গুনাহ মাফের যতগুলো উপায় আছে সেগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে দু‘আ। পূর্বের আলোচনায় বিভিন্ন পয়েন্টের অধীনে বেশ কিছু দু‘আ ও জিকির উল্লেখ করা হয়েছে যা হাদীসে বর্ণিত সময়ে ও সংখ্যায় পাঠ করলে গুনাহ মাফ হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা উপরের আলোচনায় শুধু সে সকল দু‘আই উল্লেখ করেছি যেগুলো সম্পর্কে হাদীসে গুনাহ মাফের কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এর বাইরেও কুরআন ও হাদীসে অনেক দু‘আ আছে যেগুলোতে গুনাহ মাফের প্রার্থনা বর্ণিত হয়েছে অথচ সেগুলোতে কী পরিমাণ গুনাহ মাফ হবে সে কথা বর্ণিত হয়নি। তারপরও যেহেতু সেই দু‘আগুলো কুরআন ও গ্রহণযোগ্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে সেহেতু আমরা সেই দু‘আগুলোসহ উপরের আলোচনায় উল্লিখিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু দু‘আ এই অধ্যায়ে উল্লেখ করা হলো, যাতে পাঠকগণ এই দু‘আগুলো সহজেই খুঁজে পান এবং মুখস্থ করে দু‘আগুলো করতে পারেন। এখানে কোনো দু‘আর ফযীলত বর্ণনা করা হবে না। শুধু কখন কতবার পড়তে হবে সেটির বর্ণনাসহ দু‘আগুলো আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ দেয়া হবে।[1]
১. رَبِّ إِنِّىْ ظَلَمْتُ نَفْسِىْ فَاغْفِرْ لِىْ
উচ্চারণ : রব্বি ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলী।
অর্থ : হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফ্সের প্রতি যুল্ম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।[1]
২. أَنْتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ
উচ্চারণ : আনতা ওয়ালিয়্যুনা- ফাগফিরলানা- ওয়ারহামনা- ওয়া আনতা খাইরুল গা-ফিরীন।
অর্থ : আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আপনি উত্তম ক্ষমাশীল।[2]
৩. رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর্ র-হিমীন।
অর্থ : হে আমাদের রব! আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।[3]
৪. رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ : রব্বানা- আতমিম লানা- নূরানা- ওয়াগফিরলানা- ইন্নাকা ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর।
অর্থ : হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।[4]
৫. سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
উচ্চারণ : সামি‘না- ওয়া আত্বা‘না- গুফরা-নাকা রব্বানা- ওয়া ইলাইকাল মাসীর।
অর্থ : আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই (নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল।[5]
৬. رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ … وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ : রব্বানা- তাক্বববাল মিন্না- ইন্নাকা আন্তাস্ সামী‘উল ‘আলীম। ওয়াতুব ‘আলায়না-, ইন্নাকা আনতাত্ তাওওয়া-বুর্ রহীম।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! আপনি আমাদের পক্ষ হ’তে এটি কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’। ‘আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি অধিক তওবা কবূলকারী ও দয়াময়’।[6]
৭. ভুল-ভ্রান্তিবশতঃ কোন কাজ হয়ে গেলে তা থেকে ক্ষমা প্রার্থনার দু‘আ :
رَبَّنَا لَاتُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا
উচ্চারণ : রব্বানা- লা- তুআ-খিযনা ইন্নাসীনা- আও আখত্বা’না-।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! আমাদের দায়ী করেন না যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি’।[7]
৮. কোন কাজ সহজ হওয়া ও কাজ সম্পাদনে ভুল-ত্রুটি ক্ষমা চাওয়া এবং বরকত চাওয়ার দু‘আ :
رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَه عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِه وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ : রব্বানা- ওয়ালা- তাহমিল ‘আলায়না ইসরান কামা- হামালতাহূ ‘আলাল্লাযীনা মিন ক্ববলিনা- রব্বানা- ওয়ালা- তুহাম্মিলনা- মা-লা- ত্বা-ক্বাতা লানা- বিহী, ওয়া‘ফু ‘আন্না- ওয়াগফির লানা- ওয়ারহামনা- আনতা মাওলা-না- ফানসুরনা- ‘আলাল ক্বওমিল কা-ফিরীন।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! আমাদের ওপর ভারী ও কঠিন কাজের বোঝা অর্পণ করেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তী লোকেদের ওপর অর্পণ করেছিলে। হে আমাদের রব্! আমাদের ওপর এমন কঠিন দায়িত্ব দিয়েন না যা সম্পাদন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদের ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের রব্! সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন’।[8]
৯. গুনাহ মাফ ও জাহান্নামের ‘আযাব থেকে বাঁচার দু‘আ :
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ : রব্বানা- ইন্নানা- আ-মান্না- ফাগফিরলানা- যুনূবানা- ওয়াক্বিনা- ‘আযা-বান্ন-র।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! নিশ্চয় আমরা ঈমান এনেছি। অতএব আমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের ‘আযাব হ’তে রক্ষা করুন’।[9]
১০. জাহান্নামের ‘আযাব থেকে বাঁচার এবং ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার জন্য দু‘আ :
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ 191 رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَه وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ 192 رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُّنَادِىْ لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ 193
উচ্চারণ : রব্বানা- মা- খলাক্বতা হা-যা-বা-ত্বিলান, সুবহা-নাকা ফাক্বিনা- ‘আযা-বান্ন-র। রব্বানা- ইন্নাকা মান্ তুদখিলিন্না-রা ফাক্বদ্ আখযাইতাহূ, ওয়া মা- লিযযা-লিমীনা মিন্ আনসা-র। রব্বানা- ইন্নানা- সামি‘না- মুনা-দিআয় ইউনা-দী লিল ঈমা-নি আন্ আ-মিনূ বিরব্বিকুম ফা- আ-মান্না-, রব্বানা- ফাগফিরলানা- যুনূবানা- ওয়া কাফফির ‘আন্না- সাইয়িআ-তিনা- ওয়া ত্বওয়াফফানা- মা‘আল আবরা-র।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! তুমি এগুলিকে অনর্থক সৃষ্টি করেননি। মহা পবিত্র আপনি। অতএব আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের ‘আযাব থেকে বাঁচান’! ‘হে আমাদের রব্! নিশ্চয় আপনি যাকে জাহান্নামে নিষ্পাপ করেন, তাকে আপনি লাঞ্ছিত করব। আর সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্যে তো কোন সাহায্যকারী নেই’। ‘হে আমাদের রব্! নিশ্চয় আমরা একজন আহবানকারীকে (মুহাম্মাদ) শুনেছি যিনি ঈমানের প্রতি আহবান করছেন এই বলে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। অতঃপর সে মতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব হে আমাদের রব্! আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের দোষ-ত্রুটিসমূহ মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে মৃত্যুদান করুন (অর্থাৎ তাদের মধ্যে শামিল কর)’।[10]
১১. আল্লাহর হুকুম অমান্য করার পাপ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দু‘আ :
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
উচ্চারণ : রব্বানা যলামনা- আনফুসানা- ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা- ওয়া তারহামনা- লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! আমরা আমাদের নিজেদের উপর যুল্ম করেছি। এক্ষণে যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন ও দয়া না করেন, তাহ’লে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব’।[11]
১২. নিজের ও ভাইয়ের জন্য ক্ষমা চেয়ে দু‘আ :
رَبِّ اغْفِرْ لِىْ وَلِأَخِىْ وَأَدْخِلْنَا فِىْ رَحْمَتِكَ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : রব্বিগ্ ফিরলী ওয়ালি আখী ওয়া আদখিলনা- ফী রহমাতিকা ওয়া আনতা আরহামুর্ র-হিমীন।
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে মাফ করো এবং আমার ভাইকে মাফ করো। এবং আমাদেরকে তোমার রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাও। বস্তুত তুমিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু’।[12]
১৩. অবৈধ ও নিষিদ্ধ বিষয়ের কামনা করলে যে পাপ হয়, তা ক্ষমার জন্য দু‘আ :
رَبِّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا لَيْسَ لِىْ بِه عِلْمٌ وَإِلَّا تَغْفِرْ لِىْ وَتَرْحَمْنِىْ أَكُنْ مِّنَ الْخَاسِرِينَ
উচ্চারণ : রব্বি ইন্নী আ‘ঊযুবিকা আন্ আস্আলাকা মা- লায়সা লী বিহী ‘ইলমুন্, ওয়া ইল্লা- তাগফিরলী ওয়া তারহামনী আকুম্ মিনাল খা-সিরীন।
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমি তোমার নিকট এমন বিষয়ে আবেদন করা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে বিষয়ে আমার কোন জ্ঞান নেই। এক্ষণে যদি আপনি আমাকে ক্ষমা না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তাহ’লে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’।[13]
১৪. সন্তানাদিসহ নিজে মুসল্লী হওয়া এবং পিতা-মাতা সহ সমস্ত মুসলিম ব্যক্তির জন্য দু‘আ (ইবরাহীম (আ.)-এর দু‘আ) :
رَبِّ اجْعَلْنِىْ مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِىْ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ 40 رَبَّنَا اغْفِرْ لِىْ وَلِوَالِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ 41
উচ্চারণ : রব্বিজ্‘আলনী মুক্বীমাস্ সলা-তি ওয়া মিন্ যুররিইয়্যাতী, রব্বানা- ওয়া তাক্বব্বাল্ দু‘আ-। রব্বানাগফিরলী ওয়ালি ওয়া-লি দাইয়্যা ওয়ালিল্ মু’মিনীনা ইয়াওমা ইয়াকূমুল্ হিসা-ব।
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে ছালাত ক্বায়িমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্য থেকেও। হে আমাদের রব্! আমার দু‘আ কবূল করুন’! ‘হে আমাদের রব্! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং ঈমানদার সকলকে ক্ষমা করুন যেদিন হিসাব দন্ডায়মান হবে’।[14]
১৫. আল্লাহর রহমত কামনা ও ক্ষমা চাওয়ার দু‘আ :
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : রব্বানা- আ-মান্না- ফাগফির্ লানা- ওয়ার্হামনা- ওয়া আন্তা খাইরুর্ রা-হিমীন।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব্! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু’।[15]
১৬. হিংসা-বিদ্বেষ দূর করার দু‘আ :
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِىْ قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
উচ্চারণ : রব্বানাগফির লানা- ওয়া লিইখ্ওয়া-নিনাল্লাযীনা সাবাকূনা- বিল ঈমা-নি ওয়ালা- তাজ্‘আল ফী কুলূবিনা- গিল্লাল লিল্লাযীনা আ-মানূ রব্বানা- ইন্নাকা রাঊফুর্ রহীম্।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে ও আমাদের পূর্ববর্তী ভাইয়েরা যারা ঈমান এনেছে তাদের ক্ষমা কর, ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের রব্! নিশ্চয় আপনি দয়ালু পরম করুণাময়’।[16]
১৭. কাফেরদের ওপর বিজয়ের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা :
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ : রব্বানাগফির লানা- যুনূবানা- ওয়াইসরা-ফানা- ফী আমরিনা- ওয়া সাব্বিত আক্বদা-মানা- ওয়ানসুরনা- ‘আলাল্ ক্বওমিল কা-ফিরীন।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দিন, আর আমাদের কাজে যতটুকু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে তাও মাফ করে দিন। আমাদেরকে দৃঢ় রাখুন এবং কাফেরদের ওপর আমাদেরকে সাহার্য করুন’।[17]
১৮. ফিতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা :
رَبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ 4 رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ 5
উচ্চারণ : রব্বানা- ‘আলায়কা তাওয়াক্কালনা- ওয়া ইলায়কা আনাবনা- ওয়া ইলায়কাল মাসীর। রব্বানা- লা- তাজ্‘আলনা- ফিতনাতাল লিল্লাযীনা কাফারূ ওয়াগফিরলানা- রব্বানা- ইন্নাকা আন্তাল্ ‘আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আমরা আপনার ওপরই ভরসা করেছি, আপনার দিকেই মুখ করেছি এবং আপনার দিকেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। হে আমাদের রব্! আপনি আমাদেরকে কাফেরদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করবেন না। হে আমাদের, রব্! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন, নিশ্চয় আপনি মহা শক্তিধর ও প্রজ্ঞাময়’।[18]
১৯. বালা-মুসীবাত ও মহামারির সময় পিতা-মাতা ও মু’মিনদের রক্ষার জন্য ও যালিমদের ধ্বংসের জন্য নূহ (আ.)-এর দু‘আ :
رَبِّ اغْفِرْ لِىْ وَلِوَالِدَىَّ وَلِمَنْ دَخَلَ بَيْتِىَ مُؤْمِنًا وَّلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَارًا
উচ্চারণ : রব্বিগফিরলী ওয়ালি ওয়া-লি দাইয়্যা ওয়ালিমান দাখালা বায়তিয়া মু’মিনাও ওয়ালিল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনা-তি ওয়ালা- তাযিদিযয-লিমীনা ইল্লা- তাবা-রা-।
অর্থ : ‘হে আমার রব্! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন, আর যে ব্যক্তি আমার বাড়ীতে মু’মিন অবস্থায় প্রবেশ করবে তাকে ক্ষমা করুন এবং সকল মু’মিন নর-নারীকে ক্ষমা করুন। আর যালিমদের ধ্বংস বৃদ্ধি করুন’।[19]
২০. পাপ ক্ষমা চেয়ে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য দু‘আ :
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ : রব্বানা- ইন্নানা আ-মান্না- ফাগফিরলানা- যুনূবানা-, ওয়া ক্বিনা- ‘আযা-বান্না-র।
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, অতএব আপনি আমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হ’তে রক্ষা করুন’।[20]
[2]. সূরা আল আ‘রাফ ০৭ : ১৫৫।
[3]. সূরা আল মু’মিনূন ২৩ : ১১৮।
[4]. সূরা আত্ তাহরীম ৬৬ : ০৮।
[5]. সূরা আল বাক্বারাহ্ ০২ : ২৮৫।
[6]. সূরা আল বাক্বারাহ্ ২ : ১২৭-২৮।
[7]. সূরা আল বাক্বারাহ্ ০২ : ২৮৬।
[8]. সূরা আল বাক্বারাহ্ ০২ : ২৮৬।
[9]. সূরা আ-লি ‘ইমরা-ন ৩ : ১৬।
[10]. সূরা আ-লি ‘ইমরা-ন ০৩ : ১৯১-১৯৩।
[11]. সূরা আল আ‘রাফ ০৭ : ২৩।
[12]. সূরা আল আ‘রাফ ০৭ : ১৫১।
[13]. সূরা হূদ ১১ : ৪৭।
[14]. সূরা ইব্রা-হীম ১৪ : ৪০-৪১।
[15]. সূরা আল মু’মিনূন ২৩ : ১০৯।
[16]. সূরা আল হাশ্র ৫৯ : ১০।
[17]. সূরা আ-লি ‘ইমরা-ন ০৩ : ১৪৭।
[18]. সূরা আল মুমতাহিনাহ্ ৬০ : ৪-৫।
[19]. সূরা নূহ ৭১ : ২৮।
[20] সূরা আ-লি ‘ইমরা-ন ০৩ : ১৬।
১. সকল সলাতে তাকবীরে তাহরীমার পর ক্ষমা প্রার্থনার দু‘আ (সানা) :
اَللّٰهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِىْ وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اَللّٰهُمَّ نَقِّنِىْ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنْ الدَّنَسِ اَللّٰهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَاىَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা বা-‘ইদ বাইনী ওয়া বাইনা খাত্বা-ইয়া-ইয়া কামা- বা‘আদতা বাইনাল মাশরিকিব ওয়াল মাগরিবি, আল্লা-হুম্মা নাক্বক্বিনী মিনাল খাত্বা-ইয়া- কামা- ইউনাক্বক্বাস্ সাওবুল আব্ইয়াযু মিনাদ্ দানাস, আল্লা-হুম্মাগসিল খাত্বা-ইয়া-ইয়া বিলমা-য়ি ওয়াসসালজি ওয়াল বারাদি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি পূর্ব ও পশ্চিম গগণের মধ্যে যেরূপ দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন, আমার ও আমার পাপরাশির মধ্যে তদ্রূপ দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন। হে আল্লাহ! শুভ্র বস্তুকে যেরূপ নির্মল করা হয় আমাকেও গুনাহ থেকে সেরূপ পাক সাফ করুন। হে আল্লাহ! আমার অপরাধ সমূহ পানি, বরফ ও হিমশীলা দ্বারা বিধৌত করে দিন।[1]
২. রাতের সলাত বা তাহাজ্জুদের সলাতে তাকবীরে তাহরীমার পরে পঠনীয় দু‘আ :
وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِى فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا وَّمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلَاتِىْ وَنُسُكِىْ وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِى لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَه وَبِذٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اَللّٰهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ. أَنْتَ رَبِّىْ وَأَنَا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِىْ وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِى فَاغْفِرْ لِىْ ذُنُوبِىْ جَمِيعًا إِنَّه لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ وَاهْدِنِىْ لِأَحْسَنِ الْأَخْلَاقِ لَا يَهْدِىْ لِأَحْسَنِهَا إِلَّا أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّىْ سَيِّئَهَا لَا يَصْرِفُ عَنِّىْ سَيِّئَهَا إِلَّا أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّه فِىْ يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
উচ্চারণ : ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা হানীফাওঁ ওয়ামা- আনা- মিনাল মুশরিকীন। ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়া-ইয়া ওয়ামামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল ‘আ-লামীন। লা- শারীকা লাহূ ওয়া বিযা-লিকা উমিরতু ওয়াআনা- মিনাল মুসলিমীন। আল্লা-হুম্মা আনতাল মালিকু লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা, আনতা রব্বী ওয়াআনা- ‘আবদুকা যলামতু নাফসী ওয়া‘তারাফতু বিযাম্বী ফাগফিরলী যুনূবী জামী‘আন ইন্নাহূ লা-ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আনতা। ওয়াহদিনী লিআহসানিল আখলা-ক্বি লা-ইয়াহদী লি আহসানিহা- ইল্লা- আনতা, ওয়াসরিফ ‘আন্নী সাইয়্যিআহা- লা-ইয়াসরিফু ‘আন্নী সাইয়্যিআহা- ইল্লা- আনতা লাব্বাইকা ওয়া সা‘দাইকা ওয়াল খাইরু কুল্লুহূ ফী ইয়াদাইকা ওয়াশ্ শাররু লাইসা ইলাইকা আনা- বিকা ওয়া ইলাইকা তাবা-রাকতা ওয়া তা‘আ-লাইতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইক।
অর্থ : আমি সেই মহান সত্তার দিকে আমার মুখ ফিরাচ্ছি, যিনি আসমান সমূহ ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয় আমার সলাত, আমার কুরবানী আমার জীবন ও আমার মরণ আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই, আর এজন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্গত। আল্লাহ আপনিই বাদশাহ, আপনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। আপনি আমার রব্ আর আমি আপনার দাস। আমি আমার নিজের উপর অত্যাচার করেছি এবং আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি। সুতরাং আপনি আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ব্যতীত অন্য কেউ অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে না। আপনি আমাকে উত্তম চরিত্রের দিকে চালিত করুন, আপনি ব্যতীত আর কেউ উত্তম চরিত্রের দিকে চালিত করতে পারে না। আমার হ’তে মন্দ আচরণকে আপনি দূরে রাখুন, আপনি ব্যতীত অন্য কেউ তা দূরে রাখাতে পাওে না। হে আল্লাহ! উপস্থিত আছি আপনার নিকটে এবং প্রস্ত্তত আছি আপনার আদেশ পালনে। কল্যাণ সমস্ত আপনার হাতে এবং কোন অকল্যাণ আপনার প্রতি বর্তায় না। আমি আপনার সাহায্যেই প্রতিষ্ঠিত আছি এবং আপনারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করব। আপনি কল্যাণময়, আপনি সুউচ্চ। আমি আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার দিকে ফিরছি।[2]
৩.
اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ نُورُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ وَقَوْلُكَ حَقٌّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ وَمُحَمَّدٌ ﷺ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ اَللّٰهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِىْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَوْ لَا إِلٰهَ غَيْرُكَ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা ক্বাইয়িমুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামান ফীহিন্না, ওয়া লাকাল হাম্দু লাকাল মুলকুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামান ফী হিন্না, ওয়া লাকাল হামদু নূরুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ালাকাল হামদু আনতাল হাক্ক ওয়া‘দুকাল হাক্কু, ওয়ালিক্বা-উকা হাক্কুন, ওয়া ক্বাওলুকা হাক্কুন ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন ওয়ান্না-রু হাক্কুন ওয়ান নাবিইয়ূনা হাক্কুন ওয়া মুহাম্মাদুন সল্লাল্লা-হু ‘আলায়হি ওয়াসাল্লাম হাক্কুন ওয়াস্ সা-‘আতু হাক্কুন। আল্লা-হুম্মা লাকা আসলামতু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়া ‘আলায়কা তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইকা আনাবতু ওয়াবিকা খা-সামতু ওয়া ইলায়কা হা-কামতু, ফাগফিরলী মা- ক্বদ্দামতু ওয়ামা- আখখারতু ওয়ামা- আসরারতু ওয়ামা- আ‘লানতু আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখখিরু লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা ওয়ালা- ইলা-হা গাইরুকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, আপনি আসমানসমূহ ও জমিন এবং এদের মাঝে যা কিছু আছে তার রক্ষাকারী। আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, আপনিই আসমানসমূহ ও জমিন এবং এদের মাঝে যা কিছু আছে তাদের জ্যোতি। আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, আপনিই আসমানসমূহ ও জমিন এবং এদের মাঝে যা আছে তাদের বাদশাহ। আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, আপনিই সত্য, আপনার ওয়া‘দা সত্য, আপনার সাক্ষাৎ সত্য, আপনার বাণী সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, নাবীগণ সত্য, মুহাম্মাদ (সা.) সত্য এবং ক্বিয়ামাত সত্য। ‘হে আল্লাহ! আমি আপনারই নিকট আত্মসমর্পণ করলাম, আপনারই ওপর ভরসা করলাম, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম, আপনার সন্তুষ্টির জন্যই শত্রুতায় লিপ্ত হ’লাম, আপনাকেই বিচারক মেনে নিলাম। তাই আপনি আমার পূর্বাপর ও প্রকাশ্য-গোপন সব অপরাধ ক্ষমা করুন। আপনিই অগ্র-পশ্চাতের মালিক। আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আপনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই।[3]
৪. সলাতে রুকূর ও সলাতে সাজদার দু‘আ :
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ
উচ্চারণ : সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা- ওয়া বিহামদিকা আল্লা-হুম্মাগফিরলী।
অর্থ : হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
৫. ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সা.) এ দু‘আটি বেশী বেশী পড়তেন।[4]
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ ذَنْبِى كُلَّه دِقَّه وَجِلَّه وَأَوَّلَه وَآخِرَه وَعَلَانِيَتَه وَسِرَّه
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফিরলী যামবী কুল্লাহূ ওয়া দিকক্বাহূ ওয়া জুল্লাহূ ওয়া আও্ওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ ওয়া ‘আলা-নিইয়্যাতাহূ ওয়া সিররাহূ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার সকল সূক্ষ্ম, বড়, প্রথম, শেষ, প্রকাশ্য ও গোপন গুনাহ মাফ কর।[5]
৬. দুই সাজদার মধ্যে পঠিত দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَارْحَمْنِىْ وَعَافِنِىْ وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াহদিনী ওয়া‘আ-ফিনী ওয়ার্ যুক্বনী।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে মাফ কর, আমার ওপর রহম কর, আমাকে হিদায়াত দান কর, আমাকে রোগ মুক্ত কর এবং আমাকে রিয্ক্ব দান কর।[6]
৭. সলাতের সালাম ফিরানোর পূর্বে পঠিত দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ ظَلَمْتُ نَفْسِىْ ظُلْمًا كَثِيرًا وَّلَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِىْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِىْ إِنَّك أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী যলামতু নাফসী যুলমান কাসীরাওঁ ওয়ালা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আন্তা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ‘ইনদিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আন্তাল গাফূরুর্ রহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের উপরে অসংখ্য যুলুম করেছি। ঐসব গুনাহ মাফ করার কেউ নেই আপনি ব্যতীত। অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ হ‘তে বিশেষভাবে ক্ষমা করুন এবং আমার ওপর অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।[7]
৮.
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِه مِنِّىْ أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা- ক্বদ্দামতু ওয়ামা- আখখারতু, ওয়ামা- আসরারতু ওয়ামা- আ‘লানতু, ওয়ামা- আসরাফতু, ওয়ামা- আনতা আ‘লামু বিহী মিন্নী; আনতাল মুক্বদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখখিরু, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমার পূর্বাপর গোপন ও প্রকাশ্য সকল গুনাহ মাফ করুন (এবং মাফ করুন ঐসব গুনাহ) যাতে আমি বাড়াবাড়ি করেছি এবং ঐসব গুনাহ যে বিষয়ে আপনি আমার চাইতে বেশী জানেন। আপনি অগ্র-পশ্চাতের মালিক। আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।[8]
[2]. সহীহ মুসলিম : ১৮৪৮।
[3]. সহীহুল বুখারী : ১১২০; সহীহ মুসলিম : ১৭৪৪।
[4]. সহীহুল বুখারী : ৮১৭; সহীহ মুসলিম : ১১১৩।
[5]. সহীহ মুসলিম : ১১১২।
[6]. সুনান আবূ দাঊদ : ৮৫০, হাদীসটি হাসান।
[7]. সহীহুল বুখারী : ৮৩৪; সহীহ মুসলিম : ৭০৪৪।
[8]. সহীহুল বুখারী : ৬৩৯৮; সহীহ মুসলিম : ১৮৪৮।
৯. সলাতের সালাম ফিরানোর পর পঠিত দু‘আ :
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অর্থ : আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি সেই আল্লাহর নিকটে যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক এবং তাঁর দিকেই আমি ফিরে যাচ্ছি বা তাওবাহ্ করছি।[1]
১০. বিতর-এর কুনূত :
اَللّٰهُمَّ اهْدِنِىْ فِيمَنْ هَدَيْتَ وَعَافِنِىْ فِيمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِىْ فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَبَارِكْ لِىْ فِيمَا أَعْطَيْتَ وَقِنِىْ شَرَّ مَا قَضَيْتَ إِنَّكَ تَقْضِىْ وَلَا يُقْضٰى عَلَيْكَ وَإِنَّه لَا يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাহদিনী ফীমান হাদায়তা, ওয়া ‘আ-ফিনী ফীমান ‘আ-ফায়তা, ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লায়তা, ওয়া বা-রিকলী ফীমা- আ‘ত্বায়তা, ওয়াক্বিনী শাররা মা- ক্বাযায়তা; ফাইন্নাকা তাক্বযী ওয়ালা- ইয়ুক্বয়া ‘আলায়কা, ইন্নাহূ লা- ইয়াযিল্লু মাঁও ওয়া-লায়তা, ওয়ালা- ইয়া‘ইযযু মান্ ‘আ-দায়তা, তাবা-রকতা রব্বানা- ওয়া তা‘আ-লায়তা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে সুপথ দেখিয়েছেন, আমাকে তাদের মধ্যে গণ্য করে সুপথ দেখান। যাদেরকে আপনি মাফ করেছেন, আমাকে তাদের মধ্যে গণ্য করে মাফ করে দিন। আপনি যাদের অভিভাবক হয়েছেন, তাদের মধ্যে গণ্য করে আমার অভিভাবক হয়ে যান। আপনি আমাকে যা দান করেছেন, তাতে বরকত দিন। আপনি যে ফায়সালা করে রেখেছেন, তার অনিষ্ট হ’তে আমাকে বাঁচান। কেননা আপনি সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন, আপনার বিরুদ্ধে কেউ সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আপনি যার সাথে বন্ধুত্ব রাখেন, সে কোনদিন অপমানিত হয় না। আর আপনি যার সাথে দুশমনী করেন, সে কোনদিন সম্মানিত হ’তে পারে না। হে আমাদের রব্! আপনি বরকতময় ও সর্বোচচ।[2]
১১. জানাযার সলাতের মৃত ব্যক্তির জন্য দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا وَ ذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا اَللّٰهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَه مِنَّا فَأَحْيِه عَلَى الْإِسْلَامِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَه مِنَّا فَتَوَفَّه عَلَى الْإِيمَانِ. اَللّٰهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا اَجْرَه وَتُضِلِّنَا بَعْدَه
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লিহাইয়িনা- ওয়া মাইয়িতিনা- ওয়া শা-হিদিনা- ওয়া গা-য়িবিনা- ওয়া সগীরিনা- ওয়া কাবীরিনা- ওয়া যাকারিনা- ওয়া উনসা-না-। আল্লা-হুম্মা মান আই্য়াইতাহূ মিন্না- ফাআহয়িহী ‘আলাল ইসলা-ম, ওয়া মান ত্বওয়াফফায়তাহূ মিন্না- ফাতাওফফাহূ ‘আলাল ঈমা-ন। আল্লা-হুম্মা লা তাহরিমনা- আজরাহূ ওয়াতু যিল্লিনা- বা‘দাহূ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত এবং (এই জানাযায়) উপস্থিত-অনুপস্থিত, আমাদের ছোট ও বড়, পুরুষ ও নারী সকলকে আপনি ক্ষমা করুন। যাকে আপনি বাঁচিয়ে রাখবেন, তাকে ইসলামের উপরে বাঁচিয়ে রাখুন এবং যাকে মারতে চান, তাকে ঈমানের হালাতে মৃত্যু দান করুন। হে আল্লাহ! এই মাইয়েতের (জন্য দু‘আ করার) উত্তম প্রতিদান হ’তে আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং তার পরে আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না।[3]
১২.
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَه وَارْحَمْهُ وَعَافِه وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَه وَوَسِّعْ مُدْخَلَه وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّه مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِه وَأَهْلًا خَيْرًا مِّنْ أَهْلِه وَزَوْجًا خَيْرًا مِّنْ زَوْجِه وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লাহূ ওয়ারহামহু ওয়া ‘আ-ফিহী ওয়া‘ফু ‘আনহু ওয়া আকরিম নুযুলাহূ ওয়া ওয়াস্সি‘ মুদখালাহূ; ওয়াগসিলহু বিলমা-য়ি ওয়াস্সালজি ওয়াল বারাদ; ওয়া নাক্বক্বিহী মিনাল খাত্বা-ইয়া- কামা- ইউনাক্বক্বাস্ সাওবুল আব্ইয়াযু মিনাদ্ দানাস; ওয়া আবদিলহু দা-রান খায়রাম মিন্ দা-রিহী ওয়া আহলান খায়রাম মিন আহলিহী ওয়া যাওজান খায়রাম মিন যাওজিহী; ওয়া আদখিলহুল জান্নাতা ওয়া আ‘ইযহু মিন ‘আযা-বিল ক্ববরি ওয়া মিন ‘আযা-বিন্ না-র।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি এই মাইয়িতকে ক্ষমা করুন। তাকে অনুগ্রহ করুন। তাকে নিরাপদে রাখুন এবং তার গুনাহ মাফ করুন। আপনি তাকে সম্মানজনক আতিথেয়তা প্রদান করুন। তার বাসস্থান প্রশস্ত করুন। আপনি তাকে পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত করুন এবং তাকে পাপ হ’তে এভাবে মুক্ত করুন, যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা হ’তে সাফ করা হয়। আপনি তাকে দুনিয়ার গৃহের বদলে উত্তম গৃহ দান করুন। তার দুনিয়ার পরিবারের চাইতে উত্তম পরিবার এবং দুনিয়ার জোড়ার চাইতে উত্তম জোড়া দান করুন। তাকে আপনি জান্নাতে দাখিল করুন এবং তাকে কবরের ‘আযাব হ’তে ও জাহান্নামের ‘আযাব হ’তে রক্ষা করুন।[4]
১৩. মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর দু‘আ :
اَللهم اغْفِرْلَه وَثَبِّتْهُ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লাহূ ওয়া সাব্বিতহু।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি এই মৃতকে ক্ষমা কর। আর এ সময় তাকে (ঈমানের উপর) দৃঢ় রাখ।[5]
১৪. মেযবানের জন্য মেহমানের দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِيمَا رَزَقْتَهُمْ وَاغْفِرْ لَهُمْ وَارْحَمْهُمْ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা বা-রিকলাহুম ফীমা- রাযাক্বতাহুম ওয়ার্ হামহুম।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে যে রিয্ক্ব দিয়েছ তাতে তুমি বরকত দান কর, তাদেরকে ক্ষমা করে দাও এবং তাদের ওপর রহমত বর্ষণ কর।[6]
১৫. ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দু‘আ বা সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার :
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ، وَأَبُوْءُ لَكَ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْ لِىْ، فَإِنَّه لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ.
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা, খালাকতানী ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা- ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত‘তু আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা সনা‘তু, আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফিরলী, ফাইন্নাহূ লা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আনতা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমার রব্, আপনি ছাড়া কোন রব্ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনার বান্দা। আমি সাধ্যমত আপনার কাছে দেয়া ওয়া‘দা ও প্রতিশ্রুতি পালনে সচেষ্ট আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে আপনার নিকট আশ্রয় চাই। আমাকে যে নি‘আমত দান করেছেন তা স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপসমূহ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। কেননা আপনি ছাড়া কেউ ক্ষমাকারী নেই।[7]
১৬. মৃত্যু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাময় ব্যক্তির দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَارْحَمْنِىْ وَأَلْحِقْنِىْ بِالرَّفِيقِ الْأَعْلٰى
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফিরলী ওয়ার হামনী ওয়া আল হিক্বনী বিররাফীক্বিল আ‘লা-।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন এবং আমাকে মহান বন্ধুর সাথে মিলিয়ে দিন।[8]
১৭. কেউ প্রশংসা করলে বলতে হয় :
اَللهم لَا تُؤَاخِذْنِىْ بِمَا يَقُوْلُوْنَ وَاغْفِرْ لِىْ مَا لَا يَعْلَمُوْنَ وَاجْعَلْنِىْ خَيْرًا مِّمَّا يَظُنُّوْنَ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লা- তুআ-খিযনী বিমা- ইয়াকূলূনা, ওয়াগফিরলী মা-লা- ইয়া‘লামূনা ওয়াজ্‘আলনী খাইরাম মিম্মা- ইয়াযুন্নূন।
অর্থ : হে আল্লাহ! তারা যা বলছে তার জন্য আমাকে পাকড়াও করবেন না, আমাকে ক্ষমা করুন, যা তারা জানে না। আর আমাকে তাদের ধারণার চেয়েও ভালো করে দিন।[9]
১৮. শির্ক থেকে বাঁচার দু‘আ :
اَللهم إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা আন্ উশরিকা বিকা ওয়া আনা- আ‘লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা- লা- আ‘লাম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শির্ক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। আর অজানা অবস্থায় শির্ক হয়ে গেলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।[10]
১৯. লায়লাতুল ক্বদরের দু‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّىْ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউউন তুহিববুল ‘আফ্ওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে ভালোবাসেন, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।[11]
২০. পশুর পিঠে আরোহণের দু‘আ :
سُبْحَانَكَ إِنِّىْ ظَلَمْتُ نَفْسِىْ فَاغْفِرْ لِىْ فَإِنَّه لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা- ইয়াগফিরুষ্ যুনূবা ইল্লা- আনতা।
অর্থ : আমি আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার ওপর অত্যাচার করেছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। কেননা আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই।[12]
[2]. সুনান আবূ দাঊদ : ১৪২৭, হাদীসটি সহীহ।
[3]. সুনান আবূ দাঊদ : ৩২০৩; সুনান ইবনু মাজাহ : ১৪৯৮; মুসনাদ আহমাদ : ৮৮০৯, হাদীসটি সহীহ।
[4]. সহীহ মুসলিম : ২২৭৬।
[5]. সুনান আবূ দাঊদ : ৩২২৩, হাদীসটি সহীহ।
[6]. সুনান আবূ দাঊদ : ৩৭৩১
[7]. সহীহুল বুখারী : ৬৩০৬
[8]. সহীহুল বুখারী : ৫৬৭৪; সহীহ মুসলিম : ৬৪৪৬; মুসনাদ আহমাদ : ২৫৯৮৯।
[9]. আল আদাব আল মুফরাদ : ৭৬১; শু‘আবুল ঈমান : ৪৮৭৬।
[10]. আল আদাব আল মুফরাদ : ৭১৬।
[11]. সুনান ইবনু মাজাহ : ৩৮৫০; মুসনাদ আহমাদ : ২৫৩৮৪, হাদীসটি সহীহ।
[12]. সুনান আবূ দাঊদ : ২৬০৪; মুসনাদ আহমাদ : ১০৫৬, হাদীসটি সহীহ।
২১. বৈঠক বসে যে দু‘আ পড়তে হয় :
رَبِّ اغْفِرْ لِىْ وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ : রব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব ‘আলাইয়া ইন্নাকা আনতাত্ তাও্ওয়া-বুর্ রহীম ।
অর্থ : হে আমার রব্! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ্ কবূল করুন। কেননা আপনি তাওবাহ্ কবূলকারী ক্ষমাশীল।[1]
২২. বৈঠক শেষের দু‘আ :
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
উচ্চারণ : সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র এবং আপনার প্রশংসা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাওবাহ্ করছি।[2]
২৩.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ وَسُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ
উচ্চারণ : লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়া সুবহা-নাল্লা-হ, ওয়ালহামদুলিল্লা-হ, ওয়ালা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনও ইলাহ নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে মহান, আল্লাহ পবিত্র, সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোনও উপায় ও সামর্থ নেই।[3]
২৪. আহারের পর নির্দিষ্ট দু‘আ পাঠ করা :
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ أَطْعَمَنِىْ هٰذَا الطَّعَامَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّىْ وَلَا قُوَّةٍ
উচ্চারণ : আলহাম্দুলিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমানী হা-যাত্ব ত্ব‘আ-মা ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম্ মিন্নী ওয়ালা- ক্যুওয়াহ্।
অর্থ : সেই আল্লাহর যাবতীয় প্রশংসা যিনি আমাকে এই খাদ্য খাওয়ালেন এবং জীবিকা দান করলেন, আমার কোন উপায় ও সামর্থ ছাড়াই।[4]
২৫. কাপড় পরার সময় নির্দিষ্ট দু‘আ পাঠ করা :
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ كَسَانِىْ هٰذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّىْ وَلَا قُوَّةٍ
উচ্চারণ : আলহাম্দুলিল্লা-হিল্লাযী কাসানী হা-যাস্ সাওবা ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম্ মিন্নী ওয়ালা- ক্যুওয়াহ্।
অর্থ : সেই আল্লাহর যাবতীয় প্রশংসা যিনি আমাকে এই কাপড় পরালেন এবং জীবিকা দান করলেন, আমার কোন উপায় ও সামর্থ্য ছাড়াই।[5]
২৬. ঘুমাবার সময় বিছানায় শুয়ে দু‘আ পাঠ করা :
لَا إلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه لَا شَرِيْك لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ
উচ্চারণ : লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর। লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ। সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ : আল্লাহু ছাড়া সত্যিকারের কোনও ইলাহ নেই, তাঁর কোনও অংশীদার নেই, তাঁর জন্যই রাজত্ব এবং তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা, এবং তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া কোনও উপায় ও সামর্থ্য নেই। আল্লাহ পবিত্র এবং তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা, আল্লাহ ছাড়া কোনও সত্যিকারের ইলাহ নেই এবং আল্লাহ সবার চেয়ে মহান বা বড়।[6]
২৭. ইস্তিগফার ও তাওবাহ্ সম্বলিত নির্দিষ্ট দু‘আ পাঠ
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অর্থ : আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য মা‘বূদ (‘ইবাদাতের যোগ্য) নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর এবং আমি তাঁর কাছে তাওবাহ্ করছি।[7]
২৮. আযান শুনে নির্দিষ্ট দু‘আ পড়া :
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُولُه رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا وَّبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَبِالإِسْلَامِ دِينًا
উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু, রযীতু বিল্লা-হি রব্বাও ওয়াবি মুহাম্মাদিন রাসূলান ওয়াবিল ইসলা-মী দীনা-।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও প্রেরিত রাসূল। আল্লাহকে রব্ বলে মেনে নিতে, নাবী (সা.)-কে নাবীরূপে স্বীকার করতে এবং ইসলামকে দীন হিসেবে গ্রহণ করতে আমি সম্মত ও তুষ্ট হয়েছি।[8]
২৯. নির্দিষ্ট জিকির ও তাসবীহ্ পাঠ করা :
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ
উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদু লিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ : নিশ্চয় সুবহা-নাল্লা-হ, আলহামদুলিল্লা-হ, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ ওয়াল্লা-হু আকবার।[9]
৩০. মজলিস শেষে নির্দিষ্ট দু‘আ পাঠ করা :
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
উচ্চারণ : সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র এবং সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আপনি ব্যতীত আর কোন মা‘বূদ নেই, আপনার কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করি।
তাহলে উক্ত মজলিসে তার যে অপরাধ হয়েছিল তা ক্ষমা করে দেয়া হবে।[10]
৩১. তাশাহহুদ পড়ে সলাত শেষ করার সময় নির্দিষ্ট দু‘আ পড়া :
اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ يَا اَللهُ بِأَنَّكَ الْوَاحِدُ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِىْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَّه كُفُوًا أَحَدٌ أَنْ تَغْفِرَ لِىْ ذُنُوبِىْ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা ইয়া- আল্লা-হু বিআন্নাকাল ওয়া-হিদুল আহাদুস্ সমাদ, আল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইঊলাদ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহূ কুফুওয়ান আহাদ, আন তাগফিরা লী যুনূবী ইন্নাকা আন্তাল গাফূরুর্ রহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাই, হে আল্লাহ! আপনি তো সেই সত্ত্বা যিনি এক ও একক এবং অমুখাপেক্ষী, যিনি কাউকেও জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি, আর তার সমতুল্য বা সমকক্ষ কেউ নেই। আপনি আমার গুনাহগুলোকে মাফ করে দিন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।[11]
[2]. সুনান আবূ দাঊদ : ৪৮৬১; জামি‘ আত্ তিরমিযী : ৩৪৩৩, হাদীসটি সহীহ।
[3]. মুসনাদ আহমাদ : ৬৪৭৯; হাদীসটি হাসান। দিনের যে কোন সময় এই দু‘আটি যে ব্যক্তি পড়বে সে ব্যক্তির পাপরাশি মাফ হয়ে যাবে; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা সমান (বা তার থেকে বেশি) হয়।’’
[4]. সুনান আবূ দাঊদ : ৪০২৫, শু‘আবুল ঈমান : ৬২৮৫; গুনাহ মাফের কথা পূর্বে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় উল্লিখিত হয়েছে।
[5]. সুনান আবূ দাঊদ : ৪০২৫; শু‘আবুল ঈমান : ৬২৮৫; গুনাহ মাফের কথা পূর্বে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় উল্লিখিত হয়েছে।
[6]. সহীহ ইবনু হিব্বান : ৫৫২৮; ইবনু আবী শায়বাহ্ : ২৬৫২৭; আস্ সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ : ৩৪১৪; গুনাহ মাফের কথা পূর্বে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় উল্লিখিত হয়েছে।
[7]. সুনান আবূ দাঊদ : ১৫১৯; জামি‘ আত্ তিরমিযী : ৩৫৭৭, হাদীসটি সহীহ।
[8]. সহীহ মুসলিম : ৮৭৭; গুনাহ মাফের কথা পূর্বে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় উল্লিখিত হয়েছে।
[9]. মুসনাদ আহমাদ : ১২৫৩৪, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ : ৩১৬৮।
[10]. জামি‘ আত্ তিরমিযী : ৩৪৩৩, হাদীসটি হাসান সহীহ।
[11]. সুনান আন্ নাসায়ী : ১৩০০, হাদীসটির সনদ সহীহ।