পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوْا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللهِ
অর্থাৎ, অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর। (সূরা জুমুআহ ১০)
(২৩৯৩) আবূ আব্দুল্লাহ যুবাইর ইবনে আওয়াম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কারো রশি নিয়ে পাহাড় যাওয়া এবং কাঠের বোঝা পিঠে করে বয়ে আনা ও তা বিক্রি করা, যার দ্বারা আল্লাহ তার চেহারাকে (অপমান থেকে) বাঁচান, লোকেদের কাছে এসে ভিক্ষা করার চেয়ে উত্তম; চাহে তারা তাকে দিক বা না দিক।
وَعَنْ أَبِـيْ عَبدِ اللهِ الزُبَيرِ بنِ العَوَّامِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَأَنْ يَّأخُذَ أحَدُكُمْ أَحْبُلَهُ ثُمَّ يَأْتِيَ الْـجَبَلَ فَيَأْتِيَ بِـحُزْمَةٍ مِّنْ حَطَبٍ عَلٰى ظَهْرِهِ فَيَبِيْعَهَا فَيَكُفَّ اللهُ بِهَا وَجْهَهُ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أنْ يَّسْألَ النَّاسَ أعْطَوْهُ أَوْ مَنَعُوهُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৪) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’তোমাদের মধ্যে কারো রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ ক’রে পিঠে ক’রে বয়ে আনা, কোন লোকের কাছে এসে ভিক্ষা করার চেয়ে অনেক ভাল; চাহে সে দিক বা না দিক।’’ (বুখারী ২০৭৪, ২৩৭৪, মুসলিম ২৪৪৯)
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَأَنْ يَّـحْتَطِبَ أحَدُكُمْ حُزْمَةً عَلٰى ظَهْرِهِ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أنْ يَّسْألَ أَحَداً فَيُعْطِيَهُ أَوْ يَمْنَعَهُ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৫) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যাকারিয়া (আঃ) ছুতোর (কাঠ-মিস্ত্রী) ছিলেন।
وَعَنهُ : أنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ كَانَ زَكرِيّا نَـجَّارًا رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৬) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দাঊদ (আঃ) নিজ হাতের উপার্জন ছাড়া খেতেন না।
وَعَنهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ كَانَ دَاوُدُ لَا يَأكُلُ إِلاَّ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৭) মিকদাম ইবনে মা’দীকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিজের হাতের উপার্জন থেকে উত্তম খাবার কেউ কখনো খায়নি। আল্লার নবী দাউদ (আঃ) নিজ হাতের উপার্জন থেকে খেতেন।
وَعَنِ الْمِقدَامِ بنِ مَعْدِيْكَرِبَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا أكَلَ أَحَدٌ طَعَامًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ أنْ يَأكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدِه وَإنَّ نَبيَّ الله دَاوُدَ كَانَ يَأكُلُ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৮) রাফে’ বিন খাদীজ (রাঃ) বলেন, জিজ্ঞাসা করা হল, ’হে আল্লাহর রসূল! কোন উপার্জন সবচেয়ে বেশি পবিত্র?’ উত্তরে তিনি বললেন, সবচেয়ে পবিত্র উপার্জন হল, যা মানুষের নিজ হাতের কাজ এবং সদুপায়ে ব্যবসার মাধ্যমে করা হয়।
عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيْجٍ قَالَ: قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ الْكَسْبِ أَطْيَبُ؟ قَالَ عَمَلُ الرَّجُلِ بِيَدِهِ وَكُلُّ بَيْعٍ مَبْرُوْرٍ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৩৯৯)আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শ্রেষ্ঠ উপার্জন হল (শ্রমজীবীর) হাতের উপার্জন; যদি সে (তার কাজে) হিতাকাঙ্ক্ষী হয়।
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ خَيْرُ الْكَسْبِ كَسْبُ يَدِ الْعَامِلِ إِذَا نَصَحَ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০০) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যে খাদ্য ভক্ষণ কর, তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম খাদ্য হল তোমাদের নিজের হাতে কামাই করা খাদ্য। আর তোমাদের সন্তানগণ তোমাদের উপার্জিত ধনের পর্যায়ভুক্ত।
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ مِنْ أَطْيَبِ مَا أَكَلَ الرَّجُلُ مِنْ كَسْبِهِ وَوَلَدُهُ مِنْ كَسْبِهِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, একদা আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। এমন সময় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে একজন (সুস্বাস্থ্যবান) যুবক বের হয়ে এল। আমরা যখন তাকে দেখলাম এবং তার প্রতি দৃষ্টি ফেলে রাখলাম, তখন বললাম, যদি এই যুবক তার যৌবন, উদ্যম ও শক্তিকে আল্লাহর পথে ব্যয় করত! (তাহলে কতই না উত্তম হতো।) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এ কথা শুনে বললেন, (যুদ্ধে) খুন হওয়া ছাড়া কি আর আল্লাহর পথ নেই? যে ব্যক্তি নিজ পিতামাতার জন্য রুযী-সন্ধান করে, তার কাজ আল্লাহর পথে, যে ব্যক্তি নিজ ছেলেমেয়ের জন্য রুযী-সন্ধান করে, তার কাজ আল্লাহর পথে এবং যে ব্যক্তি নিজেকে সৎ রাখার জন্য রুযী-সন্ধান করে, তার কাজও আল্লাহর পথে। কিন্তু যে ব্যক্তি ধনবৃদ্ধিতে গর্ব করার জন্য কর্ম করে, তার কাজ তাগূত অথবা শয়তানের পথে।
عَنْ أَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : بَيْنَمَا نَـحْنُ جُلُوسٌ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا شَابٌّ مِنَ الثَّنِيَّةِ فَلَمَّا رَأَيْنَاهُ بِأَبْصَارِنَا قُلْنَا : لَوْ أَنَّ هَذَا الشَّابَ جَعَلَ شَبَابَهُ وَنَشَاطَهُ وَقُوَّتَهُ فِى سَبِيلِ اللهِ قَالَ فَسَمِعَ مَقَالَتَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قَالَ وَمَا سَبِيْلُ اللهِ إِلاَّ مَنْ قُتِلَ؟ مَنْ سَعٰـى عَلٰـى وَالِدَيْهِ فَفِى سَبِيلِ اللهِ وَمَنْ سَعَى عَلٰـى عِيَالِهِ فَفِى سَبِيلِ اللهِ وَمَنْ سَعٰـى عَلٰـى نَفْسِهِ لِيُعِفَّهَا فَفِى سَبِيلِ اللهِ وَمَنْ سَعٰـى عَلٰـى التَّكَاثُرِ فَهُوَ فِـىْ سَبِيْلِ الشَّيْطَانِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’অবশ্যই আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র (মালই) কবুল করে থাকেন। আল্লাহ মুমিনদেরকে সেই আদেশ করেছেন, যে আদেশ করেছেন আম্বিয়াগণকে। সুতরাং তিনি আম্বিয়াগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ’হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তুসমূহ থেকে আহার কর এবং সৎকাজ কর। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সূরা মু’মিনূন ৫১)
আর তিনি (মুমিনদের উদ্দেশ্যে) বলেছেন, ’হে মুমিনগণ! আমি তোমাদেরকে যে সব রুজী দান করেছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর--।’ (সূরা বাক্বারাহ ১৭২)
অতঃপর তিনি সেই ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে লম্বা সফর করে আলুথালু ধূলিমলিন বেশে নিজ হাত দু’টিকে আকাশের দিকে লম্বা করে তুলে দু’আ করে, ’হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রভু!’ কিন্তু তার আহার্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধেয় লেবাস হারাম এবং হারাম দ্বারাই তার পুষ্টিবিধান হয়েছে। অতএব তার দু’আ কিভাবে কবুল হতে পারে?
عَنْ أَبِـىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ فَقَالَ (يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّىْ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيمٌ) وَقَالَ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ) ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيْلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِىَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৩) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা কা’ব বিন উজরার উদ্দেশ্যে বললেন, হে কা’ব বিন উজরাহ! সে মাংস কোন দিন বেহেশত্ প্রবেশ করতে পারবে না, যার পুষ্টিসাধন হারাম খাদ্য দ্বারা করা হয়েছে। (দারেমী ২৭৭৬, সিলসিলাতুল আহাদিসুস সহীহা ৬/২১৪পৃ.)
হাদীসটিকে ইমাম তিরমিযী কা’ব বিন উজরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণনা করেছেন। কা’ব বলেন, আমাকে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ... হে কা’ব বিন উজরাহ! যে মাংস হারাম খাদ্য দ্বারা প্রতিপালিত হবে, তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত। (সহীহ তিরমিযী ৫০১, বিশুদ্ধ সনদে)
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ يَا كَعْبُ بْنِ عُجْرَةَ إِنَّهُ لَنْ يَّدْخُلِ الْجَـنَّةَ لَـحْـمٌ نَبَتَ مِنْ سُحْتٍ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৪) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা রুজী সন্ধানের ব্যাপারে জলদিবাজি করো না। পৃথিবীতে কোন বান্দাই তার ভাগ্যে নির্ধারিত সর্বশেষ রুযী অর্জন না করা পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং রুযী সন্ধানে মধ্যবর্তী পন্থা (সুন্দর ও স্বাভাবিক বৈধ পথ) অবলম্বন কর। হালাল উপায় গ্রহণ কর এবং হারাম উপায় বর্জন কর।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لاَ تَسْتَبْطِئُوا الرِّزْقَ فَإِنَّهُ لَمْ يَكُنْ عَبْدٌ يَمُوتُ حَتّٰـى يَبْلُغَهُ آخِرُ رِزْقٍ هُوَ لَهُ فَاتَّقُوا اللهَ وَأَجْمِلُوا فِى الطَّلَبِ مِنَ الْحَلاَلِ وَتَرْكِ الْحَرَامِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৫) আবূ উমামাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিবরীল আমার হৃদয়ে প্রক্ষিপ্ত করেছেন যে, কোন আত্মাই তার ভাগ্যে নির্ধারিত সর্বশেষ আয়ু ও রুযী পূর্ণ না করা পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং রুজী সন্ধানে মধ্যবর্তী পন্থা (সুন্দর ও স্বাভাবিক বৈধ পথ) অবলম্বন কর। রুযী আসতে দেরী দেখে তোমাদের কেউ যেন আল্লাহর অবাধ্য হয়ে তার সন্ধানে উদ্বুদ্ধ না হয়। যেহেতু (রুযী আল্লাহর হাতে আর) তা তাঁর বাধ্য না হয়ে অর্জন করা যায় না।
عَنْ أَبِـيْ أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِنَّ رُوْحَ الْقُدُسِ نَفَثَ فيِْ رُوعِيْ أنّ نَفْسًا لنْ تَمُوتَ حَتّى تَسْتَكْمِلَ أجَلَها وَتَسْتَوْعِبَ رِزْقَها فاتّقُوا اللهَ وأجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ وَلَا يَحْمِلنَّ أحَدَكُمُ اسْتِبْطاءُ الرِّزْقِ أنْ يَّطْلُبَهُ بِمَعْصِيَةِ الله فَإِنَّ اللهَ تَعَالٰى لَا يُنالُ مَا عِنْدَهُ إِلَّا بِطاعَتِهِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৬) আবূ সাঈদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমানতদার, সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন আম্বিয়া, সিদ্দীক্বীন ও শহীদগণের সাথে অবস্থান করবে।
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৭) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন কোন বান্দার পদযুগল তার প্রতিপালকের নিকট থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত সরবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে ৫টি জিনিস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে; তার আয়ু প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে যে, সে তা কিসে ক্ষয় করেছে? তার যৌবন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে যে, সে তা কিসে নষ্ট করেছে? তার ধন-সম্পদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে যে, সে তা কি উপায়ে উপার্জন করেছে এবং কোন্ পথে ব্যয় করেছে? এবং যে ইলম সে শিখেছিল, সে অনুযায়ী কি আমল করেছে?
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَا يَزُولُ قَدْمَ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتّٰـى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ: عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ، وَشَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاهُ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ كَسَبَهُ وَفِيْمَا أَنْفَقَهُ، وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের উপর এমন একটি যুগ (অবশ্যই) আসবে, যখন সে এ কথার কোন পরোয়াই করবে না যে, সে যা গ্রহণ (উপার্জন) করছে তা হালালের শ্রেণীভুক্ত অথবা হারামের।
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لَا يُبَالِي الْمَرْءُ بِمَا أَخَذَ الْمَالَ أَمِنْ حَلَالٍ أَمْ مِنْ حَرَامٍ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪০৯) জুন্দুব বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (মরণের পর) মানুষের যে অংশটি সবার আগে পঁচে দুর্গন্ধময় হবে তা হল তার পেট। সুতরাং যে ব্যক্তি সক্ষম যে, সে কেবল হালাল ছাড়া অন্য কিছু (হারাম) ভক্ষণ করবে না, সে যেন তা-ই করে। আর যে ব্যক্তি সক্ষম যে, সে আঁজলা পরিমাণ খুন বহিয়ে তার ও জান্নাতের মাঝে কোন অন্তরায় সৃষ্টি করবে না, সেও যেন তা-ই করে।
عَنْ جُنْدُبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُنْتِنُ مِنْ الْإِنْسَانِ بَطْنُهُ فَمَنْ اسْتَطَاعَ أَنْ لَا يَأْكُلَ إِلَّا طَيِّبًا فَلْيَفْعَلْ وَمَنْ اسْتَطَاعَ أَنْ لَا يُحَالَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجَنَّةِ بِمِلْءِ كَفِّهِ مِنْ دَمٍ أَهْرَاقَهُ فَلْيَفْعَلْ
পরিচ্ছেদঃ স্বহস্তে উপার্জিত খাবার খাওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকা এবং অপরকে দান করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া প্রসঙ্গে
(২৪১০) আয়েশা (রাঃ) বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর একটি গোলাম ছিল। তিনি তার উপার্জন করা অর্থ তাকে জিজ্ঞাসা ক’রে (হালাল হলে) খেতেন। একদিন জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়ে তার উপার্জিত কিছু খাবার খেয়ে ফেললেন। গোলাম বলল, ’আপনি কি জানেন, আপনি আজ কী খেলেন?’ তিনি বললেন, ’না তো। কিসের উপার্জন খাওয়ালে তুমি আজ?’ গোলাম বলল, ’জাহেলী যুগে আমি গণকের কাজ করতাম। এক ব্যক্তির ভাগ্য গণনা করেছিলাম। আমি ভাগ্য গণনার কিছুই জানতাম না। আসলে আমি তাকে ধোকা দিয়েছিলাম। আজ তার সাথে সাক্ষাৎ হলে সে সেই পারিশ্রমিক আমাকে দান করল। আর তাই আপনি ভক্ষণ করলেন।’ এ কথা শোনামাত্র তিনি নিজ মুখে আঙ্গুল ভরে পেটের সমস্ত খাবারটাই বমি করে দিলেন!
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ لِأَبِـيْ بَكْرٍ غُلَامٌ يُخْرِجُ لَهُ الْخَرَاجَ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يَأْكُلُ مِنْ خَرَاجِهِ فَجَاءَ يَوْمًا بِشَيْءٍ فَأَكَلَ مِنْهُ أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ لَهُ الْغُلَامُ أَتَدْرِي مَا هَذَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَمَا هُوَ قَالَ كُنْتُ تَكَهَّنْتُ لِإِنْسَانٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَمَا أُحْسِنُ الْكِهَانَةَ إِلَّا أَنِّي خَدَعْتُهُ فَلَقِيَنِي فَأَعْطَانِي بِذَلِكَ فَهَذَا الَّذِي أَكَلْتَ مِنْهُ فَأَدْخَلَ أَبُو بَكْرٍ يَدَهُ فَقَاءَ كُلَّ شَيْءٍ فِي بَطْنِهِ
পরিচ্ছেদঃ নিজ কর্মে নিপুণতা
(২৪১১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শ্রেষ্ঠ উপার্জন হল (শ্রমজীবীর) হাতের উপার্জন; যদি সে (তার কাজে) হিতাকাঙ্ক্ষী হয়।
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ خَيْرُ الْكَسْبِ كَسْبُ يَدِ الْعَامِلِ إِذَا نَصَحَ
পরিচ্ছেদঃ নিজ কর্মে নিপুণতা
(২৪১২) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ পছন্দ করেন যে, তোমাদের কেউ কোন কাজ করলে সে যেন তা নৈপুণ্যের সাথে করে।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللهَ يُحِبُّ إِذَا عَمِلَ أحَدُكُم عَمَلاً أنْ يُتْقِنَهُ