পরিচ্ছেদঃ ৫/৫৫. ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করা এবং তা অবিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব।
৩৯৬. ’ইমরান ইবনু হুসাইন (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, এক সফরে তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। সারা রাত পথ চলার পর যখন ভোর কাছাকাছি হল, তখন বিশ্রাম নেয়ার জন্য থেমে গেলেন এবং গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন। অবশেষে সূর্য উদিত হয়ে অনেক উপরে উঠে গেল, [ইমরান (রাযি.) বলেন] যিনি সর্বপ্রথম ঘুম হতে জাগলেন তিনি হলেন আবূ বকর (রাযি.)। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে জাগ্রত না হলে তাঁকে জাগানো হত না। অতঃপর ’উমার (রাযি.) জাগলেন। আবূ বকর (রাযি.) তাঁর শিয়রের নিকট গিয়ে বসে উচ্চস্বরে ’আল্লাহু আকবার’ বলতে লাগলেন। শেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জেগে উঠলেন এবং অন্যত্র চলে গিয়ে অবতরণ করে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন। তখন এক ব্যক্তি আমাদের সাথে সালাত আদায় না করে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে বললেন, হে অমুক! আমাদের সঙ্গে সালাত আদায় করতে কিসে বাধা দিল?
লোকটি বলল, আমি অপবিত্র হয়েছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করার নির্দেশ দিলেন, অতঃপর সে সালাত আদায় করল। (ইমরান (রাযি.) বলেন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অগ্রবর্তী দলের সঙ্গে পাঠিয়ে দিলেন এবং আমরা ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লাম। এই অবস্থায় আমরা পথ চলছি। হঠাৎ উষ্ট্রে আরোহী এক মহিলা আমাদের নযরে পড়ল। সে পানি ভর্তি দু’টি মশকের মাঝখানে পা ঝুলিয়ে বসে ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, পানি কোথায়? সে বলল, (আশেপাশে) কোথায়ও পানি নেই। আমরা বললাম, তোমার ও পানির জায়গার মধ্যে দূরত্ব কতটুকু? সে বলল একদিন ও এক রাতের দূরত্ব। আমরা তাকে বললাম, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট চল। সে বলল, আল্লাহর রসূল কী? আমরা তাকে যেতে না দিয়ে তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে গেলাম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসেও ঐ রকম কথাই বলল যা সে আমাদের সঙ্গে বলেছিল। তবে সে তাঁর নিকট বলল, সে কয়েকজন ইয়াতীম সন্তানের মা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মশক দু’টি নামিয়ে ফেলতে আদেশ করলেন। অতঃপর তিনি মশক দু’টির মুখে হাত বুলালেন। আমরা তৃষ্ণার্ত চল্লিশ জন মানুষ পানি পান করে পিপাসা মিটালাম। অতঃপর আমাদের সকল মশক, বাসনপত্র পানি ভর্তি করে নিলাম। তবে উটগুলোকে পানি পান করান হয়নি। এত সবের পরও মহিলার মশকগুলো এত পানি ভর্তি ছিল যে তা ফেটে যাবার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের নিকট যা কিছু আছে উপস্থিত কর। কিছু খেজুর ও রুটির টুকরা জমা করে তাঁকে দেয়া হল। এ নিয়ে নারীটি খুশীর সঙ্গে তার গৃহে ফিরে গেল। গৃহে গিয়ে সকলের নিকট সে বলল, আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল, এক মহা যাদুকরের সঙ্গে অথবা মানুষে যাকে নবী বলে ধারণা করে তার সঙ্গে। আল্লাহ্ এই মহিলার মাধ্যমে এ বস্তিবাসীকে হিদায়াত দান করলেন। স্ত্রীলোকটি নিজেও ইসলাম গ্রহণ করল এবং বস্তিবাসী সকলেই ইসলাম গ্রহণ করল।
قضاء الصلاة الفائتة واستحباب تعجيل قضائها
حَدِيْثُ عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ أَنَّهُمْ كَانُوا مَعَ النَّبِيِّ ﷺ فِي مَسِيرٍ فَأَدْلَجُوا لَيْلَتَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ وَجْهُ الصُّبْحِ عَرَّسُوا فَغَلَبَتْهُمْ أَعْيُنُهُمْ حَتَّى ارْتَفَعَتْ الشَّمْسُ فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ اسْتَيْقَظَ مِنْ مَنَامِهِ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ لاَ يُوقَظُ رَسُولُ اللهِ ﷺ مِنْ مَنَامِهِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ فَاسْتَيْقَظَ عُمَرُ فَقَعَدَ أَبُو بَكْرٍ عِنْدَ رَأْسِهِ فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ حَتَّى اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ ﷺ فَنَزَلَ وَصَلَّى بِنَا الْغَدَاةَ فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ يَا فُلَانُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا قَالَ أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيدِ ثُمَّ صَلَّى وَجَعَلَنِي رَسُولُ اللهِ ﷺ فِي رَكُوبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ فَقُلْنَا لَهَا أَيْنَ الْمَاءُ فَقَالَتْ إِنَّهُ لاَ مَاءَ فَقُلْنَا كَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ قَالَتْ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ فَقُلْنَا انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَتْ وَمَا رَسُولُ اللهِ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا حَتَّى اسْتَقْبَلْنَا بِهَا النَّبِيَّ ﷺ فَحَدَّثَتْهُ بِمِثْلِ الَّذِي حَدَّثَتْنَا غَيْرَ أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا مُؤْتِمَةٌ فَأَمَرَ بِمَزَادَتَيْهَا فَمَسَحَ فِي الْعَزْلَاوَيْنِ فَشَرِبْنَا عِطَاشًا أَرْبَعِينَ رَجُلًا حَتَّى رَوِينَا فَمَلَأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا وَهِيَ تَكَادُ تَنِضُّ مِنَ الْمِلْءِ ثُمَّ قَالَ هَاتُوا مَا عِنْدَكُمْ فَجُمِعَ لَهَا مِنَ الْكِسَرِ وَالتَّمْرِ حَتَّى أَتَتْ أَهْلَهَا قَالَتْ لَقِيتُ أَسْحَرَ النَّاسِ أَوْ هُوَ نَبِيٌّ كَمَا زَعَمُوا فَهَدَى اللهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا
পরিচ্ছেদঃ ৫/৫৫. ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করা এবং তা অবিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব।
৩৯৭. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ কোনো সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে সালাতের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেন) ’’আমাকে স্মরণের উদ্দেশে সালাত কায়েম কর’’- (ত্বা-হাঃ ১৪)।
قضاء الصلاة الفائتة واستحباب تعجيل قضائها
حَدِيْثُ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ وَأَقِمْ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي قَالَ مُوسَى قَالَ هَمَّامٌ سَمِعْتُهُ يَقُولُ بَعْدُ (وَأَقِمْ الصَّلاَةَ للذِّكْرَى )