنْ تُقُدِّمَ إِلَيْهِمْ فِي الدَّعْوَةِ فَحَسَنٌ يَكُونُ ذَلِكَ أَهْيَبَ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ دِعْوَةَ الْيَوْمَ ‏.‏ وَقَالَ أَحْمَدُ لاَ أَعْرِفُ الْيَوْمَ أَحَدًا يُدْعَى ‏.‏ وَقَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ يُقَاتَلُ الْعَدُوُّ حَتَّى يُدْعَوْا إِلاَّ أَنْ يَعْجَلُوا عَنْ ذَلِكَ فَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ فَقَدْ بَلَغَتْهُمُ الدَّعْوَةُ ‏.‏

حدثنا قتيبة، حدثنا ابو عوانة، عن عطاء بن الساىب، عن ابي البختري، ان جيشا، من جيوش المسلمين كان اميرهم سلمان الفارسي حاصروا قصرا من قصور فارس فقالوا يا ابا عبد الله الا ننهد اليهم قال دعوني ادعهم كما سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يدعوهم ‏.‏ فاتاهم سلمان فقال لهم انما انا رجل منكم فارسي ترون العرب يطيعونني فان اسلمتم فلكم مثل الذي لنا وعليكم مثل الذي علينا وان ابيتم الا دينكم تركناكم عليه واعطونا الجزية عن يد وانتم صاغرون ‏.‏ قال ورطن اليهم بالفارسية وانتم غير محمودين ‏.‏ وان ابيتم نابذناكم على سواء ‏.‏ قالوا ما نحن بالذي نعطي الجزية ولكنا نقاتلكم ‏.‏ فقالوا يا ابا عبد الله الا ننهد اليهم قال لا ‏.‏ فدعاهم ثلاثة ايام الى مثل هذا ثم قال انهدوا اليهم ‏.‏ قال فنهدنا اليهم ففتحنا ذلك القصر ‏.‏ قال وفي الباب عن بريدة والنعمان بن مقرن وابن عمر وابن عباس ‏.‏ وحديث سلمان حديث حسن لا نعرفه الا من حديث عطاء بن الساىب ‏.‏ وسمعت محمدا يقول ابو البختري لم يدرك سلمان لانه لم يدرك عليا وسلمان مات قبل علي ‏.‏ وقد ذهب بعض اهل العلم من اصحاب النبي صلى الله عليه وسلم الى هذا وراوا ان يدعوا قبل القتال وهو قول اسحاق بن ابراهيم قال ان تقدم اليهم في الدعوة فحسن يكون ذلك اهيب ‏.‏ وقال بعض اهل العلم لا دعوة اليوم ‏.‏ وقال احمد لا اعرف اليوم احدا يدعى ‏.‏ وقال الشافعي لا يقاتل العدو حتى يدعوا الا ان يعجلوا عن ذلك فان لم يفعل فقد بلغتهم الدعوة ‏.‏


Narrated Abu Al-Bakhtari:
"An Army from the armies of the Muslims, whose commander was Salman Al-Farisi, besieged one of the Persian castles. They said: 'O Abu 'Abdullah! Should we charge them?' He said: 'Leave me to call them (to Islam) as I heard the Messenger of Allah (ﷺ) call them.' So Salman went to them and said: 'I am only a man from among you, a Persian, and you see that the Arabs obey me. If you become Muslims then you will have the likes of what we have, and from you will be required that which is required from us. If you refuse, and keep your religion, then we will leave you to it, and you will give us the Jizyah from your hands while you are submissive.' He said to them in Persian: 'And you are other than praiseworthy and if you refuse then we will equally resist you.' They said: 'We will not give you the Jizyah, we will fight you instead.' So they said: 'O Abu 'Abdullah! Should we charge them?' He said: 'No.'" He said: "So for three days he called them to the same (things), and then he said: 'Charge them.'" He said: "So we charged them, and we conquered the castle."


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
১৯/ যুদ্ধাভিযান (كتاب السير عن رسول الله ﷺ) 19. The Book on Military Expeditions