নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
القنوات فى الصلوات الخمس للنازلة উপনীত সমস্যায় পাঁচ ওয়াক্ত ছলাতে কুনুত প্রসঙ্গ

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কারো জন্য দুআ করতেন অথবা বদদুআ করতে চাইতেন তখন কুনুত[1] করতেন- শেষ রাকাআতের রুকূর পরে- যখন বলতেন- “সামি'আল্লাহু লিমান হামীদাহ, রব্বানা লাকাল হামদ ...।[2]

“উচ্চৈঃস্বরে দুআ করতেন।”[3] “তাঁর দু’খানা হাত উত্তোলন করতেন।”[4]

“তাঁর পিছনে যারা থাকত। তারা (মুক্তাদীগণ) আমীন বলতেন।[5]

“নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরা পাঁচ ওয়াক্ত ছলাতেই কুনুত করতেন।[6]

কিন্তু তিনি এর ভিতর কেবল তখনই কুনুত করতেন যখন কোন সম্প্রদায়ের জন্য দুআ অথবা কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বদদুআ করতে চাইতেন[7] কখনো তিনি কুনুতে এ দু'আ বলেছেনঃ

اللَّهُمَّ انْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ (اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِينَ يُوسُفَ اللهُمَّ الْعَنْ لِحْيَانًا وَرِعْلًا وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَتِ اللهَ وَرَسُولَهُ)

হে আল্লাহ! তুমি রক্ষা করা অলীদ বিন আলীদ, সালামাহ বিন হিশাম, আইয়াশ বিন আবী রাবী’আকে, আর মুযার গোত্রকে কঠিনভাবে নিপিড়িত কর এবং তাদেরকে ইউসুফ নাবীর যুগের সমাবর্ষব্যাপী দুর্ভিক্ষে আপতিত কর।

[হে আল্লাহ! তুমি লিহইয়ান, রিল, যাকওয়ান ও আছিয়াহ- আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধাচারণকারী এদের উপর লা'নত বর্ষণ কর।[8] অতঃপর যখন কুনুত সমাপ্ত করতেন তখন “আল্লাহু আকবার” বলে সাজদাহ করতেন।[9]

[1] “কুনুত” অনেক অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে এখানে ছলাতের কিয়ামের নির্দিষ্ট জায়গায় দুআ করা উদেশ্য।

[2] বুখারী ও আহমাদ।

[3] বুখারী ও আহমাদ।

[4] আহমাদ ও ত্ববরানী, ছহীহ সনদে। আর আহমাদ ও ইসহাক উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি এই যে, মুছল্পী কুনুতে তার দুই হাত উত্তোলন করবে। যেমনটি রয়েছে মারঅযীর “আল মাসায়েল” গ্রন্থে (পৃঃ ২৩) কিন্তু দু’হাত দিয়ে চেহারা বুলানো (মুছা বা মাসহ করা) এ স্থলে প্রমাণিত নয়। অতএব তা বিদাআত। আর ছলাতের বাইরেও এটা ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। এ বিষয়ে যত হাদীছ বর্ণনা করা হয় সবই দুর্বল, একটা অপরটার চেয়ে অধিক দুর্বল। যেমনটি তদন্ত করে সাব্যস্ত করেছি- যঈফ আবু দাউদে (২৬২) ও আল-আহাদীছুছু ছহীহাতে (৫৯৭)। এ কারণে আল-ইযয বিন আব্দুস সালাম তার ফাতাওয়া সংকলনে বলে দিয়েছেনঃ لا يفعله إلا الجهال এটা একমাত্র তারাই করে যারা জাহিল।

[5] আবু দাউদ, সাররাজ, হাকীম- এটিকে বর্ণনা করে ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন এবং যাহাবী ও অন্যান্যগণ তাঁর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

[6] আবু দাউদ, সাররাজ, দারাকুতনী-দুটি হাসান সনদে।

[7] ইবনু খুযাইমাহ তাঁর ছহীহ গ্রন্থে (১/৭৮/২), খাতীব বাগদাদী স্বীয় “আল-কুনুত” গ্রন্থে- ছহীহ সনদে।

[8] আহমাদ ও বুখারী, আর বর্ধিতটুকু (বন্ধনিযুক্ত অংশ) মুসলিমের।

[9] নাসাঈ, আহমাদ, আসসাররাজ (১/১০৯), আবু ইয়ালা তার মুসনাদ গ্রন্থে উত্তম সনদে।