আশইয়াম আল্লাহর পথে সফর করছিলেন। যখন রাত হলো তখন তিনি পার্শ্ববর্তী এক জংগলে আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি জংগলে ঢুকে অযু করে সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। কোনরূপ হুঁশিয়ারী সংকেত (অর্থাৎ তর্জন-গর্জন ও হুংকার) ছাড়াই একটি সিংহ তার দিকে ধেয়ে আসছিল, সিংহটা যখন বিপজ্জনকভাবে তার নিকটে আসল। সিলাহ তখন অনবরত সালাত পড়তেই ছিলেন।

সিংহটা সিলাহর চারিদিকে ঘুরতে ছিল তবুও তিনি তার সালাত ভাঙ্গেন নি, বরং অধ্যবসায়ের সাথে আল্লাহ্‌র নিকট আকুল আবেদন করতে ছিলেন। তিনি সালাম ফিরানোর মাধ্যমে সালাত শেষ করে সিংহকে বললেন, “আমাকে হত্যা করার জন্য যদি তোমাকে আদেশ দেয়া থাকে তবে তুমি তা কর নচেৎ (আর যদি তোমাকে তা করার আদেশ করা হয়ে না থাকে তবে) আমাকে একাকী ছেড়ে দাও, যাতে নাকি আমি আমার প্রভুর সাথে একান্তভাবে কথা বলতে পারি।” এ কথা বলার পর সিলাহকে একাকী রেখে সিংহটি শান্তভাবে প্রস্থান করল।

“আল বিদায়াহ ওয়ানিহায়াহ নামক কিতাবে আল্লামা ইবনে কাহীর এ ঘটনার মতোই একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আযাদকৃত গোলাম সাফীনাহ (রাঃ) সঙ্গী সাথীসহ সাগর তীর দিয়ে ভ্রমণ করতে ছিলেন। যখন তারা স্থলভাগের দিকে এগিয়ে গেলেন তখন একটি সিংহ ভয়ংকর ভাবে তাদের দিকে এগিয়ে আসল। সাফীনাহ (রাঃ) বললেন, “হে সিংহ! আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন সাহাবী ও তাঁর এর সেবক। আর এরা আমার সঙ্গী-সাথী; অতএব, আমাদের বিরুদ্ধে তোমার কিছুই করার নেই।” সিংহ তাদের নিকট থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।

এমন অনেক ঘটনাই সত্য এবং নির্ভরযোগ্য উৎসের মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে। যা হোক, যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এসব ঘটনা থেকে এটা অনুভব করুন যে, আমাদের প্রভু হলেন পরম দয়ালু ও পরম বিজ্ঞ এবং বিশ্ব জগতে যা কিছু ঘটছে সে সব বিষয়ে তিনি অবগত আছেন।

مَا يَكُونُ مِن نَّجْوَىٰ ثَلَاثَةٍ إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ

তিন জনের গোপন পরামর্শে তিনি (আল্লাহ) চতুৰ্থজন হিসেবে এবং পাঁচ জনের (গোপন পরামর্শে তিনি) ষষ্ঠজন হিসেবে থাকেন।” (৫৮-সূরা মুজাদালাঃ আয়াত-৭) [আল্লাহ সাত আসমানের উপরে তার আরশে (সিংহাসনে) থেকেই তিনি তার জ্ঞানের মাধ্যমে তাদের সাথে থাকেন- তারা যেই হোক না কেন।]