পরিচ্ছেদঃ ২২/১. পানি বন্টন এবং ফলমূল ও শাক-সব্জি ভাগাভাগির ভিত্তিতে বর্গাচাষের ব্যবস্থা।
৯৯৯. আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারবাসীদেরকে উৎপাদিত ফল বা ফসলের অর্ধেক ভাগের শর্তে জমি বৰ্গা দিয়েছিলেন। তিনি নিজের সহধর্মিণীদেরকে একশ’ ওয়াসাক দিতেন, এর মধ্যে ৮০ ওয়াসাক খুরমা ও ২০ ওয়াসাক যব। ’উমার (রাঃ) (তাঁর খিলাফতকালে খায়বারের) জমি বন্টন করেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণীদের ইখতিয়ার দিলেন যে, তাঁরা জমি ও পানি নিবেন, না কি তাদের জন্য ওটাই চালু থাকবে, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় ছিল। তখন তাদের কেউ জমি নিলেন আর কেউ ওয়াসাক নিতে রাজী হলেন। ’আয়িশাহ (রাঃ) জমিই নিয়েছিলেন।
المساقاة والمعاملة بجزء من الثمر والزرع
حديث ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَلَ خَيْبَرَ بِشَطْرِ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا مِنْ ثَمَرٍ أَوْ زَرْعٍ، فَكَانَ يُعْطِي أَزْوَاجَهُ مِائَةَ وَسْقٍ: ثَمَانُونَ وَسْقَ تَمْرٍ، وَعِشْرُونَ وَسْقَ شَعِيرٍ؛ فَقَسَمَ عُمَرُ خَيْبَرَ فَخَيَّرَ أَزْوَاجَ النَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُقْطِعَ لَهُنَّ مِنَ الْمَاءِ وَالأَرْضِ أَوْ يُمْضِيَ لَهُنَّ، فَمِنْهُنَّ مَنِ اخْتَارَ الأَرْضَ وَمِنْهُنَّ مَنِ اخْتَارَ الْوَسْقَ، وَكَانَتْ عَائِشَةُ اخْتَارَتِ الأَرْضَ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১. পানি বন্টন এবং ফলমূল ও শাক-সব্জি ভাগাভাগির ভিত্তিতে বর্গাচাষের ব্যবস্থা।
১০০০. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) ইয়াহুদী ও নাসারাদের হিজায হতে নির্বাসিত করেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খায়বার জয় করেন, তখন ইয়াহুদীদের সেখান হতে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। যখন তিনি কোন স্থান জয় করেন, তখন তা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলিমদের জন্য হয়ে যায়। কাজেই ইয়াহুদীদের সেখান হতে বহিষ্কার করে দিতে চাইলেন। তখন ইয়াহুদীরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুরোধ করল যেন তাদের সে স্থানে বহাল রাখা হয় এ শর্তে যে, তারা সেখানে চাষাবাদের দায়িত্ব পালন করবে আর ফসলের অর্ধেক তাদের থাকবে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন, আমরা এ শর্তে তোমাদের এখানে বহাল থাকতে দিব যতদিন আমাদের ইচ্ছা। কাজেই তারা সেখানে বহাল রইল। অবশেষে ’উমার (রাঃ) তাদেরকে তাইমা ও আরীহায় নির্বাসিত করে দেন।
المساقاة والمعاملة بجزء من الثمر والزرع
حديث ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضي الله عنه، أَجْلَى الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى مِنْ أَرْضِ الْحِجَازِ وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا ظَهَرَ عَلَى خَيْبَرَ أَرَادَ إِخْرَاجَ الْيَهُودِ مِنْهَا، وَكَانَتِ الأَرْضُ حِينَ ظَهَرَ عَلَيْهَا للهِ وَلِرَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِلْمُسْلِمِينَ، وَأَرَادَ إِخْرَاجَ الْيَهُودِ مِنْهَا، فَسَأَلَتِ الْيَهُودُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيُقِرَّهُمْ بِهَا أَنْ يَكْفُوا عَمَلَهَا وَلَهمْ نِصْفُ الثَّمَرِ، فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: نُقِرُّكُمْ بِهَا عَلَى ذَلِكَ مَا شِئْنَا فَقَرُّوا بِهَا حَتَّى أَجْلاَهُمْ عُمَرُ إِلَى تَيْمَاءَ وَأَرِيحَاءَ
পরিচ্ছেদঃ ২২/২. বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফযীলত।
১০০১. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন মুসলিম ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোন ফসল ফলায় আর তা হতে পাখী কিংবা মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু খায় তবে তা তার পক্ষ হতে সাদাকা্ বলে গণ্য হবে।
فضل الغرس والزرع
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا أَوْ يَزْرَعُ زَرْعًا فَيَأْكُلُ مِنْهُ طَيْرٌ أَوْ إِنْسَانٌ أَوْ بَهِيمَةٌ إِلاَّ كَانَ لَهُ بِهِ صَدَقَةٌ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া।
১০০২. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রং ধারণ করার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধারণ করার অর্থ কী? তিনি বললেন, লাল বর্ণ ধারণ করা। পরে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দেখ, যদি আল্লাহ তা’আলা ফল ধরা বন্ধ করে দেন, তবে আমাদের কেউ (বিক্রেতা) কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল (ফলের মূল্য) নিবে?
وضع الجوائح
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، نَهى عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى تُزْهِيَ، فَقِيلَ لَهُ: وَمَا تُزْهِيَ قَالَ: حَتَّى تَحْمَرَّ؛ فَقَالَ: أَرأَيْتَ إِذَا مَنَعَ اللهُ الثَّمَرَةَ بِمَ يَأْخُذُ أَحَدُكُمْ مَالَ أَخِيهِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৪. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ লাঘব করা মুস্তাহাব।
১০০৩. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার দরজায় ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পেলেন; দু’জন তাদের আওয়াজ উচ্চ করেছিল। তাদের একজন আরেকজনের নিকট ঋণের কিছু মাফ করে দেয়ার এবং সহানুভূতি দেখানোর অনুরোধ করেছিল। আর অপর ব্যক্তি বলছিল, ’না, আল্লাহর কসম! আমি তা করব না।’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দু’জনের কাছে এলেন এবং বললেন, সৎ কাজ করবে না বলে যে আল্লাহর নামে কসম করেছে, সে ব্যক্তিটি কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি। সে যা পছন্দ করবে তার জন্য তা-ই হবে।
استحباب الوضع من الدين
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَمِعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَوْتَ خُصُومٍ بِالْبَابِ عَالِيَةٍ أَصْوَاتُهُمَا، وَإِذَا أَحَدُهُمَا يَسْتَوْضِعُ الآخَرَ وَيَسْتَرْفِقُهُ فِي شيْءٍ، وَهُوَ يَقُولُ: وَاللهِ لاَ أَفْعَلُ فَخَرَجَ عَلَيْهِمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَيْنَ الْمُتَأَلِّي عَلَى اللهِ لاَ يَفْعَلُ الْمَعْرُوفَ فَقَالَ: أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ وَلَهُ أَيُّ ذَلِكَ أَحَبَّ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৪. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ লাঘব করা মুস্তাহাব।
১০০৪. কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি মসজিদের ভিতরে ইবনু আবু হাদরাদ (রাঃ)-এর নিকট তাঁর পাওনা ঋণের তাগাদা করলেন। দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে বেশ উচ্চস্বরে কথাবার্তা হলো। এমনকি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘর হতেই তাদের কথার আওয়াজ শুনলেন এবং তিনি পর্দা সরিয়ে তাদের নিকট বেরিয়ে গেলেন। আর ডাক দিয়ে বললেনঃ হে কাব! কাব (রাঃ) উত্তর দিলেন, লাব্বাইক ইয়া রাসূলাল্লাহ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার পাওনা ঋণ হতে এতটুকু ছেড়ে দাও। আর হাতে ইঙ্গিত করে বোঝালেন, অর্থাৎ অর্ধেক পরিমাণ। তখন কা’ব (রাঃ) বললেনঃ আমি তাই করলাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! তখন তিনি ইবনু আবু হাদরাদকে বললেনঃ উঠ, আর বাকীটা দিয়ে দাও।
استحباب الوضع من الدين
حديث كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ تَقَاضَى ابْنَ أَبِي حَدْرَدٍ دَيْنًا كَانَ لَهُ عَلَيْهِ فِي الْمَسْجِدِ، فَارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا حَتَّى سَمِعَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي بَيْتِهِ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمَا حَتَّى كَشَفَ سِجْفَ حُجْرَتِهِ، فَنَادَى يَا كَعْبُ قَالَ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: ضَعْ مِنْ دَيْنِكَ هذَا وَأَوْمَأَ إِلَيْهِ، أَيِ الشَّطْرَ، قَالَ: لَقَدْ فَعَلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: قُمْ فَاقْضِهِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৫. ক্রেতা যদি দেউলিয়া হয়ে যায় এমতাবস্থায় বিক্রেতা তার মাল ক্রেতার নিকট অক্ষত অবস্থায় পেলে তা ফেরত নিতে পারবে।
১০০৫. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিংবা তিনি বলেছেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যখন কেউ তার মাল এমন লোকের কাছে পায়, যে নিঃসম্বল হয়ে গেছে, তবে অন্যের চেয়ে সে-ই তার বেশী হকদার।
من أدرك ما باعه عند المشتري وقد أفلس فله الرجوع فيه
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (أَوْ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ) : مَنْ أَدْرَكَ مَالَهُ بِعَيْنِهِ عِنْدَ رَجُلٍ أَوْ إِنْسَانٍ قَدْ أَفْلَسَ فَهُوَ أَحَقُّ بِهِ مِنْ غَيْرِهِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৬. অসচ্ছল ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়ার ফযীলত।
১০০৬. হুয়াইফাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে এক ব্যক্তির রূহের সাথে ফেরেশতা সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কোন নেক কাজ করেছ? লোকটি উত্তর দিল, আমি আমার কর্মচারীদের আদেশ করতাম যে, তারা যেন সচ্ছল ব্যক্তিকে অবকাশ দেয় এবং তার উপর পীড়াপীড়ি না করে। রাবী বলেন, তিনি বলেছেন, ফেরেশতারাও তাকে ক্ষমা করে দেন।
فضل إنظار المعسر
حديث حُذَيْفَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَلَقَّتِ الْمَلاَئِكَةُ رُوحَ رَجُلٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، قَالُوا أَعَمِلْتَ مِنَ الْخَيْرِ شَيْئًا، قَالَ: كُنْتُ آمُرُ فِتْيَانِي أَنْ يُنْظِرُوا وَيَتَجَاوَزُوا عَنِ الْمُوسِرِ، قَالَ: قَالَ فَتَجَاوَزُوا عَنْهُ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৬. অসচ্ছল ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়ার ফযীলত।
১০০৭. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যবসায়ী লোকদের ঋণ দিত। কোন অভাবগ্রস্তকে দেখলে সে তার কর্মচারীদের বলত, তাকে ক্ষমা করে দাও, হয়তো আল্লাহ তা’আলা আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। এর ফলে আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করে দেন।
فضل إنظار المعسر
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: كَانَ تَاجِرٌ يُدَايِنُ النَّاسَ، فَإِذَا رَأَى مُعْسِرًا قَالَ لِفِتْيانِهِ تَجَاوَزُوا عَنْهُ، لَعَلَّ اللهَ أَنْ يَتَجَاوَزَ عَنَّا، فَتَجَاوَزَ اللهُ عَنْهُ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৭. ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে টালবাহানা করা হারাম। অন্যের নিকট ঋণ হাওয়ালা করে দেয়া জায়িয এবং তা সম্পদশালী ব্যক্তির জন্য গ্রহণ করা মুস্তাহাব।
১০০৮. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশােধে গড়িমসি করা জুলুম। যখন আমাদের কাউকে (ঋণ পরিশােধের জন্যে) কোন ধনী ব্যক্তির হাওয়ালা করা হয়, তখন সে যেন তা মেনে নেয়।
تحريم مطل الغنيّ وصحة الحوالة واستحباب قبولها إِذا أحيل على ملىّ
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَطْلُ الْغَنِيِّ ظُلْمٌ، فَإِذَا أُتْبِعَ أَحَدُكُمْ عَلَى مَلِيٍّ فَلْيَتَّبِعْ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৮. প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি হারাম।
১০০৯. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঘাস উৎপাদন হতে বিরত রাখার উদ্দেশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি রুখে রাখা যাবে না।
تحريم بيع فضل الماء
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لاَ يُمْنَعُ فَضْلُ الْمَاءِ لِيُمْنَعَ بِهِ الْكَلأُ
পরিচ্ছেদঃ ২২/৯. কুকুরের মূল্য, গণকের উপার্জন, ব্যভিচারিণী মহিলার পারিশ্রমিক হারাম।
১০১০. আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিতোষিক (গ্রহণ করা) হতে নিষেধ করেছেন।
تحريم ثمن الكلب وحلوان الكاهن ومهر البغيّ
حديث أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهى عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ وَمَهْرِ الْبَغِيِّ وَحُلْوَانِ الْكَاهِنِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ।
১০১১. আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। ’রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করেছেন।
الأمر بقتل الكلاب
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِقَتْلِ الْكِلاَبِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ।
১০১২. ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর কিংবা পশু রক্ষাকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পোষে, সেই ব্যক্তির আমলেব সাওয়ার থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ কমে যায়।
الأمر بقتل الكلاب
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنِ اقْتَنَى كَلْبًا إِلاَّ كَلْبَ مَاشِيَةٍ، أَوْ ضَارٍ، نَقَصَ مِنْ عَمَلِهِ كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطَانِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ।
১০১৩. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শস্য ক্ষেতের পাহারা কিংবা পশুর হিফাযতের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশে কুকুর পোষে, প্রতিদিন তার নেক আমল হতে এক কীরাত পরিমাণ কমতে থাকবে।
الأمر بقتل الكلاب
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَمْسَك كَلْبًا فَإِنَّهُ يَنْقُصُ كُلَّ يَوْمٍ مِنْ عَمَلِهِ قِيرَاطٌ، إِلاَّ كَلْبَ حَرْثٍ أَوْ مَاشِيَةٍ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ।
১০১৪. সুফইয়ান ইবনু আবূ যুহাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি এমন কুকুর পোষে যা ক্ষেত ও গবাদি পশুর হিফাযতের কাজে লাগে না, প্রতিদিন তার নেক আমল হতে এক কীরাত পরিমাণ কমতে থাকে।
الأمر بقتل الكلاب
حديث سُفْيَانَ بْنِ أَبِي زُهَيْرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنِ اقْتَنَى كَلْبًا لاَ يُغْنِي عَنْهُ زَرْعًا وَلاَ ضَرْعًا، نَقَصَ كلَّ يَوْمٍ مِنْ عَمَلِهِ قِيرَاطٌ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১১. শিঙ্গাওয়ালার পারিশ্রমিক হালাল।
১০১৫. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁকে শিঙ্গা লাগানোর পারিশ্রমিক দানের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়েছেন। আবু তাইবা তাঁকে শিঙ্গা লাগায়। এরপর তিনি তাকে দু’ সা খাদ্যবস্তু প্রদান করেন। সে তার মালিকের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করলে তারা তার থেকে পারিশ্রমিকের পরিমাণ লাঘব করে দেয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমরা যে সকল জিনিসের দ্বারা চিকিৎসা কর, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হল শিঙ্গা লাগানো এবং সামুদ্রিক চন্দন কাঠ ব্যবহার করা।
حل أجرة الحجامة
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ أَجْرِ الْحَجَّامِ، فَقَالَ: احْتَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَجَمَهُ أَبُو طَيْبَةَ، وَأَعْطَاهُ صَاعَيْنِ مِنْ طَعَامٍ، وَكَلَّمَ مَوَالِيَهُ فَخَفَّفوا عَنْهُ وَقَالَ: إِنَّ أَمْثَلَ مَا تَدَاوَيْتُمْ بِهِ الْحِجَامَةُ وَالْقُسْطُ الْبَحْرِيُّ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১১. শিঙ্গাওয়ালার পারিশ্রমিক হালাল।
১০১৬. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়ে নিয়েছেন এবং যে শিঙ্গা লাগিয়ে দিয়েছে সে ব্যক্তিকে পারিশ্রমিক দিয়েছেন আর তিনি (শ্বাস দ্বারা) নাকে ঔষধ টেনে নিয়েছেন।
حل أجرة الحجامة
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَجَمَ، وَأَعْطَى الْحَجَّامَ أَجْرَهُ وَاسْتَعَطَ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১২. মাদক দ্রব্যের ক্ৰয়-বিক্ৰয় হারাম।
১০১৭. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সূরা বাকারাহ’র সুদ সম্পৰ্কীয় আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে গিয়ে সে সব আয়াত সাহাবীগণকে পাঠ করে শুনালেন। অতঃপর তিনি মদের ব্যবসা হারাম করে দিলেন।
تحريم بيع الخمر
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: لَمَّا أُنْزِلَ الآيَاتُ مِنْ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي الرِّبَا، خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَرَأَهُنَّ عَلَى النَّاسِ، ثُمَّ حَرَّمَ تِجَارَةَ الْخَمْرِ
পরিচ্ছেদঃ ২২/১৩. মাদক দ্রব্যের ক্ৰয়-বিক্ৰয়, মৃত জন্তু, শুকর ও মূর্তি বিক্রি হারাম।
১০১৮. জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মক্কাহ বিজয়ের বছর মক্কাহ’য় অবস্থানকালে বলতে শুনেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল শরাব, মৃত জন্তু, শূকর ও মূৰ্তি কেনা-বেচা হারাম করে দিয়েছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! মৃত জন্তুর চর্বি সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তা দিয়ে তো নৌকায় প্রলেপ দেয়া হয় এবং চামড়া তৈলাক্ত করা হয় আর লোক তা দ্বারা চেরাগ জ্বালিয়ে থাকে। তিনি বললেন, না, তাও হারাম। তারপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা ইয়াহুদীদের বিনাশ করুন। আল্লাহ যখন তাদের জন্য মৃতের চর্বি হারাম করে দেন, তখন তারা তা গলিয়ে বিক্রি করে মূল্য ভোগ করে।
تحريم بيع الخمر والميتة والخنزير والأصنام
حديث جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ، عَامَ الْفَتْحِ، وَهُوَ بِمَكَّةَ: إِنَّ اللهَ وَرَسُولَهُ حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ وَالْمَيْتَةِ وَالْخِنْزِيرِ وَالأَصْنَامِ فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ شُحُومَ الْمَيْتَةِ فَإِنَّهَا يُطْلَى بِهَا السُّفُنُ، وَيُدْهَنُ بِهَا الْجُلُودُ، وَيَسْتَصْبِحُ بِهَا النَّاسُ فَقَالَ: لاَ، هُوَ حَرَامٌ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عِنْدَ ذلِكَ: قَاتَلَ اللهُ الْيهُودَ، إِنَّ اللهَ لَمَّا حَرَّمَ شُحُومَهَا جَمَلُوهُ ثُمَّ بَاعُوهُ فَأَكَلُوا ثَمَنَهُ