আল-ফিকহুল আকবর আল-ফিকহুল আকবারের বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)

কুরআন-হাদীসে আনুগত্যের শিরকের কথা বলা হয়েছে। আনুগত্য দু প্রকারের হতে পারে: লৌকিক বা জাগতিক এবং অলৌকিক বা অপার্থিব। বিশ্বাসী, নাস্তিক, ধার্মিক, অধার্মিক সকলেই স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় জাগতিকভাবে পিতামাতা, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের অনেকের আনুগত্য করেন। এরূপ জাগতিক আনুগত্য ইবাদত নয়। এমনকি জাগতিক লোভ বা ভয়ে আল্লাহর হুকুমের বিপরীতে অন্যের আনুগত্যও ইবাদত বা শিরক নয়। ‘‘বিশ্বাসজাত’’ অলৌকিক বা অপার্থিব আনুগত্য ইবাদত।

ইহূদী-খৃস্টানগণ দাবি করত যে, তাওরাত-ইঞ্জিলের বিধিবিধান বুঝা সাধারণ মানুষদের কর্ম নয়। পাদরি-পোপগণ যা বলেন সেটিই চূড়ান্ত। তাঁরা ‘‘অভ্রান্ত’’ (infallible)। পবিত্র আত্মার সহায়তায় এরা সরাসরি আল্লাহর নিকট থেকে ইলম লাদুন্নী লাভ করেন; কাজেই এদের ভুল হতে পারে না। তাঁরা যা হালাল বলবেন তা প্রকৃতই হালাল, এবং তারা যা হারাম বলবেন তা প্রকৃতই হারাম, যদিও তাওরাত-ইঞ্জিলের বক্তব্য ভিন্ন হয়। এরূপ আনুগত্যকে শিরক বলে উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন:


اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ


‘‘তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পন্ডিতগণকে এবং সংসার-বিরাগী দরবেশ-বুজুর্গগণকে রবব-প্রতিপালক রূপে গ্রহণ করেছে, এবং মরিয়ম তনয় মাসীহকেও।’’[1]

[1] সূরা (৯) তাওবা: ৩১ আয়াত। দেখুন: কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা, পৃ. ৪০৯-৪১৫।