ইসলাম ভঙ্গের যেমন কারণ রয়েছে, তদ্রুপ দা‘ওয়াত বিনষ্ট হওয়ারও কারণ রয়েছে। যেমনঃ
লোক দেখানো দা‘ওয়াত ও তাতে একনিষ্ঠতা না থাকা (الرياء وعدم الإخلاص)
দ্বীনের মাধ্যমে দুনিয়া ভক্ষণ করা (وأكل الدنيا بالدين)
আল্লাহ তা‘আলা ও তার রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাণী বিনিময়ে বিক্রয় করা (وبيع كلام الله ورسوله بالأجرة)
নিজের খ্যাতি অর্জনের লক্ষ্য দা‘ওয়াতী কাজ করা (والدعوة إلى النفس وحب الشهرة)
জাহিলী, গোঁড়ামি ও স্বজনপ্রীতির জন্য দা‘ওয়াত দেয়া। যেমন- কোন দল, সম্প্রদায় ও জামা‘আতের দিকে দা‘ওয়াত দেয়া। আর অন্য কোন উদ্দেশ্যে দা‘ওয়াত দিলে সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে না। (والدعوة إلى حمية الجاهلية والعصبية كمن يدعو إلى حزب أو طائفة أو جماعة ولا يقبل الدعوة من غيره)
আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ হলো আমরা তারই দিকে দা‘ওয়াত দিবো, অন্য কোন দিকে নয়।
আর যারা ইদা‘ওয়াতের মূলনীতি পরিত্যাগ করবে ও নিজের ইচ্ছানুযায়ী দা‘ওয়াত দিবে, তারা অনেক বিপদের সম্মুখীন হবে। তার মধ্যে কতিপয় হলোঃ
নিজের প্রশংসা অর্জন হওয়া (تزكية النفس)
গর্ব-অহংকার প্রকাশ পাওয়া (والعجب والكبر)
পদমর্যাদার প্রতি প্ররোচিত হওয়া (والحرص على الجاه والمنصب)
অন্যদের অবহেলা করা(واحتقار الآخرين)
আল্লাহর দিকে প্রকৃত দাঈদের দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান করা (والنظر في عيوب الدعاة إلى الله)
নিজের প্রবৃত্তি অনুসারে ধন-সম্পদ ব্যয় করা (والإنفاق على شهواته)
দ্বীনের পথে ব্যয় না করা (وترك الإنفاق على الدين)
ফরয বিধান পালন ও সৎআমল করা কষ্ট মনে হওয়া (وثقلت عليه الفرائض والأعمال الصالحة)
বেশী বেশী বৈধ কাজে অংশ নেওয়া (وتوسع في المباحات)
এবং তর্ক-বিতর্ক ও কুপ্রবৃত্তির পিছনে সময় নষ্ট হওয়া (وهانت عليه إضاعة الأوقات في الجدل والشهوات)।
১। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যিনি আল্লাহর দিকে দা‘ওয়াত দেন, সৎকর্ম করেন এবং বলেন যে, অবশ্যই ‘আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’ (সূরা হা-মীম সাজদা: ৩৩)।
২। আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
فَلَمَّا نَسُوا مَا ذُكِّرُوا بِهِ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ أَبْوَابَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا فَرِحُوا بِمَا أُوتُوا أَخَذْنَاهُمْ بَغْتَةً فَإِذَا هُمْ مُبْلِسُونَ * فَقُطِعَ دَابِرُ الْقَوْمِ الَّذِينَ ظَلَمُوا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
‘অতঃপর তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, আমি তাদের উপর সব কিছুর দরজা খুলে দিলাম। অবশেষে যখন তাদেরকে যা প্রদান করা হয়েছিল, তার কারণে তারা উৎফুল্য হল, আমি হঠাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম। ফলে তখন তারা হতাশ হয়ে গেল। (৪৪) অতএব, যালিম সম্প্রদায়ের মূল কেটে ফেলা হল। আর সকল প্রশংসা রব্বুল আলামীন আল্লাহর জন্য’ (সূরা আল-আন‘আম: ৪৪-৪৫)।