পরিচ্ছেদঃ ২৭/৩. এটা (বৈধ) যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করবে এবং তার কসমের কাফফা দিবে।
১০৬৯. আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার সাথীরা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠালেন তাদের জন্য পশুবাহন চাওয়ার জন্য। কারণ তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কষ্টের যুদ্ধ অর্থাৎ তাবুকের যুদ্ধে যাচ্ছিলেন। অনন্তর আমি এসে বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমার সাথীরা আমাকে আপনার কাছে এজন্য পাঠিয়েছেন যে, আপনি যেন তাদের জন্য পশুবাহনের ব্যবস্থা করেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের জন্য কোন সওয়ারীর ব্যবস্থা করতে পারব না। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি রাগান্বিত। (কিন্তু কী কারণে তিনি রাগান্বিত) তা বুঝলাম না। আর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পশুবাহন না দেয়ার কারণে দুঃখিত মনে ফিরে আসি। আবার এ ভয়ও ছিল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না আমার উপরই অসন্তুষ্ট হন।
তাই আমি সাথীদের কাছে ফিরে যাই এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা আমি তাদের জানাই। অল্পক্ষণ পরেই শুনতে পেলাম যে, বিলাল (রাঃ) ডাকছেনঃ ’আবদুল্লাহ ইবনু কাইস কোথায়? তখন আমি তাঁর ডাকে সাড়া দিলাম। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে ডাকছেন, আপনি হাজির হােন। আমি যখন তাঁর কাছে হাজির হলাম তখন তিনি বললেন, এই জোড়া এবং ঐ জোড়া এমনি ছয়টি উটনী যা সা’দ থেকে ক্রয় করা হয়েছে, তা গ্রহণ কর এবং সেগুলো তোমার সাথীদের কাছে নিয়ে যাও এবং বল যে, আল্লাহ্ তাআলা (রাবীর সন্দেহ) অথবা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো আমাদের যানবাহনের জন্য ব্যবস্থা করেছেন, তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর।
আমি তখন সেগুলো নিয়ে তাদের নিকট গেলাম এবং বললাম যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলোর উপর আমাদের আরোহণের জন্য ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আমি তোমাদেকে ছাড়বো যতক্ষণ না আমাদের কেউ আমার সঙ্গে তার কাছে যাবে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথােপকথন শুনেছে। তোমরা এমন ধারণা যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেননি আমি তা তোমাদের বর্ণনা করেছি। তখন তারা আমাকে বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি আমাদের কাছে সত্যবাদী বলে পরিচিত। তবুও আপনি যা চান, আমরা অবশ্য করব। অনন্তর আবু মূসা (রাঃ) তাদের মধ্যেকার একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হন এবং যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক অপারগতা প্রকাশ এবং পরে তাদেরকে দেয়ার কথা শুনেছিলেন, তাদের কাছে আসেন। তখন তারা সেরূপ কথাই বর্ণনা করলেন যেমন আবূ মূসা বর্ণনা করেছিলেন।
ندب من حلف يمينًا فرأى غيرها خيرًا منها أن يأتي الذي هو خير ويكفّر عن يمينه
حديث أَبِي مُوسى رضي الله عنه، قَالَ: أَرْسَلَنِي أَصْحَابِي إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَسْأَلهُ الْحُمْلاَنَ لَهُمْ إِذْ هُمْ مَعَهُ فِي جَيْشِ الْعُسْرَةِ، وَهِيَ غَزْوَةُ تَبُوكَ فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللهِ إِنَّ أَصْحَابِي أَرْسَلونِي إِلَيْكَ لِتَحْمِلَهُمْ، فَقَالَ: وَاللهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ عَلَى شَيْءٍ وَوَافَقْتُهُ وَهُوَ غَضْبَانُ، وَلاَ أَشْعُرُ، وَرَجَعْتُ حَزِينًا مِنْ مَنْعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمِنْ مَخَافَةِ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَدَ فِي نَفْسِهِ عَلَيَّ؛ فَرَجَعْتُ إِلَى أَصْحَابِي فَأَخْبَرْتُهُمُ الَّذِي قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ أَلْبَثْ إِلاَّ سُوَيْعَةً إِذْ سَمِعْتُ بِلاَلاً يُنَادِي، أَي عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ فَأَجَبْتُهُ، فَقَالَ: أَجِبْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُوكَ، فَلَمَّا أَتَيْتُهُ قَالَ: خُذْ هذَيْنِ الْقَرِينَيْنِ وَهذَيْنِ الْقَرِينَيْنِ لِسِتَّةِ أَبْعِرَةٍ ابْتَاعَهُنَّ حِينَئِذٍ مِنْ سَعْدٍ فَانْطَلِقْ بِهِنَّ إِلَى أَصْحَابِكَ، فَقُلْ إِنَّ اللهَ أَوْ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْمِلُكُمْ عَلَى هؤُلاَءِ فَارْكَبُوهُنَّ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهِمْ بِهِنَّ فَقُلْتُ: إِنَّ النَبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْمِلَكُمْ عَلَى هؤُلاَءِ، وَلكِنِّي، وَاللهِ لاَ أَدَعُكُمْ حَتَّى يَنْطَلِقَ مَعِي بَعْضُكُمْ إِلَى مَنْ سَمِعَ مَقَالَةَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، لاَ تَظُنُّوا أَنِّي حَدَّثْتُكُمْ شَيْئًا لَمْ يَقُلْهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؛ فَقَالُوا لِي: إِنَّكَ عِنْدَنَا لَمُصَدَّقٌ وَلَنَفْعَلَنَّ مَا أَحْبَبْتَ فَانْطَلَقَ أَبُو مُوسى بِنَفَرٍ مِنْهُمْ حَتَّى أَتَوُا الَّذِينَ سَمِعُوا قَوْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْعَهُ إِيَّاهُمْ، ثُمَّ إِعْطاءَهُمْ بَعْدُ، فَحَدَّثُوهُمْ بِمِثْلِ مَا حَدَّثَهُمْ بِهِ أَبُو مُوسى
পরিচ্ছেদঃ ২৭/৩. এটা (বৈধ) যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করবে এবং তার কসমের কাফফা দিবে।
১০৭০. যাহদাম (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম, এ সময় মুরগীর (মাংস) সম্বন্ধে আলোচনা উঠল। তথায় তাইমুল্লাহ গোত্রের এমন লাল বর্ণের এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিল, যেন সে মাওয়ালী (রোমক ক্রীতদাস)-দের একজন। তাকে খাওয়ার জন্য ডাকলেন। তখন সে বলল, আমি মুরগীকে এমন বস্তু খেতে দেখেছি, যাতে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি শপথ করেছি যে, তা খাব না। আবূ মূসা বললেন, আস, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে হাদীস শুনাচ্ছি।
আমি কয়েকজন আশআরী ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সাওয়ারী চাইতে যাই। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের সাওয়ারী দিব না এবং আমার নিকট আমাদের দেয়ার মত কোন সাওয়ারীও নেই। এ সময় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হলো। তখন তিনি আমাদের খোঁজ নিলেন এবং বললেন, সেই আশ’আরী লোকরা কোথায়? অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঁচু সাদা চুলওয়ালা পাঁচটি উট আমাদের দিতে বললেন।
যখন আমরা উট নিয়ে রওয়ানা দিলাম, বললাম, আমরা কী করলাম? আমাদের কল্যাণ হবে না। আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ফিরে এলাম এবং বললাম, আমরা আপনার নিকট সাওয়ারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আপনি শপথ করে বলেছিলেন, আমাদের সাওয়ারী দিবেন না। আপনি কি তা ভুলে গেছেন? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের সাওয়ারী দেইনি বরং আল্লাহ তা’আলা আমাদের সাওয়ারী দান করেছেন। আর আল্লাহর কসম, আমার অবস্থা এই যে, ইনশাআল্লাহ্ কোন বিষয়ে আমি কসম করি এবং তার বিপরীতটি কল্যাণকর মনে করি, তখন সেই কল্যাণকর কাজটি আমি করি এবং কাফফারা দিয়ে শপথ মুক্ত হই।
ندب من حلف يمينًا فرأى غيرها خيرًا منها أن يأتي الذي هو خير ويكفّر عن يمينه
حديث أَبِي مُوسى عَنْ زَهْدَمٍ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسى فَأُتِيَ ذَكَرَ دَجَاجَةً، وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللهِ أَحْمَرُ، كَأَنَّهُ مِنَ الْمَوَالِي، فَدَعَاهُ لِلطَّعَام، فَقَال: إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأَكُل شَيْئًا فَقَذِرْتُهُ؛ فَحَلَفْتُ لاَ آكلُ فَقَالَ: هَلُمَّ فَلأُحَدِّثْكُمْ عَنْ ذَاك إِنِّي أَتَيْتُ النَبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفَرٍ مِنَ الأَشْعَرِيِّينَ نَسْتَحْمِلهُ، فَقَالَ: وَاللهِ لاَ أَحْمِلُكمْ، وَمَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ وَأُتِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنَهْبِ إِبِلٍ، فَسَأَلَ عَنَّا، فَقَالَ: أَيْنَ النَّفَرُ الأَشْعَرِيُّونَ فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ، غُرِّ الذُّرَى، فَلَمَّا انْطَلَقْنَا قلْنَا: مَا صَنَعْنَا لاَ يُبَارَكُ لَنَا فَرَجَعْنَا إِلَيْهِ، فَقُلْنَا: إِنَّا سَأَلْنَاكَ أَنْ تَحْمِلَنَا فَحَلَفْتَ أَنْ لاَ تَحْمِلَنَا، أَفَنَسِيتَ قَالَ: لَسْتُ أَنَا حَمَلْتُكُمْ، وَلكِنَّ اللهَ حَمَلَكُمْ، وَإِنِّي وَاللهِ إِنْ شَاءَ اللهُ، لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلاَّ أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ، وَتَحَلَّلْتُهَا
পরিচ্ছেদঃ ২৭/৩. এটা (বৈধ) যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করবে এবং তার কসমের কাফফা দিবে।
১০৭১. আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ’আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখতে পাও; তবে কসমের কাফারা আদায় করে তার চেয়ে উত্তমটি অবলম্বন কর।
ندب من حلف يمينًا فرأى غيرها خيرًا منها أن يأتي الذي هو خير ويكفّر عن يمينه
حديث عَبْدِ الرَّحْمنِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا عَبْدَ الرَّحْمنِ بْنَ سَمُرَةَ لاَ تَسْأَلِ الإِمَارَةَ، فَإِنَّكَ إِنْ أُوتِيْتَهَا عَنْ مَسْئَلَةٍ وكِلْتَ إِلَيْهَا، وَإِنْ أُوتِيْتَهَا مِنْ غَيْرِ مَسْئَلَةٍ أُعِنْتَ عَلَيْهَا، وَإِذَا حَلَفْتَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَيْتَ غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَكَفِّرْ عَنْ يَمِينِكَ وَأْتِ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ