সালাতুল কসর বা সফরের সালাত

ক- কসরের সালাতের অর্থ:

সফরে সালাত কসর করার অর্থ হলো চার রাকাত বিশিষ্ট সালাতকে দুই রাকাত আদায় করা। মুসলিমের বিভিন্ন অবস্থা বিবেচনা করে ইসলামী শরী‘আত তাদের জন্য যেসব সহজতা করেছে এটা তারই অন্যতম বিধান। কুরআন, সুন্নাহ ও সমস্ত ইমামদের ঐক্যমতে কসরের সালাত শরী‘আতসিদ্ধ ও জায়েয।

খ- নিরাপত্তা ও ভয় উভয় অবস্থাতেই কসর করা যাবে:

সফরে নিরাপদ অবস্থায় হোক বা ভীত অবস্থায় উভয় অবস্থায়ই কসর করা যাবে। আয়াতে যে ভয়ের কথা বলা হয়েছে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রের দিক বিবেচনা করে বলা হয়েছে। (কারণ হিসেবে নয়) কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রায় সফরই ভয়মুক্ত ছিল না। একবার ‘আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন, আমরা নিরাপদ হওয়া সত্ত্বেও আপনি আমাদের সালাত কসর করলেন। তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে বললেন, আপনি যে বিষয়ে আশ্চর্য হয়েছেন আমিও সে বিষয়ে আশ্চর্য হয়েছিলাম। তখন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন,

«صَدَقَةٌ تَصَدَّقَ اللهُ بِهَا عَلَيْكُمْ، فَاقْبَلُوا صَدَقَتَهُ»

“এটি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি একটি সদকা। তোমরা তাঁর সদকাটি গ্রহণ করো।”[1]

গ- সালাতের কসর করার জন্য সফরের দূরত্ব:

প্রচলিত অর্থে যেটুকু দূরত্বকে সফর বলা হয় এবং এর জন্য পথের পাথেয় ও সামগ্রী বহন করা হয় সেটুকু দূরত্বের সফর করলেই সালাত কসর করে আদায় করা যাবে।

ঘ- কখন থেকে কসর শুরু করবে: মুসাফির যখন তার বসবাসরত এলাকা ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হবে, যাকে প্রচলিত অর্থে বিচ্ছিন্ন বলা হয় তখন থেকেই কসর শুরু করবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা জমিনে ভ্রমন করার সময় কসর করতে বলেছেন। আর নিজ এলাকার সীমা অতিক্রম না করলে জমিনে ভ্রমনকারী বলা হয় না।

>
[1] সহীহ মুসলিম, সালাতুল মুসাফিরীন ওয়াকাসরিহা, হাদীস নং ৬৮৬; তিরমিযী, তাফসীরুল কুরআন, হাদীস নং ৩০৩৪; নাসাঈ, তাকসীরুস সালাহ ফিস সাফরী, হাদীস নং ১৪৩৩; আবু দাউদ, সালাত, হাদীস নং ১১৯৯; ইবন মাজাহ, ইকামাতুস সালাহ ওয়াসসুন্নাতু ফিহা, হাদীস নং ১০৬৫; আহমদ, ১/৩৬; দারেমী, সালাত, হাদীস নং ১৫০৫।