পরিচ্ছেদঃ ১৮/১. কোন ঋতুবতী মহিলাকে তার বিনা অনুমতিতে ত্বলাক দেয়া হারাম, যদি কেউ তার বিপরীত করে তাহলে ত্বলাক হয়ে যাবে এবং তাকে তা ফিরিয়ে নিতে আদেশ করতে হবে।
৯৩৬. আবদুল্লাহ্ ইবন ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় ত্বলাক (তালাক) দেন। উমার ইবন খাত্তাব (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে এবং নিজের কাছে রেখে দেয় যতক্ষণ না সে মহিলা পবিত্র হয়ে আবার ঋতুবতী হয় এবং আবার পবিত্র হয়। অতঃপর সে যদি ইচ্ছে করে, তাকে রেখে দিবে আর যদি ইচ্ছে করে তবে সহবাসর পূর্বে তাকে ত্বলাক (তালাক) দেবে। আর এটাই ত্বলাক (তালাক)ের নিয়ম, যে নিয়মে আল্লাহ্ তা’আলা স্ত্রীদের ত্বলাক (তালাক) দেয়ার বিধান দিয়েছেন।
تحريم طلاق الحائض بغير رضاها وأنه لو خالف وقع الطلاق ويؤمر برجعتها
حديث ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذلِكَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مُرْه فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ لِيُمْسِكْهَا حَتَّى تَطْهُرَ، ثُمَّ تَحِيضَ، ثُمَّ تَطْهُرَ، ثُمَّ إِنْ شَاءَ أَمْسَكَ بَعْدُ، وَإِنْ شَاءَ طَلَّقَ قَبْلَ أَنْ يَمَسَّ؛ فَتِلْكَ الْعِدَّةُ الَّتِي أَمَرَ اللهُ أَنْ تُطَلَّقَ لَهَا النِّسَاءُ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/১. কোন ঋতুবতী মহিলাকে তার বিনা অনুমতিতে ত্বলাক দেয়া হারাম, যদি কেউ তার বিপরীত করে তাহলে ত্বলাক হয়ে যাবে এবং তাকে তা ফিরিয়ে নিতে আদেশ করতে হবে।
৯৩৭. ইউনুস ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ’উমারকে (হায়িয অবস্থায় ত্বলাক (তালাক) দেয়া সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু উমার (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়িয অবস্থায় ত্বলাক (তালাক) দিলে, ’উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে আদেশ দেন। এরপর বলেনঃ ইদ্দাতের সময় আসলে সে ত্বলাক (তালাক) দিতে পারে। রাবী বলেন, আমি বললাম, এ ত্বলাক (তালাক) কি হিসাবে ধরা হবে? ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেনঃ তবে কি মনে করছ, যদি সে অক্ষম হয় বা বোকামী করে। (তাহলে দায়ী কে?)।
تحريم طلاق الحائض بغير رضاها وأنه لو خالف وقع الطلاق ويؤمر برجعتها
حديث ابْنِ عُمَرَ عَنْ يُونُسَ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ: سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ؛ فَقَالَ طَلَّقَ ابْنُ عُمَرَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ، فَسَأَلَ عُمَرُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَرَهُ أَنْ يُرَاجِعَهَا، ثُمَّ يُطَلِّقَ مِنْ قُبُلِ عِدَّتِهَا؛ قُلْتُ: فَتَعْتَدُّ بِتِلْكَ التَّطْلِيقَةِ قَالَ: أَرَأَيْتَ إِنْ عَجَزَ وَاسْتَحْمَقَ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৩. ঐ ব্যক্তির উপর কাফফারাহ ওয়াজিব যে তার স্ত্রীকে হারাম করলে যদিও সে ত্বলাকের নিয়্যাত করেনি।
৯৩৮. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এরূপ হারাম করে নেয়ার ক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবে। ইবন আব্বাস (রাঃ) এ-ও বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম নমুনা।
وجوب الكفارة على من حرّم امرأته ولم ينو الطلاق
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: فِي الْحَرَامِ يُكَفِّرُ؛ وَقَالَ: (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ)
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৩. ঐ ব্যক্তির উপর কাফফারাহ ওয়াজিব যে তার স্ত্রীকে হারাম করলে যদিও সে ত্বলাকের নিয়্যাত করেনি।
৯৩৯. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাইনাব বিনত জাহশের নিকট কিছু বিলম্ব করতেন এবং সেখানে তিনি মধু পান করতেন। আমি ও হাফসাহ পরামর্শত্রুমে ঠিক করলাম যে, আমাদের মধ্যে যার কাছেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করবেন, সেই যেন বলি- আমি আপনার থেকে মাগাফীর-এর গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন। এরপর তিনি তাদের একজনের নিকট প্রবেশ করলে তিনি তাঁকে অনুরূপ বললেন। তিনি বললেনঃ বরং আমি যাইনাব বিনত জাহশের নিকট মধু পান করেছি। আমি পুনঃ এ কাজ করব না। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় (মহান আল্লাহর বাণী) “হে নবী! এমন বস্তুকে হারাম করছেন কেন, যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন ... যদি তোমরা উভয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা কর” পর্যন্ত। এখানে ’আয়িশাহ ও হাফসাহ (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। আর আল্লাহর বাণী যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের একজনকে গোপনে কিছু বলেছিলেন- ’বরং আমি মধু পান করেছি’-এ কথার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়।
وجوب الكفارة على من حرّم امرأته ولم ينو الطلاق
حديث عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَمْكُثُ عِنْدَ زَيْنَبَ ابْنَةِ جَحْشٍ وَيَشْرَبُ عِنْدَهَا عَسَلاً، فَتَوَاصَيْتُ أَنَا وَحَفْصَةُ أَنَّ أَيَّتَنَا دَخَلَ عَلَيْهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلْتَقُلْ: إِنِّي أَجِدُ مِنْكَ رِيحَ مَغَافِيرَ، أَكَلْتَ مَغَافِيرَ فَدَخَلَ عَلَى إِحْدَاهُمَا، فَقَالَتْ لَهُ ذلِكَ؛ فَقَالَ: لاَ بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً عِنْدَ زَيْنَبَ ابْنَةِ جَحْشٍ، وَلَنْ أَعُودَ لَهُ فَنَزَلَتْ (يأَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكَ) إِلَى (إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللهِ) لِعَائِشَةَ وَحَفْصَةَ وَإِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ إِلَى بَعْضِ أَزْوَاجِهِ لِقَوْلِهِ: بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৩. ঐ ব্যক্তির উপর কাফফারাহ ওয়াজিব যে তার স্ত্রীকে হারাম করলে যদিও সে ত্বলাকের নিয়্যাত করেনি।
৯৪০. আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু ও হালুয়া (মিষ্টি) পছন্দ করতেন। আসরের সালাত শেষে তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের নিকট যেতেন। এরপর তাঁদের একজনের ঘনিষ্ঠ হতেন। একদা তিনি হাফসাহ বিনত উমারের কাছে গেলেন এবং অন্যান্য দিন অপেক্ষা অধিক সময় অতিবাহিত করলেন। এতে আমি ঈর্ষা করলাম। পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে অবগত হলাম যে, তাঁর (হাফসার) গোত্রের জনৈকা মহিলা তাঁকে এক পাত্র মধু হাদিয়া দিয়েছিল। তা থেকেই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কিছু পান করিয়েছেন। আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! আমরা এজন্য একটি ফন্দি আঁটব।
এরপর আমি সাওদাহ্ বিনত যাম’আকে বললাম, তিনি (আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তো এখনই তোমার কাছে আসছেন, তিনি তোমার নিকটবর্তী হলেই তুমি বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি নিশ্চয়ই তোমাকে বলবেন, ’না’। তখন তুমি তাকে বলবে, তবে আমি কিসের গন্ধ পাচ্ছি? তিনি বলবেনঃ হাফসাহ আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। তুমি তখন বলবে, এর মৌমাছি মনে হয় উরফুত (এক জাতীয় গাছ) নামক বৃক্ষ থেকে মধু আহরণ করেছে। আমিও তাই বলব। সফীয়্যাহ! তুমিও তাই বলবে।
আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ সাওদা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! তিনি দরজার নিকট আসতেই আমি তোমার ভয়ে তোমার আদিষ্ট কাজ পালনে প্রস্তুত হলাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর নিকটবর্তী হলেন, তখন সাওদা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি বললেনঃ না। সাওদা বললেন, তবে আপনার নিকট হতে এ কিসের গন্ধ পাচ্ছি? তিনি বললেনঃ হাফসাহ আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। সাওদা বললেন, এ মধু মক্ষিকা ’উরফুত’ নামক বৃক্ষের মধু আহরণ করেছে। এরপর তিনি ঘুরে যখন আমার কাছে এলেন, তখন আমিও অনুরূপ বললাম। তিনি সফীয়ার কাছে গেলে তিনিও এরূপ উক্তি করলেন।
পরদিন যখন তিনি হাফসার কাছে গেলেন তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে মধু পান করার কি? উত্তরে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এর আমার কোন প্রয়োজন নেই। ’আয়িশাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, সাওদা বললেনঃ আল্লাহর কসময় আমরা তাঁকে বিরত রেখেছি। আমি বললাম চুপ কর।
وجوب الكفارة على من حرّم امرأته ولم ينو الطلاق
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يُحِبُّ الْعَسَلَ وَالْحَلْوَاءَ، وَكَانَ إِذَا انْصَرَفَ مِنَ الْعَصْرِ دَخَلَ عَلَى نِسَائِهِ، فَيَدْنُو مِنْ إِحْدَاهُنَّ، فَدَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ بِنْتِ عُمَرَ، فَاحْتَبَسَ أَكْثَرَ مَا كَانَ يَحْتَبِسُ، فَغِرْتُ، فَسَأَلْتُ عَنْ ذَلِكَ، فَقِيلَ لِي، أَهْدَتْ لَهَا امْرَأَةٌ مِنْ قَوْمِهَا عُكَّةً مِنْ عَسَلٍ، فَسَقَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهُ شَرْبَةً فَقُلْتُ: أَمَا وَاللهِ لَنَحْتَالَنَّ لَهُ فَقُلْتُ لِسَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ أَنَّهُ سَيَدْنُو مِنْكِ، فَإِذَا دَنَا مِنْكِ فَقُولِي: أَكَلْتَ مَغَافِيرَ فَإِنَّهُ سَيَقُولُ لَكِ: لاَ فَقُولِي لَهُ: مَا هذِهِ الرِّيحُ الَّتِي أَجِدُ مِنْكَ فَإِنَّهُ سَيَقُولُ لَكِ: سَقَتْنِي حَفْصَةُ شَرْبَةَ عَسَلٍ، فَقُولِي لَهُ: جَرَسَتْ نَحْلُهُ الْعُرْفُطَ، وَسَأَقُولُ ذَلِكَ، وَقُولِي أَنْتِ يَا صَفِيَّةُ ذَاك
قَالَتْ: تَقُولُ سَوْدَةُ فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ قَامَ عَلَى الْبَابِ فَأَرَدْتُ أَنْ أُبَادِيَهُ بِمَا أَمَرْتِنِي بِهِ فَرَقًا مِنْكِ فَلَمَّا دَنَا مِنْهَا، قَالَتْ لَهُ سَوْدَةُ: يَا رَسُولَ اللهِ أَكَلْتَ مَغَافِيرَ قَالَ: لاَ قَالَتْ: فَمَا هذِهِ الرِّيحُ الَّتِي أَجِدُ مِنْكَ قَالَ: سَقَتْنِي حَفْصَةُ شَرْبَةَ عَسَلٍ، فَقَالَتْ: جَرَسَتْ نَحْلُهُ الْعُرْفُطَ فَلَمَّا دَارَ إِلَيَّ، قُلْتُ لَهُ نَحْوَ ذَلِكَ؛ فَلَمَّا دَارَ إِلَى صَفِيَّةَ قَالَتْ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ فَلَمَّا دَارَ إِلَى حَفْصَةَ، قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلاَ أَسْقِيكَ مِنْهُ قَالَ: لاَ حَاجَةَ لِي فِيهِ
قَالَتْ: تَقُولُ سَوْدَةُ وَاللهِ لَقَدْ حَرَمْنَاهُ؛ قُلْتُ لَهَا: اسْكُتِى
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪. যদি কেউ তার স্ত্রীকে ত্বলাকের ইখতিয়ার দেয় তাহলে সেটা ত্বলাক হবে না নিয়্যাত করা ব্যতীত।।
৯৪১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাঁর সহধর্মিণীদের ব্যাপারে ইখতিয়ার দেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, তখন তিনি প্রথমে আমাকে বললেন, তোমাকে একটি বিষয় সম্পর্কে বলব। তাড়াহুড়াে না করে তুমি তোমার আব্বা ও আম্মার সঙ্গে পরামর্শ করে নিবে। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি অবশ্যই জানতেন, আমার আব্বা-আম্মা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলবেন না। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ “হে নবী। আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর ..... মহা প্রতিদান পর্যন্ত। ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এর মধ্যে আমার আব্বা-আম্মার সাথে পরামর্শের কী আছে? আমি তো আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং আখিরাতের জীবন চাই। ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য সহধর্মিণী আমার অনুরূপ জবাব দিলেন।
بيان أن تخيير امرأته لا يكون طلاقا إِلا بالنية
حديث عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: لَمَّا أُمِرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتَخْيِيرِ أَزْوَاجِهِ، بَدَأَ بِي؛ فَقَالَ: إِنِّي ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلاَ عَلَيْكِ أَنْ لاَ تَعْجَلِي حَتَّى تَسْتَأْمِرِى أَبَوَيْكِ، قَالَتْ: وَقَدْ عَلِمَ أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ يَكُونَا يَأَمُرَانِي بِفِرَاقِهِ قَالَتْ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ الله جَلَّ ثَنَاؤُهُ قَالَ (يأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ َلأزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا) إِلَى (أَجْرًا عَظِيمًا) قَالَتْ: فَقُلْتُ فَفِي أَيِّ هذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَيَّ، فَإِنِّي أُرِيدُ الله وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ الآخِرَةَ؛ قَالَتْ: ثُمَّ فَعَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ مَا فَعَلْتُ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪. যদি কেউ তার স্ত্রীকে ত্বলাকের ইখতিয়ার দেয় তাহলে সেটা ত্বলাক হবে না নিয়্যাত করা ব্যতীত।।
৯৪২. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সঙ্গে অবস্থানের পালার ব্যাপারে আমাদের থেকে অনুমতি চাইতেন এ আয়াত নাযিল হওয়ার পরও, আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে আপনার নিকট হতে দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছে আপনার নিকট স্থান দিতে পারেন এবং আপনি যাকে দূরে রেখেছেন তাকে কামনা করলে আপনার কোন অপরাধ নেই। এ আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর মুআয (রাঃ) বলেন, আমি ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এর উত্তরে কি বলতেন? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতাম, এ বিষয়ের অধিকার যদি আমার থেকে থাকে তাহলে আমি হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ব্যাপারে কাউকে অগ্রাধিকার দিতে চাইনা।
بيان أن تخيير امرأته لا يكون طلاقا إِلا بالنية
حديث عَائِشَةَ عَنْ مُعَاذَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَسْتَأْذِنُ فِي يَوْمِ الْمَرْأَةِ مِنَّا بَعْدَ أَنْ أُنْزِلَتْ هذِهِ الآيَةُ (تُرْجِي مَنْ تَشَاءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِي إِلَيْكَ مَنْ تَشَاءُ وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكَ) فَقُلْتُ لَهَا مَا كُنْتِ تَقُولِينَ قَالَتْ: كُنْتُ أَقُولُ لَهُ: إِنْ كَانَ ذَاكَ إِلَيَّ فَإِنِّي لاَ أُرِيدُ، يَا رَسُولَ اللهِ أَنْ أُوثِرَ عَلَيْكَ أَحَدًا
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪. যদি কেউ তার স্ত্রীকে ত্বলাকের ইখতিয়ার দেয় তাহলে সেটা ত্বলাক হবে না নিয়্যাত করা ব্যতীত।।
৯৪৩. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিলে আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকেই গ্রহণ করলাম। আর এতে আমাদের ত্বলাক (তালাক) সাব্যস্ত হয়নি।
بيان أن تخيير امرأته لا يكون طلاقا إِلا بالنية
حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: خَيَّرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاخْتَرْنَا الله وَرَسُولَهُ، فَلَمْ يَعُدَّ ذَلِكَ عَلَيْنَا شَيْئًا
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৫. ঈলা ও স্ত্রী সংসৰ্গ হতে দূরে থাকা এবং তাদেরকে ইখতিয়ার দেয়া এবং আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ “যদি তার বিরুদ্ধে তোমরা একে অপরকে সাহায্য কর।” (সুরাহ আল বাক্বারাহ ২/২২৬)
৯৪৪. আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-কে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আমি এক বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তি প্রভাবের ভয়ে আমি তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে সক্ষম হইনি। অবশেষে তিনি হজ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হলে, আমিও তাঁর সঙ্গে গেলাম। প্রত্যাবর্তনের সময় আমরা যখন কোন একটি রাস্তা অতিক্রম করছিলাম, তখন তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য একটি পিলু গাছের আড়ালে গেলেন। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি প্রয়োজন সেরে না আসা পর্যন্ত আমি সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলাম। এরপর তাঁর সঙ্গে পথ চলতে চলতে বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কোন্ দু’জন তার বিপক্ষে একমত হয়ে পরস্পর একে অন্যকে সহযোগিতা করেছিলেন? তিনি বললেন, তাঁরা দু’জন হল হাফসাহ ও ’আয়িশাহ (রাঃ)।
ইবনু আব্বাস বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর শপথ! আমি আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার জন্য এক বছর যাবত ইচ্ছে করেছিলাম। কিন্তু আপনার ভয়ে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, অমন করবে না। যে বিষয়ে তুমি মনে করবে যে, আমি তা জানি, তা আমাকে জিজ্ঞেস করবে। এ বিষয়ে আমার জানা থাকলে আমি তোমাকে জানিয়ে দেব। তিনি বলেন, এরপর ’উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! জাহিলী যুগে মহিলাদের কোন অধিকার আছে বলে আমরা মনে করতাম না। অবশেষে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের সম্পর্কে যে বিধান নাযিল করার ছিল তা নাযিল করলেন এবং তাদের হক হিসাবে যা নির্দিষ্ট করার ছিল তা নির্দিষ্ট করলেন।
তিনি বলেন, একদা আমি কোন এক বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছিলাম, এমতাবস্থায় আমার স্ত্রী আমাকে বললেন, কাজটি যদি তুমি এভাবে এভাবে কর (তাহলে ভাল হবে)। আমি বললাম, তোমার কী প্রয়োজন? এবং আমার কাজে তোমার এ অনধিকার চর্চা কেন। সে আমাকে বলল, হে খাত্তাবের বেটা! কী আশ্চর্য, তুমি চাও না যে, আমি তোমার কথার উত্তর দান করি অথচ তোমার কন্যা হাফসা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথার পিঠে কথা বলে থাকে। এমনকি একদিন তো সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রাগান্বিত করে ফেলে।
এ কথা শুনে ’উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং চাদরখানা নিয়ে তার বাড়িতে চলে গেলেন। তিনি তাকে বললেন, বেটী! তুমি নাকি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথার প্রতি-উত্তর করে থাক। ফলে তিনি দিনভর মনঃক্ষুন্ন থাকেন। হাফসাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা তো অবশ্যই তাঁর কথার জবাব দিয়ে থাকি। ’উমার (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, জেনে রাখ! আমি তোমাকে আল্লাহর শাস্তি এবং রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসন্তুষ্টি সম্পর্কে সতর্ক করছি। রূপ-সৌন্দর্যের কারণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালবাসা যাকে গৰ্বিতা করে রেখেছে, সে যেন তোমাকে প্রতারিত না করতে পারে। এ কথা বলে ’উমার মত ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে বোঝাচ্ছিলেন।
উমার (রাঃ) বলেন, এরপর আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম ও এ বিষয়ে তার সাথে কথাবার্তা বললাম। কারণ, তার সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তখন উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, হে খাত্তাবের বেটা! কী আশ্চর্য, তুমি প্রত্যেক ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করছ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছ। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে এমন কঠোরভাবে ধরলেন যে, আমার গোস্বাকে একেবারে শেষ করে দিলেন। এরপর আমি তার কাছ থেকে চলে আসলাম।
আমার একজন আনসার বন্ধু ছিল। যদি আমি কোন মজলিশ থেকে অনুপস্থিত থাকতাম তাহলে সে এসে মজলিশের খবর আমাকে জানাত। আর সে যদি অনুপস্থিত থাকত তাহলে আমি এসে তাকে মজলিশের খবর জানাতাম। সে সময় আমরা গাস্সানী বাদশাহর আক্রমণের আশংকা করছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে, সে আমাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য যাত্রা করেছে। তাই আমাদের হৃদয়-মন এ ভয়ে শংকিত ছিল।
এমন সময় আমার আনসার বন্ধু এসে দরজায় করাঘাত করে বললেন, দরজা খুলুন, দরজা খুলুন। আমি বললাম, গাস্সানীরা এসে পড়েছে নাকি? তিনি বললেন, বরং এর চেয়েও সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে গেছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহধর্মিণীদের থেকে পৃথক হয়ে গেছেন। তখন আমি বললাম, হাফসাহ ও ’আয়িশাহর নাক ধূলায় ধূসরিত হোক। এরপর আমি কাপড় নিয়ে বেরিয়ে চলে আসলাম। গিয়ে দেখলাম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি উঁচু টঙে অবস্থান করছেন। সিঁড়ি বেয়ে সেখানে পৌছতে হয়। সিঁড়ির মুখে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একজন কালো গোলাম বসা ছিল।
আমি বললাম, বলুন, ’উমার ইবনু খাত্তাব এসেছেন। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অনুমতি দিলেন, আমি তাঁকে এসব ঘটনা বললাম, এক পর্যায়ে আমি যখন উম্মু সালামার কপোপকথন পর্যন্ত পৌছলাম তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসলেন। এ সময় তিনি একটা চাটাইয়ের উপর শুয়ে ছিলেন। চাটাই এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাঝে আর কিছুই ছিল না। তার মাথার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার একটি বালিশ এবং পায়ের কাছে ছিল সল্ম বৃক্ষের পাতার একটি স্থূপ ও মাথার উপর লটকানো ছিল চামড়ার একটি মশক। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একপার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললে তিনি বললেন, তুমি কেন কাঁদছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কিসরা ও কায়সার পার্থিব ভােগবিলাসের মধ্যে ডুবে আছে, অথচ আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি পছন্দ করো না যে, তারা দুনিয়া লাভ করুক, আর আমরা আখিরাত লাভ করি।
في الإيلاء واعتزال النساء وتخييرهن وقوله تعالى (وإِن تظاهرا عليه)
حديث عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: مَكَثْتُ سَنَةً أُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ عَنْ آيَةٍ، فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَسْأَلَهُ هَيْبَةً لَهُ؛ حَتَّى خَرَجَ حَاجًّا فَخَرَجْتُ مَعَهُ، فَلَمَّا رَجَعْتُ، وَكُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيقِ، عَدَلَ إِلَى الأَرَاكِ لِحَاجَةٍ لَهُ، قَالَ: فَوَقَفْتُ لَهُ حَتَّى فَرَغَ، ثُمَّ سِرْتُ مَعَهُ فَقُلْتُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَنِ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَزْوَاجِهِ فَقَالَ: تِلْكَ حَفْصَةُ وَعَائِشَةُ قَالَ: فَقُلْتُ: وَاللهِ إِنْ كُنْتُ لأُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَكَ عَنْ هذَا مُنْذُ سَنَةٍ فَمَا أَسْتَطِيعُ هَيْبَةً لَكَ قَالَ: فَلاَ تَفْعَلْ؛ مَا ظَنَنْتَ أَنَّ عِنْدِي مِنْ عِلْمٍ فَاسْأَلْنِي، فَإِنْ كَانَ لِي عِلْمٌ خَبَّرْتُكَ به قَالَ ثُمَّ قَالَ عُمَرُ: وَاللهِ إِنْ كُنَّا فِي الْجَاهِلَيَّةِ مَا نَعُدُّ لِلنِّسَاءِ أَمْرًا حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ فِيهِنَّ مَا أَنْزَلَ، وَقَسَمَ لَهُنَّ مَا قَسَمَ؛ قَالَ: فَبَيْنَا أَنَا فِي أَمْرٍ أَتَأَمَّرُهُ، إِذْ قَالَتْ امْرَأَتِي: لَوْ صَنَعْتَ كَذَا وَكَذا قَالَ فَقُلْتُ لَهَا: مَا لَكِ وَلِمَا ههُنَا، فِيمَا تَكَلُّفُكِ فِي أَمْرٍ أُرِيدُهُ فَقَالَتْ لِي: عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ مَا تُرِيدُ أَنْ تُرَاجَعَ أَنْتَ، وَإِنَّ ابْنَتَكَ لَتُرَاجِعُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَامَ عُمَرُ فَأَخَذَ رِدَاءَهُ مَكَانَهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ؛ فَقَالَ لَهَا: يَا بُنَيَّةُ إِنَّكِ لَتُرَاجِعِينَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَالَتْ حَفْصَةُ: وَاللهِ إِنَّا لَنُرَاجِعُهُ فَقُلْتُ: تَعْلَمِينَ أَنِّي أُحَذِّرُكِ عُقُوبَةَ اللهِ وَغَضَبَ رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَا بُنَيَّةُ لاَ يَغُرَّنَّكَ هذِهِ الَّتي أَعْجَبَهَا حُسْنُهَا حُبُّ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهَا (يُريدُ عَائِشَةَ)
قَالَ، ثُمَّ خَرَجْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَى أُمَّ سَلَمَةَ، لِقَرَابَتِي مِنْهَا، فَكَلَّمْتُهَا؛ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ: عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ دَخَلْتَ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى تَبْتَغِي أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَزْوَاجِهِ فَأَخَذَتْنِي، وَاللهِ أَخْذًا كَسَرَتْنِي عَنْ بَعْضِ مَا كُنْتُ أَجِدُ، فَخَرَجْتُ مِنْ عِنْدِهَا
وَكَانَ لِي صَاحِبٌ مِنَ الأَنْصَارِ، إِذَا غِبْتُ أَتَانِي بِالخَبَرِ، وَإِذَا غَابَ كُنْتُ أَنَا آتِيهِ بِالْخَبَرِ؛ وَنَحْنُ نَتَخَوَّفُ مَلِكًا مِنْ مُلُوكِ غَسَّانَ ذُكِرَ لَنَا أَنَّهُ يُرِيدُ أَنْ يَسيرَ إِلَيْنَا، فَقَدِ امْتَلأَتْ صُدُورُنَا مِنْهُ فَإِذَا صَاحِبِي الأَنْصَارِيُّ يَدُقُّ الْبَابَ؛ فَقَالَ: افْتَحْ افْتَحْ فَقُلْتُ: جَاءَ الْغَسَّانِيُّ فَقَالَ: بَلْ أَشَدُّ مِنْ ذَلِكَ، اعْتَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَزْوَاجَهُ؛ فَقُلْتُ: رَغَمَ أَنْفُ حَفْصَةَ وَعائِشَةَ فَأَخَذْتُ ثَوْبِي فَأَخْرُجُ حَتَّى جِئْتُ فَإِذَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَشْرُبَةٍ لَهُ يَرْقَى عَلَيْهَا بِعَجَلَةٍ، وَغُلاَمٌ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْوَدُ عَلَى رَأْسِ الدَّرَجَةِ؛ فَقُلْتُ لَهُ: قُلْ هذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، فَأَذِنَ لِي قَالَ عُمَرُ: فَقَصَصْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هذَا الْحَدِيثَ، فَلَمَّا بَلَغْتُ حَدِيثَ أُمِّ سَلَمَةَ تَبَسَّمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِنَّهُ لَعَلَى حَصِيرٍ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ شَيْءٌ، وَتَحْتَ رَأْسِهِ وِسَادَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ، وَإِنَّ عِنْدَ رِجْلَيْهِ قَرَظًا مَصْبُوبًا، وَعِنْدَ رَأْسِهِ أَهَبٌ مُعَلَّقَةٌ؛ فَرَأَيْتُ أَثَرَ الْحَصِيرِ فِي جَنْبِهِ، فَبَكَيْتُ؛ فَقَالَ: مَا يُبْكِيكَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ كِسْرى وَقَيْصَرَ فِيمَا هُمَا فِيهِ، وَأَنْتَ رَسُولُ اللهِ فَقَالَ: أَمَا تَرْضى أَنْ تَكُونَ لَهُمُ الدُّنْيا وَلَنَا الآخِرَةُ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৫. ঈলা ও স্ত্রী সংসৰ্গ হতে দূরে থাকা এবং তাদেরকে ইখতিয়ার দেয়া এবং আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ “যদি তার বিরুদ্ধে তোমরা একে অপরকে সাহায্য কর।” (সুরাহ আল বাক্বারাহ ২/২২৬)
৯৪৫. আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বহুদিন ধরে উৎসুক ছিলাম যে, আমি উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করব, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবিগণের মধ্যে কোন্ দু’জন সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেছেনঃ "তোমরা দু’জন যদি আল্লাহর নিকট তওবা কর (তবে এটা উত্তম)। কেননা, তোমাদের মন সঠিক পথ থেকে সরে গেছে।" এরপর একবার তিনি [উমার (রাঃ)] হাজ্জের জন্য রওয়ানা হলেন এবং আমিও তাঁর সঙ্গে হজ্জে গেলাম। (ফিরে আসার পথে) তিনি ইতিনজার জন্য রাস্তা থেকে সরে গেলেন। আমি পানি পূর্ণ পাত্র হাতে তাঁর সাথে গেলাম। তিনি ইতিনজা করে ফিরে এলে আমি ওযূর পানি তাঁর হাতে ঢেলে দিতে লাগলাম।
তিনি যখন ওযূ করছিলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আমীরুল মু’মিনী! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণীগণের মধ্যে কোন্ দু’জন, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ "তোমরা দু’জন যদি আল্লাহর কাছে তওবা কর (তবে আমাদের জন্য উত্তম), কেননা, তোমাদের মন সঠিক পথ থেকে সরে গেছে।" জবাবে তিনি বললেন, হে ইবনু ’আব্বাস! আমি তোমার প্রশ্ন শুনে অবাক হচ্ছি। তারা দুজন তো আয়িশাহ (রাঃ) ও হাফসাহ (রাঃ)।
এরপর ’উমার (রাঃ) ঘটনাটি বর্ণনা করলেন, “আমি এবং আমার একজন আনসারী প্রতিবেশী যিনি উমাইয়াহ ইবনু যায়দ গোত্রের লোক এবং তারা মদীনাহর উপকণ্ঠে বসবাস করত। আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে পালাক্রমে সাক্ষাত করতাম। সে একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে যেত, আমি আর একদিন যেতাম। যখন আমি দরবারে যেতাম, ঐ দিন দরবারে ওয়াহী অবতীর্ণসহ যা ঘটত সবকিছুর খবর আমি তাকে দিতাম এবং সেও অনুরূপ খবর আমাকে দিত। আমরা কুরাইশরা নিজেদের স্ত্রীগণের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে রেখেছিলাম।
কিন্তু আমরা যখন আনসারদের মধ্যে এলাম, তখন দেখতে পেলাম, তাদের স্ত্রীগণ তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে এবং তাদের ওপর কর্তৃত্ব করে চলেছে। সুতরাং আমাদের স্ত্রীরাও তাদের দেখাদেখি সেরূপ ব্যবহার করতে লাগল। একদিন আমি আমার স্ত্রীর প্রতি নারাজ হলাম এবং তাকে উচ্চস্বরে কিছু বললাম, সেও প্রতি-উত্তর দিল। আমার কাছে এ রকম প্ৰতি-উত্তর দেয়াটা অপছন্দ হল। সে বলল, আমি আপনার কথার পাল্টা উত্তর দিচ্ছি এতে অবাক হচ্ছেন কেন? আল্লাহর কসম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবিগণ তাঁর কথার মুখে মুখে পাল্টা উত্তর দিয়ে থাকেন এবং তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার একদিন এক রাত পর্যন্ত কথা না বলে কাটান।
(উমার (রাঃ) বলেন), এ কথা শুনে আমি ঘাবড়ে গেলাম এবং আমি বললাম, তাদের মধ্যে যারা এরূপ করেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরপর আমি আমার কাপড় পরিধান করলাম এবং আমার কন্যা হাফসার ঘরে প্রবেশ করলাম এবং বললামঃ হাফসা! তোমাদের মধ্য থেকে কারো প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সারা দিন রাত পর্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকেননি? সে উত্তর করল, হ্যাঁ। আমি বললাম, তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ। তোমরা কি এ ব্যাপারে ভীত হচ্ছাে না যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অসন্তুষ্টির কারণে আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট হয়ে যাবেন? পরিণামে তোমরা ধ্বংসের মধ্যে পড়ে যাবে। সুতরাং তুমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অতিরিক্ত কোন জিনিস দাবি করবে না এবং তাঁর কথার প্রতি-উত্তর করবে না এবং তার সাথে কথা বলা বন্ধ করবে না। তোমার যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয়, তবে আমার কাছে চেয়ে নেবে। আর তোমার সতীন তোমার চেয়ে অধিক রূপবতী এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিক প্রিয় তা যেন তোমাকে বিভ্রান্ত না করে। এখানে সতীন বলতে আয়িশাহ (রাঃ)-কে বোঝানো হয়েছে।
উমার (রাঃ) আরো বলেন, এ সময় আমাদের মধ্যে এ কথা ছড়িয়ে পড়েছিল যে, গাস্সানের শাসনকর্তা আমাদের ওপর আক্রমণ চালাবার উদ্দেশে তাদের ঘােড়াগুলোক প্রস্তুত করছে। আমার প্রতিবেশী আনসার তার পালার দিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত থেকে রাতে ফিরে এসে আমার দরজায় খুব জোরে করাঘাত করল এবং জিজ্ঞেস করল, আমি ঘরে আছি কিনা? আমি শংকিত অবস্থায় বেরিয়ে এলাম। সে বলল, আজ এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে। আমি বললাম, সেটা কী? গাস্সানিরা কি এসে গেছে? সে বলল, না তার চেয়েও বড় ঘটনা এবং তা ভয়ংকর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহধর্মিণীগণকে ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন। আমি বললাম, হাফসা তো ধ্বংস হয়ে গেল, ব্যর্থ হলো। আমি আগেই ধারণা করেছিলাম, খুব শীগগীরই এরকম একটা কিছু ঘটবে।
এরপর আমি পোশাক পরিধান করলাম এবং ফজরের সালাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আদায় করলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওপরের কামরায় (মাশরুবা) একাকী আরোহণ করলেন, আমি তখন হাফসার কাছে গেলাম এবং তাকে কাঁদতে দেখলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে এ ব্যাপারে পূর্বেই সতর্ক করে দেইনি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদের সকলকে ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন? সে বলল, আমি জানি না। তিনি ওখানে ওপরের কামরায় একাকী রয়েছেন।
আমি সেখান থেকে বেরিয়ে এসে মিম্বরের কাছে বসলাম। সেখানে কিছু সংখ্যক লোক বসা ছিল এবং তাদের মধ্যে অনেকেই কাঁদছিল। আমি তাদের কাছে কিছুক্ষণ বসলাম, কিন্তু আমি এ অবস্থা সহ্য করতে পারছিলাম না। সুতরাং যে ওপরের কামরায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবস্থান করছিলেন আমি সেই ওপরের কামরায় গেলাম এবং তাঁর হাবশী কালো খাদিমকে বললাম, তুমি কি উমারের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে যাবার অনুমতি এনে দেবে? খাদিমটি গেল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কথা বলল। ফিরে এসে উত্তর করল, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আপনার কথা বলেছি; কিন্তু তিনি নিরুত্তর আছেন। তখন আমি ফিরে এলাম এবং যেখানে লোকজন বসা ছিল সেখানে বসলাম। কিন্তু এ অবস্থা আমার কাছে অসহ্য লাগছিল। তাই আবার এসে খাদেমকে বললাম! তুমি কি উমরের জন্য অনুমতি এনে দিবে? সে প্রবেশ করল এবং ফিরে এসে বলল, আপনার কথা বলেছি কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থেকেছেন। তাই আমি আবার ফিরে এসে মিম্বরের কাছে ঐ লোকজনের সাথে বসলাম।
কিন্তু এ অবস্থা আমার কাছে অসহ্য লাগছিল। পুনরায় আমি খাদেমের কাছে গেলাম এবং বললাম, তুমি কি উমারের জন্য অনুমতি এনে দেবে? সে গেল এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে বলতে লাগল, আমি আপনার কথা উল্লেখ করলাম; কিন্তু তিনি নিরুত্তর আছেন। যখন আমি ফিরে যাবার উদ্যোগ নিয়েছি, এমন সময় খাদিমটি আমাকে ডেকে বলল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রবেশ করে দেখলাম, তিনি খেজুরের চাটাইর ওপর চাদরবিহীন অবস্থায় খেজুরের পাতা ভর্তি একটি বালিশে ভর দিয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর শরীরে পরিষ্কার চাটাইয়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। আমি তাঁকে সালাম করলাম এবং দাঁড়ানো অবস্থাতেই জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আপনার বিবিগণকে ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন? তিনি আমার দিকে চোখ ফিরিয়ে বললেন, না (অর্থাৎ ত্বলাক (তালাক) দেইনি)। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার।
এরপর আলাপটা নমনীয় করার উদ্দেশে দাঁড়িয়ে থেকেই বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি শোনেন তাহলে বলিঃ আমরা কুরাইশগণ, মহিলাদের ওপর আমাদের প্রতিপত্তি খাটাম; কিন্তু আমরা মদীনায় এসে দেখলাম, এখানকার পুরুষদের ওপর নারীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিদ্যমান। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আপনি আমার কথার দিকে একটু নজর দেন। আমি হাফসার কাছে গেলাম এবং আমি তাকে বললাম, তোমার সতীনের রূপবতী হওয়া ও রাসসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় পাত্রী হওয়া তোমাকে যেন ধোকায় না ফেলে। এর দ্বারা ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় মুচকি হাসলেন।
আমি তাঁকে হাসতে দেখে বসে পড়লাম। এরপর আমি তার ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম, আল্লাহর কসম, শুধুমাত্র তিনটি চামড়া ব্যতীত আর আমি তাঁর ঘরে উল্লেখযোগ্য কিছুই দেখতে পেলাম না। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! দোয়া করুন, আল্লাহ্ তা’আলা যাতে আপনার উম্মতদের সচ্ছলতা দান করেন। কেননা, পারস্য ও রোমানদের প্রাচুর্য দান করা হয়েছে এবং তাদের দুনিয়ার আরাম প্রচুর পরিমাণে দান করা হয়েছে; অথচ তারা আল্লাহর ইবাদাত করে না। এ কথা শুনে হেলান দেয়া অবস্থা থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোজা হয়ে বসে বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কি এখনো এ ধারণা পোষণ করছ? ওরা ঐ লোক, যারা উত্তম কাজের প্রতিদান এ দুনিয়ায় পাচ্ছে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমার ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। হাফসাহ (রাঃ) কর্তৃক ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে কথা ফাঁস করে দেয়ার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঊনত্রিশ দিন তার বিবিগণ থেকে আলাদা থাকেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমি এক মাসের মধ্যে তাদের কাছে যাব না তাদের প্রতি গোস্বার কারণে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে মৃদু ভর্ৎসনা করেন। সুতরাং যখন ঊনত্রিশ দিন হয়ে গেল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে গেলেন এবং তাকে দিয়েই শুরু করলেন। ’আয়িশাহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কমস করেছেন যে, একমাসের মধ্যে আমাদের কাছে আসবেন না; কিন্তু এখন তো উনত্রিশ দিনেই এসে গেলেন। আমি প্রতিটি দিন এক এক করে হিসাব করে রেখেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঊনত্রিশ দিনেও একমাস হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ মাস ২৯ দিনের ’আয়িশাহ (রাঃ) আরও বলেন, ঐ সময় আল্লাহ্ তাআলা ইখতিয়ারের (সূরাহ আহবের ২৮নং) আয়াত নাযিল করেন এবং তিনি তাঁর বিবিগণের মধ্যে আমাকে দিয়েই শুরু করেন এবং আমি তাঁকেই গ্রহণ করি।এরপর তিনি অন্য বিবিগণের অভিমত চাইলেন। সকলেই তাই বলল, যা আয়িশাহ (রাঃ) বলেছিলেন।
في الإيلاء واعتزال النساء وتخييرهن وقوله تعالى (وإِن تظاهرا عليه)
حديث عُمَرَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: لَمْ أَزَلْ حَرِيصًا عَلَى أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ ابْنَ الْخَطَّابِ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّتَيْنِ قَالَ اللهُ تَعَالى (إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا) حَتَّى حَجَّ وَحَجَجْتُ مَعَهُ، وَعَدَلَ وَعَدَلْتُ مَعَهُ بِإِدَاوَةٍ، فَتَبَرَّزَ، ثُمَّ جَاءَ فَسَكَبْتُ عَلَى يَدَيْهِ مِنْهَا فَتَوَضَّأَ؛ فَقُلْتُ لَهُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَنِ الْمَرْأَتَانِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّتَانَ قَالَ اللهُ تَعَالَى (إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا) قَالَ: وَاعَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ هُمَا عَائِشَةُ وَحَفْصَة ثُمَّ اسْتَقْبَلَ عُمَرُ الْحَدِيثَ يَسُوقُهُ، قَالَ: كُنْتُ أَنَا وَجَارٌ لِي مِنَ الأَنْصَارِ فِي بَنِي أُمَيَّةَ بْنِ زَيْدٍ، وَهُمْ مِنْ عَوَالِي الْمَدِينَةِ، وَكُنَّا نَتَنَاوَبُ النُّزُولَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَنْزِلُ يَوْمًا وَأَنْزِلُ يَوْمًا، فَإِذَا نَزَلْتُ جِئْتُهُ بِمَا حَدَثَ مِنْ خَبَرِ ذَلِكَ الْيَوْمِ مِنَ الْوَحْيِ أَوْ غَيْرِهِ، وَإِذَا نَزَلَ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ؛ وَكُنَّا، مَعْشَرَ قُرَيْشٍ، نَغْلِبُ النِّسَاءَ؛ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى الأَنْصَارِ إِذَا قَوْمٌ تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ، فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَأْخُذْنَ مِنْ أَدَبِ الأَنْصَارِ؛ فَصَخِبْتُ عَلَى امْرَأَتِي فَرَاجَعَتْنِي، فَأَنْكَرْتُ أَنْ تُرَاجِعَنِي؛ قَالَتْ: وَلِمَ تُنْكِرُ أَنْ أُرَاجِعَكَ فَوَاللهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيُرَاجِعْنَهُ، وَإِنَّ إِحْدَاهُنَّ لَتَهْجُرُهُ الْيَوْمَ حَتَّى اللَّيْلِ، فَأَفْزَعَنِي ذَلِكَ، وَقُلْتُ لَهَا: قَدْ خَابَ مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مِنْهُنَّ
ثُمَّ جَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِي، فَنَزَلْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ؛ فَقُلْتُ لَهَا: أَيْ حَفْصَةُ أَتُغَاضِبُ إِحْدَاكُنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْيَوْمَ حَتَّى اللَّيْلِ قَالَتْ: نَعَمْ فَقُلْتُ: قَدْ خِبْتِ وَخَسِرْتِ، أَفَتَأْمَنِينَ أَنْ يَغْضَبَ اللهُ لِغَضَبِ رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَهْلِكِي لاَ تَسْتَكْثِرِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلاَ تُرَاجِعِيهِ فِي شَيْءٍ وَلاَ تَهْجُرِيهِ، وَسَلِينِي مَا بَدَا لَكِ، وَلاَ يَغُرَّنَّكَ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ أَوْضَأَ مِنْكِ وَأَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (يُرِيدُ عَائِشَةَ)
قَالَ عُمَرُ: وَكُنَّا قَدْ تَحَدَّثْنَا أَنَّ غَسَّانَ تُنْعِلُ الْخَيْلَ لِغَزْوِنَا، فَنَزَلَ صَاحِبِي الأَنْصَارِيُّ يَوْمَ نَوْبَتِهِ، فَرَجَعَ إِلَيْنَا عِشَاءً، فَضَرَبَ بَابِي ضَرْبًا شَدِيدًا؛ وَقَالَ: أَثَمَّ هُوَ فَفَزِعْتُ، فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ؛ فَقَالَ: قَدْ حَدَثَ الْيَوْمَ أَمْرٌ عَظِيمٌ، قُلْتُ: مَا هُوَ، أَجَاءَ غَسَّان قَالَ: لاَ، بَلْ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ وَأَهْوَلُ، طَلَّقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ؛ فَقُلْتُ: خَابَتْ حَفْصَةُ وَخَسِرَتْ، قَدْ كُنْتُ أَظُنُّ هذَا يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ فَجَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِي، فَصَلَّيْتُ صَلاَةَ الْفَجْرِ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَدَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَشْرُبَةً لَهُ، فَاعْتَزَلَ فِيهَا، وَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَإِذَا هِيَ تَبْكِي؛ فَقُلْتُ: مَا يُبْكِيكِ أَلَمْ أَكُنْ حَذَّرْتُكِ هذَا أَطَلَّقَكنَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ: لاَ أَدْرِي، هَا هُوَ ذَا مُعْتَزِلٌ فِي الْمَشْرُبَةِ فَخَرَجْتُ فَجِئْتُ إِلَى الْمِنْبَرِ، فَإِذَا حَوْلَهُ رَهْطٌ، يَبْكِي بَعْضُهُمْ؛ فَجَلَسْتُ مَعَهُمْ قَلِيلاً، ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ، فَجِئْتُ الْمَشْرُبَةَ الَّتِي فِيهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لِغُلاَمٍ لَهُ أَسْوَدَ، اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ؛ فَدَخَلَ الْغُلاَمُ، فَكَلَّمَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ رَجَعَ، فَقَالَ: كَلَّمْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذَكَرْتُكَ لَهُ فَصَمَتَ؛ فَانْصَرَفْتُ، حَتَّى جَلَسْتُ مَعَ الرَّهْطِ الَّذِينَ عِنْدَ الْمِنْبَرِ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ، فَجِئْتُ فَقْلتُ لِلْغُلاَمِ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ؛ فَدَخَلَ ثُمَّ رَجَعَ، فَقَالَ: قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَصَمَتَ؛ فَرَجَعْتُ فَجَلَسْتُ مَعَ الرَّهْطِ الَّذِينَ عِنْدَ الْمِنْبَرِ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ فَجِئْتُ الْغُلاَمَ، فَقُلْتُ: اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ؛ فَدَخَلَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَيَّ فَقَالَ: قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَصَمَتَ؛ فَلَمَّا وَلَّيْتُ مُنْصَرِفًا (قَالَ) إِذَا الْغُلاَمُ يَدْعُونِي فَقَالَ: قَدْ أَذِنَ لَكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَإِذَا هُوَ مُضْطَجِعٌ عَلَى رِمَالِ حَصِيرٍ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ فِرَاشٌ، قَدْ أَثَّرَ الرِّمَالُ بِجَنْبِهِ، مَتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ، حَشْوُهَا لِيفٌ؛ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ ثُمَّ قُلْتُ، وَأَنَا قَائِمٌ: يَا رَسُولَ اللهِ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ فَرَفَعَ إِلَيَّ بَصَرَهُ، فَقَالَ: لاَ، فَقُلْتُ: اللهُ أَكْبَرُ ثُمَّ قُلْتُ، وَأَنَا قَائِمٌ: أَسْتَأْنِسُ، يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ رَأَيْتَنِي، وَكُنَّا، مَعْشَرَ قُرَيْشٍ، نَغْلِبُ النِّسَاءَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ، إِذَا قَوْمٌ تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ؛ فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ رَأَيْتَنِي، وَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ، فَقُلْتُ لَهَا: لاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ أَوْضَأَ مِنْكِ وَأَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (يُرِيدُ عَائِشَةَ) فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَبَسُّمَةً أُخْرَى؛ فَجَلَسْتُ حِينَ رَأَيْتُهُ تَبَسَّمَ، فَرَفَعْتُ بَصَرِي فِي بَيْتِهِ، فَواللهِ مَا رَأَيْتُ فِي بَيْتِهِ شَيْئًا يَرُدُّ الْبَصَرَ غَيْرَ أَهَبَةٍ ثَلاَثَةٍ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ ادْعُ اللهَ فَلْيُوَسِّعْ عَلَى أُمَّتِكَ، فَإِنَّ فَارِسًا وَالرُّومَ قَدْ وُسِّعَ عَلَيْهِمْ، وَأُعْطُوا الدُّنْيَا وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَ اللهَ
فَجَلَسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ مُتَّكِئًا، فَقَالَ: أَوَ فِي هذَا أَنْتَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ إِنَّ أُولئِكَ قَوْمٌ عُجِّلُوا طَيِّبَاتِهِمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ اسْتَغْفِرْ لِي
فَاعْتَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ مِنْ أَجْلِ ذلِكَ الْحَدِيثِ، حِينَ أَفْشَتْهُ حَفْصَةُ إِلَى عَائِشَةَ، تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً، وَكَانَ قَالَ: مَا أَنَا بِدَاخِلٍ عَلَيْهِنَّ شَهْرًا مِنْ شِدَّةِ مَوْجِدَتِهِ عَلَيْهِنَّ، حِينَ عَاتَبَهُ اللهُ
فَلَمَّا مَضَتْ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ لَيْلَةً، دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ فَبَدَأَ بِهَا، فَقَالَتْ لَهُ عَائِشَةُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّكَ كُنْتَ قَدْ أَقْسَمْتَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ عَلَيْنَا شَهْرًا، وَإِنَّمَا أَصْبَحْتَ مِنْ تِسْعٍ وَعِشْرِينَ لَيْلَةً أَعُدُّهَا عَدًّا فَقَالَ: الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ
فَكَانَ ذلِكَ الشَّهْرُ تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً قَالَتْ عَائِشَةُ: ثُمَّ أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى آيَةَ التَّخَيُّرِ، فَبَدَأَ بِي أَوَّلَ امْرَأَةٍ مِنْ نِسَائِهِ فَاخْتَرْتُهُ ثُمَّ خَيَّرَ نِسَاءَهُ كُلَّهُنَّ، فَقُلْنَ مِثْلَ مَا قَالَتْ عَائِشَةُ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৬. তিন ত্বলাকপ্রাপ্তা মহিলার খরচ বা ব্যয় ভার নেই।
৯৪৬. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমার কী হল? সে কেন আল্লাহকে ভয় করছে না অর্থাৎ তার এ কথায় যে, ত্বলাক (তালাক)প্রাপ্তা নারী (তার স্বামীর থেকে) খাদ্য ও বাসস্থান কিছুই পাবে না।
المطلقة ثلاثا لا نفقة لها
حديث عَائِشَةَ وَفَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ: مَا لِفَاطِمَةَ أَلاَ تَتَّقِي اللهَ، يَعْنِي فِي قَوْلِهَا لاَ سُكْنَى وَلاَ نَفَقَةَ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৬. তিন ত্বলাকপ্রাপ্তা মহিলার খরচ বা ব্যয় ভার নেই।
৯৪৭. কাসিম (রহঃ) হতে বর্ণিত। ’উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রহঃ) ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলঃ আপনি কি জানেন না, হাকামের কন্যা অমুককে তার স্বামী তিন ত্বলাক (তালাক) দিলে, সে (তার পিতার ঘরে) চলে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ এ হাদীস বর্ণনায় তার কোন কল্যাণ নেই।
المطلقة ثلاثا لا نفقة لها
حديث عَائِشَةَ، وَفَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ قَالَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ لِعَائِشَةَ: أَلَمْ تَرَيْنَ إِلَى فُلاَنَةَ بِنْتِ الْحَكَمِ، طَلَّقَهَا زَوْجُهَا الْبَتَّةَ فَخَرَجَتْ فَقَالَتْ: بِئْسَ مَا صَنَعَتْ قَالَ: أَلَمْ تَسْمَعِي فِي قَوْلِ فَاطِمَةَ قَالَتْ: أَمَا إِنَّهُ لَيْسَ لَهَا خَيْرٌ فِي ذِكْرِ هذَا الْحَدِيثِ
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৮. বিধবা স্ত্রী বা অন্যদের সন্তান প্রসবের মাধ্যমে ইদ্দাত পূর্ণ করার বর্ণনা।
৯৪৮. সুবায়’আহ বিনতুল হারিস বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, তিনি বানু আমির ইবনু লুয়াই গোত্রের সাদ ইবনু খাওলার স্ত্রী ছিলেন, সা’দ (রাঃ) বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তিনি বিদায় হজ্জের বছর মারা যান। তখন তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। তার ইন্তিকালের কিছুদিন পরেই তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপর নিফাস থেকে পবিত্র হয়েই তিনি বিবাহের পয়গাম দাতাদের উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা আরম্ভ করলেন। এ সময় আবদুদ্দার গোত্রের আবুস সানাবিল ইবনু বা’কাক নামক এক ব্যক্তি তাকে গিয়ে বললেন কী ব্যাপার, আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি বিবাহের আশায় পয়গাম দাতাদের উদ্দেশে সাজসজ্জা আরম্ভ করে দিয়েছ? আল্লাহর কসম চার মাস দশদিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে তুমি বিবাহ করতে পারবে না। সুবায়’আহ (রাঃ) বলেন, (আবুস সানাবিল আমাকে) এ কথা বলার পর আমি ঠিকঠাক মত কাপড় চোপড় পরিধান করে বিকেল বেলা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম এবং এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, যখন আমি সন্তান প্রসব করেছি তখন থেকেই আমি হালাল হয়ে গেছি। এরপর তিনি আমাকে বিয়ে করার নির্দেশ দিলেন যদি আমার ইচ্ছে হয়।
انقضاء عدة المتوفى عنها زوجها وغيرها بوضع الحمل
حديث سُبَيْعَةَ بِنْتِ الْحارِثِ: أَنَّهَا كَانَتْ تَحْتَ سَعْدِ بْنِ خَوْلَةَ، وَهُوَ مِنْ بَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَىٍّ، وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا، فَتُوُفِّيَ عَنْهَا فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ، وَهِيَ حَامِلٌ، فَلَمْ تَنْشَبْ أَنْ وَضَعَتْ حَمْلَهَا بَعْدَ وَفَاتِهِ؛ فَلَمَّا تَعَلَّتْ مِنْ نِفَاسِهَا تَجَمَّلَتْ لِلْخُطَّابِ، فَدَخَلَ عَلَيْهَا أَبُو السَّنَابِلِ بْنُ بَعْكَكٍ، رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ الدَّارِ؛ فَقَالَ لَهَا: مَا لِي أَرَاكِ تَجَمَّلْتِ لِلْخُطَّابِ تُرَجِّينَ النِّكَاحَ، فَإِنَّكِ، وَاللهِ مَا أَنْتِ بِنَاكِحٍ حَتَّى تَمُرَّ عَلَيْكِ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ قَالَتْ سُبَيْعَةُ: فَلَمَّا قَالَ لِي ذلِكَ جَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِي حِينَ أَمْسَيْتُ، وَأَتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ، فَأَفْتَانِي بِأَنِّي قَدْ حَلَلْتُ حِينَ وَضَعْتُ حَمْلِي، وَأَمَرَنِي بِالتَّزَوُّجِ إِنْ بَدَا لِي
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৮. বিধবা স্ত্রী বা অন্যদের সন্তান প্রসবের মাধ্যমে ইদ্দাত পূর্ণ করার বর্ণনা।
৯৪৯. আবু সালামাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু হুরাইরাহ (রাঃ) ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি ইনু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এলেন এবং বললেন, এক মহিলা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর বাচ্চা প্রসব করেছে। সে এখন কিভাবে ইদ্দত পালন করবে, এ বিষয়ে আমাকে ফাতাওয়া দিন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, ইদ্দত সম্পর্কিত হুকুম দু’টির যেটি দীর্ঘ, তাকে সেটি পালন করতে হবে। আবু সালামাহ (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর হুকুম তা হলঃ গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আবু হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আমি আমার ভ্রাতুষ্পত্র অর্থাৎ আবু সালামার সঙ্গে আছি। তখন ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) তাঁর ক্রীতদাস কুরায়বকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করার জন্য উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। তিনি বললেন, সুরায়’আহ আসলামিয়া (রাঃ)-এর স্বামীকে হত্যা করা হল, তিনি তখন গর্ভবতী ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপরই তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। যারা তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আবুস্ সানাবিল তাদের মধ্যে একজন।
انقضاء عدة المتوفى عنها زوجها وغيرها بوضع الحمل
حديث أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبُو هُرَيْرَةَ جَالِسٌ عِنْدَهُ، فَقَالَ: أَفْتِنِي فِي امْرَأَةٍ وَلَدَتْ بَعْدَ زَوْجِهَا بِأَرْبَعِينَ لَيْلَةً؛ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: آخِرُ الأَجَلَيْنِ قُلْتُ أَنَا (وَأُولاَتُ الأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ) قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: أَنَا مَعَ ابْنِ أَخِي (يَعْنِي أَبَا سَلَمَةَ) فَأَرْسَلَ ابْنُ عَبَّاسٍ غُلاَمَهُ كُرَيْبًا إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ يَسْأَلُهَا فَقَالَتْ: قُتِلَ زَوْجُ سُبَيْعَةَ الأَسْلَمِيَّةِ، وَهِيَ حُبْلَى، فَوَضَعَتْ بَعْدَ مَوْتِهِ بِأَرْبَعِينَ لَيْلَةً، فَخُطِبَتْ، فَأَنْكَحَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ أَبُو السَّنَابِلِ فِيمَنْ خَطَبَهَا
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৯. স্বামী মারা গেলে মহিলার জন্য ইদ্দাত পর্যন্ত শোক পালন করা ওয়াজিব এবং অন্যদের তিনদিনের বেশি শোক পালন নিষিদ্ধ।
৯৫০. যাইনাব বিনত আবু সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী উম্মু হাবীবার পিতা আবূ সুইয়ান ইবনু হারব (রাঃ) মৃত্যুবরণ করলে আমি তার কাছে উপস্থিত হই। উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) জাফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খুশবু নিয়ে আসতে বললেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখালেন। এরপর তাঁর নিজের চেহারার উভয় পার্শ্বে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খুশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শােক পালন করা বৈধ হবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।
যাইনাব (রাঃ) বলেনঃ যাইব বিনত জাহশের ভাই মৃত্যুবরণ করলে আমি তার (যায়নারে) নিকট গেলাম। তিনিও খুশবু আনিয়ে কিছু ব্যবহার করলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহ্ কসম খুশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শােক পালন করা বৈধ হবে না তবে তার স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শােক পালন করতে পারবে।
যাইনাব (রাঃ) বলেনঃ আমি উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ এক মহিলা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমার মেয়ের স্বামী মারা গেছে। তার চোখে অসুখ। তার চোখে কি সুরমা লাগাতে পারবে? তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’তিন বার বললেন, না। তিনি আরও বললেনঃ এতে মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যাপার। অথচ বর্বরতার যুগে এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত।
হুমায়দ বলেন, আমি যাইবকে জিজ্ঞেস করলাম, এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করার অর্থ কি? তিনি বলেন, সে যুগে কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে সে অতি ক্ষুদ্র একটি কোঠায় প্রবেশ করতো এবং নিকৃষ্ট কাপড় পরিধান করত, কোন খুশবু ব্যবহার করতে পারত না। এভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হলে তার কাছে চতুষ্পদ জন্তু যথা- গাধা, বকরী অথবা গাভী আনা হতো। আর সে তার গায়ে হাত বুলাতো। হাত বুলাতে বুলাতে অনেক সময় সেটা মারাও যেত। এরপর সে (মহিলা) বেরিয়ে আসতো। তাকে বিষ্ঠা দেয়া হতো এবং তা তাকে নিক্ষেপ করতে হতো। এরপর ইচ্ছে করলে সে খুশবু ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারত।
মালিক (রহ.)-কেتَفْتَضُّ শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ মহিলা ঐ প্রাণীর চামড়ায় হাত বুলাতো।
وجوب الإحداد في عدة الوفاة، وتحريمه في غير ذلك إِلا ثلاثة أيام
حديث أُمِّ حَبِيبَة زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَزْيْنَبَ ابْنَةِ جَحْشٍ، وَأُمِّ سَلَمَةَ، وَزَيْنَبَ ابْنَةِ أَبِي سَلَمَةَ: قَالَتْ زَيْنَبُ: دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ حَبِيبَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حِينَ تُوُفِّيَ أَبُوهَا، أَبُو سُفْيَانَ بْنُ حَرْبٍ، فَدَعَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ بِطِيبٍ فِيهِ صُفْرَةٌ، خَلُوقٌ أَوْ غَيْرُهُ، فَدَهَنَتْ مِنْهُ جَارِيَةً، ثُمَّ مَسَّتْ بِعَارِضَيْهَا، ثُمَّ قَالَتْ: وَاللهِ مَالِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجِةٍ، غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ، أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
قَالَتْ زَيْنَبُ: فَدَخَلْتُ عَلَى زَيْنَبَ ابْنَةِ جَحْشٍ، حِينَ تُوُفِّيَ أَخُوهَا، فَدَعَتْ بِطِيبٍ فَمَسَّتْ مِنْهُ، ثُمَّ قَالَتْ: أَمَا وَاللهِ مَالِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجَةٍ، غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمَ الآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثٍ لَيَالٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
قَالَتْ زَيْنَبُ: وَسَمِعْتُ أُمَّ سَلَمَةَ تَقُولُ: جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ ابْنَتِي تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا، وَقَدِ اشْتَكَتْ عَيْنُهَا، أَفَتَكْحُلُهَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ: لاَ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا هِيَ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ، وَقَدْ كَانَتْ إِحْدَاكُنَّ فِي الْجَاهِلَيَّةِ تَرْمِي بِالْبَعَرَةِ علَى رَأْسِ الْحَوْلِ
قَالَ حُمَيْدٌ (الرَّاوِي عَنْ زَيْنَبَ) فَقُلْتُ لِزَيْنَبَ: وَمَا تَرْمِي بِالْبَعَرَةِ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ فَقَالَتْ زَيْنَبُ: كَانَتِ الْمَرْأَةُ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا، دَخَلَتْ حِفْشًا وَلَبِسَتْ شَرَّ ثِيَابِهَا، وَلَمْ تَمَسَّ طِيبًا حَتَّى تَمُرَّ بِهَا سَنَةٌ ثُمَّ تُؤْتَى بِدَابَّةٍ، حِمَارٍ، أَوْ شَاةٍ، أَوْ طَائِرٍ، فَتَفْتَضُّ بِهِ، فَقَلَّمَا تَفْتَضُّ بِشَيْءٍ إِلاَّ مَاتَ، ثُمَّ تَخْرُجُ فَتُعْطَى بَعَرَةً فَتَرْمِي، ثُمَّ تُرَاجِعُ بَعْدُ مَا شَاءَتْ مِنْ طِيبٍ أَوْ غَيْرِهِ
سُئِلَ مَالِكٌ (أَحَدُ رِجَالِ السَّنَدِ) مَا تَفْتَضُّ بِهِ قَالَ: تَمْسَحُ بِهِ جِلْدَهَا
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৯. স্বামী মারা গেলে মহিলার জন্য ইদ্দাত পর্যন্ত শোক পালন করা ওয়াজিব এবং অন্যদের তিনদিনের বেশি শোক পালন নিষিদ্ধ।
৯৫১. উম্মু ’আতিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কোন মৃত ব্যক্তির জন্যে আমাদেরকে তিন দিনের অধিক শােক পালন করা হতে নিষেধ করা হতো। কিন্তু স্বামীর ক্ষেত্রে চার মাস দশদিন (শােক পালনের অনুমতি ছিল)। আমরা তখন সুরমা লাগাতাম না, সুগন্ধি ব্যবহার করতাম না, ইয়েমেনের তৈরি রঙিন কাপড় ছাড়া অন্য কোন রঙিন কাপড় পরিধান করতাম না। তবে হায়য হতে পবিত্রতার গোসলে আজফারের খোশবু মিশ্রিত বস্ত্ৰখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি ছিল।
وجوب الإحداد في عدة الوفاة، وتحريمه في غير ذلك إِلا ثلاثة أيام
حديث أُمِّ عَطِيَّةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: كُنَّا نُنْهَى أَنْ نُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثٍ، إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا، وَلاَ نَكْتَحِلَ وَلاَ نَتَطَيَّبَ، وَلاَ نَلْبَسَ ثَوْبًا مَصْبُوغًا إِلاَّ ثَوْبَ عَصْبٍ، وَقَدْ رُخِّصَ لَنَا عِنْدَ الطُّهْرِ، إِذَا اغْتَسَلَتْ إِحْدَانَا مِنْ مَحِيضِهَا فِي نُبْذَةٍ مِنْ كُسْتِ أَظْفَارٍ