পরিচ্ছেদঃ ১০/৩. সূর্য গ্রহণের সালাতে নাবী (ﷺ)-কে জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যা দেখানো হয়।
৫২৪. আসমা (রাযি.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ’আয়িশাহ (রাযি.) এর নিকট আসলাম, তিনি তখন সালাত রত ছিলেন। আমি বললাম, ’মানুষের কী হয়েছে?’ তিনি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন (সূর্য গ্রহণ লেগেছে)। তখন সকল লোক (সালাতুল কুসূফ এর জন্য) দাঁড়িয়ে রয়েছে। ’আয়িশা (রাযি.) বললেন, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তিনি মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করলেন, ’হ্যাঁ।’ অতঃপর আমি (সালাতে) দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি (দীর্ঘতার কারণে) আমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম হল। তাই আমি মাথায় পানি ঢালতে আরম্ভ করলাম। পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর হামদ ও সানা পাঠ করলেন। অতঃপর বললেনঃ যা কিছু আমাকে ইতোপূর্বে দেখানো হয়নি, তা আমি আমার এ স্থানেই দেখতে পেয়েছি। এমনকি জান্নাত ও জাহান্নামও। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করলেন, ’দাজ্জালের ন্যায় (কঠিন) পরীক্ষা অথবা তার কাছাকাছি বিপদ দিয়ে তোমাদেরকে কবরে পরীক্ষায় ফেলা হবে।’
ফাতিমাহ (রাযি.) বলেন, আসমা (রাযি.) مثل (অনুরূপ) শব্দ বলেছিলেন, না قريب (কাছাকাছি) শব্দ, তা ঠিক আমার স্মরণ নেই। (কবরের মধ্যে) বলা হবে, ’এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি কি জান?’ তখন মু’মিন ব্যক্তি বা মু’কিন (বিশ্বাসী) ব্যক্তি [ফাতিমাহ (রাযি.) বলেন] আসমা (রাযি.) এর কোন্ শব্দটি বলেছিলেন আমি জানিনা], বলবে, ’তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তিনি আল্লাহর রসূল। আমাদের নিকট মু’জিযা ও হিদায়াত নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা গ্রহণ করেছিলাম এবং তাঁর ইত্তেবা করেছিলাম। তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।’ তিনবার এরূপ বলবে। তখন তাকে বলা হবে, আরামে ঘুমিয়ে থাক, আমরা জানতে পারলাম যে, তুমি (দুনিয়ায়) তাঁর উপর বিশ্বাসী ছিলে। আর মুনাফিক অথবা মুরতাব (সন্দেহ পোষণকারী) ফাতিমাহ বলেন, আসমা কোন্টি বলেছিলেন, আমি ঠিক মনে করতে পারছি না- বলবে, আমি কিছুই জানি না। মানুষকে (তাঁর সম্পর্কে) যা বলতে শুনেছি, আমিও তাই বলেছি।
ما عرض على النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ في صلاة الكسوف من أمر الجنة والنار
حديث أَسْمَاءَ قَالَتْ: أَتَيْتُ عَائِشَةَ وَهِيَ تُصَلِّي، فَقُلْتُ مَا شَأْنُ النَّاسِ فَأَشَارَتْ إِلَى السَّمَاءِ، فَإِذَا النَّاسُ قِيَامٌ، فَقَالَتْ: سُبْحَانَ اللهِ قُلْتُ: آيَةٌ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا أَيْ نَعَمْ فَقُمْتُ حَتَّى تَجَلاَّنِي الْغَشْيُ، فَجَعَلْتُ أَصُبُّ عَلَى رَأْسِي الْمَاءَ، فَحَمِدَ اللهَ، عَزَّ وَجَلَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: مَا مِنْ شَيْءٍ لَمْ أَكُنْ أُرِيتُهُ إِلاَّ رَأَيْتُهُ فِي مَقَامِي، حَتَّى الْجَنَّةُ وَالنَّارُ، فَأُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّكُمْ تُفْتَنونَ فِي قُبُورِكُمْ مِثْلَ أَوْ قَرِيبَ (قَالَ الرَّاوِي: لاَ أَدْرِي أَيَّ ذلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ) مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، يُقَالُ مَا عِلْمُكَ بِهذَا الرَّجُلِ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ أَوِ الْمُوقِنُ (لاَ أَدْرِي بِأَيِّهِمَا قَالَتْ أَسْمَاءُ) فَيَقُولُ هُوَ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ، جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى، فَأَجَبْنَا وَاتَّبَعْنَا، هُوَ مُحَمَّدٌ (ثَلاَثًا) ؛ فَيُقَالُ: نَمْ صَالِحًا، قَدْ عَلِمْنَا إِنْ كُنْتَ لَمُوقِنًا بِهِ؛ وَأَمَّا المُنَافِقُ أَوِ المُرْتَابُ (لاَ أَدْرِي أَيَّ ذلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ) فَيَقُولُ: لاَ أَدْرِي، سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ شَيْئًا فَقُلْتُهُ
পরিচ্ছেদঃ ১০/৩. সূর্য গ্রহণের সালাতে নাবী (ﷺ)-কে জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যা দেখানো হয়।
৫২৫. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন সালাত আদায় করেন এবং তিনি সূরা ’আল-বাকারাহ পাঠ করতে যত সময় লাগে সে পরিমাণ দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ করেন। অতঃপর মাথা তুলে পুনরায় দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করলেন। তবে তা প্রথম রুকূ’র চেয়ে অস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা্ করেন। আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামতের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে তা পূর্বের রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কিয়াম করেন, তবে তা প্রথম কিয়াম অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে তা প্রথম রুকূ অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা্ করেন এবং সালাত শেষ করেন। ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গিয়েছে।
তারপর তিনি বললেনঃ নিঃসনেদহে সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা গ্রহণ দেখবে তখনই আল্লাহকে স্মরণ করবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা দেখলাম, আপনি নিজের জায়গা হতে কী যেন ধরছেন, আবার দেখলাম, আপনি যেন পিছনে সরে এলেন। তিনি বললেনঃ আমিতো জান্নাত দেখেছিলাম এবং এক গুচ্ছ আঙ্গুরের প্রতি হাত বাড়িয়েছিলাম। আমি তা পেয়ে গেলে, দুনিয়া কায়িম থাকা পর্যন্ত অবশ্য তোমরা তা খেতে পারতে। অতঃপর আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা নারী। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! কী কারণে? তিনি বললেনঃ তাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞেস করা হল, তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে? তিনি জবাব দিলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে এবং ইহ্সান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাদের কারো প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, অতঃপর সে তোমার হতে (যদি) সামান্য ত্রুটি পায়, তা হলে বলে ফেলে, তোমার হতে কখনো ভাল ব্যবহার পেলাম না।
ما عرض على النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ في صلاة الكسوف من أمر الجنة والنار
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: انْخَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلاً نحْوًا مِنْ قِرَاءَةِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ؛ ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَويلاً، ثُمَّ رَفَعَ فَقَامَ قِيَامًا طَويلاً، وَهُوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ ركوعًا طَويلاً وَهُوَ دُونَ الرُّكوعِ الأَوَّلِ ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ قَامَ قِيَامًا طَويلاً، وَهُوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَويلاً، وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ فَقَامَ قِيَامًا طَويِلاً، وَهُوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكوعًا طَوِيلاً، وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ، لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذلِكَ فَاذْكُرُوا اللهَ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ رَأَيْنَاكَ تَنَاوَلْتَ شَيْئًا فِي مَقَامِكَ، ثُمَّ رَأَيْنَاكَ كَعْكَعْتَ؛ فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي رَأَيْتُ الْجَنَّةَ فَتَنَاوَلْتُ عُنْقُودًا، وَلَوْ أَصَبْتُهُ لأَكَلْتُمْ مِنْهُ مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا، وَأُرِيتُ النَّارَ فَلَمْ أَرَ مَنْظَرًا كَالْيَوْمِ قَطُّ أَفْظَعَ، وَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ قَالُوا: بِمَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: بِكُفْرِهِنَّ قِيلَ: يَكْفُرْنَ بِاللهِ قَالَ: يَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ، وَيَكْفُرْنَ الإِحْسَانَ، لَوْ أَحْسَنْتَ إِلَى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ كُلَّهُ، ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا، قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ