নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
أدعية الاستفتاح ছলাতের শুরুতে পঠিতব্য দুআ

নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্ন দু'আ দ্বারা ছলাত শুরু করতেন। এর মধ্যে তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা, মাহাত্ম্য ও গুণকীর্তন করতেন। তিনি এ ব্যাপারে ছলতে ক্ৰটিকারীকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেনঃ

لاتتم صلاة لأحد من الناسی حتی یکبر، ويحمد الله عزوجل ويثني عليه ویقرأ بما تیسر من القرآن

কোন ব্যক্তির ছলাত ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে “আল্লাহু আকবার” বলবে এবং আল্লাহর প্রশংসা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করবে এবং কুরআন থেকে সহজসাধ্য অংশ পড়বে।[1]

তিনি একেক সময় একেক দুআ পড়তেন। দু'আগুলো হচ্ছেঃ

اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ . اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنْ الدَّنَسِ . اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! তুমি আমার এবং আমার পাপের মধ্যে এই পরিমার্ণ দূরত্ব সৃষ্টি কর, যে পরিমাণ দূরত্ব রেখেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে; হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপ থেকে এমনভাবে পরিচ্ছন্ন করা যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন করা হয়। হে আল্লাহ! তুমি আমার পাপকে পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত কর।” নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটি ফরয ছলাতে পড়তেন।[2]

وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا (مسلماً) وما أنا من الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ له وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وأنا أول الْمُسْلِمِينَ، اللهم أنت الْمَلِكُ لَا إِلَهَ إلا أنت (سبحانك وبحمدك) أنت رَبِّي وأنا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لي ذُنُوبِي جميعا إنه لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إلا أنت، وَاهْدِنِي لِأَحْسَنِ الْأَخْلَاقِ لَا يَهْدِي لِأَحْسَنِهَا إلا أنت، وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا لَا يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إلا أنت، لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّهُ في يَدَيْكَ وَالشَّرُّ ليس إِلَيْكَ (والمهدي من هديت) أنا بِكَ وَإِلَيْكَ (لا منجا ولا ملجا منك الا اليك) تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ

অর্থঃ আমি একনিষ্ঠ অনুগত মুসলিম হিসাবে স্বীয় মুখমণ্ডলকে ঐ সত্ত্বার সম্মুখীন করলাম যিনি আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। অবশ্যই আমার ছলাত, আমার ইবাদত, আমার জীবন, আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর অংশীদার নেই। আর আমি এজন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি আত্মসমৰ্পণকারীদের প্রথম জন[3] হে আল্লাহ! তুমি রাজ্যাধিপতি তুমি ব্যতীত কোন প্রকৃত মা’বুদ নেই। আমি প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি। তুমি আমার প্রতিপালক এবং আমি তোমার দাস বা বান্দা।[4] আমি স্বীয় আত্মার উপর অত্যাচার করেছি। আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি, অতএব তুমি আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে দাও। তুমি ব্যতীত আর কেউ অপরাধ ক্ষমা করতে পারবে না। তুমি আমাকে সর্বোত্তম চরিত্রের সন্ধান দাও কেননা তুমি ব্যতীত আর কেউই এর সন্ধান দিতে পারে না এবং আমার অসচ্চরিত্র অপসারণ কর। কেননা তুমি ব্যতীত আর কেউ তা সরাতে পারে না। আমি তোমার আনুগত্যে অটল এবং তোমার হুকুম ও দীনের সর্বদা সহযোগী।[5] সকল কল্যাণ তোমার দুই হাতে, মন্দ বিষয় তোমার দিকে সম্বন্ধযোগ্য নয়।[6] হিদায়াতপ্রাপ্ত কেবল সেই যাকে তুমি হিদায়াত দান কর। আমি তোমার কারণেই আছি ও তোমার নিকটই প্রত্যাবর্তিত হব। তোমার থেকে পরিত্রাণের স্থান ও আশ্রয়স্থল কেবল তোমার কাছেই রয়েছে। তুমি বরকতময় ও সুউচ্চ। তোমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করছি ও তাওবাহ করছি।

পূর্বোক্ত দু'আটি তিনি ফরয ও নফল উভয় ছলাতেই পড়তেন।[7]

৩। পূর্বোক্ত দু'আটাই। তবে أنت رَبِّي وأنا عَبْدُكَ শব্দ থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত বাদ যাবে এবং এর পূর্বের অংশটুকু থাকবে।[8]

৪। পূর্বোক্ত দু'আর وأنا أول الْمُسْلِمِينَ এরপর এটুকু বৃদ্ধি করবেঃ

اللَّهُمَّ اهْدِنِي لأَحْسَنِ الأَخْلاقِ وَأحْسَنِ الأعْمَالُ لاَ يَهْدِي لأَحْسَنِهَا إِلا أَنْتَ َوقِنِيْ سَيْئَ الأَخْلاقِ وَالأعْمَالِ لاَ يَقِيَّ سَيِّئُهَا إِلا أَنْتَ

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাকে সর্বোত্তম চরিত্র ও সর্বোত্তম আমলের পথ প্রদর্শন কর; তুমি ছাড়া এর সর্বোত্তম পথ প্রদর্শন অন্য কেউ করতে পারে না। আর আমাকে মন্দ চরিত্র ও মন্দ কাজ থেকে রক্ষা কর। তুমি ছাড়া অন্য কেউ এর মন্দ থেকে রক্ষা করতে পারে না।[9]

سُبْحَانَكَ اللهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، تَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার প্রশংসা জড়িত পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি, তোমার নাম অনেক বরকতমণ্ডিত হোক, তোমার মহানত্ব সমুন্নত হোক। আর তুমি ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই।[10]

নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় কথা হচ্ছেঃ سُبْحَانَكَ اللهُمَّ অর্থাৎ উপরোক্ত দু'আটি।[11]

৬। উপরোক্ত দু'আটিই (সুবহানাকা...) তবে তাহাজ্জুদের ছলাতে (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) তিনবার ও (আল্লাহু আকবার) তিনবার বর্ধিত করতেন।[12]

اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا

অর্থঃ আল্লাহই প্রকৃতপক্ষে সবচাইতে বড় এবং তাঁর জন্য অনেক প্রশংসা, আমি সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্ৰতা বর্ণনা করি।

ছাহাবাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এই দু’আ দ্বারা ছলাত শুরু করলে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আমি এ শব্দগুলোর জন্য আশ্চর্য হয়েছি, কারণ (এগুলোর) জন্য আসমানের দ্বারগুলো খোলা হয়েছিল।[13]

الْحَمْدُ للّهِ حَمْداً كَثِيراً طَيِّباً مُبَارَكاً فِيهِ

আল্লাহর জন্য অনেক প্রশংসা যা পবিত্র ও বরকতপূর্ণ।

এই দুআ দ্বারা অন্য এক ব্যক্তি ছলাত শুরু করলে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আমি বারজন ফেরেশতাকে দেখেছি তাঁরা এই মৰ্মে প্রতিযোগিতা করছেন যে, কে কার পূর্বে এই দুআ নিয়ে উঠবেন।[14]

اللهم لك الحمد أنت قيم السماوات الأرض ومن فيهن ولك الحمد أنت قيم السماوات والأرض ومن فيهن ولك الحمد أنت ملك السماوات والأرض ومن فيهن ولك الحمد أنت الحق ووعدك الحق وقولك حق ولقاؤك حق والجنة حق والنار حق والساعة حق والنبيون حق ومحمد حق اللهم لك أسلمت وعليك توكلت وبك آمنت وإليك أنبت وبك خاصمت وإليك حاكمت أنت ربنا وإليك المصير فاغفر لي ما قدمت وما أخرت وما أسررت وما أعلنت وما أنت أعلم به مني أنت المقدم وأنت المؤخر أنت إلهي لا إله إلا أنت ولا حول ولا قوة إلا بك

অর্থঃ হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, তুমি আসমান যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যে যারা রয়েছে তাদের আলো।[15] তোমার জন্যে সমস্ত প্ৰশংসা তুমি আসমান যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যে যারা আছে তাদের রক্ষক।[16] তোমার জন্যে সমস্ত প্রশংসা, তুমি আসমান, যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যে যারা আছে তাদের মালিক। সব প্রশংসা তোমার, তুমি সত্য, তোমার ওয়াদা সত্য, তোমার কথা সত্য, তোমার সাক্ষাৎ সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, কিয়ামত সত্য, নবীগণ সত্য, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সত্য। হে আল্লাহ! আমি তোমারই উদ্দেশ্যে ইসলাম গ্রহণ করেছি, তোমার উপরই ভরসা রাখি, তোমার উপর ঈমান এনেছি, তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছি, তোমার পক্ষে বিতর্ক করি। তোমার কাছেই মীমাংসা চাই। তুমি আমাদের প্রতিপালক, তোমার নিকটেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। আমার পূর্বের ও পরের সব গুনাহ মাফ করে দাও, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ ক্ষমা কর। আমার অপেক্ষা তুমি যা অধিক জানো তাও ক্ষমা করে দাও, তুমি অগ্রগণ্যকারী, তুমিই পশ্চাদপদকারী, তুমি আমার মা’বুদ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। তুমি ব্যতীত কোন উপায় ও ক্ষমতা নেই ।[17]

তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই দু’আটি নফল ছলতে পড়তেন যেমন পরবর্তী দু'আগুলোও নফল ছলাতে পড়তেন[18]

اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ، فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ، اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإذْنِكَ، إِنَّكَ تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

অর্থঃ হে আল্লাহ! জিবরাঈল, মীকাঈল ও ইসরাফীল (আলাইহিমুস সালাম) এর প্রভু আসমান যমীনের স্রষ্টা, অদৃশ্য ও দৃশ্যমান বস্তুর জ্ঞানের অধিকারী তুমি স্বীয় বান্দাদের মতভেদকৃত বিষয়ে ফায়সালী করে থাক। তোমার অনুমোদনক্রমে মতভেদকৃত বিষয়ে সত্যের পথে আমাকে পরিচালিত কর। তুমি যাকে চাও সঠিক পথ দেখিয়ে থাক।[19]

১১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- দশবার আল্লাহু আকবার, দশবার আল-হামুদুলিল্লাহ, দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ও দশবার আসন্তাগাফিরুল্লাহ পাঠ করতেন। অতঃপর বলতেনঃ

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي وَعَافِنِي

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর, হিদায়াত দাও, জীবিকা দান কর এবং সুস্থতা দাও।

এই দু'আও দশবার বলতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الضِّيقِ يَوْمَ الْحِسَابِ

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট বিচার দিবসের সংকীর্ণতাপূর্ণ অবস্থা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।[20]

الله اکبر তিনবার, অতঃপর বলতেন, ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

অর্থঃ রাজত্ব, অসীম ক্ষমতা, বড়ত্ব, অহঙ্কারের মালিক।[21]

[1] আবু দাউদ, হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

[2] বুখারী, মুসলিম, দ্বিতীয় হাদীছটি ইবনু আবী শাইবাহ (১২/১১০) পৃষ্ঠাতে রয়েছে, এটি “আল ইরওয়া” গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে।

[3] অধিকাংশ বর্ণনাতে এরূপই আছে। কোন কোন বর্ণনাতে আছে وانا من المسلمين আমি মুসলিমদের মধ্যে গণ্য। বাহ্যত এটা কোন বর্ণনাকারীর হেরফের। এর প্রমাণও এসেছে। অতএব মুছল্লীর وأنا أول المسلمين (আমি মুসলিমদের প্রথমজন) বলাই উচিত। আর এটা বলতে কোন অসুবিধাও নেই। পক্ষান্তরে কেউ কেউ ধারণা করে যে, উক্ত আয়াতের অর্থ সমস্ত মানুষ এ গুণ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর আমি সর্বপ্রথম এ গুণে গুণান্বিত হচ্ছি। বাস্তবে এমনটি নয় বরং তার অর্থ তিনি (আল্লাহ) যা আদেশ দিয়েছেন তা পালনের জন্য দ্রুত অগ্রসর হওয়া। এ সাদৃশ আয়াত قُلْ إِنْ كَانَ لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدٌ فَأَنَا أَوَّلُ الْعَابِدِينَ বলুন, যদি রহমানের সন্তান থাকত তাহলে আমি ইবাদতকারীদের প্রথমজন। মুসা (আলাইহিস সালাম) বলেছিলেনঃ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُؤْمِنِينَ আর আমি মু’মিনদের প্রথম জন।

[4] আমি তোমার বান্দা বা দাস অর্থ আমি আর কারো দাসত্ব করিনা বা করব না। এটা বলেছেন আযহারী।

[5] أى أنا مقيم على طاعتك إقامة بعد إقامة আমি তোমার আনুগত্যে প্রতিষ্ঠিত-প্রতিষ্ঠিতর পর প্রতিষ্ঠিত। ألب بالمقام থেকে অর্থাৎ যখন কোন জায়গায় অবস্থান নেয়। وسعديك তোমার নির্দেশের সহযোগিতার পর সহযোগিতা এবং সস্তুষ্টিপূর্ণ দ্বীনের নিয়মিত অনুসরণের পর অনুসরণ। অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথভাবে আল্লাহর আনুগত্য ও দ্বীনের উপর অটল অবিচল থাকা।

[6] আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক ও সম্বন্ধ নেই। ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আল্লাহ্ পাক ভাল মন্দের সৃষ্টিকর্তা তাই তাঁর কোন কোন সৃষ্টির মধ্যে মন্দত্ব থাকতে পারে। কিন্তু তার চরিত্র ও কাজের মধ্যে তা নেই। তাইতো আল্লাহ পাক যুলম থেকে মুক্ত যে যুলমের মর্ম হচ্ছে বস্তুকে অপাত্রে রাখা তাই তিনি কোন বস্তুকে তার যোগ্য পাত্র ছাড়া কোথাও রাখেন না। এহেন কাজের সবটুকুই ভাল। আর মন্দ হচ্ছে বস্তুকে অপাত্রে রাখা অতএব যোগ্য পাত্রে রাখলে আদৌ সে মন্দ হবে না। জানা গেল যে, মন্দ কাজের জন্য আল্লাহ দায়ী নন। (তিনি বলেন) যদি তুমি বল— তাহলে তিনি মন্দকে কেন সৃষ্টি করলেন? আমি বলব, তাঁর সৃষ্টি ও কাৰ্য-সম্পাদন ভাল কেননা সৃষ্টি ও কার্য সম্পাদন তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ। পক্ষান্তরে মন্দের সাথে তিনি সংশ্লিষ্ট ও গুণান্বিত নন। আর সৃষ্টির মধ্যে যা মন্দ রয়েছে এত কেবল এজন্যই মন্দ যে আল্লাহ থেকে সে সম্পৰ্কচ্যুত পক্ষান্তরে কাজ ও সৃষ্টি তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট সে জন্যই সে ভাল। এ বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য ইবনুল কাইয়িমের “শিফাউল ‘আলীল ফী মাসাইলিল ক্বাদা ওয়াল কাদর ওয়াত তা’লীল” (১৭৮-২০৬) দ্রষ্টব্য।

[7] মুসলিম, আবু আওয়ানাহ, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনু হিব্বান, আহমাদ, শাফি'ঈ', ত্বাবরানী। অতএব যে ব্যক্তি এই দু'আকে নফল ছলতের জন্য নির্দিষ্ট করেছে সে ভুল ধারণা করেছে।

[8] বিশুদ্ধ সনদে নাসাঈ।

[9] বিশুদ্ধ সনদে নাসাঈ ও দারাকুতুনী।

[10] سبحنك অর্থ أسبحك تسبيحا অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমাকে সর্ব প্রকার ক্রটি বিচ্যুতি থেকে পবিত্র বলে ঘোষণা করছি। وبحمدك অর্থাৎ আমরা তোমার প্রশংসায় নিযুক্ত রয়েছি। وتبارك অর্থঃ তোমার নামের বরকত (কল্যাণ) বৃদ্ধি পাক, এজন্য যেই তোমার নাম স্মরণ করেছে সে সকল কল্যাণ লাভ করেছে। جدك অর্থঃ তোমার সম্মান ও মহানত্ব উচু হোক।

[11] আবু দাউদ ও হাকিম এবং তিনি একে বিশুদ্ধ বলেছেন এবং যাহাবী এতে একমত পোষণ করেছেন। উকাইলী বলেছেন (পৃঃ ১০৩) এই হাদীছ বিভিন্ন সূত্রে উত্তম সনদসমূহ দ্বারা বর্ণিত হয়েছে, এটি “আল ইরওয়া” (৩৪১)। পৃষ্ঠাতে উদ্ধৃত হয়েছে।

[12] ইবনু মান্দাহ তাঁর “আত-তাওহীদ” গ্রন্থে (২/১২৩) বিশুদ্ধ সনদে, নাসাঈ “আমালুল ইওম ওয়াল লাইলাহ” মাউকূফ ও মারফু’ সনদে “জামিউল মাসানীদ” এ ইবনু কাসীর (৩/২/২৩৫/২) পরবর্তীতে নাসাঈতেই তা আমার দৃষ্টিগোচর হয় (নং ৮৪৯ ও ৮৫০) তাই আমি “ছহীহাহ” এর (২৯৩৯) হাদীছটি উদ্ধৃত করেছি।

[13] মুসলিম, আবু আওয়ানা, তিরমিযী একে ছহীহ বলেছেন, আবু নুআইম একে “আখবারু আসবাহান” (১/২১০) কিতাবে জুবাইর ইবনু মুত্বইম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে নফল ছলাতে তা পড়তে শুনেছেন।

[14] মুসলিম ও আবু আওয়ানাহ।

[15] আলো বলতে আলো দানকারী যার মাধ্যমে সবাই পথের সন্ধান পেয়ে থাকে।

[16] রক্ষক বলতে আসমান যমীনের রক্ষণাবেক্ষণকারী ও তত্ত্বাবধায়ক।

[17] বুখারী, মুসলিম, আবু আওয়ানা, আবু দাউদ, ইবনু নছর ও দারিামী।

[18] এর দ্বারা এটা বুঝায় না যে, ফরয ছলাতে তা পড়া যাবে না। এটা স্পষ্ট কথা, তবে ইমাম- মুক্তাদীদের প্রতি লক্ষ করে তা পড়বেন না।

[19] মুসলিম ও আবু আওয়ানাহ।

[20] আহমাদ, ইবনু আবী শাইবাহ (১২/১১৯/২) আবু দাউদ, ত্ববারানী “আল আওসাত” (৬২/২) ও “আস-সগীর” এর সমন্বিত গ্রন্থে একটি সহীহ সনদে ও অপরটি হাসান সনদে।

[21] ছহীহ সনদে আবু দাউদ ও ত্বায়ালিসী।