পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৪. ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে ’আযাব দেয়া হয়।
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ فِي قَبْرِهِ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৫. আবূ মূসা আশ’আরী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ’উমার (রাযি.) আহত হলেন, তখন সুহাইব (রাযি.) হায়! আমার ভাই! বলতে লাগলেন। ’উমার (রাযি.) বললেন, তুমি কি অবহিত নও যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জীবিতদের কান্নার কারণে অবশ্যই মৃতদের ’আযাব দেয়া হয়?
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِي مُوسى، قَالَ: لَمَّا أُصِيبَ عُمَرُ رضي الله عنه، جَعَلَ صُهَيْبٌ يَقُولُ: وَاأَخَاهْ فَقَالَ عُمَرُ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الْحَيِّ
পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৬. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’উবাইদুল্লাহ্ ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কাহয় উসমান (রাযি.)-এর জনৈকা কন্যার মৃত্যু হল। আমরা সেখানে (জানাযায়) অংশগ্রহণ করার জন্য গেলাম। ইবনু ’উমার এবং ইবনু ’আব্বাস (রাযি.)-ও সেখানে উপস্থিত হলেন। আমি তাঁদের দু’জনের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলাম, অথবা তিনি বলেছেন, আমি তাঁদের একজনের পার্শ্বে গিয়ে উপবেশন করলাম, পরে অন্যজন আগমন করে আমার পার্শ্বে উপবেশন করলেন। (ক্রন্দনের শব্দ শুনে) ইবনু ’উমার (রাযি.) ’আমর ইবনু ’উসমানকে বললেন, তুমি কেন ক্রন্দন করতে নিষেধ করছ না? কেননা, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে ’আযাব দেয়া হয়।’ তখন ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, ’উমার (রাঃ)-ও এমন কিছু বলতেন।
অতঃপর ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করলেন, ’উমার (রাঃ) -এর সাথে মক্কাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলাম। আমরা বাইদা (নামক স্থানে) উপস্থিত হলে ’উমার (রাঃ) বাবলা বৃক্ষের ছায়ায় একটি কাফিলা দর্শন করতঃ আমাকে বললেন, গিয়ে দেখো এ কাফিলা কার? ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি গিয়ে দেখলাম সেখানে সুহাইব (রাঃ) আছেন। আমি তাঁকে তা অবহিত করলাম। তিনি বললেন, তাঁকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। আমি সুহাইব (রাঃ) এর নিকটে আবার গেলাম এবং বললাম, চলুন, আমীরুল মু’মিনীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন। অতঃপর যখন ’উমার (রাঃ) (ঘাতকের আঘাতে) আহত হলেন, তখন সুহাইব তাঁর কাছে আগমন করতঃ এ বলে ক্রন্দন করতে লাগলেন, হায় আমার ভাই! হায় আমার বন্ধু! এতে ’উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, তুমি আমার জন্য ক্রন্দন করছো? অথচ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার আপন জনের কোন কোন কান্নার কারণে অবশ্যই তাকে ’আযাব দেয়া হয়।[১]
ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) বলেন, ’উমার (রাযি.)-এর মৃত্যুর পর ’আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর নিকট আমি ’উমার (রাযি.)-এর এ উক্তি উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ’উমার (রাযি.)-কে রহম করুন। আল্লাহর কসম! আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার (মৃত) ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর ’আয়িশাহ্ (রাযি.) বললেন, (এ ব্যাপারে) আল্লাহর কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইরশাদ হয়েছেঃ) ’বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না’- (আন’আমঃ ১৬৪)। তখন ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) বললেন, আল্লাহ্ই (বান্দাকে) হাসান এবং কাঁদান।
রাবী ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) বলেন, আল্লাহর কসম! (এ কথা শুনে) ইবনু ’উমার (রাযি.) কোন মন্তব্য করলেন না।[২]
[২] সহীহুল বুখারী, পর্ব ২৩: জানাযা, অধ্যায় ৩২, হাঃ ১২৮৬, ১২৮৭, ১২৮৮; মুসলিম, পর্ব ১১ ; জানাযা, অধ্যায় ৯, হাঃ ৯২৭, ৯২৮, ৯২৯
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، وَعُمَرَ، وَعَائِشَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ: تُوُفِّيتْ ابْنَةٌ لِعُثْمَانَ رضي الله عَنهُ بِمكَّةَ، وَجِئْنَا لِنَشْهَدَهَا، وَحَضَرَهَا ابْنُ عُمَرَ وَابْنُ عَبَّاسٍ، وَإِنِّي لَجَالِسٌ بَيْنَهُمَا (أَوْ قَالَ جَلَسْتُ إِلَى أَحَدِهِمَا ثُمَّ جَاءَ الآخَرُ فَجَلَسَ إِلَى جَنْبِي) فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ، لِعَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ: أَلاَ تَنْهَى عَنِ الْبُكَاءِ فَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: قَدْ كَانَ عُمَرُ رضي الله عنه يَقُولُ بَعْضَ ذلِك ثُمَّ حَدَّثَ، قَالَ: صَدَرْتُ مَعَ عُمَرَ رضي الله عنه مِنْ مَكَّةَ، حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ إِذَا هُوَ بِرَكْبٍ تَحْتَ ظِلِّ سَمُرَةٍ، فَقَالَ: اذْهَبْ فَانْظُرْ مَنْ هؤلاءِ الرَّكْبُ؛ قَالَ فَنَظَرْتُ فَإِذَا صُهَيْبٌ، فَأَخْبَرتُهُ، فَقَالَ: ادْعُهُ لِي، فَرَجَعْتُ إِلَى صُهَيْبٍ، فَقُلْتُ: ارْتَحِلْ فَالْحَقْ أَمِيرَ الْمُؤمِنِينَ فَلَمَّا أُصِيبَ عُمَرُ دَخَلَ صُهَيْبٌ يَبْكِي يَقُولُ: وَاأَخَاهْ وَاصَاحِبَاهْ؛ فَقَالَ عُمَرُ رضي الله عنه: يَا صُهَيْبُ أَتَبْكِي عَلَيَّ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ رضي الله عنه ذَكَرْتُ ذلِكَ لِعَائِشَةَ، فَقَالَتْ: رَحِمَ اللهُ عُمَرَ وَاللهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللهَ لَيُعَذِّبُ الْمُؤمِنَ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ؛ وَلكِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللهَ لَيَزِيدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَقَالَتْ: حَسْبُكُمُ الْقُرْآنُ وَلاَ تَزِرُ وزِرَةٌ وِزْرَ أُخْرى قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ، عِنْدَ ذلِكَ: وَاللهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى
قَالَ ابْنُ أُبِي مُلَيْكَةَ: وَاللهِ مَا قَالَ ابنُ عُمَرَ شَيْئًا
পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৭. তিনি [’আয়িশাহ (রাযি.)] বলেন, এ কথাটি ঐ কথাটিরই মত যা রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যে কূপে বদর যুদ্ধে নিহত মুশরিকদের নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি তাদেরকে যা বলার বললেন (এবং জানালেন) যে, আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। তিনি বললেন, এখন তারা ভালভাবে জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলেছিলাম তা ছিল সঠিক। এরপর ’আয়িশাহ (রাযি.) (إِنَّكَ لاَ تُسْمِعُ الْمَوْتَى) (তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না) (সূরাহ নামল ২৭/৮০)(وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَنْ فِي الْقُبُورِ) (এবং তুমি শুনাতে সমর্থ হবে না তাদেরকে যারা কবরে রয়েছে) (সূরাহ ফাতির ৩৫/২২) আয়াতাংশ দু’টো তিলাওয়াত করলেন। ’উরওয়াহ (রহ.) বলেন, এর মানে হচ্ছে জাহান্নামে যখন তারা তাদের আসন গ্রহণ করে নেবে।
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث عَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ عَنْ عُرْوَةَ قَالَ: ذُكِرَ عِنْدَ عَائِشَةَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَفَعَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ فِي قَبْرِهِ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ فَقَالَتْ: وَهَلَ ابْنُ عُمَرَ رَحِمَهُ اللهُ إِنَّمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّهُ لَيُعَذَّبُ بِخَطِيئَتِهِ وَذَنْبِهِ، وَإِنَّ أَهْلَهُ لَيَبْكُونَ عَلَيْهِ الآنَ قَالَتْ: وَذَاكَ مِثْلُ قَوْلِهِ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ عَلَى الْقَلِيبِ وَفيهِ قَتْلَى بَدْرٍ مِنَ الْمُشْرِكينَ، فَقَالَ لَهُمْ مَا قَالَ: إِنَّهُمْ لَيَسْمَعُونَ مَا أَقُولُ إِنَّمَا قَالَ: إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّ مَا كُنْتُ أَقُولُ لَهُمْ حَقٌ ثُمَّ قَرَأَتْ (إِنَّكَ لاَ تُسْمِعُ الْمَوْتَى) وَ (وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَنْ فِي الْقُبُورِ) يَقُولُ حينَ تَبَوَّءُوا مَقَاعِدَهُمْ مِنَ النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ইয়াহুদী স্ত্রীলোকের (কবরের) পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যার পরিবারের লোকরা তার জন্য ক্ৰন্দন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তারা তো তার জন্য ক্ৰন্দন করছে। অথচ তাকে কবরে ’আযাব দেয়া হচ্ছে।
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: إِنَّمَا مَرَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى يَهُودِيَّةٍ يَبْكِي عَلَيْهَا أَهْلُهَا، فَقَالَ: إِنَّهُمْ ليبْكُونَ عَلَيْهَا، وَإِنَّهَا لَتُعَذَّبُ فِي قَبْرِهَا
পরিচ্ছেদঃ ১১/৯. মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্ৰন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।
৫৩৯. মুগীরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে (মৃত) ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপকৃত বিষয়ের উপর আযাব দেয়া হবে।
الميت يعذب ببكاء أهله عليه
حديث الْمُغِيرَةِ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ نِيحَ عَلَيْهِ يُعَذَّبُ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ