اجتهاد এর সংজ্ঞা: اجتهاد এর আভিধানিক অর্থ: কষ্টকর কোন কিছু পাওয়ার জন্য চেষ্টা নিয়োজিত থাকা। পারিভাষিক অর্থ:
بذل الجهد لإدراك حكم شرعي
‘‘শারঈ কোন হুকুম জানার জন্য চেষ্টা নিয়োজিত থাকাকে ইজতেহাদ বলে।’’ যিনি এ ধরণের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন, তাকে মুজতাহিদ বলে।
ইজতিহাদ করার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে।
(১) ইজতিহাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শারঈ জ্ঞান জানা। যেমন: বিধি-বিধান সম্বলিত আয়াত ও হাদীছ সমূহ জানা।
(২) হাদীছের বিশুদ্ধতা ও দুর্বলতা সংশ্লিষ্ট জ্ঞান জানা থাকা। যেমন: সনদ, রিজাল প্রভৃতি সম্পর্কে জানা।
(৩) নাসেখ, মানসুখ ও ইজমা সংঘটিত হওয়ার স্থান সম্পর্কে জানা। যাতে করে ইজমা বিরোধী অথবা মানসুখ দলীল অনুযায়ী কোন হুকুম না দেন।
(৪) যে সব দলীলের মাধ্যমে হুকুম ভিন্ন হয়ে যায়, তা জানা। যেমন: خاص করা। শর্তযুক্ত করা প্রভৃতি। যাতে করে এদের দাবি বিরোধী কোন হুকুম না দেন।
(৫) অভিধান ও উসুলে ফিক্বহের মধ্যে যেগুলি শব্দের মর্মার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট তা জানা থাকা। যেমন: عام، خاص، مطلق، مقيد، مجمل، مبين প্রভৃতি। যাতে এদের মর্মার্থের দাবি অনুসারে হুকুম দিতে পারেন।
(৬) দলীল থেকে বিধি-বিধান বের করার যোগ্যতা থাকা।
ইজতিহাদ খণ্ডিত হয়। তাই ইজতিহাদ ইলমের যে কোন একটি অধ্যায় কিংবা যে কোন একটি মাসআলায় হতে পারে।[1]
মুজতাহিদের জন্য আবশ্যক হলো, হক্ব জানার ক্ষেত্রে তার সর্বাত্মক চেষ্টায় নিয়োজিত থাকা। তার কাছে যা সত্যরূপে প্রতীয়মান হবে, তদনুযায়ী তিনি হুকুম দিবেন। এতে যদি তিনি সঠিকতায় পৌঁছেন, তাহলে তার জন্য দু’টি ছবওয়াব রয়েছে। একটি ছবওয়াব চেষ্টা করার কারণে আরেকটি ছবাওয়াব হক্ব পাওয়ার কারণে। কেননা, হক্ব প্রাপ্তির মাঝে রয়েছে হক্বকে প্রকাশ করা ও তদনুযায়ী আমল করা। আর যদি তিনি ভুল করেন, তবুও তার জন্য একটি ছবওয়াব রয়েছে এবং ভুলটি ক্ষমার যোগ্য বিবেচিত হবে।
রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:
إذا حكم الحاكم فاجتهد. ثم أصاب فله أجران. وإذا حكم فاجتهد ثم أخطأ فله أجر
‘‘যখন কোন বিচারক ইজতেহাদ করে ফায়ছালা দেয়। অতঃপর তিনি ফায়ছালায় সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছলে তার জন্য দু’টি ছবওয়াব রয়েছে। আর ইজতেহাদ করার পরও ভুল করলে তবুও তার জন্য একটি ছবওয়াব রয়েছে।’’[1]
যদি তার নিকট সত্য স্পষ্ট না হয়, তাহলে তার জন্য আবশ্যক হলো এ ব্যাপারে ইজতেহাদ স্থগিত রাখা। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অন্যের তাক্বলীদ করাও তার জন্য বিধেয় হবে।