পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮২. মক্কার হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, সেখানকার লতা ও বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া ছাড়া সেখানকার পড়ে থাকা জিনিস উঠানো নিষিদ্ধ।
৮৫৯. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কাহ বিজয়ের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ এখন হতে আর হিজরত নেই, রয়েছে কেবল জিহাদ এবং নিয়ত। সুতরাং যখন আমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাকা হবে, এ ডাকে তোমরা সাড়া দিবে। আসমান-যমীন সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহ তা’আলা এ শহরকে হারম (মহাসম্মানিত) করে দিয়েছেন। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণেই কিয়ামত পর্যন্ত এ শহর থাকবে মহাসম্মানিত হিসেবে। এ শহরে লড়াই করা আমার পূর্বেও কারো জন্য বৈধ ছিল না এবং আমার জন্যও দিনের কিছু অংশ ব্যতীত বৈধ হয়নি।
আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণে তা থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত হিসেবে। এর কাঁটা উপড়ে ফেলা যাবে না, তাড়ানো যাবে না এর শিকাৰ্য জানোয়ারকে, ঘোষণা করার উদ্দেশ্য ব্যতীত কেউ এ স্থানে পড়ে থাকা কোন বস্তুকে উঠিয়ে নিতে পারবে না এবং কর্তন করা যাবে না এখানকার কাচা ঘাস ও তরুলতাগুলোক। ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইযখির বাদ দিয়ে। কেননা এ তো তাদের কর্মকারদের জন্য এবং তাদের ঘরে ব্যবহারের জন্য। বর্ণনাকারী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ, ইযখির বাদ দিয়ে।
تحريم مكة وصيدها وخلاها وشجرها ولقطتها إِلا لمنشد على الدوام
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَوْمَ افْتَتَحَ مَكَّةَ: لاَ هِجْرَةَ وَلكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ، وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا، فَإِنَّ هذَا بَلَدٌ حَرَّمَ اللهُ يَوْمَ خَلَقَ السَّموَاتِ وَالأَرْضَ، وَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَإِنَّهُ لَمْ يَحِلَّ الْقِتَالُ فِيهِ َلأحَدٍ قَبْلِى، وَلَمْ يَحِلَّ لِي إِلاَّ سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، فَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ، لاَ يُعْضَدُ شَوْكُهُ، وَلاَ يُنَفَّرُ صَيْدُهُ، وَلاَ يَلْتَقِطُ لُقَطَتَهُ إِلاَّ مَنْ عَرَّفَهَا، وَلاَ يُخْتَلَى خَلاَهَا
قَالَ الْعَبَّاسُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِلاَّ الإِذْخِرَ فَإِنَّهُ لِقَيْنِهِمْ وَلِبُيُوتِهِمْ قَالَ: قَالَ: إِلاَّ الإِذْخِرَ
পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮২. মক্কার হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, সেখানকার লতা ও বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া ছাড়া সেখানকার পড়ে থাকা জিনিস উঠানো নিষিদ্ধ।
৮৬০. আবূ শুরায়হ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি ’আমর ইবনু সাঈদ (মদীনার গভর্নর)-কে বললেন, যখন তিনি মক্কায় সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন- ’হে আমাদের নেতা আমাকে অনুমতি দিলে আপনাকে এমন একটি হাদীস শুনাতে পারি যেটা মক্কাহ বিজয়ের পরের দিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন। আমার দুই কান তা শ্রবণ করেছে, আমার হৃদয় তা আয়ত্ত রেখেছে, আর আমার চোখদুটো তা দেখেছে। তিনি আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেনঃ মক্কাকে আল্লাহ্ হারাম করেছেন, কোন মানুষ তাকে হারাম করেনি। তাই যে ব্যক্তি আল্লাহতে ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে তার জন্য সেখানে রক্তপাত করা, সেখানকার গাছ কাটা বৈধ নয়।
কেউ যদি আল্লাহর রসূলের (সেখানকার) লড়াইকে দলীল হিসেবে পেশ করে তবে তোমরা বলে দাও, আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রাসূলকে এর অনুমতি দিয়েছিলেন; কিন্তু আমাদেরকে তা দেন নি। আমাকেও সে দিনের কিছু সময়ের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। অতঃপর পূর্বের মতই আজ আবার একে তার নিষিদ্ধ হবার মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। উপস্থিতগণ যেন অনুপস্থিতদের নিকট (এ বাণী) পৌছে দেয়। অতঃপর আবু শুরায়হ তেল (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, আপনার এ হাদীস শুনে ’আমর কি বললেন? (আবূ শুরায়হ (রাঃ) উত্তর দিলেন। তিনি বললেনঃ ’হে আবূ শুরায়হ! (এ বিষয়ে) আমি তোমার চেয়ে অধিক জানি। মক্কাহ্ কোন বিদ্রোহীকে, কোন খুনের পলাতক আসামীকে এবং কোন চোরকে আশ্রয় দেয় না।
تحريم مكة وصيدها وخلاها وشجرها ولقطتها إِلا لمنشد على الدوام
حديث أَبِي شُرَيْحٍ، أَنَّهُ قَالَ لِعَمْرِو بْنِ سَعِيدٍ، وَهُوَ يَبْعَثُ الْبُعُوثَ إِلى مَكَّةَ: ائْذَنْ لِي أَيُّهَا الأَمِيرُ أُحَدِّثْكَ قَوْلاً قَامَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، الْغَدَ مِنْ يَوْمِ الْفَتْحِ، سَمِعَتْهُ أُذُنَايَ، وَوَعَاهُ قَلْبِي، وَأَبْصَرَتْهُ عَيْنَايَ حِينَ تَكَلَّمَ بِهِ؛ حَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ مَكَّةَ حَرَّمَهَا اللهُ وَلَمْ يُحَرِّمْهَا النَّاسُ، فَلاَ يَحِلُّ لاِمْرِئٍ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ يَسْفِكَ بِهَا دَمًا، وَلاَ يَعْضِدَ بِهَا شَجَرَةً، فَإِنْ أَحَدٌ تَرَخَّصَ لِقِتَالِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا، فَقُولُوا إِنَّ اللهَ قَدْ أَذِنَ لِرَسُولِهِ وَلَمْ يَأْذَنْ لَكُمْ، وَإِنَّمَا أَذِنَ لِي فِيهَا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، ثُمَّ عَادَتْ حُرْمَتُهَا الْيَوْمَ كَحُرْمَتِهَا بِالأَمْسِ، وَلْيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَقِيلَ لأبِي شُرَيْحٍ: مَا قَالَ عَمْرٌو قَالَ: أَنَا أَعْلَمُ مِنْكَ يَا شُرَيْحٍ لاَ يُعِيذُ عَاصِيًا وَلاَ فَارًّا بِدَمٍ وَلاَ فَارًّا بِخَرْبَةٍ
পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮২. মক্কার হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, সেখানকার লতা ও বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া ছাড়া সেখানকার পড়ে থাকা জিনিস উঠানো নিষিদ্ধ।
৮৬১. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখন তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মক্কাহ বিজয় দান করলেন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হামদ ও সানা (প্রশংসা) বর্ণনা করলেন। এরপর বললেন, আল্লাহ তা’আলা মক্কায় (আবহার) হস্তি বাহিনীকে প্রবেশ করতে দেননি এবং তিনি তাঁর রাসুল ও মুমিন বান্দাদেরকে মক্কাহর উপর আধিপত্য দান করেছেন। আমার আগে অন্য কারোর জন্য মক্কায় যুদ্ধ করা বৈধ ছিল না, তবে আমার পক্ষে দিনের সামান্য সময়ের জন্য বৈধ করা হয়েছিল, আর তা আমার পরেও কারোর জন্য বৈধ হবে না। কাজেই এখানকার শিকার তাড়ানো যাবে না, এখানকার গাছ কাটা ও উপড়ানো যাবে না, ঘোষণাকারী ব্যক্তি ব্যতীত এখানকার পড়ে থাকা জিনিস তুলে নেয়া যাবে না।
যার কোন লোক এখানে নিহত হয় তবে দুটির মধ্যে তার কাছে যা ভাল বলে বিবেচিত হয়, তা গ্রহণ করবে। ফিইয়া গ্ৰহণ অথবা কিসাস। আব্বাস (রাঃ) বলেন, ইযখিরের অনুমতি দিন। কেননা, আমরা এগুলো আমাদের কবরের উপর এবং ঘরের কাজে ব্যবহার করে থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইযখির ব্যতীত (অর্থাৎ তা কাটা ও ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হল)। তখন ইয়ামানবাসী আবু শাহ (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে লিখে দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আবূ শাহকে লিখে দাও।
تحريم مكة وصيدها وخلاها وشجرها ولقطتها إِلا لمنشد على الدوام
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ، قَامَ فِي النَّاسِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ اللهَ حَبَسَ عَنْ مَكَّةَ الْفِيلَ، وَسَلَّطَ عَلَيْهَا رَسُولَهُ وَالْمُؤْمِنِينَ فَإِنَّهَا لاَ تَحِلُّ َلأحَدٍ كَانَ قَبْلِي، وَإِنَّهَا أُحِلَّتْ لِي سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، وَإِنَّهَا لاَ تَحِلُّ َلأحَدٍ بَعْدِي، فَلاَ يُنَفَّرُ صَيْدُهَا، وَلاَ يُخْتَلَى شَوْكُهَا، وَلاَ تَحِلُّ سَاقِطَتُهَا إِلاَّ لِمُنْشِدٍ، وَمَنْ قُتِلَ لَهُ قَتِيلٌ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ: إِمَّا أَنْ يُفْدَى وَإِمَّا أَنْ يُقِيدَ فَقَالَ الْعَبَّاسُ: إِلاَّ الإِذْخِرَ، فَإِنَّا نَجْعَلُهُ لِقُبُورِنَا وَبُيُوتِنَا؛ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِلاَّ الإِذْخِرَ فَقَامَ أَبُو شَاهٍ، رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ؛ فَقَالَ: اكْتُبُوا لِي يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اكْتُبُوا َلأبِي شَاهٍ