ক- জামা‘আতে সালাত আদায়ের হিকমত:

জামা‘আতে সালাত আদায় করা আল্লাহর অনেক বড় অনুগত্য ও একটি শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। তাছাড়া এটি মুসলিমের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সমতার অন্যতম নিদর্শন। যেহেতু মুসলিমগণ দিনে রাতে পাঁচবার একটি মহান উদ্দেশ্যে একজন নেতার অধীনে একই দিকে ফিরে মসজিদে ছোটখাটো একটি সম্মেলনে সমবেত হয়। ফলে তাদের অন্তর একত্রিত ও পরিচ্ছন্ন হয়, পরস্পর দয়া ও সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় এবং মতানৈক্য দূরীভূত হয়।

খ- জামা‘আতে সালাত আদায়ের হুকুম:

নিজ এলাকায় অবস্থানরত হোক বা সফররত প্রত্যেক স্বাধীন, সক্ষম পুরুষের ওপর জামা‘আতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَإِذَا كُنتَ فِيهِمۡ فَأَقَمۡتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلۡتَقُمۡ طَآئِفَةٞ مِّنۡهُم مَّعَكَ١٠٢﴾ [النساء : ١٠٢]

“আর যখন তুমি তাদের মধ্যে থাকবে। অতঃপর তাদের জন্য সালাত কায়েম করবে, তখন যেন তাদের মধ্য থেকে একদল তোমার সাথে দাঁড়ায়।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০২]

এখানে আল্লাহর আদেশটি ওয়াজিব তথা অত্যাবশ্যকীয় অর্থে। কঠিন ভয়ের সময় যেহেতু জামা‘আতে সালাত কায়েম আদেশ দিয়েছেন, সেহেতু নিরাপদ ও ভয়বিহীন সময় জামা‘আতে সালাত আদায় করা যে আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় তা ভালোভাবেই বুঝা যায়।

গ- সর্বনিম্ন কতজন দ্বারা জামা‘আত সংঘটিত হয়:

ইমামের সাথে একজন পুরুষ বা নারী যে কোনো একজন হলেই জামা‘আত সংঘটিত হয়। আবু মুসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«اثْنَانِ فَمَا فَوْقَهُمَا جَمَاعَةٌ»

“দুই বা ততোধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে একটি জামা‘আত হতে পারে।”[1]

ঘ- জামা‘আতে সালাত আদায়ের স্থান:

মসজিদে জামা‘আত করা সুন্নাত, তবে প্রয়োজন হলে মসজিদ ছাড়া অন্য জায়গাও জামা‘আত করা জায়েয। মহিলারা পুরুষ ছাড়াও নিজেরা জামা‘আত করতে পারবে। ইমাম দারা কুতনী রহ. বর্ণনা করেছেন, আয়েশা ও উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এভাবে জামা‘আত করেছেন।

«وَأَمَرَ أم ورقة أَنْ تَؤُمَّ أَهْلَ دَارِهَا».

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে ওয়ারাকা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে তার গৃহে মহিলাদের সালাতের ইমামতি করার নির্দেশ দেন।”[2]

>
[1] ইবন মাজাহ, ইকামাতুস সালাহ ওয়াসসুন্নাতু ফিহা, হাদীস নং ৯৭২।

[2] আবু দাউদ, সালাত, হাদীস নং ৫৯১; আহমদ, ৬/৪০৫।