যে সব ক্ষেত্রে نسخ সম্ভব, সে সব ক্ষেত্রে نسخ বা ‘রহিতকরণ’ সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো:
(১) উভয় দলীলের মাঝে সমন্বয় করা সম্ভব না হওয়া। তাই উভয় দলীলের মাঝে সমন্বয় করা সম্ভব হলে, উভয়টি অনুযায়ী আমল করা সম্ভব হওয়ার কারণে نسخ সাব্যস্ত হবে না।
(২) ناسخ বা রহিতকারী দলীল পরে আসার ব্যাপারে জানা থাকা। এটি জানা যেতে পারে মূল দলীলের মাধ্যমে অথবা ছাহাবীর সংবাদের মাধ্যমে অথবা ইতিহাসের মাধ্যমে।
‘দলীল পরে আসার’ বিষয়টি نص এর মাধ্যমে জানা যায়। এর উদাহরণ হলো: রসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:
كنت أذنت لكم في الاستمتاع من النساء وإن الله قد حرم ذالك إلى يوم القيامة
‘‘আমি তোমাদের জন্য নারীদের সাময়িক বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছিলাম। আল্লাহ তায়ালা এটাকে ক্বিয়ামত অবধি হারাম করে দিয়েছেন।’’ [1]
ছাহাবীর সংবাদের মাধ্যমে জানার উদাহরণ হলো আয়েশা (রা.) এর বক্তব্য:
كان فيما انزل من القران عشر رضعات معلومات يحرمن . ثم نسخن بخمس معلومات
‘‘কুরআন থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার মধ্যে এটাও ছিল যে, দশ চোষণ দুধ পান করা হুরমাত সাব্যস্ত করে। এরপর নির্দিষ্ট পাঁচ চোষণের মাধ্যমে তা রহিত হয়ে যায়।’’ [2]
ইতিহাস দ্বারা জানার উদাহরণ হলো: আল্লাহর বাণী:
الْآَنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنْكُمْ
‘‘এখন আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন (সূরা আল-আনফাল ৮:৬৬)।’’
আয়াতের الْآَنَ (এখন) শব্দটি এ হুকুম পরে আসার ব্যাপারে প্রমাণ বহন করে।
অনুরূপভাবে যদি উল্লেখ করা হয় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের পূর্বে কোন বিষয়ে হুকুম দিয়েছেন। তারপর হিজরতের পরে তার বিপরীত ফয়সালা দিয়েছেন। তখন দ্বিতীয়টি ‘রহিতকারী’ সাব্যস্ত হবে।
(৩) ناسخ বা ‘রহিতকারী দলীল’ ছহীহ হওয়া: এক্ষেত্রে অধিকাংশ বিদ্বান শর্ত করেছেন যে, রহিতকারী দলীল ‘রহিতব্য’ দলীলের চেয়ে শক্তিশালী অথবা সমমানের হতে হবে। কাজেই তাদের মতে, মুতাওয়াতির হাদীছ খবরে ওয়াহেদ হাদীছ দ্বারা রহিত হবে না। যদিও রহিতকারী দলীলটি ছহীহ হয়।
কিন্তু অধিকতর অগ্রগণ্য মত হলো نسخ সাব্যস্ত হওয়ার জন্য ناسخ কে অধিকতর শক্তিশালী কিংবা সমমানের হওয়া শর্ত নয়। কেননা, نسخ এর ক্ষেত্র হলো হুকুম আর হুকুম সাব্যস্ত হওয়ার জন্য মুতাওয়াতির হওয়া শর্ত নয়।
[2]. ছ্বহীহ মুসলিম হা/১৪৫২