পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১. আরোহী পায়ে চলা ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম দিবে।
১৩৯৬. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আরোহী ব্যক্তি পদচারীকে, পদচারী ব্যক্তি উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যককে সালাম করবে।
يسلم الراكب على الماشي والقليل على الكثير
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُسَلِّمُ الرَّاكِبُ عَلَى الْمَاشِي، وَالْمَاشِي عَلَى الْقَاعِدِ، وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৩. একজন মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের হক হচ্ছে সালামের উত্তর দেয়া।
১৩৯৭. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি যে, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক্ব পাঁচটিঃ ১. সালামের জওয়াব দেয়া, ২. অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেয়া, ৩. জানাযার পশ্চাদানুসরণ করা, ৪. দাওয়াত কবূল করা এবং ৫. হাঁচিদাতাকে খুশী করা (আলহামদু লিল্লাহর জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা)।
من حق المسلم للمسلم رد السلام
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ خَمْسٌ: رَدُّ السَّلاَمِ، وَعِيَادَةُ الْمَرِيضِ، وَاتِّبَاعُ الْجَنَائِزِ، وَإِجَابَةُ الدَّعْوَةِ، وَتَشْمِيتُ الْعَاطِسِ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৪. আহলে কিতাবদেরকে প্রথমে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং তাদেরকে কী ভাবে তাদের সালামের উত্তর দিবে।
১৩৯৮. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন আহলে কিতাব তোমাদের সালাম দেয়, তখন তোমরা বলবে ওয়া আলাইকুম (তোমাদের উপরও)।
النهي عن ابتداء أهل الكتاب بالسلام وكيف يرد عليهم
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَهْلُ الْكِتَابِ، فَقُولُوا: وَعَلَيْكُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৪. আহলে কিতাবদেরকে প্রথমে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং তাদেরকে কী ভাবে তাদের সালামের উত্তর দিবে।
১৩৯৯. ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন ইয়াহুদী আমাদের সালাম করলে তাদের কেউ অবশ্যই বলবেঃ আস্সামু আলাইকা। তখন তোমরা জবাবে ’ওয়াআলাইকা’ বলবে।
النهي عن ابتداء أهل الكتاب بالسلام وكيف يرد عليهم
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رضي الله عنهما، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمُ الْيَهُودُ فَإِنَّمَا يَقُولُ أَحَدُهُمُ: السَّامُ عَلَيْكَ فَقُلْ: وَعَلَيْكَ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৪. আহলে কিতাবদেরকে প্রথমে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং তাদেরকে কী ভাবে তাদের সালামের উত্তর দিবে।
১৪০০. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার একদল ইয়াহুদী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললঃ আস্সামু আলাইকা। (তোমার মৃত্যু হোক, নাউযুবিল্লাহ)। আমি এ কথার মৰ্ম বুঝে বললামঃ আলাইকুমুস্ সামু ওয়াল লানাতু। (তোমাদের উপর মৃত্যু ও লানাত)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ’আয়িশাহ! তুমি থামো। আল্লাহ সর্বাবস্থায়ই বিনয় পছন্দ করেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা যা বললো তা কি আপনি শুনেননি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ জন্যই আমিও বলেছি, ওয়া আলাইকুম (তোমাদের উপরও)।
النهي عن ابتداء أهل الكتاب بالسلام وكيف يرد عليهم
حديث عَائِشَةَ رضي الله عنها، قَالَتْ: دَخَلَ رَهْطٌ مِنَ الْيَهُودِ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: السَّامُ عَلَيْكَ فَفَهِمْتُهَا، فَقُلْتُ: عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَهْلاً، يَا عَائِشَةُ فَإِنَّ اللهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الأَمْرِ كُلِّهِ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ أَوَ لَمْ تَسْمَعْ مَا قَالوا قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَقَدْ قُلْتُ: وَعَلَيْكُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৫. বালকদেরকে সালাম দেয়া মুস্তাহাব।
১৪০১. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার তিনি একদল শিশুর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাদের সালাম করে বললেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তা করতেন।
استحباب السلام على الصبيان
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، أَنَّهُ مَرَّ عَلَى صِبْيَانٍ، فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ وَقَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَفْعَلُهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৭. মানবিক প্রয়োজনে মহিলাদের বাইরে বের হওয়া বৈধ।
১৪০২. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর সাওদাহ (রাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলেন। সাওদাহ এমন স্থূল শরীরের অধিকারিণী ছিলেন যে, পরিচিত লোকদের থেকে তিনি নিজেকে গোপন রাখতে পারতেন না। ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) তাঁকে দেখে বললেন, হে সাওদাহ! জেনে রেখ, আল্লাহর কসম, আমাদের দৃষ্টি থেকে গোপন থাকতে পারবে না। এখন দেখ তো, কীভাবে বাইরে যাবে? আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সাওদাহ (রাঃ) ফিরে আসলেন। আর এ সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে রাতের খানা খাচ্ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল টুকরা হাড়। সাওদাহ (রাঃ) ঘরে প্রবেশ করে বললেন, আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছিলাম। তখন ’উমার (রাঃ) আমাকে এমন এমন কথা বলেছে। ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ সময় আল্লাহ তা’আলা তাঁর নিকট ওয়াহী অবতীর্ণ করেন। ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়া শেষ হল, হাড় টুকরা তখনও তাঁর হাতেই ছিল, তিনি তা রেখে দেননি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অবশ্যই দরকার হলে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
إِباحة الخروج للنساء لقضاء حاجة الإنسان
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: خَرَجَتْ سَوْدَةُ بَعْدَمَا ضُرِبَ الْحِجَابُ، لِحَاجَتِهَا؛ وَكَانَتِ امْرَأَةً جَسِيمَةً لاَ تَخْفَى عَلَى مَنْ يَعْرِفُهَا؛ فَرَآهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، فَقَالَ: يَا سَوْدَةُ أَمَا وَاللهِ مَا تَخْفَيْنَ عَلَيْنَا، فَانْظُرِي كَيْفَ تَخْرُجِينَ قَالَتْ: فَانْكَفَأَتْ رَاجِعَةً وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي بَيْتِي، وَإِنَّهُ لَيَتَعَشَّى، وَفِي يَدِهِ عَرْقٌ فَدَخَلَتْ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي خَرَجْتُ لِبَعْضِ حَاجَتِي، فَقَالَ لِي عُمَرُ كَذَا وَكَذَا قَالَتْ: فَأَوْحى اللهُ إِلَيْهِ ثُمَّ رُفِعَ عَنْهُ وَإِنَّ الْعَرْقَ فِي يَدِهِ، مَا وَضَعَهُ فَقَالَ: إِنَّه قَدْ أُذِنَ لَكُنَّ أَنْ تَخْرُجْنَ لِحَاجَتِكُنَّ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৮. অপরিচিত মহিলার নিকট একাকীত্বে অবস্থান এবং তার নিকট প্রবেশ করা হারাম।
১৪০৩. উকবাহ ইবনু আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! দেবরদের ব্যাপারে কি নির্দেশ? তিনি উত্তর দিলেন, দেবর তো মৃত্যুতুল্য।
تحريم الخلوة بالأجنبية والدخول عليها
حديث عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلَى النِّسَاء فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ، يَا رَسولَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ: الحَمْوُ المَوْتُ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৯. কোন লোককে তার স্ত্রী বা কোন মাহরামার সঙ্গে একাকীত্বে দেখা গেলে তাদের সন্দেহ দূর করার জন্য ‘এ মহিলা আমার উমুক হয়’ বলে পরিচয় তুলে ধরা মুস্তাহাব।
১৪০৪. নবী-সহধর্মিণী সাফিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি রমযানের শেষ দশকে মসজিদে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই’তিকাফরত ছিলেন। সাফিয়্যা তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। অতঃপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পৌছে দেয়ার উদ্দেশে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল মু’মিনীন) উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর গৃহ সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌছলেন, তখন দু’জন আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলেন। তাঁদের দু’জনকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা দু’জন থাম। ইনি তো (আমার স্ত্রী) সফীয়্যাহ বিনতু হুয়ায়ী। এতে তাঁরা দুজনে ’সুবহানাল্লাহ হে আল্লাহর রাসূল’ বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রত বোধ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শয়তান মানুষের রক্তের শিরায় চলাচল করে। আমি ভয় করলাম যে, সে তোমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে।
بيان أنه يستحب لمن رُؤيَ خاليًا بامرأة وكانت زوجة أو محرمًا له أن يقول هذه فلانة ليدفع ظن السوء به
حديث صَفِيَّةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهَا جَاءَتْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تَزُورُهُ فِي اعْتِكَافِهِ، فِي الْمَسْجِدِ، فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَتَحَدَّثَتْ عِنْدَهُ سَاعَةً، ثُمَّ قَامَتْ تَنْقَلِبُ فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهَا يَقْلِبُهَا، حَتَّى إِذَا بَلَغَتْ بَابَ المَسْجِدِ، عِنْدَ بَابِ أُمِّ سَلَمَةَ، مَرَّ رَجُلاَنِ مِنَ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَلَى رِسْلِكُمَا، إِنَّمَا هِيَ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ فَقَالاَ: سُبْحَانَ اللهِ، يَا رَسُولَ اللهِ وَكَبُرَ عَلَيْهِمَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الشَّيْطَانَ يَبْلُغُ مِنَ الإِنْسَانِ مَبْلَغَ الدَّمِ، وَإِنِّي خَشِيْتُ أَنْ يَقْذِفَ فِي قُلُوبِكُمَا شَيْئًا
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১০. কেউ যদি কোন মজলিসে এসে খালি স্থান পায় তাহলে সেখানে বসবে অথবা মাজলিসের পিছনে বসবে।
১৪০৫. আবু ওয়াকিদ আল-লায়সী (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-একদা মসজিদে বসে ছিলেন, তাঁর সাথে আরও লোকজন ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনজন লোক আসলো। তন্মধ্যে দু’জন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে এগিয়ে আসলেন এবং একজন চলে গেলেন। আবু ওয়াকিদ (রাঃ) বলেন, তাঁরা দু’জন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তাঁদের একজন মজলিসের মধ্যে কিছুটা খালি জায়গা দেখে সেখানে বসে পড়লেন এবং অপরজন তাদের পেছনে বসলেন। আর তৃতীয় ব্যক্তি ফিরে গেল। যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবসর হলেন (সাহাবীদের লক্ষ্য করে) বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলব না? তাদের একজন আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করল, আল্লাহ্ তাকে আশ্রয় দিলেন। অন্যজন লজ্জাবোধ করল, তাই আল্লাহও তার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করলেন। আর অপরজন (মাজলিসে হাযির হওয়া থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলেন, তাই আল্লাহ্ও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
من أتى مجلسًا فوجد فرجة فجلس فيها، وإلا وراءهم
حديث أَبِي وَاقِدٍ اللَّيْثِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَيْنَمَا هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ، وَالنَّاسُ مَعَهُ، إِذْ أَقْبَلَ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ، فَأَقْبَلَ اثْنَانِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَذَهَبَ وَاحِدٌ قَالَ: فَوَقَفَا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَّا أَحَدُهُمَا فَرَأَى فُرْجَةً فِي الْحَلْقَةِ، فَجَلَسَ فِيهَا وَأَمَّا الآخَرُ فَجَلَسَ خَلْفَهُمْ وَأَمَّا الثَّالِثُ فَأَدْبَرَ ذَاهِبًا فَلَمَّا فَرَغَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: أَلاَ أُخْبِرُكُمْ عَنِ النَّفَرِ الثَّلاَثَةِ أَمَّا أَحَدُهُمْ فَأَوَى إِلَى اللهِ فَآوَاهُ اللهُ؛ وَأَمَّا الآخَرُ فَاسْتَحْيَا فَاسْتَحْيَا اللهُ مِنْهُ؛ وَأَمَّا الآخَرُ فَأَعْرَضَ فَأَعْرَضَ اللهُ عَنْهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১১. কেউ যদি তার যথাস্থানে প্রথমে বসে তাহলে তাকে তার স্থান থেকে উঠিয়ে দেয়া হারাম।
১৪০৬. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।
تحريم إِقامة الإنسان من موضعه المباح الذي سبق إِليه
حديث ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لاَ يُقِيمُ الرَّجُلُ الرَّجُلَ مِنْ مَجْلِسِهِ ثُمَّ يَجْلِسُ فِيهِ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৩. অপরিচিতা মহিলাদের নিকট মেয়েলি স্বভাবের লোকের প্রবেশে বাধা দেয়া।
১৪০৭. উম্মু সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আমার কাছে এক হিজড়া ব্যক্তি উপবিষ্ট ছিল, এমন সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি শুনলাম যে, সে (হিজড়া ব্যক্তি) ’আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়া (রাঃ)-কে বলছে, হে আবদুল্লাহ! কী বল, আগামীকাল যদি আল্লাহ আমাদেরকে তায়েফের উপর বিজয় দান করেন তা হলে গাইলানের কন্যাকে নিয়ে নিও। কেননা সে (এতই কোমলদেহী), সামনের দিকে আসার সময়ে তার পিঠে চারটি ভাঁজ পড়ে আবার পিঠ ফিরালে সেখানে আটটি ভাঁজ পড়ে। (উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন) তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদেরকে তোমাদের কাছে ঢুকতে দিও না।
منع المخنث من الدخول على النساء الأجانب
حديث أُمِّ سَلَمَةَ رضي الله عنها، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعِنْدِي مُخَنَّثٌ، فَسَمِعَهُ يَقُولُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ أُمَيَّةَ: يَا عَبْدَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِنْ فَتَحَ اللهُ عَلَيْكُمُ الطَّائِفَ غَدًا، فَعَلَيْكَ بِابْنَةِ غَيْلاَنَ، فَإِنَّهَا تَقْبِلُ بِأَرْبَعٍ، وَتدْبِرُ بِثَمَانٍ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ يَدْخُلَنَّ هؤُلاَءِ عَلَيْكُنَّ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৪. পথিমধ্যে কোন অপরিচিত মহিলা খুবই ক্লান্ত হয়ে গেলে তাকে আরোহীর পিছনে উঠানো জায়িয।
১৪০৮. আসমা বিনতে আবু বাকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুবায়র (রাঃ) আমাকে শাদী করলেন, তখন তার কাছে কোন ধন-সম্পদ ছিল না, এমন কি কোন স্থাবর জমি-জমা, দাসদাসীও ছিল না; শুধুমাত্র কুয়ো থেকে পানি উত্তোলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিড়ে গেলে সেলাই করতাম, আটা পিষতাম; কিন্তু ভালো রুটি তৈরি করতে পারতাম না। তাই আনসারী প্রতিবেশী মহিলারা আমার রুটি তৈরিতে সাহায্য করত। আর তারা ছিল খুবই উত্তম নারী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়র (রাঃ)-কে একখণ্ড জমি দিয়েছিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ঐ জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দু’মাইল।
একদিন আমি মাথায় করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিলে আসছিলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাত হল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে তাঁর উটের পিঠে বসার জন্য তাঁর উটকে ইখ! ইখ! বললেন, যাতে উটটি বসে এবং আমি তাঁর পিঠে আরোহণ করতে পারি। আমি পরপুরুষের সঙ্গে একত্রে যেতে লজ্জাবোধ করতে লাগলাম এবং যুবায়র (রাঃ)-এর আত্মসম্মানবোধের কথা আমার মনে পড়ল। কেননা, সে ছিল খুব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝতে পারলেন, আমি খুব লজ্জিত বোধ করছি। সুতরাং তিনি এগিয়ে চললেন।
আমি যুবায়র (রাঃ)-এর কাছে পৌছলাম এবং বললাম, আমি খেজুরের আঁটির বোঝ মাথায় নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমার দেখা হয় এবং তাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছিলেন। তিনি তাঁর উটকে হাঁটু গেড়ে বসালেন, যেন আমি তাতে সওয়ার হতে পারি। কিন্তু আমি তোমার আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে লজ্জা অনুভব করলাম। এ কথা শুনে যুবায়র (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! খেজুরের আঁটির বোঝ মাথায় বহন করা তাঁর সঙ্গে উটে চড়ার চেয়ে আমার কাছে অধিক লজ্জাজনক। এরপর আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) ঘোড়া দেখাশুনার জন্য আমার সাহায্যার্থে একজন খাদিম পাঠিয়ে দিলেন। এরপরই আমি যেন রেহাই পেলাম।
جواز إِرداف المرأة الأجنبية إِذا أعيت في الطريق
حديث أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَتْ: تَزَوَّجَنِي الزُّبَيْرُ، وَمَا لَهُ فِي الأَرْضِ مِنْ مَالٍ وَلاَ مَمْلوكٍ وَلاَ شَيْءٍ، غَيْرَ نَاضِجٍ وَغَيْرَ فَرَسِهِ فَكُنْتُ أَعْلِفُ فَرَسَهُ، وَأَسْتَقِي الْمَاءَ، وَأَخْرِزُ غَرْبَهُ، وَأَعجِنُ، وَلَمْ أَكُنْ أُحْسِنُ أَخْبِزُ وَكَانَ يَخْبِزُ جَارَاتٌ لِي مِنَ الأَنْصَارِ، وَكُنَّ نِسْوَةَ صِدْقٍ وَكُنْتُ أَنْقُلُ النَّوَى مِنْ أَرْضِ الزُّبَيْرِ الَّتِي أَقْطَعَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَلَى رَأْسِي، وَهِيَ مِنِّي عَلَى ثُلثَيْ فَرْسَخٍ فَجِئْتُ يَوْمًا وَالنَّوَى عَلَى رَأسِي، فَلَقِيتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَهُ نَفَرٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَدَعَانِي ثُمَّ قَالَ: إِخْ إِخْ لِيَحْمِلَنِي خَلْفَهُ فَاسَتَحْيَيْتُ أَنْ أَسِيرَ مَعَ الرِّجَالِ، وَذَكَرْتُ الزُّبَيْرَ وَغَيْرَتَهُ، وَكَانَ أَغْيَرَ النَّاسِ فَعَرَفَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنِّي اسْتَحْيَيْتُ، فَمَضى فَجِئْتُ الزُّبَيْرَ، فَقُلْتُ: لَقِيَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعَلَى رَأْسِي النَّوَى، وَمَعَهُ نَفَرٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَأَنَاخَ لأَرْكَبَ فَاسْتَحْيَيْتُ مِنْهُ، وَعَرَفْتُ غَيْرَتَكَ فَقَالَ: وَاللهِ لَحَمْلُكِ النَّوَى كَانَ أَشَدَّ عَلَيَّ مِنْ رُكُوبِكِ مَعَهُ قَالَتْ: حَتَّى أَرْسَلَ إِلَيَّ أَبُو بَكْرٍ، بَعْدَ ذَلِكَ، بِخَادِمٍ يَكْفِينِي سِيَاسَةَ الْفَرَسِ، فَكَأَنَّمَا أَعْتَقَنِي
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৫. তৃতীয় জনের বিনা অনুমতিতে দু’জনে চুপে চুপে কথা বলা।
১৪০৯. আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোথাও তিনজন লোক থাকে তবে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দু’জনে মিলে চুপি চুপি কথা বলবে না।
مناجاة الاثنين دون الثالث بغير رضاه
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ، قَالَ: إِذَا كَانُوا ثَلاَثَةً فَلاَ يَتَنَاجى اثْنَانِ دُونَ الثَّالِثِ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৫. তৃতীয় জনের বিনা অনুমতিতে দু’জনে চুপে চুপে কথা বলা।
১৪১০. ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোথাও তোমরা তিনজনে থাকো, তখন একজনকে বাদ দিয়ে দু’জনে কানে-কানে কথা বলবে না। এতে তার মনে দুঃখ হবে। তোমরা মানুষের মধ্যে মিশে গেলে তবে তা করাতে দোষ নেই।
مناجاة الاثنين دون الثالث بغير رضاه
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كُنْتُمْ ثَلاَثَةً، فَلاَ يَتَنَاجى رَجُلاَنٍ دُونَ الآخَرِ حَتَّى تَخْتَلِطُوا بِالنَّاسِ أَجْلَ أَنْ يُحْزِنَهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৬. চিকিৎসা, অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।
১৪১১. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বদ নযর লাগা সত্য।
الطب والمرض والرقي
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: الْعَيْنُ حَقٌّ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৭. যাদু।
১৪১২. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতে তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাদের কাছে আসেননি। সুফইয়ান বলেন, এ অবস্থা খুব যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বৰ্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি অবগত হও যে, আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বাতলিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং অন্যজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লবীদ ইবনু আসাম। এ ইয়াহুদীদের মিত্র সুরাইক গোত্রের একজন; সে ছিল মুনাফিক।
প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন। কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেন চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে যারওয়ান নামক কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়, আর এ কূপের (পার্শবর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এ কথা প্রচার করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে শিক্ষা দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে।
السحر
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُحِرَ، حَتَّى كَانَ يَرَى أَنَّهُ يَأْتِي النِّسَاءَ وَلاَ يَأْتِيهِنَّ قَالَ سُفْيَانُ (أَحَدُ رِجَالِ السَّنَدِ) وَهذَا أَشَدُّ مَا يَكُونُ مِنَ السِّحْرِ إِذَا كَانَ كَذَا فَقَالَ: يَا عَائِشَةُ أَعَلِمْتِ أَنَّ اللهَ قَدْ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُهُ فِيهِ أَتَانِي رَجُلاَنِ فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي، وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَيَّ، فَقَالَ الَّذِي عِنْدَ رَأْسِي لِلآخَرِ: مَا بَالُ الرَّجُلِ قَالَ: مَطْبُوبٌ قَالَ: وَمَنْ طَبَّهُ قَالَ: لُبَيْدُ ابْنُ أَعْصَمَ، رَجُلٌ مِنْ زُرَيْقٍ، حَلِيفٌ لِيَهُودَ، كَانَ مُنَافِقًا قَالَ: وَفِيمَ قَالَ: فِي مُشْطٍ وَمُشَاقَةٍ قَالَ: وَأَيْنَ قَالَ: فِي جُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ تَحْتَ رَعُوفَةٍ، فِي بِئْرِ ذَرْوَانَ قَالَتْ: فَأَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْبِئْرَ حَتَّى اسْتَخْرَجَهُ فَقَالَ: هذِهِ الْبِئْرُ الَّتِي أُرِيتُهَا وَكَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الْحِنَّاءِ، وَكأَنَّ نخْلَهَا رُؤُوسُ الشَّيَاطِينِ قَالَ: فَاسْتُخْرِجَ قَالَتْ: فَقُلْتُ أَفَلاَ، أَي، تَنَشَّرْتَ فَقَالَ: أَمَا وَاللهِ فَقَدْ شَفَانِي، وَأَكْرَهُ أَنْ أُثِيرَ عَلَى أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ شَرًّا
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৮. বিষ
১৪১৩. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইয়াহুদী মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এল। সেখান হতে কিছু অংশ তিনি খেলেন, অতঃপর মহিলাকে হাযির করা হল। তখন বলা হল, আপনি কি একে হত্যা করবেন না? তিনি বললেন, না। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তালুতে আমি বরাবরই বিষক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম।
السم
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، أَنَّ يَهُودِيَّة أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بِشَاةٍ مَسْمُومَةٍ فَأَكَلَ مِنْهَا، فَجِيءَ بِهَا، فَقِيلَ: أَلاَ تَقْتُلُهَا قَالَ: لاَ قَالَ: فَمَا زِلْتُ أَعْرِفُهَا فِي لَهَوَاتِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৯. অসুস্থ ব্যক্তিকে ঝাড়ফুঁক করা মুস্তাহাব।
১৪১৪. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তাঁর নিকট যখন কোন রোগীকে আনা হত, তখন তিনি বলতেনঃ কষ্ট দূর করে দাও। হে মানুষের রব, শেফা দান কর, তুমিই একমাত্র শেফাদানকারী। তোমার শেফা ব্যতীত অন্য কোন শেফা নেই। এমন শেফা দান কর যা সামান্য রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে।
استحباب رقية المريض
حديث عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ إِذَا أَتَى مَرِيضًا، أَوْ أُتِيَ بِهِ قَالَ: أَذْهِبِ الْبَاسَ، رَبَّ النَّاسِ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/২০. সূরাহ নাস, ফালাক দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা ও প্ৰশ্বাসের থুথু দেয়া।
১৪১৫. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হতেন তখনই তিনি ’সূরায়ে মু’আব্বিযাত’ পড়ে নিজের উপর যুঁক দিতেন। যখন তাঁর রোগ কঠিন হয়ে গেল, তখন বারকাত অর্জনের জন্য আমি এ সূরাহ পাঠ করে তাঁর হাত দিয়ে শরীর মসেহ্ করিয়ে দিতাম।
رقية المريض بالمعوّذات والنفث
حديث عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ، إِذَا اشْتَكَى، يَقْرَأُ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمَعَوِّذَاتِ، وَيَنْفُثُ فَلَمَّا اشْتَدَّ وَجَعُهُ كُنْتُ أَقْرَأُ عَلَيْهِ، وَأَمَسَحُ بِيَدِهِ، رَجَاءَ بَرَكَتِهَا